ম্যাচের সব সমীক্ষাতেই এগিয়ে ছিল আর্সেনাল। নতুন মৌসুমে ধুকতে থাকা প্রতিপক্ষকে আক্রমণের পর আক্রমণের ঢেউয়ে নাজেহাল করে ছাড়ে গানাররা।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলে জিতেছে আর্সেনাল। ডেকলান রাইসের গোলের পর পেনাল্টি থেকে ব্যবধান দ্বিগুন করা গোলটি আসে বুকায়ো সাকার নৈপুণ্যে। আর্সেনালের জার্সিতে ২০০তম ম্যাচ খেলতে নামা ইংলিশ তারকা উইঙ্গার মাইলফলকের ম্যাচটি গোল করেই রাঙালেন।
এদিকে নতুন কোচ নিয়োগ দিয়েও জয়ের দেখা পাচ্ছে না ওয়েস্ট হ্যাম। নটিংহ্যাম ফরেস্ট থেকে বহিষ্কার হওয়া নুনো এস্পিরিতো সান্তোর কোচিংয়ে প্রথম ম্যাচে এভারটনের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করার পর এবার আর্সেনালের বিপক্ষে হারল তারা।
ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে এই জয়ে আপাতত শীর্ষে উঠে এসেছে আর্সেনাল। ৭ ম্যাচে মিকেল আর্তেতার দলের সংগ্রহ ১১ পয়েন্ট। এক ম্যাচ কম খেলে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে লিভারপুল। আর লিগে ২০২৫-২৬ মৌসুমের ৭ ম্যাচের পাঁচটিতেই হেরে পয়েন্ট টেবিলের একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকল ওয়েস্ট হ্যাম। ৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় তাদের অবস্থান ১৯ নম্বরে।
এমিরেটস স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে ৬৮ শতাংশ বল দখলে রেখে ২১টি শট নিয়ে পাঁচটি লক্ষ্যে রাখে আর্সেনাল। বিপরীতে মাত্র চারটি শট নিয়ে একটিও গোলমুখে রাখতে পারেনি নুনো সান্তোসের ওয়েস্ট হ্যাম।
৩৮ মিনিটে সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে গোল করে আর্সেনালকে এগিয়ে দেন ডেক্লান রাইস। এবেরেচি েএবের জোরালো শটটা ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন ওয়েস্ট হ্যামের গোলকিপার আলফনসে এরোয়েলা। বল পেয়ে যান রাইস। সুযোগটা হাতছাড়া করেননি ইংলিশ মিডফিল্ডার। ঠাণ্ডা মাথায় দারুণ এক হাফ-ভলিতে বল ঠিক গোলপোস্টের মাঝ বরাবর পাঠান তিনি। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় আর্সেনাল।
দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণের ধারা ধরে রাখে আর্সেনাল। ৬৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করার সুযোগ আসে স্বাগতিকদের। মার্টিন জুবিমেনদির পাস থেকে নিখুঁতভাবে বল নিয়ন্ত্রণে নেন জুরিয়েন টিমবার। এরপর বক্সে ঢুকলে আর্সেনালের ডাচ ডিফেন্ডারকে একেবারে অপ্রয়োজনীয়ভাবে ধাক্কা দিয়ে বসেন ওয়েস্ট হ্যামের ডিফেন্ডার মালিক ডায়োফি। সঙ্গে সঙ্গেই পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
পেনাল্টি স্পট থেকে বুকায়ো সাকা এগিয়ে এসে একটুখানি দুলে প্রতিপক্ষ গোলকিপারকে বিভ্রান্ত করেন, এরপর একদম নিখুঁত শটে বল পাঠান ডানদিকের নিচু কোণে। আর তাতেই ২০০তম ম্যাচে গোল পেয়ে গেলেন ইংলিশ উইঙ্গার।
No posts available.
৫ অক্টোবর ২০২৫, ৮:২০ পিএম
গত জুনে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে অন্তত এক পয়েন্ট না পাওয়ার আক্ষেপে পুড়েছিল বাংলাদেশ। শেষ দিকে একের পর এক আক্রমণে অতিথিদের ব্যতিব্যস্ত করে রাখলেও মেলেনি কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা। তবে ওই ম্যাচে একাধিক সুযোগ তৈরি করেছিলেন হামজা চৌধুরী, শমিত সোম ও রাকিব হোসেনরা।
শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশের একটি শট ফিরে আসে পোস্টে লেগে। ভাগ্যটা সহায় হলে ম্যাচের ফলাফল অন্যরকম হতে পারত। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে না হলেও ঘরের মাঠে হংকং, চায়নার বিপক্ষে পূর্ণ তিন পয়েন্ট পেতে মরিয়া লাল সবুজের জার্সিধারীরা। এবার সুযোগকে গোলে রূপান্তর করতে চান রাকিব। তিনি জানান হামজা-শমিতরা আসার পর বলের যোগান বেশি পাচ্ছেন। তাতে ফরোয়ার্ডে যারা খেলছেন গোলের সুযোগ আসছে তাদের সামনে,
‘ফরোয়ার্ড কিন্তু সবসময় ভালো বল চায়। এগুলো কিন্তু আমরা আগের চেয়ে বেশি পাচ্ছি। কারণ শমিত ও হামজা খেলার কারণে।’
রোববার জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলনের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশ দলে উইঙ্গার এবং প্রয়োজনে স্ট্রাইকার হিসেবেও খেলা রাকিব। হামজা-শমিতদের জন্য অপেক্ষা করছেন বলে জানালেন বসুন্ধরা কিংস তারকা,
‘অনুশীলন ভালো হচ্ছে। মাঠের বাইরে আমাদের যেমন ভিডিও সেশন হচ্ছে, মাঠে তেমনভাবে অনুশীলন হচ্ছে। সামনে হামজা ও শমিত আসছে। ওরা এলে দলগতভাবে অনুশীলন করতে পারব। তখন আরও ভালো কিছু হবে।’
হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে গত ২৯ আগস্ট শুরু হয় জাতীয় দলের ক্যাম্প। পরের দিনই মাঠের অনুশীলনে নামেন ক্যাম্পে ওঠা খেলোয়াড়েরা। তবে পূর্ণ স্কোয়াড পেতে অপেক্ষাই করতে হয় আরও দু’দিন। কেননা মোহামেডান তাদের ৬ খেলোয়াড়কে ক্যাম্প শুরুর দিন থেকে ছাড়েনি। স্কোয়াড অসম্পূর্ণ থেকেছে হামজা-শমিতের না আসাতেও।
আগামীকাল সকাল ১১টায় অবশ্য ঢাকায় পৌছাবেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ তারকা হামজা। পরের দিন আসবেন শমিত। তাদেরকে নিয়ে এবার বাংলাদেশ দল হারাতে চায় হংকং, চায়নাকে। রাকিব বলেন,
‘হংকংয়ে বিপক্ষে ঘরের মাঠে খেলা। এই ম্যাচটা আমাদের জন্য বাঁচা-মরার লড়াই। এখানে যদি পয়েন্ট হারাই, তাহলে আমাদের আশা খুব একটা থাকবে না। চেষ্টা করছি ম্যাচটা যেন ভালোভাবে শেষ করতে পারি।’
রাকিবও জানেন জিততে হলে গোল করতে হবে। সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না। বাংলাদেশ দলের পুরনো সমস্যা শেষ দিকে গোল হজম করা এবং পোস্টের সামনে গিয়ে গোল করতে ব্যর্থ হওয়া। ক’দিন আগেও এমন কিছুই মনে করিয়ে দেন অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। এবার রাকিব বললেন কিভাবে গোল করবেন তা নিয়ে কাবরেরার ক্লাসে প্রস্তুতি চলছে ভালোই,
‘আসলে প্রতি ম্যাচেই আমাদের পরিকল্পনা থাকে গোল করার। প্রতি ম্যাচেই এগুলো নিয়ে কাজ হয়। এবারও আলাদাভাবে প্রস্তুতি চলছে। ইনশা আল্লাহ এই ম্যাচে গোল হবে।’
এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে এখন পর্যন্ত দুটি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। ২৫ মার্চ প্রথম ম্যাচে শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র। এরপর ঘরের মাঠে ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে পরাজয় ১-২ ব্যবধানে। ‘সি’ গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুইয়ে থাকা হংকং ও সিঙ্গাপুরের পয়েন্ট সমান ৪ করে। আর একটি করে পয়েন্ট পেয়ে তালিকার তিন ও চারে বাংলাদেশ এবং ভারত।
লা লিগার নতুন মৌসুমে অপরাজিত থেকে ফেভারিট তকমা নিয়ে সেভিয়ার অতিথি হয়েছিল বার্সেলোনা। অথচ ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে রীতিমতো ছেলে খেলায় মেতেছে সেভিয়া। হ্যান্সি ফ্লিকের দলকে ৪-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছে স্বাগতিকরা।
এস্তাদিও রামন সানচেজ স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে আটটার ম্যাচে আলেক্সিস সানচেজের গোলে এগিয়ে যায় সেভিয়া। প্রথমার্ধে লিড দ্বিগুণ করা স্বাগতিকরা আসল খেলা জমিয়ে রাখে শেষের জন্য। শেষ ছয় মিনিটে জোসে কারমোনা- আকর অ্যাডামসের গোলে কাতালানদের হতাশায় ডোবায় তারা।
ঘরের মাঠে এমন জয়ের সৌজন্যে ১০ বছরের অপেক্ষাও ঘুচেছে সেভিয়ার। ২০১৫ সালের অক্টোবরের পর স্প্যানিশ লা লিগায় আর বার্সাকে হারাতে পারছিল না তারা। মাঝের ১০ বছরে খেলা ১৯ ম্যাচে ১৫টিই হেরেছিল তারা। আর ড্র হয়েছিল বাকি ৪ ম্যাচ।
সেভিয়ার বিপক্ষে হারে পয়েন্ট টেবিলেও ধাক্কা খেয়েছে বার্সা। দুইয়ে নেমে গেছে গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা। ন্যু ক্যাম্পের দলের পয়েন্ট ৮ ম্যাচে ১৯। শীর্ষে তাদেরই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ। সমান আট ম্যাচ খেলা লস ব্লাঙ্কোসদের পয়েন্ট ২১। সেভিয়া উঠে এসেছে চারে। স্পেনের ক্লাবের পয়েন্ট ১৩। তিনে থাকা ভিয়ারিয়ালের পয়েন্ট ১৬।
বল পজিশন-টোটাল শট ও অন টার্গেট শটে এগিয়ে থেকেও জয় নিজেদের পক্ষে নিতে পারেনি বার্সেলোনা। ৬১ শতাংশ বল দখলে রাখে বার্সা। টোটাল শট নেয় ১৭টা। সেভিয়ার ছিল ১৩টা। অন টার্গেট শট বার্সার ৮টি, স্বাগতিকদের ৫টি। সবদিক থেকে দুর্দান্ত পারফর্মের পর হতাশ হতে হয়েছে ফ্লিকের যোদ্ধাদের।
ম্যাচঘড়ির ১৩ মিনিটে এগিয়ে যায় সেভিয়া। নিজেদের বক্সে ইসাক রোমেরোকে ফাউল করে স্বাগতিকদের পেনাল্টি উপহার দেন রোনালন্দ আরাউহো। স্পটকিক থেকে জাল কাঁপান আলেক্সিস সানচেজ। আসরে চিলি ফরোয়ার্ডের এটি দ্বিতীয় গোল।
২৪তম মিনিটে আবারও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয় সেভিয়ার। বক্সের ভেতর থেকে গোলমুখী শটটি রোমোরে নিজেই নেন। বারের ডানপাশ দিয়ে তার বল চলে যায় বাইরে। মুর্হুতেই হতাশায় মাটিতে দু’হাত দিয়ে আঘাত করেন সেভিয়া কোচ মাতিয়াস আলমেদা। ঠিক তিন মিনিট পর মাতিস্তা মেন্ডির শটে অঘটন ঘটে যেতে পারতো আবারও। সেটপিস থেকে তার বুলেট গতির শট রুখে দেন সেজনি।
৩৬ মিনিটে দ্বিতীয় গোল হজম করে বার্সেলোনা। এবার নায়ক ইসাক রোমেরো। কুন্ডের সঙ্গে ওয়ান টু চ্যালেঞ্জে জেতার পর বল যায় রুবেন ভারগাসের কাছে। ভারগাস সেটা পাঠিয়ে দেন রোমোরোকে। লিড দ্বিগুণ করতে এক সেকেন্ডও ভাবেননি স্পেন ফরোয়ার্ড। বারের ডান প্রান্ত দিয়ে জালে বল জড়ান। লিগে ২৫ বর্ষী ফরোয়ার্ডের এটি তৃতীয় গোল।
৪৩মিনিটে একটি গোল শোধের সুযোগ পায় হ্যান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফরোয়ার্ড রাশফোর্ড গোলবারের সামনে ওডিসিয়াস ভ্লাচোদিমোসকে একা পেয়েও হাতছাড়া করেন। তার সে শট চিলি গোলরক্ষকের পায়ে লেগে বারের বাইরে চলে যায়।
প্রথমার্ধে ৬ মিনিট ইনজুরি টাইম দেওয়া হলে সেখান থেকে একটি গোল শোধ করে বার্সেলোনা। কুন্ডের হাওয়ায় ভাসা শট পৌঁছে রাশফোর্ডের কাছে। সেখান থেকে ইংলিশ ফরোয়ার্ড বল পাঠান পাউ কুবার্সির কাছে। কিছুক্ষণ এর ওর পায়ে ঘোরার পর বল যায় পেদ্রির কাছে। স্পেনের তারকা মিডফিল্ডারের তীক্ষ্ণ চোখ যায় বক্সের ভেতর ওৎ পেতে থাকা রাশফোর্ডের দিকে। পেদ্রির দেওয়া লং পাসের বল বাঁ পায়ের জাদুতে জালে জড়ান ইংলিশ ফরোয়ার্ড। তাতে ২-১ ব্যবধানে শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণের ধারা ধরে রাখে সেভিয়া। ৫৫ মিনিটে আক্রমনে ওঠে স্বাগতিক ক্লাব। মার্রাওয়ের শট আলেহান্দ্রো বালদের হাতের কনুতে লাগে। তবে ভিএআর চেকের পর রেফারি খেলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
৭৪ মিনিটে রবার্ট লেভানডফস্কির ভুলে সমতায় ফেরা হয়নি বার্সার। বক্সের মধ্যে বালদেকে টেনে ফেলে দেন জানুস। রেফারি বার চেকের পর বার্সার পক্ষে রায় দেন। কিন্তু সে সুযোগ হেলায় নষ্ট করেন পোলিশ ফরোয়ার্ড।
৮১ মিনিটে মিডফিল্ড থেকে বল নিয়ে একাই বক্সে ঢুকে পড়েন রোনি বার্দগজি। তার সামনে থেকে শুধুই স্বাগতিক গোলকিপার। বল সোজা বারে শট নেন তিনি। রোনির শট থেকে মনে হচ্ছিল ওডিসিয়াসকে বলা রিসিভ শেখাচ্ছেন তিনি।
৮৯ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে সেভিয়াকে ৩-১ লিডে রূপ দেন জোসে কারমোনা। নিজেদের অর্ধ থেকে একাই বল টেনে নেন সেভিয়া মিডফিল্ডার। সেখান থেকে গোলে আদায় করেন কারমোনা। যদিও বার্সা গোলরক্ষকের চেষ্টার কমতি ছিল না। ঝাঁপিয়ে চেষ্টা করেন, হাত দিয়ে বল স্পর্শ করেন। তবে যা ঘটার ঘটে যায়।
ম্যাচের আরও কিছু দৃশ্য বাকি থাকে। পুরো ৪১ হাজার আগত দর্শককে স্তব্ধ করে অতিথিদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন আকর অ্যাডামস। আসরে বড় লজ্জার সাক্ষীয় হয় হ্যান্সি ফ্লিকের দল।
জাতীয় দলের ক্যাম্পে আগামীকাল যোগ দেবেন হামজা চৌধুরী, পরের দিন আসবেন শমিত সোম। এই দুইজনকে ছাড়াই ২৮জনকে নিয়ে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছিলেন হেড কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। তবে দলে চোটের হানায় এরই মধ্যে ক্যাম্প ছেড়েছেন উইঙ্গার মোহাম্মদ ইবরাহীম ও ফরোয়ার্ড সুমন রেজা।
রোববার কাবরেরা বলেন,
‘সুমন আর ইব্রাহিম দুজনই ভালো অবস্থায় এসেছিল। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি যেন ওরা সময়মতো চোট কাটিয়ে ওঠে, কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং ক্লাবে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে- যেখানে তারা পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবে।’
গুরুতর নয় বলে তারিক কাজী, তপু বর্মণ ও আল আমিনরা এখনও আছেন ক্যাম্পেই। তাদেরকে নিয়ে অবশ্য দুশ্চিন্তা থাকছেই।
জাতীয় স্টেডিয়ামে আজকে অনুশীলনের আগে এই তিনজনকে নিয়ে স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘তারিক, তপু ও আল আমিনের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। তারিক আর আলামিন আজই অনুশীলনে ফিরবে, আশা করি তপুও খুব শিগগিরই ফিরবে।’ দল চোটজর্জর দেখেই কোচ কাবরেরা ২৯ সদস্যের স্কোয়াডে নতুন করে যুক্ত করেন মোহামেডানের ডিফেন্ডার জাহিদ হোসেন শান্তকে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় জাতীয় দলের ক্যাম্প। প্রথম দিন হোটেলে রিপোর্ট করেন ২০জন ফুটবলার। তাদের নিয়েই পরদিন থেকে জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন শুরু করেন কাবরেরা। পরে মোহামেডানের আরও ৬ ফুটবলার যোগ দিলে ক্যাম্পের পূর্ণতা পায়।
শনিবার একদিন বিরতির পর রোববার থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় ধাপের অনুশীলন। নতুন করে দুজন ছিটকে গেলেও দলের প্রস্তুতি ভালো হচ্ছে বলে জানান কাবরেরা,
‘অনুশীলন খুব ভালো চলছে। ক্যাম্পের দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত দলের অগ্রগতিতে আমি খুবই খুশি ও ইতিবাচক। সব ঠিকঠাক চলছে আরও চারটি অনুশীলন সেশন বাকি আছে। বড় চ্যালেঞ্জের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হওয়ার সময় এটা।’
মাঠের অনুশীলন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন জাতীয় দলের উইঙ্গার রাকিব হোসেন। এএফসি এশিয়ান কাপের সর্বশেষ ম্যাচে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে গোল করেছিলেন তিনি। এবারও সুযোগ পেলে হংকংয়ের বিপক্ষে গোল করতে চান। রোববার সাংবাদিকদের বলেন,
‘অনুশীলন ভালো হচ্ছে। মাঠের বাইরে আমাদের যেমন ভিডিও সেশন ক্লাস হচ্ছে, মাঠে তেমনভাবে অনুশীলন হচ্ছে। সামনে হামজা ও শমিত আসছে। ওরা এলে দলগতভাবে অনুশীলন করতে পারব। তখন আরও ভালো কিছু হবে।’
হংকং, চায়নার বিপক্ষে আগামী ৯ অক্টোবর জাতীয় স্টেডিয়ামে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের খেলায় মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এরপর ১৪ অক্টোবর দুই দলের মধ্যকার ফিরতি ম্যাচটি হবে হংকংয়ের মাটিতে।
লেফট উইংয়ে খেলতে অভ্যস্ত। অ্যাটাকিং মিডফিল্ড, রাইট উইং কিংবা ফরোয়ার্ড পজিশনেও সমানতালে খেলতে পারেন। বয়স মাত্র ১৬। বলা হচ্ছে মেক্সিকান এক তরুণ প্রতিভার কথা। নাম গিলবার্তো মোরা।
চলতি অনূর্ধ্ব-২০ ফিফা বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে নজর কেড়েছেন মোরা। এর আগেই অবশ্য তাকে দলে ভেড়ানোর লড়াইয়ে নেমে পড়ে ইউরোপের জায়ান্ট সব ক্লাব। আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার সিটির, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, আয়াক্সের মতো ক্লাবগুলো ছিল এ তালিকায়।
বিভিন্ন পজিশনে খেলতে পারদর্শী মোরার দিকে নজর ছিল রিয়াল মাদ্রিদেরও। এবার তাকে দলে ভেড়ানোর দৌঁড় যোগ দিয়েছে রিয়ালের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি বার্সেলোনাও। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মুন্ডো দিপোর্তিভো জানিয়েছে, মেক্সিকান ক্লাব তিজুয়ানাতে খেলা মোরাকে নিতে আগ্রহী কাতালান ক্লাবটিও।
অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে মেক্সিকোর হয়ে এরই মধ্যে দুই ম্যাচে তিন গোল এবং একটি অ্যাসিস্ট করেছেন মোরা। সবশেষ আজ মরক্কোর বিপক্ষে আজ পেনাল্টি থেকে জয়সূচক গোলটি আসে তার পা থেকে। এর আগে স্পেন অনূর্ধ্ব-২০ দলের বিপক্ষে ২-০ গোলের জেতার ম্যাচের দু’টি গোলই করেন মোরা। গ্রুপপর্বের প্রথম ম্যাচে ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারানো ম্যাচের একমাত্র গোলের সহায়তা করেন তিনি।
জাতীয় দলের হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্সের সঙ্গে ক্লাব ফুটবলেও ৪০টির বেশি ম্যাচ খেলেছেন মোরা। লিগা এমএক্সে তিজুয়ানার সিনিয়র দলের জার্সিতে ৮টি গোলের সঙ্গে চারটি অ্যাসিস্টও আছে বৈচিত্রময় এই ফুটবলারের।
অবশ্য ১৬ বছর বয়সী ফুটবলারকে দলে ভেড়াতে গত বছরই চেষ্টা চালায় বার্সা। স্প্যানিশ ক্লাবটি তাকে লা মাসিয়ায় প্রশিক্ষণের জন্য আমন্ত্রণ জানায়।
ডানপায়ের খেলোয়াড় হলেও, স্বাচ্ছন্দ্যেই দুই পায়ের ব্যবহার করতে জানেন মোরা। মাঠে তার দূরদর্শী চিন্তাভাবনাও দেখার মতো।
মোরার এজেন্ট ব্রাজিলিয়ান রাফায়েলা পিমেন্টা এরই মধ্যে জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের গ্রীষ্মে ইউরোপিয়ান ফুটবলে পা রাখতে ‘প্রস্তুত’ এই বিস্ময় বালাক।
এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে হংকং, চায়নার বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে আগামীকাল ঢাকা আসছেন হামজা চৌধুরী। লন্ডন থেকে বিমানযোগে সকাল ১১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামবেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ তারকা। এরপর সরাসরি যোগ দেবেন টিম হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় দলের ম্যানেজার আমের খান।
সোমবার ঢাকায় এসেই বিকেলে অনুশীলনে নামবেন হামজা। আজ জাতীয় স্টেডিয়ামে দলের হেড কোচ হাভিয়ের কাবরেরার কথাতে সেটিই বুঝা গেল, ‘হামজা কাল সকালেই আসছে। সব ঠিক থাকলে তিনটি অনুশীলন সেশন করবে আমাদের সঙ্গে।’ হংকংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ আগামী ৯ অক্টোবর। সেক্ষেত্রে দলের অনুশীলন সেশনও বাকি আছে তিনটি।
নিজের ক্লাব লেস্টার সিটিতে হামজার ম্যাচ ছিল গতকাল শনিবার। সানসা সিটির বিপক্ষে ৩-১ গোলে জেতা ম্যাচে মাঠে নামা হয়নি বাংলাদেশী ডিফেন্ডারের। ওই ম্যাচ খেলেই তিনি রওনা দেন বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে। বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানাবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
কাল হামজা আসলেও কানাডার প্রবাসী শমিত সোমকে কাবরেরা পাবেন আগামী মঙ্গলবার থেকে। তাকে নিয়ে এদিন স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘শমিতের ক্ষেত্রে বিষয়টা একটু কঠিন। সে পরশু রাতে আসবে, শুধু ম্যাচের আগের দিনই অনুশীলন করতে পারবে।’ কানাডা প্রিমিয়ার লিগে বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোর ৪টায় ম্যাচ আছে শমিতের ক্লাব কাভালরি এফসির। ওই ম্যাচ খেলেই তিনি রওনা দেবেন বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে।
পল্টনের জাতীয় স্টেডিয়ামে হোম ম্যাচ খেলেই বাংলাদেশ দল রওনা দেবে হংকংয়ের উদ্দেশ্যে। দুই দলের মধ্যকার ফিরতি ম্যাচটি হবে হংকংয়ে, আগামী ১৪ অক্টোবর।