২৪ অক্টোবর ২০২৫, ৪:৫৭ পিএম

ম্যাচের শুরুতেই পেনাল্টি থেকে গোল পেল আবাহনী। মনোবল না হারিয়ে লড়াই করে গেল ফকিরেরপুল ইয়াংমেন্স ক্লাব। তবে শেখ মোরছালিন আর সোলেমান দিয়াবাতের দারুণ পারফরম্যান্সের সামনে পেরে উঠল না তারা। দ্বিতীয়ার্ধে দুই গোল পরিশোধ করলেও ৬ গোলের ম্যাচ জিততে পারেনি ফকিরেরপুল। মৌসুমেরই প্রথম জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মারুফুল হকের দল।
ফেডারেশন কাপের খেলায় শুক্রবার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ফকিরেরপুল ইয়াংমেন্স ক্লাবকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে ঢাকা আবাহনী। জোড়া গোল করেছেন আবাহনীর দুজন- মোরছালিন ও দিয়াবাতে। লিগে দুই ম্যাচে জয়হীন (একটি ড্র, একটিতে হার) থাকার পর ফেডারেশন কাপে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে শুরু করল প্রতিযোগিতার বর্তমান রানার্সআপরা।
এই মৌসুমে ঘরোয়া ফুটবল লিগ এবং এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ মিলিয়ে মোট ৩ ম্যাচ খেলে আবাহনী। যেখানে দলটি করতে পেরেছিল স্রেফ এক গোল। আর মৌসুমের চতুর্থ ম্যাচ খেলতে নেমেই কি না আকাশি-নীলরা প্রতিপক্ষের জাল কাঁপালেন চারবার! আগের একটি গোলও আসে দিয়াবাতের পা থেকেই; লিগে ব্রাদার্সের বিপক্ষে ২-১ গোলে হারা ম্যাচে।
এদিন চতুর্থ মিনিটে ম্যাচের দ্বিতীয় আক্রমণে পেনাল্টি আদায় করে নেয় আবাহনী। মাঝ মাঠ থেকে লং পাস ধরে ডান প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢোকেন দিয়াবাতে। সামনে এগিয়ে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে দিয়াবাতের পায়ে মেরে বসেন ফকিরেরপুল গোলকিপার সাজু আহমেদ। হলুদ কার্ড দেখার সঙ্গে পেনাল্টিও হজম করতে হয় তাঁকে। ষষ্ঠ মিনিটে সফল স্পট কিকে লক্ষ্যভেদ করেন দিয়াবাতে।
১৪ মিনিটে গোল না পাওয়ার হতাশায় পুড়ে ফকিরেরপুল। জটলার মধ্যে বক্সের একটু সামনে থেকে নেওয়া মোস্তফা মাহমুদ আবদেল খালেকের শট খুজে নিচ্ছিল জাল। আবাহনীর গোলকিপাল প্রিতম বাঁ দিকে ঝাপিয়ে বলের নাগাল পাননি। তবে শেষ পর্যন্ত পোস্টে লেগে ফিরে আসে বল।
দুই মিনিট পর মারান্দির দূরপাল্লার শট বেরিয়ে যায় আবাহনীর বক্সের বা পাশ ঘেঁষে। ২৪ মিনিটে বক্সের মধ্যে দিয়াবাতের দারুণ ক্যাটব্যাকে পা ছোয়াতে পারেননি আবাহনীর কেউ। পরের মিনিটে আকাশি-নীল রক্ষণের পরীক্ষা নেন ফকিরেরপুলের আবদেল খালেক, মারান্দিরা।
২৬ মিনিটে দারুণ ক্ষীপ্রতায় বক্সে ঢুকে ডান প্রান্ত থেকে আরেকটি কাটব্যাক দেন দিয়াবাতে, তবে বলের লাইনেই দাঁড়াতে পারেননি আল আমিন। পরের মিনিটে বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারেননি আগের মৌসুমে পুলিশ এফসিতে খেলা এই ফরোয়ার্ড।
৩৩ মিনিটে মোরছালিনের দারুণ ফিনিশিংয়ে লিড দ্বিগুণ করে আবাহনী। আক্রমণের শুরু মাঝ মাঠে শাকিলের থেকে। এরপর দিয়াবাতের সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে বক্সের ঠিক সামনে থেকে আড়াআড়ি ও নিচু শটে দুরের পোস্ট দিয়ে বল জালে জড়ান জাতীয় দলের এই মিডফিল্ডার। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি ফকিরেরপুল গোলকিপার সাজু। ৯ অক্টোবর জাতীয় স্টেডিয়ামে হংকং, চায়নার বিপক্ষে ৩-৪ ব্যবধানে বাংলাদেশের হারা ম্যাচেও গোল পেয়েছিলেন মোরছালিন।
মোরছালিনের দারুণ ফিনিশিংয়ের পর আল আমিন আটকে যান সাজুর ব্লকে। পোস্টে ঢুকে আড়াআড়ি কোন থেকে সাজুকে পরাস্ত করতে পারলে গোল পেতে পারতেন আল আমিন। তবে সোজা প্রতিপক্ষ গোলকিপার শরীর বরাবর মেরে বসেন তিনি।
দলকে লিড বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ এনে দেন দিয়াবাতে। ৩৬ মিনিটে পেনাল্টি আদায় করেন তিনি। স্পট কিক নিতে এসে সাজুর হাতের নিচ দিয়ে বল ঠেলে ম্যাচে গোলের জোড়া পূর্ণ করেন আবাহনীর মালির ফরোয়ার্ড। আবাহনী এগিয়ে যায় ৩-০ ব্যবধানে।
বিরতির পর যেন কিছুটা ঝিমিয়ে পড়ে ধানমন্ডি পাড়ার ক্লাবটির মিডফিল্ড। সুযোগ কাজে লাগিয়ে এক গোল পরিশোধ করেন ফকিরেরপুলের শান্ত টুডু। আবদেল খালেকের বল ধরে সামনে থাকা আবাহনীর দুই ডিফেন্ডার ইয়াসিন খান ও কামরুলকে কাটিয়ে বক্সের সামনে থেকে শট নেন পোষ্টে; অনেকটা এগিয়ে আসা গোলকিপার প্রিতমের মাথার উপর দিয়ে বল সরাসরি খুজে নেয় জাল।
৫৬ মিনিটে ম্যাচ জমিয়ে তোলার দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করে ফকিরেরপুল। ডানপ্রান্ত দিয়ে পেনাল্টি সীমানায় ঢুকে পড়েন বেন ইবরাহীম। এরপর একটা দারুণ কাটব্যাক; তবে গোলমুখের সামনে আবদেল খালেক যে ভুলটা করলেন সেটা হয়ত বিশ্বাস হয়নি তার নিজেরও। পা ছোয়াতে পারলে নিশ্চিতপ্রায় গোল!
ফকিরেরপুলের ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে ৬৪ মিনিটে আবাহনীর ব্যবধান ৪-১-এ বাড়িয়ে নেন মোরছালিন। ৬ মিনিট পর বেন ইবরাহীমের পাস থেকে আরেকবার ব্যবধান কমান মো. রিয়াদ। ৭৯ মিনিটে হ্যাটট্রিকের সুযোগ মিস করে মোরছালিন। পরের মিনিটে আরও একবার তাঁকে গোলবঞ্চিত করেন প্রতিপক্ষের গোলকিপার।
কুমিল্লায় ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ‘এ’ গ্রুপের অপর ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটি। এই দুটি ম্যাচের পর এক মাসেরও বেশি সময়ের বিরতিতে যাবে ফেডারেশন কাপ। আগামী ২ ডিসেম্বর ‘বি’ গ্রুপের মোহামেডান-ফর্টিস ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরবে ফেডারেশন কাপের লড়াই।
No posts available.
২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০৭ এম
লিখতে বসলেন, আইডিয়া সব হাওয়াই মিঠাই—চুপসে গেল, এ ও ভাবতে গিয়ে মিলিয়ে গেল। আর্টিকেল জমা দেওয়ার শেষ সময় আজই, অথচ কিচ্ছুটি লেখা হয়নি আপনার। সাংবাদিকতায় ‘রাইটার্স ব্লক’-এর কুৎসিত রোষানলে যাঁরা পড়েছেন বা পড়েন, তাঁরা জানেন—বোঝেন কত ধানে কত চাল।
ক্রীড়ায় নিয়তি বোঝা আরও কঠিন—আজ ফর্মে তো কাল বেঞ্চে। লেখার জীবনের চেয়েও ক্রীড়ার জগৎ অনেক বেশি নির্মম। গত বছরের সর্বোচ্চ স্কোরার, অথচ নতুন মৌসুমে ডালপালা গজানোর বদলে আপনি যেন হতচ্ছাড়া পুরোনো পাতা। যা কেবল পথিকের বিরক্তিই বাড়ায়। গ্রীষ্ম শেষে যখন নতুন ফুল-কলি ফুটে ওঠে, তখন কারই বা পছন্দ পড়ে থাকা পুরোনো ডাল-পাতায়!
মোহাম্মদ সালাহ কি নতুন মৌসুমেও লিভারপুলের পুরোনো পাতা নন? হলে মন্দ হতো না। ২০২৪–২৫ মৌসুমে অ্যানফিল্ডের রক্ত লাল জার্সিতে ২৯টি গোল ও ১৮টি অ্যাসিস্টের দেখা পেয়েছিলেন মিশরীয় ফরোয়ার্ড। কিন্তু ২০২৫–২৬ মৌসুমে কিনা ‘গোল ড্রায়’-এ ভুগছেন তিনি।
নতুন মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সালাহর গোল মাত্র তিনটি। তার দলও চরম হ্যাপিত্যেশে। অথচ আক্রমণভাগ শক্ত করতে গ্রীষ্মের দলবদলে প্রায় ৪১৯ মিলিয়ন পাউন্ড খরচা হয়েছে লিভারপুলের। সালাহর পাশে যুক্ত করা হয়েছে হুগো একিতিকে, আলেক্সান্ডার ইসাক ও ফ্লোরিয়ান ভির্টজের মতো তারকাদের। তারপরও শিরোপার দৌড়ে বেশ পিছিয়ে গত মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা।
সবশেষে অবশ্য আইন্ট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে বড় জয়ে সম্মান রক্ষা করেছে লিভারপুল। তা না হলে ৭২ বছর আগের এক লজ্জার সামনে পড়তে হতো অল রেডসদের। এক মৌসুমে টানা পঞ্চম হার এড়ানোর সেই ম্যাচে শুরুর একাদশে ছিলেন না ৩৩ বর্ষী সালাহ—গত মৌসুমের রাজা, এই মৌসুমে কিনা বদলি!
সালাহর এমন ‘গোল ড্রায়’ নিয়ে চিন্তিত অনেকেই। লিভারপুলের ব্যর্থতার দায়ভারও অনেক সময় তার ওপরই চাপানো হচ্ছে। যদিও দুঃসময়ে পাশে পেয়েছেন কোচ আর্নে স্লট। কোচ বলেছেন,
“সে সব সময় লিভারপুলের হয়ে গোল করে।”
লিভারপুলের ডাচ ম্যানেজার আশাবাদী—নিজেকে আবারও জাগিয়ে তুলবেন তার ছাত্র,
“যে জিনিস নিয়ে আমি চিন্তিত, সেটা হলো মোহাম্মদ সালাহ আবার গোল করবেন কি না। তিনি তার পুরো জীবনজুড়েই গোল করেছেন, এবং আমি আশা করি আগামী সপ্তাহ ও মাসগুলোতে তিনি আবারও তা করবেন।”
২০১৭ সালে লিভারপুলে যোগ দেওয়ার পর এটিই মোহাম্মদ সালাহর সবচেয়ে দীর্ঘ গোলখরা। স্লট বলেছেন,
“সাধারণভাবে ফুটবলে খেলোয়াড়রা সুযোগ নষ্ট করেই থাকে—সেও মানুষ। আমরা কেবল অভ্যস্ত নই তাকে এত সুযোগ মিস করতে দেখতে।”
সালাহ পারছেন না, সালাহকে দিয়ে হচ্ছে না—এই নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। কেন, কী কারণে—এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা দিয়েছেন ৪৭ বছর বয়সী কোচ স্লট।
তার মতে, গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোতে নতুন খেলোয়াড় আসা এবং ডানপাশের ডিফেন্ডার ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ডের রিয়াল মাদ্রিদে চলে যাওয়া—এই দুই বিষয়ই সালাহর তুলনামূলক ধীর শুরুর পেছনের কারণ।
স্লট বলেছেন,
“এটা একটা কারণ হতে পারে (আর্নল্ডের অনুপস্থিতি), কারণ সালাহ তার পুরো লিভারপুল ক্যারিয়ারে তার সঙ্গে খেলেছে। তবে সালাহ গোল করার মতো অনেক ভালো অবস্থানে থেকেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি।”
তিনি আরও যোগ করেছেন,
“গ্রীষ্মে দলে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে, ফলে সবার নতুন করে পরস্পরের সঙ্গে বোঝাপড়া তৈরি করতে হচ্ছে। হয়তো এর সঙ্গেও সালাহর পারফরম্যান্সের সম্পর্ক আছে।”
গত মৌসুমের একই পর্যায়ে সালাহর নামের পাশে ছিল ৭টি গোল ও ৭টি অ্যাসিস্ট। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত তার রয়েছে মাত্র ৩টি গোল ও ৩টি অ্যাসিস্ট। গত মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগের গোল্ডেন বুটজয়ী এই খেলোয়াড় এখন ম্যানচেস্টার সিটির স্ট্রাইকার আর্লিং হালান্ডের চেয়ে আট গোল পিছিয়ে।
তবে ‘রাইটার্স ব্লক’ কাটিয়ে পাওলো কোয়েলহো, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে কিংবা হুমায়ূন আহমেদ যেমন লিখেছেন কালজয়ী সব লেখা, ঠিক তেমনি ‘গোল ড্রায়’ কাটিয়ে নিশ্চিত গোলবন্যা বয়ে দেবেন মিশরীয় তারকা মোহাম্মদ সালাহ!

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন ব্রাজিলের পিয়াউই রাজ্যের জনপ্রিয় ক্লাব পিয়াউই এস্পোর্তের ফরোয়ার্ড আন্তোনি ইলান। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ২০ বছর।
গত সোমবার ভোররাতে বাবার জন্মদিনের অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফিরছিলেন আন্তোনি। ফেরার পথে রাজ্যের আলতোস পৌর এলাকায় মোটরবাইক দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আন্তোনি বেপরোয়া গতিতে বাইক চালাচ্ছিলেন, এসময় একটি গরুর সঙ্গে ধাক্কা লেগে তিনি বাইক থেকে ছিটকে পড়েন।
ক্লাব পিয়াউই এস্পোর্ত এ ঘটনার পর শোক প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে ক্লাবটি থেকে বলা হয়েছে,
‘আমাদের ২০ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড আন্তোনি ইলান এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। ইলানো ২০২৪ সালে দলে যোগ দেন এবং সেই বছর আমরা যুব চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিলাম।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে,
‘তিনি সাও পাওলো যুব কাপ এবং নর্থইস্ট অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। কোপা দো ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-২০ প্রতিযোগিতায় খেলতে এই সপ্তাহে দলের সঙ্গে ফোর্তালেজায় যাওয়ার কথা ছিল।’
ইলান আগে আলতোস এফসি ও ফ্লুমিনেন্স-পিআই ক্লাবেও খেলেছেন।

১৪ পেরিয়ে সদ্যই ১৫ বছরে পা দিল জোসেফ জুনিয়র আন্দ্রে গ্যাব্রিয়েল। পড়ার টেবিল, স্কুল, সহপাঠী আর খেলার মাঠ। ছোট্ট জীবনে আর কী চাই তার? অথচ গাব্রিয়েল চেয়েছে অনেক কিছুই! উর্বর মস্তিষ্ক আর হৃদয়জুড়ে যার বসত শুধুই ফুটবল, তার লক্ষ্যটাও যে হিমালয়সম। ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাজ্যের এই তরুণ হইচই ফেলে দিয়েছে ফুটবল দুনিয়ায়।
৬ অক্টোবর ২০১০ সালে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে জন্ম গ্যাব্রিয়েলের। বাবা জো ও’সেরিল ছিলেন আইরিস জাতীয় দলের ফুটবলার। মায়ের জন্ম সাইপ্রাসে। ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ শেখার বয়সেই বাবার কাছে ফুটবলের হাতেখড়ি। ছেলের ভবিষ্যৎ চিন্তায় ছোট্ট গ্যাব্রিয়েলকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের একাডেমিতে ভর্তি করিয়ে দেন জো ও’সেরিল। তখন থেকেই পড়াশোনার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে থাকে ফুটবল।
চমৎকার ড্রিবলিং স্কিল, দু’পায়ের সমান ব্যবহার, সঙ্গে চোঁ মেরে বল কেড়ে নিয়ে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স গুড়িয়ে দেওয়ার বিশেষ সক্ষমতা রয়েছে গ্যাব্রিয়েলের। ঢের পড়াশুনা রয়েছে ফ্রিস্টাইল ও ফুটসাল নিয়েও। তাতেই দ্রুত সুযোগ মেলে ইউনাইটেডের অনূর্ধ্ব-১৮ দলে। সতীর্থদের কাছে ‘ছোট মেসি’ নামেও সমাদৃত হয়েছে অতি দ্রুত।
ছোট মেসি ইতোমধ্যে ঘটিয়েছে বড় কীর্তি। ১৫ বছর বয়সেই রুবেন আমোরিমের নজর কেড়েছে সে। ইউনাইটেডের পর্যবেক্ষক দলের নজরে ছিল একাডেমি ছোট্টবেলা থেকেই, এবার সিনিয়র টিমের কোচ এক ঝটকায় তাকে ডেকে নিল সিনিয়র দলের অনুশীলনে।
এখানেই শেষ? অবাক করা ব্যাপার, অনুশীলন কালে দুইভাগ হয়ে ৯০ মিনিটের খেলায় ব্রুনো ফার্নান্দেজ ও কাসিমিরোদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেলেছে সে। পর্তুগিজ কোচ তার প্রতি এতটাই মুগ্ধ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড পরিচালনা পর্ষদকে অনুরোধ করেছেন, গ্যাব্রিয়েলের সঙ্গে লংটার্ম চুক্তি সম্পন্ন করা হয় অতি দ্রুত।
অনূর্ধ্ব-১৮ দলের জার্সিতে ৬ ম্যাচে ৭ গোল। সিনিয়রদের সঙ্গে অনুশীলন। আমোরিমের পছন্দের তালিকায় নাম লেখানো। গ্যাব্রিয়েলকে নিয়ে আরও বড় চমক দেখায় ইউনাইটেড। চলতি সিজনে আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যাচে তাকে আমন্ত্রণ জানায় স্বয়ং ক্লাব কর্তৃপক্ষ। পরিচালকদের বক্সে বসে খেলাটি উপভোগ করেছে সে।
লিওনেল মেসি তো বটে, বলা বলি হচ্ছে, এই তরুণ টেক্কা দেবে লামিন ইয়ামালকেও। ম্যান ইউনাইটেড তার ডানায় ভর করে দুঃখ মুছাবে শিগগিরই, এমনটাও বলছেন কেউ কেউ। কিন্তু, এই শিগগিরের সমাপ্তি ঘটবে কবে? জানা গেছে, দ্রুতই একাডেমিতে থাকা গ্যাব্রিয়েলের সঙ্গে লংটার্ম চুক্তিতে যাবে ক্লাব।
ম্যান ইউনাইটেড তথা আমোরিমের শর্টলিস্টে থাকলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রিমিয়ার লিগের নিয়ম অনুযায়ী গ্যাব্রিয়েল এই মৌসুমে সিনিয়র দলে খেলার অনুমতি পাননি। তার বয়স এখনও খুব কম। লিগে খেলতে চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে তাকে কমপক্ষে ১৫ বছর বয়সি হতে হতো। গ্যাব্রিয়েল সেই সময়সীমা মাত্র দুই মাসের জন্য মিস করেছে।
সুতরাং, গ্যাব্রিয়েল ২০২৬–২৭ মৌসুম থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সিনিয়র দলে খেলতে পারবে, সেই সময়ে সম্ভাব্য অন্যান্য ক্লাবগুলোও তাকে নিজেদের দলে ভিড়াতে পারবে। ইউনাইটেড যে সুযোগের পথ দেখাবে, তা তার পরবর্তী চুক্তি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কারণ, গ্যাব্রিয়েল চাইলে যে কোনো ক্লাবে যোগ দিতে পারবে। ক্লাবও গুলোও চাইলে তাকে ভিড়াতে পারবে। দেখার বিষয় গ্যাব্রিয়েলের ভবিষ্যত কোথা থেকে কোথায় গিয়ে ঠেকে।

প্রায় সাড়ে তিন মাস পর মাঠে ফেরাটা রাঙাতে পারেনি বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। দুই ম্যাচের ফিফা প্রীতি সিরিজের প্রথমটিতে ৩-০ গোলে হেরে মাঠ ছেড়েছে পিটার জেমস বাটলারের দল। ম্যাচ শেষে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ব্রিটিশ কোচ বললেন— 'কয়েকজন ফুটবলার ভুল মানসিকতা নিয়ে মাঠে নেমেছে, এমন গাফিলতি কিছুতেই সহ্য করব না।'
খেলোয়াড়দের ডিসিপ্লিন ইস্যুতে শুরু থেকেই কঠোর কোচ বাটলার। শুক্রবার থাইল্যান্ডে হারের পর আরও একবার নিজের অবস্থান জানান দেন তিনি। এই ম্যাচে শুরুর একাদশে ঋতুপর্ণা চাকমা, মারিয়া মান্ডা ও মনিকা চাকমাদের নিয়ে শক্তিশালী একাদশ নামান বাটলার। প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে মোসাম্মত সাগরিকা, হালিমা আক্তার, জয়নব বিবি রিতা, মুনকি আক্তার, সিনহা জাহান শিখাসহ একাধিক তরুণ ফুটবলার বদলি হিসেবে মাঠে নামান বাটলার। এই অর্ধে আরও দুই গোল হজম করে বাংলাদেশ।
ম্যাচ শেষে বাটলার বললেন হার-জিত নয়, লড়াকু মানসিকতা দেখতে চান তিনি,
'আমরা প্রচুর তরুণ খেলোয়াড়কে সুযোগ দিয়েছি। ম্যাচটি জাতীয় দলের ম্যাচের মতো লাগেনি। বরং উন্নয়নমূলক বা প্রস্তুতি ম্যাচের মতো লেগেছে। ভবিষ্যতে এমন ম্যাচ আয়োজনের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকতে হবে। আবারও বলছি, এই ম্যাচ থেকে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। কখনো কখনো হেরে যেওয়া ম্যাচ অনেক কিছু শেখায়।'
'কেউ যদি আমার দলে খেলতে চায়, দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চায়, তাহলে এমন মানসিকতা নিয়ে আসতে পারবে না, যা কি না জাতীয় দলের সঙ্গে মানানসই নয়। হার-জিতের চেয়েও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এটি শেখার প্রক্রিয়া এবং সম্মানের বিষয়।'
যোগ করেন বাটলার।
ম্যাচটি নিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) বেশ প্রচারণা চালালেও থাইল্যান্ডে উত্তাপ ছিল না তেমন একটা। দলটির ফেসবুক ও ইনস্ট্রাগ্রামে সবশেষ কয়েক দিনের পোস্টে ছিল সোমবারের ম্যাচ নিয়ে বেশি আগ্রহ। ওই ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে তারা।
বাংলাদেশের অনেকের কাছে বিষয়টি নজরে আসে। যে মাঠে আজ খেলা হয়েছে সেটি ছিল একটি বিশ্বিবদ্যালয়ের প্রাকটিস গ্রাউন্ড। আয়োজন নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন বাটলার,
'আমি জানি না আদৌ এটি টায়ার-১ প্রীতি ম্যাচ ছিল কি না। কারণ আমরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে এমন পরিবেশে খেলেছি, যেখানে আলোর মাত্রা অতটা ভালো ছিল না।'
থাইল্যান্ডে দুই ম্যাচের ফিফা প্রীতি সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচটি হবে আগামী সোমবার।

সিরি-আয় দারুণ এক মৌসুম পার করছেন নিকো পাজ। কোমোর জার্সিতে প্রত্যেক ম্যাচেই আলো ছড়াচ্ছেন আর্জেন্টাইন এই তরুণ উইঙ্গার। রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ধারে যোগ দেন কোমোতে। উজ্জ্বল পারফরম্যান্সের সৌজন্যে তাঁকে দলে ভেড়ানোর দৌড়ে নেমেছে জায়ান্ট ক্লাবগুলো।
গোল ডটকমের প্রতিবেদন, নিকোকে ভেড়াতে ৫৮ মিলিয়ন ইউরোর প্রস্তাব দিতে প্রস্তুত ইতালিয়ান জায়ান্ট ইন্টার মিলান। তবে এই পথে আছে কিছু বাধা ও জটিলতা। আরেক স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ দুটি বিশেষ শর্তে নিকোকে কোমোতে পাঠিয়েছিল।
রিয়াল মাদ্রিদ চাইলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত) ৯ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে আবারও নিকোকে বার্নাব্যুতে ফেরাতে পারবে। অন্য কোনো ক্লাব যত দামই দিক, রিয়াল চাইলে এই কম মূল্যেই আবারও তাঁকে নিতে পারবে।
আরেকটি শর্ত- যদি কোমো এখন পাজকে বিক্রি করে, তাহলে বিক্রির মোট অর্থের ৫০ শতাংশ যাবে রিয়ালের অ্যাকাউন্টে। ইন্টার যদি ৫৮ মিলিয়ন ইউরোয় ২১ বছর বয়সী এই তরুণ তারকাকে কেনে, তার অর্ধেক ২৯ মিলিয়ন ইউরো পাবে রিয়াল।
নিজেকে নিংড়ে দিয়ে পাজ কমোর হয়ে এরই মধ্যে ৮ ম্যাচে চার গোল ও চার অ্যাসিস্ট করেছেন। মাদ্রিদ ছাড়লেও এখন তাঁর দ্রুত উত্থান আলোড়ন তৈরি করেছে। ক্লাবটি তাঁকে আবারও ফেরাতে পারে বলে আলোচনা হচ্ছে।
কোমোর কোচ সেস্ক ফ্যাব্রেগাসের অধীনে নিকো পাজ নিজেকে দারুণ একজন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ও উইঙ্গার হিসেবে গড়েছেন। যদিও ইন্টার তাঁকে ভেড়ানোর ব্যাপারে বেশ দৃঢ়, কিন্তু শেষ সিদ্ধান্তের নিয়ন্ত্রণ রিয়াল মাদ্রিদ ও খেলোয়াড়ের নিজের হাতে।
এই মুহূর্তে কোমো সিরি-আতে পয়েন্ট টেবিলের ছয় নম্বরে আছে। তবে ইউরোপীয় ফুটবলের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ট্রান্সফার গল্পগুলোর মধ্যে একটি হয়ে উঠছে পাজের ভবিষ্যৎ।