
সকালের দিকে এসেছিল দুঃসংবাদটি। তবে বেলা গড়ানোর সাথে সাথে এসেছে ভালো খবর। বিকেএসপিতে বসুন্ধরা ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের (ডিপিএল) ম্যাচ খেলতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া তামিম ইকবালের শারীরিক অবস্থা এখন উন্নতির দিকে।
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এবং শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের মধ্যকার ম্যাচের টসের পর বুকে হালকা ব্যথা অনুভব অনুভব করেন তামিম৷ এরপর ফিল্ডিংয়ের সময় আবারও বুকে ব্যথা অনুভব করলে সাথে সাথেই মাঠ ছাড়েন অভিজ্ঞ এই ওপেনার।
তামিমের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় দ্রুত একটি হেলিকপ্টারও আনা হয় বিকেএসপিতে, যাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যাওয়া যায়। তবে ডাক্তাররা জানান, হেলিকপ্টার ভ্রমণে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে।
এরপর দেরি না করে বিকেএসপির নিকটস্থ কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে ভর্তি করা হয় তামিমকে।
হাসপাতালের সূত্রের বরাত দিয়ে বিসিবির মেডিকেল বিভাগের প্রধান দেবাশিষ চৌধুরী নিশ্চিত করেন, তামিমের দুই বার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল এবং তার অবস্থা এখন উন্নতির দিকে।
তামিমের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এডমিন প্যানেল থেকে একটি দীর্ঘ পোস্টে তুলে ধরা হয়েছে পুরো ঘটনাটি।
“সকালে টসের পর হালকা বুকে ব্যথা অনুভব করলে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড় (তামিম ইকবাল) বিষয়টি দ্রুত দলের ফিজিও ও ট্রেইনারকে জানান। প্রাথমিকভাবে গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা মনে হওয়ায় তিনি গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ গ্রহণ করেন। তবে কিছুক্ষণ পরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সতর্কতার অংশ হিসেবে নিকটতম হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং চিকিৎসা শেষে তিনি বিকেএসপিতে ফিরে আসেন।”
“এরপর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা হয়। দলের ম্যানেজার শিপন ভাইয়ের সঙ্গে আলোচনা করে হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা সম্ভব হয়। তবে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়লে তাকে ফের নিকটতম কেপিজে হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে নেওয়া হয়। সেখানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত এনজিওগ্রাম করা হয় এবং রিং পরানো হয়। বর্তমানে তিনি কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।”
তামিমের অসুস্থতার খবরে বিসিবি শেষ মূহুর্তে বাতিল করেছে পূর্ব ঘোষিত বোর্ড মিটিং। দুপুরে ১২টায় এটি হওয়ার কথা ছিল। সেটা না হওয়ায় তামিমকের দেখতে বিসিবি পরিচালক সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা ছুটে গেছেন হাসপাতালে।
সেখানে পৌঁছে গেছেন তামিমের পরিবারের সদস্যরাও, যেখানে আছেন তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা, বড় ভাই ও সাবেক ক্রিকেটার নাফিস ইকবালরা।
No posts available.
২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪৮ পিএম

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচ হেরে ইতিমধ্যে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খুইয়েছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে আজ ১৫০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৩৫ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ১৪ রানের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে ক্যারিবীয়রা।
এখন সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য হোয়াইটওয়াশ, আর বাংলাদেশের লক্ষ্য মান রক্ষা। আগামী শুক্রবারের সেই ম্যাচে কোনো পরিবর্তন আনেনি টিম ম্যানেজমেন্ট — অপরিবর্তিত স্কোয়াড নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাশে।
বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দল:
লিটন কুমার দাস (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন ইমন, সাইফ হাসান, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী, শামীম হোসেন, কাজী নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম।

এইস স্পোর্টস নেটওয়ার্কের উদ্যোগে আজ থেকে শুরু হয়েছে ‘স্বপ্নযাত্রা ট্যালেন্ট হান্ট’ আবাসিক ক্যাম্প। পাঁচ দিনের এ ক্যাম্পে ট্রায়াল থেকে বাছাই হওয়া ৩৫ জন তরুণ উদীয়মান ক্রিকেটার ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং, গেম অ্যাওয়ারনেস ও ফিটনেস—এই পাঁচ বিভাগে বিশেষজ্ঞ কোচদের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ নেবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি গেম ডেভেলপমেন্টের কোচ হান্নান সরকার, বসুন্ধরা স্পোর্টস নেটওয়ার্কের হেড কোচ আখিনুর রহমান রুশো এবং ধানমন্ডি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান অলোকসহ আরও অনেকে।
‘স্বপ্নযাত্রা ট্রায়াল’-এ এর আগে সারাদেশ থেকে সাত হাজারের বেশি ভিডিও আবেদন জমা পড়ে। বিশেষজ্ঞদের যাচাই–বাছাই শেষে চার শতাধিক প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে ঢাকার ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব মাঠে দুই দিনের সরাসরি ট্রায়ালে ডাকা হয়। ট্রায়ালে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা। এইস স্পোর্টস নেটওয়ার্কের সহযোগী ১৩টি ক্লাবের কোচ ও কর্মকর্তারাও অংশ নেন এবং বিভিন্ন ড্রিলের মাধ্যমে ক্রিকেটারদের দক্ষতা ও সম্ভাবনা পর্যবেক্ষণ করেন।
ইতোমধ্যে ঢাকার বিভিন্ন ক্লাব নির্বাচিত ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সে আগ্রহ দেখিয়েছে। ক্যাম্প শেষে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে তাদের জন্য ক্লাব প্লেসমেন্টের সুযোগ তৈরি হতে পারে, যা তরুণ প্রতিভাদের সরাসরি ঢাকার ক্লাব পর্যায়ে খেলার দরজা খুলে দেবে।

গত বছরের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে স্বাগতিক দলকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইট ওয়াশের সুখস্মৃতি থেকে টনিক নিতে পারেনি বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে টি-টোয়েন্টির সাম্প্রতিক রেকর্ডও উদ্দীপ্ত করতে পারেনি লিটনের দলকে। দ্বি-পাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজে টানা ৪ জয়ে থামতে হলো বাংলাদেশ দলকে। ১০ মাস আগে নিজেদের মাটিতে হোয়াইট ওয়াশের বদলা বাংলাদেশ সফরে নিয়েছে। ২-০-তে এগিয়ে ট্রফি নিশ্চিত করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এবার ড্যারেন স্যামীর শিষ্যদের মিশন মধুর প্রতিশোধ, হোয়াইট ওয়াশের বদলা হোয়াইট ওয়াশ।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১৬ রানে হেরে যাওয়ায় আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে ব্যাটারদের। সেই ম্যাচে ১৬৬ রান তাড়া করতে এসে এই হার-কে না হয় কোনোভাবে মেনে নিলেন, কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচের টার্গেট ১৫০ তো মামুলিই। এই টার্গেট তাড়া করে ১৪ রানে হার! এমন হারের কী অজুহাত দিবে টিম ম্যানেজমেন্ট ?
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে ডট বল এবং ছক্কার সংখ্যায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেখানে ডট করেছে ৪৪টি বল, সেখানে বাংলাদেশের ইনিংসে ডট সংখ্যা ৫০ টি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটারদের ছক্কার সংখ্যা যেখানে ৬টি, সেখানে বাংলাদেশ ব্যাটাররা সর্বসাকূল্যে ছক্কা মেরেছে ৩টি। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে'র প্রথম ৬ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর যেখানে ৫০/১, সেখানে অতি সাবধানী ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের স্কোর ৩৭/১।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আথানেজ-হোপের ৫৯ বলে ১০৫ রানও গড়ে দিয়েছে ব্যবধান। যেখানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি ছিল দ্বিতীয় উইকেটে লিটন-তানজিদ হাসান তামিমের ২৩ বলে ৩৫।
মিরপুরের কালো মাটির পিচ থেকে চট্টগ্রামে বাদামী রঙের পিচ। সেই পিচের উপরের স্তরটা আবার আংশি সবুজাভ। তবে এমন চেহারার পিচই প্রতারণা করেছে স্বাগতিক দলের সাথে। শুরুতে এই পিচে ব্যাটে ঠিকঠাকমতো বল এসেছে, পেয়েছে ইভেন বাউন্স। ১০ ওভার পর্যন্ত পিচ এমন আচরণই করেছে। তবে এর পর থেকে ট্রিপিক্যাল বাংলাদেশী উইকেট! বলে ধরেছে টার্ন, বল পড়ে লো হয়েছে।
ইনিংসের ৪র্থ ওভারে হোল্ডারের এক্সটা বাউন্সে পুল করতে যেয়ে ওপেনার সাইফ হাসান দিয়েছেন এক্সট্রা কভারে ক্যাচ (১০ বলে ৫)। দলের স্কোর যখন আনলাতি থারটিন, তখন তার বিদায়ের পর কিন্তু পর পর তিনটি মাঝারিমানের পার্টনারশিপ হয়েছে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ২৩ বলে ৩৫, তৃতীয় উইকেট জুটিতে ২৮ বলে ৩৭, ৪র্থ উইকেট জুটিতে ৩০ বলে ৩২। ভাল খেলতে খেলতে অধিনায়ক লিটন আকিল হুসেইনকে ফ্রন্ট ফুটে খেলতে যেয়ে হয়েছেন বোল্ড (১৭ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৩)। শেফার্ডের বলে হৃদয়কে (১৪ বলে ১২) দারুণ এক রানিং ক্যাচে (১৪ বলে ১২)।
১০ ওভার পর্যন্ত পিচের ফেভার নিয়ে উইন্ডিজ ব্যাটাররা যেভাবে স্বাচ্ছন্দে ব্যাট করেছে, ওই সময় পর্যন্ত স্কোর ৯৪/১, তাতে দুইশ পর্যন্ত স্কোর টেনে নেয়ার স্বপ্নই দেখেছে সফরকারীরা। তবে শেষ ১০ ওভারে নাসুম-মোস্তাফিজ-রিশাদ-তানজিম হাসান সাকিবের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৪ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান যোগ করতে পেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এই ম্যাচে একটা জায়গায় মিল খুঁজে পাওয়া যাবে। ১৩তম ওভার থেকে ২০তম ওভার। এই ৮ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৭ রান যোগ করে হারিয়েছে ৫ উইকেট। সেখানে একই সময়ে বাংলাদেশ ৫০ রানে হারিয়েছে ৬ উইকেট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে ডেথ ওভারে মোস্তাফিজের স্পেলটা (২-০-১১-২) ছিল এক কথায় অসাধারণ। টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বাধিক ডট বলের রেকর্ড করা মোস্তাফিজ এদিন ৩ উইকেটের ইনিংসে (৪-০-২১-৩) ডট দিয়েছেন ১২টি। প্রথম ওভারে মার খেয়ে (১-০-১৫-০) লেগ স্পিনার রিশাদ দারুণভাবে ফিরেছেন দ্বিতীয় স্পেলে ( ২-০-৫-২)।
এই দুই বোলারের পাশে বাঁ হাতি স্পিনার নাসুমের শেষ ওভারে ৩ রানে ২ উইকেটও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পর্যাপ্ত পুঁজির পথে বাধার সৃষ্টি করেছে। নাসুম-মোস্তাফিজ পর পর দুই ডেলিভারিতে ২টি করে উইকেট শিকারে হ্যাটট্রিকের স্বপ্ন ও দেখিয়েছেন।
তবে ৪৮ বলে ৬০ রানের টার্গেট যখন পাড়ি দেয়া দুরূহ মনে করেনি দর্শকরা, তখনই দর্শকদের সাগরিকায় ডুবে মরেছে ব্যাটাররা। শেষ ৫০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের এই তিন বোলারের অর্জন ম্লান করেছে ব্যাটাররা।
ঢাল তলোয়ারহীন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম একাই লড়েছেন। বাংলাদেশের ইনিংসে তিনটি ছক্কার তিনটিই মেরেছেন তিনি। ৩৮ বলে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৯ম ফিফটি পূর্ণ করে শেফার্ডের সেকেন্ড স্পেলের প্রথম বলের গতি আন্দাজ করতে পারেননি তামিম। শেফার্ডের শ্লোয়ারে অফ সাইডে খেলতে যেয়ে ব্যাটে মিডলিং হয়নি। ডিপ পয়েন্টে দিয়েছেন ক্যাচ (৪৮ বলে ৩ চার, ৩ ছক্কায় ৬১)। ওই ওভারের চতুর্থ বলে জাকের আলী অনিক (১৮ বলে ১৭) পুল করতে যেয়ে ডিপ মিড উইকেটে দিয়েছেন ক্যাচ। ওখানেই সিরিজে ফেরার স্বপ্নের সমাধি হয়েছে বাংলাদেশের। ১৮তম ওভারে শেফার্ডের ২ উইকেট (১-০-৭-২) ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।
৪৮ ঘন্টা আগে শেষ পাওয়ার প্লে'র ৩০ বলে হোপ-রোভমন পাওয়েল ঝড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিনা উইকেটে যোগ করেছে ৬৪ রান। সেখানে বুধবার রাতে বাংলাদেশের টার্গেট ছিল শেষ ৫ ওভারে ৫০। অথচ, ওভারপ্রতি ১০ রানের এই টার্গেট অনতিক্রমযোগ্য করেছে মিডল অর্ডার এবং লোয়ার অর্ডাররা।
উইন্ডিজ এই পেসারের কাছে (৪-০-২৯-২) হেরেছে বাংলাদেশ। তবে ম্যাচের পার্শ্ব অভিনেতার তালিকায় কিন্তু রাখতে হবে উইন্ডিজ টপ অর্ডার অ্যাথানেজ (৩৩ বলে ৫ চার, ৩ ছক্কায় ৫২)- অধিনায়ক সাই হোপ (৩৬ বলে ৩ চার, ৩ ছক্বায় ৫৫), উইন্ডিজ অভিজ্ঞ পেসার জেসন হোল্ডার (৪-০-২০-২) এবং বাঁ হাতি স্পিনার আকিল হুসেইনকে (৪-০-২২-৩)।
এ বছরে যে দলটি নেপালের মতো আইসিসির সহযোগী দলের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছে ১-২-এ। বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অবতীর্ন হওয়ার আগে এ বছর সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ ম্যাচে জয়ের দেখা পেয়েছে যারা মাত্র ৩টি, সেই দলটির কাছেই কিনা হারতে হলো টি-টোয়েন্টি সিরিজ।

টেস্টে বড় ব্যবধানে হারের পর টি-টোয়েন্টিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে আফগানিস্তান। আজমাতুল্লাহ ওমরজাইয়ের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে ৫৩ রানে হারিয়েছে আফগানরা।
হারারে স্পোর্টস ক্লাবে আজ টস জিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮০ রান তোলে আফগানিস্তান। ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান করেন ৫২ এবং রহমনউল্লাহ গুরবাজ ৩৯ রান। শেষ দিকে আজমাতুল্লাহ ওমরজাইয়ের ২৭ ও শহিদুল্লাহ কামালের ২২ রানের ক্যামিওতে ১৮০ রানের পুঁজি পায় রশিদ খানের দল।
জিম্বাবুয়ের হয়ে বল হাতে সফল সিকান্দার রাজা, ৪ ওভারে ২০ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন এই স্পিন অলরাউন্ডার।
১৮১ রানের লক্ষ্যে তাড়ায় নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মুজিব উর রহমান টানা দুই বলে উইকেট নেন। ফিরিয়ে দেন দুই ওপেনার তাদিওয়ানশে মারুমানি ও ব্রেন্ডন টেলরকে। পরের ওভারে ওমরজাই জোড়া উইকেট নেন। ৩০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে স্বাগতিকরা।
শেষ দিকে ব্র্যাড ইভান্স ২৪ ও টিনোটেন্ডা মাপোসা ৩২ রান করে ব্যাবধান কমান। ১৬.১ ওভারে ১২৭ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। মুজিব তিন ওভারে ২০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন এবং ওমরজাই ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচসেরা হয়েছেন ওমরজাই।
একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৩১ অক্টোবর মুখোমুখি হবে দুই দল।

প্রতিশোধ বোধ হয় একেই বলে। নারী বিশ্বকাপে প্রথম দেখায় দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েদের ১০ উইকেটে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। সেমিফাইনালের লড়াইয়ে তা কড়ায় গন্ডায় বুঝিয়ে দিলেন লরা উলভার্টরা। ন্যাট স্কাইভার-ব্রান্টদের বিপক্ষে ১২৫ রানে জিতে প্রথম দল হিসেবে ফাইনালের টিকিট কাটল প্রোটিয়া মেয়েরা।
নারী ও পুরুষ ক্রিকেট মিলিয়েই এই প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল দক্ষিণ আফ্রিকা। সব মিলিয়ে এর আগে ৮টি সেমি-ফাইনাল খেলেও ফাইনালে উঠতে পারেনি তারা।
ভারতের গুয়াহাটিতে আজ টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে লরার ১৬৯ রানের ওপর ভর করে ৩১৯ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এই রান তাড়া করতে নেমে ৪২.৩ ওভারে সবগুলো উইকেট খুইয়ে বসে ইংলিশ মেয়েরা। এ সময় সাবেক চ্যাম্পিয়নরা তুলতে পারে কেবল ১৯৪ রান। ১২৫ রানের জয় ওয়ানডে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
এদিন তাজমিন ব্রিটসকে নিয়ে ওপেনিংয়ে নামেন লরা। দুজনের ওপেনিং জুটি ভাঙে দলীয় শতক (১১৬) রান পার হলে। ব্রিটস ৪৫ রানে আউট হলে অ্যানেকে বোশ ও সুনে লুস ফেরেন অল্পতে। তবে ব্যাটকে তরবারি বানিয়ে সমানতালে যুদ্ধ চালিয়ে যান লরা।
চতুর্থ জুটিতে ক্যাপের সঙ্গী করে দলকে বিপদমুক্ত করেন লরা। নিজেও তুলে নেন ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি। শেষদিকেও ভাঙা-গড়া লক্ষ্য করা যায়। একপ্রান্ত আগলে দলীয় ২৯১ রান পর্যন্ত টিকে থাকেন প্রোটিয়া ওপেনার। তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬৯ রান। বেলের বলে ক্যাচ আউট হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে ২০টি চার ও ৪টি ছক্কা হাঁকান এই ডান হাতি ব্যাটার। তার ব্যাটে ভর করে ইংল্যান্ডকে ৩২০ রানের লক্ষ্য দিতে পারে প্রোটিয়ারা।
ইংল্যান্ডের হয়ে সোফি একলস্টোন সর্বোচ্চ চারটি উইকেট তোলেন।
জবাব দিতে নেমে রীতিমতো তাসের ঘরে পরিণত হয় ইংল্যান্ড। আয়াবোঙ্গা খাকা ও ম্যারিজান ক্যাপের তোপে দলীয় এক রান তুলতেই তিনটি উইকেট হারিয়ে বসে ইংলিশরা। টপঅর্ডারের তিন ব্যাটার-অ্যামি- ট্যামি বোমন্ট ও হিদার ডাক মেরে ফেরেন।
বিপর্যস্ত দলের আশা দেখান অধিনায়ক ন্যাট স্কাইভার- অ্যালিস ক্যাপসি। দুজন শতোর্ধ্ব জুটি গড়েন। ব্যক্তিগত অর্ধশতক করে অ্যালিস ফিরলে তাদের জুটি ভাঙে। এরপর ড্যানি ওয়ায়াট-হজকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখেন ইংলিশ অধিনায়ক। এ জুটিও ৩০ রান পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। এবার ফাটল ধরে ন্যাট স্কাইভারের কারণে।
ইংলিশ অধিনায়ককে ফেরেন ৬৪ রানে। ৭৬ বল মোকাবিলা করেন তিনি। যাতে ছিল ১ ছক্কা ও ৪টি বাউন্ডারি। ন্যাট স্কাইভার ফেরেন দলীয় ১৩৮ রানে। ইংল্যান্ড থামে ১৯৪ রানে। এ ৬০ রান যোগ করতে গিয়ে ৬ ক্রিকেটার সাজঘ রমুখো হন।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট ছিল ক্যাপের। ৫টি উইকেট শিকার করেন এ পেসার। তিনি এখন ওয়ানডে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। ২৮ ইনিংসে ৪৫টি উইকেট তুলেছেন লরা।