
তিন জাতি নারী প্রীতি ফুটবল সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০ মিনিটে লিড নেয় ইউরোপের দেশ আজারবাইজান। পল্টনের জাতীয় স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার জাফারজাদা সেভিনজের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ১৩ মিনিটে স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান মারিয়া মান্দা।
ম্যাচ ঘড়ির ৩৩ মিনিটে কর্নার থেকে স্বপ্না রানীর শট ফিস্ট করে ফিরিয়ে দেন আজারবাইজাইনের গোলকিপার শরিফা আয়তাজ। ফিরতি বলে মারিয়া মান্দার শট টপ কর্নার দিয়ে জালে জড়ায়। বাংলাদেশ মিডফিল্ডারের অ্যাক্রোবেটিক শট আজারবাইজানের গোলরকিপার ঠাঁই দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া উপায় ছিল না।
এ গোল নিয়ে ম্যাচ শেষে সম্প্রচার চ্যানেল টি স্পোর্টসকে মারিয়া মান্দা জানান, জাতীয় দলের হামজা চৌধুরীর গোল থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই এমন গোল করেছেন তিনি।
সম্প্রতি নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে ইংল্যান্ড প্রবাসী ফুটবলার হামজার চোখ ধাঁধাঁনো ওভারহেড গোল মাঠে বসে দেখেছেন মারিয়া। তিনি বলেন,
‘জ্বি (হামজার গোল থেকে অনুপ্রাণিত) হামজা ভাই যখন গোল দিয়েছিল, আমরা খেলাটা দেখেছি। খুব ভালো লেগেছিল। আমাদের সবসময় প্র্যাকটিসে শেখানো হয় কিভাবে গোল করতে হবে। চেষ্টা করেছি এবং হয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন,
‘গোল খাওয়ার পরে টিম একটু ডাউন হয়ে যায়। তো এরপরেও কিন্তু আমাদের টিম ডাউন হয়নি। আর তাছাড়াও বাইরে আমাদের সাপোর্টার ছিল। সাপোর্টের জন্য আমরা আবার কামব্যাক করেছি এবং গোল দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ৭৪ নম্বর দলের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথম গোল দেখা পেলেন মারিয়া। সিনিয়র টিমে প্রথম গোল নিয়ে তিনি বলেন,
‘হ্যাঁ (ক্যারিয়ারের সেরা গোল)। আমি এই প্রথম আমি সিনিয়রে টিমের প্রথম গোল করেছি। তো ওই হিসেবেই আমার...।’
সর্বোপরি জাতীয় দলের এই মিডফিল্ডার বলেন,
‘আমরা ট্রাই করেছি বেস্টটা দেওয়ার। খেলার সিচুয়েশনে আসলে গোল হয়ে যায়।’
No posts available.
৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৫ এম
৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯:৫৪ এম

হান্সি ফ্লিকের কোচিংয়ে সবশেষ মৌসুমে অপ্রতিরোধ্য ছিলেন রাফিনহা। ইউরোপিয় ফুটবলে ২০২৪-২৫ মৌসুমে প্রতিপক্ষের জালে প্রায় প্রতি ম্যাচে গোল উৎসব মেতে উঠত বার্সেলোনা। আর কাতালান ক্লাবটির আক্রমণভাগের প্রাণভোমরা ছিলেন রাফিনহা। ঘরোয়া ট্রেবল জেতা ওই মৌসুমে ক্লাবের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলে অবদান রাখা ফুটবলারও এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারই।
মনে হতে পারে হঠাৎ গত মৌসুমের আলাপ কেন? ব্যালন ডি’অর। ফুটবলের সর্বোচ্চ ব্যাক্তিগত এই স্বীকৃতি সবশেষ উঠেছে পিএসজির ফরোয়ার্ড উসমান দেম্বেলের হাতে। অনেকের মতে এই সোনালী ট্রফি ফরাসি এই ফরোয়ার্ডেরই প্রাপ্য ছিল। তালিকায় দুইয়ে ছিলেন বার্সার তারকা উইঙ্গার লামিনে ইয়ামাল। আর তাঁর সতীর্থ রাফিনহার জায়গা হয়েছে পাঁচ নম্বরে। ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারকে যেখানে অনেকে ব্যালন ডি’অর জয়ের অন্যতম দাবীদার ধরে রেখেছিলেন, সেই রাফিনহা কিনা পাঁচ নম্বরে।
অনেকের মতো এবার আতলেতিকো মাদ্রিদের কোচ দিয়াগো সিমিওনেও নিজের বিস্ময় প্রকাশ করলেন রাফিনহার ব্যালন জিততে না পারা নিয়ে। গতকাল রাতে ন্যূ ক্যাম্পে আতলেতিকোর বিপক্ষে বার্সেলোনার ৩-১ গোলে জয়ের ম্যাচে কাতালান ক্লাবটির হয়ে প্রথম গোলটি করেন রাফিনহা।
আরও পড়ুন
| আতলেতিকোকে হারিয়ে চূড়ায় পোক্ত বার্সা |
|
ম্যাচের পর স্পেনের ক্রীড়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ফুটবল স্পানা’ কে বার্সার বিপক্ষে ম্যাচের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন আতলেতিকোর কোচ সিমিওনে। রাফিনহাকে প্রশংসায় ভাসিয়ে ৫৫ বছর বয়সী এই কোচ বলেছেন, ‘সে এক অবিশ্বাস্য খেলোয়াড়। সে যে কোনো জায়গায় খেলতে পারে—উইঙ্গার, মিডফিল্ডার, স্ট্রাইকার, এমনকি উইং-ব্যাক হিসেবেও।
রাফিনহার ব্যালন ডি’অর জিততে না পারা অবাক করে সিমিওনেকে, ‘রাফিনিহা গোল করতে পারে, সুযোগ তৈরি করতে পারে, চাপ সৃষ্টি করতে পারে। আমি বুঝতে পারি না কীভাবে সে ব্যালন ডি’অর জিতেনি। আমি সবসময় তাকে বেছে নিতাম।’
ব্যালন ডি’অর জেতা দেম্বেলে এগিয়ে যান মূলত চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেই। সবশেষ মৌসুমে পিএসজির হয়ে ট্রেবল জেতা পিএসজির ফরোয়ার্ড ৬০ ম্যাচে ৩৭ গোল ও ১৫ অ্যাসিস্ট করেছিলেন।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দারুণ পারফরম্যান্স ছিল রাফিনহারও। ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতার সবশেষ আসরে সর্বোচ্চ গোলে অবদান রেখেছিলেন ২৮ বছর বয়সী উইঙ্গার। পুরো মৌসুমে ৫৭ ম্যাচে ৩৪ গোলের সঙ্গে করেছেন ২২টি অ্যাসিস্ট। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ব্লকব্লাস্টার সেমি ফাইনালে ইন্টার মিলানের কাছে বার্সা হেরে গেলে ব্যালন ডি’অর জেতার দৌড়ে পিছিয়ে পড়েন রাফিনহা। শেষ পর্যন্ত তাঁর জায়গা হয় পাঁচে।

ম্যানচেস্টার সিটি-ফুলহ্যামের ম্যাচটি সরাসরি যারা দেখেছেন, চোখ সরানোর কোনো সুযোগই তাদের দেননি দুই দল। এই সিটি এগিয়ে গেল, তো দ্রুতই পাল্টা জবাব দিয়ে গোল করছে ফুলহ্যামও। উত্থান-পতনের রোমাঞ্চকর এই ম্যাচে ফলটা শেষ পর্যন্ত পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি পক্ষেই এসেছে।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে গতকাল রাতে ফুলহ্যামের মাঠ থেকে ৫-৪ গোলের রুদ্ধশ্বাস এক জয় নিয়ে ফিরেছে ম্যানচেস্টার সিটি। সিটিজেনদের হয়ে জোড়া গোল করেছেন ফিল ফোডেন। একটি গোলের সঙ্গে সতীর্থদের দিয়ে আরও দুটি গোল করিয়েছেন আর্লিং হলান্ড। বাকি দুটির একটি সিটির ডাচ মিডফিল্ডার দিজানি রেইন্ডার্স আর অন্যটি আত্মঘাতি গোলের সৌজন্যে।
সিটির নরওয়েজিয়ান তারকা ফরোয়ার্ড হলান্ডের জন্য ম্যাচটি ছিল দুর্দান্ত এক রেকর্ডের। ম্যাচে দলের হয়ে প্রথম গোলটি করে সেঞ্চুরি করেন এই গোলমেশিন। প্রিমিয়ার লিগে ১১১ ম্যাচে হলান্ডের গোল এখন বরাবর ১০০। লিগটির ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত শতক স্পর্শ করার রেকর্ডটি এখন তাঁর। ২৫ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার ভেঙে দিয়েছেন ১২৪ ম্যাচে এই মাইলফলক স্পর্শ করা অ্যালান শিয়ারার। ২০২২ সালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে সিটিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই একের পর এক কীর্তি গড়ে চলেছেন হলান্ড।
আরও পড়ুন
| আতলেতিকোকে হারিয়ে চূড়ায় পোক্ত বার্সা |
|
প্রিমিয়ার লিগে চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলও হলান্ডের। ১৪ ম্যাচে তাঁর গোল সংখ্যা ১৫। ব্রেন্টফোর্ডের ইগর তিয়াগো ১১ গোল নিয়ে তার সবচেয়ে কাছের প্রতিদ্বন্দ্বী।
প্রিমিয়ার লিগের শততম গোলের মাইলফলক ম্যাচের ৬ মিনিটেই হতে পারত হলান্ডের। প্রতিপক্ষের দুই খেলোয়াড়ের মাঝ থেকে দারুণ পাস দেন ফোডেন, বল ধরে ডি-বক্সেও ঢুকে পড়েন সিটির গোলমেশিন। এরপর প্রতিপক্ষের সবশেষ বাধা গোলকিপারকেও ফাঁকি দেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁর শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে।
অবশ্য গোলের জন্য খুব একটা অপেক্ষা করতে হয়নি হলান্ডকে। ১৭ মিনিটে বাঁ দিক থেকে জেরেমি ডোকুর পাস পেনাল্টি স্পটের কাছে পেয়ে, প্রথম ছোঁয়ায় জোরাল শটে ব্যবধান ১-০ করেন তিনি।
সিটির দ্বিতীয় গোলে গোল সহায়তাকারীর ভূমিকায় হলান্ড। প্রতিপক্ষের একাধিক খেলোয়াড়ের মধ্য থেকে দারুণ থ্রু পাস বাড়ান তিনি, নিখুঁত চিপ শটে গোলকিপারের ওপর দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন রেইনডার্স। ৪৪ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে ব্যবধান আরও বাড়ান ফোডেন। প্রথামার্ধের যোগ করা সময়ে এমিলি স্মিথের দারুণ হেডে ব্যবধান একটু কমায় ফুলহ্যাম।
তবে কে জানতো ৩-১ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়া ম্যান সিটিকে এরপর কঠিন পরীক্ষায় ফেলবে ফুলহ্যাম। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতেই অবশ্য ফের ব্যবধান বাড়ায় সিটি। সতীর্থের বাড়ানো বল ডি-বক্সে ব্যাকহিলের আলতো টোকায় ডান দিকে ঠেলে দেন হলান্ড, কোনাকুনি শটে জোড়া গোল পূর্ণ করেন ফোডেন।
এরপর তিনবার সিটির জালে বল পাঠিয়েছে ফুলহ্যাম। তবে ৫৪ মিনিটে আত্মঘাতি এক গোল হজম করে কপাল পোড়ে স্বাগতিকদের। ডোকুর জোরাল শটে ফুলহ্যামের মিডফিল্ডার স্যান্ডা বার্গার গায়ে লেগে দূরের পোস্ট দিয়ে বল ঠিকানা খুঁজে পায়, ব্যবধান তখন ৫-১।
ম্যাচে পরের অংশে একের পর এক গোল করে সিটির বুকে কাঁপন ধরিয়ে দৃশ্যপট পাল্টে দেয় ফুলহ্যাম। ৫৭ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে ডি-বক্সের বাইরে থেকে শটে ফুলহ্যামের দ্বিতীয় গোলটি করেন আলেক্স আইওবি।
৭২ মিনিটে ব্যবধান হয়ে যায় ৫-৩। বুলেট গতির শটে সিটির গোলকিপারকে পরাস্ত করেন নাইজেরিয়ার মিডফিল্ডার। স্যামুয়েল। মাঝে দু’টি অফসাইডের জন্য ভিএআরে দীর্ঘ সময় বন্ধ ছিল খেলা। মাঠে বল গড়াতেই আবার গোল খেয়ে বসল সিটি। কর্নারে থেকে এক হাত দিয়ে বল বিপদমুক্ত করার চেষ্টা করেন জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা। তবে ব্যর্থ হন ইতালির গোলকিপার, আর সেই সুযোগে ফাঁকায় বল পেয়ে জোরাল কোনাকুনি শটে আরেক দফা ব্যবধান কমিয়ে আনেন স্যামুয়েল।
হঠাৎ খেই হারানো সিটিকে বাগে পেয়ে আক্রমণের বেগ আরও বাড়ায় ফুলহ্যাম। গোলের দারুণ কিছু সুযোগও তৈরি করে তাঁরা। তবে দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে পুরো তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিটি।

বার্সেলোনার মুখোমুখি হওয়ার আগে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা সাত ম্যাচ জয় পেয়েছিল আতলেতিকো মাদ্রিদ। লিগে তিন মাসেরও বেশি সময় হার দেখেনি তারা। বার্সার বিপক্ষেও শুরুতে এগিয়ে যায়। তবে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি আতলেতিকো। অবশেষে ভাঙল তাদের জয়ের ধারা। প্রিয় আঙিনা ন্যূ ক্যাম্পে ফেরার পর দারুণে ছন্দে থাকা বার্সা সহজেই হারাল দিয়েগো সিমিওনের দলকে।
লা লিগায় ঘরের মাঠে গতকাল আতলেতিকোর বিপক্ষে ৩-১ গোলে জিতেছে বার্সা। অ্যালেক্স বায়েনার গোলে পিছিয়ে পড়ার পর স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান রাফিনহা। এরপর দানি ওলমো এবং যোগ করা সময়ে ফেরান তরেসের গোলে উড়তে থাকা আতলেতিকোকে মাটিতে নামিয়ে আনে হান্সি ফ্লিকের দল।
এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে নিজেদের অবস্থান আরও সুসংহত করল বার্সা। ১৫ ম্যাচে ১২ জয়, একটি হার ও দু’টি ড্রয়ে কাতালান ক্লাবটির পয়েন্ট ৩৭। এক ম্যাচ কম খেলে বার্সার চেয়ে ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে দুইয়ে রিয়াল মাদ্রিদ। বার্সেলোনার বিপক্ষে জয় পেলে রিয়ালকে হটিয়ে দুইয়ে উঠে আসতে পারত আতলেতিকো। তবে ১৫ ম্যাচের ৯টিতে জিতে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরেই আছে জুলিয়ান আলভারেজের দল।
বল দখলের লড়াইয়ে প্রায় সমানতালেই লড়েছে বার্সা-আতলেতিকো। তবে আক্রমণে আর গোলের সুযোগ তৈরিতে সফরকারীদের চেয়ে ঢের এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। ১৯টি শট নিয়ে ৯টি লক্ষ্যে রেখেছেন লামিনে ইয়ামাল-রবার্ট লেভানডফস্কিরা। যেখানে মোটে সাতটি শট নিয়ে দুটি লক্ষ্যে রাখতে পারে আতলেতিকো।
সমতায় ফিরতে সাত মিনিট সময় নিয়েছে বার্সা। চোট থেকে ফিরে প্রথম গোল পেলেন স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটির ব্রাজিলিয়ান তারকা উইঙ্গার রাফিনহা। পেদ্রির নিখুঁত থ্রু-পাস ধরে আতলেতিকোর গোলকিপার ইয়ান ওবলাককে কাটিয়ে খালি জালে বল পাঠান রাফিনহা।
আরও পড়ুন
| হামজা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মারিয়ার অ্যাক্রোবেটিক গোল |
|
প্রথামার্ধেই লিড নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল বার্সা। আতলেতিকোর খেলোয়াড় পাবলো বারিওস বার্সা মিডফিল্ডার ওলমোকে ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজায় রেফারি। কিন্তু স্পট কিক নিতে আসা লেভানডফস্কি ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে মেরে সুযোগ হাতছাড়া করেন।
দ্বিতীয়ার্ধ পরিণত হয় শ্বাসরুদ্ধকর এক দফা আক্রমণ–প্রতিআক্রমণে। ৬৫ মিনিটে ব্যবধান ২-১ করা গোলটি পেয়ে যায় বার্সা। বার্সাকে এগিয়ে দেন ওলমো। তবে এই গোলের জন্য চড়া মূল্যও চুকাতে হয়েছে বার্সেলোনাকে। শট নেওয়ার সময় কাঁধে চোট লেগে মাঠ ছাড়েন এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার।
এরপর সিমিওনের দল সমতায় ফিরতে পারত। কিন্তু বদলি নামা আর্জেন্টাইন উইঙ্গার থিয়াগো আলমাদা অবিশ্বাস্যভাবে খালি জাল পেয়েও শট মিস করেন। আর শেষ দিকে যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে আরেক দফা আতলেতিকোর জালে বল পাঠিয়ে তাদের ফেরার সব সম্ভাবনা শেষ করে দেয় বার্সা। আলেহান্দ্রো বালদের ক্রস ধরে কাছ থেকে গোল করে বার্সার জয় নিশ্চিত করেন ফেরান তরেস।
লা লিগায় বার্সার পরের ম্যাচ রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে। আগামী শনিবার ক্লাবটির মাঠে আতিয়েতা নেবে বর্তমান লিগ চ্যাম্পিয়নরা। আর আতলেতিকো মাদ্রিদের পরের অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে।

তিন জাতি নারী প্রীতি ফুটবল সিরিজের শেষ ম্যাচে আজারবাইজানের কাছে ১-২ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। এর আগে মালয়েশিয়ার কাছে আফঈদা খন্দকারদের হার ছিল ১-০ ব্যবধানে। তবে আজ ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ৭৪ নম্বর দলের বিপক্ষে ভালোই ফাইট দিয়েছে স্বাগতিক দলের মেয়েরা।
এদিন ২০ মিনিটে এগিয়ে যায় আজারবাইজান। বক্সের বাঁ-প্রান্ত থেকে মানিয়া ইসরার ক্রসে হেডে টপ কর্নারে জালে বল জড়ান দলের অতিথি দলের অধিনায়ক জাফারজাদা সেভিনজ। গোলের পর উদযাপনটা করলেন ভিন্নভাবে। অধিনায়কের গোলের পরই ডাগআউট থেকে একটা সাদা টি-শার্ট দেওয়া হয় তাঁর হাতে।
টি-শার্টে ইংরেজিতে লেখা ছিল ‘মমস নেভার ডাইস, ইউ অলওয়েজ ইন মাই হার্ট’, অর্থ দাঁড়ায় ‘মায়েরা কখনো মারা যায় না, তুমি সব সময় আমার মনের মধ্যে আছো’। অশ্রু সিক্ত নয়নেই গোলের উদযাপনটা করেন তিনি।
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে আসা আজারবাইজানের কোচ আজগরভ ঘটনাটি ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন,
'আজ আমাদের অধিনায়কের মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী। দুই বছর (আসলে চার বছর) আগে তিনি এই পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। তাই অধিনায়ক তার মাকে স্মরণ করেছেন।’
আজারবাইজানের কোচ অধিনায়কের এই উদযাপন নিয়ে আরও বলেন,
'গতকাল অনুশীলনের পর আমাদের এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা জানতাম আগামীকাল তার মায়ের প্রয়াণ দিবস। তিনি গোল করলে এ রকম উদযাপন হবে সেটা আমাদের পরিকল্পনায় ছিল।'
অধিনায়কের মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে সরাসরি উৎসর্গ না করলেও উপহার হিসেবে দেখছেন কোচ,
'এটা তার জন্য আমাদের দল থেকে ভালো একটি উপহার।'

আজারবাইজানের বিপক্ষে দারুণ পারফরম্যান্স করেও পরাজয় সঙ্গী বাংলাদেশের। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৩০ ধাপ এগিয়ে থাকা দলের বিপক্ষে এক গোলের (১-২) ব্যবধানে হেরেছে পিটার বাটলারের দল। প্রতিপক্ষকে হারালেও আফঈদা খন্দকারদের প্রশংসা করেছেন আজারবাইজানের কোচ আসগারভ সিয়াসাত। মাঠে লড়াকু মানসিকতা দেখাতে পারলে এশিয়ান কাপে উজবেকিস্তানকে বাংলাদেশ হারাতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।
ঘরের মাঠে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) তিন জাতি প্রীতি সিরিজ আয়োজনের বড় কারণ ছিল এশিয়ান কাপ সামনে রেখে নিজেদের প্রস্তুত করা। সে লক্ষ্যে প্রথম ম্যাচে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলে হারে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচ ড্রতে শেষ হবে, এমনটাই মনে হচ্ছিল। তবে ৮৪ মিনিটে রক্ষণের একটি ভুলে হারতে হয় বাংলাদেশকে। যদিও পুরো ম্যাচে রক্ষণে নবিরণ খাতুন, শিউলি আজিমরা ছিলেন দুর্দান্ত।
আজ ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনেও তরুণ ডিফেন্ডার নবিরণের প্রশংসা করেছেন কোচ পিটার বাটলার। তাঁর চোখ এখন মার্চের এশিয়ান কাপে। যেখানে গ্রুপ পর্বে শক্তিশালী চীন, উত্তর কোরিয়া ও উজবেকিস্তানকে মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ।
শক্তিশালী আজারবাইজানের বিপক্ষে দলের এমন লড়াকু মানসিকতা কতটা কাজে দেবে উজবেকিস্তানের বিপক্ষে? এমন প্রশ্নে বাটলার বলেন,
'আমরা এমন একটি দলের (উজবেকিস্তান) বিপক্ষে খেলতে যাচ্ছি যারা টেকনিক্যালি খুবই দক্ষ। সেটা মাথায় রাখতে হবে। আজকের ম্যাচ থেকে আমাদের শিখতে হবে— যদি তুমি সুযোগ নষ্ট করো, তাহলে তুমি বল হারাবে, বল প্রতিপক্ষের কাছে যাবে এবং তুমি এর জন্য শাস্তি পাবে। কারণ এই ধরনের দলগুলো খুব দ্রুতগতির। বিশেষ করে প্রতি আক্রমণে তারা বিদ্যুৎ গতিতে আসে।'
ম্যাচে বাংলাদেশের ৮৪ মিনিটের ওই একটি ভুলের কথা স্বীকার করলেন উজবেকিস্তানের কোচ। সেটি কাজে লাগিয়েই তারা পেয়েছে দারুণ জয়। তবে প্রশংসা করতে ভুল করেননি বাংলাদেশের মেয়েদের। এমনকি এশিয়ান কাপের জন্য ঋতুপর্ণাদের সাহস দিয়েছেন তিনি,
'সত্যি বলতে আমি মনে করি বাংলাদেশ যদি আজকের মতোই খেলে, তাহলে তারা সহজেই উজবেকিস্তানকে হারাতে পারে।'