মৌসুমের হাল যতই খারাপ হোক, পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা সাউথহ্যাম্পটনের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার সিটির জয়কে অবধারিতই মনে হচ্ছিল। তবে পুঁচকে দলের কাছেই হোঁচট খেয়েছে দলটি। ফলে কঠিন হয়েছে শীর্ষ চারে থাকার লড়াই। পেপ গার্দিওলার কাছে তাই মনে হচ্ছে, বড় একটা সুযোগ নষ্ট হয়েছে তাদের।
প্রিমিয়ার লিগের গেল শনিবার সাউথহ্যাম্পটনের ০-০ গোলে ড্র করে দুই রাউন্ড হাতে রেখে নিজেদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন করে তুলেছে সিটি (৬৫ পয়েন্টে তৃতীয়)। আগামী মৌসুমে সরাসরি চ্যম্পিয়ন্স লিগে খেলতে হলে থাকবে হবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ চারের মধ্যে। আর সেখানে তাদের লড়তে হবে এখন সমান ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে তাদের পরের তিনটি স্থানে থাকা নিউক্যাসল ইউনাইটেড (চতুর্থ), চেলসি (পঞ্চম), অ্যাস্টন ভিলা (ষষ্ঠ) ও ৬১ পয়েন্ট পাওয়া নটিংহ্যাম ফরেস্টের (সপ্তম) সাথে।
সামনের দুই ম্যাচে পয়েন্ট হারালে যে সেরা পাঁচে থাকাটাও হয়ে যাবে কঠিন, যা অনুভব করতে পারছেন গার্দিওলা।
“ফলাফলটা অবশ্যই আমাদের জন্য একটা সুযোগ মিস করার মত ব্যাপার, আমরা সেটা জানি। তবে যা হওয়ার তার ঘটে গেছে। এখন আমাদের (এফএ কাপ) ফাইনালের প্রস্তুতি নিতে হবে, এরপর (লিগে) বোর্নমাউথ ও ফুলহ্যাম পরীক্ষার জন্য।”
সিটির এই ম্যাচের প্রতিপক্ষ সাউথহ্যাম্পটন ৩৬ ম্যাচে মাত্র ১২ পয়েন্ট পেয়ে আছে সবার নিচে। সিটিতে নয় বছরের ক্যারিয়ারে এই প্রথম কোনও পয়েন্ট টেবিলের তলানির দলের সাথে জয় পেতে ব্যর্থ হয়েছেন গার্দিওলা। এই ধাক্কা সামলে আগামী ১৭মে ওয়েম্বলিতে ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে এফএ কাপ ফাইনাল খেলবে সিটি।
গার্দিওলা অবশ্য বলছেন, এমন কিছুর আগাম প্রস্তুতি তার ছিলই।
“আমাদের এখনও তিনটি ম্যাচ বাকি। এফএ কাপ ও দুইটি লিগ ম্যাচ, আর আমি এক মাস আগেই জানতাম যে আমাদের একদম শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে যেতে হবে।”
১১ মে ২০২৫, ১০:৩২ পিএম
১১ মে ২০২৫, ৬:২৮ পিএম
১১ মে ২০২৫, ২:৪৮ পিএম
ম্যাচের শুরুটা দেখে মনে হচ্ছিল, মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে ভিন্ন ছন্দেই হাজির রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথম দিকে এলেমেলো ফুটবল খেলা বার্সেলোনা খুব দ্রুতই নিজেদের গুছিয়ে নিল। বিরতির আগেই চার গোল খেয়ে বসা রিয়ালের হয়ে একাই লড়ে গেলেন কিলিয়ান এমবাপে, করলেন দারুণ এক হ্যাটট্রিক। তবে কার্লো আনচেলত্তির দলের রক্ষণভাগের ভুলে যাওয়ার মত এক ম্যাচে শেষ হাসি হাসল ইয়ামাল-রাফিনিয়ারাই। আর তাতে চলে গেল লা লিগা জয়ের আরও কাছে।
লা লিগায় রোববারের এল ক্লাসিকোর মহারণে আরও একবার বার্সেলোনার কাছে হেরেছে রিয়াল। ৪-৩ গোলে দুর্দান্ত জয়ে মৌসুমে রিয়ালকে টানা চার ম্যাচে হারের তেতো স্বাদ উপহার দিল ফ্লিকের দল।
আরও পড়ুন
‘ইয়ামাল বাচ্চা না, এমন পারফরম্যান্সই চায় বার্সা’ |
![]() |
এই জয়ে বার্সেলোনার লিগ জয়ও প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। দুই ম্যাচ হাতে রেখে ৮২ পয়েন্ট কাতালান ক্লাবটির। আর দুইয়ে থাকা রিয়ালের অর্জন ৭৫ পয়েন্ট।
লা লিগায় বড় ধরণের নাটকীয়তা না দেখা দিলে এই হারে নিশ্চিত হয়ে গেছে রিয়ালের শিরোপাহীন মৌসুম। দুই দফায় রিয়ালকে অসাধারণ সব সাফল্য এনে দেওয়া আনচেলত্তির জন্য শেষটা হতে যাচ্ছে ভুলে যাওয়ার মতোই।
ম্যাচে রিয়ালের শুরুটা অবশ্য হয় স্বপ্নময়। পাউ কুবার্সির দুর্বল ব্যাকপাস থেকে বল পেয়ে গতিতে বক্সের ভেতর প্রবেশ করেন এমবাপে। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তাকে ফাউল করে বসেন গোলকিপার ওয়েজেচ সেজনি। পেনাল্টির বাঁশি সাথে সাথেই বাজিয়ে দেন রেফারি। ফরাসি তারকার বাঁদিকে নেওয়া নিচু শটে হাত লাগালেও আটকাতে পারেননি সেজনি।
এটি ছিল চলতি মৌসুমে লিগে এমবাপের ২৫তম গোল। লিড নিয়ে রিয়াল অব্যাহত রাখে ইতিবাচক ফুটবল। একের পর পর আক্রমণ শানায় দলটি। বিপরীতে ফ্লিকের দল গুছিয়ে নিতেই নষ্ট করে কিছুটা সময়।
নবম মিনিটে বলার মত প্রথম আক্রমণে বক্সের ভেতর কঠিন এঙ্গেল থেকে শট নিয়েছিলেন এরিক গার্সিয়া, তবে রিয়ালের জন্য তা বিপদের কারণ হয়নি।
১৪তম মিনিটে ফের বার্সেলোনার জালে বল, আর এবারও স্কোরার সেই এমবাপেই। তবে বল বানিয়ে দেওয়ার একটা বড় কৃতিত্ব পাবেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। প্রায় মাঝমাঠ থেকে দারুণ এক ডিফেন্সচেড়া পাসে খুঁজে নেন ফ্রানের বিশ্বকাপ জয়ী তারকাকে। বল রিসিভ করে জায়গা বানিয়ে সেজনিকে পরাস্ত করে রিয়ালের লিড বড় করেন এমবাপে।
গোলের লক্ষ্যে প্রথম দুই শট থেকেই জালের দেখা পাওয়া রিয়ালের আক্রমণের সামনে সেই সময়ে বেকায়দায় ছিল বার্সেলোনা। ১৮তম মিনিটে বক্সের একটু বাইরে থেকে লামিন ইয়ামালের কার্লিং শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ব্লক করেন থিবো কোর্তোয়া।
পরের মিনিটে আরেকটি ভালো সেভ দিলেও শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয় কোর্তোয়াকে। ফেররান তরেসের কর্নার কিক থেকে হেডারে জাল খুঁজে নেন এরিক গার্সিয়া, যিনি কোপা দেল রের ফাইনালেও রিয়ালের বিপক্ষে গোল করেছিলেন।
আরও পড়ুন
আবেগে ভেসে, চোখের জলে বায়ার্নকে বিদায় জানালেন কিংবদন্তি মুলার |
![]() |
এক গোল শোধ দিয়ে ক্রমেই রিয়ালকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। খেই হারিয়ে ফেলা রিয়ালের খর্বশক্তির রক্ষণের জন্য গতিময় ইয়ামালকে সামলানো শুরু থেকেই ছিল কঠিন। ৩২তম মিনিটে তরেসের পাস থেকে কাট করে বক্সের ভেতর বাঁদিক থেকে বা পায়ের কোনাকুনি এক শটে গোল করেন স্প্যানিশ এই উইঙ্গার, লা লিগায় এটি এই মৌসুমে ইয়ামালের সপ্তম গোল।
পরপর দুই গোলের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে ফের গোল হজম করে বসে রিয়াল, যেখানে ফুটে ওঠে তাদের ছন্দপতন। বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন এমবাপে, তবে ঠিক তার সামনে দাঁড়িয়ে যান সতীর্থ লুকাস ভাজকেস। দুজনের ভুল বোঝাবুঝি থেকে পাল্টা আক্রমণে বল পেয়ে যান রাফিনিয়া। নিখুঁত ফিনিশিংয়ে প্রথমবারের মত বার্সেলোনাকে লিড এনে দেন ব্রাজিল ফরোয়ার্ড।
শুরুতে ঝলক দেখানো রিয়াল এরপর আশা জাগিয়েছিল সমতা টানার। পেনাল্টি আদায় করেছিলেন এমবাপে। তবে তিনি নিজেই অফসাইড থাকায় সেটা আর মেলেনি।
উল্টো ৪৫তম মিনিটে আরেক গোল খেয়ে বসে রিয়াল। এবারও কেন্দ্রবিন্দু সেই ভাজকেসই। রিয়াল অধিনায়কের কাছ থেকে বক্সের বাইরে বল কেড়ে রাফিনিয়াকে পাস বাড়ান তরেস, ফাঁকায় থাকা দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই উইঙ্গারের সমস্যা হয়নি জালের দেখা পেতে। লা লিগায় এটি মৌসুমে রাফিনিয়ার ১৮তম গোল ছিল।
অবিশ্বাস্য এক প্রথমার্ধে রিয়াল শুরুর দুই গোলের পর লক্ষ্যেই আর শটই রাখতে পারেনি। বিপরীতে ১১টি শট নিয়ে ৭টি লক্ষ্যে রাখে বার্সেলোনা।
বিরতির পরও একই ছন্দ ধরে রাখে বার্সেলোনা। রিয়ালের জোড়াতালি দেওয়া রক্ষণভাগকে আরও একবার বিপদে ফেলেই দিচ্ছিলেন রাফিনিয়া। ৫৩তম মিনিটে বাঁদিক থেকে তার পাস থেকে ফাঁকায় দাঁড়ানো ইয়ামাল টোকা দিয়ে বল জালে পাঠালেও অফসাইডের কারণে আর মেলেনি গোল।
ম্যাচের ধারার বিপরীতে এর তিন মিনিট পর একটা সুযোগ পেয়েছিলেন এমবাপে, তবে শট উঁচিয়ে মেরে হতাশ করেন রিয়ালকে। পাল্টা আক্রমণ থেকে এরপর দুরন্ত গতিতে এগিয়ে ডান দিক থেকে ক্রস বাড়ানোর চেষ্টা করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, তবে সেটা বাধাপ্রাপ্ত হয় আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেনের ক্লিয়ারিংয়ে।
শেষ পর্যন্ত এই জুটির হাত ধরেই গোল পায় রিয়াল। আরও একটি কাউন্টার এটাক থেকে বল পেয়ে দুজন এগিয়ে যান বার্সেলোনার বক্সে। নিজের সামনে সুযোগ থাকলেও গোলের সামনে এমবাপেকে দিয়ে হ্যাটট্রিক করান ভিনিসিয়ুস। ২৭তম গোলের মাধ্যমে লা লিগার সর্বোচ্চ গোলস্কোরারের তালিকায় রবার্ট লেভানদভস্কির চেয়ে দুই গোলে এগিয়ে যান ফরাসি ফরোয়ার্ড।
৭৪তম মিনিটে স্কোরলাইন ৫-৩ করার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন রাফিনিয়া। তার সামনেও ছিল হ্যাটট্রিকের আশা। ইয়ামালের ক্রসে ছিলেনও ভালো পজিশনে, তবে ছয় গজের ভেতর থেকে বল পোস্টের ওপর দিয়ে মেরে টিকিয়ে রাখেন রিয়ালের ম্যাচে ফেরার আশা।
আরও পড়ুন
ড্র করে সুযোগ মিসের হতাশায় গার্দিওলা |
![]() |
জমে ওঠা ম্যাচের ৮২তম মিনিটে বার্সেলোনা শিবিরে জোর দাবি ওঠে পেনাল্টির। বক্সের ভেতর অহেলিয়া চুয়ামেনির সম্ভাব্য হ্যান্ডবল সময় নিয়ে স্ক্রিনে দেখে রেফারি নাকচ করেন পেনাল্টির আবেদন। হাফ ছেঁড়ে বাচে রিয়াল।
৮৮তম মিনিটে ভিনিসিয়ুসের বদলি হিসেবে নামা তরুণ ফরোয়ার্ড ভিক্টর মুনজ প্রথম টাচেই পেয়েছিলেন হিরো হওয়ার সুযোগ। তবে লক্ষ্যে শট রাখলেই গোল, এমন পজিশন থেকে তিনি বল মেরে দেন পোস্টের বাইরে।
গোলের জন্য মরিয়া রিয়ালকে আরও একবার পাল্টা আক্রমণে চমকে দেয় বার্সেলোনা। ৯৫তম মিনিটে কাট করে বক্সে ঢুকে কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠান ফেরমিন লোপেজ। তবে হ্যান্ডবল হওয়ায় বাতিল হয় সেই গোল। বাকি সময়ে কোনো দলই পারেনি বলার মত আর সুযোগ তৈরি করতে।
বায়ার্ন মিউনিখের শিরোপা নিশ্চিত হয়ে গেছে আরও আগেই। বরুশিয়ার মনচেনগ্লাডবাখের বিপক্ষে ম্যাচে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনা হল কানায় কানায় পূর্ণ। হাতে পোস্টার, গলায় স্কার্ফ – সবকিছুই ছিল টমাস মুলারময়। ‘ডানকে টমাস’ লেখা বিশাল ব্যানারও দৃশ্যমান হল। ৭৫ হাজার দর্শক যে এদিন হাজির হয়েছিলেন ক্লাবের এক মহীরুহকে বিদায় জানাতে, যিনি বায়ার্নের প্রতিশব্দ হয়ে গিয়েছিলেন৷ খেলোয়াড় হিসেবে তাকে বিদায় জানাতে তাই আবেগ ধরে রাখাটা কঠিনই ছিল সমর্থকদের জন্য।
ম্যাচ শুরু হতেই গ্যালারি থেকে ভেসে আসে ধ্বনি – চলো মুলার, একটা গোল দাও! ৫৬তম মিনিটে গোলের একটি বড় সুযোগ মিস করেন মুলার। সবাই চেয়েছিল একটা স্বপ্নময় বিদায়ী গোল, তবে এদিনের গল্পটা যেন অন্যভাবেই হওয়ার ছিল। যেখানে ওই গোল, অ্যাসিস্ট, শিরোপা এসব ছাপিয়ে একজন খেলোয়াড়কে কেবল দর্শকরা উদযাপন করেছেন। স্মরণ করেছেন ক্লাবের জন্য ‘রেইউমডেটর’ মুলারের ঘামে-নিবেদনের দীর্ঘ এক অধ্যায়।
আরও পড়ুন
ড্র করে সুযোগ মিসের হতাশায় গার্দিওলা |
![]() |
৮৩তম মিনিটে বদলি হিসেবে তুলে নেওয়ার জন্য বোর্ডে জ্বলে ওঠে ২৫ নম্বর, যা মানে মুলারের বিদায়ের ক্ষণ হয়ে গেছে। মাঠ ছাড়ার সময় দর্শকরা উঠে দাঁড়িয়ে সম্মান জানান সাবেক জার্মানি ফরোয়ার্ডকে৷ সমবেত কণ্ঠে তারা গান গেয়ে ওঠেন, ‘সারা জীবন আমাদের হৃদয়ে থাকবে মুলার।’
এর মধ্য দিয়ে বায়ার্নের সঙ্গে মুলারের ২৫ বছরের সম্পর্কের ইতি ঘটে যায়। মনচেনগ্লাডবাখের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল ক্লাবটির জার্সিতে তার ৭৫০তম।
মাঠ ছাড়ার পর মুলার দাঁড়িয়ে হাত নাড়িয়ে স্টেডিয়ামের চারদিকে তাকাচ্ছিলেন, ঠিক যেভাবে প্রিয় ঠিকানা ছেড়ে যাওয়ার সময় সবাই স্মৃতি হাতড়ে বেড়ায়। ম্যাচটি দেখতে মুলারের স্ত্রী লিসা ও বাবা-মা একসাথে গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন।
মুলার তার বিদায়ী বক্তব্যে সতীর্থদের, বিশেষ করে আরিয়েন রোবেন, ফ্রাঙ্ক রিবেরি, রবার্ট লেভানদভস্কি, হ্যারি কেইনের সঙ্গে তার দারুণ সম্পর্কের কথা স্মরণ করেন। তিনি ক্লাবের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন
মদ্রিচের সান্নিধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করছেন গুলের |
![]() |
“আপনাদের জন্য গোল করার অনুভূতিটা আমার জন্য অমূল্য ছিল। এই ক্লাবে অনেকের সঙ্গেই আমার অসাধারণ সব মুহূর্ত কেটেছে। আমি এই ক্লাবের ভবিষ্যতের দিকে যখন তাকাই, তখন আমি দেখি একদল তরুণ, ক্ষুধার্ত খেলোয়াড়দের, যারা হৃদয় দিয়ে বায়ার্নের জন্য খেলছে। আমরা ভালো অবস্থানে আছি।”
কথাগুলো বলার সময় যদিও মুলারের চোখে জল ছিল না, তবুও ভেতরের হাহাকারটা ছিল স্পষ্ট। সেটা সামলেই বললেন মনের কথা। “আমার জন্য যদি কারও চোখে পানি আসে, তা যেন শুধুই আনন্দের হয়। আমি আপনাদের সবাইকে ভালোবাসি।”
হতাশাময় এক মৌসুমে সেভিয়া নিজেদের ছায়া হয়েই আছেন। একের পর এক বাজে পারফরম্যান্স করা দলটি নিজেদের শেষ ম্যাচেও গেছে হেরে। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ক্লাবটির সমর্থকরা। ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমণ করেছেন ক্লাবের ট্রেনিং গ্রাউন্ডে।
লা লিগায় শনিবার রাতে সেল্টা ভিগোর কাছে সেভিয়ার ৩-২ গোলে হারের পর এই ঘটনা ঘটে। একদল সহিংস সমর্থক একটি একটি মেটালের গেট ভেঙে জোরপূর্বক ট্রেনিং গ্রাউন্ডে ঢুকে পড়েন। স্থানীয় সময় মধ্যরাতের দিকে ক্লাবের সীমানা ছেড়ে চলে যায়।
সেভিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার কারণে খেলোয়াড়দেরকে ট্রেনিং গ্রাউন্ড থেকে বের হতে দেওয়া হয়নি এবং রাতে রাখা হয় সেখানেই।
স্পেনের ক্যাডেনা সের রেডিও জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সবচেয়ে উগ্র সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য রাবার বুলেট ব্যবহার করতে বাধ্য হয়।
লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের সেভিয়ার অবস্থান এখন ১৬তম। অবনমন অঞ্চলে থাকা ক্লাবগুলোর চেয়ে এগিয়ে মাত্র ছয় পয়েন্টে। হাতে ম্যাচ বাকি আর তিনটি।
প্রতিভার কারণে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার আগেই পড়ে গিয়েছিল হইচই। আর্দা গুলের তাতে পেয়ে যান ‘তুর্কিশ মেসি’ খেতাবও। তবে স্প্যানিশ ক্লাবটিতে নিয়মিত খেলার সুযোগ মিলছে না তার। অবশ্য সতীর্থ হিসেবে লুকা মদ্রিচের মত গ্রেট মিডফিল্ডারকে পাওয়ায় শেখার ভিতটাও হচ্ছে মজবুত। গুলের মনে করেন, ক্রোয়াট তারকা তার সামর্থ্যে আস্থা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
রিয়ালে এটি গুলেরের দ্বিতীয় মৌসুম। আক্রমণভাগে কিলিয়ান এমবাপে, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগো, ব্রাহিমরা থাকায় একাদশে নিয়মিত হতে পারছেন না তরুণ এই ফরোয়ার্ড। তবে এর মাঝেও যখন খেলছেন, বারবার নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তবে বেশি বেশি খেলার সুযোগ না পেলে সেটা আত্মবিশ্বাসে ধরাতে পারে চিড়।
তবে প্লেয়ারস ট্রিবিউনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গুলের বলেছেন, মদ্রিচের কারণে তিনি নিজের ওপর বিশ্বাস হারাননি।
“সাধারণত একটা বড় ম্যাচে গোল করলে বা ব্যবধান গড়ে দেওয়া কিছু করলে আপনি অনুভব করবেন যে আপনি একটা নতুন ক্লাবে এসেছেন। তবে আমার জন্য সেই মুহূর্তটি আসলে ছিল যখন আমরা একটা ম্যাচে বাক্সের বাইরে একটি ফ্রি কিক পাই…আমি বেঞ্চে ছিলাম, মদ্রিচ এসে বললেন যে এটা আমার নেওয়া উচিত। এমন ছোট ছোট ব্যাপারগুলো অনেক অর্থ বহন করে।”
এই মৌসুমে মোট ৩৫টি ম্যাচ খেলেছেন গুলের, যার অধিকাংশই বদলি হিসেবে। ১ হাজার ৪৭১ মিনিট খেলে গোল করেছেন ৫টি, আর অ্যাসিস্ট ৯টি। সাম্প্রতিক সময়ে বক্সের বাইরে থেকে রিয়ালের ফ্রি-কিক বা কর্নার নেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকছেন ২০ বছর বয়সী গুলেরই।
এখানেও মদ্রিচের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন গুলের।
“সম্প্রতি আরও একটি ম্যাচ ছিল যেখানে বিরতির আগে আমি বেঞ্চে ছিলাম। মদ্রিচ আমাকে বললেন, ‘প্রস্তুত হয়ে যাও, তোমাকে মাঠে নামা দরকার।’ এই কিংবদন্তি সর্বকালের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার, আর এখন তিনি আমাকে ম্যাচের ভাগ্য ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য আস্থা রাখছেন করছেন। এটা আমাকে খুব স্পর্শ করেছিল।”
দশ বছর ধরে না জেতা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই মৌসুমে পথচলা ছিল দুর্দান্তই। তবে ইন্তার মিলানের কাছে সেমিফাইনালে হেরে বার্সেলোনার বিদায় ঘণ্টা বেজেছে ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে। তবে ভালোভাবেই টিকে আছে লা লিগা জয়ের আশা। কোচ হান্সি ফ্লিকের কাছে স্পেনের সেরা হওয়াটাই বেশি গৌরবময় মনে হচ্ছে। তার মতে, আসল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই লা লিগাতেই হয়।
সেই ২০১৫ সালে সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল বার্সেলোনা। এর মাঝে লা লিগা কয়েকবার জিতলেও সমর্থকদের একটা হাহাকার রয়েছে ইউরোপিয়ান শিরোপা জেতা নিয়ে। এই মৌসুমে সেমিফাইনাল পর্যন্ত সেই লড়াইয়ে বেশ এগিয়েই ছিল ফ্লিকের দল। তবে ইন্তারের কাছে ৭-৬ ব্যবধানে হেরে থামতে হয়েছে ফাইনালের আগেই। ফলে কোপা দেল রে বাদে বার্সেলোনার শিরোপা জয়ের আশা কেবল লা লিগায়, যেখানে তারা রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে চার পয়েন্টে এগিয়ে আছে শীর্ষে।
আরও পড়ুন
আনুষ্ঠানিকভাবেই লেভারকুসেনকে বিদায় জানিয়ে দিলেন আলোনসো |
![]() |
রোববারের এল ক্লাসিকোর আগে সংবাদ সম্মেলনে ফ্লিক বলেছেন, লা লিগাই সবচেয়ে কঠিন লাগছে তার কাছে। “লা লিগাই সবচেয়ে কঠিন প্রতিযোগিতা। আপনাকে ৩৮টা ম্যাচ খেলতে হয়, আর এটার শেষে আপনি যদি সবার ওপরে থাকেন, তাহলে আপনার জন্য এটাই হবে সবচেয়ে কঠিন শিরোপা।”
এল ক্লাসিকোর আগে চার পয়েন্টে এগিয়ে থাকায় অনেকেই মনে করছেন, লা লিগা জয়ে বার্সেলোনাই ফেভারিট। এমনকি হেরে গেলেও যে নিজেদের ভাগ্য থাকতে তাদের হাতেই। তবে তবে ফ্লিক তাতে একমত নন।
“আপনি যদি খেলোয়াড়দের জিজ্ঞাসা করেন, ক্লাসিকো এমন একটা ম্যাচ যেখানে তারা সবসময় জিততে চাইবে। পয়েন্ট টেবিলের অবস্থানে কিছু যায় আসে না। আমরা স্রেফ সবকিছু উজাড় করে দেওয়ার দিকেই তাকিয়ে আছি।“
চলতি মৌসুমে এল ক্লাসিকোতে বার্সেলোনার ফর্ম দুর্দান্ত। স্প্যানিশ সুপার কাপ, কোপা দেল রের ফাইনালের সাথে লা লিগায় প্রথম সাক্ষাতেও জিতেছিল ফ্লিকের দল। সাথে রয়েছে এবারের ম্যাচের আগে রিয়ালের চোটের ধাক্কায় জেরবার এক স্কোয়াড, যেখানে মূল ডিফেন্ডারদের প্রায় সবাই ছিটকে গেছেন চোটে।
এরপরও সহজ ম্যাচের আশা করছেন না বার্সেলোনা কোচ।
“আপনি জানেন না এই ধরণের ম্যাচে কী হতে পারে। আমরা বিশ্বের অন্যতম সেরা দুই দল নিয়ে কথা বলছি। হয়ত এটা রিয়ালের মাঠে হওয়া ম্যাচ থেকে আলাদা হতে পারে। দুই দলই তিন পয়েন্টের জন্য লড়বে। আশা করি সেটা আমরাই পাব।“
১১ দিন আগে
১৪ দিন আগে
২২ দিন আগে
২২ দিন আগে
২২ দিন আগে
২২ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৫ দিন আগে
২৫ দিন আগে