৯ অক্টোবর ২০২৫, ৩:১৩ পিএম
গত ক’দিন ধরেই চলছে জোর আলোচনা। শেষ পর্যন্ত ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা (উয়েফা) আনুষ্ঠানিক এক ঘোষণায় তা নিশ্চিত করল। আগামী ২০ ডিসেম্বর লা লিগায় বার্সেলোনা-ভিয়ারিয়ালের ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে।
গত কয়েক বছর ধরেই স্পেনের বাইরে লা লিগার ম্যাচ আয়োজনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে লা লিগা কতৃপক্ষ। বিভিন্ন ফুটবল ফেডারেশনের কড়া আপত্তির মুখেও শেষ পর্যন্ত সফল হয় তারা। মায়ামির হার্ডরক স্টেডিয়ামে ম্যাচটি আয়োজনকে লা লিগার সভাপতি ‘ঐতিহাসিক’ বলছেন।
বার্সেলোনা সভাপতি লাপোর্তাও যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাচ আয়োজনকে ইতিবাচকই বলেছেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ভক্তদের সঙ্গে আবারও যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছি। এ সুযোগের জন্য আমরা লা লিগার কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের ক্লাবের বিশ্বজুড়ে কোটি সমর্থক রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাজার। মায়ামির মতো শহরে অফিশিয়াল ম্যাচ আয়োজন নিঃসন্দেহে হবে এক দারুণ ফুটবল উৎসব।’
আরও পড়ুন
৮২ বছর বয়সে মাঠে নেমে ইতালির গোলরক্ষকের রেকর্ড |
![]() |
তবে কাতালান ক্লাবটিরই সদস্য ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং এমন সিদ্ধান্ত মানতেই পারছেন না। মায়াতি খেলতে যাওয়ার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে বার্সার তারকা এই মিডফিল্ডার বলেন, ‘ওখানে যেতে একেবারেই ভালো লাগছে না আমার। আর আমি এটার সঙ্গে একমত নই। ক্লাবগুলো অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হলেও প্রতিযোগিতার জন্য এটি অন্যায্য। খেলোয়াড়দের জন্যও এটি কঠিন কারণ এর জন্য দীর্ঘ ভ্রমণ করতে হবে ।’
এ বিষয়ে ক্লাবগুলোও তাঁর সঙ্গে একতম হবে বলে মনে করেন ডি ইয়ং, ‘আমরা তো সব সময়ই ম্যাচের সূচি নিয়ে অভিযোগ করি, অতিরিক্ত ভ্রমণ নিয়েও বলি। ক্লাবগুলো এতে অর্থ পাবে, কিন্তু আমি মায়ামিতে লিগ ম্যাচ আয়োজনের সঙ্গে একমত নই। আমার ধারণা, অন্য অনেক ক্লাবও এতে একমত নয়।’
স্পেনে খেলোয়াড়দের সংগঠন ‘এএফই’ লা লিগার এ সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নয়। এএফইয়ের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দেশের বাইরে লিগ ম্যাচ আয়োজন ক্রীড়াকাঠামোয় প্রভাব ফেলে এবং শ্রমিক অধিকার নিয়েও প্রশ্ন তোলে। তাই এমন কোনো উদ্যোগের আগে সব পক্ষের, বিশেষ করে খেলোয়াড়দের সম্মতি প্রয়োজন।’ সংগঠনটি দ্রুতই লা লিগা, বার্সেলোনা ও ভিয়ারিয়ালের সঙ্গে বৈঠক করবে।
No posts available.
এভাবেও হারতে হয়! বাংলাদেশ ফুটবল দল দেখিয়ে দিল কিভাবে নিশ্চিত ড্রয়ের ম্যাচও হাতছাড়া হতে পারে। ভুলে ভরা এক দিনে ধুলিসাৎ হলো এশিয়ান কাপের স্বপ্ন। জাতীয় স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার হংকং, চায়নার বিপক্ষে ৩-৪ ব্যবধানে হেরেছে হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা।
এদিন জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথম গোলের দেখা পান শমিত সোম। ম্যাচের যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে কর্নার থেকে সমতার গোল এনে দেন তিনি। মোরছালিনের কর্নারে ডিফেন্ডারের হেডে বল ভেসে যায় দূরের পোস্টে, সেখান থেকেই হেডে লক্ষ্যভেদ করেন শমিত। সমতার উল্লাসে তখন মুখর পুরো গ্যালারি।
কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি বাংলাদেশের। কিক-অফের পরপরই আক্রমণে উঠে গোল আদায় করে নেয় হংকং। রেফারির শেষ বাঁশির মুহূর্তেই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়।
নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক গোলের পর টি স্পোর্টসকে শমিত সোম বলেন,
“হতাশ কিনা জানি না, তবে গোলটা করতে পেরে খুব এক্সাইটেড ছিলাম। বাংলাদেশের হয়ে গোল করতে পারা অনেক সম্মানের। আমি খুশি হতাম যদি আমার গোল না হতো, কিন্তু আমরা জিততাম। তবে দেশের জন্য গোল করতে পেরে গর্বিত। এই অনুভূতি আমি জীবনে কোনোদিন ভুলব না।”
শেষ মুহূর্তে সমতা ফিরিয়েও জয় হাতছাড়া—বাংলাদেশ কোথায় তাল হারাল? শমিতের ব্যাখ্যা,
“পজিটিভ দিক হলো আগে কখনো চিন্তা করা যেত না ১-৩ পিছিয়ে থেকেও আমরা ফিরে আসব। আমাদের দলে অনেক ক্যারেক্টার আছে, অনেক প্যাশন আছে। আমরা হতাশ হব না। এটা একটা ফাউন্ডেশন—এখান থেকে আমরা শিখব।”
ডিফেন্সে দুর্বলতা নিয়েও খোলাখুলি মত দেন শমিত,
“সিঙ্গাপুরের বিপক্ষেও একইভাবে গোল খেয়েছিলাম। এসব থেকে শিক্ষা নিতে হবে। ইজি গোল হজম করলে ম্যাচ জেতা যায় না। আমাদের আরও শৃঙ্খল হতে হবে, বিশেষ করে ব্যাকলাইনে। সবার দায়িত্ব আছে। এটা ফুটবল—আপস অ্যান্ড ডাউনস থাকবেই। গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা শিখে এগোব।”
শেষে বাংলাদেশি সমর্থকদের উদ্দেশে কানাডা প্রিমিয়ার লিগে খেলা এই তারকা বলেন,
“আমরা সবাই হতাশ, কারণ ফ্যানদের জেতার আনন্দ দিতে পারিনি। এবার পারিনি, তবে সামনেরবার আমরা জিতব ইনশাআল্লাহ।”
বেদনার রাতটা দীর্ঘায়িত হতে দেননি বাংলাদেশের মেয়েরা। পল্টনের জাতীয় স্টেডিয়াম যখন হতাশায় নিমজ্জিত; হংকং, চায়নার বিপক্ষে হেরে স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় নীল হামজা চৌধুরী ও জামাল ভুঁইয়ারা, তখনই আরব আমিরাতে জয়োল্লাস করেছে বাংলাদেশ নারী অনূর্ধ্ব-১৭ দল। অর্পিতা বিশ্বাসরা দেশকে এনে দিয়েছেন শোক ভোলানো উপলক্ষ্য।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ফিফা প্রীতি ম্যাচে বৃহস্পতিবার রাতে ৩-০ গোলে জয় পেয়েছে কোচ সাইফুল বারী টিটুর দল। প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে হয় অন্য গোল।
বাংলাদেশের হয়ে কে গোল করেছেন সেটি জানা যায়নি। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার না হওয়ায় সাংবাদিকদের নিউজ করার একমাত্র অবলম্বন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর বাফুফের বিজ্ঞপ্তিতে ৩-০ গোলে জয়ের কথা থাকলেও কত মিনিটে বা কে গোল করেছেন তা উল্লেখ নেই।
একদিন আগে সিরিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলে জেতে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে জোড়া গোল করেন আলপি আক্তার। দলের সঙ্গে থাকা মিডিয়া অফিসার সে তথ্য জানান ম্যাচ শেষ হওয়ার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর। ওই ম্যাচের পর মুঠোফোনে বার্তা পাঠিয়েও জানা যায়নি গোলস্কোরারের নাম।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব -১৭ দল আগামীকাল পৌঁছাবে জর্ডান। এএফসি নারী অনূর্ধ্ব-১৭ এশিয়ান কাপ বাছাই খেলবে লাল সবুজের কিশোরীরা। তার আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুই ম্যাচ জিতে আত্মবিশ্বাস সঙ্গী করেছে আলপি, সুরভী আকন্দ প্রীতিরা। এবার মূল প্রতিযোগিতায় দারুণ কিছুর প্রত্যাশায় দেশের ফুটবলপ্রেমিরা।
আবারও শেষ মুহূর্তের গোলে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের। শেষ হুইসেলের কয়েক সেকেন্ড আগে মূল্যবান এক পয়েন্ট খোয়ায় হাভিয়ের কাবরেরার দল। এশিয়ান কাপে লাল সবুজ দলের খেলার স্বপ্ন এখন মৃতুপ্রায়। ‘সি’ গ্রুপে পয়েন্ট টেবিলে তলানিতে জামাল ভূঁইয়ার দল। শীর্ষস্থান আরও মজবুত হংকং, চায়নার।
এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বৃহস্পতিবার হংকং, চায়নার বিপক্ষে ৩-৪ গোলে হারে বাংলাদেশ। অথচ ম্যাচের লাগাম ছিল স্বাগকিতদেরই হাতে। ম্যাচঘড়ির ১৩ মিনিটে দলকে লিড এনে দেন হামজা চৌধুরী। এরপর একটা সময় ১-৩ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে দল।
জিমিয়ে পড়া দলের ছন্দ ফেরান বদলি হিসেবে নামা অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া, শমিত সোম ও ফাহামিদুল ইসলাম। পরপর দুই গোল শোধ ৩-৩ সমতায় আনেন শেখ মোরছালিন ও শমিত সোম। কিন্তু রেফারির শেষ বাঁশির কয়েক সেকেন্ড আগে স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে বাংলাদেশের।
এ ম্যাচে শুরুর একাদশ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও আগের মতো আজও সমালোচনা গায়ে মাখেননি কোচ কাবরেরা। উল্টো জামাল ও শমিতদের নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিলেন, তার যৌক্তিকতা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে শমিতকে নিয়ে কাবরেরা বলেন,
'সে দুই মাস ধরে ইনজুরিতে ছিল। দেশেও আসছে শেষ মুহূর্তে।'
শমিত পুরো ম্যাচ খেলার যোগ্য ছিলেন না বলে ইঙ্গিত দেন কোচ। যদিও দেশে আসার আগের দিন কানাডা প্রিমিয়ার লিগে নিজ দলের শুরুর একাদশে ছিলেন শমিত।
মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের শুরুর একাদশে জায়ান আহমেদের না থাকাও ছিল আশ্চর্যের। তার মধ্যে ডিফেন্ডারদের ছিল চোখে পড়ার মতো ভুল। সব মিলিয়ে কোনো কিছুই পক্ষে ছিল না কাবরেরার। ম্যাচ হারার দায় নিজের কাঁধে নেবেন কি না জানতে চাইলে বলেন,
'দায় আমার যেমন আছে দলেরও আছে।'
হংকং, চায়নার বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচ খেলতে কাল দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ।
ম্যাচ ‘ড্র’য়ের দিকেই এগোচ্ছিল। তবে দৃশ্যপট বদলে যায় শেষ মিনিটে। যোগ করা সময়ের নবম মিনিটে শমিত সোমের গোলে ৩-৩ সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। তবে রেফারির শেষ বাঁশির কয়েক সেকেন্ড আগে এগিয়ে যায় হংকং, চায়না । তাতে এএফসি এশিয়ান কাপে খেলার স্বপ্ন আরও ধূসর হয়ে গেল জামাল ভূঁইয়াদের ।
বাংলাদেশকে ৪–৩ গোলে হারিয়ে বাছাইয়ে নিজের অবস্থান আরও সমৃদ্ধ করলো হংকং, চায়না। এ নিয়ে তিন ম্যাচে সাত পয়েন্ট অ্যাশলে ওয়েস্টউডের দলের। ১ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে বাংলাদেশ।
জাতীয় স্টেডিয়ামে এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের শুরুতেই হামজা চৌধুরীর গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। প্রথমার্ধের অন্তিমলগ্নে সমতায় ফেরে হংকং। দ্বিতীয়ার্ধে টাইগার ঢেরায় রাজত্ব করে অতিথি দল। ৫০ মিনিটে এগিয়ে থেকে লিড দ্বিগুণ করা দলটি ৭৪ মিনিটে পায় তৃতীয় গোলের দেখা। যদিও পূর্ণসময়ের ৬ মিনিট আগে একটি গোল শোধ করেন বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড মোরছালিন।
নাটক কিন্তু এখানেই শেষ নয়—যোগ করা সময়ে হয় ম্যাচের বাঁকবদল। ৯৮ মিনিটে কর্নার থেকে ছুটে আসা বলে দারুণ হেডে গোল করে বসেন শমিত সোম। কয়েক সেকেন্ড আগে এগিয়ে যায় হংকং।
এদিন ম্যাচঘড়ির ১৩ মিনিটে বক্সের বাঁ প্রান্তে ফ্রি-কিক পায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে হামজার বাঁকানো ফ্রি-কিক সরাসরি খুঁজে নেয় জাল। হেডে ক্লিয়ার করতে চেয়েছিলেন হংকং, চায়নার ফরোয়ার্ড মাচ অর। তার চেষ্টা বৃথা যায়। জাতীয় দলের জার্সিতে দ্বিতীয় গোলের দেখা পান হামজা। এর আগে ৪ জুন ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে গোল পেয়েছিলেন তিনি।
প্রথম দশ মিনিট বেশ চাপে ছিল বাংলাদেশ। রেফারির শুরুর বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে স্বাগতিকদের চেপে ধরে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে (বাংলাদেশ থেকে এগিয়ে) এগিয়ে থাকা দলটি। সপ্তম মিনিটেই গোল পেতে পারত অতিথি দল। ফরোয়ার্ড মাত অরের প্লেসিং পোস্ট ঘেঁষে বাইরে যায়। সম্ভাব্য সব ঝুঁকি সুনিপুণ দক্ষতায় সামাল দেন মিতুল মারমা।
৩৫ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় ডান প্রান্ত থেকে আক্রমণে ওঠেন রাকিব। যদিও তার সে চেষ্টা আলোর মুখ দেখেনি। বক্সের ভেতর নেওয়া তার শট ক্লিয়ার করেন হংকং, চায়নার এক ডিফেন্ডার। পরের মিনিটে মিডফিল্ড থেকে ড্রিবলিং করে বল টেনে নেন সাদ উদ্দিন। তার কষ্টও বৃথা যায়।
৩৮তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত হংকং, চায়না। এভারটন কামারগোর দারুণ এক শট নেন গোলমুখে। তার সে নিশানা ধূলিস্যাৎ করে বিপদমুক্ত করেন মিতুল। ১৩ নম্বর জার্সিধারী তরুণ গোলরক্ষক এমন বেশ কিছু শট রুখে দলকে রক্ষা করেন।
৪১ মিনিটে সতীর্থের পাস ধরে নিকোলাস বেনাভিদেস বাংলাদেশের জালে বল জড়ান। তবে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারের বহু আগেই বক্সে ঢুকে পড়েন হংকং ফুটবলার। মুহূর্তেই অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি। আরও একবার হতাশ হয় হংকং।
অতিথিদের কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত আসে যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে। নিজেদের অর্ধে জটলার মধ্যে বল ক্লিয়ার করার জন্য হেড দেন মিডফিল্ডার রাকিব হোসেন। উপকারের পরিবর্তে বিপদ বাড়ান তিনি। বলটি পড়ে বারের কয়েক গজ সামনে। গোলপোস্টের সামনে থাকা এভারটন কামারগো স্রেফ পা ছুঁইয়েই বল জালে জড়ান।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লিড দ্বিগুণ করে হংকং। এখানেও অবদান ছিল বাংলাদেশের। ভুল পাসের গ্যাড়াকলে পড়ে দল। ৫০ মিনিটে বাংলাদেশের অফসাইড ট্র্যাপ ভেদ করে হংকংকে এগিয়ে দেন রাফায়েল মেরকিস।
উপায়ন্ত না পেয়ে ৫৭তম মিনিটে একসঙ্গে দুটি বদল আনেন হাভিয়ের কাবরেরা। মাঠে নামান শমিত সোম, জামাল ভূঁইয়া ও ফাহামিদুল ইসলামকে। উঠিয়ে নেন সোহেল রানা ও ফয়সাল আহমেদকে।
৭৪ মিনিটে আরও পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ৩–১ব্যবধানে এগিয়ে যায় হংকং। সাদ উদ্দিনের দুই পায়ের মাঝ দিয়ে বল চলে যায় গোলমুখে; ফাঁকায় থাকা মেরকিস সহজেই পাঠান জালে। তবে ৮৪ মিনিটে খেলা কিছুটা জমিয়ে দেন মোরছালিন—আরও একটি গোল শোধ করেন তিনি।
সব উত্তেজনা বোধহয় বরাদ্দ ছিল যোগ করা সময়ের জন্য। ৯৮তম মিনিটে ম্যাচে সমতা ফেরে বাংলাদেশ। কর্নার থেকে আসা বলে বিদ্যুতগতির হেডে বাংলাদেশকে ৩–৩ সমতায় এনে দেন কানাডার ঘরোয়া লিগে খেলা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শমিত। জাতীয় দলের জার্সিতে এটি ছিল তাঁর প্রথম গোল।
সমতা ফিরিয়ে আনতে না আনতেই আবারও গোল হজম করে বাংলাদেশ। বাঁশি বাজানোর ঠিক আগ মুহূর্তে দলকে জয় এনে দেন মেরকিস। হংকংকে তিন পয়েন্ট এনে দেওয়া সেই গোলে তিনি পূর্ণ করেন হ্যাটট্রিক।
জাতীয় স্টেডিয়াম কি হামজা চৌধুরীর জন্য পয়া ভেন্যু? হংকং, চায়নার বিপক্ষে আজকের ম্যাচের পর তা বলা-ই যায়।
লাল-সবুজ জার্সিতে এ নিয়ে চতুর্থ ম্যাচ খেললেন হামজা। চার ম্যাচে দুই গোল বাংলাদেশের নম্বর এইটের।
এএফসি বাছাইয়ের ম্যাচে আজ ১৩ মিনিটে বক্সের বাঁ প্রান্তে ফ্রি-কিক পায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে হামজার বাঁকানো ফ্রি-কিক সরাসরি খুঁজে নেয় জাল। হেডে ক্লিয়ার করতে চেয়েছিলেন হংকং, চায়নার ফরোয়ার্ড মাচ অর। কিন্তু তার চেষ্টা বৃথা যায়।
বাংলাদেশের জার্সিতে হামজার অভিষেক ভারতের বিপক্ষে। এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে গত ২৫ মার্চ শিলংয়ে প্রথমবার দেশের জার্সি গায়ে জড়ান ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপে খেলা এই তারকা।
গত জুনে দেশের হয়ে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলেন হামজা। প্রায় চার বছর পর ৪ জুন জাতীয় স্টেডিয়ামে ফেরে ফুটবল। ভুটানের বিপক্ষে ওই ম্যাচে ঘরের মাঠে অভিষেক হয় হামজার। ২-০ গোলে জেতা ম্যাচে গোল পান ডিফেন্সিভ এই মিডফিল্ডার। জামাল ভূঁইয়ার কর্নারে হেডে জালে বল জড়ান ২৮ বছর বয়সি এই তারকা।
এরপর ১০ জুন এএফসি বাছাইয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। ১-২ ব্যবধানে সেদিন হেরে যায় লাল-সবুজের দল। ওই ম্যাচে শেষদিকে সুযোগ কাজে লাগাতে না পারার আক্ষেপে পুড়েছিলেন হামজা।
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে গোল করতে না পেরে এখনও মন ভারী তার। মঙ্গলবার জাতীয় স্টেডিয়ামেই সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, “ওই ম্যাচের ভিডিও দেখলে এখনও খারাপ লাগে। চেষ্টা করব, পরেরবার সুযোগ কাজে লাগাতে।”
কথা রেখেছেন হামজা — হংকংয়ের বিপক্ষে গোল করেই আক্ষেপ মিটিয়েছেন।
আজ এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে হংকং, চায়নার ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে হামজাকে নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন অতিথি কোচ অ্যাশলে ওয়েস্টউড। জানতে চাওয়া হয়, হামজা চৌধুরী তার দলে খেললে কোন পজিশনে খেলাতেন?
উত্তরে ব্রিটিশ কোচ বলেন, “বেঞ্চে।” সেই ‘বেঞ্চের খেলোয়াড়’ই শুরুতে চুপ করিয়ে দিল হংকং শিবিরকে।