৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩৬ পিএম

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ঢাকা পর্বের প্রথম ধাপ শেষে অপেক্ষা এখন সিলেট পর্ব শুরুর। বরাবরই সিলেট উপহার দিয়ে আসছে বিপিএলের সেরা সব মুহূর্তের। অনেকের কাছেই বিপিএল যেন ভিন্ন মাত্রা হয় সিলেট পর্বেই এসেই। স্টেডিয়ামের চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য, দর্শক উন্মাদনা, স্পোর্টিং উইকেট - সব মিলিয়ে সিলেটে বিপিএলে মানেই অন্যরকম একটি আবহ। রাত পোহালেই মাঠে গড়াবে এই পর্বের প্রথম ম্যাচ। তার আগে দেখে নেওয়া যাক, এখন পর্যন্ত পরিসংখ্যানে দল ও খেলোয়াড়দের কার কী অবস্থান।
একবারের বিপিএল চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্স এবারের আসলে খেলতে এসেছে গ্লোবাল সুপার লিগে দুর্দান্ত সাফল্যকে সঙ্গী করে। পাঁচ দলের এই টুর্নামেন্টে শিরোপা ঘরে তুলে প্রস্তুতিটা দারুণ হয় দলটির। সেই ধারা বজায় রয়েছে বিপিএলেও। প্রথম তিন ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে সবার ওপরেই আছে নুরুল হাসান সোহানের দল। এর মধ্য উল্লেখযোগ্য শেষ ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে দাপুটে জয়। একপেশে লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসে ৮ উইকেটের জয়ে।
রংপুরের জন্য এই জয়ের ইতিবাচক দিল ছিল টপ অর্ডারের দুই ব্যাটার অ্যালেক্স হেলস ও সাইফ হাসানের ফর্মে ফেরা। প্রথমজন এক রানের জন্য ফিফটি মিস করলেও দ্বিতীয় জন হাঁকান ফিফটি। এর আগে প্রথম দুই ম্যাচে হাল ধরেন দুই পাকিস্তানি ব্যাটার খুশদিল শাহ, ইফতেখার আহমেদ ও অধিনায়ক সোহানরা। দলটির বোলাররাও আছেন ছন্দে।
স্পটলাইট অবশ্য একজনের দিকেই। তিনি গতিময় পেসার নাহিদ রানা। গতির ঝড় তুলে ঢাকা পর্ব মাতিয়েছেন তরুণ এই পেসার। এরই মধ্যে একবার চার উইকেট পেয়ে হয়েছেন প্রথমবার ম্যাচ সেরাও। সিলেট পর্বেও সবার চোখ থাকবে রংপুরের ম্যাচে নাহিদের দিকেই তাই।
নাহিদের মত গতি দিয়ে হয়ত আলোচনায় আসতে পারবেন না তাসকিন আহমেদ, তবে বল হাতে যে স্বপ্নের ফর্মে আছেন, সেটা এড়িয়ে যাওয়া আসলেই অসম্ভব। দুর্বার রাজশাহীর এই পেসার খেলেছেন তিন ম্যাচে। ওভার প্রতি মাত্র ৬ রান দিয়ে মাত্র ৬ গড়ে নিয়েছেন ১২ উইকেট। এর মধ্যে সবচেয়ে স্মরণীয় স্পেল উপহার দেন ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে। মাত্র ১৯ রানে নেন ৭ উইকেট, যা এখন বিপিএলের ইতিহাসের সেরা বোলিং ফিগার। এছাড়াও এটি স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সেরা বোলিং ফিগারও এখন।
১২ উইকেট নিয়ে তাসকিন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীদের তালিকায় আছেন শীর্ষে। দুইয়ে ও তিনে আছেন রংপুরের দুজন খুশদিল (৭ উইকেট) ও নাহিদ (৬ উইকেট)। এছাড়াও ৬ উইকেট রয়েছে যৌথভাবে খুলনা টাইগার্সের আবু হায়দার রনিরও।
ব্যাটারদের মধ্যে ঢাকা পর্বে ধারাবাহিকভাবে আলো ছড়িয়েছেন এনামুল হক বিজয়। রাজশাহীর অধিনায়ক তিন ম্যাচে ১৩৭.৭৩ স্ট্রাইক রেট ও ৭৩ গড়ে করেছেন ১৪৬ রান। সর্বোচ্চ স্কোর অপরাজিত ৭৩। তার পরের চারটি অবস্থান যথাক্রমে চিটাগং কিংসের উসমান খান (২ ম্যাচে ১৪২), ঢাকার থিসারা পেরেরা (৩ ম্যাচে ১৪১) ও ইয়াসির আলি (৩ ম্যাচে ১৩২)।
No posts available.
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১৮ পিএম
১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫:৩৭ পিএম

জফরা আর্চারকে সঙ্গে নিয়ে ১০৬ রানের জুটি বেন স্টোকসের। অ্যাডিলেড টেস্টে এইটুকু সময় কিছুটা আধিপত্য দেখা গিয়েছে সফরকারী ইংল্যান্ডের। মিচেল স্টার্কের বলে ক্যারিয়ারের ১২তম বারের মতো আউট হওয়ায় স্টোকসের লড়াইয়ের সমাধি সেখানেই। স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া পায় ৮৫ রানের লিড। এরপর ট্রাভিস হেডের দারুণ শতকে সুবিধাজনক অবস্থানে থেকে তৃতীয় দিন শেষ করেছে অজিরা।
অ্যাশেজ সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে মোকাবিলা করছে ইংল্যান্ড। আগের দুই টেস্ট হারায় এই টেস্ট ছিল ইংলিশদের জন্য সিরিজে ফেরার চ্যালেঞ্জ। কিন্তু সিরিজ বাঁচাতে এখন আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে স্টোকসের দল। তৃতীয় দিনেই অস্ট্রেলিয়ার লিড ৩৫৬ রানের। ৬ উইকেট হাতে নিয়ে আগামীকাল মাঠে নামবে তারা। ১৪২ রানে অপরাজিত থাকা হেডের সঙ্গে চতুর্থ দিন শুরু করবেন ৫২ রানে অপরাজিত আরেক ব্যাটার অ্যালেক্স ক্যারি। দুজনের তুলেছেন ১২২ রান।
এর আগে ৮ উইকেটে ২১৩ রান নিয়ে নিজেদের প্রথম ইনিংসে শুক্রবার ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। দলীয় আরও ৬১ রান যোগ করার পর স্টোকসকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন স্টার্ক। ইংলিশ অধিনায়ক ফেরেন ব্যক্তিগত ৮৩ রান করে। দলীয় আর ১২ রান যোগ করার পর গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। আর্চারের লড়াই থামে ব্যক্তিগত ৫১ রানের মাথায়। প্রথম ইনিংসের অস্ট্রেলিয়ার ৩৭১ রানের জবাবে ইংল্যান্ড থামে ২৮৬ রানে।
৮৫ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে অজিরা। শুরুতে স্বাগতিকদের দুই উইকেট তুলে নিয়ে দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দেয় ইংলিশ বোলাররা। সেটি খানিক পরেই মিলিয়ে যায় উসমান খাজা আর হেডের প্রতিরোধের সামনে। খাজা ৪০ রানে ফেরার পর ক্যামেরুন গ্রিনও ক্রিজে টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ; জস টাংয়ের বলে আউট হয়েছেন ৭ রান করে।
এরপর আর হেড-ক্যারির জুটি ভাঙতে পারেনি ইংল্যান্ড। ৬ উইকেট হাতে থাকতেই অস্ট্রেলিয়া পায় লড়াইয়ের পুজি। এই টেস্টের এখনও বাকি দুই দিন। ইতোমধ্যে পাওয়া ৩৫৬ রানের লিডটাকে বাড়িয়ে অস্ট্রেলিয়া কোথায় নিয়ে যায় সেটি থাকবে দেখার অপেক্ষা। তবে এই টেস্টে ঘুরে দাঁড়াতে অতিমানবীয় কিছুই করে দেখাতে হতে হবে ইংল্যান্ডকে।
আগের দুই টেস্টের মতো অ্যাডিলেড টেস্টেও পরাজয় বরণ করলে শত বছরের অ্যাশেজ সিরিজের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ে সিরিজ হারানোর লজ্জায় ডুববে ইংল্যান্ড।

মাউন্ট মঙ্গানুইতে চলছে রান উৎসব। প্রথম দিন রেকর্ডের পসরা সাজিয়ে সেই উৎসব শুরু করে নিউ জিল্যান্ড। আজ দ্বিতীয় দিনেও কিউইদের রান বন্যার জবাব দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজও।
এক উইকেটে ৩৩৪ রান নিয়ে দিন শুরু করা নিউ জিল্যান্ড আজ ইনিংস ঘোষণা করেছে আরো ২৪১ রান যোগ করে। ১৫৫ ওভার ব্যাট করে ৮ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ৫৭৫ রান তুলে ক্ষান্ত হয় স্বাগতিকরা। ১৭৮ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা ডেভন কনওয়ে করেন ডাবল সেঞ্চুরি।
এরপর প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত দৃঢ়তায় কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৩ ওভারে ১১০ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অবশ্য এখনো অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে সফরকারীদের। ক্যারিবিয়রা পিছিয়ে এখনো ৪৬৫ রানে। ফিফটি করেছেন ব্র্যান্ডন কিং (৫৫), জন ক্যাম্পেবেলের রান ৪৫।
প্রথম দিনের তুলনায় দ্বিতীয় দিনটা বেশ ভালোয় শেষ করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্যাটিং সহায়ক পিচ আর কন্ডিশনের সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি দুই ক্যারিবিয় ওপেনার। এর আগে দিনের শুরুতে বোলাররাও নিউ জিল্যান্ডের রান তোলার গতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
নিউ জিল্যান্ডের বড় ইনিংসের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন দুই ওপেনারই। প্রথম দিনে টম লেথামের শতক আর দ্বিতীয় দিনে কনওয়ের দ্বি-শতক। ৩১ চারে ৩৬৭ বলে ২২৭ করা কনওয়ের এটি টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস। এর আগেও অবশ্য একবার ডাবল সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়েছিলেন ৩৪ বছর বয়সী বাঁহাতি ব্যাটার।
বাকি ব্যাটারদের মধ্যে ফিফটি করেন রাচিন রবীন্দ্র। ১০৬ বলে ৭২ রানে অপরাজিত ছিলেন বাঁহাতি ব্যাটার। এছাড়া কেইন উইলিয়ামসনের ৩১ গ্লেন ফিলিপসের ২৯ আর এজাজা প্যাটেল করেন ৩০।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন জায়ডিন সিলস, অ্যাডারসন ফিলিপ ও জাস্টিন গ্রিভস। কেমার রোচ ও রোস্টন চেজের শিকার একটি।

অ্যাশেজে চলছে স্নিকো বিতর্ক। অ্যাডিলেড টেস্টে স্নিকোর নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং এই প্রযুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার মিচেল স্টার্ক।
তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিনের ঘটনা— গতকাল অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটার অ্যালেক্স ক্যারি ৭২ রানে ব্যাট করছিলেন। জশ টাংয়ের বলে তাঁর ব্যাটে হালকা ছোঁয়া লেগে বল উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়ে। আউটের জোরাল আবেদন উঠলেও মাঠের আম্পায়ার নট আউট দেন।
ইংল্যান্ড রিভিউ নিলে তৃতীয় আম্পায়ার স্নিকোমিটারে একটি শব্দের স্পাইক লক্ষ্য করেন। তবে সেটি বল ব্যাটের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ের সঙ্গে মেলেনি। শব্দটি কয়েক ফ্রেম আগেই এসেছিল। অডিও-ভিডিওর এই অসামঞ্জস্যতার কারণে নট আউটের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে।
আজ স্নিকোমিটার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিবিজি স্পোর্টস পুরো দায়ভার স্বীকার করে জানায়, অপারেটরের ভুলে বোলারের প্রান্তের মাইক্রোফোন নির্বাচন করা হয়েছিল। এর ফলেই অডিও ও ভিডিওর মধ্যে মিল পাওয়া যায়নি। এই ত্রুটি স্বীকারের পর আইসিসি ইংল্যান্ডকে তাদের হারানো একটি রিভিউ ফেরত দেয়।
স্নিকো নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা। প্যাট কামিন্সের বলে উসমান খাজা প্রথম স্লিপে সম্ভাব্য ক্যাচ ধরেছেন কি না সিদ্ধান্তে জেমি স্মিথকে নট আউট দেওয়া হয়। তৃতীয় আম্পায়ার স্নিকো দেখে জানান, বলটি স্মিথের হেলমেটে লেগেছে। তবে অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড়দের দাবি বলটি গ্লাভসে লেগেছিল।
স্টাম্প মাইক্রোফোনের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে স্টার্ক বলেন,
‘স্নিকোকে বাদ দেওয়া উচিত। এটাই সবচেয়ে খারাপ প্রযুক্তি। ওরা আগের দিন ভুল করেছে, আজও আরেকটা ভুল করল।’
দুই ওভার পরে কামিন্সের বলে স্মিথ ক্যাচ আউট হন, যা নিয়ে মাঠে হতাশা প্রকাশ করেন স্মিথ ও বেন স্টোকস। স্নিকোতে দেখা যায়, বল ব্যাট পেরোনোর এক ফ্রেম পর স্পাইক এসেছে।
স্নিকো নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক রিকি পন্টিংও। চ্যানেল সেভেনকে তিনি বলেন,
‘এখানে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, তা অন্য দেশগুলোর প্রযুক্তির মতো ভালো নয়। আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বললে তারাও একই কথা বলবেন। তাঁরা এটা বিশ্বাস করতে পারেন না।’
ইংল্যান্ডের ব্যাটিং কোচ মার্কাস ট্রেস্কোথিক স্নিকো নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা সমাধানের আহ্বান জানান,
‘গতকাল আমরা একটি খারাপ সিদ্ধান্তের শিকার হয়েছি, আর আজও কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিষয়টি ঠিক করতে হবে।’

বোলিংয়ে এসে তৃতীয় বলেই সাফল্য পেলেন রিশাদ হোসেন। পরের ওভারে তৃতীয় বলে নিলেন আরেকটি উইকেট। তবে তৃতীয় ওভারটি আর ভালো গেল না বাংলাদেশের লেগ স্পিনারের। বিগ ব্যাশে বৃহস্পতিবার তাই মিশ্র দিন কাটল তার।
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) মেলবোর্ন স্টারসের কাছে ৮ উইকেটে হেরেছে রিশাদের হোবার্ট হারিকেন্স। আগে ব্যাট করে ১৫৮ রানের বেশি করতে পারেনি হোবার্ট। ৪ ওভার বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে যায় মেলবোর্ন।
৩ ওভারে ৩৩ রান খরচ করে ২ উইকেট নিয়েছেন রিশাদ। তৃতীয় ওভারে খরুচে বোলিংয়ের পর তাকে আর আক্রমণে আনেননি হোবার্ট অধিনায়ক নাথান এলিস।
ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৯ নম্বরে নেমে ৩ বলে এক বাউন্ডারিতে ৫ রানে অপরাজিত থাকেন রিশাদ। বেন ম্যাকডারমট ৫২ বলে ৬৯, টিম ডেভিড ৩১ বলে ৩১ রান করলে কোনোমতে দেড়শ পার করে হোবার্ট হারিকেন্স।
পরে ষষ্ঠ ওভারে প্রথম আক্রমণে আসেন রিশাদ। তৃতীয় বলে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দেন থমাস রয়েস। পরের ওভারে আরেক ওপেনার জো ক্লার্ককে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচে পরিণত করেন রিশাদ হোসেন।
দুই ওভার শেষে রিশাদের নামের পাশে দাঁড়ায় ১৪ রানে ২ উইকেট। এরপর দশম ওভারে আবার বোলিং করতে এলে তার শেষ তিন বলে দুই ছক্কার সঙ্গে একটি ছক্কা মারেন মার্কাস স্টয়নিস। ওভারে খরচ হয় মোট ১৯ রান।
বাকি সময়ে বোলিং পাননি রিশাদ। হোবার্টের বাকি বোলাররাও আর কোনো উইকেট নিতে পারেননি।
৭ চার ও ২ ছক্কায় ৩১ বলে ৬২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন স্টয়নিস। আরেক অপরাজিত ব্যাটার ক্যাম্পবেল কেলাওয়ে ২৭ বলে করেন ৪১ রান।

আইপিএল নিলামে ১৪ কোটি ২০ লাখ রুপিতে কার্তিক শর্মাকে দলে ভেড়ায় চেন্নাই সুপার কিংস। রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়া ১৯ বছর বয়সী এই উইকেটকিপার ব্যাটারের যাত্রাটা ছিল বন্ধুর-কন্টকময়।
কার্তিকের পরিবার রাজস্থানের ভরতপুরের বাহনেরা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ক্রিকেট প্রশিক্ষণের খরচ জোগাতে পৈতৃক জমি বিক্রি করতে হয়েছিল পরিবারকে। মা নিজের গয়না বিক্রি করেন ছেলের স্বপ্নপূরণে।
কার্তিকের ক্রিকেট যাত্রা সম্পর্কে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিসকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কার্তিকের বাবা মনোজ শর্মা। যেখানে উঠে এসেছে দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই ও তাঁর পরিবারের অদম্য ইচ্ছাশক্তির গল্প।
গোয়ালিয়র এক টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়ে অর্থের অভাবে না খেয়ে থাকতে হয়েছিল কার্তিক ও তাঁর বাবাকে। মনোজ ছেলের সঙ্গে গিয়েছিলেন, ধরে নিয়েছিলেন চার-পাঁচ ম্যাচেই দল বাদ পড়বে- এতদিন থাকার সামর্থ্যই তাঁদের ছিল।
কিন্তু কার্তিকের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে দল ফাইনালে উঠে যায়। তখন হাতে আর টাকা না থাকায় বাবা-ছেলেকে থাকতে হয় আশ্রয়কেন্দ্রে। সেই স্মৃতির স্মরণ করে কার্তিকের বাবা মনোজ আইএএনএসকে বলেন,
‘একদিন তো আমাদের না খেয়েই ঘুমোতে হয়েছিল। ফাইনাল জিতে পুরস্কারের টাকা পাওয়ার পরেই আমরা বাড়ি ফিরতে পেরেছিলাম।’
জমি ও গহণা বিক্রি করার কথা স্বরণ করে মনোজ বলেন,
‘ওটা আমাদের জীবনের খুব কঠিন সময় ছিল, কিন্তু আমরা কখনও কার্তিকের স্বপ্ন ভাঙতে দিইনি। আমার স্ত্রী রাধা ও আমি একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম- যেভাবেই হোক কার্তিককে ক্রিকেটার বানাব।’
কার্তিকের ক্রিকেটীয় প্রতিভা ধরা পড়ে খুব ছোটবেলাতেই। মাত্র আড়াই বছর বয়সে ব্যাট হাতে বল মেরে বাড়ির দু’টি ফটোফ্রেম ভেঙে ফেলেন কার্তিক।
মনোজ নিজেও একসময় ক্রিকেটার ছিলেন, কিন্তু চোটের কারণে তাঁর খেলোয়াড়ি জীবন থেমে যায়। তিনি বলেন,
‘আমি নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারিনি, তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমার সন্তান করবে। আজ যা কল্পনারও ঊর্ধ্বে।’
প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও কার্তিকের পথ মসৃণ ছিল না। অনূর্ধ্ব-১৪ ও অনূর্ধ্ব-১৬ দলে খেলার পর টানা চার বছর দলে জায়গা পাননি। তবুও হাল ছাড়েননি কার্তিক। আইএএনএসকে তিনি বলেন,
‘আমি শুধু খেলে গেছি। বাবা আমাকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিতেন। শেষে অনূর্ধ্ব-১৯, তারপর রঞ্জি ট্রফিতে সুযোগ পাই।’
ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক ভালো পারফরম্যান্সই শেষ পর্যন্ত আইপিএলের দরজা খুলে দেয় কার্তিকের। হঠাৎ খ্যাতি পেলেও মাটিতেই পা রাখছেন তিনি।