৬ অক্টোবর ২০২৫, ২:৪৯ এম
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের পর বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিন ম্যাচের সিরিজে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে পেরেছে শুধু এই তিন দেশ। সবশেষ হোয়াইটওয়াশের পর ফিল্ডিংকে দায় দিয়েছেন অধিনায়ক রশিদ খান।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার সিরিজের শেষ ম্যাচে অন্তত ২টি ক্যাচ ছেড়েছেন আফগানিস্তান ফিল্ডাররা। এর বাইরেও তাদের হাত ফসকে বেরিয়ে গেছে অনেক রান।
আগের দুই ম্যাচেও ফিল্ডিংয়ের কারণে ডুবতে হয়েছে তাদের। বিশেষ করে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অন্তত ৫টি ক্যাচ ছেড়েছে আফগান ফিল্ডাররা। এর মধ্যে বাঁহাতি ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন একাই পেয়েছেন ৪টি জীবন।
সব মিলিয়ে সিরিজের তিন ম্যাচে অনেক ক্যাচ ছাড়ার পাশাপাশি মিস ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশকে অনেক রানও দিয়েছে আফগানিস্তান। তাই সিরিজ শেষে এই জায়গাটি নিয়েই বড় আফসোস রশিদের।
“সত্যি বলতে আমরা বাজে ক্রিকেট খেলেছি এবং তারা দুর্দান্ত খেলেছে। সিরিজজুড়ে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে তারা ভালো করেছে। বিশেষ করে ফিল্ডিংয়ে। আমার মনে হয়, এই জায়গায় (ফিল্ডিংয়ে) আমরা তাদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে ছিলাম।”
“আমরা অনেকগুলো ক্যাচ ছেড়েছি। ক্যাচই আপনাকে ম্যাচ জেতায়। বোলিং ভিন্ন ব্যাপার। তবে ফিল্ডিংয়ে আমরা অনেক বেশি পিছিয়ে ছিলাম। তাই তারা এই ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতল।”
No posts available.
৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০:২৫ পিএম
সব খেলোয়াড়েরই ক্যারিয়ারে একটা প্রিয় মুহূর্ত থাকে—যখন তার ব্যাট-বল বেজে ওঠে নিখুঁত তালে-লয়ে। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে তাকে তার অবস্থান তৈরি করতে হয়, জানান দিতে হয় নিজের সক্ষমতা। ক্রান্তিলগ্নে কখনো সে ফেরেন খালি হাতে, কখনো হতাশ করেন নিজেকেই। অভিষেক, প্রথম স্মৃতি কিংবা বৃত্তে বন্দির আর্তনাদ—সবই হজম করতে হয় একাকী।
জীবনের মতো ক্রীড়াও এক বন্ধুর ময়দান। এখানে সবাই বন্ধু, প্রতিযোগীও। পা ফসকালেই সাইড বেঞ্চে অপেক্ষমান তারই প্রিয় কোন সতীর্থ। মারো-মরো নীতির এই ট্র্যাজিক পথচলায় অন্ধকার সুড়ঙ্গের শেষে আলো খুব কমই থাকে। তবে ধৈর্য আর প্যাশনকে যারা ইচ্ছার উর্ধ্বে রেখেছে, জয়টা তাদেরই হয়েছে।
ইতিহাস বলে, ধৈর্যশীল ও ‘গ্রেট’ খেলোয়াড়রা কখনো ব্যর্থতার জ্বালায় পুড়ে ছাই হয়ে যান না। বরং সেই জ্বালা দ্বিগুণ করে ফিরিয়ে দেন। নতুন সাফল্যের তৃপ্তি প্রলেপ বুলিয়ে দেন পুরোনো জ্বালার ক্ষতে। যে মাঠে দুয়ো ধ্বনি শুনেছেন, সে মাঠেই তার জন্য বিছিয়ে রাখা হয় ফুল। স্বাগত জানাতে গলা ফাটান হাজারো সমর্থক-নিন্দুকরাও। বাংলাদেশের তরুণ অলরাউন্ডার সাইফ হাসানের বেলায় এসব ঘটেনি?
নিশ্চয়ই ঘটেছে। সাইফ এখনই ‘গ্রেট’-এর পর্যায়ে চলে যাননি। তাকে নিয়ে কাব্য-গল্প লেখা এখনো অনেক দূর। তবে ডুবতে বসা বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি তরী যে তিনিই বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন—সেটা কম কিসে?
এশিয়া কাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স তো বটেই, আফগানিস্তানের বিপক্ষে কুড়ি কুড়ির সিরিজের শেষ ম্যাচ একাই জিতিয়েছেন অলরাউন্ডার সাইফ। শারজায় তার অপরাজিত ৬৭ রানের ইনিংস শুধুই ‘গ্রেট’ না হলেও, চোখের শান্তি তো দিয়েছে বটে। আড়াই পাউন্ড ওজনের উইলো খণ্ডটি দিয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। দৌড়ে রান প্রায় নেনইনি, বাউন্ডারি-বাউন্ডারিতে সাজিয়েছেন ইনিংস। একের পর এক বল ছুটে গেছে সীমানা ছাড়িয়ে।
আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দিনে মাত্র দুটি বাউন্ডারির বিপরীতে ৭টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন সাইফ। ১৬৮ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট চালিয়েছেন। ৩৮ বলে খেলেছেন ৬৪ রানের ইনিংস। স্ট্রেইটে ছক্কা ছাড়াও মিড-অফ, অনের সঙ্গে ফাইন-লেগে বল পাঠিয়েছেন। স্টেডিয়াম ছাড়া করেছেন, হারিয়েও দিয়েছেন বল। নিজের চোখে দেখা দৃশ্য সম্পর্কে দর্শকের মনে জাগিয়ে তুলেছেন অবিশ্বাস।
সাইফ যেন শিল্পীর তুলিতে এঁকেছেন এসবই। ক্যানভাসে হয়তো একটু বেশি দ্রুতগতিতে, একটু বেশি জোরেই ব্রাশ চালিয়েছেন ২৬ বর্ষী ব্যাটার। তাতেও চিনতে অসুবিধা হয়নি সাইফকে। শারজায় যতক্ষণ চলেছে সেই ছবি আঁকার পর্ব, ততক্ষণ সবাই মুগ্ধ দর্শক। ছবি আঁকা শেষ হয়ে গেলেও আসলে তা শেষ হয়নি-মাঠ থেকে তা চলে গেছে দর্শকদের মনের ক্যানভাসে। সত্যিকার অর্থে কি ছিল না সাইফের সে ইনিংসে?
অথচ একূল-ওকূল হারিয়ে নিঃশ্ব হতে বসেছিলেন সাইফ হাসান। ২৫-এই ফুরিয়ে গেছেন—এমন কথাও শুনতে হয়েছে তাকে। ধীরে-ধীরে খেলেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলার সুবাদে ২০২০ সালে সাদা শুভ্র পোশাকে অভিষেক হয় সাইফের। আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি অভিষেক ম্যাচে। রাওয়ালপিন্ডিতে সেদিন মাত্র ১৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট, সেখানেও ব্রাত্য সাইফ। শ্রীলঙ্কা টেস্টে তো একদমই হতাশ করেছেন। ক্যারিয়ারের নিজেদের সবশেষ টেস্ট খেলেছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে, ২০২১ সালে। সে ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে রান এসেছে কেবল ৩২।
লাল বলের ক্রিকেটে সেখানেই দাঁড়ি পড়ে সাইফের। ২০২০ সালের শুরুতে অভিষেকের পর ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মোটে ছয়টি টেস্ট খেলেছেন । রান করেছেন ১৫৯। হাত ঘুরিয়ে তুলেছেন এক উইকেট। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার জন্য এর চেয়ে বড় কারণ কি হতে পারে?
টেস্টে না হয় থিতু হতে পারেননি, টি-টোয়েন্টিতে কেমন ছিল সাইফের যাত্রা? ২০২৫ এশিয়া কাপের আগ পর্যন্ত ৫ বছরের ক্যারিয়ারে মাত্র ৭টি কুড়ি কুড়ি ওভারের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন তিনি। যেখানে একটি ফিফটি ছিল। ডাক মেরে আউট হয়েছেন দুইবার। এক রান করে রান করেছে দুই ইনিংসে।
এমন মন্থর ব্যাটিংয়ে একপ্রকার নির্বাচকেরা সাইফ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম এবং নিজেকে বদলে জাতীয় দলে ফিরেই আস্থার প্রতিদান দিচ্ছেন বেশ ভালোভাবে। ঘরের মাঠে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে প্রত্যাবর্তন তার। এরপর এশিয়া কাপ ও আফগানিস্তান সিরিজ মিলিয়ে খেলেছেন ৭টি টি-টোয়েন্টি। এ সময় ২১টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন সাইফ।
সাইফ এ নিয়ে বলেছেন,
‘গত এক-দুই বছর ধরে আমি এভাবেই খেলছি। আমি শুধু ব্যাটিংটা উপভোগ করছি, ব্যস এতটুকুই।’
ব্যস এতটুকুই-২৮ বর্ষী ব্যাটারের উচ্চারিত শব্দ ছোট হলেও এর মাহাত্ম্য কিন্তু বিশাল। কারণ, ডাল-ভাতে রূপ নেওয়া চার-ছক্কার পেছনে রয়েছে তার দিনের পর দিন নেটে অনুশীলন আর ঘাম ঝরানোর কষ্ট।
তরুণ অলরাউন্ডার নিজেকে ভেঙে-চুরে, আবার ভেঙে গড়েছেন খুবই তীক্ষ্ণভাবে। তার স্পেশালিটি স্ট্রেইট শট-যার জন্য সাধনা আর অধ্যবসায় করতে হয়েছে তাকে। দ্বারস্থ হতে হয়েছে দেশি-বিদেশি কোচদের কাছে। সাইফ নিজেই জানিয়েছেন,
‘সাধারণত আমি সোজা ব্যাটে (সোজা উইকেটের দিকে) খেলার চেষ্টা করি এবং স্পিনের সঙ্গে একই দিকে বল পাঠাই—এটাই আমার শক্তির জায়গা।’
টেস্টের ব্যাকরণ শিখেই হাতেখড়ি তাঁর। হয়তো হতে চেয়েছিলেন টেস্ট ক্রিকেটার। ধীরে ও ধরে চলো নীতিতেই চলছিলেন। তবে সেই ‘লং ফরম্যাট ব্যাটার’ তকমা ঝেড়ে এশিয়া কাপে নিজেকে নতুন করে চেনালেন এই স্পিন অলরাউন্ডার। টেস্ট খেলুড়ে ব্যাটারের মতো সাইফও বরাবরই ডাউন দ্য ভি (মিড-অফ থেকে মিড-অন অঞ্চলের মাঝ দিয়ে খেলা) খেলতে বেশ পারদর্শী।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই গুণই সাইফকে সাদা বলের ক্রিকেটেও সফলতা এনে দিয়েছে। স্পিনারদের ঘূর্ণির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বল খেলতে পারাটা এখন সাইফের বড় একটি অস্ত্র হয়ে উঠেছে-সেটা তিনি দারুণভাবে প্রমাণ করেছেন।
বীরদর্পে পর্দাপনের পর সাইফ সুযোগ পেয়েছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও। সবকিছু ঠিক থাকলে হাসমতউল্লাহ শাহিদীদের বিপক্ষে ৮ তারিখ একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হবে তার। কুড়ি কুড়ির মতো এই ফরম্যাটেও যে তিনি রাজ করবেন, সেটা হলফ করে বলা যায়।
মেধাবীরা ব্যর্থ হলেও, পরিশ্রমীরা কখনও ব্যর্থ হয় না—সেটা সাইফ হাসানের চেয়ে বেশি আর কে জানে? প্রজ্ঞা আর ধৈর্যের গুণে তিলে তিলে নিজেকে গড়ে তোলা সাইফ যেন এক-দুই তলা কোনো সাধারণ ভবন নন, বরং নিজেকে রূপ দিচ্ছেন একটি স্কাইস্ক্র্যাপারে। আর সেটাই এখন দেশের প্রতিটি ক্রিকেটপ্রেমীর গভীর বাসনা।
গত মে মাসের শেষ দিকে বিসিবি সভাপতি হিসেবে প্রথমবার দায়িত্ব নেওয়ার পর আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেছিলেন, একটি কুইক টি-টোয়েন্টি ইনিংস খেলতে চান তিনি। তবে মাসচারেক পর সেই টি-টোয়েন্টি ইনিংস এখন বদলে গেছে টেস্ট ইনিংসে।
কারণ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পরিষদের নির্বাচনের পর এবার ৪ বছরের জন্য সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে গেছেন বুলবুল। নতুন করে পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পেছনে কারণ হিসেবে বললেন, ক্রিকেটের উন্নয়নের প্রেমে পড়ে গেছেন তিনি।
রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে সোমবার সকালে শুরু হয় বিসিবি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে ভোট গ্রহণের পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঘোষণা করা হয় নতুন পরিচালনা পরিষদের ২৫ জন পরিচালকের নাম।
এরপর এই পরিচালকদের ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবার সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন বুলবুল। আর সহ-সভাপতি হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ই জয়ী হন ফারুক আহমেদ ও শাখাওয়াত।
নতুন পরিচালনা পরিষদ ঠিক হওয়ার পরপর এই হোটেলে প্রথম সাধারণ সভায় বসেন বুলবুল-ফারুকরা। যেখানে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশের সাফল্য উদযাপন করতে কেক কাটেন তারা।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বিসিবি কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় আবার শুরু হবে এই সভা।
হোটেল ছাড়ার আগে সংবাদ সম্মেলনে আসেন বুলবুল। যেখানে শুরুতেই তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, গত মে মাসে টি-টোয়েন্টি ইনিংসের কথা বললেও, এখন টেস্ট ক্রিকেট খেলার ব্যাপারে কী ভাবছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক।
উত্তরে দেশের ক্রিকেটের উন্নতির প্রেমে পড়ে যাওয়ার কথা বলেন বুলবুল।
“এটা একটা জার্নির অংশ ধরে নিয়েছি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের ডেভেলপমেন্টের প্রেমেও পড়ে গিয়েছি। স্বল্প মেয়াদের জন্য এসেছিলাম। সেটাই সবসময়ের পরিকল্পনা ছিল।”
“কিন্তু যখন ট্রিপল সেঞ্চুরি প্রোগ্রামের মাধ্যমে ছোট ছোট কাজ শুরু করলাম এবং সাফল্যগুলো দেখতে পেলাম, সেই লোভটা আমি ছাড়তে পারিনি এবং সেই লক্ষ্যে আমার দেশকে আরও সার্ভ করার জন্য আমি রয়ে গেছি।”
বিসিবি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে লম্বা সময় আইসিসির ডেভেলপমেন্ট বিভাগে কর্মরত ছিলেন বুলবুল। সেই দায়িত্ব ছেড়ে ক্রিকেট বোর্ডে বিনা পারিশ্রমিকের দায়িত্বে ৪ বছর থাকার ব্যাপারে কী ভাবছেন জানতে চাওয়া হয় বিসিবি সভাপতির কাছে।
“ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্টের পদ সবসময় অনারারি (বিনা পারিশ্রমিকের) ছিল। সেটার কোনো ব্যতিক্রম এখনও হয়নি। সেই ব্যাপারে এখনও চিন্তা করিনি।”
“ক্রিকেটটা একটা আমানত হিসেবে আমরা পেয়েছি। (আইসিসির) চাকরি আমি ছেড়ে এসেছি। তাই সেটা নিয়ে আর ভাবছি না। এখন ফোকাস শুধু বাংলাদেশ ক্রিকেট ও বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সার্ভিস দেওয়া।”
টি-টোয়েন্টিতে ব্যর্থ মিশন শেষে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলবে আফগানিস্তান। আগামী ৮ অক্টোবর তিন ম্যাচের পঞ্চাশ ওভারের সিরিজের আগে ধাক্কা খেল হাসমতউল্লাহ শাহিদীর দল। ইনজুরিতে ছিটকে পড়েছেন দলটির তরুণ পেসার মোহাম্মদ সেলিম সাফি।
আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২৩ বর্ষী সেলিমের ইনজুরির খবর জানিয়েছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।
এসিবি নিশ্চিত করেছে, সেলিমের জায়গায় ভিড়ানো হয়েছে ডান হাতি মিডিয়াম পেসার বিলাল সামিকে। ২১ বর্ষী এই তরুণ দেশের হয়ে মাত্র একটি ম্যাচ খেলেছেন। ২০২৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সে ম্যাচে মাত্র তিন ওভার বোলিংয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। ছিলেন উইকেট শূন্য। এবার সালেমের ইনজুরি তার কপাল খুলে দিয়েছে।
যদিও ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে আসছেন সামি। সম্প্রতি তিনি ঘরোয়া টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবার ৪ বছরের জন্য বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তার সঙ্গে সহ-সভাপতি হিসেবেও বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ও শাখাওয়াত হোসেন।
রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে সোমবার বিসিবি পরিচালনা পরিষদের নির্বাচনের পর জানা যায় ২৫ জন নতুন পরিচালকের নাম। পরে এই পরিচালকদের ভোটে নির্বাচিত হন সভাপতি ও দুজন সহ-সভাপতি।
বিসিবির ২০তম সভাপতি হলেন বুলবুল।
সভাপতি ও সহ-সভাপতি পদে অবশ্য ভোটের প্রয়োজন পড়েনি। কারণ সভাপতি পদে বুলবুল ছাড়া আর কেউ মনোনয়নপত্র তোলেননি। তাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তিনি।
একইভাবে ক্যাটাগরি-১ থেকে পরিচালক হওয়া শাখাওয়াত ও ক্যাটাগরি-২ থেকে ফারুক আহমেদ ছাড়া আর কেউ সহ-সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র তোলেননি। তাই তারা দুজনও বিনা ভোটেই সহ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।
এর গত ৩০ মে প্রথমবার বিসিবি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন বুলবুল। তখন তিনি বলেছিলেন, কুইক টি-টোয়েন্টি ইনিংস খেলার লক্ষ্য নিয়ে এসেছেন। তবে ৪ মাসের অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব শেষে এবার নির্বাচন করে ৪ বছরের পূর্ণ মেয়াদে বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব পেলেন সাবেক এই অধিনায়ক।
বুলবুল দায়িত্ব নেওয়ার ঠিক আগে প্রায় ৯ মাসের জন্য বিসিবি সভাপতি ছিলেন ফারুক। এবার আগামী ৪ বছরের জন্য সহ-সভাপতি হিসেবে দেখা যাবে বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ককে।
সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া শাখাওয়াত হোসেন এবারই প্রথম বিসিবির পরিচালক হয়েছেন। তবে গত কিছু দিন আগে বুলবুলের ক্রিকেট পর্যটন বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে বোর্ডে কাজ করেছিলেন বরিশাল বিভাগ থেকে আসা এই পরিচালক।
নির্বাচনের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পরিষদে এখন দেখা মিলেছে এক ঝাঁক নতুন মুখের। নির্বাচন শেষে প্রথমবারের মতো বিসিবিতে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেবেন ১৮ জন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে মনোনীত দুজনসহ এই সংখ্যা ২০ জনের।
অর্থাৎ বিসিবির পরিচালনা পরিষদের মোট ২৫ জন সদস্যের মধ্যে ২০ জন এবারই প্রথম বোর্ডের দায়িত্ব নেবেন।
ক্লাব ক্যাটাগরি থেকে আসা ১২ পরিচালকের মধ্যে ৯ জনই এবার প্রথম। এদের মধ্যে ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবের কাউন্সিলর ইশতিয়াক সাদেক ও ঢাকা মেরিনার ইয়াংস ক্লাবের শানিয়ান তানিন নাভিন পেয়েছেন সর্বোচ্চ ৪২টি করে ভোট।
এই দুজনের মতো ৪২ ভোট পেয়েছেন রেঞ্জার্স ক্রিকেট একাডেমির কাউন্সিলর ফারুক আহমেদ। তবে তিনি এর আগে বিসিবি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ফারুকের পাশাপাশি ক্লাব থেকে আসা মনজুর আলম ও ইফতেখার রহমানও আগে বিসিবিতে পরিচালক হিসেবে ছিলেন।
এই ক্যাটাগরিতে ইশতিয়াক সাদেক ও শানিয়ান তানিমের মতো আদনান রহমান দীপন (৪০), ফায়াজুর রহমান (৪০), আবুল বাশার (৪০), আমজাদ হোসেন (৪১), মোখছেদুল কামাল (৪১), এম নাজমুল ইসলাম (৩৪) ও মেহরাব আলম চৌধুরী (৪১) প্রথমবার বিসিবি পরিচালক হয়েছেন।
জেলা ও ক্রীড়া সংস্থা থেকে ১০ জনের মধ্যে ৮ জনই প্রথমবার পরিচালক হয়েছেন। ঢাকা বিভাগ থেকে আসা আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও নাজমুল আবেদীন ফাহিমের শুধু বিসিবি পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের আসিফ আকবর ও আহসান ইকবাল চৌধুরী, খুলনা বিভাগের আব্দুর রাজ্জাক ও জুলফিকার আলী খান, সিলেট বিভাগের রাহাত শামস এবং বরিশাল বিভাগের শাখাওয়াত হোসেন এবারই প্রথম বিসিবিতে পরিচালকের পদে বসবেন।
আর সাবেক ক্রিকেটারদের মধ্যে প্রথমবার বিসিবি পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন খালেদ মাসুদ পাইলট। তাদের সঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে মনোনীত হয়েছেন এম ইসফাক আহসান ও ইয়াসির মোহাম্মদ ফয়সাল আশিক।
বিসিবির পূর্ণাঙ্গ পরিচালনা পরিষদ
ক্যাটাগরি - ১
আমিনুল ইসলাম বুলবুল, নাজমুল আবেদীন ফাহিম, আহসান ইকবাল চৌধুরী, আসিফ আকবর, আব্দুর রাজ্জাক, জুলফিকার আলী খান, মুখলেসুর রহমান, হাসানুজ্জামান, রাহাত শামস ও শাখাওয়াত হোসেন।
ক্যাটাগরি - ২
ইশতিয়াক সাদেক, আদনান রহমান দীপন, ফায়াজুর রহমান, আবুল বাশার, আমজাদ হোসেন, শানিয়ান তানিম, মোখছেদুল কামাল, এম নাজমুল ইসলাম, ফারুক আহমেদ, মনজুর আলম, মেহরাব আলম চৌধুরী ও ইফতেখার রহমান মিঠু।
ক্যাটাগরি - ৩
খালেদ মাসুদ পাইলট
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ
এম ইসফাক আহসান, ইয়াসির মোহাম্মদ ফয়সাল আশিক