
বাংলাদেশ সফরের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে হতাশাজনক বোলিংয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলে জায়গা হারালেন গুদাকেশ মোতি। বোলিং অ্যাকশন নিয়ে কাজ করার জন্য নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে রাখা হয়নি বাঁহাতি স্পিনারকে।
কাঁধের চোটে বাইরে থাকা ম্যাথু ফোর্ডকে ফেরানো হয়েছে ১৫ জনের দলে। চোটের কারণে র্যামন সিমন্ডস ও জেডিয়াহ ব্লেডস না থাকায় পেস বিভাগ শক্তিশালী করতে দলে নেওয়া হয়েছে শামার স্প্রিঙ্গারকে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলে সোজা নিউ জিল্যান্ড চলে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অকল্যান্ডে বুধবার শুরু হবে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। যা শেষ হবে ১৩ নভেম্বর।
মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে স্পিন সহায়ক উইকেটেও তেমন ভালো করতে পারেননি মোতি। ওয়ানডে সিরিজের তিন ম্যাচে মাত্র ৪ উইকেট নেন তিনি। তিন ম্যাচেই করেন বেশ খরুচে বোলিং। পরে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে তাকে একাদশে রাখেনি ক্যারিবিয়ানরা।
নিউ জিল্যান্ড সিরিজ থেকে বাদ পড়ে নিজের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে কাজ করবেন মোতি। এছাড়া নিউ জিল্যান্ডের মাঠে তুলনামূলক পেস সহায়ক কন্ডিশন হওয়ায় নিজেদের স্কোয়াডে বাড়তি স্পিনার রাখেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ক্যারিবিয়দের পেস বিভাগে ফোর্ডের বাইরে আছেন শুধু জেডেন সিলস। তবে পেস বোলিং অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডার, রোমারিও শেফার্ড ও স্প্রিঙ্গার। আর স্পিনে থাকছেন রস্টোন চেজ, আকিল হোসেন ও খ্যারি পিয়েরে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াড
শাই হোপ (অধিনায়ক), আলিক আথানেজ, আকিম অগারস্ত, রস্টোন চেজ, ম্যাথু ফোর্ড, জেসন হোল্ডার, আকিল হোসেন, আমির জাঙ্গু, ব্র্যান্ডন কিং, খ্যারি পিয়েরে, রভম্যান পাওয়েল, শেরফান রাদারফোর্ড, জেডেন সিলস, রোমারিও শেফার্ড, শামার স্প্রিঙ্গার।
No posts available.
৩ নভেম্বর ২০২৫, ২:৫৬ পিএম
৩ নভেম্বর ২০২৫, ২:১২ পিএম
৩ নভেম্বর ২০২৫, ৯:৩৬ এম

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সামনের অ্যাশেজ সিরিজের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য ভারতের বিপক্ষে শেষ দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচে খেলবেন না ট্রাভিস হেড। টি-টোয়েন্টি দল ছেড়ে এখন শেফিল্ড শিল্ডে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলবেন বাঁহাতি ব্যাটার।
গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের পর আর লাল বল ক্রিকেট খেলেননি হেড। হোবার্টে তাসমানিয়ার বিপক্ষে শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচ দিয়ে প্রায় তিন মাস পর প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলবেন তিনি।
সাদা বলের ক্রিকেটে সাম্প্রতিক ফর্মও খুব একটা ভালো যায়নি হেডের। আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৪২ রানের ইনিংসে পর ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ৮ ইনিংসে তার সর্বোচ্চ ইনিংস মাত্র ৩১ রানের।
অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিতে হবে ৩২ ছুঁইছুঁই ব্যাটারের। প্রতিপক্ষ বোলিংকে পাল্টা আক্রমণের জন্য পাঁচ নম্বরে তার ওপরই ভরসা করবে অস্ট্রেলিয়া। তাই নিজ থেকেই অ্যাশেজের আগে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলতে চেয়েছেন হেড।
হেড ছাড়াও শেফিল্ড শিল্ডে খেলবেন অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের অন্যান্য সদস্যরা। নিউ সাউথ ওয়েলসের জার্সিতে দেখা যাবে জশ হেজেলউড ও মিচেল স্টার্ককে। তাদের বিপক্ষে ভিক্টোরিয়ার হয়ে খেলবেন নাথান লায়ন।
এছাড়া স্কট বোল্যান্ড, ক্যামেরন গ্রিন, মার্নাস লাবুশেন, বাউ ওয়েবস্টাররাও প্রথম শ্রেণির এই টুর্নামেন্টে খেলে নিজেদের প্রস্তুতি সারবেন।
পার্থে আগামী ২১ নভেম্বর শুরু হবে এবারের অ্যাশেজ সিরিজ। এর আগে ৫ ও ৮ তারিখ ভারতের বিপক্ষে শেষ দুই টি-টোয়েন্টি খেলবে অস্ট্রেলিয়া।

কাশ্মিরের ক্রিকেট ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচনার স্বপ্ন নিয়েই শুরু হয়েছিল ইন্ডিয়ান হেভেন প্রিমিয়ার লিগ (আইএইচপিএল)। বিশ্ব ক্রিকেটকে জম্মু-কাশ্মিরে নেওয়া ছিল লক্ষ্য। কিন্তু এক রাতেই হাওয়ায় মিলিয়ে গেল সেই স্বপ্ন। উল্টো অভিযোগ উঠেছে, মধ্য রাতে পালিয়ে গেছেন আয়োজকরা, হোটেলে রেখে গেছেন অগণিত বকেয়া, বিপদে পড়েছেন ক্রিকেটার ও ম্যাচ অফিসিয়ালরা।
ক্রিস গেইল, জেসি রাইডার ও থিসারা পেরেরার মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের নিয়ে তারকাবহুল এই লিগ শুরু হয়েছিল। জম্মু-কাশ্মির ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছিল যুবা সোসাইটি নামের এক সংগঠন।
কিন্তু রোববার সকালে হঠাৎই বাকসি স্টেডিয়াম হয়ে ওঠে জনশূন্য। প্রায় ৪০ দেশি-বিদেশি ক্রিকেটার তখন শ্রীনগরের হোটেলগুলোতে আটকে পড়েন। পারিশ্রমিক পাননি তারা। এমনকি হোটেল বিলও পরিশোধ করেননি আয়োজকরা।
আরও পড়ুন
| বাংলাদেশে হতাশ করে দলের বাইরে মোতি |
|
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াকে ইংলিশ আম্পায়ার মেলিসা জুনিপার বলেন, ‘আয়োজকরা হোটেল ছেড়ে পালিয়েছে। খেলোয়াড়, আম্পায়ার- কেউই টাকা পায়নি। আমরা হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করছি। এটা ভীষণ অন্যায়।’
দ্য রেসিডেন্সি হোটেলের এক কর্মকর্তা জানান, ‘দশ দিন আগে আয়োজকরা প্রায় ১৫০টি রুম ভাড়া নেয়। ক্রিস গেইলের মতো তারকা এনে কাশ্মীরের পর্যটন বাড়ানোর বড় স্বপ্ন দেখিয়েছিল তারা। কিন্তু রোববার সকালে তারা উধাও। গেইলসহ কিছু খেলোয়াড় আগের দিনই চলে যান।
ভারতের সাবেক অলরাউন্ডার পারভেজ রাসুলও খেলেছিলেন এই লিগে। তিনি বলেন, ‘কিছু বিদেশি খেলোয়াড়কে হোটেল ছাড়তে দেওয়া হচ্ছিল না। ইংলিশ আম্পায়ারকে ব্রিটিশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়।’
স্থানীয় এক ক্রিকেটার জানান, ‘আয়োজকেরা হয়তো খরচ আর আকারটা ঠিক বোঝেনি। মাঠে দর্শকই ছিল না। স্পনসররাও পিছু হটে। প্রথম দিনই জার্সি ছিল না, বাজার থেকে কিনে দেওয়া হয়। কোনো খেলোয়াড়ের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তিও হয়নি।’
জম্মু-কাশ্মির স্পোর্টস কাউন্সিলের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আইএইচপিএলের প্রেসিডেন্ট অশু দানি পুলিশের ছাড়পত্র ও অবকাঠামো ব্যবহার অনুমতি নিয়েছিলেন। সরকার কোনোভাবে আয়োজনের অংশীদার ছিল না। আমরা জানি না মাঝপথে কেন বন্ধ হয়ে গেল এটি।’
আইএইচপিএলের উদ্দেশ্য জানিয়ে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঘোষণা দেওয়া হয় যে, জম্মু-কাশ্মিরের তৃণমূল ক্রিকেট উন্নয়ন, তরুণদের ক্রিকেটে আনা ও ক্রীড়া পর্যটন বৃদ্ধি করতে চান আয়োজকরা। এই লিগের মেন্টর হিসেবে ছিলেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সুরিন্দর খান্না।
গত ২৫ অক্টোবর শুরু হওয়া লিগের খেলোয়াড় তালিকায় ৩২ জন সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারের নাম ছিল। তবে গেইলের ম্যাচগুলো ছাড়া দর্শক আসন প্রায় ফাঁকাই ছিল। পেরেরা খেলেছেন একটি ম্যাচ। দক্ষিণ আফ্রিকার রিচার্ড লেভি ও ওমানের আয়ান খানও খেলেছেন কিছু ম্যাচ।
আরও পড়ুন
| বিসিবির সভাতেই বিপিএলের ফ্রাঞ্চাইজি চূড়ান্ত হবে |
|
আগামী ৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলার কথা ছিল আট দলের টুর্নামেন্ট। কিন্তু বাস্তবতা দেখা গেছে ভিন্ন। শুরু থেকেই মাঠে দেখা যায়নি দর্শক উপস্থিতি। টিকিটের দাম কমিয়েও লাভ হয়নি। স্পনসররা পিছিয়ে গেছেন।
আর এক সপ্তাহ না যেতেই আয়োজকরা গায়েব। টাইমস অব ইন্ডিয়া তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও লিগ মেন্টর সুরিন্দর খান্না ও ডিভিশনাল কমিশনারের সাড়া মেলেনি।

প্রায় এক মাস ধরে ঝুলতে থাকা অমীমাংসিত বিষয়ে অবশেষে সমাধান জানাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) এনএসসি থেকে দ্বিতীয় পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পেলেন কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব রুবাবা দৌলা।
গত মাসে বিসিবির পরিচালক পর্ষদের নির্বাচনের পরদিন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল, এনএসসি থেকে বিসিবির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেবেন রুবাবা। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে তখন সেটির ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
অবশেষে সোমবার এনএসসি পরিচালক (ক্রীড়া) মোঃ আমিনুল এহসান সাক্ষরিত ভিন্ন দুই চিঠিতে এই মনোনয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রথম চিঠিতে তাকে এম ইশফাক আহসানের বদলে কাউন্সিলর হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। পরের চিঠিতে এনএসসি কোটায় পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন
| নারী বিশ্বকাপে নতুন চ্যাম্পিয়ন ভারত |
|
বিসিবি নির্বাচনের দিন এনএসসি মনোনীত পরিচালক হিসেবে এম ইসফাক আহসান ও ইয়াসির মোহাম্মদ ফয়সাল আশিকের নাম ঘোষণা করা হয়। এনএসসির সবশেষ চিঠিতে বলা হয়েছে, এই দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন এম ইসফাক আহসান। তাই রুবাবা দৌলাকে বেছে নিয়েছে এনএসসি।
দীর্ঘ দিন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ওরাকলের বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রুবাবা দৌলা। এর আগে টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন ও এয়ারটেলের শীর্ষ পর্যায়ে কাজ করেছেন তিনি।
খেলাধুলার সঙ্গেও তার সম্পৃক্ততা বেশ পুরোনো। ২০০৯ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন রুবাবা। এছাড়া বাংলাদেশ স্পেশাল অলিম্পিকসের বোর্ড সদস্যও ছিলেন তিনি।
গ্রামীণফোনের কর্মকর্তা হিসেবে দেশের ক্রিকেটাঙ্গনেও পরিচিত মুখ ছিলেন রুবাবা দৌলা।। ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পৃষ্ঠপোষক ছিল গ্রামীণফোন। ২০০৭ সালে গ্রামীণফোন ও বিসিবির যৌথ উদ্যোগে মিরপুরে জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি স্থাপনে ভূমিকা ছিল রুবাবা দৌলারও।
এবার নতুন পরিচয়ে দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম দিনই বিসিবিতে আসতে পারেন তিনি। সোমবারের বোর্ড পরিচালকদের সভায় উপস্থিত থাকতে পারেন রুবাবা দৌলা।

প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার উদযাপন তো বাঁধভাঙা হবেই। দক্ষিণ আফ্রিকাকে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে ৫২ রানে হারিয়ে শিরোপা জেতা ভারতের উদযাপনে ছিল না কোনো কমতিও। আর এই ট্রফি জেতার উল্লাসকে দ্বিগুন করতে চোখ কপালে তোলা অঙ্কের পুরষ্কার ঘোষণা করেছে বিসিসিআই।
নাভি মুম্বাইয়ে গতকাল শেফালি বর্মা ও দিপ্তী শর্মার ব্যাটে ভর করে ২৯৮ রান তোলে ভারত। মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ফাইনালে এর আগে ১৬৭ রানের বেশি লক্ষ্য ছুঁয়ে জিততে পারেনি কোনো দল। শেষ পর্যন্ত পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকাও, অধিনায়ক লরা ওলভার্টের লড়াকু সেঞ্চুরিতেও ২৪৬ রানেই থামে প্রোটিয়ারা। তাতে ঘরের মাঠে সমর্থকদের সামনে প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে হারমানপ্রীত কৌরের দল।
ভারতের এই জয়ে দেশটির নারী ক্রিকেটের ভবিষ্যতেই পাল্টে দেবে বলছেন উচ্ছসিত বিসিসিআইয়ের সচিব দেবজিত সাইকিয়া। ভারতের সংবাদমাধ্যম এএনআই-কে দেওয়া এক তিনি বলেন , ‘এই জয় শুধু এক ম্যাচের জয় নয়, এটি এমন এক মুহূর্ত যা ভারতের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ বদলে দেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সাফল্য পরবর্তী প্রজন্মের নারী ক্রিকেটারদের অনুপ্রেরণা জোগাবে। এটি নারীদের ক্রিকেটের ইতিহাসে এক বিশাল পদক্ষেপ।’
চ্যাম্পিয়ন ভারত দলের জন্য ৫১ কোটি রুপি বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৭১ কোটি টাকার পুরষ্কার ঘোষণা করেছে বিসিসিআিই। বিশাল অঙ্কের এই অর্থ খেলোয়াড়, কোচ ও সাপোর্ট স্টাফদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে।
বিসিসিআইয়ের পুরস্কারের পাশাপাশি, ভারতীয় দল আইসিসি থেকেও পাবে প্রায় ৫৫ কোটি কোটি টাকা, যা নারী ক্রিকেট ইতিহাসে রেকর্ড সর্বোচ্চ অর্থ পুরস্কার।

হিসাব মোটেও সহজ ছিল না। জয় পেতে রীতিমতো রেকর্ড গড়তে হতো দক্ষিণ আফ্রিকার। সমীকরণ মেলানোর মিশনে যাত্রা দাপুটে হলেও একটা পর্যায়ে চোক করে বসে প্রোটিয়ারা। তাতেই নারী বিশ্বকাপ দেখল নতুন চ্যাম্পিয়ন। লরা ওয়লভার্টদের বিপক্ষে ৫২ রানে জিতে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতল হারমানপ্রীত কৌরের দল।
নাভি মুম্বাইয়ে আজ প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শেফালি বর্মা ও দিপ্তী শর্মার ব্যাটে ভর করে ২৯৮ রান তোলে ভারত। মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ফাইনালে এর আগে ১৬৭ রানের বেশি লক্ষ্য ছুঁয়ে জিততে পারেনি কোনো দল। তাছাড়া নারী ওয়ানডে ইতিহাসে দক্ষিণ আফ্রিকাও কখনোই এত বেশি রান তাড়া করে জিততে পারেনি। জয় পেতে কঠিন রান পাহাড়ে চড়তে হতো প্রোটিয়াদের। তারা সুন্দরভাবে ২০০ রান পেরোলেও যাত্রা থামে ২৪৬ রানে।
টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট হারায়নি ভারত। ১০ ওভারে বিনা উইকেটে তারা তোলে ৬৪ রান। স্মৃতি মান্ধানা ও শেফালি বর্মার জুটি ভাঙে ১০৪ রানে, স্মৃতি ফিরলে। ক্রিজ ছাড়ার আগে বাঁহাতি এই ব্যাটার ৪৫ রান করেন।
জুটি ভাঙলেও ঠিকই রেকর্ড গড়েছেন দুজন। নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালে এখন পর্যন্ত উদ্বোধনী জুটিতে ভারতের সর্বোচ্চ রান—মান্ধানা-শেফালির এই ১০৪ রান।
মান্ধানা ফেরার পরও থেমে থাকেননি শেফালি। ৬ রানে জীবন পাওয়া এই ব্যাটার স্বাচ্ছন্দ্যেই এগোচ্ছিলেন সেঞ্চুরির পথে। তবে দ্বিতীয়বার ক্যাচ তুলে দিয়ে আর রক্ষা পাননি। সুনে লুসের হাতে ধরা পড়ে ফিরতে হয় ৮৭ রানে। আউট হওয়ার আগে মারেন ৭ চার ও ২ ছক্কা।
দলকে ফাইনালে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জেমিমাহ রদ্রিগেজ আজ থিতু হয়েও সুবিধা করতে পারেননি। তিনি ফেরেন ২৪ রানে। অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর থামেন ২০ রানে, আর আমানজোত কৌর ব্যক্তিগত ইনিংসে যোগ করেন ১২ রান।
দলীয় ২৪৫ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নেন দিপ্তী শর্মা ও রিচা ঘোষ। তাদের জুটি থেকে আসে ৪৭ রান। শেষ পর্যন্ত রিচা ফেরেন ৩৪ রানে, আর শেষ বলে রান আউটে কাটা পড়ে দিপ্তী করেন ৫৮ রান। তাতেই ভারত পান ২৯৮ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন আয়াবঙ্গা খাকা। ৯ ওভার বল করে খরচ করেন ৫৮ রান।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে বেশ গুছানো ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার পথচলা। তাজমিন ব্রিটসকে নিয়ে দেখেশুনে সূচনা করেন লরা ওয়লভার্ট। বিপত্তি ঘটে দলীয় ৫১ রানে, যখন তাজমিন রান আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন। মূলত ধাক্কাটা তখন থেকেই শুরু প্রোটিয়াদের।
পর্যায়ক্রমে আনিকা বশ, সুনে লুস, মারিজান কাপ ও সিনাল জাফতা ফেরেন। বিশেষ করে আনিকা ও কাপের ফেরাটা বেশি বিপাকে ফেলে প্রোটিয়াদের। আসরজুড়ে ধারাবাহিকভাবে কাপ মাত্র ৪ রান করতে পারেন। অন্যদিকে আনিকার ফেরাটা ছিল ডাক মেরে।
১৪৮ রানে মিডল অর্ডারের পাঁচ ব্যাটারকে ফেরানোর পরও আনেরি ডের্কসেনকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান ওয়লভার্ট। ধাক্কা সামাল দেওয়ার জন্য সবধরণের চেষ্টা চালান দুইজন। তবু দিপ্তী শর্মার বল বুঝে ওঠার আগেই স্ট্যাম্প ভেঙে দেন ডের্কসেনকে। ৩৫ রানে ফেরেন তিনি।
ডের্কসেনের পর ওয়লভার্ট ফেরাতে তখনই পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার। প্রোটিয়া অধিনায়ক ৯৮ বলে ১০১ রান করেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার দশম সেঞ্চুরি। ৪১.১ ওভারে ৭ উইকেট হারানো দল তখনো ৭৮ রান দূরে। শেষ পর্যন্ত ২৪৬ রানে থামে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস।
ভারতের হয়ে দিপ্তী ৯.৩ ওভারে ৫ উইকেট নেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট নেন শেফালি বর্মা, তিনি নেন ২টি।