৬ মে ২০২৪, ৩:৪৩ পিএম
বিশ্ব জুড়ে ভীষণ জনপ্রিয়তা থাকলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে টেনিস এখনও বেশ পিছিয়ে থাকা এক ইভেন্টের নাম। তবে সম্প্রতি অসাধারণ এক কীর্তিতে টেনিসেই বাংলাদেশের জন্য গর্ব বয়ে এনেছেন মাসফিয়া আফরিন। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশনের (আইটিএফ) ‘হোয়াইট ব্যাজ’ রেফারি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। এর ফলে ভবিষ্যতে গ্র্যান্ড স্ল্যাম ম্যাচ পরিচালনার প্রাথমিক ধাপ সম্পন্ন করেছেন মাসফিয়া।
বাংলাদেশ থেকে সারোয়ার মোস্তফা জয় ২০০০ সালে আইটিএফ হোয়াইট ব্যাজ চেয়ার আম্পায়ারের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। তবে প্রথম ‘হোয়াইট ব্যাজ’ রেফারি হলেন মাসফিয়াই৷ খেলোয়াড়ি জীবনে অনূর্ধ্ব-১০ থেকে অনূর্ধ্ব-১৬ টেনিসে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়া ১৮ বছর বয়সী মাসফিয়া এখন খেলা ছেড়ে পুরোদস্তুর রেফারি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রেফারি হিসেবে এরই মধ্যে তার নামের পাশে রয়েছে দারুণ কিছু অর্জন।
বাবা মোহাম্মদ মাহমুদ আলম টেনিস ফেডারেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার সুবাদে টেনিসের সাথে মাসফিয়ার সখ্যতা ছোটবেলা থেকেই। খেলোয়াড় হিসেবে ক্যারিয়ার না এগিয়ে গেলেও ভিন্ন ভূমিকার দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছেন মাসফিয়া।
টি-স্পোর্টসের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে মাসফিয়া কথা বলেছেন তার খেলোয়াড় থেকে রেফারি হওয়ার পথচলা সহ নানা বিষয় নিয়ে। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হল :
প্রশ্ন : শুরুতেই অভিনন্দন আপনাকে। সম্প্রতি আইটিএফ এর হোয়াইট ব্যাজ রেফারির স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। তবে বাংলাদেশের প্রথম কোন রেফারি হিসেবে আপনি এমন বড় স্বীকৃতি পেলেন। যে কোনো প্রথমের অংশ হওয়াটা দারুণ কিছুই। অনুভূতিটা কেমন?
মাসফিয়া : ধন্যবাদ। আসলেই দারুণ লাগছে। এক বছর ধরে এটার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি আমি। সেটার ফল পাওয়ায় ভালো লাগছে। আর প্রথম সবকিছুই তো স্পেশাল।
প্রশ্ন : দশ বছরের খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারে খেলেছেন অনূর্ধ্ব-১০, অনূর্ধ্ব-১২, অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে। এটাই বলে দেয়, একদম শৈশব থেকেই টেনিসের প্রতি দুর্বলতা ছিল আপনার। শুরুটা কীভাবে হয়েছিল জানতে চাওয়া এই কারণে, ক্রিকেট ফুটবলের জনপ্রিয়তার সবদিক থেকেই টেনিস আছে বেশ পিছিয়ে। সেখানে টেনিসের প্রতি আপনার এই ভালোবাসা কীভাবে হল বা কার মাধ্যমে?
মাসফিয়া : ভালোবাসা ঠিক বলব না। ভালো লাগত টেনিস। ছোটবেলা থেকেই টেনিস খেলি আমি। স্কুলের অনেকে অন্যান্য খেলা খেললেও আমার কাছে টেনিসই বেশি ভালো লাগত। তাছাড়া দেখলাম অন্যান্য খেলার চেয়ে টেনিসে কিছু করার সুযোগটা বেশি আছে। এখান থেকেই আগ্রহের জন্ম। আর আমার বাবা টেনিস ফেডারেশনের কাজ করার সূত্রে টেনিসের সাথে পরিচয় অনেক আগে থেকেই। সেই সমর্থনটা তাই ছিল।
প্রশ্ন : টেনিসে ক্যারিয়ার গড়তে চান, এটা জানার পর পরিবার এবং অন্যান্যদের কাছ থেকে সমর্থন কেমন ছিল? আর একটা হল, এই পেশায় অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কারণে নেতিবাচক মন্তব্য শুনতে হয়েছিল কখনও?
মাসফিয়া : না, আমার সাথে এমন কিছু হয়নি কখনও। পরিবার থেকে সমর্থন পেয়েছি সবসময়।
প্রশ্ন : কাঁধের চোটের কারণে খেলা ছেড়েছিলেন বলে শোনা যায় প্রায়ই। আর এরপরই নাকি রেফারিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখেন। আসলেই কী এমন কিছু হয়েছিল? সেটা হলে চোটের পর যখন জানলেন খেলোয়াড় হিসেবে ক্যারিয়ার শেষ, সেই সময়ে বিষয়টা মেনে নেওয়াটা কতোটা কঠিন ছিল?
মাসফিয়া : প্রথমেই একটা বিষয় ক্লিয়ার করতে চাই। আমি জানিনা এটা কীভাবে ছড়িয়ে পড়েছে চোটে পড়ার পর আমি খেলে ছেড়ে দিয়েছি। এখানে একটা ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। তাছাড়া এটা একটা নেগেটিভ বার্তাও দেয় যে চোটে পড়ার পর রেফারি হতে চেয়েছি। আসলে এমন কিছুই হয়নি। চোটে পড়েছিলাম। এরপর কিছুদিন খেলার বাইরে ছিলাম। ফিরে এসে খেলার সুযোগ ছিল, কিন্তু সেই ইচ্ছাটা আর জাগেনি, তাই খেলোয়াড় হিসেবে সেখানেই ক্যারিয়ারের ইতি।
প্রশ্ন : রেফারি হওয়ার শুরুটা তাহলে কীভাবে হল?
মাসফিয়া : দেখলাম টেনিসের ম্যাচ অফিসিয়েটিং নিয়ে কাজ করার ভালো সুযোগ আছে, তাই এখানে নাম লেখালাম। গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে ন্যাশনাল স্কুল সার্টিফিকেশন প্রথমবার হয়েছিল। অভিজ্ঞতার জন্যই সেখানে অংশ নিয়েছিলাম। একটি পরীক্ষা দিতে হয় এবং এই পরীক্ষায় আমি প্রথম হই। সেখানে রেফারি হিসেবে ছিলেন ভারতের অভিষেক ব্যানার্জি। উনিই আমাকে অনেক উৎসাহ দেন। দুই দিনের কোর্সে ভালো করার পর আমার কাছে মনে হয়েছিল, এটা আমার জন্য ভালো একটা সুযোগ। এরপর হোয়াইট ব্যাজের জন্য কাজ শুরু করি। হোয়াইট ব্যাজের জন্য আইটিএফের কাছে আমার নাম সুপারিশ করেছিলেন অভিষেক ব্যানার্জিই।
প্রশ্ন : গ্র্যান্ড স্ল্যামের ম্যাচ পরিচালনার স্বপ্নের কথা বলেছেন আগে। টেনিসে আপনার প্রিয় খেলোয়াড় কে এবং নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়ের ম্যাচ পরিচালনা করার স্বপ্ন কি লালন করেন?
মাসফিয়া : আমার মনে হয় একজন রেফারি হিসেবে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটা আমার জন্য হয়ত ঠিক হবে না।
প্রশ্ন : সম্প্রতি ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ে সাথিরা জাকির জেসি দারুণ কাজ করছেন। মেয়েদের আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনার পর ছেলেদের ম্যাচে (ডিপিএলে) আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন তিনি। কাছাকাছি সময়ে টেনিসে আপনার এই অর্জন। আম্পায়ার বা রেফারিং পেশায় মেয়েদের এভাবে বেশি বেশি এগিয়ে আসাটা কীভাবে দেখছেন?
মাসফিয়া : খুব ভালো লাগছে। মেয়েরা সব সেক্টরেই এগিয়ে আসছে। আম্পায়ার বা রেফারি হিসেবে মেয়েরা যত এগিয়ে আসবে, ততই ভালো। আমার নিজের জায়গা থেকে সুযোগ হলে অন্যদেরও সাহায্য করার চেষ্টা করব। আমি মনে করি আমাকে দেখে অনেকেই এই পেশায় আসতে আগ্রহী হবে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের পক্ষ থেকে পুরো মিশনে কেমন সমর্থন পেয়েছেন?
মাসফিয়া : আমি আগেও টেনিস ফেডারেশনের সমর্থন পেয়েছি এবং এবারও তারা আমাকে যথাসাধ্য সাহায্য করেছেন এটা পেতে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশে টেনিসের প্রসারের জন্য কী কী করনীয় বলে মনে করেন এবং সম্ভাবনা দেখছেন কতটুকু আগামীতে?
মাসফিয়া : এটা তো জানেনই যে টেনিস খেলাটা একেবারেই ব্যক্তিগত। অন্যান্য খেলার মত এখানে দলগত প্রয়াসটা নেই। তাই এখানে ভালো করার জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগ, পৃষ্ঠপোষকতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এসবের সমন্বয় হলে ভালো কিছু হতেও পারে।
No posts available.
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০১ এম
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৯:৪৮ পিএম
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১:৪৪ পিএম
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৯ পিএম
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৮:০১ পিএম
শৈশব থেকেই খেলাপাগল আবদুস সাদেক একসঙ্গে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে আবাহনীর আবির্ভাবের গল্পেও স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে সাদেকের নাম। নতুন বাংলাদেশে ক্লাব ফুটবল এবং ক্লাব হকি-দুটোতেই একসঙ্গে আকাশী নীল জার্সিধারী আবাহনীর অধিনায়ত্ব করেছেন। এবং এই দুই খেলায় তার নেতৃত্বেই প্রথম লিগ ট্রফি জয়ের উৎসব করেছে আবাহনী। একসঙ্গে তিনটি খেলায় সমান দাপট, নেতৃত্বগুনের পরও হকি'র আবদুস সাদেক নামেই তিনি অধিক পরিচিত। বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা হকি খেলোয়াড় হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত তিনি।
১৯৪৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পুরাতন ঢাকার সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেয়া আবদুস সাদেক কৌশরে পালাক্রমে খেলতেন ফুটবল, হকি, ক্রিকেট। ষাট-এর দশকের গোড়ার দিকের কথা। আব্দুস সাদেক তখন ঢাকার আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এই স্কুলের হকি চর্চা সাদেককে আকৃষ্ট করেছে। স্কুলের মাঠে হকির স্টিকওয়ার্কে সাদেকের পারদর্শিতা দেখে মুগ্ধ শিক্ষকরা তাকে লাহোরে এক মাসের ফিল্ড হকির প্রশিক্ষণে অংশগ্রহনের জন্য মনোনীত করে। তৎকালীন পাকিস্তান স্পোর্টস কন্ট্রোল বোর্ড ১৯৬১ সালের জুন-জুলাই মাসে লাহোর স্টেডিয়ামে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ডের ৬০ জন তরুণ হকি প্রশিক্ষনার্থীর সেই শিবিরে পেয়েছেন সাদেক ইয়েস কার্ড। এর পর শুধু একটার পর একটা ধাপ পেরিয়ে প্রথমে পূর্ব পাকিস্তান, পরবর্তীতে অবিভক্ত পাকিস্তান হকি দলে করেছেন প্রতিনিধিত্ব।
আরও পড়ুন
ফেডারেশন কাপে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন কুর্মিটোলা গলফ ক্লাব ও আর্মি গলফ ক্লাব |
![]() |
১৯৬৪ থেকে ১৯৭০, এই ৭ বছর জাতীয় হকি চ্যাম্পিয়নশিপে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। পূর্ব পাকিস্তান ফিল্ড হকি দলের একমাত্র জয়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর।
১৯৬৭ সালের ১ এপ্রিল করাচিতে পাকিস্তান নৌবাহিনীকে একমাত্র গোলে হারিয়ে দেয় পূর্ব পাকিস্তান, সেই ম্যাচে আবদুস সাদেকের নৈপূণ্য হয়েছে প্রশংসিত। পর দিন পাকিস্তানের প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক দ্য ডন এর ম্যাচ রিপোর্টে ক্রীড়া সাংবাদিক হালিম আহমেদ লিখেছিলেন-'সতের বছর বয়সী সাদেকের মতো পূর্ব পাকিস্তানের একটি সেন্টার-হাফ আছে, পশ্চিম পাকিস্তানের যে কোনো দল আনন্দের সাথে তাতে স্বাগত জানাবে।'
১৯৬৪ থেকে ১৯৬৮, এই ৫ বছরে পূর্ব পাকিস্তান সফরে আসা জাপান, হল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং মালয়েশিয়ার বিপক্ষে পূর্ব পাকিস্তানের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৬৯ সাল আবদুস সাদেকের জন্য টার্নিং পয়েন্ট। সে বছরের মার্চে লাহোরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হকি টুৃর্নামেন্টে পাকিস্তান জুনিয়র দলের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। তার পাঁচ মাস পর পাকিস্তান জাতীয় হকি দলের জার্সি উঠেছে আব্দুস সাদেকের গায়ে।
১৯৬৯ সালের আগস্টে ইউরোপ সফরের জন্য তাকে পাকিস্তান হকি দলে নির্বাচিত করা হয়। ১৯৭০ সালে কেনিয়া সফরে পাকিস্তান হকি দলের সদস্য ছিলেন। পাকিস্তান বিশ্বকাপ স্কোয়াডেও উঠেছে তার নাম। ১৯৭১ সালের হকি বিশ্বকাপে দলের সফরসঙ্গী ছিলেন আবদুস সাদেক।
আরও পড়ুন
এখন সিঁড়ি বেয়ে উঠতেও কষ্ট হয় ‘লাইটনিং’ বোল্টের |
![]() |
স্বাধীনতার পর নতুন উদ্যমে শুরু করেছেন তিনি হকি, ফুটবল। ফুটবলে আবাহনীর সেন্টার ডিফেন্ডার জাতীয় ফুটবল দলে প্রতিনিধিত্ব করতে পারেননি। তবে বাংলাদেশ হকি দলের আন্তর্জাতিক হকির যাত্রা শুরু হয়েছে তার ক্যাপ্টেনসিতে।
১৯৭৮ সালে অনুষ্ঠিত ব্যাংককে এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ হকি দলের আন্তর্জাতিক হকিতে অভিষেক হয়েছে স্বাগতিক থাইল্যান্ডের বিপক্ষে তার নেতৃত্বে। সেই এশিয়া কাপে বাংলাদেশ খেলেছেন ৮ টি ম্যাচ আবদুস সাদেকের নেতৃত্বে। আন্তর্জাতিক হকিতে বাংলাদেশ অভিষেক ম্যাচে ২-২ গোলে ড্র করেছে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই রেকর্ডেও থাকবে অধিনায়ক সাদেকের নাম। স্থান নির্ধারনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়টি আন্তর্জাতিক হকিতে বাংলাদেশের প্রথম জয়। সেই ইতিহাসেও সাদেকের অধিনায়ত্ব হয়ে আছে স্মরণীয়।
হকি নিবেদিতপ্রাণ আব্দুস সাদেক এই খেলাটিতে নিজের পরিচয় বিস্তৃত করেছেন। হকি ক্যারিয়ার শেষ করে বাংলাদেশ হকি দলের ম্যানেজার এবং কোচের ভূমিকায়ও ছিলেন। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ এবং ২০১৫ থেকে ২০১৯, এই দুই মেয়াদে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন। আন্তর্জাতিক হকিতে বাংলাদেশের সেরা পারফরমেন্স এশিয়ান গেমসে ৫ম। ১৯৮২ সালে এশিয়া কাপ হকিতে বাংলাদেশ হকি দলের সেই অর্জনের নেপথ্যে হকি ফেডারেশনের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাদেক।
আরও পড়ুন
৬.৩০ মিটার লাফিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়লেন ডুপ্লান্টিস |
![]() |
খেলাধুলায় অসামাণ্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯৬ সালে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ২০২৩ সালে পেয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার।
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে এই মহীরূহ আজ পা দিচ্ছেন ৮০ বছরে। একসঙ্গে খেলেছেন যাদের সঙ্গে, তাদের অনেকে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে গেছেন। সঙ্গীদের মধ্যে বেঁচে আছেন যারা, তাদের কেউবা অসুস্থ, কেউ হারিয়েছেন স্মৃতি। আব্দুস সাদেক নিজেও নেই সুস্থ। চোখের সামনে ভেসে ওঠা পুরোনো স্মৃতিই তার সম্বল। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম সুপার স্টারদের কাতারে থাকা এই লিজেন্ডারির জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছে ক্রীড়াঙ্গন।
বাংলাদেশ গলফ ফেডারেশনের উদ্যোগে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে নবম ডক্টর ফজলুল হক কলরেকটাল হসপিটাল লিমিটেড (ডিএফসিএইচ) ফেডারেশন কাপ গলফ চ্যাম্পিয়নশীপ-২০২৫ এবং ১ম আন্তঃক্লাব প্রফেশনাল গলফ টুর্নামেন্ট-২০২৫। প্রফেশনাল গলফ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাব। ফেডারেশন কাপে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন কুর্মিটোলা গলফ ক্লাব ও আর্মি গলফ ক্লাব।
এবারের টুর্নামেন্টে অ্যামেচার নারী গলফ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাব এবং জুনিয়র বিভাগে শিরোপা জিতেছে আর্মি গলফ ক্লাব। নবগঠিত অ্যাডহক কমিটির অধীনে এটি বাংলাদেশ গলফ ফেডারেশনের প্রথম বড় টুর্নামেন্ট, যেখানে দেশজুড়ে ১৭টি গলফ ক্লাব থেকে ১৩৩ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া আন্তঃক্লাব প্রফেশনাল গলফ টুর্নামেন্টে অংশ নেন ৪০ জন পেশাদার গলফার।
আরও পড়ুন
এখন সিঁড়ি বেয়ে উঠতেও কষ্ট হয় ‘লাইটনিং’ বোল্টের |
![]() |
বাংলাদেশের গলফ আইকন সিদ্দিকুর রহমান বলেন,
‘‘ফেডারেশনের এ উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। এমন আয়োজনের মাধ্যমে দেশে নতুন গলফ তারকা উঠে আসবে। নিয়মিতভাবে এমন আয়োজন হওয়া দরকার। আমি নতুন কমিটিকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই এবং এ উদ্যোগকে গলফে এক নবজাগরণের প্রতিধ্বনি হিসেবে দেখি।’’
কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে অনুষ্ঠিত জমকালো পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাংলাদেশ গলফ ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট লে. জেনারেল শাহীনুল হক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গলফ ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) এ কে এম আব্দুল্লাহিল বাকী, বাংলাদেশ প্রফেশনাল গলফ অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজিএ) প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) মাসুদ রাজ্জাক ও বাংলাদেশ গলফ ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ।
সময় বড় নিষ্ঠুর। এ এমন এক পথিক, যার গতি থামে না কখনও। আজকের তারুণ্যের উচ্ছ্বাস রূপ নেয় পরিণতির আয়নায় ক্লান্ত এক যাত্রী। বয়স নামক বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়াটা তো অনিবার্য। একসময়ের দৌঁড়ের রাজা উসাইন বোল্টের কথাই ধরুন। যাঁর পায়ের গতি ছিল বজ্রের মতো, আজ নাকি তিনি সিঁড়ি বেয়ে উঠলেও হাঁপিয়ে যান। সময় যেন ঠাট্টা করে বলে, ‘তুমি যত দ্রুতই দৌড়াও, আমাকে পেছনে ফেলতে পারবে না।’
দৌড়কে বিদায় বলেছেন বছর আটেক হলো। আটবারের অলিম্পিক স্বর্ণজয়ী বোল্টএখন বুঝতে পারছেন বাকি দশজনের মতো তিনিও একজন মানুষ। টোকিও বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই কিংবদন্তি স্বীকার করেন, অবসর নেওয়ার পর এখন সিঁড়ি বেয়ে উঠলেও হাঁপিয়ে ওঠতে হয় তাকে।
আরও পড়ুন
৬.৩০ মিটার লাফিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়লেন ডুপ্লান্টিস |
![]() |
‘লাইটনিং’ বোল্ট অবসর জীবন নিয়ে কথা বলার সময় উপস্থিত ছিলেন ‘গার্ডিয়ান’ ‘দ্যা টেলিগ্রাফের’ মতো গণমাধ্যম। এখনও দৌড়ে সময় দেন কিনা এমন প্রশ্নে সর্বকালের সেরা দৌড়বিদ বলেন, ‘না, আমি এখন শুধু জিমে হালকা ব্যায়াম করি। খুব একটা ভালো লাগে না, কিন্তু এখন যেহেতু অনেকদিন ধরে ঠিকঠাকভাবে দৌড়াই না, মনে হচ্ছে আবার দৌড় শুরু করতে হবে। কারণ এখন সিঁড়ি বেয়ে উঠলেই হাঁপ যাচ্ছি।’
বিশ্বের সর্বকালের সেরা স্প্রিন্টার ৩৯ বছর বয়সী জামাইকান তারকা এখনো ১০০ মিটার, ২০০ মিটার এবং ৪x১০০ মিটার রিলের বিশ্ব রেকর্ডের মালিক। অ্যাকিলিস টেন্ডন ছিঁড়ে যাওয়ায় তিনি এখন আর দৌড়ান না বলে জানান । তবে শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক করতে আবারও দৌড়ঝাঁপের কথা ভাবছেন বোল্ট, ‘আমি ভাবছি আবার দৌড়ঝাঁপ শুরু করব, একটু দৌড়ালে শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক হতে পারে।’
২০১৭ সালে পেশাদার দৌড় থেকে অবসর নেন বোল্ট। জাপানে এসে হয়তো জীবনের স্বরণীয় মূহূর্তের কথা মনে উঁকি দিচ্ছে জ্যামাইকান লিজেন্ডকে। ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিকে ২০০ মিটার দৌড়ে ১৯.৩০ সেকেন্ডে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার পর তার উল্লাস ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণক্ষরেই লিখা থাকবে।
বোল্টের বর্তমান জীবন কাটছে সন্তানদের সঙ্গে কিংবা ঘরে শুয়ে বসে টিভি দেখে, ‘সাধারণত সকালে উঠে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানোর সময়টায় জেগে উঠি। তারপর কাজ না থাকলে আরাম করেই দিন কাটাই। কখনো কখনো মুড থাকলে একটু ওয়ার্কআউট করি। টিভি সিরিজ দেখি তারপর বাচ্চারা বাড়ি ফিরলে ওদের সঙ্গে সময় কাটাই।’
আরও পড়ুন
প্রথমবারের মতো হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে স্কুল হ্যান্ডবল |
![]() |
বর্তমান প্রজন্মের দৌড়বিদরা আগের প্রজন্মের মতো পারফর্ম করতে পারছে না কেন এমন প্রশ্নে বোল্ট বলেন,‘আপনি কি আসল উত্তর চান? শুধু এটুকুই বলব, আমরা আগের প্রজন্মটা ছিলাম স্বাভাবিকভাবে বেশি প্রতিভাবান।’ তার মতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারর যেমন স্পাইকসের মতো নতুন ধরনের দৌড়ের জুতা পরও পুরুষ দৌড়বিদরা এখনো পিছিয়ে তবে মেয়েদের পারফরম্যান্সের গ্রাফ যে উপরের দিকেই উঠছে সেটাও জানেন বোল্ট।
জ্যামাইকান মহাতারকা আরেক জ্যামাইকান নারী কিংবদন্তি দৌড়বিদ ‘দেখ, যেমন শেলি-অ্যান ফ্রেজার-প্রাইসেরকে নিয়ে বলেন, ‘শেলি কথাই ধরুন, যার নতুন স্পাইকস আছে, আর সে দ্রুত দৌড়িয়েছে। তাই বলছি, ব্যাপারটা আসলে প্রতিভার। আমরা তখনকার ছেলেরা ছিলাম বেশি প্রতিভাবান। এটা রেকর্ড দেখলেই বোঝা যায়।’
বিশ্ব অ্যাথলেটিস চ্যাম্পিয়নশিপে ৬.৩০ মিটার লাফিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়লেন আর্মান্ড মন্ডো ডুপ্লান্টিস। গত মাসে হাঙ্গেরির বুদাপেস্ট মিটে ৬.২৯ মিটার উচ্চতা টপকেছিলেন সুইডেনের এই পোল ভল্টার। আজ টোকিওতে নিজেরই আগের বিশ্বরেকর্ড ভেঙে দিলেন তিনি। হিসেব বলছে, এ নিয়ে ১৪তম বার বিশ্বরেকর্ড ভাঙলেন ডুপ্লান্টিস।
আরও পড়ুন
প্রথমবারের মতো হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে স্কুল হ্যান্ডবল |
![]() |
ডুপ্লান্টিসের পেছনে থেকে রুপা জেতেন গ্রিসের ইমানৌয়েল কারালিস। তিনি ৬.২৫ মিটার লাফিয়েছেন। ৫.৯৫ মিটার টপকে ব্রোঞ্জ জেতেন কার্টিস মার্শাল।
বিশ্ব রেকর্ড গড়ার আগেই ৬.১৫ মিটার উচ্চতা পেরিয়ে সোনা জয় নিশ্চিত করেন ডুপ্লান্টিস। পরে নিজেই নিজেকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে পাড়ি দেন আরও ১৫ সেন্টিমিটার উচ্চতা। তৃতীয়বারের চেষ্টায় গড়েন নিজের ১৪তম বিশ্ব রেকর্ড।
আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর পল্টনের শহীদ (ক্যাপ্টেন) এম মনসুর আলী স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে ২৯তম স্কুল হ্যান্ডবলের প্লেট পর্ব। ২৩ সেপ্টেম্বর শুরু হবে কাপ পর্ব। এই পর্বে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে অংশ নেবে চারটি স্কুল। এবারই প্রথমবারের মতো হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে হ্যান্ডবলের কোনো ম্যাচ।
প্রতিযোগিতায় বালক ও বালিকা দুই বিভাগে অংশ নেবে ২৬টি স্কুল। এর মধ্যে প্লেট পর্বের বালক বিভাগে চার গ্রুপে অংশ নেবে ১৬টি দল। প্লেট গ্রুপের ফাইনাল ২২ সেপ্টেম্বর।
আরও পড়ুন
বিশ্ব অ্যাথলেটিকসে হিটে সবার শেষে হার্ডলার রনি |
![]() |
কাপ পর্বে সরাসরি খেলবে ৬টি দল। এর মধ্যে ছেলেদের বিভাগে খেলবে সানিডেল, সেন্ট গ্রেগরি ও নারিন্দা উচ্চবিদ্যালয়। মেয়েদের বিভাগে খেলবে সানিডেল, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও শহীদ আনোয়ার গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এই তিনটি দল ছিল গত আসরের চ্যাম্পিয়ন, রানার্স আপ ও তৃতীয়।
স্কুল হ্যান্ডবল উপলক্ষ্যে সোমবার ফেডারেশনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় সংবাদ সম্মেলন। উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন আহমেদ।