চলতি বছর পুরুষদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একাধিক নতুন নিয়ম কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাওয়ার-প্লের নতুন নিয়ম।
গত ২ জুলাই থেকে কার্যকর হওয়া নিয়ম অনুযায়ী, কোনো কারণে ইনিংসের দৈর্ঘ্য কমে গেলে পাওয়ার-প্লে আর পূর্ণ ওভারে নয়, বরং কাছাকাছি বল সংখ্যায় নির্ধারণ করা হবে। খেলা যত ওভার হবে তার প্রায় ৩০ শতাংশ বল হবে পাওয়ার-প্লে।
তবে এই নিয়ম এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচে প্রয়োগ হয়নি। গত দুই মাসে যতগুলো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হয়েছে, কোনো খেলায় ওভার কমানোর প্রয়োজন হয়নি। আজ থেকে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডসের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। প্রথম ম্যাচে আজ বৃষ্টির শঙ্কাও আছে। যদি বৃষ্টি বাগড়ায় ম্যাচে ওভারের পরিধি কমে আসে, তাহলে এই ম্যাচেই প্রথমবার প্রয়োগ হতে পারে পাওয়ার-প্লের নতুন নিয়ম।
আরও পড়ুন
জয়ের পর সাংবাদিকের প্রশ্নে ক্ষেপলেন হারিস রউফ |
![]() |
সিলেটে সকালের দিকেও বৃষ্টি হয়েছে। এখন অবশ্য আকাশ পরিষ্কার। মাঝে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি হয়, তবে সেটা ম্যাচে খুব প্রভাব পড়ার মতো নয়। ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়। সিলেট স্টেডিয়ামে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাও ভালো। মাঠে ম্যাচ গড়ানো নিয়ে শঙ্কা কমই। তবে বৃষ্টিবিঘ্নিত হওয়ার ব্যাপারটি একদমই উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।
এখন পর্যন্ত প্রচলিত নিয়মে ২০ ওভারের ইনিংসে প্রথম ছয় ওভার পাওয়ার-প্লে থাকে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ম্যাচ ওভার কমে গেলেও পূর্ণ ৬ ওভার পাওয়ার-প্লে ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি তৈরি হতো। নতুন নিয়মে সেই অসামঞ্জস্য কমে আসবে। যেমন আট ওভারের ম্যাচে পাওয়ার-প্লে হবে ২.২ ওভার, যেখানে কেবল দুজন ফিল্ডার ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে থাকতে পারবেন। নয় ওভারের ইনিংসে পাওয়ার-প্লে হবে ২.৪ ওভার। এতে পাওয়ার-প্লের অনুপাত ইনিংসের মোট দৈর্ঘ্যের কাছাকাছি—প্রায় ৩০ শতাংশ বল থাকবে পাওয়ার-প্লে।
আইসিসি জানিয়েছে, ইংল্যান্ডের ‘টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট’ টুর্নামেন্টে অনেক বছর ধরেই এই বলভিত্তিক পাওয়ার-প্লে পদ্ধতি ব্যবহার হচ্ছে। ওভারের মাঝপথে পাওয়ার-প্লে শেষ হওয়ায় কোনো সমস্যায় পড়েননি খেলোয়াড় বা আম্পায়াররা। এখন এই পদ্ধতিকে আইসিসির পুরুষ ক্রিকেট কমিটি পছন্দনীয় মানদণ্ড হিসেবে গ্রহণ করেছে। টি-টোয়েন্টির এ নতুন নিয়ম কার্যকর হয় গত ২ জুলাই থেকে।
No posts available.
২০ অক্টোবর ২০২৫, ৩:২১ পিএম
২০ অক্টোবর ২০২৫, ১:৫৭ পিএম
২০ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২৩ এম
আগের ম্যাচে ব্যাটিংটা ঠিক মনমতো হয়নি ইংল্যান্ডের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ঝড় তুলে রানের সেই ক্ষুধা ভালোভাবেই মেটাল ইংলিশরা।
ক্রাইস্টচার্চে আজ প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৩৪ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড। ফিল সল্ট ও হ্যারি ব্রুকের ঝোড়ো ফিফটির পর টম বেন্টনের ছোট্ট কেমিওতে নিজেদের কুড়ি ওভারের ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ রান তোলে তারা। জবাবে ১৮ ওভারে ১৭১ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। তাতে তিন ম্যাচের সিরিজে ৬৫ রানের জয়ে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল সফরকারীরা।
ইংল্যান্ডের রান পাহাড়ের জবাবে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে নিউজিল্যান্ড। ১৮ রানে সাজঘরের পথ ধরেন দুই কিউই ব্যাটার। ব্রাইডন কার্সের বলে ক্যাচ তুলে আউট হন টিম রবিনসন (৫ বলে ৭)। তিনে নামা রাচিন রবীন্দ্র দুই চারে ৩ বলে ৮ করে কার্সের দ্বিতীয় শিকার হন।
আরও পড়ুন
‘ক্যাচিং ব্যাট’ দিয়ে কেন ব্যাটিং অনুশীলনে সৌম্য-শান্তরা |
![]() |
এরপর মার্ক চ্যাপম্যানকে নিয়ে ধস ঠেকান সাইফোর্ট। তবে দলীয় ৮৭ রানে তাদের জুটি ভাঙতেই দ্রুত চার উইকেট হারিয়ে সেখানেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে নিউজিল্যান্ড। ১০৪ রানে ছয় উইকেট হারানোর পর ইংল্যান্ড কত বড় ব্যবধানে জিতে সেটাই ছিল দেখার ।
সপ্তম উইকেটে জেমস নিশাম ও মিচেল সেন্টনার ২৩ বলে ৫৭ রানের এক জুটি কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। ১৬.১ ওভারে দলীয় ১৬১ রানে এই জুটি ভাঙতেই প্রতিরোধও মেষ হয় কিউইদের।
ইংল্যান্ডের হয়ে সেরা বোলার ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে চার উইকেট নেওয়া আদিল রাশিদ। দুটি করে শিকার লুক উড, ব্রাইডন কার্স ও লিয়ান ডওসনের।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ডেরও শুরুটা ভালো হয়নি । দলীয় ২৪ রানে আউট হন জস বাটলার। তবে এরপর জ্যাকব বেথেলকে নিয়ে তান্ডব চালান সল্ট। পাওয়ার প্লে’তে ৬৮ রান তোলে ইংল্যান্ড। ৬ ওভারের শেষ বলেই ভাঙে তাদের ২৪ বলে ৪৪ রানের জুটি।
বেথেল ফেরার পর এবার সল্টের সঙ্গে চার-ছক্কার বৃষ্টি নামান অধিনায়ক ব্রুক। ৩৩ বলে ফিফটি করেন সল্ট। আর খুনে মেজাজে ব্যাট চালানো ব্রুক মাত্র ২২ বলেই ফিফটি করেন। একটা সময় মনে হচ্ছিল দু’জনই বুঝি তিন অঙ্ক স্পর্শ করবেন।
১৭.২ ওভারে দলের রান যখন ১৯৭, কাইল জেমিসনের বলে ক্যাচ তুলে ফেরেন ব্রুক। আউট হওয়ার আগে ৬ চার ও ৫ ছয়ে ৩৫ বলে ৭৮ রান করেন ডান হাতি ব্যাটার। শেষ হয় সল্টের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে তাঁর ৬৮ বলে ১২৯ রানের দুর্দান্ত জুটি। জেমিসনের একই ওভারেই ফিরেন সল্ট। ১১ চার, এক ছয়ে তিনি খেলেন ৫৬ বলে ৮৫ রানের ইনিংস। এরপর শেষ দিকে ঝড় তোলার কাজ করেন ১২ বলে ২৯ রান করা বেন্টন।
আরও পড়ুন
টেস্টে পাকিস্তানের নতুন ‘বুড়ো’ আফ্রিদি |
![]() |
চার ওভারে ৪৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন জেমিসন। একটি করে উইকেট নেন জেকব ডাফি ও মিচেল ব্রাসওয়েল।
অকল্যান্ডে সিরিজের শেষ ম্যাচ আগামী বৃহস্পতিবার।
প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের স্পিনে রীতিমতো হাঁসফাঁস করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা। মিরপুরের ঘূর্ণিক্ষেত্রে কাল দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নামছে এই দুই দল। ঘূর্ণি লড়াইয়ে বোলিং আক্রমণে আরও শক্তি বাড়িয়েছে স্বাগতিকেরা। শেষ দুই ওয়ানডের জন্য গতকাল দলে ডাকা হয় বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে।
বাংলাদেশের পথে হাঁটাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজও। সিরিজের বাকি দুই ম্যাচে দলে যোগ দিচ্ছেন বাঁহাতি স্পিনার আকিল হোসেন। আজ রাতে ঢাকায় পৌঁছে দলের সঙ্গে যুক্ত হবেন তিনি। এক বিসিবি কর্মকর্তা ক্রিকবাজকে বলেছেন, ‘আকিল আজ রাতে ঢাকায় পৌঁছাবেন এবং ওয়ানডে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন।’
আরও পড়ুন
‘ক্যাচিং ব্যাট’ দিয়ে কেন ব্যাটিং অনুশীলনে সৌম্য-শান্তরা |
![]() |
যদিও ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ অবশ্য আকিলকে দলে নেওয়ার প্রসঙ্গে এখনো অফিশিয়ালি কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। প্রথম ওয়ানডেতে তিন স্পিনার— গুডাকেশ মোটি, খারি পিয়েরে ও রস্টন চেজকে খেলিয়েছিল সফরকারী দল। তবে তাঁদের চেয়ে বেশি সুফল পায় বাংলাদেশের স্পিনাররা।
৩২ বছর বয়সী আকিলকে দলে ভিড়িয়ে শক্তি বাড়াচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৮ মাস আগে ওয়ানডে খেলেছেন সবশেষ তিনি। ২০২৩ সালে জুলাইয়ে হারারেতে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছিলেন। টি-টোয়েন্টি দলে অবশ্য নিয়মিত আকিল। ৩৮ ওয়ানডেতে ৪.৮৪ ইকোনমিতে ৫৭ উইকেট তাঁর।
এ ছাড়া ২৪ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার রামন সিমন্ডসকেও প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দলে ডাকা হয়েছে। তিনি এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দুটি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। ওয়ানডে স্কোয়াডে থাকা দুই পেসার জেডিয়া ব্লেডস ও শামার জোসেফকে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
অন্য সব দিনের মতোই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় শুরু হয় সোমবার সকালে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন। গা গরমের ওয়ার্ম-আপ সেশনের পর ফিল্ডিং অনুশীলন। এরপর ব্যাটিং-বোলিং ঝালিয়ে নিতে চলে যান ক্রিকেটাররা। এর মাঝেই ব্যতিক্রম হিসেবে দেখা যায়, নেট সেশনে ছোট ব্যাটের ব্যবহার।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ইনডোরে নিজেদের রুটিন অনুশীলন করেন সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্তরা। এর সঙ্গে সোমবার যোগ হয় মূল মাঠের সেন্টার উইকেটে 'ক্যাচিং ব্যাট' দিয়ে ব্যাটিং ড্রিল।
নাসুম আহমেদ, তানভির ইসলাম, রিশাদ হোসেনের পাশাপাশি আরও দুজন নেট বোলারের বিপক্ষে ওই ছোট আকারের ব্যাট দিয়ে বেশ লম্বা সময় ব্যাটিং ড্রিল করেন প্রায় সব ব্যাটার। মূলত স্পিনারদের বলে পিচিংয়ের কাছাকাছি গিয়ে খেলার চেষ্টা করেন তারা।
টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং অনুশীলনে লম্বা হাতল ও তুলনামূলক ছোট প্লেটের ‘মঙ্গুজ’ ব্যাটের ব্যবহার দেখা যায় প্রায়ই। টেস্ট ক্রিকেটে সুইং সামলানোর জন্য তুলনামূলক সরু প্লেটের ব্যাট দিয়েও অনুশীলন করেন অনেকে।
এবার বাংলাদেশের ব্যাটাররা ক্যাচিং ব্যাটের ব্যবহার করেছেন স্পিন সামলানোর প্রস্তুতি নিতে। প্রথম ওয়ানডেতে মিরপুরের কালো পিচে ব্যাটারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করেছেন দুই দলেরই স্পিনাররা।
একা ৬ উইকেট নিয়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং এলোমেলো করে দেন রিশাদ হোসেন। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিক ব্যাটারদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ফিঙ্গার স্পিনার খ্যারি পিয়েরে ও রস্টোন চেজ। দুই স্পিনারের ২০ ওভার থেকে বাংলাদেশ করতে পারে মাত্র ৪৭ রান।
খুব অস্বাভাবিক কিছু না হলে সিরিজের বাকি দুই ম্যাচেও থাকবে একই উইকেট। তাই প্রথম ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নামার আগে ছোট ব্যাট দিয়ে অনুশীলন সারেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। যেটি মূলত ক্যাচিং সেশনে ব্যবহার করেন কোচেরা।
অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এই ব্যাট ব্যবহারের পেছনে ভাবনা ব্যাখ্যা করেন বাংলাদেশের স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদ।
“ছোট ব্যাট দিয়ে অনুশীলন করার মাধ্যমে ব্যাটাররা ‘গ্র্যাভিটি লেভেল’ নিচে নামাতে সুবিধা পায়। টার্নিং উইকেটে মাথা সবসময় বলের কাছে থাকতে হয়। যদি পায়ের মুভমেন্ট ধীর হয়, তাহলে স্পিনাররা সহজে আউট করে ফেলতে পারে। ছোট ব্যাটের অনুশীলনের ফলে ফ্রন্ট ফুট বা ব্যাক ফুট, যেভাবেই খেলুন না কেন- মাথা বলের কাছেই থাকবে এবং বলটা দেরিতে খেলবেন।”
“যখন কোনো ব্যাটার পায়ের ভালো ব্যবহার শুরু করে, ভালো বল থেকেও সিঙ্গেল নিতে থাকে, একজন স্পিনার হিসেবে আমি তখন বুঝি, আমরা একটা খারাপ বল হবেই। এসব কারণে ছোট ব্যাট দিয়ে অনুশীলন এত গুরুত্বপূর্ণ।”
ফিল্ডিং সেশন শেষে মাঠের মাঝেই ব্যাটারদের নিয়ে আলোচনায় দাঁড়িয়ে যান প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। এরপর কেউ কেউ চলে যান ইনডোরে। কয়েকজন থেকে যান সেন্টার উইকেটে। সেখানে এলোমেলো শট না খেলে, ম্যাচের মতোই দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করতে দেখা যায় তাওহিদ হৃদয়, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনদের।
মুশতাক জানালেন, অনুশীলনেই ম্যাচের মতো আবহ তৈরি করে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিশ্চিত করার লক্ষ্য ছিল তাদের।
আরও পড়ুন
টেস্টে পাকিস্তানের নতুন ‘বুড়ো’ আফ্রিদি |
![]() |
“আমরা নেট প্র্যাকটিসকে ম্যাচ আবহের খুব কাছাকাছি নিয়ে যেতে চেয়েছি। ব্যাটারদের ‘মাসল মেমরি’ তৈরি হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তাদের যেন মনে হয়, ‘এটাই সেই পরিবেশ, এটাই হবে ম্যাচের উইকেট।’ আমাদের পরিকল্পনাই ছিল ম্যাচের মতো পরিস্থিতি তৈরি করা, ব্যাটসম্যানদের শেখানো কিভাবে মাঝের ওভারগুলোতে সিঙ্গেল নিতে হয়। স্পিনাররাও নিজেদের ফিল্ড সাজিয়েছিল, যাতে পুরোটা আসল ম্যাচের মতো লাগে।”
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
ঘরের মাঠে টেস্টে প্রতিপক্ষকে নাজেহাল করার মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে স্পিনকেই কাজে লাগাচ্ছে পাকিস্তান। আর এই ঘূর্ণিতে দলকে নিয়মিত উইকেট এনে দিচ্ছেন ৩৯ বছর বয়সী নোমান আলি খান। এবার তাঁর সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন আরেক ‘বুড়ো’ স্পিনার।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানের টেস্ট ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ বয়সী ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হলো ৩৮ বছর বয়সী আসিফ আফ্রিদির। আজ রাওয়াপিন্ডিতে বাঁ হাতি এই স্পিনার জাতীয় দলের হয়ে প্রথম সাদা জার্সি গায়ে খেলার সুযোগ পেলেন।
আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট ক্যাপ পাওয়া আফ্রিদির বয়স ৩৮ বছর ২৯৯ দিন। পেশাওয়ারের এই ক্রিকেটার এখন পর্যন্ত ৫৭টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেছেন। ৯৫ ইনিংসে ১৯৮ উইকেট আসিফ আফ্রিদি। যার মধ্যে ১৩টি ফাইফার আছে তাঁর।
আরও পড়ুন
অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পর ডিএলএস পদ্ধতির সমালোচনা গাভাস্কারের |
![]() |
পাকিস্তানের হয়ে টেস্ট অভিষেক হওয়া সবচেয়ে বেশি বয়সী ক্রিকেটার হলেন মিরান বখশ। ১৯৫৫ সালের সালের ১৯ জানুয়ারি ৪৭ বছর ২৮৪ দিন বয়সে লাহোরে ভারতের বিপক্ষে লাল বলের ক্রিকেট অভিষেক হয় তাঁর।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বয়সে অভিষেক হওয়া ক্রিকেটার আমির এলাহি। ৪৪ বছর ৪৫ দিন বয়সে পাকিস্তানের হয়ে অভিষেক হয় এই মিডিয়াম পেসারের। এর আগে ১৯৪৭ সালের ১২ ডিসেম্বর সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের হয়ে টেস্ট অভিষেক হয় আমির এলাহির।
সব দল মিলিয়ে এই রেকর্ডের মালিক জেমস সাউথার্টন। ইংল্যান্ডের এই ক্রিকেটার ১৮৭৭ সালের ১৫ মার্চ ৪৯ বছর ১১৯ দিন বয়সে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের হয়ে তার প্রথম টেস্ট খেলেছিলেন।
কন্ডিশনের সুবিধা ভালোভাবে কাজে লাগাতেই স্পিন শক্তি বাড়িয়েছে পাকিস্তান। একাদশে পরিবর্তন এনেছে দক্ষিণ আফ্রিকাও। অফস্পিনার প্রেনেলান সুরাইনের জায়গায় বাঁ হাতি স্পিনার কেশব মহারাজকে ফিরিয়েছে সফরকারীরা। পেশীর চোটের কারণে প্রথম টেস্টে ছিলেন না মহারাজ। প্রোটিয়াদের স্পিন বিভাগে আরও আছেন সাইমন হারমার এবং সেনুরান মুথুসামি। আর পেস আক্রমণে আছেন মার্কো ইয়েনসেন। উইয়ান মুলডারের জায়গায় একাদশে জায়গা পেলেন তিনি। প্রোটিয়াদের একাদশে অন্য পেসার কাগিসো রাবাদা।
দলের অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটার রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলির ওয়ানডে দলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে রোমাঞ্চিত ছিল অনেকেই। তবে সব রোমাঞ্চ আর উত্তেজনায় পানি ঢেলে দেয় অস্ট্রেলিয়া।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে গতকাল ফেরাটা রাঙাতে ব্যর্থ হন রোহিত-কোহলি। পার্থে তাদের ব্যর্থতার দিনে বৃষ্টি আইনে অজিদের কাছে ৭ উইকেটে হারে ভারত। তাতে আগামী বৃহস্পতিবার সিরিজ বাঁচাতে জিততেই হবে শুবমান গিলের দলকে।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের এমন অসহায় আত্মসমর্পনের পর অবশ্য ডিএলএস পদ্ধতির সমালোচনা করছেন ভারতের সাবেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার। তাঁর মতে অনেকেই এ নিয়ম বুঝে উঠতে পারে না। ডিএলএস পদ্ধতির জায়গায় ভারতের তৈরি ভিজেডি পদ্ধতি যুৎসই বলে মনে করছেন গাভাস্কার।
আরও পড়ুন
ভারতকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিতে ইংল্যান্ড |
![]() |
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ভারতের ইনিংসে কয়েকবার বাগড়া দেয় বৃষ্টি। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ নেমে আসে ২৬ ওভারে। স্কোরবোর্ডে ভারতের সংগ্রহ দাড়ায় ১৩৬। তবে ডিএলএস পদ্ধতিতে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩১। আর সেই লক্ষ্য হেসেখেলেই তাড়া করে মিচেল মার্শেল দল।
ম্যাচের পর ডিএলএস পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-কে গাভাস্কার বলেন, ‘ ‘আমার মনে হয় খুব বেশি মানুষ এই পদ্ধতিটি বোঝে না, যদিও এটি অনেকদিন ধরে ব্যবহার হচ্ছে। একজন ভারতীয় ক্রিকেটার ভিজেডি পদ্ধতি তৈরি করেছিলেন, আমার মনে হয় সেটা অনেক ভালো। কারণ এটি দুই দলকেই সমান সুযোগ দেয়। বিসিসিয়াআইও ঘরোয়া ক্রিকেটে ভিজেডি পদ্ধতি ব্যবহার করে, এখন ঠিক নিশ্চিত নই।
গাভাস্কার আরও বলেন, ‘সম্ভবত এটি এমন একটি বিষয় যা তাদের (আইসিসি) খতিয়ে দেখা উচিত এবং নিশ্চিত করতে হবে যে, যখন বৃষ্টির কারণে খেলা থেমে যায়, তখন দুই দলই যেন মনে করে তাদের দেওয়া লক্ষ্য যথাযথ এবং ন্যায্য।’
ভারতীয় প্রাক্তন ক্রিকেটার ও পরিসংখ্যানবিদ ভি জয়দেবন ভিজেডি পদ্ধতি তৈরি করেন। উদ্দেশ্য ছিল ডিএলএস পদ্ধতির তুলনায় আরও ন্যায্য ও ভারসাম্যপূর্ণ লক্ষ্য নির্ধারণ করা, যাতে বৃষ্টির কারণে ম্যাচ ছোট হলে দুই দলের সুযোগ সমান থাকে।
দীর্ঘ বিরতির পর ভারতের ওয়ানডে দলে ফেরা রোহিত-কোহলির প্রথম ম্যাচের পারফরম্যান্স নিয়ে চিন্তিত নন গাভাস্কার। দ্রুতই দলের সিনিয়র দুই ব্যাটার ছন্দে ফিরবে বলে বিশ্বাস তাঁর, ‘ভারত সত্যিই একটি দারুণ দল। চার-পাঁচ মাস আগে ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল। রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি পরের দুই ম্যাচে বড় স্কোর করলে অবাক হব না। বিরতির পর তারা ফিরছেন, তাই নেটে আরও বেশি অনুশীলন এবং রিজার্ভ বোলারদের ভালো থ্রোডাউন করতে থাকলে তারা দ্রুত ছন্দে ফিরবেন। আর একবার তারা ফিরলেই ভারতের দলীয় রান হবে ৩০০–৩২০-এর বেশি।’