গত বছরটা দারুণভাবে শেষ করা ভিনিসিয়ুস জুনিয়র নতুন বছর শুরু করেছেন লাল কার্ড দেখে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা তবে তাতেও সমর্থকদের মন গলেনি। সমালোচনা হচ্ছে তার মাঠের আচরণ নিয়ে। কঠিন সময়ে ভিনিসিয়ুস অবশ্য পাশে পেয়েছেন কোচ কার্লো আনচেলত্তিকে। ইতালিয়ান এই কোচের মতে, ভিনিসিয়ুস হওয়াটা ভীষণ কঠিন কাজ।
মাঠের পারফরম্যান্স ভিনিসিয়ুস এখন বিশ্ব সেরাদের কাতারে। গত বছর প্রথমবারের মত জিতেছেন ফিফার দ্য বেস্ট খেতাব। তবে নানা কারণে নিয়মিতই প্রতিপক্ষ সমর্থকদের রোষানলে পড়তে হয় তাকে। বিশেষ করে অ্যাওয়ে ম্যাচে ২৪ বছর বয়সী এই ফুটবলারকে বরাবরই সমর্থকরা কিংবা প্রতিপক্ষ ফুটবলাররা ক্ষেপিয়ে তোলার ফন্দি আটেন। যেখানে নিয়মিতই পা দিতে দেখা যায় ভিনিসিয়ুসকে। তেমনই একটি দৃশ্যপটের পুনরাবৃত্তি হয় ভ্যালেন্সিয়া ম্যাচে।
আরও পড়ুন
ছুটির মাঝেই আনচেলত্তিকে ‘কঠিন বার্তা’ এন্দ্রিকের |
ম্যাচ শুরুর আগেই ভিনিসিয়ুসের ব্যালন ডি’অর না জেতার ফেস্টুন নিয়ে হাজির হন ভ্যালেন্সিয়ার সমর্থকরা। ম্যাচ শুরু হতেই তার পায়ে বল যেতে শিস দিয়ে বার বার ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডকে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা করে তারা। সমর্থকদের সামাল দিতে পারলেও ভ্যালেন্সিয়া গোলকিপারের পাতা ফাঁদে ঠিকই পা দিয়েছেন ভিনিসিয়ুস। তাতে লাল কার্ড দেখে ছেড়েছেন মাঠ। আর আরও একবার তৈরি করেন সমালোচনার প্রেক্ষাপট।
ভ্যালেন্সিয়া ম্যাচ শেষে আনচেলত্তি দাবি করেছিলেন, লাল কার্ড দেখানো ঠিক হয়নি ভিনিসিয়ুসকে। রিয়ালের কোপা দেল রের পরবর্তী ম্যাচের আগে ফের তার শিষ্যের প্রতি জানিয়েছেন সমর্থন।
“এটা লাল কার্ড ছিল না, সর্বোচ্চ হলুদ কার্ড দেওয়া যেতো। সে জন্য আমরা আশা করছি সে নিষেধাজ্ঞা পাবে না। তার জায়গায় নিজেকে রাখলে বোঝা যায়, এমন পরিস্থিতি সামলানো কতটা কঠিন। যে পরিমাণ অপমান তাকে সইতে হয়, তা সহ্য করা সত্যি কঠিন। এটা কঠিন, তবে সে নিজেকে আরও পরিপক্ক করতে চেষ্টা করছে। সে লাল কার্ড নিয়ে দুঃখিত, নিজের ভুল বুঝতে পেরে দুঃখ প্রকাশ এরই মধ্যে করেছে। আমাদের এখন তাই সামনের দিকে তাকাতে হবে।”
আরও পড়ুন
রিয়ালের হয়ে শিরোপা জেতা সবচেয়ে সহজ কাজ: আনচেলত্তি |
তবে সমালোচনা যতই হোক, ভিনিসিয়ুস নিজের ছন্দটা ঠিকই ধরে রেখেছেন। এরই মধ্যে চলতে মৌসুমে ২১ ম্যাচ খেলে করেছেন ১৩ গোলের পাশাপাশি ৯টি অ্যাসিস্টও।
গত মৌসুম থেকে যেভাবে গুঞ্জন ভাসছিল বাতাসে, আগামী গ্রীষ্মেই রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেবেন বায়ার্ন মিউনিখ ডিফেন্ডার আলফোন্সো ডেভিস। আর সেটা ফ্রি এজেন্ট হিসেবে। তাতে স্প্যানিশ ক্লাবটির লেফট ব্যাক সমস্যার একটা স্থায়ী সমাধান হবে বলেই আশায় ছিলেন সমর্থকরা। তবে তাদের সেই আশায় গুড়ে বালি দিয়ে কানাডিয়ান এই ডিফেন্ডার চুক্তি নবায়ন করেছেন বায়ার্নের সাথেই।
বুধবার বায়ার্নের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে ডেভিসের চুক্তি নবায়নের খবর। ২০৩০ পর্যন্ত বুন্দেসলিগার ক্লাবটির জার্সিতেই দেখা যাবে ডেভিসকে।
চুক্তি নিয়ে গেল এই মৌসুমের শুরু থেকেই দুই পক্ষের মাঝে চলছিল আলোচনা। বায়ার্নের পক্ষ থেকে বারবার প্রস্তাব দেওয়া হলেও ডেভিস সেটাকে সায় দেননি। তাতে গুঞ্জন চলছিল দল ছাড়ার দিকেই এগুচ্ছেন তিনি। ইএসপিএন সহ বেশ কিছু গণমাধ্যম জানিয়েছিল, পরবর্তী মৌসুমের ডেভিসের গন্তব্য হতে যাচ্ছে রিয়াল।
তবে জানুয়ারি মাস আসতেই বদলে যেতে থাকে চিত্র। লম্বা সময় ধরে প্রস্তাবে সায় না দেওয়া ডেভিসের মন গলতে শুরু করে। আর ফেব্রুয়ারিতে এসে তো রাজি হয়েছেন চুক্তি নবায়নে। তাতে ২৫ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডারকে দলে টানতে হলে রিয়ালকে এখন গুনতে হবে বড় অর্থই।
মাত্র ১৮ বছর বয়সে ডেভিস যোগ দেন বায়ার্নে। তাই ক্লাবের প্রতি তার আছে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা।
“অসাধারণ এই ক্লাবের সাথে চুক্তি বাড়িয়ে নিতে পেরে আমি বেশ খুশি। ১৮ বছর বয়সে আমি এই ক্লাবে এসেছিলাম, শেখার জন্য, নিজের পজিশনে সেরা হবার জন্য। এখন আরও পাঁচ বছর একসাথে আমরা চলতে পারবো। অনেক কিছু ক্লাবের হয়ে জিতেছি, আরও অনেক কিছুই জেতার সুযোগ রয়েছে সামনে।”
চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ডেভিস খেলেছেন ২৫ ম্যাচ। এক গোলের পাশাপাশি করেছেন তিন অ্যাসিস্ট।
বাবা হিমশিম খেতেন চার সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে। একবেলা পৌরসভায় মালির চাকরি, অন্যবেলায় এলাকার ক্লাবে কিট ম্যান। এতসবের মধ্যেও রোনালদোকে ফুটবলার বানাতে ছিল আপ্রাণ প্রয়াস। সেই বাবা আজকের রোনালদোকে দেখে যেতে পারেননি। যা নিয়ে দ্য গ্রেটের আক্ষেপের অন্ত নেই।
সালটা ১৯৮৫। মাদেইরাতে রোনালদো যখন মায়ের গর্ভে। ডাক্তার বলেছিলেন বাচ্চাটা রাখা মায়ের আর সন্তানের দুজনের জন্যেই ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে মায়ের মন মানেনি কোন ভাবেই। হাজারো অনিশ্চয়তার ভীড়ে নিজের সন্তানকে জন্ম দেন ঠিকই। আর বিশ্ব পায় ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো দস সান্তোস অ্যাভেইরোকে।
সেই দিনের একে একে কত বসন্ত পার হলো। আজকের ৫ ফেব্রুয়ারিতে সংখ্যাটা নাকি ৪০ হলো, রোনালদো? সত্যিই, এসব অবিশাস্য কিছুও বিশ্বাস করতে হয়? আমরা তো আজও সেই তরুণ রোনালদোকেই দেখি। যে গোল করে, গোল করায়। নিত্যনতুন উদযাপন করে দেখায়। আচ্ছা, সংখ্যাটাই স্রেফ বেড়েছে। নাহ বয়স কিন্তু আপনার বাড়ছে না রোনালদো। ওই বয়স নামক বস্তুটা আপনাকে ছুঁতেই পারেনা। তাইতো ওসব চল্লিশ টল্লিশ কেউ গোনে না, আপনার ১০০০ গোলের স্বপ্নে দিবারাত্রি বিভোর ভক্তরা।
মাদেইরায় সেদিন আপনার পরিবার আপনাকে পেয়ে কতটা খুশি হয়েছিল? পরিবারের সবচেয়ে ছোট্ট মেহমান হিসেবে তারা পেয়েছিল আপনাকে। ঘরে তো আরো সন্তান ছিল আপনি কি আলাদা ছিলেন তাদের থেকে? ছিলেন। আপনি তো আলাদাই, সেটা সেদিন কেউ না বুঝলেও আজ গোটা দুনিয়া জানে।
আমরা রোনালদোকে দেখি। রোনালদোর প্রাপ্তি দেখি। দেখি গোল, দেখি রেকর্ড। অথচ রোনালদোর অন্য একটা পাশ রয়েছে। যেখানে থাকে অপ্রাপ্তি নামক শব্দটাও। যেখানে থাকে বাবার সাথে মন খুলে কথা না বলতে পারার আফসোস।
বাবা মাঝে মাঝে স্কুল পরিষ্কারেরও কাজ করতেন। তার জন্য দিনের পর দিন বন্ধুদের থেকে শুনতে হতো খোঁটাও। রোনালদো সবই মনে রেখেছেন। পড়াশোনাটা যে তাকে দিয়ে হচ্ছে না তা বুঝে গিয়েছিলেন আগেই। তার ধ্যান জ্ঞ্যান ছিল ফুটবল, ঘুমোতেও জেতেন ফুটবল কোলে নিয়ে। তারপর একদিন সেই ফুটবলই তো দূর করল তার সব অভাব, দারিদ্র, দুঃখ, কষ্ট।
একদিন কি নিদারুণ অভাব-অনটন কাঁদিয়েছে আপনাকে। কষ্ট দিয়েছে, শিখিয়েছে শক্ত হতে। চার ভাই বোন মিলে বেড়ে উঠেছেন একটা কামরার মধ্যে। গাদাগাদি করে থাকা সেই রাতগুলো? আহ, কেউই দেখেনি সেই অন্ধকারে আপনার আলোয় ঝলমল করা চোখ জোড়াকে। মাদেইরার একটা ছোট্ট ঘর থেকে যে চোখ জোড়া স্বপ্ন দেখেছিল দুনিয়া শাসনের।
রোনালদো প্রায় অনেক ইন্টারভিউতেই আফসোস করে বলেন, নিজের পরিবারে তিনি হীরের টুকরো ছিলেন। বাবা অনেক প্রাউড ফিলও করতেন তাকে নিয়ে। তবে বাবার সাথে কখনও মন খুলে কথা বলা হয়নি। ২০০৫ এ চলে যাওয়া লোকটা এর পরের গল্পটা দেখেননি। তবে রোনালদোর বিশ্বাস, ওপার থেকে ঠিক দেখেন। দুনিয়া জয় করা রোনালদোর এ এক না শেষ হওয়া আক্ষেপের গল্প।
জন্মদিনে আমরা রোনালদোর রেকর্ড দেখি, গোল দেখি, সংখ্যার খেলায় মাতি। আজ নাহয় একটা ছোট্ট শহরের ছোট্ট ছেলের দুনিয়া জয়ের পর তার ভেতের থাকা আফসোসের উপাখ্যান জানলাম। রোনালদো আপনার সে আফসোস এ জগতের কেউই মেটাতে পারবে না। তবে জন্মদিনে একটা শুভেচ্ছাবার্তা রেখে বলতে চাই, আপনি আপনার পরিবারেরই না গোটা দুনিয়ার জলজল করা এক হীরের টুকরো। বয়সের ঘর কেউ মনে রাখবে না। আপনি রোনালদো। বয়স উপাখ্যানটা আপনার জন্য না।
ওই যে আপনি বলেন না, আপনার ভালোবাসা আমাকে শক্তিশালী করে, আপনার ঘৃণা আমাকে অপ্রতিরোধ্য করে।" এই কথার মতোই আপনি যেমন ওদের ঘৃণার কাছে অপ্রতিরোধ্য। তেমনি বয়সের কাছেও।
কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ডাক দিয়েছে গত কয়েকদিন ধরেই আলোচনায় আছেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের ফুটবলাররা। তাদের মধ্যে অন্যতম সাফ জয়ী দলের সদস্য মাতসুশিমা সুমাইয়া এনেছেন গুরুতর অভিযোগ - সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি পাচ্ছেন হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি। এর প্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। যারা এসব কাজ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাবে দেশের ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা।
ঘটনার সুত্রপাত বাটলারের অধীনে আর খেলতে না চাওয়ার হুমকি দিয়ে জাতীয় দলের ১৮ ফুটবলারের দেওয়া এক চিঠিকে কেন্দ্র করে। ইংরেজিতে লেখা সেই চিঠিতে তারা বাফুফেকে সাফ জানিয়ে দেন, বাটলার কোচ থাকলে তারা আর জাতীয় দলের হয়ে খেলবেন না। প্রয়োজনে নেবেন গণ অবসরও।
চিঠিটি ইংরেজিতে হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, এটা কার লেখা বা কে খেলোয়াড়দের লিখে দিয়েছেন। সুমাইয়া জাপানে জন্ম নেওয়া ও সেখানেই বেড়ে ওঠায় ধারণা করা হচ্ছিল তিনিই লিখেছেন চিঠিটি। তিনি নিজেও পরে স্বীকার করেন যে, ওই চিঠিটি তারই লেখা।
পুরো বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মতের মাঝেই বিস্ফোরক এক খবর জানান সুমাইয়া। নিজের ফেসবুক পেজে বিশাল এক পোস্ট দিয়ে জানান, তাকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
“আসসালামু আলাইকুম। আমার নাম মাতসুশিমা সুমাইয়া। আমি বাংলাদেশ মহিলা জাতীয় ফুটবল দলের একজন খেলোয়াড়। ইন্টার স্কুলে খেলা থেকে শুরু করে মালদ্বীপে লীগ জেতা এবং বাংলাদেশের হয়ে সাফ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৪ জেতা-এই যাত্রাটা আমার কাছে বিশ্রী ছিল। আমি আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলাম ফুটবল খেলার জন্য, বিশ্বাস করেছিলাম যে আমার দেশ আমার পাশে থাকবে, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। একজন ক্রীড়াবিদের মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে কেউ সত্যিই চিন্তা করে না। আমার এবং দলের সহকর্মীদের জন্য আমরা যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছি, তা নিয়ে ইংরেজিতে চিঠি লেখার সর্বনিম্ন ক্ষমতা আমার আছে। কয়েকদিন ধরে, আমি অগণিত প্রাণহানি ও ধর্ষণের হুমকি পেয়েছি শব্দগুলি আমাকে এমনভাবে ধ্বংস করেছে যা আমি কল্পনাও করিনি। আমি জানি না, এই আঘাত থেকে সারতে আমার কত সময় লাগবে, কিন্তু আমি জানি, যে কাউকে তাদের স্বপ্ন অনুসরণ করার জন্য এর মধ্য দিয়ে যেতে হবে না।”
মঙ্গলবার রাতে এক বিবৃতিতে বাফুফে এই ঘটনার নিন্দা জানায়। “বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন বাংলাদেশ নারী জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় মাতসুশিমা সুমায়াকে লক্ষ্য করে হুমকি ও হয়রানির তীব্র নিন্দা জানায়। কোনও অ্যাথলেটেরই তার নিজের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য এমন আচরণের মুখোমুখি হওয়া উচিত নয়। বাফুফে তার খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা দিতে এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, কোচ বাটলারের বিরুদ্ধে খেলোয়াড়দের বিদ্রোহের ঘটনা তদন্তে বাফুফে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার তাদের সেই প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে। চলমান এসব ঘটনার মধ্যেও বাটলার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত। অনুশীলনও করাচ্ছেন জুনিয়র ফুটবলারদের।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ হতে ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ ঘোষণা করার প্রেক্ষিতে দেশব্যাপী চলছে নানা আয়োজন। তারই একটি হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডাররেশনের ব্যবস্থাপনায় এবং সিরাজগঞ্জ জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায়।
গত ৩১ জানুয়ারি 'সিরাজগঞ্জ ফুটবল উৎসব' অনুষ্ঠিত হয়। সেই ফুটবল উৎসবে যমুনার চর একাদশ ও কাওয়াকোলা চর একাদশের মধ্যে একটি প্রীতি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ২-১ গোলে জয় লাভ করে যমুনার চর একাদশ।
ফাইনালের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য ও সভাপতি, সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি রুমানা মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জনাব সাইদূর রহমান বাচ্চু, সদস্য বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ও সাধারণ সম্পাদক, সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি।
উৎসবের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন-এর কার্যনির্বাহী সদস্য ও সিরাজগঞ্জ জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি কামরুল হাসান হিলটন।
নিজেকে এর আগেও নানা সময়ে সেরাদের কাতারে সবার ওপরেই রেখেছেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। কখনও যুগের সেরা, কখনও আবার শেষ ২০ বছরের সেরা। সবশেষ নিজেকেই সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে দাবি করেছে পর্তুগাল কিংবদন্তি। খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে অনেক সেরা খেলোয়াড়দের কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা আছে যার, সেই কার্লো আনচেলত্তিও এতে একমত।
সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় কে, যুগে যুগে এই বিতর্কে এসেছে অনেক নামই। তবে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয় দুই কিংবন্তি পেলে ও ম্যারাডোনার নাম। আর এই যুগে এসে সেই তালিকায় জোরেশোরেই নিয়ে যুক্ত হয়েছে লিওনেল মেসির নাম। তিনজনই জিতেছেন বিশ্বকাপ। রোনালদো বিশ্বকাপের স্বাদ না পেলেও, জিতেছেন ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলস্কোরার হওয়ার পাশাপাশি অফিশিয়ালি ছেলেদের ফুটবলে সবচেয়ে বেশি গোলের মালিকও সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবলার।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজেকে রোনালদো তাই নিজেকে স্বীকৃতি দিয়েছেন সর্বকালের সেরা হিসেবে। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আনলচেলত্তি জানান তার মতামত। “ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোই কি সর্বকালের সেরা? আমাকে যদি জিজ্ঞাসা করেন, হ্যাঁ, তিনিই সেরা। কারণ, আমার কাছে মনে হয় তিনি একটু যুগকে নিজের করে নিয়েছেন।”
সম্প্রতি স্প্যানিশ সাংবাদিক এদু এগুরেইরার সাথে সাক্ষাৎকারে নিজেকে সর্বকালের সেরা মানার কারণ তুলে ধরেন রোনালদো। “একদম মন থেকেই বলছি। আমি আমার থেকে ভালো কাউকে দেখিনি ফুটবলে। আপনি মেসি, পেলে কিংবা ম্যারাডোনাকে এগিয়ে রাখতে পারেন আমি সেটাকে সম্মান করি। তবে পরিসংখ্যান মিথ্যা বলে না। তাই আমার মনে হয় না অহংকার করার দরকার আছে। তবে এটা মেনে নেওয়ার মধ্যে লজ্জা নেই। আমি ফুটবল ইতিহাসের সেরা গোল স্কোরার।”
সর্বকালের বিতর্কের পাশাপাশি রোনালদোর নাম আসলেই সেখানে চলে আসে মেসির নাম। আর্জেন্টিনার এই তারকার বিপক্ষে একটা লম্বা সময়ে স্প্যানিশ ফুটবলে লড়েছেন সরাসরি। গোলের পাশাপাশি নানা রেকর্ডে দুজন দীর্ঘ সময় ধরেই সমান সমান্ন লড়াই করে গেছেন। ফলে নানা সময়ে এসেছে তাদের মাঝে বৈরিতার খবর।
তবে এদু এগুরেইরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রোনালদো জানিয়েছেন ভিন্ন কিছুই। “লিও মেসির সাথে আমার একটা ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমি একবার পুরষ্কার অনুষ্ঠানে তাকে ইংরেজিতে অনুবাদও করে দিয়েছিলাম। আমাদের সময়টা দারুণ ছিল। এটা একটা স্বাস্থ্যকর প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল, আমরা ভালোভাবেই মিশতে পারতাম। মনে হয় না সামনে আর এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যাবে।”
রিয়াল মাদ্রিদ অধ্যায় শেষে ইতালি, ইংল্যান্ড ঘুরে রোনালদো এখন আছেন সৌদি আরবে। খেলছেন আল নাসরের হয়ে। আর বার্সেলোনা থেকে পিএসজিতে গিয়ে দুই বছর খেলার পর মেসি এখন আছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে।