
আত্মবিসর্জন, প্রজ্ঞা আর হার নামা মানা মানসিকতা; ক্রীড়ায় ক্যারিয়ার টেনে-টানিয়ে তুলতে এমন অনেক ‘গুণ’ থাকা চাই। অনেকে তো বুড়িয়ে যাওয়ার আগেই ফুরিয়ে যান। ক্রীড়ায় একটু বেশিই শোনা যায় ‘বুড়িয়ে গেলেন, ফুরিয়ে গেলেন’। এই অঙ্গনে বিশেও বুড়িয়ে যান কেউ কেউ। অর্থ বৃত্ত আর রঙিন মোহে অল্পতেই তলিয়ে যান অনেকেই। তবে কারও কাছে বয়স কেবল সংখ্যা—চল্লিশেও তারা চালশে। ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাস গুণে ক্যারিয়ারের ঊষালগ্নেও তারা থাকেন সতেজ, ছুটেন অবিরাম।
যখন দল ধুঁকছে, স্বপ্ন খাদের কিনারায়। একজন নায়কের প্রয়োজন পড়েছিল খুবই। যিনি আসবেন, উদ্বার করবেন সম্প্রদায়। যার আগমনে হাসবে-খেলবে মৃতপ্রায় জাতি। যার পরিচয় হয়ে ওঠবে হিরো, আনসাং হিরো। যার কৃতিত্ব-কীর্তি যুগ যুগ স্মরণে রাখবেন সহযোদ্ধারা। যুদ্ধ মাঠ-ঘাট মাড়িয়ে গেলেও তিনি রেখে যাবেন অমর চিহ্ন। আফগানিস্তানের সেই নায়ক হতে গতকাল আবু ধাবির শেখ আবু জায়েদ স্টেডিয়ামে আর কী কী করা লাগতো মোহাম্মদ নবিকে!
এশিয়া কাপের সুপার ফোরে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে রূপকথা নামিয়ে এনেছিলেন নবি। ৪০ ছুঁয়ে ফেলা ডানহাতি এই ব্যাটার একাই কাঁধে তুলে নেন দলের দায়িত্ব। ২২ বলে ৬০ রান—প্রথম বল থেকেই ছিলেন আগ্রাসী, তবে আসল জাদু জমিয়ে রাখেন ইনিংসের শেষ ওভারের জন্য। দুনিথ ভেল্লালাগের করা ২০তম ওভারটা যেন সিনেমার দৃশ্য। একে একে পাঁচটি ছক্কা! ছয় বলে ৩২ রান তুলে নিলেন নবি, যা টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে শেষ ওভারে সর্বোচ্চ রান। ভাঙলেন বাটলারের রেকর্ডও।
 
    মাত্র ২০ বলে অর্ধশতক তুলেন নবি, ইনিংস সাজানো ছিল ৬ ছক্কা আর ৩ বাউন্ডারিতে। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন দেশের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। কিন্তু রেকর্ডের চাইতেও বড় ছিল মুহূর্তটা—বাঁচা-মরার লড়াইয়ে দলের হাল ধরার দৃশ্যটা।
এদিন একটা সময় আফগান ইনিংস ছিল দোদুল্যমান, ১১.২ ওভারে স্কোরবোর্ডে জমা পড়েছিল কেবল ৭১ রান। সেখানে ১৯তম ওভারে চামিরাকে টানা তিন বাউন্ডারি, আর শেষ ওভারে ছক্কার বৃষ্টি—তুলে দিলেন দলীয় স্কোর ১৭৯-এ। হয়তো আফগানিস্তান আর এগোয়নি, সুপার ফোরে ওঠেনি, মন ভেঙেছে তাদের। কিন্তু কান্দাহার থেকে কাবুল পর্যন্ত মানুষ ভুলতে পারেনি সেই রাত।
নবির ক্যারিয়ার এখন শেষ প্রান্তে। টেস্ট-ওয়ানডে ছেড়েছেন, কুড়ি কুড়িতেও হয়তো খুব বেশি দিন আর থাকবেন না। নতুনদের জায়গা করে দিতে হবে সহসা। নিজের ছেলে ইজাজও জাতীয় দলে সুযোগের অপেক্ষায়। তবু, নিভে যাওয়ার আগে যে দ্যুতিতে জ্বলে উঠলেন নবি তা অনুকরণীয়, অনন্য।
নম্বর সেভেন জার্সি গায়ে জড়ানো সেই আফগান স্বপ্নদ্রষ্টা আবারও মনে করিয়ে দিলেন তিনি জন্মগতই যোদ্ধা। বয়স তাকে বুড়িয়ে দিতে পারেনি, পারেনি ফুরিয়ে দিতে। চল্লিশেও তিনি চালশে। আফগান মাটির অমলিন কিংবদন্তি। পরাজয়ের পরও উচ্চারিত হচ্ছে-হবে তার নাম। যেমনটা উচ্চারণ করেছেন রশিদ খান। ম্যাচ শেষ আফগান অধিনায়ক বলেছেন, ‘নবির ব্যাটিং জাদুতে আমরা যেভাবে ইনিংস শেষ করলাম, সেটা সত্যিই বিশেষ কিছু।’
সমীকরণের মারপ্যাঁচে ভাগ্য সুপ্রসন্ন না হলেও আফগানরা যে লড়াই করতে জানে, সেটা দেখা গেছে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। কুড়ি কুড়ির নবম মেলায় অস্ট্রেলিয়াকে বাস্তবতা দেখিয়েছিল তারা। তার আগে একই প্রতিপক্ষের কাছে ওয়ানডেতে বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে হেরে স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছিল নবিদের। বছর না ঘুরতেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। লেখেছিলেন নতুন দিনের কাব্য। যে কাব্যের নাম আফগান মহাকাব্য। তারা ছুটছে, ছুটে চলাতেই নবিদের আনন্দ।
No posts available.


২৮ অক্টোবর ২০২৫, ৮:৫৬ পিএম


২৮ অক্টোবর ২০২৫, ৭:০৫ পিএম



২৮ অক্টোবর ২০২৫, ৫:৪২ পিএম


২৮ অক্টোবর ২০২৫, ৫:১২ পিএম


আগামী বছর ভারতে বসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দশম আসর। সহযোগী আয়োজক হিসেবে থাকছে শ্রীলঙ্কা। আগামী বিশ্বকাপের প্রস্তুতি এশিয়া কাপ থেকেই নেওয়া শুরু করেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ভারত। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানালেন দলটির অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতিরই অংশ বলছেন সূর্যকুমার,
'প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল এশিয়া কাপ দিয়েই, এখনও তা চলমান। এটা ভাবছি না যে, বিদেশে এসে খেলছি বলে এটি আলাদা সিরিজ। এটা বিশ্বকাপের প্রস্তুতিরই অংশ, তবে একই সঙ্গে এটা চ্যালেঞ্জিংও, তাই আমি নিশ্চিত দারুণ সিরিজ হবে।'
আরও পড়ুন
    
| র্যাঙ্কিংয়ের তিন বিভাগেই সেরা তিনে অজি অলরাউন্ডার |   | 
ওয়ানডে সিরিজ অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরেছে ভারত। সাম্প্রতিক পাওয়ার-প্লেতে আগ্রাসী ব্যাটিং করছেন মিচেল মার্শরা। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং নিয়ে ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার বলেন,
'এটা সবসময়ই চ্যালেঞ্জ। আমরা দেখেছি তারা (অস্ট্রেলিয়া) কীভাবে ওয়ানডে সিরিজ এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছে। পাওয়ার-প্লে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ।'
ওয়ানডে সিরিজে ছিলেন না ভারতের অভিজ্ঞ পেসার জাসপ্রিত বুমরা। কাল টি-টোয়েন্টি দিয়ে ফিরছেন তিনি। কীভাবে ভালো প্রস্তুতি নিতে হয় সেটি বুমরাহ ভালো জানেন বলে মনে করেন ভারত অধিনায়ক,
'সে (বুমরাহ) এত বছর ধরে যেভাবে ক্রিকেট খেলছে, নিজেকে সবসময় সেরা পর্যায়ে রেখেছে। সে জানে কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়, কীভাবে খেলতে হয়। আমি মনে করি দলের মধ্যে সে-ই এদেশে (দক্ষিণ আফ্রিকা) সবচেয়ে বেশি এসেছে, সবাই তার সঙ্গে কথা বলেছে।'
আরও পড়ুন
    
| শেষ দিনে জিসানের ৩ রানের আক্ষেপ |   | 
ভারত দলে অনেক বিকল্প থাকায় একাদশ নির্বাচন করাও কঠিন বলে মনে করেন সূর্যকুমার,
'এটা এক ধরনের মাথাব্যথা, এত বিকল্প আছে দলে! পেসার, স্পিনার, ওপেনার থেকে সাত নম্বর পর্যন্ত ব্যাটিং অপশন। তাই যাদের খেলানো যাচ্ছে না, তাদের বোঝানো একটু কঠিন।’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে চোটের কারণে খেলতে পারেননি অলরাউন্ডার নীতিশ কুমার রেড্ডি। টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে ফিরছেন তিনি। সূর্যকুমার বলেন,
'আমার মনে হয় সে ভালো আছে। গতকাল কিছুটা রান করেছে, নেটে ব্যাটিং করেছে। আজ ঐচ্ছিক অনুশীলন, তাই বিশ্রাম নিয়েছে।’
মানুকা ওভালে আগামীকাল ম্যাচটি হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর সোয়া দুইটায়।

ক্রিকেট ইতিহাসে বিরল এক কীর্তি গড়লেন অস্ট্রেলিয়ার স্পিনিং অলরাউন্ডার অ্যাশলে গার্ডনার। একই সময়ে ব্যাটিং, বোলিং ও অলরাউন্ডার- তিন বিভাগেই র্যাঙ্কিংয়ের সেরা তিনে উঠলেন ২৮ বছর বয়সী এই তারকা ক্রিকেটার।
মেয়েদের ক্রিকেটের র্যাঙ্কিংয়ের হালনাগাদ মঙ্গলবার প্রকাশ করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। যেখানে এমন উচ্চতায় উঠেছেন গার্ডনার, যেখানে হয়তো আগে পৌঁছাতে পারেননি কোনো নারী বা পুরুষ ক্রিকেটার।
সবশেষ এই হালনাগাদে অলরাউন্ডারদের র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে গার্ডনার। ব্যাটারদের তালিকায় তিনি দ্বিতীয় ও বোলারদের মধ্যে তিন নম্বরে অবস্থান করছেন।
চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ব্যাট হাতে ৮৮.৩৩ গড় ও ১২৮.০১ গড়ে ২৬৫ এবং চমৎকার অফ স্পিনে ৭ উইকেট নিয়েছেন গার্ডনার। এর পুরস্কার হিসেবেই র্যাঙ্কিংয়ের তিন বিভাগেই পেয়েছেন সেরা তিনে থাকার কৃতিত্ব।
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৮ রানে ৫ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়াকে ৩২৬ রানে নিয়ে যান গার্ডনার। সেদিন তিনি খেলেন ৮৩ বলে ১১৫ রানের ইনিংস।
পরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৪৫ রানের লক্ষ্যে ৮৬ রানে ৪ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে মাত্র ৭৩ বলে ১০৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে জেতান গার্ডনার।
এসব পারফরম্যান্সের সৌজন্যে ব্যাটিং র্যাঙ্কিংয়ে ৬ ধাপ লাফিয়ে দুইয়ে উঠেছেন তিনি। তার ওপরে শুধু ভারতের স্মৃতি মান্ধানা।

প্রথম ইনিংসে দারুণ ব্যাটিং করে সত্তর পেরিয়ে ফিরে গিয়েছিলেন জিসান আলম। দ্বিতীয়বার ব্যাট করতে নেমে সেঞ্চুরির আরও কাছে পৌঁছালেন তিনি। কিন্তু জাদুকরী তিন অঙ্ক ছোঁয়া হলো না ঢাকা বিভাগের তরুণ ওপেনারের।
জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম রাউন্ডে ড্র হয়েছে ঢাকা ও রংপুরের মধ্যকার ম্যাচ। শেষ দিনে সেঞ্চুরি হাতছাড়া হওয়ার বেদনায় পুড়েছেন জিসান।
সিলেটের একাডেমি মাঠে প্রথম ইনিংসে ২২১ রানে অলআউট হয় ঢাকা। জবাবে ৩৫৮ রানের পুঁজি গড়ে ১৩৭ রানের লিড পায় রংপুর। দ্বিতীয়বারে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩৩৩ রান করে ঢাকা।
রংপুরের সামনে দাঁড়ায় ১৯৭ রানের লক্ষ্য। শেষ দিনে আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ৬ উইকেটে ১১৫ রান করে আকবরের দল।
ক্যারিয়ারের ৩৪তম সেঞ্চুরি করা নাঈম ইসলামের হাতে ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
মঙ্গলবার ম্যাচের শেষ দিনে জিসানের ব্যাট থেকে আসে ১৪ চারে ৯৭ রানের ইনিংস। তৃতীয় উইকেটে আশিকুর রহমান শিবলি ও জিসান মিলে গড়েন ১৩০ রানের জুটি। শিবলির ব্যাট থেকে আসে ৫১ রান।
সিলেটের মূল মাঠে ময়মনসিংহ ও সিলেটের মধ্যকার ম্যাচটিও নিষ্ফলা ড্র হয়। চার দিনের শেষ হয়নি ম্যাচের তিন ইনিংস।
প্রথম ইনিংসে আবু হায়দার রনি ও আরিফুল ইসলামের সেঞ্চুরিতে ৪০১ রান করে জাতীয় লিগে প্রথম খেলতে নামা ময়মনসিংহ। জবাবে সৈকত আলির ১৭৫ রানের সঙ্গে বাকিদের অবদানে ৪৮৯ রান করে সিলেট।
৮৮ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৭২ রান করে ময়মনসিংহ। এরপর ড্র মেনে নেয় দুই দল। আরিফুল ৬২ ও নাঈম শেখ করেন ৫৮ রান।
আরিফুলের হাতে ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে প্রথম যুব ওয়ানডেতে জিতেছে বাংলাদেশ। আলোকস্বল্পতায় ৪ ওভার আগেই থেমে যাওয়া ম্যাচে ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন পদ্ধতিতে ৫ রানের জয় পেয়েছে স্বাগতিক যুবারা।
বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৬৫ রান করে আফগানিস্তান। রান তাড়ায় ৪৬ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৩১ রান করে বাংলাদেশ।
এরপর আর আলোকস্বল্পতায় খেলা সম্ভব হয়নি। ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন পদ্ধতিতে বাংলাদেশকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় তারা।
সিরিজে শুভসূচনার পেছনে বড় কারিগর ইকবাল হোসেন ইমন ও কালাম সিদ্দিকি এলিন। বল হাতে যুব ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম ৫ উইকেট নেন ইমন। আর ব্যাটিংয়ে এই ফরম্যাটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করেন কালাম।
রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা অবশ্য তেমন ভালো হয়নি। মাত্র ১৫ রানের মধ্যে ফিরে যান দুই তারকা ব্যাটার জাওয়াদ আবরার ও অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম।
তৃতীয় উইকেটে রিফাত বেগের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটি গড়েন কালাম। ৩০ বলে ২৬ রান করে ফেরেন রিফাত।
এরপর ম্যারাথন জুটি গড়েন কালাম ও রিজান হোসেন। ভাগ্যের সহায়তাও পান দুজন। উইকেটের পেছনে একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করেন আফগানিস্তানের উইকেটরক্ষক।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১৩৯ রান যোগ করেন কালাম ও রিজান। নিজের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেই আউট হয়ে যান কালাম। তার ব্যাট থেকে আসে ১১ চারে ১১৯ বলে ১০১ রান।
এরপর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহকে নিয়ে এগোতে থাকেন রিজান। কিন্তু আলোর অভাবে পুরোটা খেলে ম্যাচ জেতানো হয়নি তার।
২ চারের সঙ্গে ৩ ছক্কায় ৯৬ বলে ৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন রিজান। আব্দুল্লাহ করেন ১৯ বলে ১২ রান।
আফগানিস্তানের পক্ষে ৪৭ রানে ২ উইকেট নেন মুজিব উর রহমানের মতো একই অ্যাকশনে বোলিং করা ওয়াহিদউল্লাহ জাদরান।
ম্যাচের প্রথমভাগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৫৫ রান পায় আফগানিস্তান। খালিদ ওমরজাইকে এলবিডব্লিউ করে এই জুটি ভাঙেন ইমন। পরের ওভারে আরেক ওপেনার ওসমান সাদাতকে ফেরান মোহাম্মদ সবুজ।
চার নম্বরে নেমে হাল ধরেন উজাইরউল্লাহ নিয়াজাই। তবে অন্য প্রান্ত থেকে তেমন সমর্থন পাননি তিনি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ১৬ চার ও ১ ছক্কায় ১৩৭ বলে ১৪০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন উজাইরউল্লাহ। কিন্তু ম্যাচ শেষে তাকে থাকতে হয় পরাজিত দলে।
১০ ওভারে এক মেডেনসহ ৫৭ রানে ৫ উইকেট নেন ইমন। পেস বোলিং অলরাউন্ডার রিজানের শিকার ৫৪ রানে ২ উইকেট।
একই মাঠে শুক্রবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে লড়বে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯: ৫০ ওভারে ২৬৫/৯ (খালিদ ৩৪, ওসমান ১৫, ফয়সাল ৩৩, উজাইরউল্লাহ ১৪০*, মাহবুব ১২, বরকত ১, আজিজউল্লাহ ১৪, খাতির ৩, ওমরজাই ০, জাইতুল্লাহ ০; ফাহাদ ৬.৪-০-৩৬-০, ইমন ১০-১-৫৭-৫, সবুজ ৫.২-০-৩০-১, রাতুল ৭-০-৩৪-০, রিজান ১০-০-৫৪-২, রাফি ৭-০-৩০-০, তামিম ৪-০-২৩-১)
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯: ৪৬ ওভারে ২৩১/৪ (জাওয়াদ ১০, রিফাত ২৬, তামিম ০, কালাম ১০১, রিজান ৭৫*, আব্দুল্লাহ ১২*; ওমরজাই ৮-০-৩৬-১, ওয়াহিদউল্লাহ ১০-০-৪৭-২, খাতির ৬-০-৩৫-০, জাইতুল্লাহ ১০-০-৩৪-১, মাহবুব ৬-০-৩২-০, উজাইরউল্লাহ ৬-০-৪৩-০)
ফল: ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ৫ রানে জয়ী

ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আনন্দে বড় ধাক্কা দিয়েছে প্রথম টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং ব্যর্থতা। হতাশার পরাজয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করে এখন কিছুটা চাপেই পড়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক সিআরবিতে উন্মোচন করা ট্রফি ঘরেই রাখতে বাকি দুই ম্যাচে তাদের লিখতে হবে প্রত্যাবর্তনের গল্প।
সেই মিশনে চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লা. লে. মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। খেলা শুরু সন্ধ্যা ৬টায়।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে হারের পর মঙ্গলবার অনুশীলন রাখেনি বাংলাদেশ। ম্যাচ জিতে সিরিজে এগিয়ে যাওয়া ক্যারিবিয়রাও বাতিল করে তাদের রুটিন অনুশীলন। তবে ঐচ্ছিক অনুশীলনে সাগরিকার তপ্ত রোদের মাঝের ঘাম ঝরান সফরকারীদের কয়েকজন ক্রিকেটার।
আরও পড়ুন
    
| রাব্বির দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে তাইজুলদের হারাল চট্টগ্রাম |   | 
সিরিজের বাকি দুই ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে এখন জয়ের বিকল্প নেই। স্বাগতিকরা চাইলে নিজেদের সাম্প্রতিক অতীত থেকেই নিতে পারে অনুপ্রেরণা। যেখানে প্রথম ম্যাচ হেরেও বাকি দুইটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজের ট্রফি জিতেছে তারা।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত ২৪টি তিন ম্যাচের সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ৬টি তারা জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। সেই ছয় সিরিজের আবার ২টিতে প্রথম ম্যাচ হারের পরও সিরিজ নিজেদের করেছে বাংলাদেশ।
২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের প্রথম ম্যাচ হেরেও পরের দুইটি জিতে সিরিজ নিজেদের করেছে তারা। চলতি বছর জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সফরেও প্রথম ম্যাচ হেরে কামব্যাকের গল্প লিখেছে তারা।
এবার মাস তিনেক আগের সাফল্যের পুনরাবৃত্তি করতে পারলেই মিলবে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে তৃতীয় সিরিজ জয়ের স্বাদ।
সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য হতাশার উপাখ্যানও কম নেই বাংলাদেশের। ২০২৩ সালে ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে শুরু। এবার আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলেও, ওয়ানডে সিরিজ হেরে যায় বাংলাদেশ।
গত বছরের মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর তারা জিতে যায় ওয়ানডেতে। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ওয়ানডে সিরিজে সব ম্যাচ হারলেও, টি-টোয়েন্টিতে আবার স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ।
একই পরিণতি দেখা যায়, চলতি বছরের শ্রীলঙ্কা সফরে। যেখানে ওয়ানডে সিরিজ হেরে যায় বাংলাদেশ। তবে টি-টোয়েন্টিতে আবার জেতে তারা। পরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর ওয়ানডেতে মেলে হতাশা।
এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এরই মধ্যে ওয়ানডে সিরিজ জিতে গেছে বাংলাদেশ। তবে গত কয়েক সিরিজের মতো সাদা বলের আরেক সিরিজে নিশ্চয়ই হারতে চাইবে না তারা।
প্রথম ম্যাচে রভম্যান পাওয়েল ও শাই হোপের ঝড়ের পরও সফরকারীদের ১৬৫ রানে থামিয়ে রেখেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু রান তাড়ায় পাওয়ার প্লের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে একরকম ছিটকেই যায় তারা। শেষের ব্যাটাররা লড়াই করলেও পরাজয় এড়াতে পারেননি।
আরও পড়ুন
    
| ফোনে নির্দেশ ‘ভারতকে ছাড় দাও’—বিস্ফোরক অভিযোগ ম্যাচ রেফারির |   | 
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে অনুমিতভাবেই ব্যাটারদের ব্যর্থতার কথা বলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার তানজিম হাসান সাকিব। তার বিশ্বাস, বাকি দুই ম্যাচে ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ।
“আমরা একদম শুরু থেকেই প্রস্তুত ছিলাম। আমাদের একটা আত্মবিশ্বাস ছিল যে, আমরা ভালো করে আসছি টি-টোয়েন্টিতে। আজকে একটা আমরা হেরে গেছি, বাজে দিন ছিল। পরবর্তী দুই ম্যাচে আমরা কামব্যাক করব ইনশাল্লাহ। এখানে আর কোনো ব্যাকফুটে যাওয়ার সুযোগ নেই।”
“আরেকটা ম্যাচ হারলে সিরিজ হেরে যাব। আর এটা ঘরের মাঠ, অবশ্যই চেষ্টা করব সিরিজ জেতার, যে করেই হোক। কারণ বিদেশে যেহেতু ভালো করে আসছি, এখানে আমরা একটা বাড়তি সুবিধা অবশ্যই পাব। তাই পরবর্তী দুইটা ম্যাচ আমাদের জিততে হবে।”
পরের দুই ম্যাচ জিতে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখতে ব্যাটারদের ভালো করার বিকল্প নেই। চলতি বছর এই ফরম্যাটে ধারাবাহিকভাবে কারও কাছ থেকেই রান পাচ্ছে না বাংলাদেশ। বিশেষ করে শুরুতেই ভেঙে পড়ছে টপ-অর্ডার।
২০২৫ সালে খেলা ২০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের মধ্যে ৬টিতেই ৫০ রান হওয়ার আগেই ৪ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। আর ৫টি ম্যাচে দলীয় স্কোর ৩০ ছোঁয়ার আগেই ড্রেসিং রুমে ফিরেছেন তিন ব্যাটার। যা শুরুতেই পেছনে ঠেলে দিচ্ছে বাংলাদেশকে।
তাই বাকি দুই ম্যাচে বড় দায়িত্ব নিতে হবে ওপরের সারির ব্যাটারদের।