২৩ অক্টোবর ২০২৫, ২:২০ পিএম

তারকা ফুটবলার তৈরির আতুঁড়ঘর বলা হয়ে থাকে লা মাসিয়াকে। বার্সেলোনার এই একাডেমির হাত ধরে বহু রথী-মহারথীরা ইতিহাস লিখেছেন। কাতালান ক্লাবটির স্তম্ভের মতো এই একাডেমি।
লিওনেল মেসি, জাভি, ইনিয়েস্তা কিংবা হালের লামিনে ইয়ামাল, গাভি, ফারমিন লোপেজ এই লা মাসিয়ারই সৃষ্টি। অনেকের মতে বার্সার এই একাডেমিই ফুটবলবিশ্বে সেরা। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় লা মাসিয়া নয়, শীর্ষ একডেমি বলা হচ্ছে পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকার একাডেমিকে।
ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলার পরিসংখ্যান, বিশ্লেষণ ও গবেষণা সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর স্পোর্ট স্টাডিজ (সিআইইএস)। প্রতিষ্ঠানটি একটি ট্রেনিং ইনডেক্সের ভিত্তিতে একাডেমিগুলোর র্যাংকিং করেছে। এসব একাডেমির খেলোয়াড় তৈরির সংখ্যা, তারা সবশেষ বছর যে ক্লাবগুলোর হয়ে খেলেছে তার মান এবং একই সময়ের মধ্যে খেলানো অফিসিয়াল ম্যাচের মিনিট গণনা করে তৈরি করা হয়েছে এই র্যাংকিং। আর এই র্যাংকিংয়েই বিশ্বের সেরা একাডেমি বেনফিকার `বেনফিকা ক্যাম্পাস দে ফুটবল এম সেক্সাল’।
আরও পড়ুন
| অপ্রতিরোধ্য বায়ার্নের টানা ১২ জয় |
|
বার্সেলোনার লা মাসিয়া একাডেমি থেকে ৭৬ জন ফুটবলার বর্তমানে ৪৯টি লিগে খেলছে। গত ১২ মাসে তারা অফিসিয়াল ম্যাচে গড়ে ২,৭৭৩ মিনিট ক্লাবের হয়ে মাঠে ছিলেন। বিপরীতে ৯৩ জন প্রশিক্ষিত খেলোয়াড় নিয়ে বার্সার একাডেমি থেকে এগিয়ে আছে বেনফিকা। গড়ে ২,৫৮২ মিনিট মাঠে সময় কাটিয়েছেন পর্তুগিজ ক্লাবটির একাডেমির ফুটবলাররা।
অবশ্য লা মাসিয়ার অবস্থান যেখানেই থাকুক এই একাডেমি যে বার্সার জন্য কতটা আশীর্বাদ সেটা ক্লাবটির বর্তমান কোচ হান্সি ফ্লিক ভালোভাবেই জানেন। স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটির অর্থনৈতিক দুর্দশার মধ্যে লা মাসিয়ান গ্র্যাজুয়েটরা ক্লাবের ত্রাতা হিসেবেই যেন আছে।
বার্সার সবশেষ ম্যাচের দিকে লক্ষ্য করলেই টের পাওয়া যায় নিজেদের একাডেমি থেকে কতটা উপকৃত হচ্ছে তারা। চ্যাম্পিয়নস লিগে অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে শুরুর একাদশে ছিলেন ইয়ামাল, ড্রো ফার্নান্দেজ, লোপেজ, পাও কুবার্সি, আলেজান্দ্রো বালদে, এরিক গার্সিয়া এবং মার্ক কাসাডো, সাতজনই লা মাসিয়া থেকে উঠে আসা তরুণ ফুটবলার। এমনকি ৬-১ গোলে জেতা ম্যাচে চারটি গোলই করেন নিজেদের একাডেমির দুই ফুটবলার লোপেজ ও লামিন। ২২ বছর বয়সী মিডফিল্ডার ক্লাবটির ইতিহাসে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম হ্যাটট্রিক করার ইতিহাস লিখেন।
No posts available.
২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩৬ পিএম

তবে কি অনামিশার রাতের অবসান ঘটল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ভাগ্যে ? ভোরের আলো বুঝি উঁকি দিতে শুরু করেছে বনেদি ক্লাবটির দুয়ারে। হারতে হারতে ক্লান্ত বিধ্বস্ত ক্লাবটি যে টানা তৃতীয় জয়ের দেখা পেল।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এবার ব্রাইটনের বিপক্ষে ৪-২ গোলে জিতেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ম্যাথিউস কুনহা ও কাসেমিরোর গোলের পর ব্রায়ান এমবুয়েমোর জোড়া গোলে দারুণ এক জয় পায় রেড ডেভিলরা। ব্রাইটনের হয়ে ব্যবধান কমানো দুটি গোল করেন ড্যারি ওয়েলব্যাক ও চারালাম্পোস কোস্তুলাস।
সান্ডারল্যান্ড ও লিভারপুলের বিপক্ষে জয়ের পর ব্রাইটনের বিপক্ষে দারুণ এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে চারে উঠে এসেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। নয় ম্যাচে ৫ জয়, এক ড্র ও ৩ হারে রুমেন আমোরিমের দলের অর্জন ১৬ পয়েন্ট। এক ম্যাচ কম খেলে সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে তিনে ম্যানচেস্টার সিটি। ১২ পয়েন্ট নিয়ে ১২ নম্বরে ব্রাইটন।
ঘরের মাঠ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে দুই ব্রাজিলিয়ানের নৈপুণ্যে ২৪ মিনিটে এগিয়ে যায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। কাসেমিরোর পাস থেকে প্রায় ২০ গজ দূর থেকে ডান পায়ের নিচু শটে লক্ষ্যভেদ করেন কুনহা। মিনিট দশেক পরই ব্যবধান দ্বিগুন করে স্বাগতিকরা। এবার গোলদাতার ভূমিকায় কাসেমিরো। লুক শ’ এর অ্যাসিস্ট থেকে বুলেট শট নেন কাসেমিরো। বল ব্রাইটনের মিডফিল্ডার আয়ারির পিঠে লেগে দিক পরিবর্তন করে, তাতে সফরকারী দলের গোলকিপার বার্ট ভারব্রুগেনকে ফাঁকি দিয়ে বল জড়ায় জালে।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে প্রথমার্ধে এগিয়ে থেকে কখনও প্রিমিয়ার লিগ হারের অভিজ্ঞতা নেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। ৩২৬টি ম্যাচের মধ্যে তারা জিতেছে ৩০১ বার, আর ২৫টি ম্যাচ শেষ হয়েছে ড্রয়ে। দুর্দশার মধ্য দিয়ে যাওয়া ক্লাবটি হয়তো এই পরিসংখ্যানেও নির্ভার থাকতে পারছিল না।
৬১ মিনিটে ব্যবধান ৩-০ করেন এমবুয়েমা। বেঞ্জামিন সেস্কোর কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ ড্রিবলিংয়ের পর প্রতিপক্ষের একজনের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে দেন ক্যামেরুনের এই মিডফিল্ডার।
৩-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর সহজ এক জয়ই দেখছিল ইউনাইটডে। তবে ৭৪ মিনিটে ব্যবধান কমানোর পর যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে আরেক গোলে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দেয় ব্রাইটন। শেষ পর্যন্ত যোগ করা সময়ের সপ্তম মিনিটে জোড়া গোল পূর্ণ করে ব্যবধান ৪-২ করেন এমবুয়েলা। কেটে যায় সব শঙ্কা। আর তিন পয়েন্ট অর্জনের স্বত্বি নিয়ে মাঠ ছাড়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

দুই দলের সবশেষ ২২ দেখায় ২০টিতেই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে তো দুই লেগ মিলিয়ে ১০-০ ব্যবধানের জয়ে এই প্রতিপক্ষকে রীতিমতো তুলোধুনো করে ইউরোপ চ্যাম্পিয়নরা। এবার লিগ ওয়ানে ২০২৫-২৬ মৌসুমেও ব্রেস্টের বিপক্ষে হেসেখেলেই জয় পেয়েছে পিএসজি।
প্রতিপক্ষের মাঠে আজ ব্রেস্টের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতেছে পিএসজি। সহজ জয়ের ম্যাচে জোড়া গোল করেন ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের রাইট-ব্যাক আশরাফ হাকিমি। নির্ধারিত সময়ের পর যোগ করা সময়ে শেষ গোলটি আসে দেসিরে দুয়ের নৈপুণ্যে।
এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে এখন পিএসজি। নয় ম্যাচে ৬ জয়, ২ ড্র ও এক হারে ২০ পয়েন্ট অর্জন লুইস এনরিকের দলের। এক ম্যাচ কম খেলে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে মার্শেই। আজ রাতে লেনসের বিপক্ষে জিতলে পিএসজিকে টপকে শীর্ষে চলে যাবে ক্লাবটি। নয় ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ১২ নম্বরে ব্রেস্ট।
ম্যাচের সব সমীক্ষাতেই দাপট ছিল পিএসজির। ৭৫ শতাংশ বল নিজেদের কাছে রেখে ১৮টি শট নিয়ে আটটি লক্ষ্যে রেখেছে তারা। যেখানে মোট আটটি শট নিয়ে মাত্র দু’টি গোলমুখে রাখতে পেরেছে স্বাগতিক ব্রেস্ট।
প্রধামার্ধের ধীরগতি ছিল দুই দলের খেলাতেই। প্রথম গোলটি আসে ২৯তম মিনিটে। দুর্দান্ত এক ভলিতে জালের বাম কোণে বল পাঠান হাকিমি। দশ মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুন করেন মরক্কোর তারকা রাইট-ব্যাক। কাভারাস্কেলিয়ার পাস থেকে বক্সের ভেতর বল পেয়ে দারুণ এক শটে বল জালে জড়ান হাকিমি।
বিরতির পরও কিছুটা নিস্তেজ মনে হচ্ছিল পিএসজির আক্রমণ। তবে কিছুক্ষণ পরই ম্যাচে ব্যবধান কমানোর সুযোগ পায় ব্রেস্ট। স্বাগতিকদের একটি ক্রস পিএসজির বক্সে ক্যাং ইন-লির হাতে লাগে। রেফারির কাছে পেনাল্টির আবেদন জানায় ব্রেস্ট। প্রায় সাত মিনিট ভিএআর চেকের পর পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। তবে ব্যবধান ২-১ করার সুযোগ হাতছাড়া করেন ব্রেস্টের মিডফিল্ডার ডেল কাস্তিয়ো। স্পট কিকটি নিতে দৌড় শুরুর সময় পা পিছলে যায় তাঁর, বল চলে যায় গোলপোস্টের ওপরে।
এরপর আক্রমণের বেগ বাড়ায় পিএসজি। শেষ পর্যন্ত তৃতীয় গোলটিও পেয়ে যায় তারা। বদলি ফরাসি উঙ্গার দেসিরে দুয়ে বেশ কয়েকটি সুযোগ নষ্ট করার পর ব্যবধান ৩-০ করেন। জায়ের-এমেরির দারুণ পাসে থেকে ব্রেস্টের রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন দুয়ে।

২০২৫-২৬ মৌসুমের ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে চমক হয়েই যেন এলো সান্ডারল্যান্ড। চ্যাম্পিয়শিপ থেকে প্রিমিয়ার লিগে উঠে আসা ক্লাবটি আজ হারাল চেলসিকে। ইংলিশ লিগটিতে ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমের পর সেরা শুরু পেল সান্ডারল্যান্ড।
প্রিমিয়ার লিগে আজ শেষ মুহূর্তের গোলে চেলসিকে ২-১ গোলে হারাল সান্ডারল্যান্ড। প্রথমে আর্জেন্টাইন উইঙ্গার আলেক্সান্দ্রো গার্নাচোর গোলে এগিয়ে যায় ব্লুজরা। এরপর উইলসন ইসিডোর গোলের পর নির্ধারিত সময়ের পর যোগ করা সময়ে বদলি নামা চেমসডাইন তালবির গোলে উল্লাসে মেতে ওঠে সান্ডারল্যান্ড।
এই জয়ে আপাতত পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে উঠে এসেছে সান্ডারল্যান্ড। রেজিস লে ব্রিসের ক্লাবটির সংগ্রহ নয় ম্যাচে ৫ জয়, ২ ড্র ও ২ হারে ১৭ পয়েন্ট। বিপরীতে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে উঠে আসার সুযোগ হারাল অ্যাঞ্জো মারেস্কার দল। সমান ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে সাতে নেমে গেল লন্ডনের ক্লাবটি।
ঘরের মাঠ স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে দারুণ শুরুই পেয়েছিল চেলসি। চার মিনিটেই দলকে এগিয়ে দেন ক্লাবের হয়ে প্রথম গোল পাওয়া গার্নাচো। পেদ্রো নেতোর পাস থেকে বাঁ পায়ের দারুণ শটে জাল কাঁপান আর্জেন্টিনার ২১ বছর বয়সী উইঙ্গার।
২২ মিনিটে সমতায় ফিরে সান্ডারল্যান্ড। সফরকারীদের ডিফেন্ডার নর্দি মুকিয়েলি লম্বা থ্রোয়ে চেলসির বক্সে বল পাঠান, এবং বেলার্ড প্রথম স্পর্শটি নেয়। বল পেয়ে যান বার্টেন্ড ত্রাওরে, পোস্টের বাম কোণের নিচে শট নেন তিনি। তবে দিক পরিবর্তনে করলে বল পেয়ে যান ইসিডর, সহজ এক ট্যাপ-ইনে বল জালে পাঠান তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের বেশিরভাগ সময় মনে হচ্ছিল, জয়সূচক গোলের দেখা পাবে না কোনো দলই। তবে যোগ করা সময়ে স্বাগতিক দশর্কদের হৃদয় ভাঙেন তালবি। শেষ মুহূর্তে, খেলার গতির বিপরীতে নিখুঁতভাবে শটে বল জালের নিচের ডান কোণে পাঠান মরক্কোর এই উইঙ্গার। আর তাতেই পিন পতন নিরবতা নেমে আসে ঘরের মাঠে চেলসি সমর্থকদের। আর ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোল পেয়ে আনন্দে ভাসে সান্ডারল্যান্ড।

শুরুতে পিছিয়ে পড়ে ঘুরে দাঁড়াল বসুন্ধরা কিংস। সমতা নিয়ে গেল বিরতিতে। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে লিডও নিল বাংলাদেশের ঘরোয়া লিগের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু এমন ম্যাচেও শেষ পর্যন্ত হার নিয়ে মাঠ ছাড়ল মারিও গোমেজের দল।
শনিবার সন্ধ্যায় এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে গ্রুপ পর্বের প্রথম খেলায় আল সিবের কাছে ২-৩ ব্যবধানে হেরেছে বসুন্ধরা কিংস। বাংলাদেশের ক্লাবটির হয়ে জালের দেখা পান দরিয়েলতন গোমেজ নাসিমেন্তো এবং জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন।
কুয়েতের আল সাবাহ স্টেডিয়ামে কিক অফের পর দ্বিতীয় মিনিটেই গোল পেতে পারত বসুন্ধরা কিংস। সানডের দারুণ কাটব্যাক থেকে দরিয়েলতন গোমেজের স্লাইড লাফিয়ে ফিরিয়ে দেন আল সিবের গোলকিপার।
সপ্তম মিনিটে নাসের আল রাওয়াহির গোলে এগিয়ে যায় আল সিব। বক্সে লং বল পেয়ে বুক থেকে পায়ে নামিয়ে নিখুঁত শটে শ্রাবণের পাস দিয়ে জাল কাঁপান এই ফরোয়ার্ড।
১৭ মিনিটে দরিয়েলতন গোমেজের দুর্বল শট অনায়েসে গ্লাভসবন্দী করেন আল সিব গোলকিপার।
২৫ মিনিটে দরিয়েলতনের সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে বাঁ প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে ওঠেন সানডে। কিন্তু বক্সের অনেকটা দূর থেকে তড়িঘড়ি করে শট নেন। বল যায় পোস্টের উপরে দিয়ে।
প্রথম আধা ঘন্টা পর খেলায় ছন্দ খুজে পায় বসুন্ধরা কিংস। তবে আনন্দের উপলক্ষ আসে বিরতির তিন মিনিট আগে। রাফায়েল আগুস্তর গোলে ১-১ সমতায় ফেরে বাংলাদেশের ক্লাবটি। ম্যাচে পাওয়া প্রথম কর্নার প্রতিপক্ষের রক্ষণ বাঁধায় ফিরে আসলে ফিরতি বলে মাটি কামড়ানো শট নেন সাদ উদ্দিন। গোলমুখের সামনে আগুস্তর পায়ে বল লেগে উপরে ভেসে ওঠে, এরপর সামনে থাকা গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে আলতো টোকায় কাজ সারেন তিনি।
বিরতির পর রাকিবের দৃষ্টিনন্দন গোলে দ্রুতই লিড নেয় বসুন্ধরা কিংস। মাঝ মাঠে দরিয়েলতনের কাছ থেকে বল নিয়ে আল সিব মিডফিল্ডার বালুসিকে কাটান। বক্সের বাইরে থেকে বা পায়ের আড়াআড়ি শটে জালে বল জড়ান। সিবের গোলকিপার আল রাওয়াহি ডান দিকে ঝাঁপিয়ে বলের নাগাল পাননি।
৬০ মিনিটে জাহির আল আগবাঘির গোলে ২-২ সমতা টানে ওমানের ক্লাবটি। ১০ মিনিট পর বদলি হিসেবে ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ও সিনিয়র সোহেল রানাকে মাঠে নামান কোচ মারিও গোমেজ।
৭৭ মিনিটে কিংসের বক্সে ফাহিম, তাজ আর এমানুয়েল টনির সামনে আল বুসাইদির সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে শেষে ভলিতে জালে বল পাঠান আব্দুল আজিজ মুকবালি। ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ওমানের লিগ চ্যাম্পিয়নরা।

ভারতের ফুটবলপ্রেমীদের ভাগ্যটা মন্দই বলতে হয়। কদিন আগেই দেশটিতে সফর করার কথা ছিল পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর। তবে ভারত সফরে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ ২–এ এফসি গোয়ার বিপক্ষে ম্যাচে আল নাসরের সঙ্গী হননি ‘সিআর সেভেন’। তাতে হতাশই হয় ভারতের ফুটবল ভক্তরা। এবার আরও একবার দুঃসংবাদ শুনতে হচ্ছে তাদের।
ভারতে লিওনেল মেসি এবং তার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দল আর্জেন্টিনার বহুল প্রতীক্ষিত প্রীতি ম্যাচটি স্থগিত করা হয়েছে। আগামী ১৭ নভেম্বর কোচিতে জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ম্যাচটি।
ম্যাচটির স্পনসর প্রতিষ্ঠান 'রিপোর্টার ব্রডকাস্টিং কোম্পানি'-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর আন্তো অগাস্টিন সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, এই ম্যাচটি ফিফার পরবর্তী আন্তর্জাতিক সূচিতে অনুষ্ঠিত হবে। কেরালার এই ব্যবসায়ী সামাজিক মাধ্যমে ব্যাখ্যা দেন যে, আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থা (ফিফা) থেকে অনুমতি পেতে বিলম্ব হওয়ায় ম্যাচটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ম্যাচটির স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জানিয়েছেন,
‘ফিফার অনুমতি পেতে বিলম্বের কথা মাথায় রেখে, আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) সঙ্গে আলোচনার পর, ম্যাচটি নভেম্বর উইন্ডো থেকে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আশ্বাস দেন, নতুন তারিখ শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে।
অবশ্য এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছে খোদ এএফএ (আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন)। স্প্যানিশ মিডিয়া আউটলেট 'লা নাসিওন'কে এএফএ-এর একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা কেরালায় যাচ্ছে না।
এএফএ-এর ভাষ্যমতে, ম্যাচ আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণে কেরালা ব্যর্থ হয়েছে এবং সেখানে ‘বারবার চুক্তি লঙ্ঘন’ করা হয়েছে। ওই কর্মকর্তা বলেন,
‘আমরা নভেম্বরে এটি (ম্যাচ) ঘটানোর জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করেছিলাম; একটি প্রতিনিধি দল এমনকি মাঠ, হোটেল দেখতে ভারতে গিয়েছিল... কিন্তু শেষ পর্যন্ত, ভারত প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারেনি। দুর্ভাগ্যবশত, ভারতের পক্ষ থেকে বারবার লঙ্ঘন হয়েছে, এবং আমরা যা করতে যাচ্ছি তা হলো একটি নতুন তারিখ খুঁজে বের করার জন্য চুক্তিটি পুনর্গঠন করা।’
এর আগে কেরালার ক্রীড়ামন্ত্রী এই প্রীতি ম্যাচটির ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই এটি নিয়ে যথেষ্ট বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। এক পর্যায়ে মন্ত্রী নিজেই ম্যাচটি বাতিল বলে ঘোষণা দেন, যদিও পরে আগস্ট মাসে এএফএ নিশ্চিত করে যে তাদের দল কোচিতে খেলবে।
এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে গত কয়েক সপ্তাহের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটল। মেসিদের সফর বাতিলের খবরে ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীরা, বিশেষ করে কেরালার সমর্থকরা ভীষণ হতাশ হয়েছেন। ভারতের ওই অঞ্চলে আর্জেন্টিনা ও মেসির ভক্তসংখ্যাও যে বিপুল।
সর্বশেষ মেসির আর্জেন্টিনা ২০১১ সালে ভারত সফর করেছিল। মেসির দল কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ম্যাচে প্রথমবারের মতো আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নামেন।