
নির্ধারিত ৫০ ওভারের ম্যাচে শেষ ৬ বলে ৫ রানের টার্গেট দিয়ে জয়ের আশা ছেড়ে দেয়ারই কথা। অকেশনাল অফ স্পিনার সাইফ হাসানের হাতে বল তুলে দিয়ে জুয়াটাই কেবল খেলতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মিরাজ। সেই ম্যাচ অবিশ্বাস্যভাবে 'টাই'। বাংলাদেশের ওডিআই ক্রিকেট ইতিহাসে এটাই প্রথম দৃষ্টান্ত। সুপার ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১০/১-এর জবাবে বাংলাদেশ পেয়েছে বোনাস ৩টি বল। আকিল হুসেইন শুরু করেছেন ওয়াইড ডেলিভারি দিয়ে, বোনাস বলটি 'নো'। ১ বলে ৪। ডাগ আউট থেকে উইন্ডিজ কোচ ড্যারেন স্যামির সাজিয়ে দেয়া ফিল্ডিংয়ে সৌম্য ডিপ স্কোয়ার লেগে মোতির হাতে ক্যাচ দিলে শেষ বলে টার্গেট দাঁড়ায় ৪। শেষ বলটি আকিল হুসেইন ওয়াইড করলে এক বলে ৩ রানের টার্গেটের মুখে পড়ে বাংলাদেশ।কিন্তু ১ রানের বেশি নিতে পারেননি সাইফ হাসান। ৯/১-এ থেমেছে বাংলাদেশ। অবিশ্বাস্য সুপার ওভারের ১ রানে জিতে সিরিজে সমতায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ম্যাচে ম্যাচ উইনার উইন্ডিজ অধিনায়ক সাই হোপ। তার ৬৭ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৫৩ রানের হার না মানা ইনিংসে 'টাই' করতে পেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সুপার ওভারের মোস্তাফিজের শেষ বলে হোপের বাউন্ডারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেয়েছে অক্সিজেন।
এমন একটি শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ম্লান হয়েছে রিশাদের অলরাউন্ড পারফরমেন্স ( ২৭৮.৫৭ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিংয়ে ১৪ বলে ৩৯ নট আউট এবং বোলিংয়ে ৩ উইকেট, ১০-০-৪২-৩)।
পর পর দুই ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ের চিত্র প্রায় অভিন্ন। প্রথম ম্যাচে টেল এন্ডার রিশাদ ঝড়ে দুইশ পেরিয়ে থেমেছে বাংলাদেশ ২০৭/১০-এ। দ্বিতীয় ম্যাচে ও রিশাদ ঝড়। তার ১৪ বলে ৩৯ রানের হার না মানা ইনিংসে আর একবার দুইশ'র মুখ দেখেছে বাংলাদেশ (২১৩/৭)।
ব্যাটাররা কেনো ধুঁকছেন ? উইকেটের বৈশিষ্ঠ্যের দায় কতোটা ? এ প্রশ্ন দুটি উঠতেই পারে। তবে বাংলাদেশের ইনিংসে ব্যাটারদের অতিমাত্রায় নেতিবাচক ব্যাটিংয়ের চিত্রই বেরিয়ে আসবে। প্রথম ম্যাচে ২৯৮ বলের মধ্যে ১৮৩টি ডট করেছে বাংলাদেশ ব্যাটাররা। দ্বিতীয় ম্যাচে ৩০০ ডেলিভারির মধ্যে ১৯৩টি ডট!
অকেশনাল অফ স্পিনার অ্যালেক আথানজে ক্যারিয়ারের প্রথম ১৪ ম্যাচে ২ ইনিংসে মোট ৩ ওভার বোলিং করার সুযোগ পেয়েছেন। ১৫তম ম্যাচে এসে পুরো ১০ ওভার বোলিং করেছেন। দেখেছেন প্রথম উইকেটের মুখ। ১০-৩-১৪-২! ওভারপ্রতি ১.৪০ রান খরচায় বাংলাদেশ ব্যাটারদের কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছেন। তার দ্বিতীয় ওভারে শান্ত দিয়েছেন মিড অনে লো ক্যাচ (২১ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১৫)। তার আর একটি ওভারে অঙ্কন ডিপ স্কোয়ার লেগের উপর দিয়ে ছক্কা মারতে যেয়ে বাউন্ডারি রোপের ঠিক সামনে দিয়েছেন ক্যাচ (৩৫ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১৭ রান)। ২৭ এবং ২৮ রানের ওই দুটি পার্টনারশিপ ভেঙ্গে দেয়া আথানজে একটি মাত্র বাউন্ডারি খেয়েছেন। ৬০টি বলের মধ্যে দিয়েছেন ৫০টি ডট!
শেষ ওভারে ১৬ রান খরচ করেও বাঁ হাতি স্পিনার আকিল হুসেইন ছিলেন সফল (১০-১-৪২-২)। ৬০টি ডেলিভারির মধ্যে ৪২টি ডট দিয়েছেন তিনি। উইকেটহীন রোস্টন চেজ (০/৪৪) দিয়েছেন ৩৭টি ডট। উইকেটহীন থেরি পেরি (১০-০-৪৩-০) দিয়েছেন ৩২টি ডট। বাঁ হাতি স্পিনার গুদাকেশ মোতি ছিলেন খরুচে বোলার (১০-০-৬৫-৩)। তারপরও তার ৩২টি বল ছিল ডট।
টপ অর্ডার ব্যাটারদের ব্যাটে সুপার গ্লু লেগে যাওয়ার মধ্যে কিছুটা ব্যাতিক্রম ছিলেন সৌম্য সরকার। সুইপ-রিভার্স সুইপ শটে ফিফটির পথে ছিলেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। তবে ফিফটি থেকে যখন ৫ রান দূরে, তখন আকিল হুসেইনকে সুইপ করতে যেয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে এসেছেন তিনি (৮৯ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ৪৫)।
রানের যে গতি ছিল, তাতে ২০০'র পক্ষে বাজি ধরার সাহস না পাওয়ারই কথা। তবে টেল এন্ডার রিশাদ ছিলেন বলেই সেই জুয়ায় জিতেছে বাংলাদেশ দল। ৭ম উইকেট জুটির ৪৪ বলে ৩৪ রান টপকে অবিচ্ছিন্ন ৮ম উইকেট জুটিতে মিরাজ-রিশাদ যোগ করেছেন ২৪ বলে ৫০ রান। যার মধ্যে রিশাদের সংগ্রহ ১৪ বলে ৩ চার, ৩ ছক্কায় ৩৯! বাকি ১০ বলে মিরাজের অবদান ১১। শেষ ২ ওভারে ঝড় বইয়ে দিয়েছেন রিশাদ। ৪৯তম ওভারে খেরি পেরির খরচ ১৮।৫০ তম ওভারে আকিল হুসেইনের খরচ ১৬।
এক পেসার নিয়ে বাংলাদেশের একাদশ সাজানো নিয়ে কপালে চোখ উঠে যাওয়ার কথা যাদের, সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজই স্পিন স্বর্গ মিরপুরে করেছে রেকর্ড! ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশে ছিলেন পেস বোলার জাস্টিন গ্রেভস। তার হাতে একটা ওভারও তুলে দিতে ভরসা পাননি উইন্ডিজ অধিনায়ক সাই হোপ। পুরো ৫০ ওভার স্পিনারদের দিয়ে বোলিং করিয়েছেন হোপ!
নতুন ইতিহাস লেখা হলো মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। স্পিন ট্র্যাকে নতুন বিশ্ব রেকর্ড। ৫৪ বছরের ওয়ানডে ইতিহাসে এই প্রথম অল স্পিন অ্যাটাকের বিশ্বরেকর্ড দেখল বিশ্ব।
ওয়ানডেতে এক ইনিংসে স্পিনারদের সবচেয়ে বেশি বোলিং করার আগের রেকর্ডটি ছিল শ্রীলঙ্কার। তিনবার ইনিংসে ৪৪ ওভার বোলিং করেছে এই দলটির স্পিনাররা।১৯৯৬ সালে ত্রিনিদাদে, ১৯৯৮ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রেমাদাসায় এবং ২০০৪ সালে ডাম্বুলায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে শ্রীলঙ্কা। ২৪ বছর পর সেই রেকর্ড ভেঙেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এর আগে ওয়ানডেতে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৩৪ ওভার বোলিং করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্পিনারদের দিয়ে। ২০০১ সালে সেই দৃষ্টান্তটি ছিল গ্রেনাডায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
মিরপুরে স্পিনারদের সবচেয়ে বেশি বোলিং করার আগের রেকর্ডটি ছিল বাংলাদেশের। ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের স্পিনারদের বোলিংয়ের সমষ্টি ছিল ৪০ ওভার। এক ইনিংসে আর একবার ৪০ ওভার বোলিং করেছে বাংলাদেশ। সেটি ২০০৯ সালে, চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেখানে ৫০ ওভারের পুরোটা করেছে স্পিনারদের দিয়ে, সেখানে বাংলাদেশ স্পিনারদের দিয়ে বল করিয়েছে ৪২ ওভার। একমাত্র পেসার মোস্তাফিজ বল করেছেন ৮ ওভার। তবে অপেক্ষাকৃত কম ডট করেছে উইন্ডিজ ব্যাটাররা। বাংলাদেশ ব্যাটাররা যেখানে ১৯৩টি বল ডট করেছে, সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডট বলের সংখ্যা ১৭৩টি। নাসুম সর্বোচ্চ ৪১টি ডট দিয়েছেন। ৮ম উইকেট জুটিতে হোপ-গ্রিভসের ৬৫ বলে ৪৪ রানও ম্যাচ থেকে ছিটকে ফেলেছে বাংলাদেশকে। শেষ পাওয়ার প্লে-এর ৬০ বলে ৬৩ রান করে ম্যাচটা সুপার ওভারে টেনে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
No posts available.
৮ নভেম্বর ২০২৫, ৯:১৮ এম

হংকং সিক্সেস টুর্নামেন্টে একের পর এক বিব্রতকর অভিজ্ঞতা হচ্ছে ভারতের। কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পর এবার নেপালের বিপক্ষেও হেরে গেল দিনেশ কার্তিকের দল। ফলে বোল ফাইনালেও হয়তো খেলা হবে না তাদের।
মং কংয়ের মিশন রোড মাঠে শনিবার দুপুরের ম্যাচে ভারতকে মাত্র ৪৫ রানে অলআউট করে নেপাল। এর আগে নিজেদের ৬ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৩৭ রান করে তারা। ৯২ রানের বড় জয়ে বোল ফাইনালের পথে এগিয়ে গেল নেপাল।
এর আগে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে কুয়েতের কাছে হেরে মূল টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যায় ভারত। পরে বোল রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষেও পাত্তা পায়নি তারা। এবার নেপালের বিপক্ষে তারা পেল হ্যাটট্রিক পরাজয়ের স্বাদ।
আগে ব্যাট করে নেপালের হয়ে ঝড় তোলেন সন্দিপ জোরা ও রশিদ খান। ৪ চার, ৬ ছক্কায় ১৭ বলে ৫৫ রান করে বাধ্যতামূলক অবসরে যেতে হয় রশিদের। ৪ চার ও ৫ ছক্কায় ১২ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন জোরা।
তিন নম্বরে নেমে ১ চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কা মেরে ৭ বলে ৩১ রান করেন লোকেশ বাম।
রান তাড়ায় মাত্র ৩ ওভারে পুরো ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। প্রিয়াঙ্ক পঞ্চল ও ভারত চিপলির ব্যাট থেকে আসে ১২ রান করে।
নেপালের পক্ষে মাত্র ৭ রানে ৩ উইকেট নেন রশিদ। এছাড়া বশির আহমেদ ২টি ও রুপেশ সিং নেন ১টি উইকেট।

কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পাত্তা পেল না বাংলাদেশ। বল হাতে একের পর এক ছক্কা হজমের পর ব্যাটিংয়ে ভয়াবহ ধসে বড় ব্যবধানে হেরে গেল আকবর আলির নেতৃত্বাধীন দল।
মং কংয়ের মিশন রোড মাঠে হংকং সিক্সেস টুর্নামেন্টের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশকে ৫৪ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
শনিবারের ম্যাচে আগে ব্যাট করে ২ উইকেটে রেকর্ড ১৪৯ রান করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে ৯৫ রান করতে পারে বাংলাদেশ।
এই জয়ে টুর্নামেন্টের প্রথম দল হিসেবে সেমি-ফাইনালে পৌঁছে গেল অস্ট্রেলিয়া। আর বাংলাদেশ নেমে গেল প্লেট পর্বে। রোববার প্লেট সেমি-ফাইনালে খেলবে তারা।
আরও পড়ুন
| আরব আমিরাতের কাছেও হেরে গেল ভারত |
|
ছয় ওভারে বাংলাদেশের বোলাররা হজম করেছেন মোট ২১টি ছক্কা। তাদের তুলোধুনো করে এবারের আসরের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছে অস্ট্রেলিয়া। গ্রুপ পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৪৮ রান করেছিল আফগানিস্তান।
৮ ছক্কায় ১৪ বলে ৫১ রান করে বাধ্যতামূলক অবসরে যান বেন মেকডেরমট। ৫ ছক্কায় ৬ বলে ৩০ রান করে আউট হন উইলিয়াম বসিস্টো। অধিনায়ক অ্যালেক্স রসের ব্যাট থেকে আসে ২ চার ও ৭ ছক্কায় ১১ বলে ৫০ রান।
পরে রান তাড়ায় প্রথম ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। মাত্র ১৯ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
পঞ্চম উইকেটে ৬০ রানের জুটি গড়েন রকিবুল হাসান ও আবু হায়দার রনি। ১ চার ও ৩ ছক্কায় ১০ বলে ২৫ রান করেন রকিবুল। শেষ দিকে একা ব্যাটিং করা রনির ব্যাট থেকে আসে ২ চার ও ৭ ছক্কায় ১৮ বলে ৫০ রান।
বল হাতে ক্রিস গ্রিন নেন ৩ উইকেট।

পাকিস্তানকে হারিয়ে টুর্নামেন্ট শুরুর পর যেন জিততেই ভুলে গেছে ভারত। গ্রুপ পর্বে কুয়েতের কাছে হারের পর এবার বোল রাউন্ডে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষেও জিততে পারেনি দীনেশ কার্তিকের নেতৃত্বাধীন দল।
হংকং সিক্সেস টুর্নামেন্টে শনিবার বোল রাউন্ডের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। আগে ব্যাট করতে ৩ উইকেটে ১০৭ রান করে ভারত। জবাবে ৫.৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ জিতে নেয় আমিরাত।
গ্রুপ পর্বে কুয়েতের কাছে হেরে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠতে পারেনি ভারত। এবার আমিরাতের বিপক্ষেও হারায় বোল ফাইনালে খেলার সম্ভাবনাও কমে গেল তাদের। বোল রাউন্ডে পরের দুই ম্যাচে নেপাল ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলবে ভারত।
আমিরাতের বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নেমে দুই ওভারের মধ্যে মাত্র ১২ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত। এরপর ঝড় তোলেন অভিমন্যু মিথুন ও দিনেশ কার্তিক।
৪ চারের সঙ্গে ৫টি ছক্কায় মিথুন করে ১৬ বলে ৫০ রান। ফিফটি করে ফেলায় বাধ্যতামূলক অবসরে যেতে হয় তার। ৪টি করে চার-ছক্কায় ১৪ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন কার্তিক।
আমিরাতের পক্ষে ২ ওভারে মাত্র ১১ রানে ২ উইকেট নেন নিলানশ কেশানি।
রান তাড়ায় শুরুতেই তাণ্ডব চালান আমিরাত অধিনায়ক খালিদ শাহ। ৪ চার ও ৫ ছক্কায় ১৪ বলে ৫০ রান করে অবসরে যেতে হয় তার। আরেক ওপেনার সগির খান ১ চার ও ৪ ছক্কায় করেন ১১ বলে ৩১ রান।
চার নম্বরে নেমে ৫ বলে ২০ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেন মোহাম্মদ আফরান।

ক্রিকেটে সবসময়ই বলা হয়, ম্যাচের দৈর্ঘ্য যত কমে, ছোট দলের সঙ্গে বড় দলের পার্থক্যও তত কমে যায়। সেটি এতটাই কমে আসে যে, ৬ ওভারের ক্রিকেটে কুয়েতের কাছে হেরে গেছে ভারত। যার ফলে হংকং সিক্সেস টুর্নামেন্টের মূল আসর থেকে ছিটকে গেছে তারা।
মং কং মিশন রোড মাঠে শনিবার সকালে ভারতকে ২৭ রানে হারিয়েছে কুয়েত। এই জয়ে হংকং সিক্সেস টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠে গেছে কুয়েত। আর ভারত নেমে গেছে বোল পর্বে।
আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৬ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১০৬ রান করে কুয়েত। জবাবে ৫.৪ ওভারে ৬ উইকেটের সবকটি হারিয়ে ৭৯ রানের বেশি করতে পারেনি সাবেক তারকা ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া ভারত।
কুয়েতের শুরুটা একদমই ভালো ছিল না। মাত্র ৩৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। পাঁচ নম্বরে নেমে তাণ্ডব চালান অধিনায়ক ইয়াসিন প্যাটেল। ২ চারের সঙ্গে ৮টি ছক্কা মেরে মাত্র ১৪ বলে তিনি করেন ৫৮ রান। এছাড়া বিলাল তাহির করেন ৯ বলে ২৫ রান।
অভিমন্যু মিথুন ২ ওভারে ২১ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট।
রান তাড়ায় মাত্র ১২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। প্রথম বলেই আউট হন রবিন উথাপ্পা। ৪ বলে ৮ রানের বেশি করতে পারেননি অধিনায়ক দিনেশ কার্তিক। স্টুয়ার্ট বিনি করেন ২ বলে ২ রান।
পরে প্রিয়াঙ্ক পঞ্চল ১০ বলে ১৭, অভিমন্যু মিথুন ৯ বলে ২৬ ও শাহবাজ নাদিম ৮ বলে ১৯ রান করলেও সেটি জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়নি।
বল হাতেও কুয়েতের পক্ষে বড় অবদান রাখেন ইয়াসিন। ২ ওভারে ২৩ রান খরচ করে ৩ উইকেট নেন কুয়েত অধিনায়ক।
পুল 'সি'তে ভারত, পাকিস্তান ও কুয়েত- তিন দলেরই সমান ২ পয়েন্ট। তবে নেট রান রেটে সবার চেয়ে পিছিয়ে থাকায় বোল পর্বে নেমে গেছে ভারত। আর কোয়ার্টার-ফাইনালের টিকেট পেয়েছে পাকিস্তান ও কুয়েত।
মূলত চার গ্রুপের তৃতীয় হওয়া চার দলকে নিয়ে আয়োজন করা হয় বোল পর্ব। যেখানে চার দলের মধ্যে চলে লড়াই। পরে পুরো টুর্নামেন্টের নবম সেরা দল নির্ধারিত হয় বোল ফাইনালের মাধ্যমে।

আইসিসির সভাতেও কোনো সমাধান মেলেনি এশিয়া কাপের ট্রফি বিতর্কের। তাই এখনও অনিশ্চয়তায় ঝুলছে ভারতের ট্রফি বুঝে পাওয়ার বিষয়টি। সমস্যা সমাধানে শিগগিরই গঠন করা হতে পারে একটি বিশেষ কমিটি।
দুবাইয়ে শুক্রবার ছিল আইসিসির ত্রৈমাসিক সভার শেষ দিন। অনেক সংশয়ের পর সেই সভায় সবাইকে চমকে দিয়ে হাজির হন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) প্রধান মহসিন নাকভি।
ক্রিকবাজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সভার আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচিতে এশিয়া কাপের ট্রফি ইস্যু ছিল না। অনেকটা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ রেখেই সবার সামনে তোলা হয় ট্রফি বিতর্কের ঘটনা।
ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এসিসি চেয়ারম্যান জোরপূর্বক ট্রফিটি নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া বেশ জোর দিয়েই বলেছেন, শীঘ্রই এশিয়া কাপের ট্রফি ভারতকে বুঝিয়ে দিতে হবে।
তবে এই আলোচনার পুরোটাই ছিল অনানুষ্ঠানিক। যেটা মূলত বিভিন্ন দেশের বোর্ড প্রতিনিধিদের হালকা মেজাজের আড্ডার মাঝে উত্থাপন করা হয়েছে। যেখানে সবাই জানিয়েছেন, দ্রুতই এই ট্রফি বিতর্কের সমাধান হওয়া উচিত।
ক্রিকবাজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়া কাপের ট্রফি বিতর্ক সমাধানে একটি বিশেষ কমিটি করা হবে। তবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত এমন কোনো কমিটি হয়নি। অন্যান্য সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ওমান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান পঙ্কজ খিমজির নেতৃত্বে গঠিত হবে কমিটি।
গত সেপ্টেম্বরে ফাইনাল ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। কিন্তু ম্যাচ শেষে ট্রফি ওঠেনি তাদের হাতে। এসিসি ও পিসিবি চেয়ারম্যান এবং পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী মহসিন নাকভির হাত থেকে ট্রফি নিতে রাজি হয়নি ভারত।
বিপরীতে নাকভি নিজের অবস্থানে ছিলেন অনড়। এসিসি চেয়ারম্যান হিসেবে তিনিই ট্রফি তুলে দেবেন, এই সিদ্ধান্ত নেন নাকভি। ফলে সেদিন আর ট্রফি পাওয়া হয়নি ভারতের। পরে ভারতের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার ট্রফি চাওয়া হয়েছে।
তবে নাকভি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, দুবাইয়ে এসিসি কার্যালয়ে গিয়ে সূর্যকুমার যাদবদের অবশ্যই ট্রফি তার কাছ থেকে গ্রহণ করতে হবে। এসিসি কর্মীদেরও নির্দেশ দিয়েছেন, তার অনুমোদন ছাড়া ট্রফি সরানো যাবে না।