
এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারস টুর্নামেন্টের সেমি-ফাইনাল ম্যাচ। শেষ দুই ওভারে ১২ বলের মধ্যে ৮টিই ইয়র্কার করলেন রিপন মন্ডল। তবু নাটকীয়তার পর ম্যাচ গড়াল সুপার ওভারে। সেখানে পরপর দুটি ইয়র্কার করে দুই উইকেট নিলেন তরুণ পেসার। যা গড়ে দিল বাংলাদেশ 'এ' দলের জয়ের ভিত।
পরে পাকিস্তান শাহিনসের ('এ' দল) বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচেও একের পর এক ইয়র্কার করে প্রতিপক্ষের ব্যাটিং লাইনআপকে আটকে রাখেন রিপন। মূল ম্যাচে ৪ ওভারে মাত্র ২৫ রানে নেন ৩ উইকেট। সুপার ওভারে মাত্র ৬ রানের পুঁজি নিয়েও শাহিনসকে তিনি আটকে রাখেন ৪ বল।
অল্পের জন্য এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারসে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে ৫ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে রিপনই টুর্নামেন্টের সেরা বোলার। ফাইনাল ম্যাচটি জিততে পারলে হয়তো এবারের টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কারও জিততেন ২২ বছর বয়সী পেসার।
অথচ বছর দুয়েক আগেও তার বোলিং অ্যাকশন ও বডি এলাইনমেন্ট দেখে জাতীয় দলের এক নির্বাচক বলেছিলেন, 'দেখুন! কতটা এলোমেলো। অনেক কাজ করতে হবে।' সেই কাজ ঠিকই করেছেন রিপন। দুই বছরের অন্তরে নিজের এলাইনমেন্ট ঠিক করে পরিণত হয়েছে ইয়র্কার মেশিনে।
রিপনের মাঝে সম্ভাবনার ঝলক দেখা গিয়েছিল ২০২২ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেই। বাংলাদেশের হতাশার টুর্নামেন্টে ৬ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশ কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও চমৎকার বোলিংয়ে টুর্নামেন্টের সেরা একাদশেও জায়গা পেয়েছিলেন রিপন।
এরপর থেকে নিয়মিতই বিসিবির সব প্রোগ্রামে আছেন তিনি। প্রতিদানও দিয়েছেন গত বছরের টপ এন্ড টি-টোয়েন্টি সিরিজে। বাংলাদেশ এইচপি দলের হয়ে ৮ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়ে ছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা বোলার। ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন এবার 'এ' দলের হয়েও।
ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে সফল টুর্নামেন্ট কাটানোর পরও রিপনের আক্ষেপ অবশ্য চ্যাম্পিয়ন হতে না পারায়।
“আলহামদুলিল্লাহ! খুবই ভালো! যেভাবে টুর্নামেন্টটা শুরু করেছি, শেষ করেছি, খুব ভালো। যে পরিশ্রমটা করেছি, আল্লাহ আমাকে (পুরস্কার) দিয়েছেন। দলগত পারফরম্যান্স যদি আরেকটু ভালো হতো, তাহলে আরও ভালো হতো।”
“দলগত পারফরম্যান্সও আলহামদুলিল্লাহ ভালোই হয়েছে। শুধু ফাইনালটা ভাগ্যের বিষয় ছিল। তবে যদি দুই-একজন ব্যাটার আমাদের ক্লিক করে যেতো, তাহলে দৃশ্যপট ভিন্নরকম হতে পারত।”
এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারসের সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে পরপর দুইটি সুপার ওভার খেলতে হয়েছে বাংলাদেশের। ভারতের বিপক্ষে প্রথম সেমি-ফাইনালের সুপার ওভারে দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেখানেই যেন শেষ করে দেন রিপন।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালেও লড়াইটা করেন তিনি। মাত্র ৬ রানের পুঁজি থাকলেও ইয়র্কারের মেলা সাজিয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখেন তিনি। আর কিছু রান বেশি থাকলে হয়তো ফাইনালেও দলকে জিতিয়ে বের হতে পারতেন রিপন।
পরপর দুই ম্যাচে এমন চাপের সময়ে বোলিংয়ের পর রিপন বললেন, এমন মুহূর্তের জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলেন তিনি।
“ফ্রন্টলাইন পেসার হিসেবে দায়িত্ব নিতে হবে। আকবর ভাইয়ের সঙ্গে যেহেতু আমি এর আগেও অনেক ক্যাম্প করেছি, অনেক খেলেছি, উনি জানেন আমার স্ট্রেংন্থটা। উনি আমাকে বলেছেন, এরকম তৈরি থাকতে হবে, টিম ম্যানেজমেন্ট থেকেও একটা ইতিবাচক বার্তা ছিল যে, তুমি এখানে করবে। তাই আমিও রেডি ছিলাম।”
“আমি যেহেতু টপ এন্ড টি-টোয়েন্টিও খেলেছি এর আগেও, ওই মাইন্ডে এশিয়া কাপ খেলেছি। তো আমি ঐদিক থেকে রেডি ছিলাম যেন এই পরিস্থিতিতে বল করতে পারি। আলহামদুলিল্লাহ ভালো হয়েছে। আর অধিনায়ক ও টিম ম্যানেজমেন্টও আমার প্রতি বিশ্বাস ছিল। আমি অবদানটা রাখতে পেরে খুব ভালো লাগছে।”
পাঁচ ম্যাচে ১১ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি রিপন এবার নজর কেড়েছেন মূলত একের পর এক ইয়র্কার করে। টুর্নামেন্টজুড়ে ব্লক হোলে বোলিং করে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের আটকে রেখেছেন তিনি। পুরো আসরে ওভারপ্রতি তার খরচ মাত্র ৬.৭৫ রান।
ইয়র্কার করার ব্যাপারে রিপন জানালেন, নিজের ভাবনায় সবসময় স্বচ্ছ ও অটল থাকেন তিনি।
“এটায় (ইয়র্কারে) আপনার পরিকল্পনার পূর্ণ বাস্তবায়ন না হলে ছক্কা নয় চার। এটা যদি আপনি ভেবে বল করেন, আপনি করতে পারবেন। আমি যখন বল হাতে নেই, আমি চিন্তা করি যে আমি এটা করব মানে এটাই করব। মানে আমি আমার মাঝখানে দ্বিতীয় কোনো অপশন রাখি না, যখন বোলিংটা করি।”
অথচ বছর দুয়েক আগেও বোলিং অ্যাকশন ও বডি এলাইনমেন্ট ঠিক যুতসই ছিল রিপনের। বিসিবির বিভিন্ন প্রোগ্রামে এসব নিয়ে কাজ করে এখন পুরোপুরি সোজা হয়েছে বলছেন তিনি।
“সবশেষ এইচপি ক্যাম্পে এটা নিয়ে একটু কাজ করেছি। আগের ভিডিওগুলো দেখেছি। আমার কাছে এবার মনে হলো একেবারে সোজা (এলাইনমেন্ট), একদম স্টাম্পের মতো সোজা।”
অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায় থেকেই ইয়র্কার নিয়ে আলাদা করে কাজ করেছেন রিপন। প্রায় তিন-চার বছরের এই পথচলায় দেশি ও বিদেশি কোচদের অবদানও উল্লেখ করলেন তিনি।
“আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো হয়েছে। আল্লাহ সাহায্য করেছেন আর পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হয়েছে। এত দিন ধরে যে পরিশ্রমটা করেছি আমরা অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে... সেখানে তালহা (জুবায়ের) স্যার ছিলেন কোচ। তারপর ডলার (মাহমুদ) ভাই ছিলেন এইচপিতে, তারেক (আজিজ) ভাই ছিল আর স্পেশালি যে আমাদের এইচপির যে বোলিং ডিপার্টমেন্টে হেড ছিলেন কোরি (কলিমোর) ভাই।”
“এই কয়জন খুবই সাহায্য করেছেন আমাকে ইয়র্কারের বিষয়ে। আমি যখন যা চেয়েছি প্র্যাকটিসের পরে মানে কখনও উনারা না করেন নাই। উল্টো সবসময় আমাকে মোটিভেট করতেন উনারা। তো এইজন্য আরকি খুবই ভালো। আমার দিক থেকে মানে আমি তাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ।”
No posts available.
৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫:৫১ পিএম
৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫:২৪ পিএম
৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫:২১ পিএম

টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ১৫ জনের দল ঘোষণা করেছে ওমান। ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলটির নেতৃত্ব দেবেন ওপেনার জতিন্দর সিং। তবে আলোচনার জন্ম দিয়েছে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার আমির কালিমকে দলে না রাখা। এশিয়া কাপে ভালো পারফরম্যান্সের পরও ৪৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার জায়গা পাননি চূড়ান্ত স্কোয়াডে।
ঘোষিত দলে সহ-অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন উইকেটকিপার–ব্যাটার ভিনায়ক শুক্লা। বছরের শুরুতে এশিয়া কাপে যে দল খেলেছিল, সেখান থেকে পাঁচটি পরিবর্তন এনেছে ওমান ক্রিকেট বোর্ড।
নতুন করে বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়েছেন অলরাউন্ডার ওয়াসিম আলি, করণ সোনাভালে ও জে ওডেড্রা। পাশাপাশি পেস আক্রমণ শক্তিশালী করতে দলে যুক্ত করা হয়েছে শফিক জান ও জিতেন রামানন্দিকে। রামানন্দি, ওডেড্রা ও ওয়াসিম আলি টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলেছিলেন। শফিক জান ওমানের হয়ে অভিষেক করেন এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারস টুর্নামেন্টে, যেখানে খেলেছিলেন সোনাভালেও।
এশিয়া কাপের দলে থাকা কয়েকজন ক্রিকেটারের সঙ্গে এবার বাদ পড়েছেন আমির কালিম। সেই টুর্নামেন্টে তিনি ওমানের হয়ে দুটি ফিফটি করেছিলেন এবং পরবর্তীতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বেও খেলেন। অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারকে চূড়ান্ত বিশ্বকাপ দলে রাখেনি টিম ম্যানেজমেন্ট।
অধিনায়ক জতিন্দর সিং ওমানের টি–টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এবং সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। আগের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনি দলে জায়গা পাননি, তবে এবার নেতৃত্বের দায়িত্ব নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছেন তিনি।
২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ‘বি’ গ্রুপে খেলবে ওমান। গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ সহ-আয়োজক শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ড। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে ওমান।
ওমানের বিশ্বকাপ দল:
জতিন্দর সিং (অধিনায়ক), ভিনায়ক শুক্লা (সহ-অধিনায়ক), মোহাম্মদ নাদিম, শাকিল আহমদ, হাম্মাদ মির্জা, ওয়াসিম আলি, করণ সোনাভালে, ফয়সাল শাহ, নাদিম খান, সুফিয়ান মেহমুদ, জে ওডেড্রা, শফিক জান, আশিস ওডেডারা, জিতেন রামানন্দি, হাসনাইন আলি শাহ।

নিজেদের কিংবদন্তি পেসার লাসিথ মালিঙ্গাকে জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে যুক্ত করেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি)। আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে মঙ্গলবার সাবেক এই পেসারের নিয়োগের খবর নিশ্চিত করেছে লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড।
শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলে পরামর্শক-ফাস্ট বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করবেন মালিঙ্গা। তবে পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে নয়। আপাতত এক মাসের কিছু বেশি সময়ের জন্য তাকে দলের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার ফাস্ট বোলারদের নিয়ে কাজ করবেন মালিঙ্গা। মূলত ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে লঙ্কানরা।
প্রায় ১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে শ্রীলঙ্কার হয়ে ৩০ টেস্টে ১০১ উইকেট, ২২৬ ওয়ানডেতে ৩৩৮ উইকেট ও ৮৪ টি-টোয়েন্টিতে ১০৭ উইকেট নিয়েছেন মালিঙ্গা। খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টেনে আইপিএলের দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের কোচিং প্যানেলে আছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কা ও ভারতে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নতুন সংস্করণ শুরু হবে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি। কলম্বোতে উদ্বোধনী দিনে অবশ্য শ্রীলঙ্কার খেলা নেই। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিন আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে তারা।
এরপর 'বি' গ্রুপের বাকি তিন ম্যাচে ওমান (১২ ফেব্রুয়ারি), অস্ট্রেলিয়া (১৬ ফেব্রুয়ারি) ও জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে ২০১৪ সালের চ্যাম্পিয়নরা।

আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তাঁর আগে দুশ্চিন্তা পাকিস্তান শিবিরে। অস্ট্রেলিয়ায় বিগ ব্যাশ লিগ (বিবিএল) খেলতে গিয়ে হাঁটুর চোটে পড়েছেন দলের অন্যতম সেরা পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি।
শনিবার অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে ব্রিসবেন হিটের ম্যাচে ফিল্ডিং করার সময় ডান হাঁটুতে চোট পান শাহিন। খুঁড়িয়ে হাটার পর ওভার শেষ করে বাইরে চলে যান তিনি।
ব্রিসবেন হিট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে,
‘এরই মধ্যে শাহিনের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অ্যাডিলেড থেকে ফেরার পর তাঁর হাঁটুর আরও বিস্তারিত পরীক্ষা করা হবে।’
সতর্কতার অংশ হিসেবে আজই বিগ ব্যাশ ছেড়ে দেশে ফিরছেন শাহিন। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ঘনিয়ে আসায় তাঁর দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিসিবি। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) হাই পারফরম্যান্স সেন্টারে পুনর্বাসন শুরু করবেন শাহিন।
এবারই প্রথমবার বিগ ব্যাশ খেলতে যান শাহিন। তবে শুরুটা ভালো করতে পারেননি বাঁহাতি পেসার। ৪ ম্যাচে পেয়েছেন মোটে ২ উইকেট, ইকোনমি ১১.১৯।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ক্রিকেটের মঙ্গলবারের স্থগিত হয়ে যাওয়া খেলা ২৬ ঘণ্টা পিছিয়ে নতুন সূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। নতুন সূচিতে বুধবার দুপুর ৩টায় হবে প্রথম ম্যাচ। আর দিনের দ্বিতীয় ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে।
এর আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিপিএলের মঙ্গলবারের দুই ম্যাচ স্থগিত করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ওই দুই ম্যাচেরই নতুন সূচি এবার জানিয়েছে বিসিবি।
নতুন সূচিতে, বুধবার দুপুর ১টার বদলে দুপুর ৩টায় মুখোমুখি হবে সিলেট টাইটান্স ও চট্টগ্রাম রয়্যালস। বুধবার বাদ জোহর খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তাই দুই ঘণ্টা পিছিয়ে শুরু হবে বিপিএলের প্রথম ম্যাচ।
এরপর সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের প্রতিপক্ষ ঢাকা ক্যাপিটালস। এর আগে গত শুক্রবার টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী দিনেও দুপুর ৩টা ও সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে শুরু হয়েছিল দিনের দুই ম্যাচ।
বুধবারের ম্যাচের জন্য নতুন করে টিকেট কেনার প্রয়োজন নেই দর্শকদের। মঙ্গলবারের জন্য কেনা টিকেট দিয়েই বুধবারের দুই ম্যাচ মাঠে বসে দেখতে পারবেন তারা।
বিপিএলের আর কোনো ম্যাচের সূচি পরিবর্তন করা হয়নি। অর্থাৎ বৃহস্পতি ও শুক্রবার পূর্ব নির্ধারিত সূচিতেই হবে সিলেট পর্বের শেষ চার ম্যাচ।

নিলামে উঠছে স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের ব্যাগি গ্রিন ক্যাপ। ঐতিহাসিক এই ক্যাপটি ১৯৪৭–৪৮ মৌসুমে ভারতের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ চলাকালে পরেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক কিংবদন্তি। পরবর্তীতে তিনি ক্যাপটি উপহার দেন ভারতের অলরাউন্ডার শ্রীনিবাসা ওয়াসুদেব সোহোনিকে। সাত দশকেরও বেশি সময় পর এই প্রথম ক্যাপটি প্রকাশ্য নিলামে তোলা হচ্ছে।
ভারতের স্বাধীনতার পর প্রথম বিদেশ সফরে অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিল ভারতীয় দল। সেই ঐতিহাসিক সিরিজেই ব্র্যাডম্যানের কাছ থেকে এই ব্যাগি গ্রিনটি উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন সোহোনি। নিলাম আয়োজকদের মতে, ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও নির্ভরযোগ্য উৎসের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংগ্রাহক ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হবে।
অস্ট্রেলিয়ান অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এএপি) জানিয়েছে, ব্র্যাডম্যানের সময়কার বেশিরভাগ ব্যাগি গ্রিন ক্যাপ এখন জাদুঘরে সংরক্ষিত বা ব্যক্তিগত সংগ্রহে রয়েছে। কিন্তু এই ক্যাপটি কখনোই জনসমক্ষে প্রদর্শিত হয়নি বা বিক্রির জন্য তোলা হয়নি। টানা ৭৫ বছরের বেশি সময় ধরে এটি সোহোনি পরিবারের কাছেই সংরক্ষিত ছিল।
১৯৪৭–৪৮ মৌসুমে সেই সিরিজে ভারতকে ৪–০ ব্যবধানে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সে সময় প্রত্যেক টেস্ট সিরিজের জন্য খেলোয়াড়দের আলাদা ব্যাগি গ্রিন ক্যাপ দেওয়া হতো। ফলে ব্র্যাডম্যানের পরা প্রতিটি ক্যাপই আলাদা ঐতিহাসিক মূল্য বহন করে। ভারতের বিপক্ষে সেই সিরিজের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হওয়ায় এই ক্যাপটির গুরুত্ব আরও বেড়েছে।
লয়েডস অকশনসের প্রতিনিধি লি হেমস বলেছেন, এটি ক্রিকেট ইতিহাসের একেবারে খাঁটি স্মারক, যা স্যার ডন ব্র্যাডম্যান নিজ হাতে উপহার দিয়েছিলেন। ব্র্যাডম্যান ও সোহোনির ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং ক্যাপটির নিরবচ্ছিন্ন মালিকানা ইতিহাস এটিকে সংগ্রাহকদের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
নিলামে এই ব্যাগি গ্রিনের প্রারম্ভিক দর ধরা হয়েছে মাত্র এক অস্ট্রেলিয়ান ডলার। আগামী ২৬ জানুয়ারি নিলাম শেষ হবে। ব্যক্তিগত সংগ্রাহক, জাদুঘর, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগেও ব্র্যাডম্যানের ব্যাগি গ্রিন নিলামে বড় অঙ্কে বিক্রি হয়েছে। ভারতের বিপক্ষে একই সিরিজের আরেকটি ক্যাপ গত বছর নিলামে বিক্রি হয়েছিল প্রায় ২ কোটি ৬৩ লাখ রুপিতে। সব দিক বিবেচনায় ১৯৪৭–৪৮ মৌসুমের এই ব্যাগি গ্রিন ক্যাপটি ক্রিকেট স্মারক সংগ্রাহকদের কাছে বড় আকর্ষণ হয়ে উঠবে বলেই মনে করছেন আয়োজকেরা।
ডন ব্র্যাডম্যানকে ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ব্যাটার হিসেবে ধরা হয়। ওই সিরিজে তিনি ছয় ইনিংসে ৭১৫ রান করেছিলেন, গড় ছিল ১৭৮.৭৫। তিনটি সেঞ্চুরি ও একটি ডাবল সেঞ্চুরির সৌজন্যে অস্ট্রেলিয়াকে সিরিজ জয়ে নেতৃত্ব দেন তিনি।