৩১ জুলাই ২০২৪, ৫:৩১ পিএম
গ্লোবাল টি-টোয়েন্টিতে বাংলা টাইগার্স মিসিসাগারের আগের ম্যাচে বল হাতে দারুণ ছিলেন সাকিব আল হাসান। টরন্টো ন্যাশনালসের বিপক্ষে সেই তুলনায় কিছুটা খরুচে হলেও করেছেন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ এক স্পেল, যা তার দলের নাটকীয় জয়ে রেখেছে বড় অবদান। এর আগে ব্যাট হাতেও কার্যকরী ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন বাংলা টাইগার্স অধিনায়ক।
গ্লোবাল টি-টোয়েন্টির বুধবারের ম্যাচে সাকিব-শরিফুল ইসলামের দল বোর্ডে জমা করেছিল ৭ উইকেটে ১৬৮ রান। জয়ের ভালো সম্ভাবনা জাগালেও শেষ পর্যন্ত ১৬৬ রানেই থামতে হয়েছে টরন্টোকে। তাতে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে বাংলা টাইগার্স।
শুরুটা ভালো করার দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল বাংলা টাইগার্স। ১১তম ওভারে সাকিব যখন নামেন, তখন দলের স্কোর ৪ উইকেটে ৮১।
ক্রিজে গিয়ে প্রথম বলেই মোহাম্মদ নাওয়াজকে ছক্কায় ওড়ান সাকিব। এরপর রোস্টন চেজের এক ওভারে দুই ছক্কা মেরে ঝড় তোলারই আভাস ছিল অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারের ব্যাটে। তবে অতি-আগ্রাসী হতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ২৪ রানেই থামতে হয় তাকে। ১৫ বলের ইনিংস সাজান তিন ছক্কায়, নেই কোনো বাউন্ডারি।
শেষের দিকে পরে ম্যাচ সেরা হওয়া ডেভিস ভিসার ৩৮ রানে ভর করে লড়াকু স্কোর পায় বাংলা টাইগার্স। বল হাতে সাকিব প্রথম আসেন পঞ্চম ওভারে। এক বাউন্ডারি হজমে দেন ৬ রান। নবম ওভারে এসে দেন সাত রান।
অন্যপ্রান্তে আরেক বাংলাদেশী শরিফুলও ছিলেন ছন্দে। প্রথম দুই ওভারে ১৬ রান গুনলেও নেন একটি উইকেট। তিনি ও সাকিব দুজনই মূল পরীক্ষাটা দেন ডেথ ওভারে।
ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ফিফটি করা নিকোলাস কির্টোনের ব্যাটে এক পর্যায়ে ভালোভাবেই জয়ের সুবাস পাচ্ছিল বাংলা টাইগার্স। সাথে ছিলেন রোমারিও শেফার্ড। তাদের বিপক্ষে ইনিংসের ১৭ ও ১৮তম ওভারে সাকিব ও শরিফুল দেন যথাক্রমে ৮ ও ১৩ রান।
১৯তম ওভারে একটি ছক্কা হজম করলেও ৫৪ বলে ৭৪ রান করা কির্টোনকে ফিরিয়ে বাংলা টাইগার্সকে জয়ের পথে কিছুটা এগিয়ে দেন সাকিব। চার ওভারের স্পেল শেষ করেন ১ উইকেটে ৩০ রান দিয়ে। আর শরিফুলও সমান উইকেট নেন, গুনেন ৩১ রান।
No posts available.
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৯:০০ এম
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১:৪৪ এম
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১:১৭ এম
ভাইটালিটি ব্লাস্টে জ্বলে উঠলেন ইংল্যান্ডের তরুণ ব্যাটার উইল স্মিড। পুরো টুর্নামেন্টে ছন্দে থাকা এই ওপেনার ফাইনালেও খেললেন ম্যাচসেরা ইনিংস। ৫৮ বলে ৯৪ রানের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে সমারসেটকে শিরোপা জেতালেন তিনি। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও স্মিড (৬২০)।
এজবাস্টনে ফাইনালে হ্যাম্পশায়ারের দেওয়া ১৯৫ রানের লক্ষ্য ৬ উইকেট হাতে রেখেই ছুঁয়ে ফেলে সমারসেট। তবে রান তাড়ায় শুরুতে চাপে পড়েছিল তারা।
১০ম ওভারে ৮৯ রানে তৃতীয় উইকেট হারানোর পর স্মিড-ডিকসনের জুটি দলকে টেনে তোলে ১৭৭ পর্যন্ত। এরপর গ্রেগরির ঝোড়ো ইনিংসে এক ওভার বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত হয়। শন ডিকসন অপরাজিত ছিলেন ৩৩ রানে আর অধিনায়ক লুইস গ্রেগরি ৫ বলে ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে হ্যাম্পশায়ার তোলে ৬ উইকেটে ১৯৪ রান। টবি আলবার্ট ৪৮ বলে ৮৫ রানের ঝড়ো ইনিংসে ১০টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকান। অধিনায়ক জেমস ভিন্স করেন ৩৪ বলে ৫২ রান, আর বেনি হাওয়েল দ্রুত যোগ করেন ২৬ রান।
এই জয়ে ভাইটালিটি ব্লাস্টে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জিতলো সমারসেট। গত তিন মৌসুমে দ্বিতীয় ট্রফি জয়ের স্বাদ পেলো দলটি।
মাঠে বসে বাংলাদেশের খেলা দেখতে গিয়ে অভিজ্ঞতা তেমন সুখকর হলো না আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সামনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একদমই লড়াই করতে পারেনি বাংলাদেশ।
তবে আশা হারাতে চান না আসিফ। বরং সবাইকে আশাবাদী হয়ে সামনের ম্যাচে ভালো কিছু করার কথা বলেছেন তিনি।
আবু ধাবির জায়েদ স্টেডিয়ামে শনিবার গ্যালারিতে বসে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার খেলা দেখেছেন আসিফ। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণ মঞ্চেও ছিলেন তিনি। পরে মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় দলের পারফরম্যান্স নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এখন বাঁচা-মরার লড়াই: লিটন |
![]() |
“হতাশার কিছু নেই। আমি মনে করি, আশাবাদী থাকা উচিত। আমাদের আরও একটি ম্যাচ বাকি আছে। যদিও আজকের খেলা আরও ভালো হতে পারত।”
“আমাদের দলের শুরু থেকেই ধারাবাহিকতা নিয়ে একটা সমস্যা আছে। আশা করি, পরের ম্যাচে আমাদের ছেলেরা ভালো খেলবে।”
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটির আগে শনিবার বাংলাদেশ দলের সকল সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন আসিফ। সেখানে কী কথাবার্তা হয়েছিল, জানতে চাইলে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।
আরও পড়ুন
পাওয়ার প্লেতেই আমরা হেরে গেছি: লিটন |
![]() |
“খেলার আগে তো বেশি কথা বলার সুযোগ নেই। দলকে শুধু বেস্ট অব লাক জানিয়েছি আর তাদের কথা শুনেছি।”
পরে আসিফ যখন মাঠে প্রবেশ করেন, ততক্ষণে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি লিটনের দল। আসিফ মনে করেন, পাওয়ার প্লেতেই শেষ হয়েছে বাংলাদেশের জয়ে আশার।
“আমাদের পাওয়ার প্লেতে খারাপ হয়েছে। পাওয়ার প্লেতে যদি আমরা ভালো একটা পুশ দিতে পারতাম। তাহলে পুরো ম্যাচটাই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করা যেত।”
আরও পড়ুন
পাওয়ার হিটিং কোচের তত্ত্ব ভুলে গেছে টপ অর্ডাররা |
![]() |
শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে কঠিন হয়ে গেছে বাংলাদেশের সুপার ফোরে খেলার আশা। আসিফ তাই সামনের ম্যাচে তাকিয়ে।
“এটা পুরোপুরি আমাদের পারফরম্যান্সের ওপর ডিপেন্ড করছে। পরের ম্যাচ দেখলেই বোঝা যাবে।”
এশিয়া কাপের গ্রুপ নির্ধারণের পরই বোঝা গিয়েছিল, মৃত্যুকুপে পড়েছে বাংলাদেশ। যেখানে এক ম্যাচ খারাপ করলেই দেখা দেবে বাদ পড়ে যাওয়ার শঙ্কা। হয়েছেও তাই। শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে এখন বিপদে বাংলাদেশ। তাই আফগানিস্তান ম্যাচটিকে বাঁচা-মরার লড়াই হিসেবে দেখছেন লিটন কুমার দাস।
হংকংয়ের বিপক্ষে সহজ জয়ে এশিয়া কাপের ইতিবাচক শুরুই করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ওই ম্যাচ জিতে পাওয়া আত্মবিশ্বাসে বড় ধাক্কা দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ব্যাটিং-বোলিংয়ে বাংলাদেশকে একদমই লড়াই করতে দেয়নি লঙ্কানরা।
আরও পড়ুন
পাওয়ার প্লেতেই আমরা হেরে গেছি: লিটন |
![]() |
আবু ধাবিতে আগে ব্যাট করে মাত্র ১৩৯ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। পরে ১৪.৪ ওভারে ম্যাচ জিতে যায় এশিয়া কাপের ছয়বারের চ্যাম্পিয়নরা। এমন পরাজয়ের পর পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে নেমে গেছে বাংলাদেশ।
টুর্নামেন্টের সুপার ফোর খেলতে এখন শেষ ম্যাচে বড় জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে। একই মাঠে মঙ্গলবার গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। যারা প্রথম ম্যাচে হংকংয়ের বিপক্ষে বিশাল জয়ে টেবিলের এক নম্বরে বসে আছে।
আরও পড়ুন
পাওয়ার হিটিং কোচের তত্ত্ব ভুলে গেছে টপ অর্ডাররা |
![]() |
গ্রুপ 'বি'তে এখন তিন দলেরই সমান ২টি করে পয়েন্ট। তবে বাংলাদেশ দুই ম্যাচ খেলে ফেলায় বাকিদের চেয়ে একটু পিছিয়ে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের পর তাই লিটন বলেছেন, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটিই তাদের কাছে ফাইনালের মতো।
“হ্যাঁ অবশ্যই (আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি আমাদের জন্য ফাইনালের মতো)। ডু অর ডাই ম্যাচ। দেখা যাক।”
আরও পড়ুন
পাকিস্তানের বিপক্ষে ‘সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব’দেখাবে ভারত |
![]() |
শনিবারের ম্যাচ হারলেও, গ্যালারি থেকে পূর্ণ সমর্থন পেয়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচ জুড়ে লাল সবুজের পতাকা উড়িয়েছেন বাংলাদেশের সমর্থকরা। সামনের ম্যাচেও এমন সমর্থনের আশার কথা বলেছেন লিটন।
“সমর্থকদের অনেক ধন্যবাদ। কারণ আমরা যখনই দেশের বাইরে খেলি, তারা মাঠে এসে আমাদের সমর্থন দেয়। আমি আশা করব, তারা আবারও মাঠে আসবে, আবার সমর্থন করবে।”
টসের সময় লিটন কুমার দাস বলেছিলেন, ভালো উইকেটে বড় সংগ্রহ গড়তে চান তারা। কিন্তু শুরুতেই ধাক্কা লাগে সেই আশায়। প্রথম দুই ওভারে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন দুই ওপেনার। বাজেভাবে ম্যাচ হারের পর গোলমেলে ওই শুরুকেই দায় দিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
আবু ধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার শ্রীলঙ্কার কাছে ৬ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ব্যাট করে মাত্র ১৩৯ রান করতে পেরেছিল তারা। যা তাড়া করতে লঙ্কানদের লেগেছে মাত্র ১৪.৪ ওভার।
ম্যাচের শুরুতেই অবশ্য এগিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। প্রথম ওভারে নুয়ান থুশারার বলে টানা পাঁচ ডট খেলার পর শেষ বলে বোল্ড হয়ে যান তানজিদ হাসান তামিম। পরের ওভারে দুশমন্থ চামিরার বলে কট বিহাইন্ড হন পারভেজ হোসেন ইমন।
আরও পড়ুন
পাওয়ার হিটিং কোচের তত্ত্ব ভুলে গেছে টপ অর্ডাররা |
![]() |
দুই ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর বোর্ডে শূন্য রানে ২ উইকেট। এবারই প্রথম কোনো ম্যাচে শূন্য রানে ২ উইকেট হারাল বাংলাদেশ। আর প্রথম দুই ওভার মেডেন হওয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেই মাত্র ষষ্ঠবারের মতো দেখা গেল।
এমন শুরুর পর দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে রান আউট হন তাওহিদ হৃদয়। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে লিটন ৩টি চার মারলেও ৬ ওভারে ৩০ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। যে কারণে শেষ দিকে শামীম হোসেন পাটোয়ারী ও জাকের আলি অনিক ৮৬ রানের জুটি গড়লেও বড় হয়নি পুঁজি।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণ মঞ্চে তাই পাওয়ার প্লেতে বাজে ব্যাটিংকেই দায় দেন লিটন।
আরও পড়ুন
পাকিস্তানের বিপক্ষে ‘সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব’দেখাবে ভারত |
![]() |
“অবশ্যই (প্রথম দুই উইকেট আমাদের পিছিয়ে দিয়েছে)। আমার মতে, পাওয়ার প্লেতে আমরা ম্যাচটা অনেকটাই হেরে গেছি। কারণ ব্যাটিংয়ের জন্য উইকেট বেশ ভালো ছিল। আমরা যদি ১৭০ বা ১৮০ রান করতে পারতাম, খেলাটা ভিন্ন হতো। কিন্তু ১৪০ রান একদম যথেষ্ট নয়।”
স্বাভাবিকভাবেই লিটনের ঠিক বিপরীত অবস্থা শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কার। তিনি স্পষ্টই বলে দিয়েছেন, প্রথম দুই ওভার তাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
“আমার মতে, সেটিই আমাদের জন্য বড় মুহূর্ত ছিল। মঞ্চটা সাজিয়ে দিয়েছে। স্বপ্নের মতো শুরু ছিল। দুই ওভার, দুই মেডেন, দুই উইকেট।”
আরও পড়ুন
মুস্তাফিজের ‘প্রথম’ পরাজয় |
![]() |
মাত্র ১৩৯ রানের পুঁজি নিয়ে জেতার জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল দুর্দান্ত বোলিং-ফিল্ডিং। দ্বিতীয় ওভারে কুশল মেন্ডিসকে আউট করে তেমনই আভাস দেন মুস্তাফিজুর রহমান।
কিন্তু পঞ্চম ওভারে কামিল মিশারার ক্যাচ ছেড়ে দেন শেখ মেহেদি হাসান। এরপর আর কিছু নিজেদের পক্ষে পায়নি বাংলাদেশ। তাই বোলিং-ফিল্ডিংয়ে ঘাটতির কথাও বলেন লিটন।
“অবশ্যই, আপনি যদি ভালো উইকেটে ১৪০ রান করেন, তখন আপনাকে বোলিং-ফিল্ডিং ভালো করতে হবে। কিন্তু এই ম্যাচে আমরা ভালো বোলিং করিনি, ভালো ফিল্ডিংও করিনি।”
একই মাঠে আগামী মঙ্গলবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।
দলে মোটা মাইনের হেড কোচ, ব্যাটিং কোচ থাকার পরও সংক্ষিপ্ত মেয়াদে পাওয়ার হিটিং কোচ উড়িয়ে এনেছিল বিসিবি। পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়ান উডের তত্ব হোমে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ভালই প্রয়োগ করেছে বাংলাদেশ টপ অর্ডাররা। তবে ঘরের মাঠে অনূকুল কন্ডিশনে বাঘ্ররূপী বাংলাদেশ দল আবুধাবিতে পাওয়ার হিটিং কোচের ফর্মূলা প্রয়োগে যেনো নিরূপায়।
এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশ হংকংয়ের বিপক্ষে ১৪৪ রান তাড়া করে জিতেছে বাংলাদেশ ১৪ বল হাতে রেখে। সেই ম্যাচে লিটন ছাড়া অন্য কারো স্ট্রাইক রেট ছিল না বলার মতো। ৪৮ঘন্টা পর একই মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে নেমেও ব্যাটিংয়ে একই দূর্দশা! টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ওভারপ্রতি ৬.৯৫ স্ট্রাইক রেটে বাংলাদেশের স্কোর ১৩৯/৫! এমন ব্যাটিং প্রদর্শনীর ম্যাচে ৩২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে জিতে শ্রীলঙ্কা জানিয়ে দিয়েছেন, তারা প্রকৃতই জয়সুরিয়ার উত্তরসূরী।
আরও পড়ুন
মুস্তাফিজের ‘প্রথম’ পরাজয় |
![]() |
৪৮ ঘন্টা আগে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০ ওভারে ইংল্যান্ড ৩০৪ করে নিজেদের ইনিংসের পুরোটা হাইলাইটস বানিয়ে দিয়েছে। সেই খবরটা নিশ্চয়ই অজানা নয় বাংলাদেশ ব্যাটারদের। ফিল সল্ট, বাটলারদের সেই ব্যাটিং ঝড়টা পারস্য উপসাগরে আছড়ে ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার সাথে বাংলাদেশের ক্রিকেট ম্যাচ মানে রণাঙ্গনের উত্তাপ। ২০১৮ সাল থেকে শুরু হওয়া সেই উত্তাপের শুরুতে নাগিণ নৃত্য করেছে বাংলাদেশ দল। সেই ড্যান্সটা শনিবার শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলকে উদ্দেশ্য করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা সমর্থকরা।
ব্যাটিং পাওয়ার প্লে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে দু'দলকে। বাংলাদেশ দলের স্কোর যেখানে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে ৩০/৩, সেখানে শ্রীলঙ্কার ৫৫/১। ইনিংসের প্রথম ২৭ বলের মধ্যে স্কোরশিটে ১১ রান উঠতে তিন টপ অর্ডারকে হারিয়ে আরও বড় ব্যাটিং ধসের শঙ্কা দেখেছে বাংলাদেশ সমর্থকরা। ইনিংসের ৬ষ্ঠ বলে পেসার তুষারার ইনসুইং ডেলিভারীতে তানজিদ হাসান তামিম বোল্ড আউট হয়ে (৬ বলে ০) বাজে আলামত দিয়েছেন। তৃতীয় ওভারে পেসার চামিরার ৪র্থ ডেলিভারিটি ছিল ব্যাক অব লেন্থ। পারভেজ হোসেন ইমন সেই বলে দিয়েছেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ।
আরও পড়ুন
পাকিস্তানের বিপক্ষে ‘সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব’দেখাবে ভারত |
![]() |
স্ট্রাইক রেট টি-টোয়েন্টির জন্য মোটেও মানানসই নয়, এই অপবাদ থেকে মুক্তি পেতে ২ রানকে ৩ রানে পরিণত করতে বিফল চেষ্টায় রান আউট হৃদয় (৯ বলে ৮)। লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গা বল হাতে নিয়ে পর পর দুই ওভারে ফিরিয়ে দিয়েছেন শেখ মেহেদী এবং লিটন দাসকে। শেখ মেহেদী ডিফেন্স করতে যেয়ে এলবিডাব্লুউ (৭ বলে ৯), রিভার্স সুইপ করতে যেয়ে লিটনের গ্লাভসে বলের স্পর্শ পেয়ে উইকেট কিপারের সহজ ক্যাচে পরিণত (২৬ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৮)।
৫৩ রানের মাথায় ৫ম উইকেট পতনের পর চ্যালেঞ্জিং পুঁজি নিয়েই ছিল শঙ্কার আলামত। তবে ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে জাকের আলী অনিক-শামীম পাটোয়ারীর ৬১ বলে ৮৬ রানের অবিচ্ছিন্ন পার্টনারশিপের কারণে শ্রীলঙ্কাকে ১৪০ রানের টার্গেট দিতে পেরেছে বাংলাদেশ। ভাগ্যটা ভাল জাকের আলী অনিকের। হাসারাঙ্গার বল স্ট্যাম্পে আলতো ছোঁয়া লেগে লাল বাতি জ্বলে ওঠার পরও জাকের নট আউট। বেলস মাটিতে না পড়ায় সে যাত্রায় বেঁচে গেছেন জাকের আলী। প্রাণ ফিরে পাওয়া জাকের আলী শেষ পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন ছিলেন ৪১ রানে। ৩৪ বলের ইনিংসে মেরেছেন ২টি বাউন্ডারি। শামীম পাটোয়ারী ৩৪ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ৪২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
১২০টি ডেলিভারির মধ্যে ৪৬টি ডট। ছক্কা মারা যে কতোটা কঠিন, তা জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাটাররা। পুরো ইনিংসে ১০টি চার-এর পাশে মাত্র ১টি ছক্কা! যে ছক্কাটি এসেছে শামীম পাটোয়ারীর ব্যাট থেকে।
উইকেট টেকিং বোলিং করেছেণ হাসারাঙ্গা (২/২৫)। তবে লঙ্কান দুই পেসার তুষারা (৪-১-১৭-১), চামিরা (৪-১-১৭-১) এদিন ভালই ভুগিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাটারদের।
আরও পড়ুন
মেহেদির ক্যাচ মিসের পর বাংলাদেশের বড় পরাজয় |
![]() |
নতুন বলে দীর্ঘদিন পর দ্বিতীয় ওভারে বোলিং করতে এসে কুশল মেন্ডিজকে (৬ বলে ৩) উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেণ মোস্তাফিজ। তবে ৫ম ওভারে শরিফুলের বলে শেখ মেহেদী মিড অনে মিশারার ক্যাচ ফেলে দেয়ার পর ছিন্ন-ভিন্ন হয়েছে বাংলাদেশ দলের বোলিং! ওই ক্যাচ ড্রপের ওভারের শেষ ৩ বলে মিশারার ২ চার, ১ ছক্কায় আগাম জয়োধ্বনী শুনতে পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। পাথুম নিশাঙ্কা-মিশারা ২য় উইকেট জুটিতে ৫২ বলে ৯৫ রান যোগ করে দলকে নিয়ে গেছেন জয়ের বন্দরে। পাথুম ৩১ বলে ৬ চার, ১ ছক্কায় ফিফটি উদযাপনের পর থেমেছেন শেখ মেহেদীর বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে (৩৪ বলে ৬ চার, ১ ছক্কায় ৫০)। কামিল মিশারা ছিলেন ৩২ বলে ৪ চার, ২ ছক্কায় ৪৬রানে অপরাজিত।
পুঁচকে হংকংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ বোলারদের বোলিং ছিল না আপ টু দ্য মার্ক। সমমানের দল শ্রীলঙ্কাকে ১৪০ রানের চ্যালেঞ্জ দিয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ বোলাররা। অফ স্পিনার শেখ মেহেদী (৪-০-২৯-২) এবং পেসার তানজিম হাসান সাকিব (৩-০-২৩-১) ছাড়া অন্য কারো বোলিং প্রত্যাশার ধারে কাছেও ছিল না। শ্রীলঙ্কার হার্ডল পেরুতে না পারা বাংলাদেশের সামনে এখন আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি হয়ে দাঁড়াচ্ছে পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ।