২১ নভেম্বর ২০২৫, ৫:৫৪ পিএম

সারা দেশের মতো মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামেও বেশ ভালোভাবে বোঝা গেছে শুক্রবার সকালের ভূমিকম্প। মাঠের ক্রিকেটাররা শুরুতে বুঝতে না পারলেও, পরে আতঙ্ক ঢুকে গিয়েছিল তাদের মধ্যে।
দিনের প্রথম সেশনের প্রথম ঘণ্টার বিরতি তখন শেষ হয়েছে। নতুন ঘণ্টায় দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বল করতে তখন প্রস্তুত মেহেদী হাসান মিরাজ। হঠাৎই যেন দুলতে শুরু করে ফ্লাডলাইটের বাতি ও লম্বা স্ট্যান্ড। উদ্ভুত ঝনঝন শব্দ শুরু হয় মাঠজুড়ে।
কয়েক মুহূর্তে পরেই সবাই বুঝে যায়, বড় মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। ডাগআউট থেকে তখন মাঠের ক্রিকেটারদের কাছে পৌঁছে যায় সেই বার্তা। তাই বন্ধ রাখা হয় খেলা। প্রায় ৩ মিনিট পর আবার নতুন করে শুরু হয় ম্যাচ।
দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তাইজুল ইসলাম জানালেন, ঠিক ওই মুহূর্তে ঠিক কী অবস্থা ছিল মাঠে।
“আসলে প্রথমে বুঝিনি। তবে একটা সময়... সম্ভবত মিডিয়া বক্স ও যে জায়গাগুলোতে কাঁচ ছিল, সেখান থেকে একটা শব্দ আসছে। তারপরে শারীরিকভাবেও একটা (ঝাঁকুনি) অনুভূত হয়েছে। তো ওই সময়টা আরকি একটু আতঙ্ক কাজ করেছে।”
তাইজুলের মতো ঠিক মাঠে ছিলেন না হেনরিখ মালান। তবে ড্রেসিং রুমে বসে ভালোভাবেই টের পেয়েছেন আয়ারল্যান্ডের প্রধান কোচ। সেই অভিজ্ঞতার কথা জানালেন তিনিও।
“আমি অনেক দিন নিউ জিল্যান্ডে থেকেছি। তাই আমি বেশ কয়েকটি ভূমিকম্প দেখেছি। এটি কখনোই ভালো অনুভূতি নয়। ওই মুহূর্তে আসলে সবাই বোঝার চেষ্টা করছিল আমাদের আশপাশে ঠিক কী হচ্ছে। এরপর বৃহৎ প্রভাবের কথা ভাবছিলাম। আশা করি খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।”
“কয়েক মিনিট সব কিছু থেমে ছিল। এরপর আবার আমাদের সব শুরু হয়। তো আসলে খুব বেশি সময় ছিল না বুঝে ওঠার জন্য।”
No posts available.

হেনরি থমাস ডোনাল্ড—নামটি অনেক দিন মনে রাখবেন তাসকিন আহমেদ। ২৮ বছর বয়সি এই ইংলিশ ব্যাটার রীতিমতো তাণ্ডবলীলা চালিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেসারের ওপর। বলা যায়, কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তাসকিনকে।
আবু ধাবির টি–টেন লিগে আজ আজমান টাইটান্সের মুখোমুখি হয় তাসকিন আহমেদদের নর্দার্ন ওয়ারিয়র্স। যেখানে প্রথমে ব্যাটিং করে ১১৮ রান তোলে থিসারা পেরেরা নেতৃত্বাধীন নর্দার্ন। লক্ষ্য তাড়া করতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি আজমানকে। প্রতিপক্ষ বোলারদের তুলোধুনো করে ৪ উইকেটে জেতে তারা।
এদিন হারের সব পূর্বাভাস আগেই দিয়ে রেখেছিল নর্দার্নের ব্যাটাররা। অল্প রানে আটকে যায় তারা। বোলাররা এসে ষোলোকলা পূর্ণ করেন। তাসকিন আহমেদ ও তাবরাইজ শামসি যেন রান খরচের প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন।
শুরুটা হয়েছিল তাসকিনকে দিয়েই। ইনিংসের প্রথম ওভারেই তিনটি চার ও দুটি ছক্কা হজম করেন এই পেসার। রান দেন ২৪।
তাসকিন নিজের দ্বিতীয় ওভারেও ছিলেন খরুচে। প্রথম বলে চার, দ্বিতীয় বলে এক রান। তৃতীয় বলে রাইলি রুশোকে ফেরান। চতুর্থ বলে আবারও বাউন্ডারি। পরের দুই বল ওয়াইড। এরপরের বৈধ বলটি ডট দিয়ে রেহাই পান তিনি।
নিজের দুই ওভারে ১৮ ইকোনমি রেটে ৩৬ রান দেন তাসকিন। যদিও তার চেয়েও বেশি ইকোনমি রেটে বল করেছেন শাহনেওয়াজ ধাহানি। পাকিস্তানি এই পেসার ১ ওভারে খরচ করেছেন ২৪ রান।
আসরে এখন পর্যন্ত তিন ম্যাচ খেলে মাত্র একটিতে জিতেছে নর্দান ওয়ারিয়র্স। পয়েন্ট টেবিলে দলটির অবস্থান চারে।

রাইজিং স্টারস এশিয়া কাপে আজ দিনের প্রথম ম্যাচে ভারতকে (এ দল) হারিয়ে ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। অপেক্ষা ছিল শিরোপার মঞ্চে প্রতিপক্ষের। ঘণ্টা দুয়েক পর জানা গেল—ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাকিস্তানকেই পাচ্ছেন আকবর আলীরা।
কাতারের রাজধানী দোহায় রাইজিং স্টারস টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় পাকিস্তান শাহীনস ও শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দল। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করে ১৫৩ রান তোলে পাকিস্তান। রান তাড়ায় ৫ রান দূরে থেকে কোটার সবগুলো ওভার শেষ হয়ে যায় শ্রীলঙ্কার।
এদিন পাকিস্তানের ১৫৩ রানের জবাবে খেলতে নেমে শেষ ওভারে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। বোলিংয়ে এসে প্রথম দুই বল ওয়াইড দেন উবায়েদ শাহ। পরের বলটি ছিল ডট। এরপর চতুর্থ বৈধ বলে বাউন্ডারি মারেন মিলান রত্নায়েক। দুর্ভাগ্যবশত, পরের বলেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে রান–আউট হন লঙ্কান ব্যাটার।
৯ উইকেট হারিয়ে আরও চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। এরই প্রভাব পড়ে ম্যাচের গতিপথে। চতুর্থ বলে সানকেথ সিঙ্গেল নেন, পঞ্চম বলে লেগ বাই থেকে আসে এক রান। শেষ বলে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন পড়ে ৬ রান। দারুণ এক ডেলিভারিতে সানকেথকে পরাস্ত করেন উবায়েদ শাহ। তাতেই ফাইনালের টিকিট কাটে পাকিস্তান।
টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তানের ব্যাটাররা বড় কোনো ইনিংস খেলতে পারেননি। টি-টোয়েন্টি স্টাইলের ব্যাটিং বাদ দিয়ে ধীরে-সুস্থে ইনিংস গড়ার চেষ্টা করে তারা। মাজ সাদাকাতের ব্যাটে ঝড়ের আভাস মিললেও বাকিরা খেলেছেন বেশ সাধারণ ভঙ্গিতে।
পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেছেন গাজী গৌরি—৩৬ বলে ৩৯ রান। শেষ দিকে আহমেদ দানিয়েলের ৮ বলে ২২ রানের ক্যামিওতে ১৫৩ রান পুঁজি পায় পাকিস্তান।

ম্যাচ পেন্ডুলামের মতো দুলছিল। একবার মনে হচ্ছিল হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে জয়, ক্ষণে ক্ষণে জেগে উঠছিল আশা। উত্তেজনাপূর্ণ এই লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয়টা বাংলাদেশেরই হলো। ভারত ‘এ’ দলকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো রাইজিং স্টারস টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠল আকবর আলীর দল।
কাতারের রাজধানী দোহায় আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে তিনটায় টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৯৪ রান করে লাল–সবুজের দল। জবাবে নেমে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ম্যাচটি ড্র করে ভারত। শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারে গড়ানো ম্যাচে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
এদিন আকবর আলীর ভুলেই ম্যাচ সুপার ওভারে গড়ায়। ইনিংসের শেষ বলে দুই রান নেওয়ার সময় রান–আউটের উদ্দেশ্যে স্টাম্পে থ্রো করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। ঘটনাটি ম্যাচের গতিপথ বদলে দেয়। এ নিয়ে ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ক্ষমা চেয়েছেন আকবর।
তিনি বলেন,
“আমাদের যারা সমর্থন দিয়ে আসছেন, তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। ব্যাপারটা বুঝতে পারছি। কিন্তু তখন আমার মনে কী চলছিল বুঝে উঠতে পারিনি। কিছু বোঝার আগেই বল ছুড়ে দিয়েছিলাম।”
রাইজিং স্টারসের আজ দ্বিতীয় সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তান শাহীনস। এই ম্যাচের বিজয়ীর বিপক্ষে ২৩ নভেম্বর ফাইনাল খেলবে বাংলাদেশ।

দীর্ঘদিন পর দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি দলে ফিরেছেন পেসার আনরিখ নরকিয়া। ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ দিয়েই প্রত্যাবর্তন ঘটছে তাঁর। সবশেষ ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছিলেন ৩১ বছর বয়সি এই পেসার।
স্ট্রেস রিঅ্যাকশন চোটের কারণে জুনে মেজর লিগ ক্রিকেটে খেলতে পারেননি নরকিয়া। একই কারণে জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেও ছিলেন না দলের সঙ্গে।
টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব দেবেন এইডেন মার্করাম। দলে ফিরেছেন ওটনিল বার্টম্যান। টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা হারিয়েছেন রায়ান রিকেলটন।
সবশেষ পাকিস্তান সফরে ছিলেন না টেম্বা বাভুমা; ওয়ানডে সিরিজের নেতৃত্বে ফিরেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক অবসান ভেঙে ফেরা কুইন্টন ডি কক রয়েছেন দুই ফরম্যাটেই। তবে ওয়ানডে দলে নেই নরকিয়া।
পাঁজরের পেশির টানের (রিব বোন স্ট্রেস) চোটে টেস্টের পর সাদা বলের সিরিজ থেকেও ছিটকে গেছেন কাগিসো রাবাদা।
৩০ নভেম্বর থেকে শুরু হবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। এরপর ৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
দক্ষিণ আফ্রিকা টি–টোয়েন্টি দল:
এইডেন মার্করাম (অধিনায়ক), ওটনিল বার্টম্যান, করবিন বোশ, ডেওয়াল্ড ব্রেভিস, কুইন্টন ডি কক, টনি ডি জরজি, ডোনোভ্যান ফেরেইরা, রিজা হেনড্রিক্স, মার্কো জানসেন, কেশব মহারাজ, জর্জ লিন্ডে, কুয়েনা মাফাকা, ডেভিড মিলার, লুঙ্গি এনগিডি, আনরিখ নরকিয়া ও ট্রিস্টান স্টাবস।
দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডে দল:
টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), অটনিয়েল বার্টম্যান, করবিন বশ, ম্যাথিউ ব্রিটজকে, ডেওয়াল্ড ব্রেভিস, নান্দ্রে বার্গার, কুইন্টন ডি কক, টোনি ডি জর্জি, রুবিন হারম্যান, কেশব মহারাজ, মার্কো জানসেন, এইডেন মার্করাম, লুঙ্গি এনগিডি, রায়ান রিকেলটন, প্রেনেলান সুব্রায়েন।
ভারতীয় ক্রীড়ায় দুর্দিন চলছে। জাতীয় ক্রিকেট দল হোক বা ‘এ’ দল, ফুটবলেও যাচ্ছেতাই ম্যান ইন ব্লুরা। চলতি মাসের ৬ দিনে ৪টি ম্যাচে হেরেছে ভারত।
১৬ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে হার দেখে শুভমান গিলের দল। পছন্দ মতো উইকেট বানিয়েও সাড়ে তিনদিনে ‘প্যাকেট’ হয় ভারত। শেষ পর্যন্ত ৩০ রানে জিতে প্রোটিয়ারা।
একই দিনে দুবাইয়ের রাজধানী কাতারে চলমান রাইজিং স্টারস টুর্নামেন্টে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের কাছে হেরে যায় ভারত ‘এ’ দল। দাপট দেখিয়ে জিতেশ শর্মাদের কাছ থেকে ৮ উইকেটে জয় তুলে নেয় ইরফান খানের দল। যদিও গ্রুপ ‘বি’ থেকে ভারত ও পাকিস্তান—দুই দলই সেমিফাইনালের টিকিট কাটে। শেষ চারে স্বপ্নভঙ্গ হয় ম্যান ইন ব্লুদের।
রাইজিং স্টারস টুর্নামেন্টে শেষ চারের ম্যাচে আজ বাঁকবদল লক্ষ্য করা যায়। প্রথমে ব্যাটিং করে বাংলাদেশ ১৯৪ রান তোলে। জবাব দিতে নেমে শেষ ওভারে প্রতিবেশিদের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। আর শেষ বলে এসেছে ৪ রান। তবে তিন রান নিয়ে ম্যাচ সুপার ওভারে চলে যায়।
সুপার ওভারে দাপট ছিল বাংলাদেশেরই। দুই বলে দুই ব্যাটারকে ফেরান বাংলাদেশের পেসার রিপন মণ্ডল। ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন ইয়াসির আলী রাব্বি। পরে ক্রিজে নেমে ম্যাচের ইতি টেনে দেন আকবর আলী।
এর তিনদিন আগে ফুটবলে জামাল ভূঁইয়াদের কাছে ১-০ ব্যবধানে হারে ভারত। সফরকারী সন্দেশ ঝিঙ্গানরা আশা নিয়ে বাংলাদেশে এলেও হতাশা হয়ে দেশে ফেরেন। ফলে ২২ বছর পর ভারতের বিপক্ষে জয় খরা কাটায় লাল-সবুজের দল।
ফুটবল ও ক্রিকেটের পাশাপাশি এই মুহূর্তে ভারতের নারী কাবাডি দল বাংলাদেশে অবস্থান করছে। নারী কাবাডি বিশ্বকাপে ভালো অবস্থানে দেশটির নারীরা থাকলেও ক্রিকেট ও ফুটবলে হতাশা ভারতকে অনেক ক্ষতি করছে।