১৭ অক্টোবর ২০২৫, ৪:২১ পিএম

এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচ। বড় লক্ষ্যে শুরুতেই তানজিদ হাসানের উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে বাংলাদেশ। তখনই নুয়ান থুশারার লেগ স্টাম্পের ওপর করা কাটারে চমৎকার এক ফ্লিক শটে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে দিলেন সাইফ। সেই ছক্কার সঙ্গে যেন উড়ে গেল সব শঙ্কা। সহজেই জিতে গেল বাংলাদেশ।
পরে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনার একটি হয়ে গেছে সাইফের ওই ছক্কা। শুধু ওই ছক্কা ছাড়াও পুরো এশিয়া কাপেই বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ব্যাটার ছিলেন সাইফ। সেই ধারাবাহিকতা তিনি ধরে রাখেন আফগানিস্তানের বিপক্ষেও। এমনকি ওয়ানডে সিরিজে বাকিদের ব্যর্থতার ভিড়েও তুলনামূলক ব্যতিক্রম ছিলেন ২৬ বছর বয়সী ব্যাটার।
এশিয়া কাপ ও আফগানিস্তান সিরিজ শেষ করে দেশে ফিরেও দম ফেলার ফুরসত নেই টপ-অর্ডার এই ব্যাটারের। শনিবার শুরু হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ। যেখানে দলের ব্যাটিংয়ের বড় ভরসা সাইফ।
ম্যাচের আগের দিন টি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আলোচিত ওই ছক্কা, নিজের সার্বিক প্রস্তুতি, দলের খারাপ সময় কাটিয়ে ওঠার প্রত্যয়সহ আরও অনেক কিছু নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
টি স্পোর্টস: দলে ফেরার পর থেকে দারুণ ছন্দে আছেন। প্রথমেই শুনতে চাই, কতটা খুশি আপনি?
সাইফ: আল্লাহর অশেষ রহমত। আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কিছুই সম্ভব না। আলহামদুলিল্লাহ। দলের জন্য কিছু অবদান রাখতে পেরেছি। চেষ্টা থাকবে জিনিসটা ধরে রাখার।
টি স্পোর্টস: গত কয়েক বছরের পরিশ্রমের ফল পাচ্ছেন। এখন কি মনে হচ্ছে, পরিশ্রম আরও বাড়িয়ে দেওয়া উচিত?
সাইফ: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে, আধিপত্য দেখাতে অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে। এছাড়া আর উপায় নেই। পরিশ্রম করলে অবশ্যই এর ফল পাওয়া যায়। এখন (জাতীয় দলে) পরিশ্রমের পরিমাণ আরও বেশি হওয়া উচিত।
টি স্পোর্টস: আপনার সতীর্থরা আপনাকে অনেক পছন্দ করেন। সংবাদ সম্মেলনে কোচ ফিল সিমন্সও আপনার প্রশংসা করে গেলেন। সব মিলিয়ে কি মনে হচ্ছে, পরিশ্রমের ফলটাই এখন পাচ্ছে সাইফ?
সাইফ: ওমন কিছু (পরিশ্রমের ফল পাচ্ছি কিনা) ভাবছি না। যেখানেই খেলি, সবসময় চেষ্টা থাকে দলের জন্য অবদান রাখার। ছোটবেলা থেকেই এটা ছিল যে, দলের জন্য যদি অবদান রাখতে পারি নিজের খুব ভালো লাগে। ওই দায়িত্ব যেহেতু আছে, উপভোগের চেষ্টা করছি। যেখানে খেলছি, এই দায়িত্বটা (ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিং) পাচ্ছি। শুধু উপভোগের চেষ্টা করছি।
টি স্পোর্টস: এশিয়া কাপে আপনি ১২টি ছক্কা মেরেছেন। টুর্নামেন্টে একসময় দলের বাকিদের সম্মিলিত ছক্কার চেয়ে আপনার ছক্কা বেশি ছিল। এই যে ছক্কার পারদর্শিতা, এর পেছনে কী কাজ করেছেন?
সাইফ: নির্দিষ্ট কিছু না। অনুশীলনে রেঞ্জ হিটিং নিয়ে কাজ করেছি। তারপর পাওয়ার ট্রেনিং করেছি, জিমে কাজ করেছি। নাথান কেলির কথা বলতেই হয়। যখন জাতীয় দলে ছিলাম না, তখনও তার দেওয়া প্রোগ্রাম অনুসরণের চেষ্টা করেছি।
যেখানে ক্যাম্পে গেছি, ইফতি ভাই... তো জিম ট্রেনিংয়ের অনেক গুরুত্ব আছে। এর সঙ্গে যেখানেই প্র্যাকটিস করেছি, রেঞ্জ হিটিংটা সঙ্গে রেখেছি। সবসময় ক্রিকেটিং শটস খেলার চেষ্টা করেছি। ফল পেয়েছি, তাই ভালো লাগছে। আলহামদুলিল্লাহ। চেষ্টা করব আরও ভালো কিছু করার।
টি স্পোর্টস: ফ্লিকে দারুণ একটা ছক্কা মেরেছেন। পায়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাটারদের অনেক সময় দুর্বলতা দেখা যায়। তো ওই ছক্কাটার ব্যাপারে জানতে চাই
সাইফ: পায়ের ক্ষেত্রে যদি বলেন, ২-৩ বছর আগে পায়ের বিষয়ে আমি একটু ভুগছিলাম। পরে সালাউদ্দিন স্যারের সঙ্গে যখনই কথা বলেছি, তিনি বলেছেন, 'তুই পা ইম্প্রুভ কর। তোর অফসাইডটা খুব ভালো। তাই বোলার সবাই তোকে ভেতরে টার্গেট করবে। তাই এখানে যদি ভালো থাকিস, তাহলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সহজ হবে।'