৬ নভেম্বর ২০২৫, ৩:৩৮ পিএম

পল্টনের আউটার মাঠের বৃহস্পতিবার সকালের আবহটা ছিল একটু ভিন্ন। চারিদিকে সামিয়ানা মোড়ানো। গেটের সামনে কড়া নিরাপত্তা। মাঠের বাইরটাও পরিপাটি ও পরিচ্ছন্ন। পশ্চিম দিকের গেট দিয়ে ঢুকতেই দেখা গেল অন্যরকম দৃশ্য। স্থানীয়দের খেলার মাঠে বসানো আর্চারির টার্গেট বোর্ড। কয়েকজন আর্চার তির-ধনুক নিয়ে টার্গেট নিশানায় ব্যস্ত, যাঁরা শনিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া এশিয়ান আর্চার চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিচ্ছেন।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে ৩০টিরও বেশি দেশ। ৮-১২ নভেম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে, পরের দুই দিনের প্রতিযোগিতা গড়াবে আর্মি স্টেডিয়ামে। সে লক্ষ্যে আউটার মাঠে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সারছেন আর্চাররা।
প্রতিযোগিদের বেশিরভাগই কম্পাউন্ড আর্চারির প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। একজনের মাঝে ভিন্নতা দেখা গেল। গভীর মনোযোগে রিকার্ভে নিশানাভেদে ব্যস্ত তিনি। প্রাকটিস কিটে প্যালেস্টাইনের পতাকা। তাতেই স্পষ্ট তাঁর আগমন বার্তা।
আলাপচারিতায় জানা গেল, রাশা ইয়াহিয়া আহমেদ প্যালেস্টাইনের নাগরিক। প্রথমবারের মতো এসেছেন বাংলাদেশে। তাঁর মুখে শোনা গেল বাংলাদেশ নিয়ে উচ্ছ্বাস,
‘বিমানবন্দর থেকেই সবাই অত্যন্ত আন্তরিক ও অতিথিপরায়ণ ছিলেন। বিমানবন্দর থেকে হোটেলে যাওয়ার পুরো পথে সবাই খুবই ভদ্র ও বন্ধুসুলভ। আমি খুবই খুশি। সবাই আমাদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছে এবং সমর্থন দেখিয়েছে।’
দীর্ঘসময় প্যালেস্টাইনে নির্মমতা চালাচ্ছে ইসরায়েল। দখলদারদের হামলা থেকে রেহায় পাচ্ছে না ছোট-বড় কেউই। সাময়িক যুদ্ধবিরতির কথা বলা হলেও প্যালেস্টাইনের শহর ও গ্রামে ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ সেটলারদের হামলা বেড়েই চলেছে।
প্যালেস্টেইনে বর্বর হামলার প্রতিবাদে প্রায়ই মিছিল হয় বাংলাদেশে। বিষয়টি রাশার অজানা নয়। তিনি কৃতজ্ঞ, এবং জানিয়েছেন একদিন বাংলাদেশের জনগণকে নিজ দেশ প্যালেস্টিনে আমন্ত্রণ জানাবেন,
‘আমরা জানি এবং অনুভব করি, বাংলাদেশ আমাদের পাশে আছে। আমি এখানে এসেই সেই ভালোবাসা ও সমর্থন অনুভব করেছি। অনেক মানুষ এগিয়ে এসে সমর্থন দিয়েছেন। আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই—আপনাদের এই সমর্থন আমাদের কাছে পৌঁছায়, আমরা তা গভীরভাবে কৃতজ্ঞচিত্তে গ্রহণ করি। ইনশাআল্লাহ, একদিন আমরা আপনাদের প্যালেস্টিনে স্বাগত জানাব।’
রাশার জন্ম প্যালেস্টাইনের গাজা শহরে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে এই আর্চার এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাজ করছেন। সেখানে একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে স্ট্র্যাটেজিক অফিস ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কাজের ফাঁকে চালিয়ে যান আর্চারির প্রাকটিস। এতে পূর্ণ সমর্থন পান ফিলিস্তিন আর্চারি ফেডারেশন থেকে।
বছর চারেক আগে আর্চারিতে যাত্রা শুরু রাশার। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছেন বাংলাদেশে। এখানে পদক জয়ের পাশাপাশি প্যালেস্টাইনের পতাকা বাংলাদেশে ওড়াতে চান তিনি,
‘আমরা পতাকা উড়াই ঐক্যের প্রতীক হিসেবে এবং এটা আমাদের লড়াই করার মনোবল আরও বাড়ায়।’
রাশার সেই লড়াই ও অনুপ্রেরণার গল্পে জড়িয়ে কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল। তিনি বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে এশিয়ান আর্চারি ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাশার সঙ্গে আলাপচারিতার শেষ দিকে মাঠে ঢোকেন বাংলাদেশ আর্চারির এই রূপকার। তাঁকে দেখে এগিয়ে কুশলাদি বিনিময় করেন রাশাসহ প্যালেস্টাইন থেকে আসা আরও তিন আর্চার ও কোচ।
রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল বলেন,
‘এই ছেলেমেয়েরা আমার সন্তানের মতো। তাঁরা কিন্তু আমাকে বাবা বলেও ডাকে। আপনারা জানেন, আরবিতে বাবাকে বাবা-ই বলে। রাশার সঙ্গে আমার দেখা ৫-৬ বছর আগে। তখনই সে আমাকে বলেছিল আর্চারি খেলতে চায়, বাংলাদেশে আসতে চায়। এরপর বছর তিনেক আগে জর্ডানে একটি আর্চারির টুর্নামেন্টে দেখি সে খেলছে। তাকে বলেছিলাম, তোমাকে বাংলাদেশে নিয়ে যাব। এবার চ্যাম্পিয়নশিপে চারজন এসেছে। শুধু তাঁরা নয়, ১০ দেশের অন্তত একশ জনকে সবধরনের সহায়তা করছি আমরা।’
এবারই প্রথমবার আর্চারির কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশে এলেন প্যালেস্টাইনের আর্চাররা। এখানকার আয়োজন ও অভ্যর্থনায় বেশ সন্তুষ্ট রাশা। বাংলাদেশে এসে মিষ্টি খাওয়া হয়েছে তাঁর। সামনে আরও কিছু স্থানীয় খাবারের স্বাদ নিতে চান তিনি।
রাশার সবচেয়ে বড় ইচ্ছে আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে রিকার্ভে পদক জেতা,
‘যখন আমি প্যালেস্টাইনের জার্সি পরি, এটা আমার জন্য অনেক অর্থবহ। আমি সবসময় সঙ্গে প্যালেস্টাইনের পতাকা রাখি। এটা অনন্য অনুভূতি, যা কথায় প্রকাশ করা যায় না।’
সবিশেষ ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে বাংলা ভাষায় রাশা বলেন,—
“প্যালেস্টাইন, বাংলাদেশ ভালোবাসি।”
No posts available.
২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১:৩১ পিএম
২৪ নভেম্বর ২০২৫, ৫:০৬ পিএম

অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন, দ্রুতই ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি খেলার কথা তাঁর। তবে জন সিনা রেসলিং ছাড়লেও সেটি কখনোই পুরোপুরি ছেড়ে যাওয়া হবে না, বলছেন সাবেক ডব্লিউডব্লিউই উইমেনস চ্যাম্পিয়ন ন্যাটালিয়া নিডহার্ট। রেসলিং–জগতে অবদান ও ব্যক্তিত্ব নিয়ে জন সিনাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন তিনি। পর্দা বা রিংয়ের বাইরে জন সিনার অন্য এক প্রশংসিত রূপের কথা জানিয়েছেন ন্যাটালিয়া।
বাস্টেড ওপেন রেডিওর সাক্ষাৎকারে ন্যাটালিয়া সিনার ব্যাপারে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। শুরুর দিক থেকেই তরুণ রেসলারদের পাশে থাকার জন্য সিনাকে কৃতিত্ব দেন ন্যাটালিয়া, ‘প্রথম ম্যাচ শুরু হতেই… যেই ম্যাচেই তিনি না থাকেন, সেগুলোও তিনি দেখতেন। ম্যাচ শেষে যে-ই ব্যাকস্টেজে ফিরত, জন তাদের সঙ্গে বসে কথা বলত, আলোচনা করত।’
রিয়্যালিটি শো টোটাল ডিভাসের সাফল্যেও সিনার বড় অবদান আছে বলে মনে করেন ন্যাটালিয়া। বললেন, ‘আমরা মেয়েরা শো’টা সফল করতে চেয়েছিলাম, আর জনও চাইত। সে নিজেকে সামনে এনে সহায়তা করেছে। শোর সাফল্যের বড় অংশ ছিল জন। টিজে (টায়সন কিড) চোট পেয়ে হাসপাতালে থাকার পর জন আমাদের দুজনকে ডিনারে নিয়ে গিয়েছিল। সে টিজেকে বুঝিয়েছিল— ও এখনো গুরুত্বপূর্ণ, কেউ তাকে ভুলে যায়নি।’
আরও পড়ুন
| সফল নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজনে প্রশংসায় ভাসছে বাংলাদেশ |
|
ডব্লিউডব্লিউইর কঠিন সময়গুলোতে সিনার ইতিবাচক ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন ন্যাটালিয়া। তাঁর ভাষায়, ‘এটা এমন এক বিষয়, যা আমরা প্রায়ই বলি না… কারণ ঘটনাটা খুবই ট্র্যাজিক। কিন্তু জন ডব্লিউডব্লিউই কে এমনভাবে সহায়তা করেছে, যা বিশাল। আমি ওর সঙ্গে কাজ করেছি বলে গর্ব করি, ট্যুরে একসঙ্গে থাকতে পেরে গর্ব করি, বন্ধুর মতো ওকে চিনি বলেও গর্ব করি।’
রেসলিংকে ‘হোটেল ক্যালিফোর্নিয়ার’ সঙ্গে তুলনা করে সিনার সম্পর্ক ব্যাখ্যা করেন ন্যাটালিয়া। সাবেক ডব্লিউডব্লিউই উইমেনস চ্যাম্পিয়ন বলেন, ‘রেসলিং এমন জায়গা, তুমি চাইলে বেরিয়ে যেতে পারো, কিন্তু কখনোই পুরোপুরি ছাড়তে পারবে না। জন রেসলিংয়ের ভেতরেই রয়ে গেছে। সে সবসময়ই এই শিল্পের অংশ হয়ে থাকবে।’
দ্রুতই জন সিনার বিদায়ী ইভেন্ট শুরু হচ্ছে। ১৩ ডিসেম্বর রিংয়ে শেষ বারের মতো প্রতিযোগিতায় নামার কথা যুক্তরাষ্ট্রের এই রেসলারের।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ভোরের পাতা পত্রিকার ক্রীড়া সাংবাদিক জহির উদ্দিন ভূঁইয়া (৫৩) নিহত হয়েছেন। রবিবার (৩০ নভেম্বর) বিকালে খিলগাঁও ফ্লাইওভারে দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি।
গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে জহিরকে উদ্ধার করে মুগদা হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে বিকেল ৫টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহতের ছেলে রাকিব উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, তাঁর বাবা অফিসে রওনা দেওয়ার কিছুক্ষণ পর ফোনে দুর্ঘটনার খবর দেন পথচারীরা। তাঁকে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে বাবাকে মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান তিনি। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, নিহতের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহত সাংবাদিক জহির উদ্দিন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার চাপিতলা গ্রামের শামসুদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে। বর্তমানে তিনি সবুজবাগ থানাধীন বাসাবো ১৭ নং গলির নিজের বাসায় থাকতেন। তিনি দুই মেয়ে ও এক সন্তানের জনক ছিলেন।

সোমবার ঢাকায় শেষ হয়েছে ১০ দিনব্যাপী নারী কাবাডি বিশ্বকাপ। সফল এই আয়োজন বিশ্ব কাবাডি অঙ্গন দীর্ঘ দিন মনে রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। আয়োজনের কৃতিত্বের দাবিদার সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন (বিকেএফ) এবং তাদের সহযোগিরা।
এর আগে ২০১২ সালে ভারতের পাটনায় প্রথমবার হয়েছিল নারী কাবাডি বিশ্বকাপ। দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় পর বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন আবারও নারী কাবাডিকে বিশ্বমঞ্চে ফিরিয়ে এনেছে।
বিশ্বকাপ খেলে যাওয়া ইরানের খেলোয়াড় আসমা ফাখরি বলেন,
‘বাংলাদেশ খুব ভালোভাবে টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছে। এখানকার মানুষ খুবই আন্তরিক। এখানে সবাই মিলে সময়টা খুব উপভোগ করেছি। আশা করি ভবিষ্যতে সব দেশ বাংলাদেশকে অনুসরণ করে এমন আয়োজন করবে।’
শিরোপা জয়ী ভারতীয় নারী কাবাডি দলের কোচ তেজস্বিনী বাইয়ের কণ্ঠেও ঝরেছে বাংলাদেশের প্রশংসা,
‘চমৎকার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ।আয়োজন ছিল শীর্ষমানের। এখানকার জল-হাওয়া, আবাসন, খাবার ভীষণ উপভোগ্য। আমি মনে করি বাংলাদেশ প্রমাণ দিয়েছে তারাও বড় টুর্নামেন্ট আয়োজনের সামর্থ্য রাখে।’
আসরের ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল চাইনিজ তাইপে। গত আসরের মতো এবারও শিরোপা গেছে ভারতের ঘরে। তবে আগের আসরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া চাইনিজ তাইপের ফাইনালে আসাটা ছিল বড় চমক। দলটির কোচ ডেভিড সাই—তাইপের প্রথম জাতীয় দলের খেলোয়াড়।
২০০৯ সালে কাবাডিতে হাতেখড়ির পর ডেভিড ভারতের প্রো-কাবাডি লিগে টানা দুই মৌসুম খেলেছেন। দীর্ঘ সময়ে ভারতে থেকে কাবাডি সম্পর্কে সম্যক ধারণা পেয়েছিলেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজ দেশে তাইপেকে পরাশক্তিতে রূপ দিতে বড় ভূমিকা রাখছেন তিনি।
বাংলাদেশের আয়োজন নিয়ে ডেভিড বলেন,
‘ব্যবস্থাপনা সত্যিই চমৎকার। একদম বিশ্বমানের আয়োজন। তাইপেতে কাবাডি জনপ্রিয় নয়, সেখানে কোনো সমর্থনও নেই। বাংলাদেশ অসাধারণ কাজ করেছে। বিশ্বাস করি এর ফলে অন্য দেশও এমন আয়োজন করতে উৎসাহ পাবে।’
চাইনিজ তাইপের আই মিন লিন টুর্নামেন্টের সেরা রেইডারের খেতাব জিতেছেন। তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন,
‘বাংলাদেশের আতিথেয়তায় আমি অবাক হয়েছি, কারণ সংবাদে যা শুনেছিলাম তা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে অনেক মানুষ, এবং সবাই বাংলাদেশকে উৎসাহ দিচ্ছে। এটা দেখে মনে হয়েছে— আমাদের দেশের মানুষও যদি আমাদের এভাবেই সমর্থন দেয়, আমরাও বহুদূর এগিয়ে যাব।’
প্রথমবার বিশ্বকাপে খেলতে এসে কেনিয়ার অধিনায়ক মার্সি আকিনিয়ি ওবিয়েরো বলেন,
‘এখানকার অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। আবহাওয়া কেনিয়ার মতোই। মনে হচ্ছে যেন নিজের দেশে আছি। এটি আমাদের প্রথম বিশ্বকাপ, সবচেয়ে বড় মঞ্চ। আমাদের লক্ষ্য ছিল এখানে আনন্দ করা এবং প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করা।’
জার্মানিও প্রথমবার অংশ নেয় বিশ্বকাপে। তাদের অধিনায়ক এমা অ্যাটলে বলেন,
‘অসাধারণ ছিল সবকিছু। প্রথমে কোর্টে ঢোকার সময় আমরা নার্ভাস ছিলাম, কিন্তু এখন খুব উপভোগ করছি।’
সবচেয়ে জোরালো প্রশংসা এসেছে একেএফ (এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশন)- এর মহাসচিব মোহাম্মদ সারওয়ার রানার কাছ থেকে, ‘ব্যবস্থাপনা একেবারে বিশ্বকাপের মানের— বরং তার চেয়েও বেশি। বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে যে ভবিষ্যতে তারা বড় বড় কাবাডি আসর আয়োজন করতে সক্ষম।’
কাবাডি বাংলাদেশের জাতীয় খেলা হলেও গুরুত্বের দিক থেকে ফুটবল-ক্রিকেটের সমান মনোযোগ পায় না। তবে এবার বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন প্রতি ম্যাচেই প্রচুর দর্শক আনতে সক্ষম হয়েছে। নিরাপত্তার কড়াকড়ির মাঝেও তারা বিনামূল্যে দর্শকদের গ্যালারিতে জায়গা করে দিয়েছে।

ভারতের শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে পর্দা নামলো নারী কাবাডি বিশ্বকাপের। রোমাঞ্চকর ফাইনালে চায়নিজ তাইপেকে ৩৫–২৮ পয়েন্টে হারিয়েছেন ভারতের সাঞ্জু দেবীরা।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে আজ প্রথমার্ধে ২০–১৬ পয়েন্টে এগিয়ে বিরতিতে যায় ভারত। বিরতির পর ব্যবধান কমানো দূরে থাক, উল্টো ম্যাচ থেকে ধীরে ধীরে ছিটকে যায় চায়নিজ তাইপে। ম্যাচ শেষ হওয়ার চার মিনিট আগে চায়নিজ তাইপে ফেরার আভাস দিলেও ভারতের স্কোর আর ধরতে পারেনি।
খালি হাতে বিশ্বকাপ শেষ করেনি বাংলাদেশ। স্বাগতিকরা জিতেছে ব্রোঞ্জ। ব্যক্তিগতভাবে আসরের সেরা ডিফেন্ডারের পুরস্কার জিতে টুর্নামেন্টটি স্মরণীয় করে রেখেছেন স্মৃতি আক্তার।
দলীয় পুরস্কারের পাশাপাশি তিনটি ব্যক্তিগত পুরস্কার দেওয়া হয়েছে সমাপনীতে। তৃতীয় ব্যক্তিগত পুরস্কার জিতেছেন চাইনিজ তাইপের মিন লিন, যিনি আসরের সেরা রেইডার হয়েছেন।
সমাপণী অনুষ্ঠানে প্রধাণ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সচিব মাহবুব-উল-আলম।। চ্যাম্পিয়ন দলের হাতে ট্রফি তুলে দিয়েছেন তিনি। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি আব্বাস আভারসেজি, প্রো কাবাডির লিগ কমিশনার অনুপম গোস্বামী ও আন্তর্জাতিক কাবাডি ফেডারেশনের পরিচালক তেজস্বী সিং গেলত।

নির্বাচনী প্রচারণায় জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ব্যবহার না করার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। আজ এক চিঠিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তারা।
এনএসসির চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা দেশের সম্পদ এবং নাগরিকদের একাত্মতার প্রতীক। তাঁদের ভাবমূর্তি কোনো রাজনৈতিক বা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়া ক্রীড়াঙ্গনের নিরপেক্ষতা ও পবিত্রতার জন্য ক্ষতিকর।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জানিয়েছে, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিছু মহল বা ব্যক্তি খেলোয়াড়দের নির্বাচনী প্রচারণায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন। এটি ক্রীড়ানীতি বিরোধী এবং ক্রীড়াঙ্গনের পরিবেশ কলুষিত করতে পারে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্দেশনা, জাতীয় দলের কোনো খেলোয়াড়কে সরাসরি অথবা পরোক্ষভাবে রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচারণায় বা কোনো প্রার্থীর পক্ষে ব্যবহার করা যাবে না।
খেলোয়াড়দের কোনো নির্বাচনী সভার মঞ্চে এবং প্রচারণামূলক কার্যক্রমে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। সব খেলোয়াড়কে তাঁদের ক্রীড়া নৈপুণ্যের মাধ্যমে দেশের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
এনএসসি সতর্ক করেছে, এই নির্দেশনার ব্যত্যয় দেশের সুস্থ ক্রীড়া পরিবেশকে মারাত্মকভাবে কলুষিত করতে পারে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করাতে বলা হয়েছে।