ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছেন ক্রিকেটের এই সংস্করণ থেকেই। মাঠে নামলেই ওয়াডেতে তাঁর ব্যাট থেকে রানের বন্যা বয়ে যেত। দীর্ঘ বিরতির পর জাতীয় দলে ফেরা বিরাট কোহলি এই সংস্করণেই এখন ধুঁকছে।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আজ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ গোল্ডেন ডাক মেরে ফিরলেন কোহলি। তিন ম্যাচের সিরিজের পার্থে প্রথমটিতেও কোনো রান না করেই ড্রেসিংরুমের পথ ধরেছিলেন টপ অর্ডারের এই ব্যাটার। আজ জাভিয়ার বার্টলেটের বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়ে চার বল খেলে শূন্য রান করে ফেরেন কোহলি। তাতে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে টানা ডাক মারার তিক্ত অভিজ্ঞতা হলো তাঁর।
এর আগে ২০২১ সালে আহমেদাবাদে একবার টেস্ট ও টি–টোয়েন্টিতে টানা দুই ইনিংসে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন কোহলি। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ওয়ানডেতে এটি কোহলির দ্বিতীয় ‘ডাক’। আর অজিদের বিপক্ষে মোট চতুর্থবার শূন্য রানে আউট হলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি কোহলির ৪০তম শূন্য রানের ইনিংস। ভারতের হয়ে সব ফরম্যাট মিলিয়ে কেবল জাহির খানই (৪৩) তার চেয়ে বেশি বার শূন্য রানে ফিরেছেন।
৫০ ওভারের সংস্করণে বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে এ নিয়ে মোট ১৮বার গোল্ডেন ডাক মেরেছেন কোহলি। টেস্টে ১৫ ও টি-টোয়েন্টিতে সাতবার শূন্য রানে ফিরেছেন তিনি।
এই বছর সাতটি ওয়ানডেতে ৭ ইনিংসে ২৭৫ রান করেছেন কোহলি। সবশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ ব্যাট হাতে নেমেছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। গত মার্চে সেই টুর্নামেন্টে পাঁচ ম্যাচে ২১৮ রান করে দলের শিরোপা জয়ে অবদান রেখেছেন তিনি।
গত কয়েক মাস ভারতের ওয়ানডে দলের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে কোহলি-রোহিত শর্মাকে ছাড়া দল গোছানোর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ২০২৭ বিশ্বকাপে ভারতের অভিজ্ঞ এই দুই ক্রিকেটারের খেলার সম্ভাবনা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। এরমধ্যে ছন্দে না ফিরলে হয়তো তাদের বাদ দিয়েই আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে ভারত। ক্যারিয়ারজুড়ে অনেক চাপ সামলানোর অভিজ্ঞতা আছে ৩৬ বছর বয়সী ব্যাটারের। এবার জাতীয় দলে টিকে থাকার চাপ সামলে কোহলি চেনা রূপে ফিরতে পারেন কিনা সেটাই দেখার।
কোহলির ব্যর্থতার দিনে বিপদে ভারতও। অ্যাডিলেড ওভালে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৭ রানেই দুই উইকেট হারায় সফরকারীরা। ডানহাতি পেসার বার্টলেট ৯ রান করা অধিনায়ক শুবমান গিলকে ফেরান। একই ওভারেই কোহলির উইকেটও তুলে নেন তিনি। পাওয়ার প্লের ১০ ওভার শেষে দুই উইকেট হারিয়ে ২৯ রান করে ভারত। ওয়ানডেতে ২০২৩ সালের পর এটি পাওয়ার প্লেতে তাদের তৃতীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহ।
No posts available.
২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮:০২ পিএম
২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৭:৪৮ পিএম
২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৫:৫৫ পিএম
গত বছরের নভেম্বর থেকে এ বছরের অক্টোবর, প্রিয় ফরম্যাটে এই এক বছর কী দুর্বিষহ চিত্রই না ছিল বাংলাদেশের। আফগানিস্তানের কাছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১-২ এ হার দিয়ে শুরু, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে স্বাগতিকদের কাছে ০-৩, শ্রীলংকা সফরে ১-২ এর পর সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে আফগানিস্তানের কাছে ০-৩ এ হার!
টানা ৪টি ওডিআই সিরিজ হারের পর হারের বৃত্ত ভেঙ্গেছে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশের ওডিআই ইতিহাসে রানের ব্যবধানে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়টি সূচিত হয়েছে বুধবার রাতে। ২০২৩ সালে সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮৩ রানের জয়কে উপরে রেখে ১৭৯ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ২-১এ ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে মিরাজের দল। মিরপুরে বাংলাদেশ নিজেদের ১০৬তম ম্যাচে রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়টাও দেখলো বুধবার রাতে।
দীর্ঘদিন পর ওপেনিং জুটি ফিরে পেয়েছে পূর্ণ আত্মবিশ্বাস। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ১০৬তম ওডিআই ম্যাচে ওপেনিং জুটিতে করেছে ১৭৬ রান। সৌম্য-সাইফ হাসান জুটির ১৭৬ এই ভেন্যুতে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের ওপেনিং পার্টনারশপে সর্বোচ্চ। ১১ বছর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে ইমরুল কায়েস-এনামুল হক বিজয়ের ১৫০-কে টপকে গেছেন সৌম্য-সাইফ। ঢাকায় ওডিআই ক্রিকেটে অপি-বিদ্যুতের ১৭০ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপকেও আনতে হচ্ছে সামনে। ২৬ বছর আগে মেহরাব হোসেন অপি'র হাত ধরে ওডিআই ক্রিকেটে বাংলােদেশের প্রথম সেঞ্চুরির সেই রেকর্ডের ম্যাচে শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুতের সঙ্গে ১৭০ রানের সেই পার্টনারশিপটা ছিল ঢাকা স্টেডিয়ামে।
প্রথম ২৫ ওভারে উইকেটহীন স্কোর ১৭৬, পরের ২৫ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২০। প্রথম পাওয়ার প্লে-তে স্কোর ৭৪/০, শেষ পাওয়ার প্লে-তে ৬৫/৫। শুরু এবং শেষ পাওয়ার প্লে-কে যথার্থভাবে কাজে লাগানো ম্যাচে স্কোর তো সাড়ে তিনশ' ছুঁই ছুঁই এর প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু তিনশ-ই তো ছুঁতে পারেনি বাংলাদেশ। কেনো পারেনি, তার বিশ্লেষণে বেরিয়ে আসবে ২৬তম ওভার থেকে ৪০তম ওভার পর্যন্ত মাঝের ১৫ ওভারে ধীরগতির ব্যাটিং। যে ১৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে রান উঠেছে মাত্র ৫৫ রান। তাওহিদ হৃদয়ের ধীরগতির ব্যাটিং ( ৪৪ বলে ২৮) এই সময়ে বাংলাদেশের প্রত্যাশিত স্কোরে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।
প্রথম দুই ম্যাচে লেজের জোরে, বিশেষ করে রিশাদ ঝড়ে দুইশ কোনোমতে পার করতে পেরেছে বাংলাদেশ। ওই দুই ম্যাচে ডট বলের সংখ্যা ১৭৩, ১৯৩ নিয়ে সমালোচনা হয়েছে যথেষ্ট। তবে সিরিজের শেষ ম্যাচে অতো ডট করেনি বাংলাদেশ ব্যাটাররা। ডট বলের সংখ্যা শেষ ম্যাচে ১৫৭টি।
প্রথম দুই ম্যাচের পিচ নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। সে কারণেই কিউরেটর টনি হেমিং-বদিউল আলম খোকন জুটি ইভেন বাউন্সকে গুরুত্ব দিয়ে শেষ ম্যাচের পিচ প্রস্তুত করেছেন। তৃতীয় ম্যাচের পিচ ব্যাটারদের জন্য ছিল বেটার। তবে ইনিংসে আড়াইশ'র কাছাকাছি স্কোরের জন্য তৈরি করা উইকেটে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৯৬/৮ স্কোর করতে পেরেছে বাংলাদেশ। তা সম্ভব হয়েছে ওপেনিং জুটির অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাসী ইনিংসে।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সুপার ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারের জন্য সৌম্য'র ব্যাটিং হয়েছে অভিযুক্ত। সেই সৌম্যকেই সিরিজের শেষ ম্যাচে অন্য চেহারায় দেখা গেছে। ইনিংসের ৬ষ্ঠ ওভারে রোষ্টন চেজ-কে রিভার্স সুইপে ছক্কা মেরে জানিয়ে দিয়েছেন বিগ হিটে নিজের সক্ষমতার কথা। সেই রোষ্টন চেজ-এর পরের ওভারে এই অফ স্পিনারকে নিয়ে ছেলেখেলা উৎসব করেছেন সৌম্য-সাইফ। ১ চার, ২ ছক্কার ওই ওভারে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চার-ছয় মেরেছেন সৌম্য। দ্বিতীয় ম্যাচে ৮৯ বলে করেছেন সৌম্য ৪৫। এই ম্যাচে সেখানে করেছেন ৮৬ বলে ৯১। যে ইনিংসে ৭টি চার এর পাশে ৪টি ছক্কা। আকিল হুসেইনকে সুইপ করতে যেয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরে ওডিআই ক্যারিয়ারে ৪র্থ সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেছেন সৌম্য। এর আগে নব্বইয়ের ঘরে একবারই মাত্র আউট হয়েছেন, ২০১৫ সালে চট্টগ্রামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই ইনিংসে কাটা পড়েছিলেন সৌম্য ৯০-এ।
টি-টোয়েন্টিতে মার মার কাট কাট ব্যাটিংয়ে ওয়ানডে ফরম্যাটে সাইফ হাসানকে নেয়ার সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না, বৃহস্পতিবার সাইফের ব্যাটিংয়ে (৭২ বলে ৬ চার, ৬ ছক্কায় ৮০) তা জানিয়ে দিতে পেরেছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অল স্পিন অ্যাটাকে ৫০ ওভার বোলিংয়ে বিশ্বরেকর্ড করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ ম্যাচে স্পিনারদের দিয়ে ৪৩ ওভার বোলিং করিয়েছেন অধিনায়ক সাই হোপ। একমাত্র পেসার গ্রিভসকে দিয়ে ৭ ওভার বোলিং করিয়েছেন তিনি। ওই ৭ ওভারকে ভালই শিক্ষা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাটাররা। ওভারপ্রতি ৮.৭১ হারে উইকেটহীন গ্রিভসের খরচা ৬১।
এমন এক ম্যাচে শেষ দুই স্পেলের (৪-১-৯-১ ও ২-০-৫-৩) স্পিন ভেল্কিতে বাঁ হাতি স্পিনার আকিল হুসেইনের শিকার ৪ উইকেট (৪/৪১)। ইনিংসের ৪৬ এবং ৪৮ তম ওভার আকিল হুসেইনকে দিয়ে করিয়ে বাংলাদেশের প্রত্যাশিত স্কোরে বাধা সৃষ্টি করেছেন সাই হোপ।
বাংলাদেশের ইনিংসে উইন্ডিজ স্পিনাররা আহামরি বল ঘোরাতে পারেননি। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসে বাংলাদেশ স্পিনাররা ঠিকই বল ঘুরিয়েছে। দুই বাঁ হাতি স্পিনার নাসুম (৬-১-১১-৩), তানভির (৮-০-১৬-২), লেগ স্পিনার রিশাদ (৯-০-৫৪-৩), অফ স্পিনার মিরাজ (৭.১-০-৩৫-২) উইন্ডিজ ব্যাটারদের কাঁপিয়ে দিয়েছেন। ১১৭ রানে অল আউট করেছে বাংলাদেশ সফরকারী দলকে। একমাত্র পেসার মোস্তাফিজের হাতে ওঠেনি একটি ওভারও।
এক দশক আগে ৩ ম্যাচের ওডিআই সিরিজে ১৩ উইকেটে এখনো বিশ্বসেরা মোস্তাফিজকে ছুঁতে পারেননি রিশাদ। ১ উইকেট কম নিয়ে ১২ উইকেটে থেমেছেন এই লেগ স্পিনার (৩ ম্যাচে ১০.৯০ গড়ে ১২ উইকেট)।
সিরিজ নির্ধারণী শেষ ওয়ানডেতে পাত্তাই পেল না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রেকর্ড ব্যবধানে জয়ে সিরিজের ট্রফি নিজেদের করে নিল বাংলাদেশ। টানা ৪ সিরিজ হারের পর ওয়ানডেতে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল তারা।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার সিরিজের শেষ ম্যাচে ১৭৯ রানে জিতল বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে ২৯৬ রানের পুঁজি দাঁড় করায় বাংলাদেশ। জবাবে ৩০.১ ওভারে ১১৭ রানে অলআউট হয়ে যায় ক্যারিবিয়ানরা।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের এর চেয়ে বড় জয় আছে আর একটি। ২০২৩ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮৩ রানে জিতেছিল তারা।
মিরপুরে অবশ্য এটিই সবচেয়ে বড় জয়। এর আগে ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কাকে ১৬৩ রানে হারায় তারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের আগের বড় জয়ের রেকর্ড ছিল ১৬০ রানের, ২০১২ সালে।
বাংলাদেশের বড় জয়ে ৩টি করে উইকেট নেন নাসুম আহমেদ ও রিশাদ হোসেন। সব মিলিয়ে সিরিজে তার শিকার ১২টি উইকেট। ২০১৫ সালের পর এই প্রথম কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজে বাংলাদেশের কোনো বোলার ১০ বা তার বেশি উইকেট নিলেন।
রান তাড়ায় শুরু থেকেই নিয়মিত উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাওয়ার প্লের মধ্যে তাদের টপ-অর্ডার তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে দেন নাসুম আহমেদ। এরপর উইকেট শিকারে যোগ দেন তানভির ইসলাম। পঞ্চাশের আগে ৪ উইকেট হারায় সফরকারীরা।
আগের দুই ম্যাচের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে এবারও চমৎকার বোলিং করেন রিশাদ। নাসুমের মতো তিনি নেন ৩টি উইকেট। এছাড়া তানভির ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজের শিকার ২টি করে উইকেট।
উইন্ডিজের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৭ রান করেন দশ নম্বরে নামা আকিল হোসেন। এছাড়া আর কেউ ২০ রানও করতে পারেননি।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ২৯৬ রান। হোম অব ক্রিকেটে ৭ বছরের মধ্যে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩২০ রান করেছিল তারা।
অথচ একপর্যায়ে ২৫ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল বিনা উইকেটে ১৭৬ রান। সেখান থেকে ইনিংসের বাকি অর্ধেকে আর কাঙ্খিত রান পায়নি স্বাগতিকরা। বাকি ২৫ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে যোগ হয় মাত্র ১২০ রান।
পুরো ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটাররা মারেন মোট ১৪টি ছক্কা। সাইফের ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৬টি ছক্কা। এছাড়া সৌম্য সরকার ৪ ও নাজমুল হোসেন শান্ত মারেন ৩টি ছক্কা। শেষে নুরুল হাসান সোহানের ছক্কায় নিজেদের রেকর্ড স্পর্শ করে তারা।
২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪৩ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ১৪টি ছক্কা মেরেছিল বাংলাদেশ। সেদিন তামিম ইকবাল ৬টি ও লিটন কুমার দাস মেরেছিলেন ৮টি ছক্কা।
দলের তিনশ ছুঁইছুঁই সংগ্রহের কারিগর দুই ওপেনার সৌম্য ও সাইফ। দেশের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটির রেকর্ড গড়ে ১৭৬ রান যোগ করেন তারা দুজন। ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৯২ রানের জুটি গড়েছিলেন তামিম ও লিটন।
তবে আশা জাগিয়েও সেঞ্চুরি করতে পারেননি সাইফ ও সৌম্য। ৬টি করে চার-ছক্কায় ৮০ রান করে ক্যাচ আউট হন সাইফ। আর সৌম্যর ব্যাট থেকে আসে ৭ চার ও ৪ ছক্কায় করেন ৯১ রান।
ওপেনারদের বিদায়ের পর আর বাড়েনি রানের গতি। উল্টো পেছন পানে হাঁটা ধরে বাংলাদেশ। দুইবার জীবন পেয়েও ৫৫ বলে ৪৪ রানের বেশি করতে পারেননি শান্ত। তিন নম্বরে নামা হৃদয়ের ব্যাট থেকে আসে ৪৪ বলে ২৮ রান।
আগের দুই ম্যাচে ঝড় তোলা রিশাদ হোসেনকে নামানো হয় ছয় নম্বরে। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। আকিল হোসেনের করা ৪৬তম ওভারে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, রিশাদ ও নাসুম আহমেদের উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
পরে অষ্টম উইকেটে ২৪ বলে ৩৫ রান যোগ করেন নুরুল হাসান সোহান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৭ বলে ১৭ রান করেন মিরাজ আর সোহানের ব্যাট থেকে আসে ৮ বলে ১৬ রান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন আকিল হোসেন। তাদের ফিল্ডাররা ছেড়ে দেয় ৬টি ক্যাচ। এর মাশুল দিয়ে বড় পরাজয়ের সিরিজটিও হেরে যায় তারা।
চট্টগ্রামে আগামী সোমবার শুরু হবে দুই দলের তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৯৬/৮ (সাইফ ৮০, সৌম্য ৯১, হৃদয় ২৮, শান্ত ৪৪, অঙ্কন ৬, রিশাদ ৩, নাসুম ১, সোহান ১৬*, মিরাজ ১৭; আকিল ১০-১-৪১-৪, চেজ ৮-১-৫৩-১, পিয়েরে ১০-০-৪৬-০, গ্রিভস ৭-০-৬১-০, মোতি ৮-০-৫৩-১, আথানেজ ৭-০-৩৭-২)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩০.১ ওভারে ১১৭ (আথানেজ ১৫, কিং ১৮, অগাস্ত ০, কার্টি ১৫, হোপ ৪, রাদারফোর্ড ১২, চেজ ০, গ্রিভস ১৫, মোতি ৭, আকিল ২৭, পিয়েরে ০*; নাসুম ৬-১-১১-৩, মিরাজ ৭-০-৩৫-১, তানভির ৮-০-১৬-২, রিশাদ ৯-০-৫৪-৩)
ফল: বাংলাদেশ ১৭৯ রানে জয়ী
ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকটা রাঙাতে পারেননি শুবমান গিল। অ্যাডিলেইডে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতকে দুই উইকেটে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিল অষ্ট্রেলিয়া।
বৃহস্পতিবার ভারতের ছুড়ে দেওয়া ২৬৫ রানের লক্ষ্য ২২ বল এবং দুই উইকেট হাতে রেখেই ছুঁয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন অ্যাডাম জাম্পা।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভাল হয়নি অষ্ট্রেলিয়ার। অষ্টম ওভারে দলীয় ৩০ রানের মাথায় অধিনায়ক ব্যক্তিগত ১১ রানে ফেরেন মিচেল মার্শ। ট্রাভিস হেডও উইকেটে টিকতে পারেননি বেশি সময়; ২৮ রান করে হরশিত রানার বলে কোহলির হাতে ক্যাচ দেন তিনি। এক প্রান্ত আগলে ইনিংস গড়েন ম্যাথিউ শর্ট। তৃতীয় উইকেটে ম্যাট রেনশোকে সঙ্গে নিয়ে গড়েন ৫৫ রানের জুটি। রেনশো ৩০ রান করে অক্ষর প্যাটেলের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন।
এলেক্স ক্যারির দ্রুত বিদায়ের পর পঞ্চম উইকেটে শর্ট ও কুপার কনলি ৫৫ রানের জুটি গড়ে অষ্ট্রেলিয়াকে জয়ের পথে রাখেন। রানার বলে আউট হবার আগে শর্ট করেন ৭৮ বলে ৭৪ রান। এরপর মিচেল ওউয়েন ২৩ বলে ঝোড়ো ৩৬ রান করে ফিরে যান। শেষদিকে দ্রত তিন উইকেট হারায় অজিরা। তবে দলকে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন কনলি। ৫৩ বলে ৬১ রানে অপরাজিত ছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে বিপর্যয়ে পড়ে ভারত; ১৭ রানে হারায় দুই উইকেট। ৯ রানে ফেরেন গিল। একই ওভারে শুন্য রানে আউট হন কোহলি। জাভিয়ার বার্টলেটের বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়ে ৪ বল খেলেই আউট হয়ে যান তিনি। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে টানা ডাক মারার তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে মাঠ ছাড়েন সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার।
তৃতীয় উইকেটে ১১৮ রানের জুটিতে দলকে টেনে তোলেন রোহিত শর্মা ও শ্রেয়াস আইয়ার। মিচেল স্টার্কের বলে আউট হওয়ার আগে রোহিত করেন ৭৩ রান। কিছুক্ষণ পর ফিরে যান আইয়ারও। জাম্পার বলে বোল্ড হবার আগে তিনি করেন ৬১ রান। এরপর অক্ষরের ৪৪, রানার ২৪ রানের ওপর ভর করে নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৬৪ রান তোলে ভারত।
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শনিবার সিরিজের শেষ ম্যাচে মাঠে নামবে দুই দল। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৯টায়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।
আজ বিসিবির ঘোষিত ১৫ সদস্যের দলে ফিরেছেন নিয়মিত অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। এশিয়া কাপ চলাকালে চোটে পড়েছিলেন অভিজ্ঞ এই উইকেটকিপার ব্যাটার। পরবর্তীতে আফগানিস্তান সিরিজেও খেলা হয়নি তার। তবে অতিথি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ফিরছেন লিটন।
১৫ সদস্যের দল থেকে বাদ পড়েছেন পেস অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। যিনি এশিয়া কাপ ও আফগানিস্তান সিরিজে দলে ছিলেন।
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে (সাবেক জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম) তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হবে যথাক্রমে ২৬, ২৮ ও ৩১ অক্টোবর। প্রতিটি ম্যাচই সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে।
বাংলাদেশ দল
লিটন কুমার দাস (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন ইমন, সাইফ হাসান, তৌহিদ হৃদয়, জাকের আলি অনিক, শামীম হোসেন, কাজী নুরুল হাসান সোহান, শেখ মাহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম।
দেশের আনাচে–কানাচে ছড়িয়ে থাকা তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের ক্লাব পর্যায়ে খেলার সুযোগ তৈরিতে ‘স্বপ্নযাত্রা ট্যালেন্ট হান্ট’ আবাসিক ক্যাম্প আয়োজন করেছে এইস স্পোর্টস নেটওয়ার্ক। নির্বাচিত ক্রিকেটারদের নিয়ে ৫ দিনের এই ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে ২৯, ৩০, ৩১ অক্টোবর এবং ১ ও ২ নভেম্বর।
‘স্বপ্নযাত্রা ট্রায়াল’-এ এর আগে সারাদেশ থেকে সাত হাজারের বেশি ভিডিও আবেদন জমা পড়ে। বিশেষজ্ঞদের যাচাই–বাছাইয়ে চার শতাধিক প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে ঢাকার ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব মাঠে দুই দিনের ট্রায়ালে ডাকা হয়। ট্রায়ালে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা। এইস স্পোর্টস নেটওয়ার্কের সহযোগী ১৩টি ক্লাবের কোচ ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন ট্রায়ালে। বিভিন্ন ড্রিলের মাধ্যমে ক্রিকেটারদের দক্ষতা ও সম্ভাবনা পর্যবেক্ষণ করেন তারা।
স্বপ্নযাত্রা ট্রায়াল থেকে বাছাই হওয়া সেরা ৩৫ জন ক্রিকেটার অংশ নেবেন আবাসিক ক্যাম্পে। সেখানে স্পেশালিস্ট কোচদের অধীনে ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং, গেম–অ্যাওয়ারনেস, ফিটনেস ও মানসিক দৃঢ়তা—সব ক্ষেত্রে তাদের নিবিড় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে ঢাকার বিভিন্ন ক্লাব নির্বাচিত ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সে আগ্রহ দেখিয়েছে। ক্যাম্প শেষে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে তাদের জন্য ক্লাব প্লেসমেন্টের সুযোগ তৈরি হতে পারে, যা তরুণ প্রতিভাদের সরাসরি ঢাকার ক্লাব পর্যায়ে খেলার দরজা খুলে দেবে।