লম্বা সময় ধরে ব্যাটে নেই রানের দেখা। অভিজ্ঞতার বিচারে তবুও বারবার দলে ধরে রাখছিলেন জায়গা। শেষ পর্যন্ত খেলেছেন ওপেনার হিসেবেও। তাতেও আর শেষ রক্ষা হলো না মার্নাস লাবুশেনের। ফর্মহীনতার কারণে ডানহাতি এই ব্যাটারকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম টেস্টে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া পাবে না আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার স্টিভেন স্মিথকেও। চোটের কারণে খেলতে পারবেন না এই তারকা ব্যাটার। তাদের দুজনের জায়গায় প্রথম ম্যাচের দলে এসেছেন স্যাম কনস্টাস ও জশ ইংলিশ।
বার্বাডোজে আগামী ২৫ জুন শুরু হবে প্রথম টেস্ট। তার পাঁচদিন আগেই এই ঘোষণা এসেছে, যা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপে বড় পরিবর্তনেরই আভাস দিচ্ছে। সবশেষ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলা ব্যাটিং অর্ডারে আসতে যাচ্ছে রদবদল।
সেই ফাইনালে অনেকটা সময় ধরেই রানের জন্য ধুঁকতে থাকা লাবুশেনকে দলে রাখা নিয়ে ছিল প্রশ্ন। তবে শেষ অবধি টিকে যান ওপেনার হিসেবে। তবে সেই ভূমিকাতেও ছন্দ ফিরে পাননি তিনি। দুই ইনিংসে করেন ১৭ ও ২২ রান। লাল বলের ক্রিকেটে গেল দুই বছর ধরেই ফর্মহীনতার মধ্যে আছেন তিনি, যা তাকে এবার দল থেকেই ছিটকে দিয়েছে।
আর স্মিথ সেই ফাইনালের তৃতীয় দিন স্লিপে টেম্বা বাভুমার একটি ক্যাচ ধরতে গিয়ে ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুলে আঘাত পান। সার্জারির প্রয়োজন না হলেও তাকে অন্তত ৮ সপ্তাহের জন্য স্প্লিন্ট পরতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকরা আশাবাদী, টেস্ট সিরিজের পরবর্তী অংশে তিনি দলে ফিরতে পারবেন।
লাবুশেন বাদ পড়ায় ওপেনার হিসেবে আবার দলে ফিরছেন কনস্টাস। এই ফরম্যাটে তার অভিজ্ঞতা ভারতের বিপক্ষে দুটি টেস্টে, যার প্রথমটিই ছিল তার অভিষেক। আর শুরুটা করেন ৬৫ বলে ৬০ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস দিয়ে। এরপর আর মাঠে নামা হয়নি তার।
আর মিডল স্মিথের পজিশনে চারে খেলবেন ইংলিস। কিপার-ব্যাটার হলেও এই টেস্টে তাকে দেখা যাবে স্পেশালিষ্ট ব্যাটার হিসেবেই। চলতি বছরের শুরুতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে টেস্ট অভিষেকেই করেন সেঞ্চুরি। এবার চোট সমস্যার জন্য নিজেকে প্রমাণের আরেকটি সুযোগ পাচ্ছেন ইংলিস।
No posts available.
১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১:৩২ পিএম
১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:২৭ এম
পাকিস্তান দলে তাঁর জায়গা এখন অনিয়মিত। ২০২৪ সালে দলেই জায়গা হয়নি ইমাম-উল হকের। চলতি বছর খেলেছেন শুধু তিন ম্যাচ। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হওয়ায় আবারও দল থেকে বাদ পড়েন এই বাঁহাতি ব্যাটার। তবে রানের ফোয়ারা বানিয়ে ফেরার রাস্তাও তৈরি করে নিয়েছেন ২৯ বছর বয়সী ইমাম।
ইমাম ছন্দে ফিরতে বেছে নেন ইংল্যান্ডের ওয়ানডে কাপে। টুর্নামেন্ট ইয়র্কশায়ারের হয়ে দেখা গেল তাঁর রুদ্ররূপ। রান করাটাই সেখানে অভ্যাসে পরিণত হয়। আট ম্যাচে চার সেঞ্চুরি ও তিন ফিফটিতে করেছেন ৬৮৮ রান। ব্যাটিং গড় ৯৮.২৮, স্ট্রাইক রেট ৯৭.৪৫।
৭ ইনিংসেই ইমাম করেছেন ৫০-এর বেশি রান। ওয়ানডে কাপের ইতিহাসে এক সংস্করণে পাঞ্চাশোর্ধ ইনিংস তাঁর চেয়ে বেশি নেই আর কারো। সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরিও তাঁর। টুর্নামেন্টের রেকর্ড বই ওলট-পালট করে দিলেন পাকিস্তানি ব্যাটার।
আরও পড়ুন
রেকর্ড গড়ে ইউএস ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে জোকোভিচ |
![]() |
টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এক সংস্করণে ইমাম এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তাঁর ওপরে আছেন শুধু হাইনো কুন। ২০১৮ ওয়ানডে কাপে কেন্টের হয়ে ৬৯৬ রান করেছিলেন তিনি, ব্যাটিং গড় ছিল ৮৭.০০। এ জন্য তিনি অবশ্য ইমামের চেয়ে তিন ইনিংস বেশি খেলেছেন।
অন্তত ৫০০ রান করেছেন এমন ব্যাটারদের মধ্যে দ্বিতীয় সেরা ব্যাটিং গড়ও ইমামের। আর বেঞ্চমার্ক যদি ৬০০ রান ধরা হয়, তবে ইমামের গড়ই সবার সেরা। ২০১৫ ওয়ানডে কাপে গ্লুচেস্টারশায়ারের হয়ে মাইকেল ক্লিঙ্গার আট ইনিংসে করেছিলেন ৫৩১ রান, তাঁর অবিশ্বাস্য ব্যাটিং গড় ১০৬.২০।
পুরো টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে উজ্জ্বল ছিলেন ইমাম। তবে সেমিফাইনালে সেঞ্চুরি করেও দলকে নিয়ে যেতে পারেননি ফাইনালে। গতকাল ডিএলএস মেথডে ইয়র্কশায়ারকে ১৮ রানে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে হ্যাম্পশায়ার। ৯৭ বলে ১০৫ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন ইমাম। তাঁর এমন অসাধারণ পারফরম্যান্স নিশ্চয় পিসিবির নির্বাচক প্যানেলের গুড-বুকেই জায়গা পাওয়ার মতো। আবারও হয়তো নতুন করে ইমামকে নিয়ে ভাববেন তাঁরা।
আগামী ২০ সেপ্টেম্বর নটিংহ্যামে হবে ওয়ানডে কাপের ফাইনাল। শিরোপা লড়াইয়ে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে লড়বে ওরচেস্টারশায়ার।
একশ বলের টুর্নামেন্ট দা হান্ড্রেডে নিজেদের দলের নামের স্বার্থকতা একের পর এক প্রমাণ করে চলেছে ওভাল ইনভিন্সিবলস। ইংল্যান্ডের এই প্রতিযোগিতায় টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে হ্যাটট্রিক করে ফেলেছে স্যাম বিলিংসের নেতৃত্বাধীন দল।
ঐতিহাসিক লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে রোববার রাতের ফাইনালে ট্রেন্ট রকেটসকে ২৬ রানে হারায় ওভাল। নির্ধারিত একশ বলে ৫ উইকেটে ১৬৮ রান করে তারা। জবাবে নিজেদের একশ বল খেলে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রানের বেশি করতে পারেনি রকেটস।
ইংল্যান্ডের প্রথম কোনো দল হিসেবে কোনো টুর্নামেন্টে হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়ল ওভাল। বিশ্বের সব টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট মিলিয়ে শিরোপা হ্যাটট্রিক করা সপ্তম দল তারা।
আর টি-টোয়েন্টিতে কোনো টুর্নামেন্টে টানা সবচেয়ে বেশি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড শিয়ালকোট স্টালিয়ন্সের। পাকিস্তানের ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে ২০০৬ থেকে ২০১০ পর্যন্ত টানা পাঁচ বছর শিরোপা জিতেছিল শিয়ালকোট।
হান্ড্রেডের ফাইনালে ওভালকে জেতার মতো পুঁজি এনে দেওয়ার কারিগর উইল জ্যাকস ও জর্ডান কক্স। দুজন মিলে দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৫৫ বলে ৮৭ রানের জুটি। কক্সের ব্যাট থেকে আসে ২৮ বলে ৪০ রান। আর জ্যাকস ৪১ বলে খেলেন ম্যাচের সর্বোচ্চ ৭২ রানের ইনিংস।
রকেটসের পক্ষে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন মার্কাস স্টয়নিস। তবে নিজের ২০ বলে ৪০ রান খরচ করে ফেলেন অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার।
রান তাড়ায় ওভালের দুই লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা ও নাথান সোটারের ঘূর্নিতে কাবু হয় রকেটস। ৪ চার ও ৫ ছক্কায় রকেটসের পক্ষে ৩৮ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলেন স্টয়নিস। আর কেউ তেমন কোনো অবদান রাখতে পারেননি।
২০ বলে মাত্র ২৫ রান খরচ করে ৩ উইকেট নেন সোটার। তার হাতেই ওঠে ফাইনাল সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার। ম্যাচটি খেলে ৩০ ঘণ্টার ভ্রমণে ৩৪ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দেওয়া জাম্পা ২০ বলে দেন মাত্র ২১ রান, নেন ১টি উইকেট।
আসরজুড়ে ৯ ইনিংসে ৩ ফিফটির সৌজন্যে ১৭৩.৯৩ স্ট্রাইকরেট ও ৬১.১৬ গড়ে ৩৬৭ রান করে টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জেতেন ওভালের জর্ডান কক্স।
হারারেতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নিল সফরকারীরা।
আজ হারারে স্পোর্টস ক্লাবে জিম্বাবুয়ের দেওয়া ২৭৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে, তিন বল বাকি থাকতে জয় নিশ্চিত করেছে লঙ্কানরা।
শ্রীলঙ্কার জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পাতুম নিশাঙ্কার দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারের সপ্তম ওয়ানডে শতক করে ১৩৬ বলে ১২২ রান করে আউট হন এই ওপেনার। অধিনায়ক চরিত আসালঙ্কা ৬১ বল করেছেন ৭১ রান।
এর আগে টসে জিতে জিম্বাবুয়ে কে ব্যাটিংয়ে পাঠান লঙ্কান অধিনায়ক আসালাঙ্কা। ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু করে জিম্বাবুয়ে। কোনো উইকেট না হারিয়ে যোগ করে ৫০ রান। ২১ রান করে ব্রায়ান বেনেট আউট হলে ভাঙে ৫৫ রানের উদ্বোধনী জুটি।
দ্বিতীয় উইকেটে ব্রেন্ডন টেলরকে সঙ্গে নিয়ে ৬১ রানের আরেক কার্যকর জুটি গড়েন বেন কারান। টেলর (২০) আউট হলেও ব্যাক্তিগত ফিফটি তুলে নেন কারান।
৭৯ রান করে আসিতা ফার্নান্দোর বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কারান। শেষ দিকে সিকান্দার রাজার অপরাজিত ৫৯ রানের ওপর ভর করে ৭ উইকেটে ২৭৭ রান স্কোরে জমা করে জিম্বাবুয়ে। শ্রীলঙ্কার হয়ে দুশমন্ত চামিরা নেন তিনটি উইকেট।
সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ৭ রানে হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। দুই ম্যাচের সিরিজে- দুটোই জিতে নিল সফরকারীরা। ম্যাচসেরা হয়েছেন নিশাঙ্কা।
ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালালেন সাকিব আল হাসান। উইকেটের চারপাশে একের পর এক বড় শটে মাত্র ২০ বলে ফিফটি করে ফেললেন বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার।
সেইন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রোববার রাতের ম্যাচে সেইন্ট লুসিয়া কিংসের বিপক্ষে ঝড়ো এই ইনিংস খেললেন সাকিব। ৫টি করে চার-ছক্কায় মাত্র ২৬ বলে তিনি করলেন ৬১ রান।
ইনিংসে সাকিবের স্ট্রাইক রেট- ২৩৪.৬১! তার ক্যারিয়ারের ৩৪টি ফিফটি করা ইনিংসের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের রেকর্ড। এর আগে গত বছরের বিপিএলে ২২২.৫৮ স্ট্রাইক রেটে ৩১ বলে করেছিলেন রান।
আগের ম্যাচগুলোতে পাঁচ নম্বরে নামানো হলেও, এদিন প্রমোশন দিয়ে সাকিবকে চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে পাঠায় অ্যান্টিগা এন্ড বারবুডা ফ্যালকনস। আর সুযোগের পূর্ণ ব্যবহার করেন সাবেক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
ইনিংসের সপ্তম ওভারে পরপর দুই বলে জুয়েল অ্যান্ড্রু ও কারিমা গোরকে আউট করেছিলেন তাব্রেইজ শামসি। চাপের মুখে হ্যাটট্রিক বলে ব্যাটিংয়ে নামেন সাকিব। কিন্তু ব্যাট হাতে চাপের কোনো ছাপ দেখাননি তিনি।
উল্টো প্রথম দুই বলেই চার মেরে দারুণ কিছুর আভাস দেন সাকিব। পরে দশম ওভারে রস্টোন চেজের বলে পরপর দুটি ছক্কা মেরে মাত্র ১৩ বলে ২৫ রানে পৌঁছে যান ৩৮ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
এরপর ১২তম ওভারে ডেভিড ভিসার ওপর দিয়ে রীতিমতো টর্নেডো বইয়ে দেন সাকিব। ওভারের দ্বিতীয় বলে স্ট্রাইক পেয়ে টানা তিন বলে তিনটি চার মেরে দেন তিনি। এরপর লং অফের ওপর দিয়ে তিনি মারেন ছক্কা।
ওভারের শেষ বলে মিড উইকেট দিয়ে আরেকটি ছক্কা মারেন সাকিব। মাত্র ২০ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক।
টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে সাকিবের এটি ৩৪তম ফিফটি। সিপিএলে তার তৃতীয়।
পঞ্চাশ ছুঁয়েই থেমে যাননি সাবেক বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। আলজারি জোসেফের বলে এক হাতে মারেন বিশাল এক ছক্কা। তবে এরপর আর টিকতে পারেননি তিনি।
ডেলানো পটগিটারের স্লোয়ারে বড় শট মারতে গিয়ে হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন সাকিব। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সহজ ক্যাচ নেন চেজ। সমাপ্তি ঘটে সাকিবের টর্নেডো ইনিংসের।