৬ অক্টোবর ২০২৫, ২:৪৯ এম

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের পর বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিন ম্যাচের সিরিজে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে পেরেছে শুধু এই তিন দেশ। সবশেষ হোয়াইটওয়াশের পর ফিল্ডিংকে দায় দিয়েছেন অধিনায়ক রশিদ খান।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার সিরিজের শেষ ম্যাচে অন্তত ২টি ক্যাচ ছেড়েছেন আফগানিস্তান ফিল্ডাররা। এর বাইরেও তাদের হাত ফসকে বেরিয়ে গেছে অনেক রান।
আগের দুই ম্যাচেও ফিল্ডিংয়ের কারণে ডুবতে হয়েছে তাদের। বিশেষ করে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অন্তত ৫টি ক্যাচ ছেড়েছে আফগান ফিল্ডাররা। এর মধ্যে বাঁহাতি ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন একাই পেয়েছেন ৪টি জীবন।
সব মিলিয়ে সিরিজের তিন ম্যাচে অনেক ক্যাচ ছাড়ার পাশাপাশি মিস ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশকে অনেক রানও দিয়েছে আফগানিস্তান। তাই সিরিজ শেষে এই জায়গাটি নিয়েই বড় আফসোস রশিদের।
“সত্যি বলতে আমরা বাজে ক্রিকেট খেলেছি এবং তারা দুর্দান্ত খেলেছে। সিরিজজুড়ে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে তারা ভালো করেছে। বিশেষ করে ফিল্ডিংয়ে। আমার মনে হয়, এই জায়গায় (ফিল্ডিংয়ে) আমরা তাদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে ছিলাম।”
“আমরা অনেকগুলো ক্যাচ ছেড়েছি। ক্যাচই আপনাকে ম্যাচ জেতায়। বোলিং ভিন্ন ব্যাপার। তবে ফিল্ডিংয়ে আমরা অনেক বেশি পিছিয়ে ছিলাম। তাই তারা এই ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতল।”
No posts available.

বেন স্টোকস ও উইল জ্যাকসের জমে ওঠা জুটি কোনোভাবেই ভাঙতে পারছিল না অস্ট্রেলিয়া। তখনই যেন জাদু দেখালেন স্টিভ স্মিথ। তবে বল হাতে নয়, বরং স্লিপে দাঁড়িয়ে ক্যাচ নিয়ে। মাইকেল নেসারের বলে বাম দিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচে জুটি ভাঙেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক।
পরে আরেকটি ক্যাচ নিয়ে তিনি ছুঁয়ে ফেলেন ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্যাচের রেকর্ড। যেখানে তার সঙ্গী ভারতীয় কিংবদন্তি রাহুল দ্রাবিড়। তাদের দুজনের ওপরে শুধু ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও সফলতম ব্যাটার জো রুট।
ব্রিসবেনে দিবারাত্রির টেস্টে চতুর্থ দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডকে ২৪১ রানে গুটিয়ে দিয়েছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। তাদের সামনে এখন লক্ষ্য মাত্র ৬৫ রানের। ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ উইকেট নিয়ে দলের সবচেয়ে সফল বোলার নেসার।
আরও পড়ুন
| রোহিতের ২০০০০, জয়সওয়ালের সেঞ্চুরিতে সিরিজ ভারতের |
|
স্লিপে দাঁড়িয়ে স্মিথ নিয়েছেন তিনটি ক্যাচ। যার সৌজন্যে তার ক্যারিয়ারে এখন ক্যাচের সংখ্যা ২১০টি। নন-উইকেটকিপারদের মধ্যে টেস্ট ইতিহাসে ক্যাচের তালিকায় এখন দুই নম্বরে উঠে গেছেন ৩৬ বছর বয়সী ব্যাটার।
স্মিথের সমান ২১০ ক্যাচ নিয়ে আগে থেকেই দুই নম্বরে ছিলেন দ্রাবিড়। তবে অনেক কম ম্যাচেই তাকে ছুঁয়ে ফেলেছেন স্মিথ। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ১২১ ম্যাচে নিয়েছেন ২১০ ক্যাচ। আর দ্রাবিড় তার ১৬৪ টেস্টের ক্যারিয়ারে নিয়েছিলেন ২১০টি ক্যাচ।
এই তালিকায় সবার ওপরে রুট। ব্রিসবেন টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস পর্যন্ত ১৬০ ম্যাচে রুটের ক্যাচ ২১৩টি। এখনও খেলা চালিয়ে যাওয়ায় সামনের দিনগুলোতে রুট আর স্মিথের মধ্যে ক্যাচের লড়াইটা হয়তো দেখা যাবে জমজমাটভাবে।
তবে অ্যাশেজের হিসেবে অবশ্য এরই মধ্যে সবার ওপরে স্মিথ। ঐতিহ্যবাহী এই সিরিজে ৩৯ ম্যাচে ৬৬ ক্যাচ নিয়েছেন তারকা ব্যাটার। ৩২ ম্যাচে ৫৪ ক্যাচ নিয়ে তালিকার দুই নম্বরে ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার ইয়ান বোথাম।

সামনের বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নিজেদের সাপোর্ট স্টাফে বড় নাম যুক্ত করল নামিবিয়া।ভারতের ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতানো কোচ গ্যারি কারস্টেনকে জাতীয় দলের পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিল তারা।
নামিবিয়ার সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমানে প্রধান কোচ ক্রেইগ উইলিয়ামসের সঙ্গে মিলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় হতে যাওয়া বিশ্বকাপের আগে থেকেই কাজ শুরু করে দেবেন কারস্টেন।
ক্রিকেট নামিবিয়ার দেওয়া বিবৃতিতে নতুন দায়িত্বে কাজ শুরুর রোমাঞ্চ জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই ক্রিকেটার।
“ক্রিকেট নামিবিয়ার সঙ্গে কাজ করা নিঃসন্দেহে একটি বিশেষ সুযোগ। তাদের নিষ্ঠা ও দৃঢ়তা আমাকে পুরোপুরি মুগ্ধ করেছে। তাদের নতুন অত্যাধুনিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামই প্রমাণ যে দলগুলোকে বিশ্বের সেরা ক্রিকেট দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতার উপযোগী করে তুলতে কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
“তাদের সিনিয়র পুরুষ দল ভালো পারফর্ম করছে। আর আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে বাড়তি কিছু যোগ করার জন্য আমি মুখিয়ে আছি।”
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে গত কয়েক বছর ধরেই উন্নতির পথে আছে নামিবিয়া। গত তিনটি বিশ্বকাপেই খেলেছে তারা। সামনের বছরের টুর্নামেন্টেও দেখা যাবে দলটিকে। এছাড়া ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে সহ-স্বাগতিকও নামিবিয়া।
এগিয়ে যাওয়ার গতি আরও বৃদ্ধি করতেই কারস্টেনকে নিয়োগ দিয়েছে নামিবিয়া। ২০০৪ সালে ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে বিদায় জানানোর পর তিন বছর নিজ দেশেই ঘরোয়া ক্রিকেটে নানান দলে কোচিং করান কারস্টেন।
২০০৭ সালে ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেন সাবেক প্রোটিয়া ব্যাটার। তার কোচিংয়ে ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতে। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলেরও কোচিং করান তিনি। এছাড়া বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেও কোচের ভূমিকায় দেখে গেছে কারস্টেনকে।

সিরিজ জিতেছে ভারত। সিরিজে রান পেয়েছেন দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুই তারকা ব্যাটার রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলি। সিরিজ সেরা হয়েছেন কোহলি। ভারতের ক্রিকেটভক্তদের জন্য বেশ আনন্দের মূর্হুতই বটে।
আজ বিশাখাপত্তনমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষটিতে ৯ উইকেটে জিতেছে ভারত। রোহিত-কোহলির ফিফটি আর যশস্বী জয়সওয়ালের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে প্রোটিয়াদের বলে-কয়ে হারাল স্বাগতিকরা।
শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা কুইন্টন ডি ককের সেঞ্চুরিতে ভর করে ৪৭.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৭০ রান করে। জবাবে ৬১ বল ও ৯ উইকেট বাকি রেখেই জয়ে নোঙর করে স্বাগতিকরা। ১২১ বলে ১১৬ করা যশস্বী হন ম্যাচসেরা। আর তিন ম্যাচের সিরিজে মোট দুই সেঞ্চুরি ও এক ফিফটিতে মোট ৩০২ রান করা কোহলি হন সিরিজসেরা।
ওয়ানডে ক্রিকেটে বর্তমানে সাড়ে তিনশো রানও নিরাপদ নয়। আগের ম্যাচেই সেটি দেখিয়ে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে আজ নিজেরা তিনশো রানের কাছেও যেতে পারেনি। ২৭১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারতের উদ্বোধনী জুটিই বেশিরভাগ কাজ করে দিয়ে যায়। ১৫৫ বলে ১৫৫ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন রোহিত-জয়সওয়াল।
৭৩ বলে ৭৫ করা রোহিত থামেন কেশব মহারাজের বলে ম্যাথু ব্রিৎজকের তালুবন্দি হয়ে। ৭ চার ও ৩ ছয়ে ইনিংসটি সাজান ৩৮ বছর বয়সী ডানহাতি এই ওপেনার। এদিন দারুণ এক মাইফলকও স্পর্শ করেন রোহিত। ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে ২০ হাজার রানের ক্লাবে যোগ দিলেন তিনি। এ তালিকায় বাকিরা হলেন শচিন টেন্ডুলকার (৩৪৩৫৭), বিরাট কোহলি (২৭৯১০), রাহুল দ্রাবিড় (২৪২০৮)।
রোহিত ফেরার পর দ্বিতীয় উইকেটে কোহলি-জয়সওয়ালের ১২৬ রানের জুটিতে হেসেখেলে জয় পায় ভারত। চার ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পান জয়সওয়াল। ১২১ বলে ১১৬ রানের ইনিংসটি খেলতে ১২টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটার।
কোহলি ভক্তরা হয়তো খানিকটা আফসোসই করেছেন। ইশ, যদি দক্ষিণ আফ্রিকার রান আরও বেশি হতো, তবে টানা তিন ম্যাচে হয়তো সেঞ্চুরি দেখা যেত ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরার ব্যাটে। টানা দুই চারে ভারতকে জেতানো কোহলি করেছেন ৪৫ বলে ৬৫ রান। মেরেছেন ৬টি চার ও দু’টি ছক্কা।
এর আগে দীর্ঘ সময় পর টস ভাগ্য খুলে ভারতের। দীর্ঘ ২৫ মাস ও ২০ ম্যাচ পর অবশেষে ওয়ানডে টস জিতে ভারত। সবশেষ ২০২৩ সালে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সেমি-ফাইনাল ম্যাচের পর ওয়ানডেতে টস জিততেই যেন ভুলে গিয়েছিল ভারত। অবশেষে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ২০ ম্যাচের অপেক্ষা ঘোচালেন রাহুল।
টসে জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠান রাহুল। প্রথম ওভারেই রায়ান রিকেল্টনকে ফিরিয়ে ভারতকে দারুণ সূচনা এনে দেন আর্শদ্বিপ সিং। ১ রানে এক উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ও কুইন্টন ডি-কক। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের জুটিতে বড় সংগ্রহের দিকেই ছুটছিল প্রোটিয়ারা। তবে বাভুমাকে কোহলির ক্যাচ বানিয়ে ১১৩ রানের জুটি ভেঙে ভারতকে ম্যাচে ফেরান রবীন্দ্র জাদেজা।
মিডল অর্ডারে ব্রিটজকে এবং ব্রেভিস ভাল শুরু করেন। কিন্তু ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন দু’জনই। ব্রিটজকেকে(২৪) ফেরান প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা আর ব্রেভিসকে(২৯) কুলদীপ যাদব। এডেন মার্করামও ফেরেন ১ রানে।
রান করতে পারেননি কভিন বসচ এবং মার্কো জানসেনও। দক্ষিণ আফ্রিকার রান যখন ১৯৯, এক প্রান্ত আগলে রেখে সেঞ্চুরি করা ডি-কক আউট হন কৃষ্ণার বলে বোল্ড হয়ে। ৮৯ বলে ১০৬ রানের ইনিংস খেলার পথে দারুণ কয়েকটি রেকর্ডেও নাম লেখান তিনি। অবসর থেকে ফেরা এই বাঁহাতি ব্যাটার ২৩তম শতকে বিদেশের মাটিতে সর্বাধিক ওয়ানডে সেঞ্চুরির যৌথ রেকর্ড গড়েছেন। দেশের বাইরে তাঁর মোট সেঞ্চুরি এখন সাতটি। ডি ককের আগে চার ব্যাটার এই সংখ্যা ছুঁয়েছেন।
এছাড়া শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি সনাৎ জয়সুরিয়ার সঙ্গে ভারতের বিপক্ষে সর্বাধিক ওয়ানডে সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাগাভাগি করলেন ডি ককের। এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ২৩ ইনিংসে ৭টি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে সমান সংখ্যাক শতক পাওয়া জয়সুরিয়াকে খেলতে হয়েছে ৮৫ ইনিংস। উইকেটকিপার হিসেবেও সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড স্পর্শ করলেন ৩২ বছর বয়সী ব্যাটার। কুমার সাঙ্গাকারার সমান ২৩টি সেঞ্চুরি তাঁর।
ডি কক ফেরার পর ৭১ রানে পাঁচ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ দিকে মহারাজের ২৯ বলে ২০ রানের ইনিংসে কোনমতে ২৭০ করে তাঁরা। কুলদীপ এবং প্রসিদ্ধ ৪টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট নেন অর্শদীপ এবং জাদেজা।

আজ গ্যাবায় একটি দৃশ্যকে অ্যাশেজে ইংল্যান্ডের করুণ দশার প্রতীকি বলতে পারেন কেউ। প্রায়ই মাঠে অদ্ভুত কিছু দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন ক্যামেরাপার্সনরা। অ্যাশেজে এমন অনেক চমকপ্রদ ছবি আলোচনায় এসেছে আগেও। এই যেমন ব্রেট লি’কে অ্যান্ড্রু ফ্লিন্টফফের সান্ত্বনা, শেন ওয়ার্নের বেলকনি নাচ সহ এমন অনেক মূহূর্ত স্বরণীয় হয়ে আছে। চলতি অ্যাশেজে এবার আরেকটি মজার দৃশ্য দেখা গেল। আর এই দৃশ্যের সঙ্গে চাইলে অনেকে এবারের অ্যাশেজে বিপর্যস্ত ইংল্যান্ডের মিল খুঁজে পেতে পারেন।
দিবারাত্রির ব্রিসবেন টেস্টে আজ ৬ উইকেটে ৩৭৮ রান নিয়ে দিন শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। এরপর বড় লিড নিয়ে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসের ছয়টি উইকেটও তুলে নিয়েছে স্টিভেন স্মিথের দল। তৃতীয় দিন শেষে ইংল্যান্ডের ইনিংস হার এড়াতে এখনো প্রয়োজন ৪৩ রান। এরমধ্যে ইংলিশ পেসার জফরা আর্চার অদ্ভুত কাণ্ড ঘটিয়ে আলোচনায় এলেন। গ্যাবায় আজ একটি বালিশ নিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে দেখা যায় ইংলিশ গতি তারকাকে।
দিনের শুরুতে ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলার আর্চার হয়তো ভেবেছিলেন যে অজিদের লোয়ার অর্ডারের ব্যাটারদের দ্রুতই ফিরিয়ে দলকে সুবিধাজনক অবস্থায় নিয়ে যাবেন। তাতে হয়তো নির্ভার মনে হচ্ছিল ইংলিশ গতি তারকাকে। তবে তাকে ভুল প্রমাণ করে অস্ট্রেলিয়ার লোয়ার অর্ডারের ব্যাটারা দলকে এনে দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ লিড।
আর্চারের বালিশ নিয়ে হেঁটে যাওয়া এই ছবি নিয়ে ইতিমধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে বলছেন এই ছবি তাঁর উদাসীন মনোভাবেরই পরিচয় দিচ্ছে। বল হাতেও ভালো করতে পারেননি এই গতি তারকা। ২৫ ওভারে ৮৭ রান দিয়েন মাত্র একটি উইকেট নিয়েছেন।
ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন এই বালিশ কাণ্ডের কড়া সমালোচনা করেন। এ তালিকায় আছে ম্যাথু হেডেনও। তাঁর দৃষ্টিতে একজন খেলোয়াড়কে বালিশ নিয়ে মাঠে আসা দেখাটা চরম আশ্চর্যের বিষয়, এবং ব্যাটারদের উচিত এমন উদাসীন মনোভাবকে কাজে লাগানো।
আর মাইকেল ভন বলছেন, দুঃখিত, এটা সত্যিই অদ্ভুত দেখাচ্ছে। যদি আমি ব্যাটার হতাম, আমি বলছি কী করব—এটার সুযোগ নিয়ে সরাসরি মন দিয়ে খেলা শুরু করব। সারাজীবন ধরে।’
তিনি আরও যোগ করেন,
‘একজন ব্যাটার হিসেবে ঠিক এমন মনোভাবই দরকার। আপনি তখন ভাববেন, “তুমি কখনও ওই বালিশে ঘুমাতে পারবে না”—এটাই হবে ব্যাটারদের জন্য সুযোগ।’
পুরো ইংল্যান্ড দলের মাঠের শরীরি ভাষারও সমালোচনা করেন ভন। তাঁর মতে স্টোকদের ক্লান্ত-বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল,
‘আমি পুরোপুরি ভিন্নভাবে কাজ করতাম। আজ এমন এক দলকে দেখছি, যাদের দেখে ক্লান্ত ও উদাসীন মনে হচ্ছিল। সুযোগ নেওয়ার কৌশল হল মনোযোগ। আপনি যদি নিয়মিত বাইরে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনুশীল না করেন, তবে যখন সুযোগ আসে, আপনাকে পুরো মনোযোগ দিয়ে তা নিতে হবে। তার জন্য একমাত্র উপায় হলো মস্তিষ্কের যথাযথ অনুশীলন।’

গ্যাবায় অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টে বল হাতে দাপট দেখানোর পর ব্যাট হাতেও ইতিহাস গড়লেন মিচেল স্টার্ক। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৭৭ রানের ইনিংস খেলে টেস্ট ইতিহাসে ৯ নম্বর পজিশনে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ড এখন অস্ট্রেলিয়ান পেসারের দখলে।
ব্রিসবেন টেস্টের তৃতীয় দিনের শুরুতেই ৩৮৩ রানে ৭ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। মাইকেল নেসার আউট হওয়ার পর উইকেটে আসেন স্টার্ক। ইংল্যান্ডের চেয়ে ৪৯ রানে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও লিড বাড়ানোর চাপ ছিল অস্ট্রেলিয়ার জন্য।
অ্যালেক্স ক্যারির সঙ্গে ৩৩ রানের জুটি গড়ে ইনিংস গুছিয়ে নেন স্টার্ক। ক্যারি আউট হওয়ার পর মূলত একাই দলের রান বাড়াতে থাকেন তিনি। অন্য প্রান্তে স্কট বোল্যান্ড ধরে রাখেন উইকেট।
চা বিরতির আগে চার রান দূরে ছিলেন ফিফটির। বিরতির পর উইল জ্যাকসের প্রথম ওভারেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিজের ১১তম টেস্ট ফিফটি পূর্ণ করেন স্টার্ক।
দিনের শুরুতে বল হাতে ছয় উইকেট নেওয়া কীর্তি গড়েন স্টার্ক। ব্যাটিংয়েও ইংল্যান্ডকে ভোগাতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত ৭৭ রানে কার্সের বলে মিড-অফে ক্যাচ তুলে দিয়ে ইনিংস শেষ করেন তিনি। তবে নামার আগে টেস্ট ক্রিকেটে নম্বার-৯ ব্যাটার হিসেবে সর্বোচ্চ রান করার কীর্তি গড়ে ফেলেন অস্ট্রেলিয়ান পেসার।
ব্রিসবেনে প্রথম ইনিংস শেষে ৯ নম্বর পজিশনে স্টার্কের রান হলো ১৪০৮। ১৯ রানে পেছনে ফেলেছেন সাবেক ইংলিশ তারকা স্টুয়ার্ট ব্রডকে। শুধু তা-ই নয়, এই পজিশনে সবচেয়ে বেশি ফিফটির মালিকও এখন স্টার্ক (৮), যা পরের তিনজন—গ্রায়েম সোয়ান, ড্যানিয়েল ভেট্টরি ও কিরণ মোরের (৫) চেয়ে অনেক এগিয়ে।
গাবায় অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে করে ৫১১ রান। জবাবে ইংল্যান্ড ৩৩৪ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে তৃতীয় দিন শেষে ১৩৪/৬। দ্বিতীয় ইনিংসেও ২ উইকেট এরই মধ্যে নিয়েছেন স্টার্ক।