১১ অক্টোবর ২০২৫, ২:৩৩ পিএম
ঘরোয়া ক্রিকেটে খুলনার একসময়ের দাপট এখন অনেকটাই ম্রিয়মাণ। বেশ কয়েক বছর ধরেই জাতীয় ক্রিকেট লিগের চার দিনের সংস্করণে চ্যাম্পিয়ন হতে পারছে না তারা। তবে এবার সুযোগ এসেছে এনসিএল টি-টোয়েন্টির শিরোপা জেতার।
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুরকে হারিয়ে খুলনাকে এনসিএলের ট্রফি উপহার দিতে চান অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। ফাইনালের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এই কথা বলেছেন জাতীয় দলের সাবেক এই ব্যাটার।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার বিকেল ৫টায় হবে এনসিএল টি-টোয়েন্টির ফাইনাল। যেখানে আকবর আলির রংপুরের মোকাবিলা করবে মিঠুনের খুলনা। ম্যাচের আগের দিন ট্রফি নিয়ে ফটোশুট করেন দুই অধিনায়ক।
পরে সংবাদ সম্মেলনে শিরোপা জেতার প্রত্যয় জানান তিনি।
“সত্যি বলতে, রংপুর গত কিছু ম্যাচে খুব ভালো ক্রিকেট খেলছে। ওরা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। অবশ্যই ওরা খুব ভালো দল। ওদের প্রতি অবশ্যই সেই সম্মান থাকবে।”
“একইসঙ্গে আমরাও খুব ভালো খেলছি। দলটা বেশ অভিজ্ঞ। খুব ভারসাম্যপূর্ণ দল। আমরা আশাবাদী। অনেক লম্বা সময় খুলনায় ট্রফি যায়নি। তাই আমরা ক্রিকেটাররা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম যে, এই ট্রফিটা আমরা নিতে চাই। অবশ্যই এটা নতুন ম্যাচ। আমাদের চেষ্টা থাকবে সেরাটা দেওয়ার।”
সবশেষ বিপিএলে চিটাগং কিংসের অধিনায়ক ছিলেন মিঠুন। তার নেতৃত্বে রানার্স-আপ হয় দীর্ঘ দিন পর বিপিএলে ফেরা ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। মিঠুন জানালেন, তার দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের মধ্যে প্রথম দিন থেকেই শিরোপা জেতার প্রেরণা কাজ করছে।
“গত বিপিএলে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফল পেয়েছি। আগামীকাল অবশ্যই আমাদের প্রত্যাশা থাকবে... প্রথম দিন থেকেই আমাদের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের মধ্যে মোটিভ কাজ করছে যে, এই বছরের ট্রফি আমরা চাই। তো আমরা খুলনাকে এই ট্রফি উপহার দিতে চাই।”
এনসিএলে এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় সেরা পাঁচে নেই খুলনার কেউ। আর উইকেট শিকারিদের মধ্যে সেরা পাঁচে আছেন শুধু শেখ পারভেজ রহমান জীবন, ৬ ইনিংসে ১০ উইকেট নিয়ে চার নম্বরে।
মিঠুনের মতে, একক পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর না করে দলীয়ভাবে খেলাই তার দলের শক্তি।
“আমাদের দল যদি দেখেন, কারও একার পারফরম্যান্সে এখানে আসিনি। পুরো দলের পারফরম্যান্সে এখানে এসেছে। সর্বোচ্চ রান বা উইকেটের যদি হিসেব করেন, আমাদের দলের একটাও নেই। তবে আমাদের দলে যখন যেখানে যাকে দরকার, সে অবদান রাখছে।”
“এটাই আমাদের মূল শক্তি। আমরা এক-দুজনের ওপর নির্ভরশীল নই। পুরো স্কোয়াডের ওপর আমাদের ভরসা আছে। জানি না, কালকের ম্যাচে কে ম্যাচ উইনিং নক খেলবে। যার ব্যাট থেকেই আসবে, আমরা খুশি।”
No posts available.
১১ অক্টোবর ২০২৫, ৭:১৩ পিএম
সুগন্ধিকা কুমারির অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে চমৎকার শটে কাভারের ওপর দিয়ে ছক্কা মেরে দিলেন ন্যাট সিবার-ব্রান্ট। এই এক শটেই তিনি পূর্ণ করলেন নিজের সেঞ্চুরি ও গড়লেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের নতুন ইতিহাস।
মেয়েদের বিশ্বকাপের ম্যাচে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শনিবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১১৭ বলে ১১৭ রানের ইনিংস খেলেছেন সিবার-ব্রান্ট। যার সৌজন্যে এখন বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিক হয়ে গেছেন ইংলিশ অধিনায়ক।
বিশ্বকাপের তিন আসরে খেলে ১৯ ইনিংসে সিবার-ব্রান্টের সেঞ্চুরি ৫টি। এছাড়া দুইটি ফিফটিও করেছেন তিনি।
এত দিন ধরে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড ছিল ইংল্যান্ডের জেনেট ব্রিটিন, শার্লট এডওয়ার্ডস ও নিউ জিল্যান্ডের সুজি বেটসের। তারা তিনজনই বিশ্বকাপে করেছেন ৪টি করে সেঞ্চুরি। তাদের ছাড়িয়ে এককভাবে এখন শীর্ষে সিবার-ব্রান্ট।
২০১৭ সালে নিজের প্রথম বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ম্যাচেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩৭ রানের ইনিংস খেলেছেন সিবার-ব্রান্ট। ঘরের মাঠে একই আসরে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষেও তিন অঙ্কের জাদুকরী স্পর্শ পান ইংল্যান্ডের তারকা ব্যাটার।
পরে ২০২২ সালের আসরে প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অপরাজিত ১০৯ রান করেন সিবার-ব্রান্ট। ওই আসরের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনি খেলেন ১২১ বলে ১৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংস। কিন্তু বাকিদের ব্যর্থতায় ইংল্যান্ডকে শিরোপা জেতাতে পারেননি।
এবার ইতিহাস গড়ার পথে ৫৭ বলে ফিফটি করেন ইংলিশ অধিনায়ক। সেঞ্চুরির আগে পঞ্চাশতম রানও তিনি করেন ছক্কা মেরে। এরপর তিন অঙ্ক ছুঁতে তার লাগে আরও ৫৩ বল। পরে ইনিংসের এক বল বাকি থাকতে ক্যাচ আউট হন তিনি।
১২৪ ম্যাচের ক্যারিয়ারে ১১০ ইনিংসে ব্যাটিং করে সিবার-ব্রান্টের এটি দশম সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ডের হয়ে এই ফরম্যাটে তার চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে শুধু সতীর্থ ব্যাটার ট্যামি বাউমন্টের। ১২৫ ইনিংসে ১২টি সেঞ্চুরি করেছেন অভিজ্ঞ কিপার-ব্যাটার।
সিবার-ব্রান্টের সেঞ্চুরি ছাড়া ইংল্যান্ডের আর কোনো ব্যাটার তেমন কিছু করতে পারেননি। নির্ধারিত ৫০ ওভারে তাই ৯ উইকেটে ২৫৩ রানের বেশি করতে পারেনি গত বিশ্বকাপের রানার্স-আপরা।
আরব আমিরাতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচে ব্যস্ত রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও মোহাম্মদ নবী। আর দেশে ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে তাণ্ডব চালাচ্ছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। যেখানে নবীর ছেলের ঝড় ম্লান করে বিধ্বংসী সেঞ্চুরি করেছেন গুরবাজের ভাই।
আফগানিস্তানের শুক্রবার শুরু হয়েছে ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট কাবুল প্রিমিয়ার লিগ (কেপিএল)। এই টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিনে রান উৎসবে মেতেছেন কাবুল জালমির মাসুদ গুরবাজ ও আবাসিন ডিফেন্ডারসের হাসান ইসাখিল।
কাবুলের আইয়ুবি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ২২৬ রান করে নবীর ছেলের দল আবাসিন ডিফেন্ডার। পরে মাসুদ গুরবাজের তাণ্ডবে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭.২ ওভারে ২৩২ রান করে ফেলে কাবুল জালমি।
আবাসিনকে দুইশ ছাড়ানো পুঁজি এনে দেওয়ার কারিগর মূলত ইসাখিল। ওপেনিংয়ে নেমে ১০ চার ও ৬ ছক্কায় ৫১ বলে ৯১ রান করেন ১৯ বছর বয়সী ব্যাটার। তিনি যখন আউট হন, তখনও বাকি ছিল ১৯ বল। তাই সেঞ্চুরির বেশ ভালো সুযোগ ছিল নবীর ছেলের সামনে।
ইসাখিল না পারলেও কোনো ভুল করেননি রহমানউল্লাহ গুরবাজের ভাই মাসুদ গুরবাজ। শুরু থেকেই তাণ্ডব চালিয়ে মাত্র ২০ বলে ফিফটি করে উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। একই গতিতে এগিয়ে পরের পঞ্চাশ করতে খেলেন মাত্র ১৩ বল। অর্থাৎ ৩৩ বলে সেঞ্চুরি করে ফেলেন গুরবাজের ভাই।
তার ঝড়ে মাত্র ১০ ওভারে ১৫৪ রান করে ফেলে কাবুল। সেঞ্চুরি করেও তাণ্ডব চালিয়ে যান মাসুদ। শেষ পর্যন্ত ১৩তম ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরেন তিনি। ততক্ষণে তার নামের পাশে ১০ চার ও ১২ ছক্কায় মাত্র ৪৬ বলে ১২৮ রান।
বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলা ওয়াফিউল্লাহ তারাখিল, শরাফউদ্দিন আশরাফরাও এই ম্যাচে দুই দলে ছিলেন। তবে টুর্নামেন্টের আইসিসি স্বীকৃতি না থাকায়, মাসুদের ক্যারিয়ারে যোগ হবে না বিধ্বংসী এই সেঞ্চুরি।
নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদে এল ব্যাপক পরিবর্তন। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলও এর ব্যতিক্রম নয়। এই কমিটির চেয়ারম্যান হলেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, আর সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান মিঠু
নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিপিএলকে ঢেলে সাজানোর। সেই ধারবাহিকতায় নির্বাচিত বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল সেটিকে আরও দৃশ্যমান করে তুলছে। সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান জানিয়েছেন, পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে হলেও বিপিএল আয়োজন করতে চান তাঁরা। সম্ভাব্য সময়- আগামী ডিসেম্বর ও জানুয়ারির মাঝামাঝি।
ইফতেখার রহমান আজ সংবাদমাধ্যমকে বলেন,
‘আপনারা জানেন তিন-চার দিন আগেই গভর্নিং কাউন্সিলটা নতুন করে গঠন করা হয়েছে। তারপর থেকেই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, এত কম সময়ে আমরা বিপিএলটা করব কি করব না। আমরা সেইদিনও লাস্ট প্রেস কনফারেন্সে বলেছি, বোর্ড বিপিএল আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সময় হচ্ছে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির মাঝমাঝিতে।’
আগের ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ইফতেখার রহমান। নিজেদের শর্ত ও প্রক্রিয়া অনুযায়ী নতুন করে ফ্র্যাঞ্চাইজি নিচ্ছে বিসিবি। তবে পাঁচ দল হলেই এবার একটু যেন সুবিধা হয় তাদের জন্য। এই বিসিবি পরিচালক বললেন,
‘আপনারা জানেন এটা নতুনভাবে শুরু হচ্ছে, কারণ আগের যত দলের সঙ্গে চুক্তি ছিল এগুলো শেষ হয়ে গেছে। এখন যেটা হচ্ছে, আমাদের এই কালকেই আগ্রহপত্র (ইওআই) আসবে কাগজে। আর আমরা যেটা এবার ইওআইতে করেছি- ১০টা রিজেনের নাম বলেছি। এখান থেকে আমাদের যে উইন্ডোটা আছে, এই বছর যেহেতু কম সময়, পাঁচ দলে আমরা স্বাচ্ছন্দ্য। তাই বলে যে ছয়টা-সাতটা হবে না সেটা বলছি না। কিন্তু কথাটা হচ্ছে আমরা স্বাচ্ছন্দ্য এক মাসের উইন্ডোতে পাঁচটা টিম নিয়ে করার। আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে প্রথম পাঁচটা টিম।’
এবার ফ্র্যাঞ্চাইজি বাছাইয়ে বেশ কঠোর বিসিবি। ইফতেখার রহমান বললেন,
‘গত বিপিএলে যেসব সমস্যা আমাদের হয়েছিল, মূলত ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে হয়েছিল। ফ্র্যাঞ্চাইজি নির্বাচনে এবার খুব খুব কঠোর। মানে ফাইনান্সিয়ালস ঠিক না থাকলে, ম্যানেজমেন্ট ঠিক না থাকলে... আপনি বড় গ্রুপ হয়তো হচ্ছেন, ফাইনান্সিয়াল ভালো, কিন্তু আপনার ক্রিকেট ম্যানেজমেন্টেরও তো লোক নিয়ে করতে হবে। এইসব এইসব আমরা দেখব।’
অনেকটা প্রথম টেস্টের অনুকরণই করছে যেন ভারত। ব্যাতিক্রম শুধু আহমেদাবাদ টেস্টে শুরুতে ব্যাটিং করে শুবমান গিলের দল। দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই স্বাগতিকদের রান সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
প্রথম ইনিংসে যশ্বসি জয়সওয়াল ও গিলের সেঞ্চুরিতে পাঁচ উইকেটে ৫১৮ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। জবাবে স্কোরবোর্ডে ১৪০ রান তুলতে চার উইকেট হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এখনো ক্যারিবিয়রা পিছিয়ে ৩৭৮ রানে।
দিল্লি টেস্টের প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও রান উৎসবে মাতে ভারত। ১৭৩ রান নিয়ে দিন শুরু করা জয়সওয়ালের ভাগ্যটা মন্দই বলতে হয়। মাত্র তিন রান যোগ করেই রান আউটে কাটা পড়েন এই ওপেনার। শেষ হয় তাঁর ২৫৮ বলে ১৭৫ রানের অনবদ্য ইনিংস।
অন্য প্রান্তে সাবলিল ব্যাটিংয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চরি করেন গিল। ৩৯ টেস্টের ক্যারিয়ারে ১০ সেঞ্চুরির মধ্যে অধিনায়ক হিসেবে করেছেন ৫টি। এর সব কটিই আবার করেছেন চলতি বছর। যা কিনা টেস্টে ভারতের অধিনায়কদের মধ্যে এক বছরে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড।
ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ৫টি করে সেঞ্চুরি করেছিলেন ভারতের তখনকার অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এতদিন ধরে এটিই ছিল ভারতের রেকর্ড। প্রায় ৭ বছর পর কোহলির সঙ্গী হিসেবে পাশে বসেছেন গিল।
গিলকে শেষ পর্যন্ত আর আউটই করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা। ১৯৬ বলে ১৬ চার ও ২ ছক্কায় ১২৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ২৬ বছর বয়সী ব্যাটার। অপর প্রান্তে নিতিশ কুমার রেড্ডি (৪৩) ও ধ্রুব জুরেল (৪৪) ফিফটির আগে ফিরেন।
১৩৪ ওভার বল করা উইন্ডিজের বোলররা দেড় দিন খেটে আদতে মাত্র চারটি উইকেটই নিতে পেরেছে ভারতের। ৩৪ ওভারে ৯৮ রান দিয়ে তিন উইকেট নেওয়া জোমেল ওয়ারিকেন সফরকারীদের সেরা বোলার। বাকি উইকেটটি নিয়েছেন রোস্টন চেজ।
ভারতের রান পাহাড়ের জবাবে ২১ রানে প্রথম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জন ক্যাম্পবেলকে ফেরান রবীন্দ্র জাদেজা। এরপর তিনে নামা অলিক আথানজেকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্ট করেন ত্যাগনারায়েন চন্দরপল। তবে তাদের জুটি বেশি বড় হতে দেননি দ্বিতীয় আঘাত হানা জাদেজা। ভারতের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ৬৭ বলে ৩৪ রান করা ত্যাগনারায়নকে লোকেশ রাহুলে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান। তাতে ভাঙে দ্বিতীয় উইকেটে তাদের ৬৬ রানের জুটি।
দ্বিতীয় উইকেট পতনের পরপর আরও দুটি উইটেক হারায় উইন্ডিজ দল। কুলদিব যাদবের শিকার হন আথানযে (৪১)। আর নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে নামা রোস্টন চেজ গোল্ডেন ডাক মেরে আউট হন জাদেজার বলে।
১০৭ রানে চার উইকেট হারানোর পর দিনের শেষ অংশে দলকে আর বিপদে পড়তে দেননি শাই হোপ ও তেভিন ইমলাচ। ক্যারিবিয়দের সাদা বলের অধিনায়ক হোপ অপরাজিত আছেন ৩১ রানে, ইমলাচ ১৪।
রশিদ খানের লেগ স্পিন বা গুগলির কোনো জবাবই যেন জানে না বাংলাদেশ। বেশ ছোট লক্ষ্য পেলেও রশিদের ঘূর্ণিতে খাবি খেয়ে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হেরে গেল মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
আবু ধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে ৮১ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জিতে গেল আফগানিস্তান। মাত্র ১৯১ রানের লক্ষ্য পেলেও ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১০৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
এই মাঠে এর চেয়ে কম রান করে জিততে পারেনি আর কোনো দল। ২০০৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯৮ রান করেও জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই রেকর্ড এবার নিজেদের করে নিল আফগানিস্তান।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের সর্বনিম্ন ইনিংস।
এ নিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে টানা তিন সিরিজ জিতে হ্যাটট্রিক করল আফগানিস্তান। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের মাঠে ও ২০২৪ সালে শারজাহতেও সিরিজ জিতেছিল তারা।
বাংলাদেশের ব্যাটিং গুঁড়িয়ে মাত্র ১৭ রানে ৫ উইকেট নেন রশিদ। ওয়ানডেতে এটি তার ষষ্ঠ ৫ উইকেট। স্পিনারদের মধ্যে তার চেয়ে বেশি ৫ উইকেট আছে শুধু মুত্তিয়া মুরালিধরন (১০) ও শহিদ আফ্রিদির (৯)। এছাড়া আজমতউল্লাহ ওমরজাই নেন ৩ উইকেট।
রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই তানজিদ হাসান তামিমের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পরে সাইফ হাসানের শুরুটা ভালো হলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
একপ্রান্ত আগলে তাওহিদ হৃদয় দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু দলের সর্বোচ্চ ২৪ রান করে রশিদের বলে বোল্ড হয়ে যান হৃদয়। সেখান থেকেই শুরু হয় বাংলাদেশের ধস।
শেষ দিকে মাত্র ১০ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে অল আউট হয় বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ৪৪.৫ ওভারে ১৯০ (গুরবাজ ১১, ইব্রাহিম ৯৫, অতল ৮, রহমত ৯ অবসর আউট, হাশমত ৪, ওমরজাই ০, নবী ২২, খারোটে ১৩, রশিদ ১, গাজানফার ২২, বশির ০*; সাকিব ৭-০-৩৫-২, মোস্তাফিজ ৮-০-৩৮-০, মিরাজ ১০-১-৪২-৩, তানভির ১০-০-৩৫-১, রিশাদ ৯.৫-০-৩৭-২)
বাংলাদেশ: ২৮.৩ ওভারে ১০৯ (তামিম ০, সাইফ ২২, শান্ত ৭, হৃদয় ২৪, মিরাজ ৪, জাকের ১৮, সোহান ১৫, সাকিব ০, রিশাদ ৫, তানভির ০, মোস্তাফিজ ৬*; ওমরজাই ৭-১-২৭-৩, বশির ২-০-২২-০, গাজানফার ৪-০-২১-০, রশিদ ৮.৩-২-১৭-৫, খারোটে ৭-২-২২-১)
ফল: আফগানিস্তান ৮১ রানে জয়ী