
আর্সেনালের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেই গড়লেন রেকর্ড। গত শনিবার প্রিমিয়ার লিগে লিডস ইউনাইটেডের বিপক্ষে বড় জয়ের (৫-০) ম্যাচে অভিষেক হয় ম্যাক্স ডাওম্যানের। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৫ বছর ২৩৪ দিন। এত অল্প বয়সে মাঠে নামা খেলোয়াড় আর্সেনালের ইতিহাসে আর মাত্র একজন, ডাওম্যান দ্বিতীয়।
অভিষেক ম্যাচের পরই ডাওম্যানকে নিয়ে প্রশংসার ঝড় তুলেছেন আর্সেনালের সাবেক তারকা থিও ওয়ালকট।
ওয়ালকটের চোখে ডাওম্যানের খেলা অনেকটা লিওনেল মেসির মতো,
‘বল নিয়ে দৌড়ানোয় ওর গতি অন্যদের চেয়ে আলাদা। নিচু ভরকেন্দ্র ব্যবহার করে যেভাবে ডিফেন্ডারদের পাশ কাটিয়ে যায়, সেটা একেবারে মেসির খেলার স্টাইলের মতো। ওর খেলা দেখতে প্রশান্তি লাগে।’
আর্সেনালে টানা ১২ বছর খেলেছেন ওয়ালকট। তিনি জানেন প্রতিভাবান তরুণদের প্রতি কোচ মিকেল আর্তেতার আস্থা কেমন। এ ব্যাপারে ওয়ালকট বলেন,
‘সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো আর্তেতা ওকে নিজের মতো খেলতে দিচ্ছেন। কারণ সেটাই ওর সবচেয়ে বড় শক্তি। বল পায়ে থাকলেই সে যেন আরও দ্রুত হয়ে যায়।’
ডওম্যানকে মেসির মতো লাগে বললেন ওয়ালকট,
‘আমি মনে করি, মেসির বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ও যখন বল ছাড়া ছিল, তখন তেমন দ্রুত নয়। কিন্তু বল পায়ে থাকলেই যেন সবাইকে পাশ কাটিয়ে চলে যেত। ডাওম্যানের মাঝেও আমি সেটাই দেখি।’
আরও পড়ুন
| ঝাল অপছন্দ, টটেনহ্যাম পছন্দের অন্য এক ‘হেমো’ |
|
শুধু দক্ষতা নয়, মানসিক দিক থেকেও ডাওম্যান মুগ্ধ করেছেন সাবেক ইংলিশ ফরোয়ার্ড ওয়ালকটকে,
‘ওর খেলায় যে ইতিবাচক মনোভাব আছে, সেটা সত্যিই দারুণ। মনে হয় যেন সারাদিন এভাবেই খেলতে পারবে। ওর প্রতিবার বল পেলে সরাসরি আক্রমণাত্মক হওয়াটা এতটাই সতেজ যে দেখতেই ভালো লাগে। ফুটবল অনেক সময় বিরক্তিকর হয়ে যায়, কিন্তু ডাওম্যানকে দেখলে তা একেবারেই হয় না।’
তবে তরুণ এই প্রতিভাবান ফুটবলারের সামনে যে চাপও আসবে, সেটি মনে করিয়ে দিয়েছেন ওয়ালকট। নিজে যেমন ১৬ বছর বয়সে আর্সেনালের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে অভিষেক করেছিলেন, আর এক বছর পরই ইংল্যান্ড দলে ডাক পান। ডাওম্যানও একই রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন বলে মনে করছেন তিনি।
ওয়ালকটের মতে, সঠিক সহায়তা পাওয়াটাই হবে ডাওম্যানের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। তিনি বললেন,
‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বাইরের চাপ আর ও কীভাবে সেটা সামলায়। স্কুলজীবন আর ফুটবল ক্যারিয়ারের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে হবে। আবার রাস্তায় বের হলে মানুষ চিনবে, সেখান থেকেও চাপ আসবে। তার ওপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের দুনিয়া আছে, যেটা আমাদের সময়ে ছিল না। এখনকার তরুণদের জন্য সেটাই সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা।’
এক ম্যাচ খেলেই আর্সেনাল সমর্থক ও বিশ্লেষকদেরর নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছেন ডাওম্যান। ওয়ালকট তাঁকে মেসির সঙ্গে তুলনা করলেন। সামনে কী অপেক্ষা করছে ডাওম্যানের জন্য, তা সময়ই বলে দেবে। তবে তাঁর শুরুটা নিঃসন্দেহে রূপকথার মতো।
৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২:৩৬ পিএম
৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯:৩৭ এম

গত বছরের নভেম্বরে কম্বোডিয়ায় এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ এশিয়ান কাপ বাছাই খেলে বাংলাদেশ। বয়সভিত্তিক পর্যায়ে সেবারই প্রথম কোনো প্রবাসী ফুটবলার বাংলাদেশ দলে খেলেছিলেন। তিনি ছিলেন আরহাম ইসলাম। অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ স্তরে খেলা ওয়েন্টার্ন ইউনাইটেড একাডেমির অনূর্ধ্ব-১৮ পর্যায়ের ফুটবলার। এক বছর যেতে না যেতেই আরহাম ডাক পেলেন অস্ট্রেলিয়ার অনূর্ধ্ব-২০ দলের চূড়ান্ত স্কোয়াডে।
এ মাসেই অনূর্ধ্ব-২০ পর্যায়ে জাপানে ত্রিদেশীয় একটি সিরিজ খেলবে অস্ট্রেলিয়া। স্বাগতিক জাপান বাদে তৃতীয় দলটি স্পেন। জাপান অনূর্ধ্ব-২০ দলের পাশাপাশি দেশটির একটি ক্লাবের সঙ্গেও খেলবে অস্ট্রেলিয়া। সকারুরা সম্প্রতি ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ টুর্নামেন্ট খেলেছে। তবে এবারের স্কোয়াডে সেই দলের নেই অনেকেই। ১৩ জনই অস্ট্রেলিয়ার জুনিয়র দলে অভিষেকের অপেক্ষায়; আরহাম তাঁদের একজন।
আরহাম মূলত রাইট উইংয়ে খেলেন। পাশাপাশি রাইট ব্যাকেও দলকে সাপোর্ট দিতে পারেন তিনি। কম্বোডিয়ায় বাংলাদেশের হয়ে বাছাই প্রতিযোগিতায় তিনি ভালোই খেলেছিলেন। সে সময় ওই দলের কোচ ছিলেন বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সাইফুল বারী টিটু। তিনি পরবর্তীতে অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কোচ হন। গত সেপ্টেম্বরে তাঁর অধীনে ভিয়েতনামে অনূর্ধ্ব-২৩ এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই খেলে বাংলাদেশ। সেখানে আরহামকে ডাকেননি সাইফুল বারী। ওই সময় দলটি গড়া হয় জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড আল আমিন, শেখ মোরছালিনদের মতো তারকাদের নিয়ে। ছিলেন আরেক প্রবাসী ফাহামিদুল ইসলামও। যদিও ভিয়েতনামে ভালো কিছু করতে পারেনি সাইফুল বারী টিটুর দল।
আরও পড়ুন
| ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ট্রফি কার |
|
ভিয়েতনামে হওয়া ওই টুর্নামেন্টে আরহামের না থাকা নিয়ে তখন বেশ আলোচনা হয়েছিল। শোনা যায় আরহাম নাকি জাতীয় দলের জন্যও ট্রায়াল দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় কোচ সাইফুল বারী টিটু তাঁকে বলেন, ‘তোমাকে আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে, এখনই সময় হয়নি।’
তবে অস্ট্রেলিয়া অনূর্ধ্ব-২০ দলের চূড়ান্ত স্কোয়াডে জায়গা পেলেও, এমনকি এই টুর্নামেন্ট খেললেও বাংলাদেশ দলে খেলার সুযোগ থাকবে আরহামের। কিন্তু তাঁকে বিবেচনায় রেখেছে কি না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন সেটি দেখার অপেক্ষা।

শুরুটা ভালোই করেছিলেন। তবে সময় যত গড়াতে থাকে, তত কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হন রিয়াল মাদ্রিদের কোচ জাবি আলোনসো। এখন পর্যন্ত স্প্যানিশ এই কোচের ওপর ভরসা রাখছে ইউরোপের সবচেয়ে সফল ক্লাবটি। তবে আর কত? রিয়ালের মতো ক্লাব সবসময় দ্রুত ফল চায়। কিন্তু জাবির কোচিংয়ে উন্নতির কোনো লক্ষণ তো দূরে থাক, উল্টো অধঃপতনের চূড়ান্ত রূপই যেন দেখছে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর ক্লাবটি।
সবশেষ গতকাল রাতে সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে ০-২ গোলের হারে চলতি মৌসুমে রিয়ালের দুর্দশা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠল। রিয়ালের কোচ জাবিকে কী আরও সময় দেবে ক্লাবটি ? নাকি ঘরের মাঠে পরের ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে হারেই বিদায় ঘণ্টা বাজবে সাবেক বায়ার লেভারকুজের কোচের?
আরও পড়ুন
| ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ট্রফি কার |
|
রিয়াল মাদ্রিদকে খাদের আরও কিনারায় ঠেলে দেওয়া সেল্টা ভিগোর কোচ ক্লাউদিও গিরালদেজ অবশ্য বলছেন জাবি অসাধারণ একজন কোচ। এমনকি তাঁর মতে এরচেয়ে আর ভালো কোচ পাবে না রিয়াল মাদ্রিদ, ‘তিনি (জাবি আলোনসো) একজন অসাধারণ কোচ, অসাধারণ কোচিং স্টাফের সঙ্গে কাজ করছেন, এবং তার কাছে অসাধারণ খেলোয়াড়দের দল আছে। অপ্রত্যাশিতভাবে তাঁর ডিফেন্সের খেলোয়াড়রা চোটে পড়েছে।’
রিয়ালের মতো ক্লাবে থিতু হতে আরও জাবির আরো সময় প্রয়োজন বলে মনে করেন সেল্টা ভিগোর কোচ, আনচেলত্তির দীর্ঘ সময়কালের পরে, এটা স্পষ্ট যে আলোনসোরও মানিয়ে নেওয়ার সময় প্রয়োজন, এবং কোচের জন্য সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রিয়াল মাদ্রিদ তার চেয়ে ভালো কোচ খুঁজে পেত না।
ঘরের মাঠে জোড়া লাল কার্ড আর জোড়া গোল খেয়ে হার নিয়ে ক্ষিপ্ত রিয়াল কোচ। ম্যাচ শেষে আলোনসো বলেছেন, ‘আমরা সবাই খুব রাগান্বিত। স্পষ্টতই এটা সেই ম্যাচ নয়, যেটা আমরা চেয়েছিলাম এবং এটা সেই ফলও নয়, যা আমরা চেয়েছিলাম। আমাদের যত দ্রুত সম্ভব সবকিছু ভুলে সামনে এগোতে হবে। এটা মাত্র তিন পয়েন্টের ব্যাপার।’
রিয়াল পরের ম্যাচ খেলবে চ্যাম্পিয়নস লিগে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে চান আলোনসো, ‘ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে। এই খারাপ অনুভূতিটা আমাদের ঝেড়ে ফেলতে হবে।’

শৈশবের ক্লাবে ফিরে নিয়মিত মাঠে নামবেন, গোল করবেন আর দলকে জেতাবেন। এমন রাজকীয় প্রত্যাবর্তনই তো চেয়েছিলেন নেইমার। তবে ফুটবল ক্যারিয়ারের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে যাওয়া চোট কি আর সেটা হতে দিচ্ছিল। এমনকি হুমকির মুখেও পড়ে সান্তোসের রাজপুত্রের ক্যারিয়ার। শেষ পর্যন্ত সব বাধা ডিঙিয়েছেন। ‘সুপারম্যান’ হয়ে উদ্ধার করেছেন দলকে।
আজ সকালে ব্রাজিলের লিগ সিরি ‘আ’ তে ক্রইজেইরোকে ৩-০ গোলে হারাল সান্তোস। লিগে শেষ রাউন্ডের এই জয়ে নিশ্চিত হলো, অবনমন হচ্ছে না নেইমারের ক্লাব। ৩৮ ম্যাচে ১২ জয় ১১ ড্র ১৫ হারে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার ১২ নম্বরে থেকে মৌসুম শেষ করল সান্তোস। পয়েন্ট টেবিলের অবনমিত হয়ে যাওয়া শেষ চারটি দলের শীর্ষে থাকা সিয়েরা স্পোটিং ক্লাব থেকে ৪ পয়েন্ট এগিয়ে ক্লাবটি।
সান্তোসের আগের দুই ম্যাচে পাঁচ গোলে অবদান রাখা নেইমার আজ অবশ্য গোল-অ্যাসিস্ট কিছুই পাননি। তবে আসল কাজ যে ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার করে দিয়েছেন আগেই। চোট নিয়েই সবশেষ ম্যাচে করেন হ্যাটট্রিক। ৩৩ বছর বয়সী ফুটবলার ম্যাচ শেষে নিশ্চিত করেছেন এবার সময় হয়েছে। অনেক দিন ভুগতে থাকা বাঁ হাঁটুর সার্জারি করাবেন তিনি।
আরও পড়ুন
| ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ট্রফি কার |
|
সান্তোসকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলার জন্যই নাকি ক্লাবটিতে নাম লেখান নেইমার। ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন, ‘আমি এ জন্যই এসেছি, যতটা সম্ভব সাহায্য করতে। আমার জন্য সবশেষ কয়েক সপ্তাহ কঠিন ছিল। যারা আমার পাশে ছিল, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তারা না থাকলে, এই চোটাক্রান্ত হাঁটুর কারণে আমি এই ম্যাচগুলো খেলতে পারতাম না। এখন আমার বিশ্রাম প্রয়োজন এবং তারপর হাঁটুর সার্জারি হবে।’
অবশ্য হাঁটুর চোট আর সার্জারির ধরণ নিয়ে বিস্তারিত কিছুই জানাননি নেইমার। তবে সাম্বা তারকা ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের জন্য ব্রাজিলের চূড়ান্ত স্কোয়াডে থাকতে আত্মবিশ্বাসী। যদিও কোচ কার্লো আনচেলোত্তি মে মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর তাকে এখনও অন্তর্ভুক্ত করেননি। ইতালিয়ান কোচ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, শতভাগ ফিট থাকা খেলোয়াড়রাই কেবল ব্রাজিল স্কোয়াডে সুযোগ পাবেন। বিশ্বকাপের বাকি আর ছয় মাস। এর আগে কতটা ফিট হয়ে মাঠে চেনা ছন্দে ফিরতে পারেন নেইমার সেটাই দেখার অপেক্ষা এখন।
ব্রাজিলের লিগ সিরি-‘আ’র চ্যাম্পিয়ন্স ইতিমধ্যেই নিশ্চিত হয়েছে। সিয়েরাকে ১-০ গোলে হারিয়ে নবমবারের মতো লিগ শিরোপা জিতেছে ফ্লামেঙ্গো। এর আগে গত মাসে ক্লাব ফুটবলে তারা মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠেত্যের প্রতিযোগিতা কোপা লিবার্তাদোরেসেরও চ্যাম্পিয়ন হয়।

রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে এর চেয়ে বাজে আর কি ঘটতে পারতো? দলের সেরা ডিফেন্ডারের চোট, একবার নয় দু’বার লাল কার্ড দেখা, ১৯ বছর পর এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ঘরের মাঠে হার। বিপর্যস্ত, শোচনীয় কিংবা বেহাল হালের মতো শব্দও যেন বর্ণনা করতে পারছে না স্প্যানিশ জায়ান্টদের বর্তমান পরিস্থিতিকে।
প্রায় ৩৬ দিন পর ঘরে ফিরেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। অথচ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ফেরার আনন্দ ধূলোয় মিশে গেল অধঃপতনের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া এক ম্যাচে। লা লিগায় গতকাল রাতে সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে ০-২ গোলে হেরেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
রিয়ালের জন্য আরও বিব্রতকর বিষয় হচ্ছে প্রতিপক্ষের এক আনাড়ি আর অনিয়মিত খেলোয়াড় তাদের জালে দুই দফা বল পাঠিয়েছে। বদলি নেমে সেল্টা ভিগোর সুইডিশ উইঙ্গার উইলিয়ট সুইডবার্গ জোড়া গোল করেন। আর রিয়ালের দুর্দশা কয়েকগুন বাড়িয়ে লাল দেখেন ফ্রান গার্সিয়া ও আলভারো কারেয়াস।
দুঃস্বপ্নের রাতের শুরুটা হয় মিলিতাওয়ের চোটে
লিগে টানা তিন ম্যাচ ড্র করার পর সবশেষ অ্যাথলেটিক বিলাবাওকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে প্রত্যাবর্তনের আভাস দিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে এবার হেরেই গিয়ে জাবি আলোনসোর দল যেন প্রমাণ করল মৌসুমটা এভাবে ধুঁকতে ধুঁকতেই শেষ করতে হবে লস ব্লাঙ্কোসদের। আগামী বুধবার ঘরের মাঠেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ম্যানচেস্টার সিটির মুখোমুখি হবে রিয়াল। এই ম্যাচেও ইতিবাচক ফল না এলে বোধহয় চাকরিটাই হারাবেন জাবি আলোনসো।
সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে এই হারে লিগ জয়ের দৌড় থেকেও অনেকটাই ছিটকে গেল রিয়াল। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা থেকে পয়েন্ট টেবিলে এখন তারা ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে। ১৬ ম্যাচে ১১ জয়, ৩ ড্র ও ২ হারে রিয়ালের পয়েন্ট ৩৬। রিয়ালের মুখোমুখি হওয়ার আগে লিগে মাত্র তিনবার জয় দেখেছিল সেল্টা ভিগো। এবার লা লিগার সর্বোচ্চ চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে ১৫ ম্যাচে চার জয়ে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে দশ নম্বরে উঠে এল তারা।
অথচ নিজেদের মাঠে লক্ষ্যে শট নেওয়া কিংবা গোলের সুযোগ তৈরিতে এগিয়ে ছিল রিয়ালই। তবে সুযোগ হাতছাড়ার সঙ্গে লাল কার্ডের খড়গ তাদের পুরোপুরি ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। ম্যাচে কিলিয়ান এমবাপে-ভিনিসিয়ুস জুনিয়ররা মোট ২৩টি শট নিয়ে সাতটি লক্ষ্যে রাখে। বিপরীতে মোট সাতটি শট নিয়ে পাঁচটি লক্ষ্যে রেখে দুইটি গোলে পরিণত করে সেল্টা ভিগো।
নিজেদের হারিয়ে খোঁজা রিয়াল ম্যাচের শুরুতে ছন্দের খোঁজেই ছিল। এর মাঝেই বড় এক ধাক্কা খায় তারা। প্রতিপক্ষের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে আঘাত পান এদের মিলিতাও। পরে তিনি মাঠ ছাড়েন দুই জনের কাঁধে ভর দিয়ে। এসিএলের চোট থেকে ফিরতে না ফিরতেই আবার আবার ছিটকে গেলেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার। ২৪ মিনিটে তাঁর বদলি নামেন জার্মান ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগার।
রিয়ালের আক্রমণভাগ ছিল একেবারেই ভোঁতা। স্বাগতিকরা প্রথম এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় ৩৯ মিনিটে। তবে তুরস্কের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার আর্দা গুলেরের নেওয়া শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। প্রথমার্ধে লিড নেওয়ার সুযোগ এসেছিল সফরকারী দলেরও। তবে শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।
রিয়াল মাদ্রিদের দুর্দশার ষোলকলা পূর্ণ করে শেষ দিকে লাল কার্ড দেখেন কারেয়াস
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দুরানের বদলি নেমে সেল্ট ভিগোকে এগিয়ে দেন উইলিয়ট সুইডবার্গ। ৫৩ বক্সের ভেতর বাঁ দিক থেকে সারাগোসার পাস পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে ব্যাকহিল ফ্লিকে জালে পাঠান অরক্ষিত সুইডিশ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার।
৬৪ মিনিটে বড় ধাক্কা খায় রেয়াল। পরপর দুই মিনিটে দু’বার হলুদ কাড দেখে শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়তে হয় ফ্রান গার্সিয়াকে। এরপর দশজনের দল নিয়েও গোলের একাধিক সুযোগ তৈরি করে রিয়াল। তবে রাতটা ছিল রিয়ালের জন্য অপয়া। গোল পাওয়া তো দূরের কথা উল্টো যোগ করা সময়ে আরেক দফা হোঁচট খায় রিয়াল।
যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে উইলিয়টকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন আলভারো কারেরাস। রেফারির সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে কয়েক সেকেন্ড পর লাল কার্ড দেখেন এই ডিফেন্ডার। পাশাপাশি রেফারির সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে হলুদ কার্ড দেখেন ফেদেরিকো ভালভের্দে ও রদ্রিগো।
বিধ্বস্ত রিয়ালকে বাগে পেয়ে পরের মিনিটেই স্প্যানিশ জায়ান্টদের কফিরে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়ে জোড়া গোল পূর্ণ করেন উইলিয়ট। রেফারির ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজতেই ২০০৬ সালের পর রিয়ালের মাঠে জয় পাওয়ার আনন্দে ভাসে সেল্টা ভিগো।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম শক্তিশালী দল লিভারপুলের সাবেক সহ-মালিক টম হিক্স মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
গতকাল শনিবার ডালাসে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন হিক্স। মার্কিন ব্যবসায়ী ও তাঁর সহ-মালিক বন্ধু জর্জ জিলেট হিক্সের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
তিন বছর ছয় মাস লিভারপুলের মালিকানায় ছিলেন হিক্স। পরবর্তীতে ২০১০ সালের অক্টোবরে নিজের শেয়ার বিক্রি করে দেন তিনি। লিভারপুরের সুখে-দুঃখের সঙ্গী ছিলেন। ক্লাব উন্নয়নে সবসময় পাশে ছিলেন ছায়ার মতোই।
আজ হিক্সের সন্তানদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের বাবা মারা গেছেন। তারা আরও বলেন, “তিনি এখনো আমাদের জন্য একটি দিশানির্দেশক শক্তি।”
হিক্সের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে লিভারপুল। এক বিবৃতিতে অল রেডস জানায়, ৭৯ বছর বয়সে টম হিক্স মৃত্যুবরণ করেছেন। হিক্স, যিনি ডালাস স্টারস ও টেক্সাস রেঞ্জার্সেরও মালিক ছিলেন, তিনি শনিবার মারা গেছেন।
লিভারপুল আরও জানায়, “হিক্স ও তাঁর সহকর্মী মার্কিন ব্যবসায়ী জর্জ জিলেট ২০০৭ সালের শুরুর দিকে রেডসের অধিগ্রহণ সম্পন্ন করেন। ২০১০ সালের অক্টোবরে বর্তমান মালিক ফেনওয়ে স্পোর্টস গ্রুপ ক্লাবটি অধিগ্রহণ করলে আনফিল্ডে তাঁদের মেয়াদ শেষ হয়।”
এই কঠিন সময়ে হিক্স পরিবার এবং টমের বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে লিভারপুল।