
সেভিয়ার বিপক্ষে মুখোমুখি হওয়ার আগে ২০২৫-২৬ মৌসুমে অপরাজিত ছিল বার্সেলোনা। আগের মৌসুমের মতো ‘খুনে’ মেজাজের বার্সাকে না দেখা গেলেও লিগের পয়েন্ট টেবিলে ঠিকই শীর্ষে উঠে আসে ক্লাবটি।
সবশেষ সেভিয়ার বিপক্ষে গতকাল কাতালান ক্লাবটির ম্যাচ দেখে হয়তো অনেকেই চোখ কচলেছেন। মাঠে এ কোন বার্সাকে দেখতে হচ্ছে। একের পর এক গোলের সুযোগ হাতছাড়া আর রক্ষণভাগে শিশুসুলভ ভুলে শেষ পর্যন্ত ৪-১ গোলে হেরেও যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল বার্সা।
আরও পড়ুন
| ‘ভাল জার্নি কইরা আইছি, সবাই সাপোর্ট করতে আইবা’ |
|
হ্যান্সি ফ্লিকের কোচিং অধ্যায়ে সবচেয়ে বাজে হারই ছিল এটি। শোচনীয় এই হারে স্বাভাবিকভাবেই কাটাছেঁড়া করবে বার্সা। ভুলটা কোথায় ছিল ? কোচের কৌশলে ? নাকি রক্ষণভাগ থেকে ফরোয়ার্ড কেউ নিজের কাজটা ঠিকঠাক করতে পারেনি ?
সেভিয়ার বিপক্ষে ভরাডুবির পর ম্যাচ শেষে পাউ কুবার্সি দুষলেন দলের আক্রমণভাগের সদস্যদের। বার্সা ডিফেন্ডারের মতে, গোলের সুযোগ হাতছাড়ার সঙ্গে ফরোয়ার্ডরা প্রেসিংয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে পারেনি। নিজেদের পারফরম্যান্সের হতাশ কুবার্সি বলেন, ‘গত মৌসুমের মতো আমাদের প্রেস করতে হবে। পরের ম্যাচগুলোতে যেন একই ভুলের পুনরাবৃত্তি না হয়।’
কুবার্সি আরো বলেন, ‘দ্বিতীয়ার্ধে আমাদের অনেক ভালো সুযোগ ছিল, কিন্তু ফুটবলে এমন হয়। শেষ মুহূর্তে আমরা যেভাবে মনোযোগ হারিয়েছি, সেটা চলতে পারে না। সামনের দিকে তাকিয়ে আমাদের এই ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং আরও বেশি লড়াই করতে হবে।’
প্রথমার্ধে ২-১ গোলে পিছিয়ে থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি থেকে সমতায় ফিরতে পারত বার্সা। তবে ক্লাবটির পোলিশ ফরোয়ার্ড রবার্ট লেভানদোভস্কির স্পট কিক থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন। পেনাল্টি মিস ছাড়াও এই ম্যাচে ফরোয়ার্ডরাও বেশ কিছু সহজ সুযোগ হেলায় হারায়।
গত মৌসুমে তীব্র প্রেসিংয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখে বার্সা। সেই চাপ তৈরি করার কথাই বলেন বার্সেলোনার ১৮ বছর বয়সী ডিফেন্ডার, ‘আমাদের গত মৌসুমের মতোই প্রেস করতে হবে। প্রতিপক্ষের সুযোগগুলো আসলে আমাদের আক্রমণভাগ থেকেই শুরু হয়। তাই সামনে থেকেই চাপ তৈরি করতে হবে। আমি মনে করি আমরা কিছুটা আত্মতুষ্ট হয়ে পড়েছিলাম। এটা একদমই চলবে না। অবশ্য এটা কেবলই একটি ম্যাচ, বাড়াবাড়ির প্রয়োজন নেই, কিন্তু এটিই হতে পারে মৌসুমের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া মুহূর্ত।’
আরও পড়ুন
| হংকং ম্যাচ দেখতে কাল আসছেন হামজার বাবা-মা |
|
লিগে এই হারে শীর্ষে ফেরার সুযোগও হারায় বার্সেলোনা। ৮ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে নূ ক্যাম্পের ক্লাবটি। সমান ম্যাচে ২ পয়েন্ট বেশি নিয়ে এক নম্বরে রিয়াল মাদ্রিদ। আর বার্সাকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার ছয় নম্বরে উঠে এসেছে সেভিয়া। ৮ ম্যাচে ক্লাবটির সংগ্রহ ১৩ পয়েন্ট।
আন্তর্জাতিক বিরতির পর আগামী ১৮ অক্টোবর লিগে জিরোনার বিপক্ষে মাঠে নামবে বার্সা।
No posts available.
৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯:৩৫ পিএম

গতকাল হয়ে গেল ২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র। চূড়ান্ত গ্রুপ। ড্র’ এর একদিন পর আজ নিশ্চিত হলো বিশ্বকাপের ম্যাচের দিনক্ষণ, সময়সূচি আর ভেন্যু।
গ্রুপ ‘এ’ এর দল মেক্সিকো-দক্ষিণ আফ্রিকা এবং দক্ষিণ কোরিয়া ও উয়েফা প্লে-অফের দলের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে বিশ্বকাপের ২৩তম আসরের বল। আর ২০ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে হবে ফাইনালের মহারণ।
বিশ্বকাপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার অভিযান শুরু হবে আলজেরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। গ্রুপ ‘জে’ এর ম্যাচটি হবে আগামী বছরের ১৭ জুন। নিজেদের প্রথম ম্যাচটি লিওনেল মেসিরা খেলবেন যুক্তরাষ্ট্রের কানসাস সিটির অ্যারোহেড স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ সময় সকাল আটটায় আলজেরিয়ার মুখোমুখি হবে আলবিসেলেস্তারা।
আর্জেন্টিনার গ্রুপপর্বের পরের ম্যাচ অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে। ২৩ জুনের এই ম্যাচটি হবে যুক্তরাষ্ট্রের আর্লিংটনে এটি অ্যান্ড টি স্টেডিয়ামে, বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা। আর জর্ডানের বিপক্ষে ২৯ জুনে গ্রুপের শেষ ম্যাচটি তিনবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা খেলবে প্রথম ম্যাচের ভেন্যুতে, সময় রাত ৯টা।
আর্জেন্টিনার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচ আগের আসরের সেমিফাইনালিস্ট মরক্কো। ১৩ জুনের ম্যাচটি হবে মেটলাইফ স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ সময় সকাল ৫টায়। গ্রুপ ‘সি’তে সেলেসাওদের পরের ম্যাচ হাইতির বিপক্ষে ২০ জুন। যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় লিঙ্কন ফাইনানসিয়াল ফিল্ডে বাংলাদেশ সময় সকাল আটটায় হবে ম্যাচটি। আর কার্লো আনচেলোত্তির দলের শেষ ম্যাচটি হবে ২০ জুন। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হবে মায়ামির হার্ডরক স্টেডিয়ামে, ৫টায়।

মঞ্চ প্রস্তুত। বাকি কেবল আর ঘণ্টা কয়েক। বিদায়ের করুণ বাঁশির সুর শুনতে পাচ্ছেন দুই কিংবদন্তি। শেষটা হবে এক ফাইনালের মধ্য দিয়ে। আজ এমএলএস কাপের ফাইনালের শেষবারের মতো বুট জোড়া পায়ে দিয়ে নামবেন সার্জিও বুসকেটস ও জর্ডি আলবা।
বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১টা ৩০ মিনিটে এমএলএস কাপের ফাইনালে ইন্টার মায়ামির মুখোমুখি হচ্ছে কানাডিয়ান ক্লাব ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপস। আজ চেজ স্টেডিয়ামে লিওনেল মেসিরা শিরোপা জিতিয়েই সাবেক দুই বার্সা সতীর্থ বুসকেটস-আলবাকে বিদায় দিতে চাইবেন।
২০২৩ সালে বুসকেটস-আলবা দু’জন একসঙ্গে ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেন। বার্সেলোনায় সাফল্যময় ক্যারিয়ার শেষে পুরোনো ‘বন্ধু’ মেসির সঙ্গে যোগ দেন স্প্যানিশ দুই ফুটবলার। জর্দি আলবার পেশাদার ক্লাব ক্যারিয়ার শুরু হয় স্প্যানিশ ক্লাব ভ্যালেন্সিয়ার হয়ে। এই ক্লাবে চার বছর কাটানোর পর ২০১২ সালে বার্সায় নাম লেখান এই লেফট-ব্যাক।
এরপর ন্যু ক্যাম্পের ক্লাবটিতে দীর্ঘ ১১ বছর ৪৫৯ ম্যাচ খেলে কত অর্জনের যে স্বাক্ষী হয়েছেন ৩৬ বছর বয়সী এই ফুটবলার। বার্সায় মেসির সঙ্গে দারুণ রসায়নে কত গোলে যে অবদান রেখেছেন আলবা। মায়ামিতেও মেসি-আলবা জুটির ঝলক দেখা গেছে প্রায়ই।
গত অক্টোবরে অবসরের ঘোষণা দিয়ে আলবা বলেছিলেন,
‘যে ছেলেটা প্রথম বিভাগের ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখত, সে তার সব স্বপ্নই পূরণ করেছে—এমনকি এর চেয়েও বেশি। আমার কোনো অভিযোগ নেই—উল্টো আমি খুবই কৃতজ্ঞ আমার ক্যারিয়ার, আমার সতীর্থরা, আমি যা কিছু শিখেছি এবং উপভোগ করেছি তার জন্য। এটা ছিল এক বিরল সৌভাগ্য।’
আজ বিদায়ী ম্যাচ নিয়ে আলবার বলেছেন,
‘এটা আবেগে ভরা এক সপ্তাহ—কারণ জানি এটা আমার শেষ ম্যাচ হতে চলেছে। আমার সিদ্ধান্ত একদম দৃঢ়। আমি চাই ক্যারিয়ারটাকে সবচেয়ে সুন্দর মঞ্চে শেষ করতে—একটা ফাইনালে। আশা করি সবকিছু আমাদের পক্ষেই যাবে।’
ইন্টার মায়ামির মিডফিল্ডার এবং আরেক স্প্যানিশ কিংবদন্তি সার্জিও বুসকেটস, যার শেকড়ও কাতালুনিয়ায়। বার্সায় সম্ভাব্য সব ধরনের শিরোপাই জিতেছেন ‘অক্টোপাস’ নামে পরিচিত এই মিডফিল্ডার। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের ধারণাটাই বদলে দেওয়া বুসকেটস ছিলেন মাঝমাঠের এক আস্থার নাম।

আগের ম্যাচে চূড়ায় থাকা আর্সেনালের হারে সুযোগ আসে ব্যবধান কমানোর। সে সুযোগ ঠিকই লুফে নিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। ঘরের মাঠে বড় জয় পেয়েছে সিটিজেনরা। একই সময়ে আগের ম্যাচে হেরে যাওয়া চেলসি গোলশূন্য ড্র করেছে বোর্নমাউথের বিপক্ষে।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে আজ রাতে সান্ডারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জয় পেয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। ঘরের মাঠ ইতিহাদে পাওয়া জয়ে গোল করেছেন রুবেন দিয়াজ, ইওস্কো গাভার্দিওল ও ফিল ফোডেন।
লিগে টানা তিন জয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকা আর্সেনালের সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে আনল ম্যান সিটি। ১৫ ম্যাচে ১০ জয়, এক ড্র ও ৪ হারে পেপ গার্দিওলার দলের পয়েন্ট ৩১। সমান ম্যাচে দুই পয়েন্ট বেশি নিয়ে ১ নম্বরে আর্সেনাল। ২৩ পয়েন্ট সংগ্রহ করা সান্ডারল্যান্ডের অবস্থান সাত নম্বরে। আর বোর্নমাউথের বিপক্ষে ড্র করা চেলসি ২৫ পয়েন্ট অর্জন করে চারে আছে।
প্রিমিয়ার লিগের চলতি আসরে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে বড় চমক সান্ডারল্যান্ড। চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে উঠে আসা ক্লাবটি জায়ান্ট ক্লাবগুলোর বিপক্ষে বেশ লড়াই করে আসছে। তবে আজ সিটির সঙ্গে একেবারেই পেরে উঠেনি তারা। ৬৪ শতাংশ বল পজেশন ধরে রেখে ১৮টি শট নিয়ে পাঁচটি লক্ষ্যে রাখে সিটি। যেখানে মোট আটটি শট নেওয়া সান্ডারল্যান্ড মাত্র একটি গোলমুখে রেখেছে।
৩১ মিনিটে রুবেন দিয়াজের সৌজন্যে প্রথম গোল পায় সিটি। ৩০ গজ দূর থেকে বজ্রগতির এক নিখুঁত শটে জাল কাঁপান এই পর্তুগিজ ডিফেন্ডার। সিটির পরের গোলটিও আসে এক ডিফেন্ডারের নৈপুণ্যে। ৪ মিনিট পরই ব্যবধান ২-০ করেন গাভার্দিওল। ফোডেনের নেওয়া কর্নার থেকে দুর্দান্ত হেডে লক্ষ্যভেদ করেন সিটির ক্রোয়েট ডিফেন্ডার।
২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়া সিটি ৬৫ মিনিটে ব্যবধান ৩-০ করে। আগের গোলের যোগানদাতা ফোডেন এবার গোলদাতার ভূমিকায়। অসাধারণ এক প্রতি-আক্রমণ থেকে রায়ান চেরকির ক্রস থেকে ব্যবধান ৩-০ করেন ফোডেন।
বার্সেলোনার বিপক্ষে জয়ের পর থেকে পথ হারিয়েছে চেলসি। ঘরের মাঠে ব্লুজরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কাতালান ক্লাবটিকে ৩-০ গোলে হারানোর পর টানা তিন ম্যাচ জয়শূন্য। লিগে আর্সেনালের বিপক্ষে ড্রয়ের পর লিডসের বিপক্ষে হার, আর আজ বোর্নমাউথের কাছে ড্র।
বোর্নমাউথের মাঠে ম্যাচের সব পরিসংখ্যানেও পিছিয়ে ছিল চেলসি। স্বাগতিকদের ১৩ শটের বিপরীতে এঞ্জো মারেস্কার দল শট নেয় ১১টি। বোর্নমাউথের লক্ষ্যে ছিল পাঁচটি, আর চেলসির চারটি।

ভিলা পার্কের গ্যালারিতে তখন নিস্তব্ধ উত্তেজনা। ম্যাচটা বুঝি ড্রয়েই শেষ হবে—এমনই ধারণা তৈরি হয়েছিল। ঠিক তখনই প্রায় ৪৩ হাজার দর্শকের সামনে রূপকথা লিখলেন আর্জেন্টাইন উইঙ্গার এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া। যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে তাঁর দুর্দান্ত গোলে আর্সেনালকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে প্রিমিয়ার লিগে দারুণ এক জয় তুলে নিল অ্যাস্টন ভিলা।
আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার বুয়েন্দিয়ার আগে প্রথমার্ধে ভিলাকে এগিয়ে নেন ডিফেন্ডার ম্যাটি ক্যাশ। আর্সেনালের একমাত্র গোলটি করেন লিয়ান্দ্রো ট্রসার্ড।
৩৬ মিনিটে আস্টন ভিলার হয়ে ম্যাচের প্রথম গোলটি করেন ম্যাটি। ক্লাবের হয়ে মৌসুমে এটি তাঁর তৃতীয় গোল। ৫০ মিনিটে মার্টিন ওডেগার্ডের ভাসানো ক্রস থেকে শট নেন ট্রসার্ড, তবে তা ডান দিকের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
তার দুই মিনিট পরই সমতায় ফেরে আর্সেনাল। বুকায়ো সাকার ক্রস ডিফ্লেক্ট হয়ে ট্রসার্ডের কাছে যায়, কাছ থেকে বল জালে জড়িয়ে সমতাসূচক গোলটি করেন বেলজিয়ান মিডফিল্ডার।
৬৫ মিনিটে ভিলা স্ট্রাইকার ওয়াটকিনস কোণকুণি শট নেন, তবে আর্সেনাল গোলকিপার ডেভিড রায়া ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন। ৭০ মিনিটে প্রায় ২০ গজ দূর থেকে জোরালো শট নেন ওডেগার্ড, তবে ভিলা গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ অসাধারণ সেভ করে দলকে রক্ষা করেন।
ম্যাচের যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে (৯০+৫) এসে নাটকীয়ভাবে জয় নিশ্চিত করেন ভিলার বুয়েন্দিয়া। ১০ গজ দূর থেকে নেওয়া শটে বল জালে জড়িয়ে তিন পয়েন্ট এনে দেন ভিলাকে। চলতি মৌসুমে আর্সেনালের এটি দ্বিতীয় হার।
লিগে ১৫ ম্যাচে ১০ জয়, তিন ড্র ও দুই হারে ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে আর্সেনাল টেবিলের শীর্ষে টিকে রইল। সমান ১৫ ম্যাচে ৯ জয়, তিন ড্র ও তিন হারে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে উঠে এসেছে অ্যাস্টন ভিলা।

২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র হয়ে গেছে গতকাল শুক্রবার। আজ রাতে ঠিক হবে মেগা এই টুর্নামেন্টের ফিকশ্চার। তার আগে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে কোন দলের ফর্ম কেমন ছিল এবং কোন দলকে ফেভারিট মানছেন বুকমেকাররা তা নিয়েই এই আয়োজন।
ইংল্যান্ড: ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ৮ ম্যাচ খেলে সবকটিতে জিতেছে ইংল্যান্ড। এই ৮ ম্যাচে তারা ২২বার প্রতিপক্ষের জাল কাঁপিয়েছে। বিপরীতে সবগুলো ম্যাচে নিজেদের জাল অক্ষত রেখেছে। গত দুটি ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে রানার্সআপ এবং তিন বছর আগে কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালিস্টদের নিয়ে এবার বাজি ধরার পক্ষে অনেকেই। হেড কোচ টমাস টুখেলের অধীনে ২০২৬ সাল থ্রি লায়নসদের বছর হবে মনে করেন অনেকে।
স্পেন: বেশিরভাগই লোকই ইংল্যান্ডের পর দ্বিতীয় ফেভারিট হিসেবে মানছেন স্পেনকে। ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নরাও ইংল্যান্ডের মতো নিখুঁত বাছাই পর্ব শেষ করার দ্বারপ্রান্তে ছিল। তবে বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচে তাদের ২-২ গোলে রুখে দেয় তুরস্ক। স্পেনের শতভাগ জয়ের রেকর্ডে দাগ বসিয়ে দেয় দলটি। ২০২৪ সালের ইউরো ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা জেতে স্পেন। বার্সেলোনার উইঙ্গার লামিন ইয়ামালের মতো তাদের দলে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের একজন রয়েছে।
ফ্রান্স: ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার কাছে পেনাল্টি শুটআউটে হেরে রানার্সআপ হয় ফ্রান্স। দিদিয়ের দেশমের অধীনে তাদের আরেকটি মেজর টুর্নামেন্টের আগে ইউরোপীয় বাছাইপর্বে অপরাজিত ছিল দলটি। অপটার সুপার-কম্পিউটার তিনটি দলকে ফেভারিট হিসেবে রেখেছে- স্পেনকে ১৭%, ইংল্যান্ডকে ১১.৮% এবং ফ্রান্সকে ১৪.১%।
এবারের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে হেরেছিল জার্মানি। কিন্তু পরবর্তী পাঁচটি ম্যাচ জিতে তারা জায়গা নিশ্চিত করে। অন্যদিকে সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ক্রোয়েশিয়া এবং নরওয়েও ইউরোপীয় বাছাইপর্বে অপরাজিত ছিল।
ব্রাজিল: ব্রাজিলের জন্য বাছাইপর্ব অভিযান কম রোমাঞ্চকর ছিল না। কারণ দলটি কনমেবল টেবিলে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছিল এবং ১৮টি ম্যাচের মধ্যে ছয়টি হেরেছিল। তবে অনেক বুকমেকারই তাদের বিশ্বকাপে চতুর্থ ফেভারিট হিসেবে রেখেছে।
আর্জেন্টিনা: বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। দক্ষিণ আমেরিকার বাছাইপর্বে শীর্ষস্থানে থেকে শেষ করে তারা। তালিকার দুইয়ে থাকা ইকুয়েডরের চেয়ে ৯ পয়েন্ট এগিয়ে ছিল লিওনেল স্ক্যালোনির দল। ব্রাজিলই একমাত্র দল যারা ১৯৫৮ এবং ১৯৬২ সালে টানা দুটি বিশ্বকাপ জিতেছে। তবে লিওনেল মেসির অংশগ্রহণে আশা করা হচ্ছে, সেই গৌরব এবার আর্জেন্টিনা ফিরিয়ে আনবে। যে কারণে তাদেরকে ফেভারিট ধরা হচ্ছে।
এশিয়ান অঞ্চলের বাছাইপর্বের সেরা দল ছিল জাপান। ১০ ম্যাচ খেলে ৭টিতে জয়, দুটিতে ড্র এবং কেবল একটিতে পরাজয় ছিল দলটির। এদিকে কাতারে সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে চমকে দেওয়া মরক্কো তাদের ৮টি আফ্রিকান বাছাইপর্বের ম্যাচ জিতেছে। বিশ্বকাপে এবারও বড় দেশগুলির জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে এই দুটি দল।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ঘোষণা করেছেন- এটি তাঁর শেষ বিশ্বকাপ হবে। পর্তুগাল দলকে বাইরে রেখেও আসলে ফেভারিটের আলোচনায় বসা যায় না। ২০২০ সালের ইউরো জেতা ইতালিকে বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জনের জন্য প্লে-অফের মধ্য দিয়ে আসতে হবে। তবে বড় মঞ্চে একবার উঠে আসলে দলটি যে কোনো সময় বিপজ্জনক হতে পারে।
-সূত্র: বিবিসি