৫ আগস্ট ২০২৫, ৮:৫৪ পিএম
ইংল্যান্ড ও ভারতের মধ্যকার এক অসাধারণ টেস্ট সিরিজের শেষ দিনের শুরুতেও ক্রিকেট প্রেমীরা জানতেন না, তাদের জন্য অপেক্ষা করছে ইতিহাসের অভূতপূর্ব এক দৃশ্যের। তারা জানতেন কেবল নিজ নিজ দলের জয়ের সম্ভাবনাটাই কেবল। তবে জয়-পরাজয় ছাপিয়ে ওভাল টেস্টের পঞ্চম দিক সকালে টানটান উত্তেজনার মঞ্চে সবচেয়ে হৃদয়ছোঁয়া মুহূর্তটি নিয়ে ক্রিস ওকস, যিনি কিনা তিন দিন আগেই ছিটকে গিয়েছিলেন ম্যাচ থেকেই। সেই ক্রিকেটার স্রেফ এক হাত নিয়েই দাঁতে দাঁত চেপে ইংল্যান্ডের শেষ ব্যাটার হিসেবে যখন নেমে যান, তখন আক্ষরিক অর্থে সেটাই ছিল তার জয়, টেস্ট ক্রিকেটেরই জয় বৈকি।
প্রথম দিনের খেলার শেষের দিকে ফিল্ডিং করতে গিয়ে ওকসের বাঁ কাঁধের হাড় সরে গিয়েছিল। এরপর থেকে আঘাত প্রাপ্ত হাতটিকে স্লিংয়ে বেঁধে রাখতে হচ্ছে তাকে। দ্বিতীয় দিনই জানিয়ে দেওয়া, এই ম্যাচ শেষ ওকসের জন্য। অথচ সেই তিনিই পঞ্চম দিন তুমুল করতালির মধ্যে এক হাতে ব্যাট করতে যখন নেমে যান, তখন এক উইকেট হাতে রেখে ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য দরকার ১৭ রান।
ওকস ডানহাতি ব্যাটার হওয়ায় অনেকেই ভেবে নিয়েছিলেন, চাইলেও এই ম্যাচে তার ব্যাটিং করা অসম্ভব। তবে বহু যুদ্ধের পোড় খাওয়া এই সৈনিক যে শেষ বিন্দু দিয়ে হলেও লড়তে প্রস্তুত। আর তাই সেই আহত কাঁধ থেকে পুরো হাত স্লিংয়ে বেঁধে জার্সির নিচে লুকিয়ে রেখেই হাজির হন দলকে জেতাতে। তার সংক্ষিপ্ত কিন্তু সাহসী এই ইনিংসে নেই কোনো চার-ছক্কা বা রান, তবে যা আছে তা হল না মানা চোয়ালবদ্ধ এক যোদ্ধার শেষটা নিংড়ে দেওয়ার প্রবল ইচ্ছাশক্তি।
আর এটাই ওকসকে সাহস যুগিয়েছে স্রেফ এক হাতে ব্যাটিং করার, যা আবার কিনা বাঁহাতি হিসেবে। ক্যারিয়ারে এমনটা আগে কখনও না করায় স্বাভাবিকভাবেই এটা তার জন্য মোটেও সহজ কোনো চ্যালেঞ্জ ছিল না। আর যুদ্ধটা তো কেবল মাঠে নামাতেই নয়, তার আগেও ছিল বেশ। ফিজিওর সাহায্যে প্যাড পরেছেন, বাঁ হাতে যাতে চাপ না পড়ে এমনভাবে গার্ড নিয়েছেন। এমনকি ডান হাতে দুইটি ছোট আর্ম গার্ড পরে ব্যাট ধরেছেন। এরপরও মাঠে যাওয়ার প্রতিটি মুহূর্তেই ব্যথা আর যন্ত্রণা তার মুখের অভিব্যক্তিতেই ফুটে উঠছিল বারবার।
যদিও ব্যাটিংয়ে নেমে কোনো বল খেলতে হয়নি ওকসকে, কারণ পরপর দুই ওভারের শেষ বলে অন্য ব্যাটার প্রান্ত বদল করতে সমর্থ হন। তবুও নন-স্ট্রাইকার প্রান্তে দাঁড়িয়ে বারবার ছুটে গিয়ে রান নিতে হয়েছে ওকসকে। আর প্রতিটি দৌড়ে চোখেমুখে তীব্র যন্ত্রণার ছাপ ছিল স্পষ্ট। স্লিং বেঁধে রাখা হাতে যে দৌড় দিলেই ব্যথা অনুভব করছিলেন। একবার তো আম্পায়ার আহসান রাজার সাহায্যও চেয়েছিলেন গ্লাভস পরিয়ে দিতে।
শেষ পর্যন্ত গাস আটকিনসন বোল্ড হয়ে গেলে ওকসের বীরত্ব স্বত্বেও ছয় রানে হার্টে হয় ইংল্যান্ডকে। সিরিজ ড্রয়ের আনন্দ থাকলেও ভারতের খেলোয়াড়রাও ম্যাচ শেষে প্রথমেই এগিয়ে যান ওকসের দিকেই। একে একে তারা শ্রদ্ধা জানান তার এই সাহসিকতাকে।
ওকসের এই এক হাতে ব্যাট করতে নেমে যাওয়া, ব্যথা নিয়ে দৌড় দেওয়ার দৃশ্যগুলো আরও একটি কারণেই তার জন্য ইতিহাস হয়ে থাকতে পারে। কারণ, এটাই যে হতে পারে তার শেষ আন্তর্জাতিক ইনিংস। ৩৬ বছর বয়সী এই পেসার এখন আর ইংল্যান্ডের সাদা বলের দলে নেই। মূলত খেলেন টেস্টেই। কাঁধের এই চোট সারিয়ে বছরের শেষের আগে তার ফেরার আর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ইংলিশদের পেসারদের এখন যে দাপট, তাতে একবার দলে জায়গা হারিয়ে ফেললে সেটা এই বয়সে ওকসের জন্য বেশ কঠিনই হতে পারে।
তবে আপাতত সেসব ছাপিয়ে ওকসের এই ক্ষণিকের উপস্থিতি শুধু একটা ম্যাচ নয়, পুরো সিরিজের আবেগ ও নিবেদনের উঁচু মানদণ্ডই যেন তুলে ধরে। যেখানে পাঁচ টেস্টের ২৫ দিনের লড়াইয়ে ৩২ জন খেলোয়াড় শারীরিক ও মানসিক ধাক্কা সামলেছেন, সেখানে ওকস দেখিয়ে দিয়েছেন, আসল লড়াইটা নিজের প্রতি মুহূর্তে নিজের সামর্থ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ারও।
নিজের সম্ভাব্য শেষ আন্তর্জাতিক ইনিংসে তাই বোলার ওকস স্মরণীয় হয়ে থাকবেন ব্যাট হাতে তার কীর্তির। রেকর্ডের পাতায় না থাকলেও যুগ যুগ ধরে খেলাটির প্রতি তার এই নিবেদন হৃদয়ে গেঁথে থাকবে ক্রিকেটপ্রেমীদের।
No posts available.
৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৫ পিএম

২১ নভেম্বর পার্থে শুরু হতে যাচ্ছে মর্যাদার অ্যাশেজ সিরিজ। প্রথম ম্যাচের জন্য আজ ১৫ জনের দল ঘোষণা করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। এ দল খেলোয়াড়দের বয়স নিয়ে বেশ সমালোচনা উঠেছে। অজিদের দলে কেবল একজন খেলোয়াড়ের বয়স ৩০ বছরের নিচে।
দলে প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েছেন ৩১ বছর বয়সি জ্যাক ওয়েদারাল্ড। পেস আক্রমণে মিচেল স্টার্কের বয়স ৩৫, জশ হ্যাজেলউড ৩৪ ও স্কট বোল্যান্ড ৩৬। ব্যাকআপ পেসার হিসেবে রয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী শন অ্যাবট এবং ৩১ বছর বয়সি ব্রেন্ডন ডগেট। স্পেশালিস্ট স্পিনার নাথান লায়নের বয়স ৩৭।
ব্যাটিং বিভাগে উসমান খাওয়াজার বয়স ৩৮, ট্রাভিস হেড ও মার্নাস লাবুশেন ৩১, স্টিভেন স্মিথের বয়স ৩৬। দুই উইকেটকিপার জশ ইংলিস ও অ্যালেক্স ক্যারির বয়স যথাক্রমে ৩০ ও ৩৪ বছর। অলরাউন্ডার বাউ ওয়েবস্টারের বয়সও ৩১। দলের একমাত্র ৩০ বছরের নিচের খেলোয়াড় ক্যামেরন গ্রিন। এই অলরাউন্ডারের বয়স ২৬ বছর।
এ দল নিয়েই সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ সমালোচনা করেছেন। তার মতে,
“প্রধান নির্বাচক বেইলির তরুণদের সুযোগ দেওয়ার সাহস নেই।”
স্টিভ ওয়াহর মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি। তিনি বলেন,
“আমরা জানি দলের বয়স কাঠামো কেমন। কিন্তু শুধু বয়সের কারণে কি নাথান লায়ন বা মিচেল স্টার্ককে বাদ দেব? যারা ভালো খেলছে, তারা নির্বাচনের যোগ্য। অভিজ্ঞতাকেও সম্মান দেওয়া উচিত।”
ঘোষিত দলে জায়গা হয়নি তরুণ ওপেনার স্যাম কনস্টাসের। ২০ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার গত এক বছরে দ্বিতীয়বারের মতো দল থেকে বাদ পড়েছেন। স্যামের বাদ পড়া নিয়ে বেইলি বলেন, “
স্যামির জন্য খারাপ লাগছে। এখন সে যদি সামান্য কিছু করে, সেটাও শিরোনাম হয়ে যায়।”
বর্তমান অ্যাশেজের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ড গত ১০টি অ্যাশেজ সিরিজের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে জিতেছে মাত্র একবার, ২০১০-১১ মৌসুমে। পাঁচ টেস্টের সিরিজ শেষ হবে ৮ জানুয়ারি।

আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ম্যাচের টেস্ট। ঘরের মাঠে লাল বলের ক্রিকেটের এই সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করেছে ভারত। চোট কাটিয়ে ভারতের টেস্ট দলে ফিরছেন উইকেটকিপার ব্যাটার ঋষভ পন্ত।
আজ ভারতের নির্বাচক কমিটির বৈঠকে পন্তের ফেরার সিদ্ধান্ত হয়। গত সপ্তাহে বেঙ্গালুরুতে বিসিসিআই সেন্টার অব এক্সিলেন্সে দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের বিপক্ষে প্রথম চার দিনের ম্যাচে ভারতের দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন পান্ত। ২৭৫ রানের লক্ষ্যে তাড়া করতে গিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৯০ রান করেছেন তিনি। এন জাগাদিসানের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন পান্ত।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জুলাইয়ে ম্যানচেস্টার টেস্টে পায়ের চোট পান পন্ত। এই চোটে সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজেও ছিলেন না তিনি।
তবে রঞ্জি ট্রফির প্রথম দুই ম্যাচে দারুণ বল করেও নির্বাচকদের মন জিততে পারেননি মোহাম্মদ শামি। উত্তরাখণ্ডের বিপক্ষে সাত উইকেট নেওয়ার পর গুজরাটের বিপক্ষে আট উইকেট নেন এই পেসার।
ভারতের টেস্ট অধিনায়ক শুবমান গিল, জসপ্রীত বুমরাহ, নিতিশ কুমার রেড্ডি, অক্ষর প্যাটেল ও ওয়াশিংটন সুন্দর এখন অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছেন। ৮ নভেম্বর পাঁচ ম্যাচের এই সিরিজের পর টেস্ট দলে যোগ দেবেন তারা। এছাড়া গত অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজে জয়ী দলের প্রসিদ্ধ কৃষ্ণার জয়গা নিয়েছেন আকাশ দীপ।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫-২০২৭ এর পয়েন্ট টেবিলে ভারত তৃতীয় স্থানে আছে ৬১.৯০ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকা আছে পঞ্চম স্থানে, ৫০ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে। প্রোটিয়ারা সবশেষ পাকিস্তানে সিরিজ ড্র করেছিল ১-১ ব্যবধানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভারতের প্রথম টেস্টটি হবে কলকাতায় ১৪ নভেম্বর। গুয়াহাটিতে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে ২২ নভেম্বর থেকে। এবারই প্রথমবারের মতো টেস্ট আয়োজন করতে যাচ্ছে গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া স্টেডিয়াম। সফরে দুটি টেস্ট ছাড়াও তিন ওয়ানডে ও পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দুই দল।
ভারতের টেস্ট স্কোয়াড :
শুভমন গিল (অধিনায়ক), ঋষভ পন্ত (সহ-অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), যশস্বী জয়সওয়াল, কে এল রাহুল, সাই সুদর্শন, দেবদত্ত পাডিক্কল, ধ্রুব জুরেল, রবীন্দ্র জাদেজা, ওয়াশিংটন সুন্দর, জাসপ্রিত বুমরাহ, অক্ষর প্যাটেল, নিতিশ কুমার রেড্ডি, মোহাম্মদ সিরাজ, কুলদীপ যাদব, আকাশ দীপ।

প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ দিয়ে আসন্ন ঘরোয়া ক্লাব ক্রিকেট মৌসুম ২০২৫-২৬ শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিশ (সিসিডিএম) ক'দিন আগেই। ৫ এবং ৬ নভেম্বর প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের দলবদল এবং ১৮ নভেম্বর থেকে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ শুরুর ঘোষণা দিয়েছে সিসিডিএম। গত মৌসুমের চেয়ে ক্লাব অনুদান ৫০% বৃদ্ধির ঘোষণাও দিয়েছে সিসিডিএম। ৯ লাখ টাকা থেকে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে তাদের অ্যাপিয়ারেন্স মানি। তবে বর্ধিত অনুদানেও বিরোধীরা ক্রিকেটারদের আয়-রুজির পথ রুদ্ধ করতে লিগ বর্জনের ডাক দিয়েছে। প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের দিণক্ষণ ঘোষণা করে বিরোধীতার মুখে পড়েছে সিসিডিএম।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ক্রিকেট লিগ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ক্লাব ক্রিকেট অর্গানাইজার্স এসোসিয়েশনের একটি অংশ। বিসিবির নির্বাচনে অনিয়ম, বিসিবি সভাপতির স্বেচ্ছাচরিতার অভিযোগ এনে গত ৩ নভেম্বর বিসিবির পরিচালনা পরিষদের সভার প্রাক্কালে এই সংগঠক তাদের সেই সিদ্ধান্ত পুনরায় জানিয়ে দিয়েছে বিসিবিকে। বিসিবির পরিচালনা পরিষদ ভেঙ্গে না দিলে ঢাকা ক্রিকেট লিগে অংশ নিবে না, বিসিবির সিইও-কে দেয়া ৪২টি ক্লাবের৪৩ জন কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত চিঠিতে তা উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্লাব ক্রিকেট অর্গানাইজার্স এসোসিয়েশনের ওই চিঠিতে বিসিবি নমনীয় হয়নি। বরং কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে। লিগে অংশ না নিলে বাইলজ অনুযায়ী অবনমন হয়ে যাবে, বিসিবির পরিচালনা পরিষদের সভায় এই অবস্থান নিয়েছে।
বিরোধীতার মুখে বুধবার (৬ নভেম্বর) প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের দলবদলের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিশ (সিসিডিএম)। বিসিবির পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন বর্জন করলেও লিগ বর্জনকারীদের পক্ষে অবস্থান নেননি তামিম ইকবাল। যে ক্লাব থেকে বিসিবির কাউন্সিলরশিপ পেয়েছেন তামিম, সেই ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাব দলবদলের প্রথম দিন ৭ ক্রিকেটারকে সাইন করিয়েছে। দলবদলের প্রথম দিন ৯ টি ক্লাবের ৪৭ জন ক্রিকেটার নতুন ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন। তার মধ্যে বিকেএসপিতে ৭ জন, ব্লুজ ক্রিকেটার্সে ৪ জন, বাংলাদেশ পুলিশ ক্রিকেট ক্লাবে ১ জন, তামিমের ক্লাব ওল্ড ডিওএইচএস-এ ৭ জন, প্রাইম দোলেশ্বরে ২ জন, শেখ জামাল ক্রিকেটার্সে ১ জন, খালেদ মাহমুদ সুজনের পরিচালনায় শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবে ১০ জন এবং উত্তরা ক্রিকেট ক্লাবে ১৩ ক্রিকেটার নাম লিখিয়েছেন।
৬ নভেম্বর দলবদলে অংশ নিবে অবশিষ্ট ক্লাবগুলো, এমন আশায় বুক বেধেছেন সিসিডিএম চেয়ারম্যান আদনান রহমান দীপন। প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের দলবদলে অংশ নিবে না বলে যে ৮টি ক্লাব এখন পর্যন্ত তাদের সিদ্ধান্তে অনঢ়, সেই ৮টি ক্লাবের ২১ ক্রিকেটার টোকেন তুলেছেন বুধবার। ওই দলগুলো অবস্থান পরিবর্তন না করলে এই ২১ ক্রিকেটার অন্য দলগুলোতে যোগ দিবেন।
ইতোমধ্যে প্রথম বিভাগের ২০টি ক্লাবের মধ্যে ১০টি অনুদানের চেক ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে বুঝে নিয়েছে। বাকিরাও চেকগুলো নিয়ে লিগে অংশ নিবে বলে বলে আশা প্রকাশ করছেন সিসিডিএম চেয়ারম্যান।

আয়ারল্যান্ড সিরিজের পর জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মোহাম্মদ সালাহউদ্দীন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। অবশ্য এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি নয় বিসিবি। বরং অভ্যন্তরীণভাবে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত জানাবে দেশীয় ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।
বিসিবি আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সালাহউদ্দীনের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ফলে এক বছর পূর্তির আগেই জাতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানছেন এই সিনিয়র সহকারী কোচ।
বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম বলেছেন,
“তিনি (সালাহউদ্দীন) আয়ারল্যান্ড সিরিজের পর পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা অভ্যন্তরীণভাবে আলোচনা করব। এ বিষয়ে এখন আর কোনো মন্তব্য করব না।”
এর আগে আজ সকালে ক্রিকেটভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের প্রতিবেদনে সালাহউদ্দীনের পদত্যাগের খবর জানা যায়। যদিও এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কোনো মন্তব্য করেননি। তবে ক্রিকবাজকে তিনি নিশ্চিত করেছেন চাকরি ছাড়ার বিষয়টি—“হ্যাঁ! আমি পদত্যাগ করছি।”
গত বছরের নভেম্বরে দেশের বরেণ্য কোচ সালাহউদ্দীনকে জাতীয় দলে যুক্ত করেছিল বিসিবি। সিনিয়র সহকারী কোচ হিসেবে জাতীয় দলের সঙ্গে তার চুক্তি ছিল ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত। তবে তার অনেক আগেই শেষ হতে চলেছে সেই অধ্যায়।
ডেভিড হেম্পকে সরিয়ে দেওয়ার পর থেকে জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন সালাহউদ্দীন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দলের ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
এরই মধ্যে আয়ারল্যান্ড সিরিজের জন্য বিশেষজ্ঞ ব্যাটিং কোচ হিসেবে মোহাম্মদ আশরাফুলকে নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি। দুই টেস্ট ও তিন টি-টোয়েন্টি খেলতে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে আসবে আয়ারল্যান্ড। সিলেটে প্রথম টেস্ট শুরু হবে ১১ নভেম্বর। এরপর ঢাকায় ১৯ তারিখ থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। পরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে চট্টগ্রাম যাবে দুই দল। ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে ২৭ ও ২৯ নভেম্বর এবং ২ ডিসেম্বর।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় যুব ওয়ানডেতে ১০২ রানের বড় ব্যবধানে হেরে গেল বাংলাদেশ। ব্যাটিং ব্যর্থতার মাশুল দিয়ে মাত্র ১৭৩ রানে থেমে গেল যুবাদের ইনিংস। ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৭৫ রান করেছিল আফগানিস্তান।
টানা বৃষ্টির কারণে পরিবর্তিত সূচিতে বগুড়ার বদলে রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে বুধবার তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতেছিল স্বাগতিক যুবারা। পরে ভেসে যায় দ্বিতীয় ওয়ানডে।
পাঁচ ম্যাচ সিরিজে তাই এখন ১-১ সমতা। একই মাঠে শুক্রবার হবে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডে।
বুধবারের ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নামে আফগানিস্তান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১০০ রান করেন তিন নম্বরে নামা ফয়সাল খান শিনোজাদা। ১০৫ বলের ইনিংসে ১৪ চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা মারেন তিনি।
এছাড়া পাঁচ নম্বরে নেমে ৫ চারে ৭৮ বলে ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক মাহবুব খান।
বাংলাদেশের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন আজিজুল হাকিম তামিম ও আল ফাহাদ।
রান তাড়ায় হতাশ করেন জাওয়াদ আবরার (২৪ বলে ২৫), রিফাত বেগ (২ বলে ০) ও আজিজুল হাকিম তামিম (৩২ বলে ৯)।
চতুর্থ উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন কালাম সিদ্দিকি এলিন ও রিজান হোসেন। দুজন মিলে গড়ে তোলেন ৯৩ রানের জুটি। ৩ চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কা মেরে ৫০ বলে ৫২ রান করে আউট হন রিজান। কালামের ব্যাট থেকে আসে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৭৯ বলে ৭১ রান।
শেষ দিকে আর কেউ দায়িত্ব নিতে না পারায় ৭৬ বল বাকি থাকতেই শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।