২৪ ঘন্টার ব্যবধানে সারজায় দু'বার মুখোমুখি। দুটি ম্যাচের গেম চেঞ্জার একজন, তিনি নূরুল হাসান সোহান। সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে রংপুর রাইডার্সকে বিপিএল এবং গ্লোবাল টি-২০ লিগের ট্রফি জয়ে নেতৃত্ব দেয়া সোহানকে পর পর দুই ম্যাচে দেখা গেলো একই বৈশিষ্ট্যে।
বৃহস্পতিবার রাতে রশিদ খানের ২ ওভারের এক স্পেলে যখন ভয়াবহ দুর্গতিতে বাংলাদেশ দল, তখন বাংলাদেশ দলকে উদ্ধার করেছেন সোহান। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে (১৩ বলে ২ ছক্কা ১ বাউন্ডারিতে ২৩*) ৮ বল হাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪ উইকেটের জয়ে সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। সারজায় ২য় টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও একই দৃশ্য। ১২২ থেকে ১২৯, মাত্র ৭ রানে নাসুম-সাইফউদ্দিন-রিশাদকে হারিয়ে বিপর্যয়ের কবলে যখন বাংলাদেশ দল, তখন ত্রাতা সেই সোহান। ২৫ বলে ৩৪ রানের টার্গেটের মুখে দাঁড়িয়ে যখন বাংলাদেশ, তখন মোহাম্মদ নবীকে ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগের উপর দিয়ে মেরেছেন ছক্কা। ১২ বলে ১৯ রানের টার্গেটটা যখন শেষ পার্টনারশিপের জন্য দুরূহ হয়ে ওঠার কথা, তখন নূর আহমেদকে মিড উইকেটের উপর দিয়ে মেরেছেন সোহান ছক্কা! তার ২১ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় ৩১ রানের হার না মানা ইনিংসে ৫ বল হাতে রেখে ২ উইকেটে জিতে ১ ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয়ের উৎসব করেছে বাংলাদেশ।
এক সপ্তাহ আগে দুবাইয়ে এশিয়া কাপের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২১ বলে ১৬ রানে আসামীর কাঁঠগড়ায় দাঁড়িয়েছিলেন নূরুল হাসান সোহান। তবে এটা যে তার প্রকৃত বৈশিষ্ট্য নয়, স্লগে ব্যাটিংয়ের চাপ নিতে জানেন সোহান, তা জানিয়ে দিয়েছেন সারজায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে উপর্যুপরি ২ ম্যাচে।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে পেস বোলার শরিফুল ফিরেছেন দারুণভাবে। এশিয়া কাপে উইকেটহীন ২ ম্যাচে অমিতব্যয়ী বোলিংয়ের অপরাধে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজের প্রথম ম্যাচের একাদশে পাননি জায়গা। ফিরেই এই বাঁ হাতি পেসার দারুণ বোলিং করেছেন (৪-০-১৩-১)। দারুণ এক ইয়র্কারে গুরবাজকে বোল্ড করা এই পেসার ২৪টি ডেলিভারির মধ্যে ১৪টি দিয়েছেন ডট! ১৯তম ওভারের ৫ম বলে নূর আহমেদ এবং ২০তম ওভারের প্রথম বলে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে বাউন্ডারিতে উইনিং রান নিয়েও এই টেল এন্ডার দিয়েছেন আস্থার প্রতিদান।
টসে জিতে আফগানিস্তানকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রন জানিয়ে বোলারদের উপর যে নির্দেশনা ছিল, তা পালন করতে পেরেছেন শরিফুল-সাইফউদ্দিন-নাসুম। তিন পেসার মিলে শিকার করেছেন ১টি উইকেট। একটু বেশি অমিতব্যয়ী বোলিং করেছেন লেগ স্পিনার রিশাদ ( ৪-০-৪৫-২)। উইকেটহীন মোস্তাফিজও ছিলেন খরুচে বোলার ( ৪-০-৪০-০)। তবে মোস্তাফিজের ভাগ্যটা খারাপ। তার বলে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে ১৫ রানের মাথায় এবং ইব্রাহিম জাদরানকে ২৪ রানের মাথায় ফিরিয়ে দেয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেছেন বাংলাদেশের দুই ফিল্ডার।
শেষ পাওয়ার প্লে-তে এদিনও বোলাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করতে পারেননি। খরচ হয়েছে ৪১ রান। স্কোরটা ১৪৭/৫ পর্যন্ত টেনে নিতে পেরেছে আফগানিস্তান সে কারণেই।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে পারভেজ ইমন-তানজিদ হাসান তামিমের ওপেনিং পার্টনারশিপের ১০৯ রানেরও পরও ম্যাচের মাঝে খেই হারিয়ে ফেলেছিল মিডল এবং লোয়ার অর্ডাররা। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের চিত্র অবশ্য অন্যরকম। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে ৩৭ রান উঠতে ৩ উইকেট হারানোর পর ইনিংস মেরামতের দায়িত্বটা নিয়েছে মিডল অর্ডার। ৪র্থ উইকেট জুটিতে জাকের আলী অনিক-শামীম পাটোয়ারী ৩৭ বলে ৫৭ রান যোগ করে দলকে দিয়েছেন অক্সিজেন। সিরিজের প্রথম ম্যাচে অধিনায়ক জাকের আলী অনিকের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। শুক্রবার রাতে ২৫ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ৩২ রানের ইনিংসে সে সমালোচনা থেকে নিজেকে মুক্ত করেছেন। শামীম পাটোয়ারীর ব্যাটিংও (২২ বলে ৩ চার, ২ ছক্কায় ৩৩) ম্যাচ জয়ের ভিত্তি গড়ে দিয়েছে।
সারজায় চারের চেয়ে ছক্কা মারা সহজ, উভয় দলই তা জানিয়ে দিয়েছেন শুক্রবার রাতে। আফগানিস্তান মেরেছে ৭টি চারের পাশে ৯টি ছক্কা। পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাটাররা মেরেছে সেখানে ১০ চার, ১০ ছক্কা!
আইসিসি-এসিসির মেগা আসরে যা-ই হোক না কেনো, দ্বি-পাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজে এ বছরে বাংলাদেশের জয়-জয়কার। টানা ৪টি দ্বি-পাক্ষিক সিরিজের প্রতিটির ট্রফি জিতেছে বাংলাদেশ। শুরুটা শ্রীলঙ্কা সফরে ২-১ এ সিরিজ জয়ের মধ্য দিয়ে। হোমে পাকিস্তানকে ২-১, নেদারল্যান্ডসকে ২-০তে হারিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ইতোমধ্যে ২-০-তে এগিয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
No posts available.
পার্থে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ভারতকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। বোলিং-ব্যাটিং-ফিল্ডিং সব বিভাগে দুর্দান্ত অজিরা সফরকারীদের রীতিমতো গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য ৮ মাস পর দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মাকে দলে ফেরায় ভারত। তবে লম্বা সময় ফেরাটা তাদের একদমই সুখকর হয়নি। কোহলি ব্যর্থ হয়েছেন রানের খাতা খুলতে। রোহিত পৌঁছাতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘরে।
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে তাই বড় সংগ্রহও পায়নি ভারত। কয়েক দফা বৃষ্টির হানায় ডাক-ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতির ম্যাচে ২৬ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৬ রান তোলে অতিথিরা। ডিএলএসে মেথডে অজিদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩১। মিচেল মার্শ-জশ ফিলিপের দারুণ ব্যাটিংয়ে ২৯ বাল বাকি থাকতে ৭ উইকেটে সহজ জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।
দুই চারে ইনিংস শুরু করলেও দ্বিতীয় ওভারে ফেরেন ওপনোর ট্রাভিস হেড (৮)। আরেক ওপেনার মার্শ ছিলেন সাবলীল। ৪৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় অজিরা। ১৭ বলে ৮ রানে আউট হন ম্যাথু শর্ট।
তৃতীয় উইকেটে মার্শ-ফিলিপের ৫৫ রানের জুটিতে জয়টা শুধু কেবল সময়ের অপেক্ষা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। দলীয় ৯৯ রানে ওয়াশিংটন সুন্দরের শিকার হন ফিলিপ। আউট হওয়ার আগে ২৯ বলে ৩৭ রান আসে এই উইকেটরক্ষকের ব্যাট থেকে।
বাকি কাজ ম্যাট রেনশোকে নিয়ে সারেন মার্শ। ২১ রানে অপরাজিত থাকেন রেনশো। তিন ছক্কা ও দুই চারে ৫২ বলে ৪৬ রান করে জয় নিয়ে ড্রেসিংরুমে যান মার্শ। ২১.১ ওভারে লক্ষ্য তাড়া করে অজিরা।
তার আগে মিচেল স্টার্ক-জশ হ্যাজলেউডদের তোপেরমুখে দিশোহারা হয়ে ওঠে ভারতের ব্যাটিং অর্ডার। ৪৫ রানে হারায় তারা ৪ উইকেট। কোহলি ০, রোহিত ফেরেন ৮ রানে। সাবেক দুই অধিনায়কের সঙ্গে নতুন ওয়ানডে কাপ্তান শুভমান গিলের নেতৃত্বের অধ্যায়ের শুরুটাও ভালো হয়নি। নাথান এলিসের বলে ফেরেন ১০ রানে।
মিডল অর্ডারে অক্ষর প্যাটেলের ৩১ ও লোকেশ রাহুলের ৩৮ রানের কল্যাণে ১০০ পেরোয় ভারত। মিচেল ওয়েন ও ম্যাথু কুনেম্যান সফরকারীদের দ্রুত লেজ গুটিয়ে দেন। কয়েক দফা বৃষ্টির পর ২৬ ওভারে খেলা নির্ধারণ হয়। আর ৯ উইকেটে ১৩৬ রান স্কোরে জমা করে ভারত। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন কুনেম্যান, ওয়েন ও হ্যাজলেউড। ম্যাচসেরা হয়েছেন মার্শ।
আগামী বৃহস্পতিবার অ্যাডিলেডে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নামবে অস্ট্রেলিয়া-ভারত।
পাকিস্তানের বিমান হামলায় পাকতিকা প্রদেশে তিন তরুণ ক্রিকেটারের মৃত্যুর পর ক্ষোভে ফুঁসছে আফগানিস্তানের ক্রিকেট অঙ্গন। প্রথমে পাকিস্তান সফরে ত্রিদেশীয় সিরিজ থেকে সরে দাঁড়ায় তারা।
এবার জাতীয় দলের অধিনায়ক রশিদ খান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন—আর তাঁর সাম্প্রতিক পদক্ষেপ যেন ইঙ্গিত দিচ্ছে, তিনি এবার পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) খেলতে চান না!
রশিদ নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) প্রোফাইল থেকে পিএসএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি লাহোর কালান্দার্সের নাম মুছে ফেলেছেন। তিন আফগান ক্রিকেটার- কবির, সিবঘাতুল্লাহ ও হারুনের মৃত্যুতে নীরব প্রতিবাদ জানালেন এই লেগ স্পিনার।
রশিদ লিখেছেন,
‘সাম্প্রতিক পাকিস্তানি বিমান হামলায় আফগানিস্তানে নারী, শিশু ও তরুণ ক্রিকেটারসহ বহু মানুষের প্রাণহানি গভীরভাবে দুঃখজনক। যারা একদিন দেশের হয়ে মাঠে নামার স্বপ্ন দেখত, তাদের জীবন এভাবে শেষ হয়ে গেল— এ এক অপূরণীয় ক্ষতি।’
এর আগে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি) ঘোষণা দিয়েছে, পাকিস্তানে হতে যাওয়া ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে তারা সরিয়ে নিচ্ছে নিজেদের নাম। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানকে নিয়ে এই সিরিজ হওয়ার কথা ছিল, আফগানিস্তানের জায়গায় এখন অংশ নেবে জিম্বাবুয়ে।
সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী ও অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইবও রশিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। নাইব লিখেছেন,
‘পাকিস্তানি সেনাদের এই বর্বরতা আমাদের জাতির মর্যাদা ও স্বাধীনতার ওপর আঘাত, কিন্তু এটি আমাদের ভাঙতে পারবে না।’
নবীর ভাষায়,
‘উরগুনে তরুণ ক্রিকেটারদের শাহাদত হৃদয়বিদারক। এই নৃশংস হামলা আমাদের আরও ঐক্যবদ্ধ করবে।’
রশিদ খান এখন পর্যন্ত লাহোর কালান্দার্সের হয়ে তিন মৌসুমে খেলেছেন। ৪৪ উইকেট নিয়েছেন ১৫.৪৭ গড় ও ৬.১৩ ইকোনমি রেটে। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনার পর তাঁর সামনের পিএসএলে অংশগ্রহণ এখন বড় প্রশ্নের মুখে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান ওয়ানডে সিরিজে দলে ফিরলেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। আজ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
৩০ বছর বয়সী নাসুম শেষ ওয়ানডে খেলেছিলেন ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে- নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এখন পর্যন্ত ১৮ ম্যাচে ৪.৪৮ ইকোনমি রেটে নিয়েছেন ১৬ উইকেট। মিরপুর শেরে-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
একই ভেন্যুতে আগামী ২১ ও ২৩ অক্টোবর হবে সিরিজের বাকি দুটি ওয়ানডে। তবে প্রথম ওয়ানডেতে দেখে গেছে উইকেটে ঘূর্ণির নাচন। উইন্ডিজের ৮টি উইকেটই নিয়েছেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। ৬ উইকেট নিয়েছেন রিশাদ হোসেন। একটি করে উইকেটে নেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও তানভীর ইসলাম।
তবে বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ছিলেন কিছুটা খরচে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৩৩ রানে গুটিয়ে গেছে প্রথম ওয়ানডেতে। ১০ ওভারে ৪৬ রান দিয়েছেন তানভীর। পরের ওয়ানডেতে আরেকজন বাঁহাতি হিসেবে নাসুমকে যুক্ত করল বিসিবি।
সম্প্রতি টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ ও এনসিএলে ছন্দে ছিলেন নাসুম। সরাসরি ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করতে এই সিরিজ গুরুত্বপূর্ণ মিরাজদের জন্য।
বাংলাদেশ ওয়ানডে দল:
মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জাকার আলী অনিক, শামিম হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, হাসান মাহমুদ ও নাসুম আহমেদ।
টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা হারানোর পর এবার প্রশ্নের মুখে মোহাম্মদ রিজওয়ানের ওয়ানডে অধিনায়কত্ব। ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের জন্য এখনও অধিনায়ক চূড়ান্ত করেনি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি রিজওয়ানকে আর নেতৃত্বে রাখা হবে না? নতুন অধিনায়ক ঘোষণার জন্যই দল ঘোষণায় দেরি? এসব প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে সোমবার।
সাদা বলের কোচ মাইক হেসনকে নিয়ে আলোচনায় বসবে পিসিবি। সেখানেই নির্ধারণ হবে রিজওয়ানের ভাগ্য।
অনিশ্চয়তার জন্মটা দিয়েছে পিসিবিই। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের অধিনায়ক এখনও চূড়ান্ত হয়নি। অথচ ওয়ানডেতে গত কয়েক সিরিজ ধরে রিজওয়ানই দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এমনকি অধিনায়ক হিসেবে খুব একটা খারাপও করছেন না অভিজ্ঞ উইকেটকিপার-ব্যাটার। গত বছরে দায়িত্ব পাওয়ার পর তার নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে পাকিস্তান।
তবে চলতি বছর নিম্নমুখী। ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে নিউ জিল্যান্ডের কাছে হেরেছে তারা। পরে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও মেলেনি সাফল্য। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়েও মিলেছে হতাশা।
রিজওয়ানের পারফরম্যান্স নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন তোলার সুযোগ কম। চলতি বছর ৩৬-র বেশি গড়ে ৩৬১ রান করে ওয়ানডেতে পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ রান সংগ্রাহক তিনি। এছাড়া প্রোটিয়াদের বিপক্ষে চলতি টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ৭৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন।
তবু ওয়ানডে অধিনায়কত্ব থেকে রিজওয়ানকে সরিয়ে দেওয়া হবে কিনা, সেটি জানা যাবে খুব শিগগিরই। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের পর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে পাকিস্তান। এরপর ৪ নভেম্বর শুরু হবে ওয়ানডে সিরিজ।
এর আগে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে শাহিন শাহ আফ্রিদিরও একই ভাগ্যবরণ করতে হয়। পিসিবি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই আফ্রিদিকে রহস্যজনকভাবে সরিয়ে দেন মহসিন নাকভি। তখন মাত্র এক সিরিজে অধিনায়কত্ব করেছিলেন আফ্রিদি।
পার্থের গরম সকালে যেন আগুন ছুড়লেন মিচেল স্টার্ক। ভারতের টপ অর্ডারের সামনে ছুড়ে দিলেন গতি, আগ্রাসন আর নিখুঁত সুইংয়ের মিশেলে তৈরি এক জাদু মন্ত্র। কিন্তু আলোচনার কেন্দ্রে তাঁর উইকেট নয়, বরং একটি ডেলিভারি—যার গতি দেখিয়ে স্পিড গান যেন নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারেনি!
ইনিংসের প্রথম বল। রোহিত শর্মার উদ্দেশে ছোড়া বলটি স্পিড গান দেখায় ১৭৬.৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতি। ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম বলই হয়ে যেত! সেই ডেলিভারি নিয়ে রীতিমতো নেটিজেনরা হইচই শুরু করেছেন।
তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন, মেশিনের ভুলে বলের স্পিড এত বেশি দেখিয়েছে। বাস্তবে স্টার্কের বলটির গতি ছিল ঘন্টায় ১৪০ কিলোমিটার। আর তাঁর সবচেয়ে দ্রুত বৈধ ডেলিভারিটিও রোহিতের বিপক্ষেই আসে প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার গতিতে।
প্রথম স্পেলে স্টার্ক ছিলেন বেশ ভয়ংকর। প্রথম পাঁচ ওভারেই ১ মেডেনসহ মাত্র ২০ রান দিয়ে তুলে নেন ১ উইকেট। তাঁর আগুনঝরা স্পেলের শিকার হন বিরাট কোহলি। ৮ বলে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার।
এর আগেই রোহিত শর্মাকে ভুগিয়েছেন স্টার্ক। পার্থের বাউন্সি উইকেটে বলের গতি আর উচ্চতা মিলিয়ে একের পর এক ব্যাটারকে নাচিয়ে ছাড়েন তিনি। রোহিত শুরুতেই চাপে পড়ে যান, ১৪ বলে করেন মাত্র ৮ রান। শেষ পর্যন্ত জশ হ্যাজলউডের বলে স্লিপে ক্যাচ তুলে ফিরে যান ভারতের সাবেক অধিনায়ক।
ভারতের ইনিংসের চিত্রটা বলছিল সবকিছু—পাওয়ার প্লেতে মাত্র ২৭ রানে ৩ উইকেট হারায় তারা। ২০২৩ সালের পর ওয়ানডেতে ভারতের সবচেয়ে বাজে শুরুর একটি এটি।
যদিও ১৭৬.৫ কিমি/ঘণ্টা গতির সেই বল বাস্তবে মানবসম্ভব নয়। তবে ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এর চেয়েও স্টার্কের স্পেলটি ছিল বেশি রোমাঞ্চকর।