
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চিটাগং কিংসের ইনিংস একপ্রান্ত আগলে একাই টানলেন উসমান খান। মারমুখী ব্যাটিংয়ের দুরন্ত এক প্রদর্শনীতে তুলে নিলেন সেঞ্চুরি। সাথে অন্য ব্যাটারদের অবদানে দলটি চড়ল রান পাহাড়ে। উসমান হারিস বাদে দুর্বার রাজশাহীর কেউই পারলেন না লড়াই করতে। আলিস-আরাফাতদের স্পিন ঘূর্ণিতে পথ হারিয়ে বড় হারই বরণ করতে হল দলটিকে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১১তম আসরের সপ্তম ম্যাচে ১০৫ রানের বিশাল জয় পেয়েছে চিটাগং। দলটির করা ৫ উইকেটে ২১৯ রানের জবাবে স্রেফ ১১৪ রান তুলতেই গুটিয়ে গেছে রাজশাহী।
আগেরদিন বিপিএলের ইতিহাসের সেরা বোলিং ফিগারের মালিক হওয়া তাসকিন আহমেদের শুরুটা এদিনও হয় স্বপ্নময়। দ্বিতীয় বলেই ফিরিয়ে দেন পারভেজ হোসেন ইমনকে। রাজশাহীর হাসি মিলিয়ে যেতে এরপর আর বেশি সময় লাগেনি। গ্রাহাম ক্লার্ককে নিয়ে পাল্টা আক্রমণে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন উসমান।
হাসান মুরাদের এক ওভারে তিন চার ও এক ছক্কায় ১৯ রান নেওয়ার পর মোহর শেখের এক ওভারেও তিনটি চার মারেন উসমান। শুরুটা ধীরগতিতে করা গ্রাহাম এরপর হাত খোলেন। অভিজ্ঞ শফিউল ইসলামের এক ওভারে চারটি চারের পাশাপাশি একটি ছক্কায় আদায় করেন ২২ রান। ছয় ওভারেই বোর্ডে জমা হয় ৭২ রান।
মাত্র ২১ বলে ফিফটি তুলে নেন উসমান। এরপর রানের গতিতে আরও বাড়িয়ে দেন পাকিস্তান ব্যাটার। ক্রমেই ছন্দ খুঁজে পাওয়া গ্রাহাম অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে সোহাগ গাজির বলে আউট হন। তার আগে ৫ চার ও দুই ছক্কায় তার ব্যাট থেকে আসে ৪৫ রান।
চারে নামা মোহাম্মদ মিঠুন পরিস্থিতির চাহিদা মিটিয়ে খেলেন কয়েকটি বড় শট। তবে দর্শকদের বিনোদনের খোরাক যোগানো এক ইনিংস খেলা উসমান কেড়ে নেন সব স্পটলাইট। মাত্র ৪৮ বলেই পূর্ণ হয়ে যায় সেঞ্চুরি। বিপিএলে ১৪তম ইনিংসে এটি তার দ্বিতীয় শতক।
রাজশাহীর বোলিং লাইনআপকে এলোমেলো করার পর উসমান ১৯তম ওভারে যখন আউট হন, তখন তার নামের পাশে ১২৩ রান। মাত্র ৬২ বলের ইনিংস ছিল ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কার মার। শেষের দিকে হায়দার আলির ১৯ রানের ক্যামিওতে আসরের সর্বোচ্চ স্কোর পেয়ে যায় চিটাগং।
এমন একটা রান তাড়ায় শুরুটা যেমন প্রয়োজন, সেটা পায়নি রাজশাহী। প্রথম ওভারেই হারাতে হয় সাব্বির হোসেনের উইকেট। একপ্রান্তে এরপর হারিস ইতিবাচক ব্যাটিং চালিয়ে গেলেও তাল মেলাতে পারেননি এনামুল হক বিজয়। ফলে রান বের করার চাপে শেষ পর্যন্ত পাওয়ার প্লেতেই আউট হয়ে যান হারিস। মোহাম্মস ওয়াসিমের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে মাত্র ১৫ বলে করেন ৩২ রান।
ক্রিজে গিয়েই কয়েকটি বড় শট খেলে ভালো কিছুর আভাস দেন ইয়াসির আলি ও আকবর আলি। তবে দুজনের কেউই পারেননি ইনিংস বড় করতে। এরপর রহস্য স্পিনার আলিস আল ইসলামের দারুণ এক স্পেল দিশেহারা করে ফেলে রাজশাহীকে। মাত্র ১৭ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানির ঝুলিতেও যায় তিন উইকেট, তিনি গুনেন ২৩ রান।
No posts available.
১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬:২০ পিএম

তিনি যতটা না দৌড়েছেন, তার চেয়েও বেশি চার-ছক্কা হাঁকিয়েছেন। গতকাল অস্ট্রেলিয়ান টি-টোয়েন্টি ডিভিশন ওয়ান ক্লেঞ্জো গ্রুপ শিল্ডের টি-টোয়েন্টি লিগে বোলারদের ওপর রীতিমতো ঝড় বয়ে দিয়েছেন নেদারল্যান্ডস জাতীয় দলের অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস।
ম্যাচে এডওয়ার্ডস ৮১টি বল মোকাবিলা করেছেন, যাতে ছিল ২৩টি ছক্কা ও ১৪টি চার। তাঁর স্ট্রাইকরেট ছিল ২৮২।
অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন সাব-অর্বস চার্চেস অ্যান্ড কমিউনিটি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত টুর্নামেন্টের চতুর্থ রাউন্ডে ভিক্টোরিয়ার আলটোনা স্পোর্টস ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন এডওয়ার্ডস।
উইলিয়ামস ল্যান্ডিং এসসির বিপক্ষে ম্যাচটি স্বীকৃত কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ছিল না। ফলে ২০১৩ আইপিএলে ক্রিস গেইলের খেলা ১৭৫ রানের ইনিংসই টি-টোয়েন্টিতে এখনো সর্বোচ্চ।
এদিন ২৩ বলে ফিফটি করেন এডওয়ার্ডস। ১১তম ওভারে করেন সেঞ্চুরি, ১৭তম ওভারে ছুঁয়ে ফেলেন ১৫০। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ২২৯ রানে, আর দলের স্কোর দাঁড়ায় ৩০৪ রান।
রান তাড়া করতে নেমে উইলিয়ামস ল্যান্ডিং থামে ১১৮ রানে।

বড় জয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ যাত্রা শুরু করল ভারত। সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ২৩৪ রানে হারিয়েছেন আয়ুষ মাত্রেরা।
দুবাইয়ে আইসিসি একাডেমি মাঠে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪৩৪ রান সংগ্রহ করে ভারত। জবাবে ৭ উইকেটে ১৯৯ রানে থামে আমিরাতের ইনিংস।
এদিন দলীয় ৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। ৪ রান করে আউট হন আয়ুষ মাত্রে। এরপরের গল্প শুধুই বৈভব সূর্যবংশী-এর। মারমুখী ভঙ্গিতে চড়াও হতে থাকেন আরব আমিরাতের বোলারদের ওপর। ৩০ বলে তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। পরের ৫০ রানের মধ্যে সেঞ্চুরি করতে ১৪ বছর বয়সী বাঁহাতি ব্যাটার খেলেন মাত্র ২৬ বল।
৫৬ বলে শতক ছুঁয়ে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন সূর্যবংশী। ৮৪ বলে দেড়শো পেরিয়ে যান এই বাঁহাতি। ডাবল সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে শেষ পর্যন্ত ৯৫ বলে ১৭১ রানে থামেন।
সূর্যবংশীর ইনিংসে ছিল ৯টি চার, ১৪টি ছয়। যুব ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এক ইনিংসে আজ সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ড গড়েন সূর্যবংশী। ২০০৮ সালে ১২ ছয় মারা নামিবিয়ার ব্যাটার মাইকেল হিল-এর রেকর্ড ভাঙেন তিনি।
অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এটি। সূর্যবংশী ছাড়িয়ে গেছেন শুবমান গিল, শিখর ধাওয়ান এবং মায়াঙ্ক আগারওয়াল-এর রেকর্ড।
সূর্যবংশীর বিধ্বংসী ইনিংসের সঙ্গে আরও দুই ব্যাটারের ফিফ্টিতে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৪৩৩ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় ভারত।
জবাবে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে আমিরাত। ১৪তম ওভারে ৫৩ রানে ৬ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
ষষ্ঠ উইকেটে ৮৫ রানের জুটি গড়েন পৃথ্বী মাধু ও উদিশ সুরি। মাধু ৫০ রানে ফিরলেও ৭৮ রানে অপরাজিত ছিলেন সুরি। এই দুজনের নৈপুণ্যে অলআউট হওয়া থেকে রক্ষা পায় আমিরাত।

বয়স ৪৩ পেরিয়ে ৪৪ বছরের পথে। তারপরও পেশাদার ক্রিকেট দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন জেমস অ্যান্ডারসন। আগামী মৌসুমে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে পূর্ণকালীন অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন তিনি।
শৈশবের ক্লাব ল্যাঙ্কাশায়ারে অধিনায়কত্ব করবেন অ্যান্ডারসন। গত মৌসুমে দুইবার অন্তর্বর্তীকালীন অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। কিটন জেনিংসের পদত্যাগের পর এবার অ্যান্ডারসনকে স্থায়ীভাবে নেতৃত্বের দায়িত্ব দিয়েছে ক্লাবটি।
২০২৪ সালে ৭০৪ টেস্ট উইকেট নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান অ্যান্ডারসন। তবে নিজের শেকড় ল্যাঙ্কাশায়ারে খেলা থামাননি। ২০০২ সালে শুরু হওয়া তার ল্যাঙ্কাশায়ার ক্যারিয়ার এখনো চলছে। গত মৌসুমে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে ৬ ম্যাচে নিয়েছিলেন ১৭ উইকেট।
অধিনায়কত্ব পেয়ে উচ্ছ্বসিত অ্যান্ডারসন বলেন,
‘ল্যাঙ্কাশায়ারের অধিনায়ক হওয়া বিশাল সম্মানের। আমাদের দলে অভিজ্ঞতা ও তরুণদের দুর্দান্ত মিশেল আছে। লক্ষ্য একটাই- প্রথম ডিভিশনে ফেরার লড়াইয়ে সফল হওয়া।’
২০২৬ সালের ৩ এপ্রিল ল্যাঙ্কাশায়ার তাদের চ্যাম্পিয়নশিপ অভিযান শুরু করবে।

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মালয়েশিয়াকে ২৯৭ রানের রেকর্ড রান ব্যবধানে হারিয়েছে পাকিস্তান। দুবাইয়ে সামির মিনহাজ ও আহমেদ হুসাইন সেঞ্চুরিতে ৩ উইকেটে ৩৪৫ রান তোলে পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
৩৪৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে আলি রাজা ও মোহাম্মদ সায়্যামের তোপ দাগানো বোলিংয়ে মাত্র ৪৮ রানে গুটিয়ে যায় মালয়েশিয়া। যুব ওয়ানডে ইতিহাসে এটি তাদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের হার। রানের দিক থেকে পাকিস্তান পেল নিজেদের সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়, সব দল মিলিয়ে যুব ওয়ানডেতে সপ্তম।
মালয়েশিয়ার ব্যাটারদের ইনিংস ছিল ১১ ডিজিটের মোবাইল নম্বর! কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। তাঁদের ইনিংসগুলো—০, ৫, ৪, ৯, ৫, ৭, ৯, ২, ০, ১ ও ০। পাকিস্তানের দুই পেসার আলি রাজা ও মিনহাজ ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন। ১৯.৪ ওভারেই অলআউট হয়ে যায় মালয়েশিয়া।
সেভেনহি সেভেনস স্টেডিয়ামে টস জিতে পাকিস্তানকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান মালয়েশিয়ার অধিনায়ক দিয়াজ পাত্র। ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তানের শুরুটা ছিল হতাশার। দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ৪ রানে ফেরেন ওপেনার উসমান খান (১)।
পাকিস্তানের ওপর আধিপত্য দেখিয়ে দশম ওভারে টপ অর্ডারের আরেক ব্যাটার আলি হাসান বালুচকেও (১৪) ফেরান পেসার নাগিনেস্বরন সাথনাকুমারান। পাওয়ার-প্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে ৩০ রান তোলে পাকিস্তান। তবে তৃতীয় উইকেটে মিনহাজ ও আহমেদের ২৩৪ বলে ২৯৩ রান জুটিতে পাকিস্তান গড়ে ৩৪৫ রানের পাহাড়সম স্কোর।
১৪৮ বলে ১৭৭ রানে অপরাজিত থাকেন ওপেনার মিনহাজ। তাঁর ইনিংসে ছিল ১১টি চার ও ৮টি ছক্কা। ১১৪ বলে ১৩২ রান করেছেন আহমেদ। মেরেছেন ৮টি চার ও ২টি ছক্কা।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ড গড়লেন বাহরাইনের পেসার আলি দাউদ। ভুটানের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি। তাঁর ৭/১৯ বোলিং ফিগার টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে দ্বিতীয় সেরা।
শীর্ষে মালয়েশিয়ার সিয়াজরুল ইদ্রুস। ২০২৩ সালে চীনের বিপক্ষে ৮ রান দিয়ে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তৃতীয়তে হর্ষ ভরদ্বাজ। ২০২৪ সালে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ৩ রান খরচায় ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
নাইজেরিয়ার পিটার আহো ৫ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়ে তালিকায় চারে। ২০২১ সালে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েছিলেন তিনি।
পাঁচ নম্বরে ভারতের পেসার দীপক চাহার। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
দুবাইয়ে প্রথমে ব্যাট করে ১৬১ রান তোলে বাহরাইন। লক্ষ্য তাড়ায় নামার পর তৃতীয় ওভারেই আক্রমণে এসে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন ৩৩ বছর বয়সী এই পেসার। নিজের প্রথম ওভারেই নেন দুই উইকেট।
মাঝে ভুটান চতুর্থ উইকেটে ৬৭ রান যোগ করে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে। কিন্তু দাউদ আবারও আঘাত হানেন শেষ ভাগে। ১৬তম ওভারে নেন তিন উইকেট, পরের ওভারে নেন আরও দুই উইকেট।
দাউদের রেকর্ডে ভুটানকে ৩৫ রানে হারিয়েছে বাহরাইন।