৫ নভেম্বর ২০২৫, ৪:২৬ এম

ম্যাচের পরতে পরতে ছিল উত্তেজনা আর রোমাঞ্চে ঠাসা। তার চেয়েও বড়—আজ ঘরের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সে বায়ার্ন মিউনিখের উত্থান থামানোর চ্যালেঞ্জে নেমেছিল চ্যাম্পিয়নস লিগের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন পিএসজি। সে যাত্রায় মোটাদাগে ব্যর্থ লুইস এনরিকের দল। প্যারিস সেন্ট জার্মেইনকে ২–১ গোলে হারিয়ে ২০২৫–২৬ মৌসুমে (সব লিগ মিলিয়ে) টানা ১৬তম জয়ের সাক্ষী জার্মান জায়ান্টরা।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ২টার মহারণে বল দখল, অন–টার্গেট শট ও বিগ চ্যান্স তৈরিতে এগিয়ে থেকেও নির্মম ভাগ্য মেনে নিতে হয়েছে পিএসজিকে। এই হারে পয়েন্ট টেবিলে তিনে (৯ পয়েন্ট) নেমে গেছে প্যারিস সেন্ট–জার্মেইন। শীর্ষস্থান দখলে নিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ।
পার্ক দে প্রিন্সে আগত দর্শকেরা জমিয়ে বসার আগেই ম্যাচ ঘড়ির চার মিনিটে গোল হজম করে বসে পিএসজি। গোলমুখে প্রথমে শট নিয়েছিলেন মাইকেল ওলিসে, যা লুকাহ শুভালিয়ে প্রথম প্রচেষ্টায় ঠেকিয়ে দেন। রিবাউন্ডে বল পেয়ে আলতো স্পর্শে জালে পাঠান লুইস দিয়াস।
১৮তম মিনিটে জোশুয়া কিমিখ শট নিতে গিয়ে থেমে যান—সম্ভবত বল পজিশন নিয়ে রেফারি আপত্তি করে বসেন। পুনরায় বল বসিয়ে শট নেন। সেখান থেকে বিপদ হতে পারত, তা সামলে নেন শুভালিয়ে।
২১তম মিনিটে সমতার সুযোগ হাতছাড়া করে পিএসজি। ফাবিয়ান রুইজের পাস বুক দিয়ে রিসিভ করে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ওসমান দেম্বেলে। কিন্তু কপাল পোড়া ফরাসি ফরোয়ার্ডের, সে গোল ভিএআরে চেকে অফসাইড হিসেবে গণ্য হয়।
মাত্র চার মিনিট পরই দেম্বেলেকে তুলে নেন কোচ। চোটের সঙ্গে লড়াই করা এই খেলোয়াড়ের বদলে মাঠে নামেন লি কাং–ইন। সাউথ কোরিয়ান এই ফুটবলার পরবর্তীতে দলের একমাত্র গোলে অ্যাসিস্ট করেন।
৩১তম মিনিটে লিড দ্বিগুণ করে বায়ার্ন। মার্কিনিয়োসের ভুলে সুযোগ পান লুইস দিয়াস। আনমার্ক অবস্থায় থেকে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন কলম্বিয়ান উইঙ্গার।
অ্যানফিল্ড থেকে জয় ছিনিয়ে উচ্ছ্বসিত বায়ার্ন ফুটবলাররা
দুই মিনিট পর আরও একটি সুযোগ হাতছাড়া হয় বায়ার্নের। বারে লেগে ফিরে আসায় তৃতীয় গোল থেকে রক্ষা পায় প্যারিসের জায়ান্টরা।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে লাল কার্ড দেখেন দিয়াস। আশরাফ হাকিমির সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ের এক পর্যায়ে কড়া ট্যাকেল করে বসেন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে কাঁধে ভর করে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়তে হয় হাকিমিকে, আর দিয়াসকে ছাড়তে হয় লাল কার্ড দেখে।
২–০ গোলে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হলেও আরও এক শঙ্কা ঘিরে ধরে বায়ার্নকে। শুরুতেই হলুদ কার্ড দেখেন টম বিশফ। পরের মিনিটে (৪৮তম) হলুদ কার্ড দেখেন গোলকিপার মানুয়েল ন্যয়ারও।
১০ জনের দলে পরিণত হওয়ার সুযোগ কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে ওঠে স্বাগতিকরা। ৬৩ মিনিটে ওয়ান–টু পজিশনে বক্সের সামনে বল পান খিচা কাভারাস্কেইয়া, সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি জর্জিয়ান ফরোয়ার্ড।
৬৫ মিনিটে জোড়া পরিবর্তন আনে পিএসজি। বারকোলা ও রুইজকে উঠিয়ে গনজালো রামোস ও জোয়াও নেভেসকে নামান কোচ এনরিকে।
নতুন উদ্যমে খেলায় ফিরে আসে পিএসজি। একের পর এক আক্রমণ শুরু করে স্বাগতিকরা। কিন্তু সমস্যা একটাই—গোল। মহেন্দ্রক্ষণের নাগাল পাচ্ছিল না ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা।
শেষ পর্যন্ত মহেন্দ্রক্ষণ আসে বদলি নেভেসের পা থেকে। ৭৪তম মিনিটে আচমকা আক্রমণ থেকে পিএসজির হয়ে ব্যবধান কমান পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। কোরিয়ান মিডফিল্ডারের শট মাটিতে পড়ার আগেই অনেকটা সামনে কাত হয়ে বারের ছয়-সাত গজ দূর থেকে শট নেন তিনি। শটটি খুব শক্তিশালী না হলেও নিখুঁত ছিল। এক বাউন্সে বল জড়ায় বায়ার্নের জালে।
শেষ সময় পর্যন্ত দম ধরে রাখে পিএসজি। একের পর এক আক্রমণ চলতে থাকে—কখনও ভিতিনিয়া, কখনও খিচা কাভারাস্কেইয়া। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২–১ ব্যবধানে হার মেনে মাঠ ছাড়তে হয় লুইস এনরিকের দলকে।
ম্যাচে বল দখল ও আক্রমণে দাপট দেখায় পিএসজি। ৭১ শতাংশ সময় পজেশন রেখে গোলের জন্য ২৫টি শট নিয়ে ৯টি লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা। বায়ার্নের ৯ শটের ৫টি লক্ষ্যে ছিল।
No posts available.
১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:২৮ এম
১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৫:৪০ পিএম
১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৩:৪৫ পিএম