৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৮ পিএম
তামিম ইকবাল শেষ কবে কোনো স্বীকৃত ক্রিকেট ম্যাচ খেলেছেন, আপনি চাইলেও সহজে মনে করতে পারবেন না। সবশেষ ৬ মে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের পর আর মাঠেই দেখা যায়নি সাবেক বাংলাদেশ অধিনায়ককে। তবে আবার মাঠে ফেরার চেষ্টায় তামিম। বাংলাদেশ ওপেনার রবিবার দুপুরে মিরপুরে করেছেন ব্যাটিং অনুশীলন।
মিরপুরের ইনডোরের পাশের নেটে তামিম ব্যাট করতে নামেন বেলা ১১.১০ এর দিকে। ঘড়ির কাটা ঘণ্টা পেরোলেও তামিম করে গেছেন ব্যাটিং অনুশীলন। তাইজুল ইসলাম আর হাসান মাহমুদের মতো জাতীয় দলের ক্রিকেটাররারা ছিলেন তামিমের নেটে। আর সাথে ছিলেন নেট বোলাররা। আবার ক্রিকেটে ফেরা নিয়ে তামিম কাজ করেছেন কোচ সোহেল ইসলামের সাথে।
এর আগে এই বাঁহাতি ওপেনার ধারাভাষ্য দিতে ব্যস্ত ছিলেন ভারতে। সেখানে বসে টি-স্পোর্টসকে জানিয়েছিলেন, আবার জাতীয় ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এমনকি তা নির্ভর করছে অনেক যদি, কিন্তুর উপর। সাথে তামিম কোচ সোহেল ইসলামেরও প্রশংসা করেছিলেন। এখন তো ঢাকায় তামিম লম্বা সময় কাজ করেছেন এই কোচের সাথে।
তামিমের আপাতত লক্ষ্য বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। এর আগের বিপিএলে নিজে টুর্নামেন্ট সেরার সাথে অধিনায়ক হিসেবে উঁচিয়ে ধরেছিলেন ট্রফি। এবারও একই লক্ষ্য তামিমের। তবে আপাতত ফিরতে হচ্ছে 'ব্যাটার' পরিচয়ের তামিমকে।
২৮ এপ্রিল ২০২৫, ৬:৫৯ পিএম
গত বছর হয়ে যাওয়া জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবের রেশ পড়েছে আবাহনী লিমিটেড ক্লাবে। শেখ হাসিনার শাসনামলে বিশেষ প্রভাব খাটিয়ে আবাহনীর সাফল্যে এতোটাই ক্ষুব্ধ হয়েছে প্রতিপক্ষ সমর্থকরা যে, সরকার পতনের পর ক্লাব ভবনের শোকেশে সাজানো ট্রফিগুলো লুট করে নিয়েছিল দুবৃত্তরা! আবাহনী ক্রিকেট দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো লিমিটেড জন-আক্রোশে পড়ায় এবং এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান কারাবন্দি হওয়ায় ক্রিকেট টিম গঠন নিয়ে দুর্ভাবনায় পড়তে হয় আবাহনীর পরীক্ষিত সংগঠকদের।
গতবার যেখানে আবাহনীতে ছিল তারকার সমাবেশ, সেখানে এবার জোড়াতালি দিয়ে একটা মিডিওকার দল তৈরি করাই ছিল এক ধরণের চ্যালেঞ্জ। অথচ, আবাহনী ক্রিকেট কমিটির দায়িত্ব নিয়ে পরিচালক তানভীর মাজহার তান্না, শেখ বশির আল মামুন এবং ক্রিকেট কমিটির সেক্রেটারির দায়িত্ব ফিরে পাওয়া জি এস হাসান তামিম আবাহনী সমর্থকদের করেছেন চাঙ্গা। সর্বশেষ আসরে সাড়ে ৮ কোটি টাকা বাজেটের টিমের চ্যাম্পিয়নশিপে ছিল কলঙ্কের দাগ। এবার একই অঙ্কের বাজেটে দল গঠন করে রানার্স আপের সস্তুষ্টি নিয়ে লিগ শেষ করেছে তামিম-মুশফিক-রিয়াদ-হৃদয়দের মোহামেডান।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে আবাহনী ক্রিকেট দলের ৭ বার লিগের ট্রফি জয়ের প্রতিটিতেই ছিল প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ, পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিং। এবার সেই কলঙ্কের দাগ পড়েনি আবাহনী ক্রিকেট দলের গাঁয়ে।
তাতেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন লিগ চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর ক্রিকেট কমিটির সেক্রেটারি জি এস হাসান তামিম। “অনেক দিন পর ক্রিকেট লিগের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মোহামেডান-আবাহনী মুখোমুখি হয়েছে। এ এক অন্য উত্তেজনা। এবার আর কেউ বলতে পারবে না, আবাহনী আম্পায়ারদের ফেভার পেয়েছে। এভাবে ফেয়ার প্লে-তে ট্রফি জেতার মজা আলাদা।”
এবার আবাহনী ক্রিকেট টিম গঠনে যে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে, তা স্বীকার করছেন তামিম। “বর্তমানে ক্লাবের যে পরিস্থিতি, তাতে আবাহনী ক্লাবকে টাকা দেয়ার মতো লোকের এখন বড়ই অভাব। তাই এবার আড়াই কোটি টাকার মধ্যে টিমের বাজেট রাখতে চেয়েছি।”
তামিম-তাওহিদ হৃদয়রা মোহামেডানে খেলে যেখানে ৬০-৭০ লাখ টাকা করে নিয়েছেন, সেখানে আবাহনী থেকে সর্বোচ্চ ৪০ লাখ টাকা সম্মানী পেয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, এমনটাই জানিয়েছেন জি এস হাসান তামিম। “শান্ত যে মানের ক্রিকেটার, ও-কে ছেড়ে দিলে চোখ বুজে ৫০-৬০ লাখ টাকা অন্য ক্লাব থেকে নিতে পারতো। আমরা সেখানে ৪০ লাখ টাকার মতো দিতে পারব বলে কথা দিয়েছি। আবাহনী নিবেদিতপ্রাণ মোসাদ্দেক সৈকতকে সেখানে ২৫ লাখ টাকায় রাজি করিয়েছি। গতবারের ২২ জন প্লেয়ারের মধ্যে বেশ ক'জনকে ছেড়ে দিয়েও তাই দুর্ভাবনায় পড়তে হয়নি।”
আবাহনী ক্রিকেট টিম এই নিয়ে চতুর্থবারের মতো হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে এমন দৃষ্টান্ত আর কোনো দলের নেই। এবারের ট্রফি জয়ে কোচ হান্নান সরকারের অবদানকে এগিয়ে রাখছেন ক্রিকেট কমিটির সেক্রেটারি। “যখন শুনতে পেলাম জাতীয় দলের নির্বাচকের দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চাইছে হান্নান সরকার, তখন ও-কে কোচের অফার দিলাম। ১৫ লাখ টাকার মতো দিতে পারব বলেছিলাম তাকে। তারপরও হান্নানকে রাজি করাতে পেরেছি। হান্নান প্লেয়িং ক্যারিয়ারে আবাহনীতে খেলেছে, আবাহনী ক্লাবের পরিবেশ ওর জানা আছে। তাই তাকে তেমন কোনো নির্দেশনা দিতে হয়নি। হার-জিত বড় কথা নয়, টিম হিসেবে আবাহনী খেলতে পারলে খুশি আমরা, এটাই হান্নানকে বলেছিলাম। ও নিজ থেকে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল এবং সেই চ্যালেঞ্জে জিতেছে।”
এর-ওর কাছ থেকে টাকা পয়সা জোগাড় করে চুক্তির ৬০ শতাংশ পেমেন্ট খেলোয়াড়দের হাতে ইতোমধ্যে বুঝিয়ে দিয়েছে আবাহনী ক্রিকেট দল। বাকিটাও খুব দ্রুত দিয়ে দেয়া হবে বলে বিদেশ থেকে ফোনে জানিয়েছেন জি এস হাসান তামিম। “আমার জানামতে প্রায় ৪০% পেমেন্ট এখন বাকি আছে। চ্যাম্পিয়ন যখন হয়েছি, তখন এই টাকা যোগাড় করা কঠিন হবে না।”
আবাহনী ক্রিকেট দলের সবার জন্য বিশেষ বোনাস দেয়ার কথাও ভাবছেন জি এস হাসান তামিম। “তান্না ভাই, মামুনের সঙ্গে কথা বলে ক্রিকেটার এবংসাপোর্ট স্টাফদের জন্য বোনাস দেয়ার কথা বলেছি। টিমের কেউ বোনাস থেকে বাদ যাবে না। বোনাস মিলে বাজেটটা ৩ কোটির মধ্যে রাখতে চাইছি।”
আবাহনীর ক্লাব টেন্ট থেকে লুট হয়ে যাওয়া ট্রফিগুলো ফিরে পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ক্রিকেট কমিটির সেক্রেটারি। তবে লুট হওয়া ট্রফির রুম আবারও ভরে উঠবে ট্রফিতে, সে স্বপ্ন দেখছেন এই কর্মকর্তা। “সব ট্রফি হারিয়ে নতুন করে ট্রফি সাজানোর স্বপ্ন দেখছি আমরা। এটাই আবাহনীর সৌন্দর্য।”
১ উইকেটে বোর্ডে রান ১৯৪, ক্রিজে সেঞ্চুরিয়ান সাদমান ইসলাম, উইকেটে নেই বিশেষ কিছু। প্রথম ইনিংসে রান পাহাড়ে চড়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা। তবে এমন শক্ত অবস্থান থেকে নিজেরাই পথ হারানোর মঞ্চ তৈরি করল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের ধারাবাহিকতায় নিজেরাও শেষ বিকেলে শিকার হল ব্যাটিং ধসের। তাতে দুর্দান্ত একটা পজিশন থেকে নাজমুল হোসেন শান্তর দল শেষ করল অস্বস্তিকর অবস্থায় থেকে। আর সফরকারীরা পেল ম্যাচে ফিরে আসার সঞ্জীবনী শক্তি।
চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের স্কোর ৭ উইকেটে ২৯১। লিড ৬৪ রানের। দিনের শুরুতে জিম্বাবুয়ে গুটিয়ে যায় ২২৭ রানে।
দিনের প্রথম ডেলিভারিতেই জিম্বাবুয়ের ইনিংসের ইতি টানেন আগের দিন পাঁচ উইকেট পাওয়া তাইজুল ইসলাম। ওপেনিং নিয়ে লম্বা সময় ধরে ভুগতে থাকা বাংলাদেশ দল এই ম্যাচ খেলছে নতুন জুটি সাদমান ও ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ ফর্মে থাকা এনামুল হক বিজয়কে নিয়ে। প্রথম পরীক্ষাতেই উতরে যান তারা।
লাঞ্চের আগেই জিম্বাবুয়ের বোলারদের ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়ে দুজন মিলে করে ফেলেন দলীয় শতক। একটু রয়ে সয়ে খেলা সাদমান শটস খেলেন বেশ। অন্যপ্রান্তে তিন বছর পর টেস্ট খেলা বিজয় করেন সাবধানী ব্যাটিং। তাতেই হয়ে যায় কাজের কাজ।
বেশ দেখেশুনে খেলতে থাকা বিজয়কে ফিরিয়ে জিম্বাবুয়ের ফিরে আসার লড়াই শুরু করেন প্রথম টেস্টে দারুণ বোলিং করা ব্লেসিং মুজারাবানি। আম্পায়ার্স কল হওয়ায় ডিআরএস নিয়েও লেগ বিফোর হওয়া থেকে রক্ষা হয়নি বিজয়ের। তবে তার আগে উপহার দেন ৩৯ রানের ইনিংস, যা তার টেস্ট ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ স্কোর।
এরপর মুমিনুল হককে নিয়ে ভালোই এগিয়ে চান সাদমান। ২৮ মাস পর দেখা পান মহা আকাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরির। এর আগেরটিও ছিল একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। তবে এমনভাবে সেট হওয়ার পর তার কাছে দলের প্রত্যাশা যখন আরও বড় ইনিংসের, তখন তিনি সেটা করতে পারলেন না।
ব্রায়ান ব্যানেটের বলে ১২০ রানে তিনি আউট হওয়ার এক ওভার আগেই সাজঘরে ফেরেন মুমিনুলও। এই জোড়া ধাক্কার চাপ সামাল দেওয়াটাই কঠিন হয়ে যায় বাংলাদেশের জন্য।
মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত মিলে ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে পাল্টা আক্রমণের একটা চেষ্টা চালান। ফিফটি পার করে ফেলা সেই জুটির দিকেই তখন তাকিয়ে ছিল দল। তবে জিম্বাবুয়ের ফাইটব্যাক অব্যাহত রেখে শান্তর (২৩) পর রানের মধ্যে থাকা জাকের আলি অনিককে (৫) আউট করে দেন ভিনসেন্ট মাসেকসা।
একপ্রান্ত আগলে নিজের সেরা সময় মনে করিয়ে দেওয়া মুশফিকুর যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তাতে ফিফটি ছিল অনিবার্য। তবে ভাগ্যের সহায়তাও পায়নি বাংলাদেশ। মাসেসকার বলে মিড-অনে ঠেলে এক রান নিতে চেয়েছিলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। তবে সরাসরি থ্রয়ে ডাইভ দিয়েও শেষ রক্ষা আর হয়নি মুশফিকুরের। শেষ হয় ৫৯ বলে ৪০ রানের সম্ভাবনাময় এক ইনিংসের।
বলের পর বল ঠেকিয়ে দিন পার করে দেওয়ার চেষ্টা ছিল স্পিনার নাঈম হাসানের। তবে সেই পরিকল্পনা আর সফল হয়নি। মাসেসকার লেগ স্পিনে ক্যাচ দেন দ্বিতীয় স্লিপে। থামে তার ২৩ বলে ৩ রানের প্রতিরোধ। ২৭৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশের সামনে তখন দিনের আলো শেষের আগেই অল আউটের শঙ্কা।
তবে মেহেদি হাসান মিরাজ (১৬) ও তাইজুল (৫) মিলে বাকি সময়টা পার করেন বিপদ ছাড়াই। তৃতীয় দিনে ১০০ প্লাস লিডের জন্য তাদের ব্যাটের দিকেই তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের সেরা বোলার মাসেসকা ৩ উইকেট নিতে গুনেছেন ৪৪ রান।
বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার চলমান টেস্ট সিরিজ শুরু থেকেই ভুগছে দর্শক খরায়। সেটা কমাতে ও দর্শকদের আগ্রহী করতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ফ্রি করে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে খবরটি জানায় বিসিবি। “বাংলাদেশ এবং জিম্বাবুয়ের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের শুরু করে স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য চট্টগ্রাম বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রবেশ করা বিনামূল্যে হবে।”
এজন্য ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য রাখা হয়েছে সহজ শর্ত। বিনামূল্যে স্টেডিয়ামে প্রবেশের জন্য শিক্ষার্থীদের তাদের নিজ নিজ স্কুল ইউনিফর্ম পরতে হবে এবং একটি বৈধ স্কুল আইডি বহন করতে হবে।
সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ হেরে যায় ৩ উইকেটে। ম্যাচের চারদিনের একদিনও দর্শক উপস্থিতি ছিল না চোখে পড়ার মত। সেই ধারায় চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনেও দেখা যায় একই চিত্র, যেখানে ৯ উইকেটে ২২৮ রান করতে সমর্থ হয় জিম্বাবুয়ে।
পদচ্যুত সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পরিষদ গত এক যুগ ধরে সীমাহীন আর্থিক দুর্নীতি-অনিয়ম এতোদিন আড়ালে ছিল। আওয়ামী লীগ শাসনামলের সর্বশেষ টানা তিন মেয়াদে পাপন-মল্লিকদের দুর্ণীতি-অনিয়ম নিয়ে 'টু' শব্দ করেনি কেউ। বিসিবির পরিচালনা পরিষদের নির্দেশে অর্থ বিভাগও অতি গোপনীয় রেখেছিল আয়-ব্যয়ের সঠিক হিসাব।
গত বছরের ৮ অক্টেবর দুদকের বিসিবির বিভিন্ন খাতে আর্থিক অনিয়ম এবং দুর্নীতি নিয়ে ২৮ পৃষ্ঠার অভিযোগের প্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসেছে দুর্ণীতি দমন কমিশন (দুদক)। সুনিদ্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১১ মার্চ অভিযোগ গৃহিত করে উপপরিচালক সাইদুজ্জামানকে দলনেতা করে এসব অভিযোগ উচ্চতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে দুদক। গত ১৫ এপ্রিল দুদকের দুই সহকারী পরিচালক মাহামুদুল হাসানও আল আমিনের নেতৃত্বে গঠিত দুদকের টিম বিসিবির হিসাব বিভাগ থেকে বিপিএলের টিকিট বিক্রি এবং মুজিব শতবর্ষের কনসার্টে আর্থিক দুর্ণীতির প্রমান পেয়েছে। তৃতীয় বিভাগ বাছাই ক্রিকেটের ৯টি আসরকে প্রহসনে পরিণত করার কারণও উদঘাটন করেছে ওই টিম।
গতকাল উপ-পরিচালক সাইদুজ্জামান সাক্ষরিত চিঠিতে দুদক বিসিবিকে আরও একটি নোটিশ পাঠিয়েছে। বিসিবির সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজনকে দেয়া নোটিশে ২৭টি খাতে দুর্নীতি-অনিয়ম চিহ্নিত করেছে দুদক। যার মধ্যে পূর্বাচলে স্টেডিয়ামে নির্মাণে পরামর্শক নিয়োগ এবং ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া জানতে চেয়েছে দুদক।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসিকে সম্পৃক্ত না করে পূর্বাচলে শেখ হাসিনা ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান পপুলাসকে ৬.৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তিতে নিয়োগ দিয়ে স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ শুরুর আগে অর্ধশত কোটি টাকা খরচ করে দুদকের আতশি কাঁচে এখন বিসিবি। বিপিএলে নীট মুনাফা থেকে ১১৬ কোটি টাকা উধাও হওয়া এবং বিদেশী কোচদের নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং তাদের পেছনে খরচের অসঙ্গতি নিয়েও দুদক অনুসন্ধানে নেমেছে।
পাপন আমলে আয়-ব্যয়ের সকল অডিট রিপোর্ট, আইসিসি-এসিসি থেকে প্রাপ্ত অনুদান, লজিস্টিকস খরচ, বিপিএলের আয়-ব্যয়ের সকল রেকর্ড, বিপিএল পরিচালনার সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সকল তথ্য, ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব ১০০-এ আয়-ব্যয়ের হিসাব, এ আর রহমানের কনসার্টের সকল পেপার্স, লোক দেখানো তৃতীয় বিভাগ বাছাই ক্রিকেট, বিসিবিতে পাপন আমলে যে সমস্ত অডিট ফার্মকে দিয়ে নীরিক্ষা রিপোর্ট করানো হয়েছে তাদের যাবতীয় তথ্য, এজিএম-এর খরচ, বিসিবি পরিচালকদের বিদেশ সফরের খরচ, হেলিকপ্টারের খরচ, স্টেডিয়াম শোভাবর্ধন এবং সংস্কার খরচ, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিপিএলের খরচ, আয়ারল্যান্ড সফরে সিকিউরিটি প্রোভাইডারের পেছনে খরচ, কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের মতো ঘটনার বিস্তারিত জানতে চেয়েছে দুদক।
প্রথম টেস্টে হারের পেছনে ব্যাটারদের বড় দায় থাকলেও বোলাররা সীমিত পুঁজি নিয়েও লড়ে গিয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দুই সেশনে তাদের কঠিন সময় উপহার দিল জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররা। তাতে একটা সময়ে বেশ শক্ত অবস্থানেই থাকল তারা। তবে ২ উইকেটে ১৭৭ রান থেকে পথ হারাল সফরকারীরা। শেষ বিকেলে বাংলাদেশ করল ফাইটব্যাক, যেখানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন অভিজ্ঞ স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তার ফাইফারে ভালোভাবেই প্রথম দিনে ঘুরে দাঁড়াল নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন শেষে এক পর্যায়ে শক্ত অবস্থানে থাকা জিম্বাবুয়ে ৯০ ওভারে করেছে ৯ উইকেটে ২২৮ রান। পাঁচ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার তাইজুল।
আরও পড়ুন
এবার বড় নিষেধাজ্ঞায় তাওহীদ |
![]() |
এই টেস্ট দিয়ে লাল বলের ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া পেসার তানজিম হাসান সাকিব ওপেনিং স্পেলে করেন বেশ ভালো। সেটা সামলে প্রথম ঘণ্টা পার করে দেন জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার। ইনিংসের ১১তম ওভারে গিয়ে ৪১ রানের জুটিতে ভাঙন ধরান তানজিমই। অফস্ট্যাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে খোঁচা দিয়ে কিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ব্রায়ান বেন্নেট।
অন্যপ্রান্তে সেট হয়ে যাওয়া আরেক ওপেনার বেন কুরানকে ২১ রানে ক্লিন বোল্ড করে কিছুটা চাপ তৈরি করেন তাইজুল। তবে দুর্দান্তভাবে সেটা সামাল দেন নিক ওয়েলচ ও অধিনায়ক সিন উইলিয়ামস। স্পিন সহায়ক উইকেট হলেও সেই সময়ে ব্যাটিংয়ের জন্য কন্ডিশন ছিল বেশ ভালো। সেটা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের ত্রিমুখী স্পিন আক্রমণ সামলে দলকে শক্ত ভিত এনে দেওয়ার কাজটা করেন এই দুজন মিলে।
লাঞ্চের পর থেকে চা বিরতি পর্যন্ত বাংলাদেশের বোলারদের হতাশায় ভাসিয়ে দুই ব্যাটারই তুলে নেন ফিফটি। এই জুটি যখন ক্রমেই বিপজ্জনক হচ্ছিল, তখনই ওয়েলচ আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়ায় সেটা ছন্দ কেটে দেয় জিম্বাবুয়ের।
আর সেই সময়ে চাপের মুখে ত্রাতার ভূমিকায় হাজির হন এই ম্যাচ দিয়েই একাদশে আসা তরুণ অফ স্পিনার নাঈম হাসান। শুরু থেকেই রানের জন্য সংগ্রাম করা ক্রেইগ এরভিনকে জাকের আলি অনিকের ক্যাচ বানান তিনি। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই ফের হানেন আঘাত।
টার্ন করে লেগ সাইডে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে করেন সুইপ, তবে হয়নি টাইমিং। স্কয়ার লেগে সহজ ক্যাচ নেন তানজিম। তবে তার আগে খেলেন ৬৭ রানের লড়িয়ে এক ইনিংস। এরপরই দৃশ্যপটে হাজির তাইজুল।
আরও পড়ুন
ভালো পারফরম্যান্স দিয়ে সুদিন ফেরানোর আশায় জাকের |
![]() |
জিম্বাবুয়ের মিডল অর্ডারে ধস নামিয়ে একে একে তুলে নেন আরও চার উইকেট। অল্পের জন্য মিস করেন হ্যাটট্রিলক। সাথে একটি রান আউটে ২১৭ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে অল আউটের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। তবে সেটা আর হয়নি।
৬০ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল, টেস্ট ক্রিকেটে এটি তার ১৬তম ফাইফার।
১ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
১০ দিন আগে
১০ দিন আগে
১০ দিন আগে
১২ দিন আগে
১২ দিন আগে
২২ দিন আগে
২২ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৬ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে