১০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫০ পিএম

পেপ গার্দিওলা ইংল্যান্ডে পাড়ি জমানোর পর থেকে ম্যানচেস্টার সিটি খেলে চলছে দুর্দান্ত ফুটবল। সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রিমিয়ার লিগকে বানিয়ে ফেলেছে অনেকটাই একঘেয়েমি। টানা চারবার জিতেছে প্রিমিয়ার লিগ। সেই দলটিই এবার রীতিমত ধুঁকছে। ১৮ বছর পর সিটি প্রথমবার হেরেছে টানা চার ম্যাচ। তবে কী গার্দিওলার সিটির রাজত্বের এটাই শেষ? অভিজ্ঞ এই কোচ মনে করছেন, হয়ত এবার পালাবদলের সময় হয়েছে।
গত শনিবার ব্রাইটনের সাথে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে সিটি প্রথমে লিড নিয়েছিল আর্লিং হলান্ডের গোলে। তবে এরপর দুই গোল হজম করে হেরে বসে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা। তাতে এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা চার ম্যাচ হারের তেতো স্বাদ পেতে হয়েছে সিটিকে। আর কোচ হিসেবে এই প্রথম টানা চার ম্যাচে পরাজয়ের অভিজ্ঞতা হল গার্দিওলার।
আন্তর্জাতিক বিরতির আগে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকা লিভারপুলের সাথে সিটির পয়েন্টের ব্যবধান এখন পাঁচ। চোট সমস্যার যে হাল, সাথে ঠাসা সূচি ও দলের ফর্ম, সব মিলিয়ে এবার কাজটা কঠিনই হতে যাচ্ছে দলটির জন্য। সেটা যেন আগেই মেনে নিলেন গার্দিওলা। “হয়ত গত সাত বছরে আমরা ছয়টি প্রিমিয়ার লিগ জেতার পর এটা নতুন একটা দলের জেতার সময় হয়েছে।”
গার্দিওলা কোচ হওয়ার পর থেকে ক্রমেই ইউরোপের অন্যতম শীর্ষ একটি দলে পরিণত হয়েছে সিটি। টানা লিগ জেতার মধ্যেও শূন্যতা ছিল একটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের, ২০২৩ সালে সেটাও পূর্ণ হয়ে গেছে। সাথে ছিল মাত্র দ্বিতীয় ইংলিশ ক্লাব হিসেবে ‘ট্রেবল’ জয়ের কীর্তি। সেই সিটি এবার যেভাবে অধারাবাহিকতা দেখাচ্ছে, তাতে অনেকেই এই মৌসুমে দলটির সাফল্যময় যুগের ইতি দেখছেন।
গার্দিওলা কী ভাবছেন? “লোকেরা তো এটাই চায়, তাই না? এটা স্বাভাবিক। আমরা অনেক কিছুই জিতেছি। আমি শুধু (চোট কাটিয়ে) সব খেলোয়াড়দের একসাথে পেতে চাই।”
এই মৌসুমে সিটির দুর্ভোগের অন্যতম কারণ চোটের মিছিল। মূল একাদশ সেভাবে টানা খেলাতেই পারছেন না গার্দিওলা। এই মুহূর্তে যেমন মাঠের বাইরে আছেন নাথান আকে, জন স্টোনস, জ্যাক গ্রিলিশ ও রুবেন দিয়াস। আর লম্বা সময়ের জন্য আগেই ছিটকে গেছেন রদ্রি ও অস্কার বব।
No posts available.
৪ নভেম্বর ২০২৫, ১:১৪ এম
৩ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১৭ পিএম

ইতিহাসের সেরা ফুটবলার কে ? ফুটবলপ্রেমীদের এই তর্ক চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। একটা সময় দুই কিংবদন্তি পেলে-ম্যারাডোনাকে নিয়ে দু’ভাগ হয়ে যেত ফুটবলবিশ্ব। আর এই শতকে সে জায়গা নিয়েছেন লিওনেল মেসি-ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সমর্থকরা নিজ নিজ প্রিয় ফুটবলারকে সেরার আসনে বসালেও সেই কিংবদন্তিরা নিজেদের কোথায় দেখেন ?
‘গ্রেটেস্ট অব অল টাইম’ বা সর্বকালের সেরা হিসেবে অনেক আগ থেকেই নিজেকে রেখেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। যখনই সেরার প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন, নিজেকে এক নম্বরে রাখতে কোনো কার্পণ্য করেননি ‘সিআর সেভেন’। এবার আরও একবার একই প্রশ্নের একই উত্তরই দিলেন আল নাসরের তারকা।
বিখ্যাত সাংবাদিক পিয়ার্স মর্গ্যানকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন রোনালদো। যেটার পুরো অংশ প্রচারিত হবে আজ। গতকাল এর একটি ছোট অংশ প্রকাশ হয়েছে। যেখানে ফুটবল বিশ্বে গত দেড় দশকের সবচেয়ে আলোচিত ওই বিতর্ক নিয়ে নিজের ভাবনা তুলে ধরেন পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার।
‘অনেকে বলে, মেসি আপনার চেয়ে ভালো, আপনি কী মনে করেন?’- এই প্রশ্নের উত্তরে সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা বলেন, ‘মেসি আমার চেয়ে ভালো? এই মতের সঙ্গে আমি একমত নই। এখানে আমি বিনয়ী হতে চাই না।’
বিভিন্ন সময় ফুটবলের অনেক রথী-মহারথীরা সেরার প্রশ্নে মেসি কিংবা রোনালদোকে বেছে নিয়েছেন। সাক্ষাৎকারের প্রিভিউ অংশে রোনালদোকে তাঁর সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সতীর্থ ওয়েইন রুনি–র মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। ইংল্যান্ডের এই কিংবদন্তি স্পষ্ট করে বলেছিলেন, ‘ওরা দুজন দুই রকম খেলোয়াড়। কিন্তু আমার মতে মেসি অবিশ্বাস্য। আমি মনে করি সে সর্বকালের সেরা, তাই আমাকে মেসিকেই বলতে হবে। তবে রোনালদো একটু দুর্ভাগ্যবান, কারণ অন্য যেকোনো সময় খেললে মেসির পাওয়া সব পুরস্কারগুলো হয়তো ও-ই জিতত। তবে দুজনই ফুটবল ইতিহাসের সেরাদের মধ্যে অন্যতম।’
ব্যাক্তিগত কিংবা দলীয় অর্জনে দু’জনই ক্যারিয়ারে সমানতালে লড়েছেন। তবে মেসির ২০২২ বিশ্বকাপে জয়ের পর অনেকের মতে সেরার দৌড়ে রোনালদো থেকে অনেকটাই এগিয়ে গেছেন ইন্টার মায়ামি তারকা। এরপরও অবশ্য সেরার তর্ক চলবে যতদিন ফুটবল আছে আর ফুটবলপ্রেমীরা আছে।

১৫ ও ১৮ নভেম্বর দুটি ফিফা প্রীতি ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল। সেলসাওরা প্রথমে ম্যাচে প্রতিপক্ষ উত্তর আফ্রিকার দেশ সেনেগাল। লন্ডনের এমিরেটস স্টেডিয়ামের ম্যাচটির দুই দিন পর ফ্রান্সের ডেকাথলন স্টেডিয়ামে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়ার মুখোমুখি হবে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
সেনেগাল ও তিউনিসিয়ার ম্যাচের জন্য আজ ব্রাজিল দল ঘোষণা করেছেন কার্লো আনচেলোত্তি। দলে মূল আকর্ষণ ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের নতুন দুই সংযোজন— বাহিয়ার লুসিয়ানো জুবা এবং পালমেইরাসের তরুণ ফরোয়ার্ড ভিত হোকে। তাদের সুযোগ রয়েছে জাতীয় দলে নিজেদের প্রমাণের।
আনচেলোত্তির দলে রয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ কিছু নাম— রিয়াল মাদ্রিদের ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও রদ্রিগো, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাসেমিরো। আর রক্ষণভাগে রিয়াল মাদ্রিদের এদের মিলিতাও ও পিএসজির মার্কিনিওস।
দল:
গোলকিপার:
বেন্তো মাতেউস (আল নাসর), এডারসন (ফেনারব্যাচ), হুগো সুজা (করিন্থিয়ান্স)।
ডিফেন্স:
অ্যালেক্স সান্দ্রো (ফ্লামেঙ্গো), কাইও হেনরিক (মোনাকো), দানিলো (ফ্লামেঙ্গো), এদের মিলিতাও (রিয়াল মাদ্রিদ), ফ্যাব্রিসিও ব্রুনো (ক্রুজেইরো), গাব্রিয়েল মাগালাইয়েস আর্সেনাল), লুসিয়ানো জুবা (বাহিয়া), মার্কিনিওস (পিএসজি), পাউলো হেনরিকে (ভাস্কো), ওয়েসলি (রোমা)।
মিডফিল্ড:
আন্দ্রে সান্তোস (চেলসি), ব্রুনো গিমারাইস (নিউক্যাসল), কাসেমিরো (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), ফাবিনিয়ো (আল ইত্তিহাদ), লুকাস পাকেতা (ওয়েস্ট হ্যাম), এস্তেভাও (চেলসি)।
ফরোয়ার্ড:
জোয়াও পেদ্রো (চেলসি), লুইজ এনরিকে (জেনিত), মাতেউস কুনিয়া (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), রিচার্লিসন (টটেনহ্যাম), রদ্রিগো (রিয়াল মাদ্রিদ), ভিনিসিয়ুস জুনিয়র (রিয়াল মাদ্রিদ), ভিত হোকে (পালমেইরাস)।

চ্যাম্পিয়নস লিগে বেশ কয়েকটি হাই-ভোল্টেজ ম্যাচ মাঠে গড়াবে আগামীকাল। বাংলাদেশ সময় রাত দুইটায় পার্ক দে প্রিন্সে জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখকে আতিথ্য দেবে পিএসজি। ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে হ্যারি কেইনদের হারানোর ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ কোচ লুইস এনরিকে। একই সঙ্গে স্পেন কোন জানালেন, ম্যাচটি খেলতে প্রস্তুত তার সেরা অস্ত্র।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে আজ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন এনরিকে। ম্যাচটি তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ হবে বলে মনে করেন তিনি।
গত জুলাইয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল পিএসজি-বায়ার্ন। দুই দলের লড়াইয়ে ২-০ গোলে জিতেছিল ফরাসি জায়ান্টরা। ওই হারের পর থেকে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে ১৫ ম্যাচের সবকটিতে জিতেছে বায়ার্ন। এর মধ্যে বুন্দেসলিগায় জিতেছে প্রথম ৯ ম্যাচে।
বায়ার্নের মতো পিএসজিও আছে দুর্দান্ত ছন্দে। লিগ ওয়ানে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে দলটি। ১১ ম্যাচে ৭ জয় সাবেক চ্যাম্পিয়নদের। চ্যাম্পিয়নস লিগেও শীর্ষে তারা। টানা তিন জয় ফরাসি জায়ান্টদের।
ম্যাচের আগে লুইস এনরিকে জোর দিয়ে বলেছেন, এই ম্যাচে ইউরোপের সেরা দল নির্ধারিত হবে না। তবে তিনি ঘরের মাঠে নিজের দলের সামর্থ্য নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। এনরিকে বলেন, ‘ইউরোপের সেরা দল কে, সেটা জানতে আমাদের মৌসুমের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’
পিএসজির এই স্প্যানিশ কোচ আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে এটা স্পষ্ট যে তারা (বায়ার্ন) খুব শক্তিশালী। তারা সবসময়ই শক্তিশালী, বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের টানা ১৫ জয় অবিশ্বাস্য। আমরা জানি এই ম্যাচ কতটা কঠিন হবে, তবে আমরা প্রস্তুত।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমার মনে হয়, এই গ্রীষ্মে ক্লাব বিশ্বকাপে তাদের বিপক্ষে খেলা ম্যাচটির মতোই একটি ম্যাচ হবে। অবশ্যই একই রকম তীব্র লড়াই হবে। সেই অর্থে, উভয় দলের জন্যই ম্যাচটি হবে খুব আকর্ষণীয় ও অনুপ্রেরণাদায়ী।’
এ সময় একটি সুসংবাদ দেন এনরিকে। তিনি জানান, বায়ার্ন ম্যাচের জন্য প্রস্তুত ওসমান দেম্বেলে। এনরিকে বলেন, ‘ওসমান গত সপ্তাহজুড়ে অনুশীলনে সময় দিচ্ছে। সে সর্বশেষ দুটি ম্যাচে খেলেছে। আগামীকাল ম্যাচের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ওসমান। তবে সে কতক্ষণ মাঠে থাকবে, সে সম্পর্কে এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।’

নভেম্বরে মাঝামাঝিতে দুটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ১৩ তারিখ জাতীয় স্টেডিয়ামে হামজা চৌধুরীদের প্রীতি ম্যাচে অতিথি নেপাল। ১৮ তারিখ এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে প্রতিপক্ষ ভারত। প্রতিবেশিদের বিপক্ষে বাংলাদেশ দুই গোলে জিতবে, এমনটাই ভবিষ্যদ্বাণী জাতীয় দলের ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষের।
এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই থেকে এরই মধ্যে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। দু’দলের অবস্থান পয়েন্ট টেবিলের তলানীতে। গ্রুপের শীর্ষে হংকং ও চায়না। প্রতিবেশি দু’দলের গ্রুপের প্রথম খেলা গোলশূন্য ড্র হয়। আসন্ন ম্যাচ নিয়মরক্ষার হলেও জয়ের লক্ষ্য দু’দলেরই। এই ম্যাচের জন্য বাছাইকৃত সেরা সদস্যদের নিয়ে সফরের কথা জানিয়েছে ভারত।
ভারত ম্যাচে দারুণ কিছুর প্রত্যাশা বসুন্ধরা কিংসের ডিফেন্ডার বিশ্বনাথের। বর্তমানে চোটের কারণে দলের বাইরে থাকা এই ফুটবলার সোমবার টি-স্পোর্টসকে বলেন, ‘হয়তো বাংলাদেশ এই ম্যাচে ২-০ গোলে জিতবে। না হয় ২-১ গোলে জিতবে।’ জয় উচ্চাশার পাশাপাশি সম্ভাবনার কারণ ব্যাখ্যা করেন এভাবে, ‘দেখুন, বাংলাদেশের ফুটবলের একটা জাগরণ শুরু হয়েছে। আমাদের ফুটবল খেলার মান অনেক উন্নতি হয়েছে। আমাদের হোম অ্যাডভান্টেজ পাবো, এটা নিতে হবে। হাজার হাজার দর্শক থাকবে আমাদের পক্ষে। হামজা চৌধুরী থাকবেন। সেই কারণে অনেক আশাবাদী।’
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ঢের এগিয়ে ভারত। প্রতিবেশিরা যেখানে ১৩৬তম, সেখানে লাল-সবুজের অবস্থান ১৮৩তম। র্যাঙ্কিং দিয়ে বাংলাদেশকে বিচার করতে চান না বিশ্বনাথ, ‘সর্বশেষ ৫ বছর আগের যে লেভেল ছিল আমাদের, সেখান থেকে এখন কোন পর্যায়ে পৌঁছেছি সেটা আপনারাও জানেন। একজন ফুটবলার হিসেবে আমি দলের পক্ষেই বলব, আপনারাই তো দেখছেন, এখন ফুটবল ধীরে-ধীরে উপরের দিকে উঠছে। যদিও কিছু ম্যাচের ফল পক্ষে নিতে পারিনি।’
বিশ্বনাথের মতো আক্ষেপ দেশের ফুটবল সমর্থকদেরও। এএফসি বাছাইয়ে চার ম্যাচে বাংলাদেশের নামের পাশে অন্তত পাঁচ পয়েন্ট থাকার সম্ভাবনা ছিল। অথচ দুই পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে হামজাদের। তারপরও শেষ দুই ম্যাচে সমর্থকদের জন্য জয় চায় বাংলাদেশ।
    
দেশের জার্সিতে ৪৩ ম্যাচ খেলা বিশ্বনাথের অভিষেক ২০১৮ সালে। ২৬ বছর বয়সি ডিফেন্ডার ২০১৯ সাল থেকে খেলছেন বসুন্ধরা কিংসে। দীর্ঘদিন লড়াই করেছেন চোটের সঙ্গে। তবে দলের সঙ্গে এখন পূর্ণাঙ্গ অনুশীলন করছেন তিনি। শিগগিরই লিগের খেলায় দেখা যাবে টাঙ্গাইল থেকে উঠে আসা এই তারকাকে।
চোটের সময় সহধর্মিণী চৈতি ঘোষকে পাশে পেয়েছেন বিশ্বনাথ। তাঁর জন্যই আবারও ফিরতে চান জাতীয় দলে, ‘খারাপ সময়টাতে পাশে পেয়েছি স্ত্রীকে। যে সব সময় পাশে ছিল, সাহস দিয়েছিল। আমার দুই ভাইও অনেক সাপোর্ট করে।’
    
পরিবারের সদস্যরা বিশ্বনাথকে মিস করে জাতীয় দলেও। বাংলাদেশের খেলা পরিবারের সঙ্গেই টিভিতে দেখেন বিশ্বনাথ। সে সময় নিজেকে মাঠেই মিস করেন তিনি, ‘আমি হয়তো পাঁচ-ছয় বছর জাতীয় দলকে সার্ভিস দিয়েছি। এরপর একটি দুর্ঘটনায় ৫-৬ ম্যাচ মিস করেছি। এ সময়ে বাংলাদেশের ফুটবল নতুন করে জেগেছে। নবজাগরণের সময় দলে না থাকতে পারায় খারাপ লাগছে। কিছু করার নেই, একজন স্পোর্টসম্যান হিসেবে ইনজুরি, ভাল সময়, খারাপ সময়—এসব নিয়েই চলতে হয়।’
বিশ্বনাথের মনোবল ঠিক থাকলে তিনি আবারও বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রার সারথী হয়ে হামজা সমিতদের সঙ্গে মাঠে দাপিয়ে বেড়াবেন। ঘোষণা দিয়ে প্রতিপক্ষে স্ট্রাইকারকে ‘কড়া ট্যাকেলে’ রুখে দেওয়ার মতোই তাঁর আগাম ভবিষ্যদ্বাণী যেন পূর্ণতা হয়। এটুকুই আপাতত চাওয়া ভক্তদের।

সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আল হিলাল থেকে সান্তোসে পাড়ি জমান নেইমার জুনিয়র। দেশের ক্লাবে নিজেকে নতুন রূপে ফিরে পেতে সব ধরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। নেইমারের প্রচেষ্টা বলে দেয়, তিনি শতভাগ ফেরার পথেই!
ব্রাজিলিয়ান লিগে সবশেষ ফোর্তালেজার বিপক্ষে বদলি হিসেবে নামেন নেইমার। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে সতীর্থ মিডফিল্ডার ভিক্টর হুগোর স্থানে মাঠে নামেন তিনি। সব মিলিয়ে ২৩ মিনিট খেলেছেন। এ সময় দুটি শট নিয়েছেন, তিনটি সুযোগ তৈরি করেছেন। চারবার ড্রিবলের চেষ্টা করে সফল হয়েছেন দুটিতে। পরিসংখ্যান যতই বলুক, চোখে পড়েছে নেইমারের আত্মবিশ্বাস।
বলের ওপর দারুণ নিয়ন্ত্রণ, নিখুঁত পাস, মাঝেমধ্যে ঝলমলে ছোঁয়া—সব মিলিয়ে মনে হয়েছে পুরোনো নেইমারই যেন ফিরেছেন। ফলে নতুন করে কথা হচ্ছে তাঁকে নিয়ে। তিনি সান্তোসে থাকবেন, নাকি ভিড়বেন নতুন কোনো ক্লাবে।
এক ফ্রেমে সাবেক দুই সতীর্থনেইমারের বয়স এখন ৩৩ বছর। বলা চলে, তার ইউরোপের রাস্তা অনেকটাই বন্ধ। সিরি এ লিগে ইন্তারের সঙ্গে একপ্রকার যোগাযোগ চলছে নেইমারের এজেন্টের। সেখানকার সুযোগ ফিফটি-ফিফটি। ফলে ঘুরে ফিরে একটাই নাম আসছে—ইন্টার মিয়ামিতে মেসির সঙ্গী হতে পারেন নেইমার।
লিওনেল মেসির সঙ্গে নেইমারের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। খেলেছেন লুইস সুয়ারেজের সঙ্গেও। বার্সেলোনা ও পিএসজিতে দারুণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল মেসির সঙ্গে। তাছাড়া এমএলএসে খেলার স্বপ্ন নাকি অনেক দিন ধরেই দেখছেন নেইমার। কারণ সেখানে জীবনযাপন সহজ, তার ওপর আছে খ্যাতি।
নেইমারের দাবি, মেসি অসাধারণ একজন মানুষমিয়ামি আদৌ ঝুঁকি নেবে, সাবেক ফুটবলারের মত:
সের্জিও বুসকেতস এবং জর্দি আলবা শিগগিরই অবসর নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে মেজর লিগ সকারের অন্যতম ক্লাবটির সুযোগ হবে নতুন প্লেয়ার কেনার। চারদিকে ফিসফিস, নেইমারকেই পছন্দ ক্লাবের। এর পেছনেও মেসি ও সুয়ারেজের আগ্রহ।
সাবেক যুক্তরাষ্ট্রের গোলকিপার ও ফুটবল বিশ্লেষক ব্রাড ফ্রিডেল বলেন, ‘নেইমারকে আনা একটি ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত হবে। এটি মূলত চুক্তি কিভাবে তৈরি করা হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘লিজেন্ড খেলোয়াড়দের সঙ্গে চুক্তি করার সময় বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধা এবং বেতন খরচ দুইটাকেই মাথায় রাখতে হয়।’
ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলেও ফ্রিডেল মনে করেন, নেইমারকে ভিড়ালে খেলার বাইরেও লাভের সুযোগ থাকবে মিয়ামির। তিনি বলেন, ‘নেইমারের মতো লিজেন্ডকে আনার সময় বাণিজ্যিক দিক থেকে বড় সুযোগ থাকে—অর্থাৎ মাঠের বাইরে অনেক টাকা উপার্জন করা সম্ভব। তবে ক্রীড়াগত ঝুঁকি বেশি থাকে, বিশেষ করে যদি সে যদি চোটে পড়ে। আঘাত না হলে ঝুঁকি তার বয়স এবং অতীতের চোট এবং সে কতটা কার্যকরী খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে থাকতে পারবে, সেটির ওপর নির্ভর করবে।’
এমএসএনের স্বপ্ন পূরণ নাও হতে পারে:
লুইস সুয়ারেজের বয়স বর্তমানে ৩৮। হাঁটুর চোটে ভুগছেন তিনি। প্রায়ই ছিটকে পড়েন। এমনও হতে পারে, মিয়ামি পরবর্তী সেশনে তাকে ছাড়তে পারে। সেটা হলে এমএসএনের স্বপ্ন পূরণ হবে না। নেইমার যে আগ্রহ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে পা দেবেন, সেটা ভেস্তে যেতে পারে।
ফ্রিডেল বলেন, ‘এমএলএস হলো এমন একটি লিগ যা নেইমারের বর্তমান লেভেলের থেকে একটু নিচের। এখানে আরও কয়েক বছর খেলতে পারবে সে। লিওনেল মেসি যেমন খেলছে, নেইমারও তাই করতে পারবে।’
মেসি ও নেইমারের সুসম্পর্ক:
সবশেষ কোপা আমেরিকা ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে হারের পর মেসিকে জড়িয়ে নেইমারের কান্নার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর ড্রেসিংরুমেও একসঙ্গে আড্ডা দিতে দেখা যায় দুজনকে।
সুযোগ পেলেই মেসিকে প্রশংসায় ভাসান নেইমার। আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে অসাধারণ মানুষ উল্লেখ করে নেইমার একবার বলেছেন, ‘সে অসাধারণ একজন মানুষ। মেসি আমার জন্য দারুণ এক আয়না, অসাধারণ একজন আদর্শ। আদর্শের পাশাপাশি সে আমার বন্ধুও। আমাদের প্রচুর আড্ডা হয়।’