বোলিংয়ে সিদ্ধহস্ত, ব্যাটিংয়েও কম পটু নন তানজিম হাসান সাকিব। গতির ঝড়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে ‘ক্যামিও ইনিংস’ উপহার-তাতেই তানজিম হয়ে ওঠেছেন জাতীয় দলের অটো চয়েজ। এশিয়া কাপে লাল-সবুজ দলের বোলিং লাইনআপে মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের আরেক সঙ্গী কে হবেন, এ প্রশ্নের সমুচিত এবং সত্য সুন্দর উত্তর তানজিম। শরিফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে পার্শ্বচরিত্রে রেখে তিনিই হয়ে ওঠেছেন নায়ক।
এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে সুযোগ পেয়ে নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন তানজিম। ২২ বর্ষী ডানহাতি এই পেসার কোটার সবগুলো ওভার করে তুলে নিয়েছেন ২ উইকেট। খরচ করেছেন ২১ রান। যা (ইনিংস) দেশের বোলারদের মধ্যে সর্বনিম্ন। অথচ আবুধাবির শেখ আবু জায়েদ স্টেডিয়ামে এর আগে কখনো মাঠে নামেননি তানজিম।
পরিস্থিতি প্রতিকূলে থাকলেও দ্রুত পড়ে ফেলতে পারার কারণে সফল তানজিম। ম্যাচ শেষে টি-স্পোটর্সের প্রতিবেদক রাহুল রয়ের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে বিষয়টি।
আরও পড়ুন
‘মধুচন্দ্রিমা’ পর্ব শেষ হৃদয়ের |
![]() |
শেখ আবু জায়েদ স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়ে তানজিমের বিশ্লেষণ,
‘‘উইকেটে লাইট ঘাস ছিল। সচরাচর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের উইকেটে খুব একটা ঘাস পাওয়া যায় না। প্রথম বল করার পর দেখলাম সিমে বাউন্স আছে। তখন টার্গেট করি এই উইকেটে পেস ব্যবহার করার এবং সিম কাজে লাগিয়ে বাউন্স ধরানোর। সে সঙ্গে নতুন বলে মুভমেন্ট করানোর।’’
হংকংয়ের বিপক্ষে সাত উইকেটে জয়। এ জয়ে স্বস্তি আছে। শঙ্কা তৈরি হলেও ব্যাটাররা সেটি টপকে গেছেন। বাংলাদেশের পরবর্তী লক্ষ্য শ্রীলঙ্কা। লঙ্কানদের বিপক্ষে জিতলে সুপার ফোরে এক পা দিয়ে রাখবে লিটন দাসরা। হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচের ন্যায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও ভালো পারফর্মের প্রত্যয়ী তানজিমের।
‘‘আমি ভালো খেললে দল লাভবান হবে। বিশেষ করে একটা টুর্নামেন্টে যদি ভালো খেলি সেক্ষেত্রে দল আরও বেশি লাভবান হবে। আমি মনে করি, একটা টুর্নামেন্ট ভালো করতে হলে এবং যেকোনো ম্যাচ জিততে প্রত্যেক বোলারের পারফর্ম করা উচিত। আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ নিজের ফর্ম ধরে রাখার ব্যাপারে। সবসময় দলের জন্য খেলতে চাই, টিম যেটা চায় সেটা শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করবো। টিমের জন্য হলেও ভালো খেলতে হবে।’’
বর্তমান সময়ে শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। হংকংয়ের বিপক্ষে সহজ এলেও লঙ্কানদের বিপক্ষে লড়াই জমে উঠবে এটা নিশ্চিত। যদিও সম্প্রতি শ্রীলঙ্কাকে তাদের মাটিতে হারিয়ে এসেছে লিটনরা। তাই কিছুটা ভারমুক্ত থাকা যায় টাইগারদের। যদিও তানজিদ বলছেন, তার এবং দলের কাছে প্রতিটি দলই গুরুত্বপূর্ণ।
‘‘ শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান ও হংকং-প্রত্যেকটা ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি আমরা শ্রীলঙ্কার সঙ্গে খেলেছি। দলটির সবাই পরিচিত। আসলে আমাদের জেতার জন্যই খেলা উচিত। আর কোনো অপশন নেই।’’
জাতীয় দলের হয়ে ডেথ ওভার দুই ওভার করেন মুস্তাফিজুর রহমান। বাকি দুই ওভার নিয়ে খানিকটা হ্যাপা পোহাতে হয় ক্যাপ্টেনকে। এ নিয়ে তানজিদের ব্যাখ্যা একটু ভিন্ন।
আরও পড়ুন
রানরেট নিয়ে বিচলিত নন হৃদয় |
![]() |
‘‘সবশেষ যখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলি তখন ডেথ ওভারে আমি, মুস্তাফিজ ও তাসকিন ভাই মিলেই করি। ওইরকম পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে না। দেখা যাক কি হয়।’’
লিটন দাস যেটা বলেছেন, একই আশা-উচ্চাশা ব্যক্ত করেছেন তানজিদ। বাংলাদেশ দল একটা টার্গেট সেট করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পা রেখেছে।
‘‘আমরা আমাদের টার্গেট নিয়েই এখানে (সংযুক্ত আরব আমিরাত) আসছি। টুর্নামেন্ট জেতাটাই মূল লক্ষ্য। একটা স্টেপ গেল, আরেকটা স্টেপ শ্রীলঙ্কা। আমরা স্টেপ বাই স্টেপ এগোতে চাই।’’
No posts available.
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫:৪৩ পিএম
কোচ-ক্রিকেটাররাই বলেন, টি-টোয়েন্টিতে ছোট-বড় দল বলে কিছু নেই। উপেক্ষা করার জো তো নেই-ই। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে জায়ান্ট কিলিংয়ের ঘটনা অহরহ। তীরে এসে তরি ডোবানো, অখ্যাত কোনো ক্রিকেটার ম্যাচের গতিপথ বদলে দেওয়ার ঘটনা এখানে একটু বেশিই দৃশ্যমান। যে কারণে কুড়ি ওভারের সংস্করণে খেলার ফল নিয়ে অগ্রীম বাজি ধরাও বেশ জটিল। তারপরও সম্প্রতি সময়ের পারফরম্যান্স ও দুই দলের শক্তি-দুর্বলতা বিবেচনা করে হয়তো মন্তব্য করা যায়।
এশিয়া কাপে কাল বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ। এটি এখন আর সাধারণ লড়াইয়ের তালিকায় ফেলা যায় না। দুই দলের ক্রিকেটীয় সম্পর্কের ইতিহাস রোমাঞ্চে ভরা। গত এক দশক ধরে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। তবে কাল দুবাইয়ে মনস্তাত্বিক শক্তি ছাড়াও আরও তিন কারণে লঙ্কানদের চেয়ে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। সম্প্রতি দুই দলের মুখোমুখি লড়াই, এশিয়া কাপে টাইগারদের উড়ন্ত শুরু এবং আসরে শ্রীলঙ্কার প্রথম মাঠে নামার অপেক্ষা।
আরও পড়ুন
খোঁচা দেওয়া অশ্বিনকে ইয়র্কার ছুড়লেন সাকিব |
![]() |
এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত মাঠে নামা হয়নি চরিত আসালাঙ্কাদের। বিপরীতে প্রথম ম্যাচে হংকংকে হারিয়ে অভিযান দারুণ শুরু করেছেন লিটন দাসরা। গতকাল প্রতিপক্ষকে অল্পতে আটকাতে না পারলেও লিটন-হৃদয়দের কার্যক ইনিংসের সৌজন্যে সহজ জয় পায় বাংলাদেশ। ফলে চাপমুক্ত থেকেই আজ লঙ্কানদের বিপক্ষে লড়বে তারা।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখার আরও একটি কারণ আছে ! সম্প্রকি দুই দলের মুখোমুখি পরিসংখ্যান। সব মিলিয়েটি-টোয়েন্টিতে ২০ বারের দেখায় জয়ের পাল্লা শ্রীলঙ্কার ভারী। তারা জিতেছে ১২ ম্যাচে, বাংলাদেশ ৮ ম্যাচে। তবে শেষটা আসালাঙ্কাদের বিপক্ষে। গত জুলাইয়ে লঙ্কানদের তাদের মাঠে হারিয়ে ফেরেন লিটনরা। সেই আত্মবিশ্বাস কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে নিজেদের মাঠে পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দাপট দেখিয়ে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপেও সেই ছন্দ ধরে রেখেছে তারা।
আরও পড়ুন
‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জেতার জন্যই মাঠে নামব’ |
![]() |
টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের সবশেষ দুই জয় ছিল বেশ চোখজুড়ানো। পাল্লেকেলেতে সাত উইকেটে হারের পর ডাম্বুলা ও প্রেমাদাসায় ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রথমবার স্বাগতিকদের মাঠে এই সংস্করণে সিরিজ জয়। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ হারের পর- যা তাদের সুপথে ফেরাতে সহায়তা করে। বিশেষ করে লিটন-হৃদয় লঙ্কা-স্মৃতি জাগিয়ে তোলার মোক্ষম সুযোগ পাচ্ছেন কাল আবারও।
সবশেষ শ্রীলঙ্কা সফরে দুর্দান্ত দুটি ইনিংস খেলেছেন লিটন। সিরিজের প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ হওয়ার পর ৭৬ ও ৩২ রানের ইনিংস খেলেন দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে। সেই ছন্দ ধরে রেখেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। নিজের শেষ চার টি-টোয়েন্টিতে করেছেন তিনটি ফিফটি। হংকংয়ের বিপক্ষে তাওহীদ হৃদয়ের কচ্ছপ গতির ব্যাটিং নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। দলে নিজের অবস্থান থিতু করার হয়তো আরেকটি সুযোগ পাবেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার।
আরও পড়ুন
র্যাঙ্কিংয়ের ৩০ নম্বর বোলারকে বিশ্বসেরা বলছেন পাকিস্তান কোচ |
![]() |
দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন ধারাবাহিক ছিলেন লঙ্কা সিরিজে। বিশেষ করে ইমন ৬৭, ২৮ ও ৩৮ রান করেছেন তিন ইনিংসে। তানজিদের অপেক্ষায় রানে ফেরার। আস্থার জায়গা বোলিংয়েও আছে উন্নতির সুযোগ।
তবে মাঠে নামার আগে এসব অতীত পরিসংখ্যান বা দ্বৈরথ নিয়ে ভাবতে চান না তানজিম হাসান সাকিব। প্রতিপক্ষ যারাই হোক জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামবেন বললেন এই তরুণ পেসার,
‘আমাদের অ্যাপ্রোচ একবারে সোজাসাপ্টা, আমরা জেতার জন্যই মাঠে যাব। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমরা সিরিজ জিতেছি, এটা আমাদের আত্মবিশ্বাস দেবে। দ্বৈরথ আসলে থাকবেই। একটা টুর্নামেন্টে আপনি যে দলের বিপক্ষেই খেলেন না কেন জেতাটা মূখ্য বিষয়। এটা হোক শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, হোক ভারত-পাকিস্তান। সুতরাং আমরা মাঠে জেতার জন্যই মাঠে নামব। । দ্বৈরথ—আমার কাছে এগুলো কোনো কিছু মুখ্য বিষয় না। ম্যাচ জেতা গুরুত্বপূর্ণ।'
জয় দিয়ে এশিয়া কাপের শুরু করেছে বাংলাদেশ দল। অবশ্য হংকংয়ের মতো খর্বশক্তির দলের বিপক্ষে জয়টা প্রত্যাশিতই ছিল। লিটন দাসের দলের পরের পরীক্ষা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এই ম্যাচে জয় পেলেই গ্রুপ ‘বি’ থেকে সুপার ফোর অনেকটাই নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের।
এশিয়া কাপ জয়ের লক্ষ্য নিয়েই আমিরাতে যায় টি-টোয়েন্টিতে দারুণ ছন্দে থাকা বাংলাদেশ। তবে প্রতিযোগিতার বাকি দলগুলোকে টপকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে কঠিন পথই পাড়ি দিতে হবে লিটনদের। সে পর্যন্ত যেতে ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে চায় বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন
‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জেতার জন্যই মাঠে নামব’ |
![]() |
আগামীকাল বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ শ্রীলঙ্কা বাধা পেরোনো। সেই ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে আসেন তানজিম হাসান সাকিব। দলের পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলেন এই তরুণ পেসার।
এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সামর্থ্য কিংবা সম্ভাবনা নিয়ে রবিচন্দন অশ্বিনের করা খোঁচা দেওয়া মন্তব্য নিয়েও সাকিবের কাছে জানতে চাওয়া হয়। সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে সাবেক ভারতীয় এই ক্রিকেটার বলেন,
‘আমরা তো বাংলাদেশ নিয়ে একটুও কথা বলি না। কারণ ওদের নিয়ে বলার মতো কিছু নেই। এরা আসলে কীভাবে ভারতের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে?’
আরও পড়ুন
র্যাঙ্কিংয়ের ৩০ নম্বর বোলারকে বিশ্বসেরা বলছেন পাকিস্তান কোচ |
![]() |
অশ্বিনের এমন মন্তব্যের জবাবে পাল্টা তোপ দাগলেন সাকিব,
‘আপনি কারও মুখ আটকে রাখতে পারবেন না। আমার মুখ আছে, আমি যা ইচ্ছা তাই বলতে পারব। বিশেষ করে যারা চুক্তির মধ্যে নেই। কে কী বলল না বলল, এগুলোয় আসলে কিছু আসে–যায় না।’
আরও পড়ুন
এশিয়া কাপে পাকিস্তানের ‘বড় সমস্যা’ |
![]() |
নিজেদের সেরাটা দিয়ে লক্ষ্য ধরে এগোনোর কথা বলেন সাকিব,
‘আমরা বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করি। এখানে একটা লক্ষ্য নিয়ে এসেছি। আমরা আমাদের সেরাটা খেলব। এখন কেউ আমাদের বড় দল বলল, ছোট দল বলল, ওটা আসলে দেখার কোনো সময়ই নেই।’
সমর্থকদের মধ্যে ক্রিকেট নিয়ে আবেগের কমতি নেই। তবে পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আবেগকে প্রশ্রয় দেওয়ার বিপক্ষে সাকিব,
‘দেখুন, পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আমরা যখন মাঠে নামি, তখন প্রক্রিয়াটা মেনে চলার চেষ্টা করি। সমর্থকদের পাগলামি থাকবে, তারা আবেগপ্রবণ হবে। কিন্তু পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আমি যদি আবেগপ্রবণ হই, তাহলে তো হবে না।’
হংকংয়ের বিপক্ষে জয় দিয়ে নিজেদের এশিয়া কাপ অভিযান শুরু করেছে বাংলাদেশ দল। আগামীকাল দুবাইয়ে লিটন দাসরা মাঠে নামবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সম্প্রতি লঙ্কানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতেছেন তাঁরা। বিশ ওভারের ম্যাচে কোনো দলকেই অবশ্য হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই।
তবে বাংলাদেশ দলে পেসার তানজিম হাসান সাকিব জানিয়েছেন, প্রতিপক্ষ যে দলই হোক, তাঁরা মাঠে নামবেন জয়ের জন্যই। দুবাইয়ে আজ মাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তানজিম সাকিব বলেন,
‘দ্বৈরথ আসলে থাকবেই। একটা টুর্নামেন্টে আপনি যে দলের বিপক্ষেই খেলেন না কেন জেতাটা মূখ্য বিষয়। এটা হোক শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, হোক ভারত-পাকিস্তান। সুতরাং আমরা মাঠে জেতার জন্যই মাঠে নামব। । দ্বৈরথ—আমার কাছে এগুলো কোনো কিছু মুখ্য বিষয় না। ম্যাচ জেতা গুরুত্বপূর্ণ।'
আরও পড়ুন
র্যাঙ্কিংয়ের ৩০ নম্বর বোলারকে বিশ্বসেরা বলছেন পাকিস্তান কোচ |
![]() |
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটীয় সম্পর্কের ইতিহাস রোমাঞ্চে ভরা। গত এক দশকে এই দুই দলের ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। তবে মাঠে নামার আগে এসব অতীত পরিসংখ্যান বা আবেগ নয়, জয়ের লক্ষ্যেই চোখ রাখতে চান তানজিম সাকিব,
‘আমাদের অ্যাপ্রোচ একবারে সোজাসাপ্টা, আমরা জেতার জন্যই মাঠে যাব। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমরা সিরিজ জিতেছি, এটা আমাদের আত্মবিশ্বাস দেবে।’
আরও পড়ুন
এশিয়া কাপে পাকিস্তানের ‘বড় সমস্যা’ |
![]() |
এশিয়া কাপের আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলে এসেছে বাংলাদেশ দল। প্রতিপক্ষের খুঁটিনাটি জানে বলেই সঠিক পরিকল্পনার আশ্বাস দিলেন সাকিব। এ তরুণ এই পেসার বলেন,
‘আমরা তো পূর্ণাঙ্গ একটা সিরিজ খেলেছি—টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ছিল। আমরা তাদের সব খেলোয়াড়কেই ভালো জানি। আমরা ঠিকঠাক পরিকল্পনা করব। অবশ্যই, তাদের বেশ কয়েকজন ভালো খেলোয়াড় আছে এবং আমরা তাদের আটকানোর চেষ্টা করব। আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলব, ইনশাআল্লাহ।’
এশিয়া কাপের শুরুটা ভালো হয়েছে বাংলাদেশের। গতকাল তারা ৭ উইকেটে হারিয়েছে হংকংকে। কাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামবে রাত সাড়ে ৮টায়।
এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আজ ওমানের বিপক্ষে মাঠে নামছে পাকিস্তান। কোচ মাইক হেসনের ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন হলো বেশি ভারত ম্যাচ প্রসঙ্গে! টুর্নামেন্টে ব্যাটিং নিয়ে চিন্তার কথা বললেন পাকিস্তান কোচ। তবে তৃপ্তির ঢেকুর তুললেন বোলিং আক্রমণ নিয়ে।
হেসনের মতে, পাকিস্তানের বোলিংয়ে দারুন বৈচিত্র্য। পেসারদের সঙ্গে আছে পাঁচ স্পিনার। অফ স্পিন, বাঁহাতি স্পিন, রিস্ট স্পিন-সবই আছে তাঁর দলে। হেসনই বললেন,
‘আমাদের দলে পাঁচজন স্পিনার আছে, যা আমাদের জন্য একটা বড় সুবিধা।’
সম্প্রতি ত্রিদেশীয় সিরিজে আফগানিস্তান ও আরিব আমিরাতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় পাকিস্তান। ফাইনালে আফগানদের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন বাঁহাতি স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজ। তারপর টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে বোলারদের তালিকায় ১৩ ধাপ টপকে ৩০ নম্বরে উঠেন তিনি।
হেসন মনে করেন, ৩০ নম্বরে থাকা নওয়াজ এখন বিশ্বসেরা স্পিনার। পাকিস্তান কোচ বলেন,
‘আমাদের কাছে মোহাম্মদ নওয়াজ আছেন, যিনি এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা স্পিনার। দলে ফেরার পর থেকে গত ছয় মাস ধরে তিনি এভাবেই র্যাঙ্কিংয়ে আছেন। এ ছাড়া আমাদের কাছে আবরার আহমেদ এবং সুফিয়ান মুকিম আছেন, যারা দারুণ করছে। সাইম আইয়ুব এখন বিশ্বের শীর্ষ দশ অলরাউন্ডারের মধ্যে চলে এসেছে, আর সেটি এসেছে তার বল হাতে উন্নতির কারণেই।'
আগামী পরশু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে পাকিস্তান। সে চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত হেসন,
‘আমরা জানি ভারত দারুণ আত্মবিশ্বাসী এবং সেটাই স্বাভাবিক, কারণ তারা অসাধারণ ক্রিকেট খেলছে। তবে আমরা প্রতিদিন নিজেদের উন্নতির দিকে নজর দিচ্ছি। খুব বেশি আগে কিছু ভাবছি না, কিন্তু আমরা সামনে থাকা চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সচেতন। এটিকে কোনো বিশাল দায়িত্ব বলব না, বরং বলব একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ, আর আমরা সেটির অপেক্ষায় আছি।'
পাকিস্তান ক্রিকটে সবচেয়ে বড় সমস্যা ‘চেয়ার খেলা’ বললে ভুল হবে না। কদিন পর পর বোর্ড প্রধান, কোচ, অধিনায়ক, নির্বাচকের পরিবর্তন। কয়েক বছর ধরে দলটির খেলায় এসবের বেশ নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, সেটি তাদের পারফরম্যান্সই বলে।
আজ থেকে এশিয়া কাপ অভিযানে নামছে পাকিস্তান। তবে দলের ব্যাটিং নিয়ে চিন্তায় কোচ মাইক হেসন। আমিরাতের কন্ডিশনে বাবর আজম-মোহাম্মদ রিজওয়ানের মতো অভিজ্ঞরা কার্যকর হতে পারতেন, তবে লম্বা সময় ধরে টি-টোয়েন্টি দলেই তাদের রাখছে না পিসিবি।
হেসনের কথায়, এশিয়া কাপে বড় সমস্যা হলো তাদের ‘ব্যাটিং’। ছন্দ খুঁজে পাচ্ছেন না ব্যাটিংয়ে। গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান কোচ বলেন,
‘এটি এখনো গঠনের পথে একটি ব্যাটিং লাইনআপ। দলের মধ্যে এমন অনেক খেলোয়াড় আছে, যারা একদিন ভালো খেললে ম্যাচ জিতিয়ে দিতে পারে, তবে তারা এখনো নিয়মিতভাবে ভালো পারফরম্যান্স করতে পারছে না।’
সবশেষ ত্রিদেশীয় সিরিজে আফগানিস্তান ও আরিব আমিরাতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় পাকিস্তান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও জেতে সিরিজ। এর মধ্যে সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশের সফরে। তারপরও শেষ ১৩ টি-টোয়েন্টির মধ্যে ১০টিতে জয়ের আত্মবিশ্বাস সালমান আলি আঘাদের। বেশিরভাগ ম্যাচেই খেলেছে নতুন ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে, ছিলেন না অভিজ্ঞ বাবর-রিজওয়ান।
হেসনের মতে, তাঁর ব্যাটাররা এখনো নিজেদের তৈরি করছে এবং একে অপরের সঙ্গে কীভাবে রসায়ন গড়ে তুলতে হয়, সেটা শিখছে। দলগতভাবে ব্যাটিং অর্ডার কেমন করছে সেটি গুরুত্ব দিচ্ছেন হেসন,
‘আমরা ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে সামগ্রিকভাবে কেমন করছি সেটাই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। কারণ এমন অনেক ম্যাচ আছে যেখানে ১৫০ রানই যথেষ্ট, আবার এমন দিনও আছে যখন ১৯০ রান করেও হারতে হয়। তাই আমাদের ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে ঠিক করতে হবে ম্যাচ জিততে হলে কী লাগবে, এবং সেটা পার হওয়া সম্ভব কি না।’