৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৩৫ পিএম
২০১২ থেকে ২০১৮- ছয় বছরের মধ্যে এশিয়া কাপের ৪ আসরের ৩টিতে ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। এরপর থেকে শুধুই হতাশা। মাঝে গ্রুপ পর্বেও থেমেছে তাদের যাত্রা। এবার আরেকটি নতুন আসরে যাওয়ার আগে নিজেদেরকে ভালোভাবে প্রস্তুত বলছেন অধিনায়ক লিটন কুমার দাস।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর শুরু হবে এশিয়া কাপের নতুন আসর। টুর্নামেন্টের তৃতীয় দিন হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ। সেই মিশনে যাওয়ার আগে ঘরের মাঠে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে লিটনের দল।
সব কিছু ঠিক থাকলে, আগস্ট মাসে ভারতের বিপক্ষে খেলতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু হুট করেই সেই সফর স্থগিত করে দিয়েছে ভারত। তাই তড়িঘড়ি করে নেদারল্যান্ডসকে ডেকে এনে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন
তিন ম্যাচে দুই ভাইয়ের ৪ সেঞ্চুরি |
![]() |
শক্তি-সামর্থ্যে অনেক পিছিয়ে থাকা দলটির বিপক্ষে প্রত্যাশিত ফলই পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম দুইটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ন্যুনতম লড়াইও করতে পারেনি নেদারল্যান্ডস। বোলারদের দাপুটে পারফরম্যান্সে খুব সহজেই জয় পায় স্বাগতিকরা।
বুধবার সিরিজের শেষ ম্যাচে অবশ্য কোনো ফল আসেনি। সিরিজে প্রথম আগে ব্যাট করে ১৮.২ ওভারে ১৬৪ রান করে বাংলাদেশ। এরপর বৃষ্টির কারণে আর খেলায় যায়নি। তাই এশিয়া কাপের আগে শেষ ম্যাচে বোলারদের অনুশীলনের সুযোগ মেলেনি।
তবে সার্বিকভাবে দলের প্রস্তুতিতে সন্তুষ্ট লিটন। সিরিজ শেষে সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের পুরোপুরি প্রস্তুত ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
“আমার মনে হয়, এশিয়া কাপের জন্য আমরা ভালোভাবে প্রস্তুত। শুরুতেই বলেছি, আমরা যে ক্যাম্পটা করেছি সেটা শুধু এই সিরিজের জন্য নয়। আমাদের সামনে যত সিরিজ থাকবে, সেগুলোর জন্যও যেন প্রস্তুত থাকতে পারি। এত ভালো ক্যাম্প আমি কখনও দেখিনি।”
“ফিটনেস তো মিরপুরেও করা যায়। তবে যে ধরনের অনুশীলন আমরা করতে চেয়েছি, সেটা সিলেটেই শুধু পাওয়া গেছে। তাই আমার কাছে মনে হয়, সব মিলিয়ে আমাদের এই জার্নিটা খুব ভালো ছিল।”
তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে তেমন পরিবর্তন করেনি বাংলাদেশ। তবে সব ক্রিকেটারকে দেখে নেওয়ার জন্য বুধবারের ম্যাচটিতে ৫টি পরিবর্তন করে বাংলাদেশ।
যার ফলে সিরিজে প্রথমবার ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ পান তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি অনিক, নুরুল হাসান সোহান ও শামীম হোসেন পাটোয়ারি। স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটারদের মধ্যে শুধু মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনই কোনো ম্যাচে কিছু করতে পারেননি।
বৃষ্টির বাগড়া না এলে হয়তো শেষ ম্যাচে বোলিংয়ের সুযোগ পেতেন সাইফ উদ্দিন। সেটি নিয়ে কিছুটা আক্ষেপ আছে লিটনের। তবে সার্বিকভাবে ইতিবাচক থাকার কথাই বলেন তিনি।
আরও পড়ুন
হৃদয় বড় ম্যাচের খেলোয়াড়, ওকে নিয়ে চিন্তিত নই: লিটন |
![]() |
“সব দিক দিয়ে আমার মনে হয়েছে, পজিটিভ। যারা ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে, ভালো খেলেছে। শুধু সাইফ উদ্দিন কিছুই করতে পারেনি। বাকি সবার অন্তত একটা হলেও ম্যাচের সুযোগ হয়েছে। আমার মনে হয় অনুশীলন করা গুরুত্বপূর্ণ। তবে এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনি ম্যাচে কতটা ডেলিভার করতে পারছেন। ম্যাচ খেললে আপনার উন্নতি বাড়বে, গেম সেন্স বাড়বে।”
এসময় এশিয়া কাপে নিজেদের লক্ষ্যের কথাও বলেন লিটন।
“এশিয়া কাপে অধিনায়ক হিসেবে আমার লক্ষ্য ভালো ক্রিকেট খেলা। ভালো ক্রিকেট খেলার ওপরে তো কিছু নেই। আর ভালো ক্রিকেট খেলতে পারলেই ম্যাচে জয় আসবে।”
No posts available.
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:০৮ এম
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৯:৪৯ এম
একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার, অন্যজন উইকেটকিপার ব্যাটার। দুজনের খেলার ধরনে নেই কোনো মিল। এর চেয়েও বড় অমিল, দুজন দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের ক্রিকেটার। তবে এই দ্বৈরথ ভুলে সাবেক ভারতীয় অধিনায়ককেই আদর্শ হিসেবে নিচ্ছেন পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক।
ভারত ও শ্রীলঙ্কায় হতে যাওয়া নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য ফাতিমা সানার নেতৃত্বে প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। বড় এই টুর্নামেন্টে যাওয়ার আগে কিছুটা চাপ অনুভব করছেন অধিনায়ক ফাতিমা।
তবে ভারতের কিংবদন্তি মহেন্দ্র সিং ধোনিকে দেখে স্থির থাকার অনুপ্রেরণা পান তিনি। পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই কথাই বলেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
“বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টের আগে কিছুটা নার্ভাস লাগাই স্বাভাবিক। তবে আমি মহেন্দ্র সিং ধোনির কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নেই।”
আরও পড়ুন
মেসির বিদায়ী ম্যাচের আগে স্কালোনির চোখে জল |
![]() |
এসময় ধোনির অধিনায়কত্বের প্রশংসা করেন ফাতিমা।
“ভারত ও চেন্নাইয়ের অধিনায়ক হিসেবে আমি তার ম্যাচ দেখেছি। মাঠে তার সিদ্ধান্ত নেওয়া, স্থির থাকা এবং যেভাবে ক্রিকেটারদের পাশে থাকে- এসব থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। আমি যখন অধিনায়ক হলাম, তখন নিজেই নিজেকে বলেছি যে, আমি ধোনির মতো হতে চাই। আমি তার বিভিন্ন সাক্ষাৎকারও দেখেছি এবং সেখান থেকে অনেক কিছু শিখেছি।”
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শুরু হবে নারী বিশ্বকাপের নতুন আসর। বাংলাদেশের বিপক্ষে ২ অক্টোবরের ম্যাচ দিয়ে যাত্রা শুরু করবে পাকিস্তান। নিজেদের সব ম্যাচ শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে খেলবে ফাতিমা সানার দল।
বিশ্বকাপে এবার প্রথমবারের মতো দলকে সেমি-ফাইনালে তুলতে চান ২৩ বছর বয়সী পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
“এবার আমাদের আগে ফাঁড়া ওবশ্যই কেটে যাবে। কারণ তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে সাজানো এই দলটি জানে, পাকিস্তানের নারী ক্রিকেটের জন্য এই টুর্নামেন্ট কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অতীত নিয়ে পড়ে থাকব না। আমার লক্ষ্য হলো, দলকে সেমি-ফাইনালে নিয়ে যাওয়া।”
অন্তর্মুখী স্বভাব, কথা কম বলা, কারও সঙ্গে তেমন মিশতে না পারা- লিটন কুমার দাসের ক্যারিয়ারের শুরু থেকে নানান সময়ে শোনা গেছে এসব কথা। তাই জাতীয় দলে তাকে অধিনায়কত্ব দেওয়া নিয়েও সংশয়ে ছিল বিসিবি। তবে লিটন বললেন, সেসব শুধুই শোনা কথা। তাই কান না দেওয়াই ভালো।
২০২১ সালে প্রথমবার ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেন লিটন। পরের বছর ভারতের বিপক্ষে আবার খণ্ডকালীন দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। পরের বছর আফগানিস্তান ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষেও অধিনায়কত্ব করায় ভাবা হচ্ছিল, লিটনই হবেন জাতীয় দলের নতুন কান্ডারি।
কিন্তু ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর লিটনকে আর দায়িত্ব দেয়নি বিসিবি। তখন বোর্ডের পক্ষ থেকেই অনানুষ্ঠানিকভাবে শোনা গেছে, অধিনায়কত্ব উপভোগ করেন না লিটন। তাই তাকে আপাতত বিবেচনা করা হচ্ছে না জাতীয় দলের নেতৃত্বে।।
আরও পড়ুন
জোড়া কীর্তির পর লিটন, ‘ক্রিকেটার হয়েছি, রেকর্ড হবেই’ |
![]() |
তবে সময়ের পালাক্রমে লিটন এখন টি-টোয়েন্টি দলের স্থায়ী অধিনায়ক। তার নেতৃত্বে টানা তিন সিরিজ জিতে গেছে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজ জয়ের পর এলো তার অধিনায়কত্ব উপভোগের প্রসঙ্গ।
সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের প্রতিক্রিয়ায় শোনা কথাকে উড়িয়ে দিলেন লিটন।
“আমার মুখ থেকে কখনও কি শুনেছেন যে আমি (অধিনায়কত্ব) উপভোগ করি কী করি না? কাজেই কিছু কিছু সময় শোনা কথায় কান না দেওয়া ভালো।”
এরপর অধিনায়কত্ব নিয়ে নিজের ভাবনাও জানান স্টাইলিশ এই ব্যাটার।
“আমি অনেক উপভোগ করি (অধিনায়কত্ব)। উপভোগ করি বলেই দায়িত্ব নিয়েছি। পরপর কয়েকটি সিরিজ আমরা ভালো ক্রিকেটও খেলছি। আমি পারফর্ম করছি, এটাও দলের জন্য দরকার। কারণ নেতা যখন পারফর্ম করে না, দল মানসিকভাবে একটু পিছিয়ে থাকে।”
আরও পড়ুন
হৃদয় বড় ম্যাচের খেলোয়াড়, ওকে নিয়ে চিন্তিত নই: লিটন |
![]() |
“সেদিক থেকে বলব, আমার দলের যেহেতু সবাই পারফর্ম করছে, আমারও একটা চ্যালেঞ্জ ছিল যেন ইনপুট দিতে পারি (ব্যাট হাতে), পারফর্ম যেন করতে পারি। সেদিক থেকে আমি খুবই খুশি যে দলের একটি অংশ হিসেবে প্রভাব রাখতে পারছি।”
লিটনের অধিনায়কত্বে এখন পর্যন্ত ১৯ টি-টোয়েন্টির মধ্যে ১০টি জিতেছে বাংলাদেশ। তার জয়ের হার ৫২.৬৩ শতাংশ। বাংলাদেশের হয়ে অন্তত ৫ ম্যাচ জেতা আর কোনো অধিনায়কের জয়ের হার ৫০ শতাংশের বেশি নেই।
এই ফরম্যাটের লিটনের চেয়ে বেশি ম্যাচ জয়ের রেকর্ড আছে বাংলাদেশের শুধু দুই অধিনায়কের। সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ৩৯ ম্যাচের ১৬টি জিতেছে বাংলাদেশ, মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে ৪৩ ম্যাচে ১৬টি।
পাকিস্তান সিরিজের ব্যর্থতা ঝেরে ফেলে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দারুণ তিনটি ম্যাচ কাটালেন লিটন কুমার দাস। তিন ম্যাচে তিনি গড়লেন একাধিক কীর্তি। তবে এসব নিয়ে ভাবেন না লিটন। সিরিজ শেষে তিনি বললেন, রেকর্ডের চেয়ে ইম্প্যাক্ট রাখার দিকেই বেশি মনোযোগ তার।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবারের ম্যাচে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৬ বলে ৭৩ রান করেন লিটন। এই এক ইনিংসে তিনি গড়েন জোড়া কীর্তি।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৪টি ফিফটির মালিক লিটন। নেদারল্যান্ডস সিরিজে জোড়া ফিফটি করে সাকিব আল হাসানকে (১৩) টপকে এককভাবে এই রেকর্ড গড়েছেন লিটন।
আরও পড়ুন
তিন ম্যাচে দুই ভাইয়ের ৪ সেঞ্চুরি |
![]() |
এছাড়া শেষ ম্যাচে মারা ৪টি ছক্কার পর বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে এখন সর্বোচ্চ ছয়েরও মালিক লিটন। তবে এই তালিকায় লিটনের সঙ্গী, ৩১টি ম্যাচ বেশি খেলা সাবেক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
সিরিজ শেষে টি স্পোর্টসকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় এসব রেকর্ড মনে করিয়ে দেওয়া হয় লিটনকে। তখন তিনি বলেন, রেকর্ড নিয়ে কখনও চিন্তাই করেন না।
“আমি কখনও রেকর্ডের জন্য খেলি না। যদি রেকর্ডের কথা চিন্তা করতাম... আমার অনেক ফিফটি মিস গিয়েছে অ্যাটাকিং ক্রিকেট খেলতে গিয়ে। যদি আমি রেকর্ডের কথা চিন্তা করতাম, ওই সময় হয়তো নিজেকে সময় দিয়ে রেকর্ড গড়ার চেষ্টা করতাম।”
রেকর্ডের চেয়ে বরং দলের হয়ে ইম্প্যাক্ট রাখার দিকেই বেশি জোর লিটনের।
“আমি সবসময় ইম্প্যাক্ট রাখার চিন্তা করি। যদি মনে হয় যে, ওই সময়টায় দলকে বাউন্ডারি দিতে হবে, আমি চেষ্টা করি বাউন্ডারি মারার। রেকর্ড হবেই। ক্রিকেটার যেহেতু হয়েছি, রেকর্ড একটা না একটা হবেই। ভালো হোক বা খারাপ। তবে কীভাবে ধারাবাহিক খেলে যাচ্ছি, কোন প্রক্রিয়ায় খেলে যাচ্ছি সেটা গুরুত্বপূর্ণ।”
প্রথম ম্যাচে ২৯ বলে অপরাজিত ৫৪, দ্বিতীয়টিতে ১৮ বলে অপরাজিত ১৮* আর শেষ ম্যাচে ৭৩ রান। সবমিলিয়ে ১৫৫.৯১ স্ট্রাইক রেট ও ১৪৫ গড়ে ১৪৫ রান করে সিরিজের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জেতেন লিটন।
এক সিরিজ আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের সাফল্যেও ম্যান অব দা সিরিজ হয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তার মতে, ইম্প্যাক্ট রাখতে পারেন বলেই জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।
আরও পড়ুন
হৃদয় বড় ম্যাচের খেলোয়াড়, ওকে নিয়ে চিন্তিত নই: লিটন |
![]() |
“একটা সিরিজ সেরা মানুষ তখনই হয়, যখন সে ইম্প্যাক্ট রাখে। আমার মনে হয় দুইটা সিরিজেই আমি ইম্প্যাক্ট রেখেছি। এটাও ঠিক, প্রতি সিরিজে আপনি ভালো খেলবেন না। আমি চেষ্টা করব ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য। তবে যদি না হয়, আমি হতাশ হবো না। আবার কামব্যাকের চেষ্টা করব।”
শেষ ম্যাচে লিটন যখন ৭৩ রানে আউট হন, তখনও ইনিংসে বাকি ছিল ৩৫ বল। তাই সেঞ্চুরির সুযোগ বেশ ভালোভাবেই ছিল বাংলাদেশ অধিনায়কের। কিন্তু রান রেট বাড়ানোর চেষ্টা করতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে যান স্টাইলিশ ওপেনার।
তবে এটি নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই তার।
“(সেঞ্চুরি মিসের) আক্ষেপ নেই৷ উইকেট এতটা সহজও ছিল না। একটা নির্দিষ্ট সময়ে খুব কঠিন হয়ে গিয়েছিল। যেহেতু তাদের দুজন বাঁহাতি ভালো করছিল। ওখান থেকে বের হয়ে যদি ইনিংস শেষ করতে পারতাম তাহলে গেম সিনারিও অন্যরকম হলেও হতে পারত। তবে আমি খুশি। যেই ইন্টেন্ট সহকারে ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলাম। তাতে আমি খুশি।”
রুবিন হারমান ও জর্ডান হারমান- দক্ষিণ আফ্রিকা 'এ' দলের দুই ভাই। বিশ্ব ক্রিকেটে একই দলে দুই ভাইয়ের খেলার ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে এই প্রোটিয়া দুই ভাই নজর কেড়েছেন নিজেদের ব্যাটিং পারফরম্যান্স দিয়ে।
নিউ জিল্যান্ড 'এ' দলের বিপক্ষে তিন ম্যাচের আনঅফিসিয়াল ওয়ানডে সিরিজে দুই ভাই মিলে করেছেন ৪টি সেঞ্চুরি। দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিজ জয়ে ব্যাট হাতে সবচেয়ে সফল প্রিটোরিয়ার হারমান পরিবারের এই দুই ভাই।
দুজনই করেন দুইটি করে সেঞ্চুরি। অপরাজিত দুই সেঞ্চুরিতে জর্ডান করেন ১০১* ও ১৮৬* রান। আর রুবিনের ব্যাট থেকে আসে ১৫৮* ও ১০৯ রানের দুটি ইনিংস। সিরিজের রান সংগ্রাহকদের তালিকায়ও সবার ওপরে তারা দুই ভাই।
আরও পড়ুন
হৃদয় বড় ম্যাচের খেলোয়াড়, ওকে নিয়ে চিন্তিত নই: লিটন |
![]() |
বেনোনিতে গত ৩০ আগস্ট শুরু হয় নিউ জিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার এই সিরিজ। প্রথম ম্যাচে কিছুই করতে পারেননি ছোট ভাই জর্ডান। তবে দায়িত্ব নেন বড় ভাই রুবিন। মাত্র ৯৩ বলে ১৮ ও ৭ ছক্কায় ১৫৮ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে এটিই রুবিনের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
পরের ম্যাচে একসঙ্গে জ্বলে ওঠেন দুই ভাই। ২৪৯ রানের লক্ষ্যে দ্বিতীয় উইকেটে তারা দুজন গড়েন ১৫৪ রানের জুটি। মাত্র ৯৮ বলে ১০৯ রানের ইনিংস খেলে আউট হন রুবিন। তবে ১০৫ বলে ১০১ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেন জর্ডান।
একই মাঠে বুধবার হওয়া সিরিজের শেষ ম্যাচে শুরুতেই বিদায় নেন রুবিন। বড় ভাই আউট হওয়ার পর উইকেটে যান জর্ডান। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ২৬ চার ও ৩ ছক্কায় তিনি খেলেন ক্যারিয়ার সেরা ১৮৬ রানের ইনিংস।
সব মিলিয়ে ২৮৭ রান করে জর্ডানই সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। আর ২৮০ রান নিয়ে দুই নম্বরে তার বড় ভাই রুবিন।
লিস্ট 'এ' ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ২৬ ম্যাচ খেলে জর্ডানের সেঞ্চুরি ৪টি। এছাড়া ২৮ প্রথম শ্রেণির ম্যাচে তার সেঞ্চুরি আছে চারটি, আর ৫৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও সেঞ্চুরি দুটি। জাতীয় দলের হয়ে এখনও তার অভিষেক হয়নি।
বড় ভাই রুবিন এরই মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলে ফেলেছেন পাঁচটি টি-টোয়েন্টি। গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চার নম্বরে নেমে ৪ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৬ বলে অপরাজিত ৬৩ রানের ইনিংসে দলকে জিতিয়ে ম্যাচ-সেরার স্বীকৃতি পান তিনি।
একের পর এক বড় শটে নেদারল্যান্ডসের বোলারদের তুলাধুনা করছিলেন লিটন কুমার দাস। কিন্তু অন্য প্রান্তে পুরোপুরি বিপরীত তাওহিদ হৃদয়। কোনোভাবেই ব্যাটে-বলে করতে পারছিলেন না তিনি। শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছে অল্প রানে।
হৃদয়ের এই দুরাবস্থা চলছে বছরের শুরু থেকেই। তবে তাকে নিয়ে চিন্তার কিছু দেখেন না লিটন কুমার দাস। বরং বাংলাদেশ অধিনায়কের আশা, এশিয়া কাপের ম্যাচ দিয়েই ঘুরে দাঁড়াবেন ২৪ বছর বয়সী ব্যাটার।
আরও পড়ুন
হান্ড্রেডে বাজিমাত করে জাতীয় দলে কক্স |
![]() |
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাটিং পাননি হৃদয়। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে তিন নম্বরে নামানো হয় তাকে। লিটনের ব্যাটে তখন রীতিমতো উড়ছে বাংলাদেশ। কিন্তু হৃদয় যেন ওড়া দূরে থাক, হাঁটতেও চাইলেন না।
দুই বাঁহাতি স্পিনার টিম প্রিঙ্গেল ও ড্যানিয়েল ডোরামের বলে একের পর এক ডট খেলে ১৪ বলে ৯ রান করে আউট হয়ে যান হৃদয়। তার এমন ব্যাটিংয়ের কারণে সাময়িক সময়ের জন্য চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ দলও।
তবে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে হৃদয়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন লিটন।
“নির্দিষ্ট দিনে এরকম স্ট্রাগল আসতে পারে। আমি এটা নিয়ে একদম চিন্তিত নই। আমি জানি, এই দলের জন্য হৃদয় কী করতে পারে। অধিনায়ক হিসেবে আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে, সে এশিয়া কাপে ঘুরে দাঁড়াবে এবং ভালো ক্রিকেট খেলবে।”
এসময় নেদারল্যান্ডসের দুই বোলারের কৃতিত্বের কথাও বলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
“কোনো ব্যাটার সেট হয়ে খেলা আর কোনো ব্যাটার এসেই ভালো ডেলিভারি পেয়ে গেলে একটু কঠিন হয়ে যায়। আমার মনে হয়, হৃদয়ের আজকের ব্যাটিংয়ে একটু আনলাকি ছিল। ও যখন নেমেছে, দুই দিক থেকে বাঁহাতি স্পিনার বোলিং করছিল এবং উইকেট থেকেও সাহায্য পাচ্ছিল।”
আরও পড়ুন
এশিয়া কাপের জন্য আমরা ভালোভাবে প্রস্তুত: লিটন |
![]() |
তবে হৃদয়ের দুর্দশা শুধু এই এক ম্যাচেই নয়। চলতি বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুর্বল বোলিংয়ের বিপক্ষে ২৪ বলে ৪৫ রানের ইনিংস ছাড়া তেমন কিছু করতে পারেননি হৃদয়। সব মিলিয়ে ১২ ইনিংসে ২০.৪৫ গড় ও ১১০.৮৩ স্ট্রাইক রেটে এই বছর তার সংগ্রহ মাত্র ২২৫ রান।
তবু তাকে নিয়ে চিন্তা করতে চান না লিটন।
“আমি হৃদয়কে নিয়ে একদমই চিন্তিত নই। আমার মনে হয়, সে বড় ম্যাচের খেলোয়াড় এবং সে ঘুরে দাঁড়াবে।”