একাধিকবার এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেও চ্যাম্পিয়নের তালিকায় নেই বাংলাদেশ। সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবার ইতিহাস বদলানোর লক্ষ্যে গেছেন লিটন দাসরা। ২০২৫ এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি সংস্করণে হওয়ায়, কাজটা সহজ হওয়ারও কথা নয়।
চ্যাম্পিয়ন হতে পারে যেকোনো দল। তবে বাংলাদেশকে উপেক্ষা করলে ‘বড়’ ভুল করবে দলগুলো- টি স্পোর্টসের সঙ্গে আলাপকালে গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো বলেন বাংলাদেশ ক্রিকটে বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও নারী বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন যূহাইরাহ মৌ।
টানা তিন সিরিজ জিতে এশিয়া কাপে পা রেখেছে বাংলাদেশ। স্বাভাবিকভাবেই দলের আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি থাকার কথা। তবুও বর্তমানে দলের অবস্থা আসলে কেমন? এশিয়া কাপ নিয়ে দল কতটা আশাবাদী?
নাজমুল আবেদীন ফাহিম: আমার কাছে মনে হয়, এখন আমাদের যে দল, এই দলটা বেশ গোছানো এবং ওরা জানে ওদের কি করতে হবে। এটা একটা শক্তির জায়গা আমাদের দলের জন্য এবং দলটা আত্মবিশ্বাসী। এটা শুধু এই জন্য না- আমরা গত তিনটা সিরিজ জিতেছি সেজন্য না। প্রত্যেক ইন্ডিভিজুয়াল ক্যাপাসিটি ওরা এখন অনুমান করতে পারে। ওরা যে আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড়, আমাদের দলে অনেক আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় আছে এটা তারা জানে এবং ওরা ওদের ভূমিকাগুলো জানে। আমি খুব আশাবাদী। তারপরে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ তুমি জানো না, কি কি হয়। কিন্তু আমি খুবই আশাবাদী।
কেউ কেউ এখন বাংলাদেশকে ছোট করে দেখছে। দেশের বাইরের বিভিন্ন ক্রিকেট বিশ্লেষকেরা খেলোয়াড়দের যোগ্যতা ও অবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে। সে ব্যাপারে কি কিছু বলতে চান?
ফাহিম: কেউ যদি বাংলাদেশ দলকে উপেক্ষা করে তাহলে খুব ভুল করবে। এটা আমি বলতে পারি। আশা করব যে বাংলাদেশ দল ভালো করবে। আমরা একটা জিনিস কিন্তু কনসিস্টেন্টলি দেখতে পাচ্ছি যে আমাদের টপ অর্ডার রান হচ্ছে। এটা কিন্তু যদি আমরা তিন মাস চার মাস ছয় মাস আগেও দেখতাম, আমরা যেহেতু সব সময় ফেল করছি। কিন্তু গত তিন মাসে বা গত দু-মাসে আমরা দেখেছি আমাদের টপ পারফর্ম করছে। আমাদের বোলারদের পারফরম্যান্স কিন্তু খুবই প্রশংসনীয়। আমি খুব আশাবাদী এখন দেখতে হবে নির্দিষ্টি দিনে আমরা কেমন করি। আমরা মানসিকভাবে কি অবস্থায় থাকি, আমি আশাবাদী।
টপ অর্ডারের রানের কথা বললেন। সবশেষ নেদারল্যান্ডস সিরিজে বড় শট দেখিয়ে প্রশংসায় ভেসেছে বাংলাদেশ দল। টপ অর্ডারও রান পাচ্ছে বেশ কিছু সময় ধরে। সত্যিই কি এখন বলা যায় যে পাওয়ার হিটিংয়ে উন্নতি চলে এসেছে দলে?
ফাহিম: আমি কয়েক দিন আগে দেখছিলাম একটা ডাটা দেখছিলাম যেখানে বাংলাদেশের সম্প্রতি সিক্স হিটিং এবিলিটি অন্যান্য অনেক দেশের কাছাকাছি আছে। আমরা পাওয়ার হিটিংয়ে সম্প্রকি ভালো করেছি। পাওয়ার হিটিংয়ে কাজ করার আগে থেকেই। তারপরও আমি বলব, আমরা সবাই হয়তো ওই মানের পাওয়ার হিটার না। সেখানে যারা একটু পিছিয়ে আছে তাদের জন্য এই এই কাজগুলো কাজে আসবে। আমরা পাওয়ার হিটিং কোচকে নিয়ে এসে ছিলাম, তার উপস্থিতি, পাশাপাশি যারা ভালো হিট করে তারা হয়তো কিছুটা লাভবান হয়েছে।
এটাতো অনুশীলনের ব্যাপার। সব সময় চেষ্টা করার ব্যাপার এটা করতেই থাকবে। এটা হয়তো এখন আমাদের যারা কোচ আছে তাদের অধীনে ওই কোচ যা করিয়ে গেছে সেটা চালিয়ে যাবে। আমাদের ইচ্ছা আছে আমরা ভবিষ্যতে যখন সময় সুযোগ মতো যখন ওদের ট্রেনিংয়ের প্রোগ্রামগুলো চলবে, শুধু জাতীয় দল না অন্যান্য অনূর্ধ্ব-১৫ হোক এইচপি হোক তখনও এই ধরনের কোচকে নিয়ে আসব।
অল্প সময়েও পাওয়ার হিটিং কোচের সঙ্গে কাজ করে ভালোই ফল পেয়েছে দল। সামনে টাইগারদের উন্নতিতে বিসিবির এমন আরো উদ্যোগের সম্ভাবনা আছে?
ফাহিম: শুধু পাওয়ার হেটিং কোচ না স্পেশালিস্ট হয়তো একজন লেগ স্পিন কোচ খুব বড় উঁচু মানের একজন লেগ স্পিন কোচ হোক কিংবা একজন ফাস্ট বোলিং কোচ হোক, শর্ট সময়ের জন্য নিয়ে আসব। আমাদের টপ র্যাংকিং প্লেয়ার যারা আছে এলিট প্লেয়ার যারা আছে তাদেরকে নিয়ে যেন কাজ করতে পারে। আমরা ধরে নিয়েছিলাম আমাদের সিনিয়র প্লেয়ার যারা আছে এস্টাবলিশ প্লেয়ার যারা আছে ডেফিনেটলি তারা যোগ্য এবং তাদের উপরই আমাদের নির্ভরশীলতা বেশি থাকবে। অন্যরা ভালো হলেও তারা পাশে পাশেই একটা সহ অবস্থান অবস্থায় থাকবে। আসলে এভাবে একটা দল তৈরি হতে পারে না কিন্তু। ১১ জনের খেলায় ১১ জনকেই মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। এখানে সবাই হিরো, এখানে পার্শ্বচরিত্র বলে কিছু নেই কিন্তু।
অনেক পরিচিত নাম ছাড়াই এবারের এশিয়া কাপে বাংলাদেশ। সাকিব-তামিমসহ অনেক সিনিয়র প্লেয়ারই নাই এখন দলে। তাঁদের না থাকার কোনো প্রভাব কি দেখেন দলে? সেই সিনিয়রদের দায়িত্ব কি ঠিকঠাক বর্তমান খেলোয়াড়েরা নিতে পারছে?
ফাহিম: আমার মনে হয় এই দলটাতে এখন পার্শ্বচরিত্রে কেউ নেই। এখানে তানজিম সাকিবও ওই লাস্টে গিয়ে হয়তো ১২ বলে গিয়ে যদি ২৫ রান করতে পারে তাহলে হয়তো আমরা ম্যাচ জিতবো। সে সেটা জানে এবং সেভাবে সে তৈরি হচ্ছে। সো সবাই ইম্পর্টেন্ট এখানে যে খেলছে এমনকি যে খেলছে না সেও। তো প্রত্যেকে যার যার রোল সম্পর্কে অবগত আছে এবং প্রত্যেকেই সে চেষ্টাটাই করবে এবং টিম কালচারটাই ওরকম এখন, যে কেউ সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ না। সেটা লিটন কুমার দাস ই হোক কিংবা তাওহীদ হৃদয় হোক কিংবা তাসকিন হোক। সবাই গুরুত্বপূর্ণ।
তিন তিনবার ফাইনাল খেলে হৃদয়ভাঙা হার জুটেছে এশিয়া কাপে। বাংলাদেশের জন্য তাই এই মঞ্চ একটু বেশি আবেগের। বাংলাদেশ কি এবার এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে?
ফাহিম: আমি যেই আত্মবিশ্বাস দেখছি, আত্মবিশ্বাস তো এমনি এমনি হয় না। প্রত্যেক খেলোয়াড়ের মধ্যে যে আস্থার ব্যাপারটা আছে, নিজেকে নিয়ে যে আস্থা এবং দলের যেই আবহ ড্রেসিং রুমে আবহ সবকিছু মিলে আমি আশাবাদী এই দলটাই এশিয়া কাপে ভালো খেলবে। এটা সবার ভালো লাগবে। বাংলাদেশের খেলা সবার ভালো লাগবে। ফল কি হবে এটা বলা যায় না যে আমরা কি চ্যাম্পিয়ন হতে পারব কি পারব না এটা আমি জানি না এভাবে বলাটা খুব মুশকিল।
তবে যদি ফাইনাল খেলি আমরা খুব অবাক হব না। এটা মানে হঠাৎ করে হয়ে গেল এমন হবে না। আমরা যদি ফাইনাল খেলি নিজের যোগ্যতায় আমরা ফাইনাল খেলব। সে যোগ্যতা আমাদের আছে, আমরা ফাইনাল খেলার যোগ্যতা রাখি অনেক ইভেন্টে আমরা ভারতকে অবশ্যই হারাতে পারি।
No posts available.
পাকিস্তানকে হারিয়ে শুভ যাত্রার পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোঁচট খায় বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। বিশ্বকাপের ইংলিশ মেয়েদের বিপক্ষে দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন নিগার সুলাতানারা। আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্ত ও হিদার নাইদের বীরত্বে শেষটা সুন্দর হয়নি টাইগ্রেসদের। তবে এবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোর পালা।
নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের মেয়েরা। ম্যাচের আগেই সুখবর পেল দল। পেসার মারুফ আক্তারকে দেখা যাবে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে। ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিসিবির বরাত দিয়ে আজ রাতে ক্রিকবাজ জানিয়েছে, মারুফা আগামী ম্যাচের জন্য প্রস্তুত। ওয়েবসাইটটিকে বিসিবির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন,
‘সে (মারুফা) এখন বোলিং করছেন এবং কোনো ধরনের ব্যথা অনুভব করছেন না। সে (মারুফা) ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে বোলিং করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু টিম ম্যানেজম্যান্ট রিস্ক নিতে চাননি।’
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের করা পঞ্চম ওভারের শেষ দিকেই পায়ের পেশিতে টান অনুভব করায় আর বোলিং চালিয়ে যেতে পারেননি মারুফা। তার অনুপস্থিতিতে দলের পরিকল্পনায় বড় ধাক্কা লাগে। মাঝের ওভারগুলোতে প্রয়োজনীয় ব্রেক থ্রু নিতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত হার নিয়ে ফিরতে মাঠ ছাড়তে হয় দলকে।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষেও দারুণ বোলিং করেছিলেন মারুফা। ৩১ রান খরচায় নিয়েছিলেন ২ উইকেট। দ্বিতীয় ম্যাচে আরও দুটি উইকেট তুলেন মারুফা।
কি থেকে কি হয়ে গেল। ড্রয়ের দিকে যাওয়া ম্যাচের ফল বদলে গেল এক নিমিষে। হংকং, চায়নার কাছে ৩-৪ গোলে হেরে এশিয়ান কাপে খেলার স্বপ্ন আরও ধূসর হয়ে গেল বাংলাদেশের।
শেষ বাঁশির আগ মুহূর্তে বাংলাদেশের এমন হার মানতে কষ্ট হচ্ছে দর্শকদের। মানতে পারছেন না স্বয়ং ফুটবলাররাও। ম্যাচ শেষে কান্না করতে দেখা যায় হামজা চৌধুরী ও জামাল ভূঁইয়াদের। রাকিব হোসেন-মিতুল মারমা তো সবুজ গালিচায় শুয়ে পড়েন। মুখ ডেকে রাখেন জার্সি ও হাত দিয়ে।
অন্তিম মুহূর্তে টাইগারদের এমন হারের পর সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছেন বাংলাদেশ টি টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক লিটন কুমার দাস।
আজ রাতে ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে লিটনে লেখেন,
‘মাথা উঁচু করে রাখো হামজা চৌধুরী ও বাংলাদেশ দল।’
এরপর তিনি লেখেন,
‘শেষ মিনিটে গোল খেয়ে ৩–৪ ব্যবধানে হারা ছিল সত্যিই হৃদয়বিদারক, কিন্তু তোমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দারুণ লড়েছো। হয়তো পরেরবার হবে। তোমাদের প্রচেষ্টার জন্য গর্বিত আমরা।’
২০২৭ এশিয়ান কাপের টিকিট পাবে গ্রুপের সেরা দল। চার দলের গ্রুপে সেরা হওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখতে বাংলাদেশের দরকার ছিল জয়। ড্র হতে পারত ন্যুনতম সাফল্য। কিন্তু হলো না কিছুই। এখনও গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচ বাকি আছে। যে কারণে কাগজে–কলমে বাংলাদেশের সম্ভাবনাও টিকে আছে। কিন্তু আজকের হারে গ্রুপসেরা হওয়ার আশা কার্যত শেষ।
প্রায় সাড়ে ৫ বছর পর স্বীকৃত ক্রিকেটে ফিরে প্রথম ম্যাচে তেমন কিছু করতে পারেননি অভিষেক দাস অরণ্য। তবে পরের ম্যাচেই নিজের সামর্থ্যের জানান দিলেন তিনি। ঝড়ো ইনিংসে খুলনাকে ফাইনালে তুললেন তরুণ পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
এনসিএল টি-টোয়েন্টির প্রথম কোয়ালিফায়ারে বৃষ্টিবিঘ্নিত লড়াইয়ে চট্টগ্রাম বিভাগকে ৪ উইকেটে হারায় খুলনা।
আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান করে চট্টগ্রাম। জবাবে খুলনা ২.১ ওভার ব্যাট করার পর নামে বৃষ্টি। দীর্ঘ সময় খেলা বন্ধ থাকার পর ৯ ওভারে তাদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৭৮ রানের। তখনই মাত্র ১১ বলে ২৭ রান করে দলকে জেতান অভিষেক।
এই জয়ে সরাসরি ফাইনালে উঠে গেছে খুলনা। আর এখনও বেঁচে আছে চট্টগ্রামের আশা। সেজন্য শুক্রবার বিকেলে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে তারা লড়বে রংপুরের বিপক্ষে।
অথচ ৭৮ রানের নতুন এই লক্ষ্যে মাত্র ৩০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে মহা বিপদে পড়ে গিয়েছিল খুলনা। সৌম্য সরকার, এনামুল হক বিজয়, আফিফ হোসেন ধ্রুবর মতো তারকা ব্যাটারদের কেউই তেমন কিছু করতে পারেননি।
সপ্তম উইকেটে নাহিদুল ইসলামকে নিয়ে জুটি বাধেন অভিষেক। ১৮ বলে ৩৫ রানের সমীকরণে হাসান মুরাদের বলে ২টি ছক্কা মারেন ২৪ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। ওই ওভারে ১৭ রান পায় খুলনা। পরের ওভারে তারা নেয় আরও ১০ রান।
শেষ ওভারে ৭ রান বাকি থাকলে তিন বলের মধ্যে দুইটি চার মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেন অভিষেক। সব মিলিয়ে ১১ বলের ইনিংসে ৩ চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা মারেন তিনি।
আট নম্বরে নামা নাহিদুল ইসলামও বড় অবদান রাখেন। ২ চার ও ১ ছক্কায় মাত্র ৯ বলে ২১ রান করেন তিনি। অবিচ্ছিন্ন সপ্তম উইকেট জুটিতে মাত্র ২০ বলে আসে ৫১ রান।
ম্যাচের প্রথমভাগে চট্টগ্রামের শুরুটা একদমই ভালো ছিল না। ১১তম ওভারে মাত্র ৬২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। পঞ্চম উইকেটে ৫৯ রানের জুটি গড়েন চট্টগ্রামের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার ইরফান শুক্কুর ও ইয়াসির আলি চৌধুরি রাব্বি।
৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৩ বলে ৩৯ রান করে ফেরেন শুক্কুর। ইয়াসিরের ব্যাট থেকে আসে ২টি করে চার-ছক্কায় ৩৭ বলে ৪৫ রানের ইনিংস।
পাকিস্তানকে হারিয়ে যাত্রা শুরুর পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে শেষ পর্যন্ত হিদার নাইটের কাছেই হেরে যায় তারা। অল্পের জন্য হেরে যাওয়া ম্যাচের হতাশা ভুলে এবার সামনে তাকাতে চায় বাংলাদেশ।
নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে শুক্রবার নিউ জিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের মেয়েরা। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে সামনের দিকে নজর দিয়ে আরেকটি জয়ের খোঁজে মাঠে নামার কথা বললেন সহ-অধিনায়ক নাহিদা আক্তার।
“গত দিন যে ম্যাচটা চলে গেছে, সেটা অতীত হয়ে গেছে। আমরা চাইলেও ফেরাতে পারব না। এখন আমাদের সামনের যে ম্যাচ, সেটা নিয়েই মনোযোগ দিচ্ছি। নির্দিষ্ট করে কাউকে নিয়ে চিন্তা করছি না। দল হিসেবে আমরা কীভাবে ভালো ব্যাটিং, বোলিং করতে পারি, সেটা নিয়েই পরিকল্পনা করছি।”
সোবহানা মোস্তারির ফিফটি ও রাবেয়া খানের শেষ দিকের ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৭৮ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর পেয়েছিল বাংলাদেশ। পরে এক পর্যায়ে মাত্র ১০৩ রানে ৬ উইকেট নিয়ে জয়ের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিল তারা।
শেষ পর্যন্ত জিততে না পারলেও, বোলারদের ওই পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান নাহিদা। একইসঙ্গে আরও ২-১ জন ব্যাটারের কাছে থেকে রান চান বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক।
“গত ম্যাচে আমরা অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছি। বোলিং বিভাগ হিসেবে খুব ভালো করেছি। একই ফোকাস থাকবে। ব্যাটাররাও ভালো করেছে। তারা যে খারাপ করছে, তা নয়।”
“হয়তো ২-১ জন আরেকটু ভালো করলে, রানটা আরেকটু বেশি হতে পারব। আমরা আগামীকালের ম্যাচ নিয়ে চিন্তিত। আগামীকালের ম্যাচটা কীভাবে খেলব সেটা নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৪ ওয়ানডে খেলে ২টি হেরেছে বাংলাদেশ। আর ফল আসেনি অন্য দুই ম্যাচে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হোয়াইট ফার্নসদের বিপক্ষে ৫ ম্যাচ খেলে সবকটিতেই মিলেছে পরাজয়ের বেদনা।
এবার বিশ্বকাপের ম্যাচেও যে কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে, তা ভালোভাবেই জানেন নাহিদা। তাই গত ম্যাচের আরেকটু ভালো খেলে এবার জয়ের আশা অভিজ্ঞ স্পিনারের।
“বিশ্বকাপের প্রতিটা ম্যাচই চ্যালেঞ্জিং। এখানে সহজ বলতে কিছু নেই। সবসময়ই কঠিন পরিস্থিতিই পার করতে হবে। কারণ কোনো দলই সহজ কিছু দেবে না। সেভাবেই তাই প্রস্তুতি নিচ্ছি। গত ম্যাচে যেভাবে খেলেছি, এর চেয়ে একটু ভালো খেলতে পারলে আমার মনে হয় ভালো কিছুই হবে।”
“গত ম্যাচে আমরা দল হিসেবে ভালো খেলেছি। আমাদের আরেকটু ভালো করার জায়গা ছিল। আমাদের বোলাররা আর একটু ভালো করলে হয়তো ম্যাচটা আমাদের পক্ষে চলে আসত। তাই আমাদের ফোকাস থাকবে, পরের ম্যাচে যেন আরও ভালো বোলিংটা করতে পারি।”
প্রথম ২০ বলে নেই কোনো বাউন্ডারি। করতে পারলেন না মাত্র ৭ রান। পরে আয়াবোঙ্গা খাকার ফুল লেংথ ডেলিভারি পেয়ে যে গা ঝাড়া দিলেন স্মৃতি মান্ধানা। সোজা ছক্কা মেরে দিলেন শেকল ভাঙার আভাস। একইসঙ্গে গড়ে ফেললেন বিশ্বরেকর্ড।
খাকার বলে মারা ছক্কায় মেয়েদের ওয়ানডেতে এক বছরে সর্বোচ্চ রানের মালিক হয়ে গেছেন ভারতের ওপেনার। তিনি ভেঙে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক বেলিন্ডা ক্লার্কের গড়ে ২৮ বছর আগের এক রেকর্ড।
চলতি বছর ১৭ ইনিংসে ৫৭.৭৬ গড়ে মান্ধানার সংগ্রহ ৯৮২ রান। মেয়েদের ওয়ানডেতে যা এখন এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৩টি ফিফটির পাশাপাশি ৪টি সেঞ্চুরি করেছেন ২৯ বছর বয়সী ব্যাটার।
এত দিন রেকর্ডটি ছিল বেলিন্ডা ক্লার্কের। ১৯৯৭ সালে ১৪ ইনিংসে ৮০.৮৩ গড়ে ৯৭০ রান করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক।
ওই বছর ৪ ফিফটির সঙ্গে ৩টি সেঞ্চুরি করেছিলেন কিংবদন্তি এই ব্যাটার। ১৯৯৭ বিশ্বকাপে ডেনমার্কের বিপক্ষে তার ২২৯ রান দীর্ঘ দিন ছিল মেয়েদের সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড।
মান্ধানা ও ক্লার্ক ছাড়া আর কেউ এক বছরে ৯০০ রান করতে পারেননি। ২০২২ সালে ৮৮২ রান করে এর কাছাকাছি গিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্তমান অধিনায়ক লরা উলভার্ট। ওই বছর ১ সেঞ্চুরির সঙ্গে ৮টি ফিফটি করেছিলেন তিনি।
ক্লার্ককে ছাড়িয়ে এখন বিশ্বের প্রথম ব্যাটার হিসেবে এক পঞ্জিকাবর্ষে ১ হাজার রানের হাতছানি মান্ধানার সামনে। চলতি বিশ্বকাপেই আরও অন্তত ৪টি ম্যাচ খেলবে ভারত। যেখানে মাত্র ১৮ রান করতে পারলেই নতুন ইতিহাস গড়বেন মান্ধানা।