
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বাদশ সংস্করণের তৃতীয় দিনে প্রথমবার মাঠে নামছে রংপুর রাইডার্স। প্রথম ম্যাচেই টস জিতেছেন রংপুর অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার দিনের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম রয়্যালসের বিপক্ষে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রংপুর অধিনায়ক।
নিজেদের প্র্যাকটিস ভেন্যু বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে নিবিড় অনুশীলন করে বিপিএলের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করেছে রংপুর। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নরা এবার আবার শিরোপার খোঁজে নামছে।
লিটন কুমার দাস, মোস্তাফিজুর রহমানদের সঙ্গে জাতীয় দল ও আশপাশের একঝাঁক তারকা নিয়ে সাজানো রংপুরের একাদশ। বিদেশি কোটায় আসেন খুশদিল শাহ, ফাহিম আশরাফ, সুফিয়ান মুকিম, দাভিদ মালান।
অন্য দিকে প্রথম ম্যাচে দুই বিদেশি নিয়ে খেলতে নামা চট্টগ্রাম একাদশে এবার আছে তিন জন বিদেশি ক্রিকেটার- মির্জা বেগ, মাসুদ গুরবাজ ও অ্যাডাম রসিংটন।
রংপুর রাইডার্স একাদশ:
নুরুল হাসান সোহান (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, তাওহিদ হৃদয়, মোস্তাফিজুর রহমান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নাহিদ রানা, আলিস আল ইসলাম, খুশদিল শাহ, ফাহিম আশরাফ, সুফিয়ান মুকিম, দাভিদ মালান।
চট্টগ্রাম রয়্যালস একাদশ:
মোহাম্মদ নাঈম শেখ, মাহমুদুল হাসান জয়, মাহফিজুল ইসলাম রবিন, তানভির ইসলাম, শেখ মেহেদি হাসান (অধিনায়ক), আবু হায়দার রনি, শরিফুল ইসলাম, মির্জা বেগ, অ্যাডাম রসিংটন, মাসুদ গুরবাজ, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ।
No posts available.
২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪:৩০ পিএম
২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২:৪৮ পিএম

বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে রেকর্ড গড়ে আইপিএল নিলামে ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে এবার দল পেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি এই পেসার যদি ১৮ কোটি রুপিও পেতেন, সেটিও অবাক হওয়ার ছিল না মনে করেন তাসকিন আহমেদ।
আইপিএলের নিলামে এবার তিন দলের কাড়াকাড়ির পর মোস্তাফিজকে বিশাল অঙ্কে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২ কোটি টাকার বেশি) কিনে নিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। নিলামে তার এই মূল্য দেখে একদমই অবাক হননি তাসকিন।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ক্রিকেটে খেলতে ঢাকা ক্যাপিটালসে যোগ দেওয়ার পর সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের তারকা পেসার বললেন, মোস্তাফিজের এটি প্রাপ্যই ছিল।
“এটা তো দৃশ্যমান (বাংলাদেশি পেসারদের কদর বাড়ছে)। আসলে ফিজ বিশ্ব ক্রিকেটে অনেক পরীক্ষিত ও প্রমাণিত একজন প্লেয়ার। ও যদি ৯ কোটির জায়গায় ১৮ কোটিও পেত, অবাক হওয়ার কিছু হতো না। কারণ ও ডিজার্ভিং একটা ক্রিকেটার।”
আরও পড়ুন
| ধারাবাহিক বোলিংয়ে এবার রিশাদের ২ উইকেট |
|
“ও প্রমাণিত এবং আইপিএলেও অনেক ম্যাচ খেলছে, ভালো করে দেখিয়েছে। আইএল-এ তো দুর্দান্ত খেলেছে। এটা আমার কাছে সারপ্রাইজিং না। আমি মনে করি, ফিজ আরও বেশি ডিজার্ভ করে। তো আশা করছি, এভাবে যদি হতে থাকে আমাদের সব ক্রিকেটারেরই কদর বাড়বে ইনশাআল্লাহ।”
এত দিন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইএল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে ব্যস্ত ছিলেন তাসকিন, মোস্তাফিজ। শারজাহ ওয়ারিয়র্সের হয়ে ৬ ইনিংসে ৯ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। আর দুবাই ক্যাপিটালসের জার্সিতে মোস্তাফিজের শিকার ৮ ইনিংসে ১৫ উইকেট।
ওই টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্সে খুশি তাসকিন। এরপর এবার বিপিএল খেলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে হতে যাওয়া বিশ্বকাপের জন্য যথাযথ প্রস্তুতি হয়ে যাবে মনে করেন অভিজ্ঞ এই পেসার।
“আসলে ভালোর শেষ নেই। (আইএল টি২০তে) যা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। আমি প্রথমবার আইএল খেললাম। আমরা তিনজন বাংলাদেশি ছিলাম। রিশাদও বিগ ব্যাশ খেলছে। আমাদের জন্য ভালো অভিজ্ঞতা হচ্ছে।”
“ফিজও মাশাআল্লাহ অনেক ভালো করছে। আমি হয়তো মোটামুটি ভালো করেছি। রিশাদও ভালো করছে। এটা অবশ্যই ভবিষ্যতে... আমাদের বিপিএল আছে, এটাও খেলার পর বিশ্বকাপে যখন যাব, আমাদের একটা ভালো প্রস্তুতি হচ্ছে।”

একটু খরুচে ছিলেন ঠিক। তবে যথাসময়ে উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষের ছন্দে ছেদ ঘটিয়েছেন রিশাদ হোসেন। প্রথম ম্যাচ বাদে পরের সবক’টি ম্যাচেই উইকেট নিলেন তিনি। বিগ ব্যাশে আজ বাংলাদেশি লেগ স্পিনারের শিকার দুই উইকেট। এ নিয়ে পাঁচ ম্যাচে তাঁর উইকেট হলো আটটি।
মেলবোর্ন রেনেগের্ডেসের বিপক্ষে আজ ৪ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে দুই উইকেট নিয়েছেন রিশাদ। মোহাম্মদ রিজওয়ান ও জ্যাক ফ্রেজার ম্যাক-গুর্ককে আউট করেছেন ২৩ বছর বয়সী লেগি।
হবার্ট হারিকেন্সের হয়ে আজ রিশাদ বোলিংয়ে আসেন দলের পঞ্চম ওভারে। নিজের প্রথম ওভারে আট রান দেন তিনি। পরের ওভারে এসে তুলে নেন রিজওয়ানের উইকেট। ওই ওভারের তৃতীয় বলে রিশাদকে চার মারার পরের বলেই রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলেন পাকিস্তানের ব্যাটার।
আরও পড়ুন
| রংপুরের তোপে কাঁপছে চট্টগ্রাম |
|
তৃতীয় ওভারে বেশ খরুচে ছিলেন রিশাদ। অবশ্য ওই ওভারে একটি উইকেটও নেন হারিকেন্সের বোলার। প্রথম বলেই উইকেট পেতে পারতেন রিশাদ। তবে বাউন্ডারি লাইনে নিখিল চৌধুরির হাত ফঁসকে সেটা হয়ে যায় ছক্কা। ক্যাচ মিস করে কাঁধের চোটেও পড়েন তিনি।
তারপর তাঁর ওভারের দ্বিতীয় বলে দুই আর তৃতীয় বলে সিঙ্গেল আসে। চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকায় ম্যাক-গুর্ক। তবে রিজওয়ানকে ফেরানোর মতোই শোধ তুলতে দেনি করেননি রিশাদ। বাউন্ডারি মারার পরের বলেই ক্যাচ তুলে আউট হন গুর্কও।
দলীয় ১৪তম ওভারে নিজের ওভারের কোটা শেষ করতে আসেন রিশাদ। শেষ ওভারে একটি বাউন্ডারি হজম করলেও তার করা চারটি ডেলিভারি থেকে রান তুলতে পারেনি প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটার।

শিরোপার দাবিদার হিসেবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) খেলতে এসে প্রথম ম্যাচেই দাপট বুঝিয়ে দিল রংপুর রাইডার্স। দুর্দান্ত বোলিং প্রদর্শনীর পর ব্যাটিংয়েও চমৎকার পারফরম্যান্সে বড় জয়ে পথচলা শুরু করল ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নরা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার চট্টগ্রাম রয়্যালসের বিপক্ষে ৭ উইকেটে হারায় নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বাধীন। আগে বোলিং করে চট্টগ্রামকে মাত্র ১০২ রানে গুটিয়ে দেয় তারা। পরে ১৫ ওভারে ম্যাচ জিতে নেয় রংপুর।
দলের জয়ের মূল কারিগর ফাহিম আশরাফ। চমৎকার বোলিংয়ে মাত্র ১৭ রানে ৫ উইকেট নেন ফাহিম। এটি বিপিএলে পাকিস্তানি অলরাউন্ডারের দ্বিতীয় ৫ উইকেট। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমানের শিকার ২ উইকেট।
রান তাড়ায় দারুণ শুরু করেন দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও দাভিদ মালান। একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল, পুরো ১০ উইকেটেই জিতে যাবে রংপুর। কিন্তু মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর জোড়া আঘাতে সেটি করতে পারেনি তারা।
আরও পড়ুন
| দুর্দান্ত বোলিংয়ে ফাহিমের ৫ উইকেট, রংপুরের সহজ লক্ষ্য |
|
সবচেয়ে বেশি ঝড়টা বয়ে যায় মাহমুদুল হাসান জয়ের ওপর। নবম ওভারে ৩টি ছক্কার সঙ্গে একটি চার হজম করে ২৪ রান দেন খণ্ডকালীন এই অফ স্পিনার।
১৩তম ওভারে মুগ্ধর বলে বড় শট খেলতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ দেন লিটন। ৪ চার ও ২ ছক্কায় মাত্র ৩১ বলে ৪৭ রান করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। এরপর মাত্র ১ রান করে ফিরে যান তিন নম্বরে নামা তাওহিদ হৃদয়।
জয়ের জন্য মাত্র ২ রান বাকি থাকতে জয়ের বলে কভারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪৮ বলে ৫১ রান করা মালান। বাকি কাজ শেষ করেন মাহমুদউল্লাহ ও খুশদিল শাহ।
এর আগে টস জিতে বোলিং করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারে গতিময় ডেলিভারিতে চট্টগ্রামের বিদেশি ওপেনার অ্যাডাম রসিংটনকে আউট করেন রংপুরের পেসার নাহিদ রানা। শর্ট ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ নেন আলিস আল ইসলাম।
এরপর পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। তবে তাকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি মোস্তাফিজুর রহমান। বোল্ড হয়ে ফেরেন ২০ বলে ৩৯ রান করা বাঁহাতি ওপেনার।
দুই পেসারের পর রহস্য নিয়ে হাজির হন আলিস আল ইসলাম। তার জাদুকরী ডেলিভারিতে রানের খাতা খোলার আগেই কট বিহাইন্ড হন মাহমুদুল হাসান জয়।
পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর উইকেট শিকারের উৎসবে যোগ দেন ফাহিম আশরাফ। সপ্তম ওভারে মাহফিজুল ইসলাম রবিনকে আউট করেন পাকিস্তান অলরাউন্ডার।
১১তম ওভারে মাসুদ গুরবাজকে ফেরান ফাহিম। একই ওভারে চট্টগ্রাম অধিনায়ক শেখ মেহেদি হাসানকেও আউট করেন তিনি। মাত্র ৭৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে চট্টগ্রাম।
আরও পড়ুন
| রংপুরের তোপে কাঁপছে চট্টগ্রাম |
|
নতুন স্পেলে ফিরে প্রতিপক্ষকে আরও বিপদে ফেলে দেন মোস্তাফিজ। কাটার মাস্টারের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন তিন নম্বরে নামা মির্জা বেগ (২৪ বলে ২০)।
তানভির ইসলামকে ফেরান পাকিস্তানের বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার সুফিয়ান মুকিম। আর ১৮তম ওভারে চার বলের মধ্যে আবু হায়দার রনি ও শরিফুল ইসলামকে আউট করে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন ফাহিম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চট্টগ্রাম রয়্যালস: ১৭.৫ ওভারে ১০২ (নাঈম ৩৯, রসিংটন ১, মির্জা ২০, জয় ০, রবিন ১, গুরবাজ ৯, মেহেদি ১, রনি ১৩, তানভির ৬, শরিফুল ৬, মুগ্ধ ১*; নাহিদ ৩-০-৩৩-১, ফাহিম ৩.৫-০-১৭-৫, আলিস ৩-০-১৭-১, মোস্তাফিজ ৩-০-১৯-২, সুফিয়ান ৪-০-১২-১, খুশদিল ১-০-৩-০)
রংপুর রাইডার্স: ১৫ ওভারে ১০৭/৩ (মালান ৫১, লিটন ৪৭, হৃদয় ১, মাহমুদউল্লাহ ১*, খুশদিল ৬*; শরিফুল ২-০-১৬-০, মেহেদি ৪-০-২৭-০, তানভির ৪-০-২৭-০, মির্জা ১-০-২-০, জয় ২-০-৩০-১, মুগ্ধ ২-০-৫-২)
ফল: রংপুর রাইডার্স ৭ উইকেটে জয়ী

দুই দিনে শেষ হওয়া মেলবোর্নের পিচ নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়ে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড দুই দলের অধিনায়কই। এমনকি খোদ পিচ কিউরেটরও উইকেটের এমন আচারণে অবাক হয়। শেষ পর্যন্ত অ্যাশেজে বক্সিং ডে টেস্টের পিচকে ‘অসন্তোষজনক’ বলল আইসিসি। তাতে আলোচিত এই পিচ একটি ডিমেরিট পয়েন্ট পেল। রেটিং দিয়েছেন এই টেস্টের ম্যাচ রেফারি জেফ ক্রো।
আইসিসির চার স্তরের পিচ রেটিং ব্যবস্থায় ‘অসন্তোষজনক’ হলো তৃতীয় স্তর। এই রেটিং এমন পিচকে বোঝায়, যেখানে ব্যাটার ও বোলারদের মধ্যে ন্যায্য লড়াই থাকে না। বোলাররা অতিরিক্ত সুবিধা পায়—হোক তা পেস বা স্পিন। মজার বিষয় হচ্ছে আগের তিনটি বক্সিং ডে টেস্টে এমসিজির পিচ পেয়েছিল সর্বোচ্চ ‘খুব ভালো’ রেটিং।
চলতি অ্যাশেজ সিরিজে দুই দিনের মধ্যেই শেষ হওয়া দ্বিতীয় টেস্ট ছিল এটি। প্রথম তিন টেস্ট জিতে অস্ট্রেলিয়া আগেই সিরিজ নিশ্চিত করে, এরপর এমসিজিতে চার উইকেটে জিতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১৫ বছরের খরা কাটায় ইংল্যান্ড।
টেস্ট শেষ হওয়ার একদিন পর এমসিজির কিউরেটর ম্যাট পেজ জানান, তিনি ‘চরম বিস্ময়ে’ ছিলেন। ম্যাচের প্রথম দিনেই পড়ে ২০ উইকেট, পরের দিন আরও ১৬—মোট ১৪২ ওভারে ৩৬ উইকেট। পিচে ১০ মিলিমিটার ঘাস রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। যা মূলত ম্যাচের শেষ তিন দিনের গরম আবহাওয়ার পূর্বাভাস মাথায় রেখে রাখা হয়।
আগামী রোববার অ্যাশেজের শেষ ম্যাচ হবে। সিডনিতে অনুষ্ঠেয় টেস্টটি ইংল্যান্ডের জন্য কেবল হারের কমিয়ে আনার ম্যাচ।

বছর প্রায়ই শেষ। ক্রিকেটে ২০২৫ সালে কার পারফরম্যান্স কেমন ছিল, সেটা নিয়ে কাঁটাছেঁড়া করারও সময় হলো বলে। বর্ষসেরা ক্রিকেটারের হাতে উঠবে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার গ্যারি সোবার্স ট্রফি।
এ স্বীকৃতির জন্য এখনও কোনো ক্রিকেটারকে মনোনয়ন দেয়নি আইসিসি। ২০২৫ সালে অনেকেই ক্রিকেটের একক কোনো সংস্করণে দাপট দেখিয়েছেন, তবে এই পুরস্কার দেওয়া হয় তাদেরই, যারা টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি—তিন ফরম্যাটেই ধারাবাহিকভাবে দারুণ পারফরম্যান্সে দলের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। আইসিসির সংক্ষিপ্ত তালিকা ঘোষণার আগে পারফরম্যান্সের বিচারে দেখে নেওয়া যাক এ পুরষ্কার জেতার দৌড়ে এগিয়ে আছেন কারা।
১. শুভমান গিল
২০২৫ সালটা পুরোপুরি নিজের করে নিয়েছেন শুভমান গিল। শুধু একজন সেরা ব্যাটার হিসেবেই নয়, বরং বৈশ্বিক মঞ্চে একজন পরিণত নেতার আবির্ভাবও যেন ঘটিয়েছেন তিনি। রোহিত শর্মা অধিনায়কত্বের গুরুদায়িত্ব বুঝে নেওয়া মোটেও সহজ ছিল না তাঁর জন্য। তবে অসাধারণ পরিপক্বতা ও ধারাবাহিকতায় অনেকটাই সেই দায়িত্ব সামলে নিয়েছেন গিল।
এ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রানে সবার চেয়ে এগিয়ে গিল। ২৬ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটার করেছেন ১,৭৬৪ রান,। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি—সবখানেই সমান কার্যকর ছিলেন তিনি। ৩৫ ম্যাচে প্রায় ৫০ গড়ে রান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। পেয়েছেন সাতটি সেঞ্চুরি।
এডজবাস্টনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার ঐতিহাসিক ২৬৯ রানের ইনিংসটি ছিল পুরো বছরকে সংজ্ঞায়িত করার মতো। ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে টেস্টে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড নতুন করে লিখেছেন তিনি।
২. সালমান আলি আগা (পাকিস্তান)
পাকিস্তানের সীমিত ওভারের ক্রিকেটের অধিনায়ক সালমান আলি নেতৃত্বের দায়িত্ব পেয়ে শাণিত। পুরো বছরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে অন্য যে কারও চেয়ে বেশি—৫৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন তিনি।
চাপের মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ ১,৫৬৯ রান করার পাশাপাশি বল হাতেও অবদান রেখেছেন সালমান। ফিল্ডিংয়েও ছিলেন দুর্দান্ত—টেস্টে ধরেছেন ৩২টি ক্যাচ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চাপের ম্যাচে জীবনের সেরা ইনিংস খেলেন তিনি—১৩৪ রানের প্রথম ওয়ানডে শতকে পাকিস্তানকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। সব মিলিয়ে বর্ষসেরার সংক্ষিপ্ত তালিকায় দেখা যেতেই পারে ৩২ বছর বয়সী আগাকে।
৩. জো রুট
জো রুট যেন সময়ের সঙ্গে আরও পরিণত হচ্ছেন। টি-টোয়েন্টি থেকে সরে দাঁড়ালেও ২০২৫ সালে টেস্ট ও ওয়ানডেতে তার আধিপত্য ছিল দেখার মতো। এখন পর্যন্ত বছরের তৃতীয় সর্বোচ্চ ১,৫৯৮ রান সংগ্রাহক ৩৪ বছর ডানহাতি ব্যাটার।
রুটের রুদ্ররূপ দেখা গেছে টেস্ট ও ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই। ক্রিকেটের দীর্ঘতম এই সংস্করণে এই বছরেই ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন রুট। তাঁর সামনে এখন শুধুই কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার। ওয়ানডেতেও ছিলেন একেবারেই অনন্য—৮০৮ রান করেছেন ৬৫.৭৭ গড়ে, তালিকার শীর্ষে থেকে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার অপরাজিত ১৬৬ রানের ইনিংসটি ছিল এককথায় ক্লাসিক। ধীরস্থির আর নিখুঁত টেকনিক মিশেলে দারুণ ব্যাটিংয়ে রুট করেছেন সাতটি আন্তর্জাতিক শতক।
৪, জ্যাকব ডাফি
ব্যাটারদের দাপটে ভরা এক বছরে, বোলার হিসেবে আলাদা করে নজর কেড়েছেন জ্যাকব ডাফি। নিউ জিল্যান্ডের এই ফাস্ট বোলার ২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ৮১ উইকেট নিয়ে বছর শেষ করেছেন।
বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে ছিলেন ডাফি ছিলেন রীতিমতো ভয়ংকর। মাত্র চার ম্যাচে নিয়েছেন ২৫ উইকেট, গড় মাত্র ১৬.২৮। ৩১ বছর বয়সী ডানহাতি পেসার কন্ডিশন কাজে লাগানোর দক্ষতায় ছিলেন কিউইদের পেস আক্রমণের তুরুপের তাস।
আরও পড়ুন
| রংপুরের তোপে কাঁপছে চট্টগ্রাম |
|
বছরজুড়ে সাদা বলেও সমান প্রভাব রেখেছেন ডাফি। টি-টোয়েন্টিতে ৫৩ উইকেট নিয়ে ডাফি দেখিয়েছেন, নতুন বলে সুইং হোক কিংবা ডেথ ওভারে বুদ্ধিদীপ্ত বৈচিত্র্য—সবকিছুতেই তিনি সমানভাবে কার্যকর।
৫. শাই হোপ
শাই হোপ হয়তো সব সময় আলোচনায় আসেন না। তবে ২০২৫ সালে তার পরিসংখ্যান উপেক্ষা করার মোটেও সুযোগ নেই। ১,৭৬০ রান নিয়ে গিলের ঠিক চার রান পিছনে থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক হয়ে বছর শেষ করছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ব্যাটার।
এ বছর হোপ খেলেছেন মোট ৪২টি ম্যাচ খেলেছেন। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৫টি সেঞ্চুরি ও ৯টি ফিফটি। যা নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে দিয়েছে ধারাবাহিকতা আর ভরসা।
উইকেটকিপিং ও টপ-অর্ডার ব্যাটারের দ্বৈত দায়িত্ব অসাধারণভাবে ঠাণ্ডা মাথায় সামলেছেন হোপ। পরিসংখ্যানের বাইরেও হোপের অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর শান্ত নেতৃত্ব ও ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস—বিশেষ করে কঠিন নিউজিল্যান্ড সফরে—ক্যারিবীয় দলের পুনর্জাগরণে রেখেছেন বড় ভূমিকা।