
বাংলাদেশের ক্রিকেটে আকবর আলি ও ট্রফি- শব্দগুলো ক্রমে একে অপরের সমার্থক হয়ে উঠছে। পাঁচ বছরের ক্যারিয়ারে এরই মধ্যে পাঁচটি ঘরোয়া শিরোপা জিতেছেন বাংলাদেশকে ২০২০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক।
আর এই সাফল্য যে একদমই ফ্লুক নয়, আকবরের দলের ধারাবাহিকতাই সেটির প্রমাণ দেয়। সবশেষ তিনি জিতেছেন জাতীয় ক্রিকেট লিগের চার দিনের সংস্করণের শিরোপা। আর এই কৃতিত্ব অর্জনের পেছনে রয়েছে আকবরদের দীর্ঘ সু-পরিকল্পনার বাস্তবায়ন।
আট দলের জাতীয় লিগে ছয় রাউন্ড শেষেও কাগজে-কলমে শিরোপা জেতার সম্ভাবনা টিকে ছিল ৬টি দলের। ২ জয় ও ৪ ড্রয়ের সঙ্গে দুটি বোনাস পয়েন্ট পেয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে ছিল সিলেট। ২৪ পয়েন্ট নিয়ে তাদের পরেই ছিল নবাগত ময়মনসিংহ। তাই ২৩ পয়েন্ট থাকা রংপুরের জন্য শেষ ম্যাচের সমীকরণ ছিল বেশ জটিল।
খুলনার বিপক্ষে নিজেদের শেষ ম্যাচটি শুধু জিতলেই হতো না, তাদের চেয়ে থাকতে হতো সিলেট ও ময়মনসিংহ ম্যাচের দিকেও। তবে সবার আগে নিজেদের কাজটা সারার দিকেই মনোযোগ ছিল আকবরের।
মঙ্গলবার জাতীয় লিগের শিরোপা উদযাপন সেরে কিছুটা ফ্রি হওয়ার পর তিনি বললেন, শেষ ম্যাচে জয় ছাড়া দ্বিতীয় ভাবনা ছিল না রংপুরের।
“আমরা তো তিন নাম্বারে ছিলাম তো ভাবনা ছিলো যে আমাদের জিততেই হবে। যদি জিততে পারি সেক্ষেত্রে হয়তোবা সিলেট আর ময়মনসিংহ খেলায় যদি রেজাল্ট আমাদের পজিটিভে আসে... মানে ওদের রেজাল্ট ওরা না করতে পারে সেক্ষেত্রে (ট্রফি) আমাদেরই আরকি।”
“আমাদের কাছে ছিলো যেটা, ম্যাচটা জিততেই হবে। তো যেহেতু বগুড়াতে খেলা, হিস্টোরিক্যালি বগুড়াতে রেজাল্ট হয়। মানে যেই টিমই করুক, কোনো না কোনো রেজাল্ট হবেই। তাই আমাদের একটাই কথা ছিল যে, ওরা যা করবে আমরা শেষ করব। একটা কথাই ছিল যে, সিচুয়েশন যত কঠিনই হোক আমরা জেতার জন্যই খেলব।”
সেই লক্ষ্যে প্রথম ইনিংসে খুলনার ৩০৮ রানের জবাবে মাত্র ১৭৪ রানে গুটিয়ে যায় রংপুর। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর আগুনঝরা বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে ৯৬ রানে অল আউট করে দেয় আকবরের দল।
পরে উদীয়মান বাঁহাতি ব্যাটার ইকবাল হোসেনের চমৎকার এক সেঞ্চুরিতে ২৩১ রানের লক্ষ্য অনায়াসেই তাড়া করে ফেলে রংপুর। ফল ৩ জয় ও ৩ ড্রয়ে তাদের ঝুলিতে হয় ৩১ পয়েন্ট।
পরদিন রাজশাহীর কাছে ময়মনসিংহের পরাজয় ও বরিশালের সঙ্গে সিলেটের ড্রয়ে নিশ্চিত হয়ে যায় আকবরের অধিনায়কত্ব ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ট্রফি।
২০২০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতিয়ে অধিনায়ক হিসেবে আকবরের উত্থান। এরপর ২০২২ সালে জাতীয় ক্রিকেট লিগের চার দিনের সংস্করণে রংপুরের শিরোপা জয়ে নেতৃত্ব দেন তিনি। তার অধিনায়কত্বে ২০২৩ সালে বিসিএলের ওয়ানডে সংস্করণে চ্যাম্পিয়ন হয় নর্থ জোন।
ধারাবাহিকতা ধরে রেখে গত বছর এনসিএল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের প্রথম আসরেই বাজিমাত করে আকবরের রংপুর। শিরোপা ধরে রাখার মিশনে চলতি বছরের এনসিএল টি-টোয়েন্টিতেও চ্যাম্পিয়ন হন তারা।
এবার চার দিনের সংস্করণেও চ্যাম্পিয়ন হয়ে ঘরোয়া ‘ডাবল’ ট্রফি ঘরে তুলল রংপুর। যা আরও পাকাপোক্ত করল ‘আকবর দ্য গ্রেট’ তকমা।
রংপুরের এই কৃতিত্বের পেছনে রয়েছে তাদের দীর্ঘ পরিকল্পনা। লিগের সূচি পাওয়ার পরই সাত ম্যাচের ভেন্যু ও প্রতিপক্ষ বিবেচনা করে টুর্নামেন্টের পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলেন আকবর, নাসির হোসেন, নাঈম ইসলামরা।
“যখন সূচি পেয়েছি, তখন সিনিয়র কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে কোচিং স্টাফ যারা ছিল... আমাদের প্রাথমিক পরিকল্পনা এমনই ছিল যে, আমাদেরকে বগুড়ায় দুইটা ও রাজশাহীর একটা ম্যাচ জিততেই হবে। বাকি খেলাগুলো যদি জিততেও না পারি অন্তত যেন আমরা ড্র করতে পারি।”
যেই কথা সেই কাজ। কুকাবুরা বলে সিলেট ও কক্সবাজারে হওয়া প্রথম দুই রাউন্ডে ঢাকা ও ময়মনসিংহের সঙ্গে ড্র করে দুটি করে পয়েন্ট নিশ্চিত করে রংপুর। পরে ডিউক বলে ফিরলেও কক্সবাজারে তৃতীয় রাউন্ডে সিলেটের সঙ্গেও ড্র হয় তাদের ম্যাচ।
এরপর বগুড়ায় গিয়ে বরিশালকে ৮ উইকেটে হারিয়ে পূর্ণ ৮ পয়েন্ট পায় রংপুর। রাজশাহীর মাঠে খেলতে নেমে পঞ্চম রাউন্ডে তারা হারায় স্বাগতিক রাজশাহীকে।
ষষ্ঠ রাউন্ডের জন্য আবার কক্সবাজারে যায় আকবরের দল। ওই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে হাসান মাহমুদ ও ইফরান হোসেনের তোপে মাত্র ৩৩ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে রংপুর। পরে ম্যাচটি তারা হেরে যায় ইনিংস ব্যবধানে।
আকবরের মতে, পুরো টুর্নামেন্টে ওই একটি ইনিংসই শুধু তার প্রত্যা্শামতো যায়নি।
“শুধু চট্টগ্রাম ম্যাচটা বাদে আর সব ম্যাচে আমাদের পজিটিভ রেজাল্টই বলবো। কুকাবুরাতে সিলেটের মাঠে খেলা হইছে, কক্সবাজারে খেলা হইছে। ওগুলো ম্যাচে রেজাল্ট বের করা কঠিন।”
“আমরা জানতাম যে আমাদের বগুড়াতে দুইটা খেলা আছে, রাজশাহীতে একটা খেলা আছে। তো এই তিনটা খেলায় রেজাল্ট করতেই হবে আমাদের।”
আর এই ফল পাওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় কারিগর মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। রংপুরের জেতা তিন ম্যাচেই ইনিংসে ৫ উইকেট আছে ২৫ বছর বয়সী পেসারের৷ সব মিলিয়ে মাত্র ৭ ইনিংসে তিনি নিয়েছেন টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯ উইকেট। যার সৌজন্যে জিতেছেন লিগের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার।
ব্যাটিংয়ে সম্মিলিত পারফরম্যান্স ছিল দলের সবার। সর্বোচ্চ ৩০০ রান করেন নাঈম ইসলাম। মূলত বোলিং দিয়েই এবারের শিরোপাটি জিতেছে রংপুর। আরও একবার নিজেকে আকবর দ্য গ্রেট হিসেবে প্রমাণ করেছেন অধিনায়ক আকবর।
No posts available.

দীর্ঘ ছয় বছরের প্রতীক্ষা শেষে গত নভেম্বরে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দিয়ে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ফিরেছিল টেস্ট। সেই ম্যাচে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল পিচের অসম বাউন্স। তবে কলকাতা টেস্টের পিচকে ‘সন্তোষজনক’ রেটিং দিয়েছেন আইসিসি ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসন।
এই রেটিংয়ের ফলে শাস্তি বা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়েছে ইডেন গার্ডেন্স। আইসিসির চার ধাপের পিচ রেটিং ব্যবস্থায় ‘সন্তোষজনক’ দ্বিতীয় স্তরের মান। এর উপরে রয়েছে ‘ভালো’ ও ‘খুব ভালো’ আর নিচের দুই ধাপ হলো ‘অসন্তোষজনক’ ও সর্বনিম্ন ‘অনুপযুক্ত’।
কলকাতার টেস্টে প্রথম ওভার থেকেই পিচে অসম বাউন্স চোখে পড়ে। ম্যাচ যত এগিয়েছে, ততই বেড়েছে টার্নের মাত্রা। পেসার ও স্পিনার-উভয়ের জন্যই সহায়ক হয়ে ওঠে উইকেটটি। পুরো ম্যাচে কোনো দলই এক ইনিংসে ২০০ রান করতে পারেনি। চতুর্থ ইনিংসে ১২৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারত অলআউট হয়ে যায় মাত্র ৯৩ রানে।
ম্যাচ চলাকালীন ও পরবর্তী সময়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয় ইডেন গার্ডেন্সের পিচ। ম্যাচ শেষে ভারতের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর বলেন, ‘আমরা যা চেয়েছিলাম পিচ ঠিক তেমনই ছিল।’
যদিও গোয়াহাটিতে দ্বিতীয় টেস্টের আগে ব্যাটিং কোচ সিতাংশু কোটাক ভিন্ন বক্তব্য দেন। কোটাক জানান, ইডেন গার্ডেন্সের কিউরেটর সুজন মুখার্জিকে রক্ষা করতেই এমন মন্তব্য করেছিলেন গম্ভীর। তাঁর মতে, অসম বাউন্সে ভারতীয় দল বিস্মিত হয়েছিল এবং এমন পিচ তাঁরা আদৌ চায়নি।
গোয়াহাটিতে দ্বিতীয় টেস্ট তুলনামূলক ব্যাটিং-বান্ধব পিচ ছিল। সেখানেও বড় জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে নিজেদের করে নেয় প্রোটিয়ারা।
সম্প্রতি পিচের রেটিং নিয়ে আলোচনা চলছে জোরেশোরেই। অ্যাশেজের বক্সিং ডে টেস্ট শেষে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের (এমসিজি) পিচকে ‘অসন্তোষজনক’ ঘোষণা করেছে আইসিসি। এর সঙ্গে মাঠটি পেয়েছে ১ ডিমেরিট পয়েন্টও। আলোচনা হলেও বলা যায় এই যাত্রায় বেঁচে গেল ইডেন গার্ডেন্স।

দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
আজ এক শোকবার্তায় বিসিবি সভাপতি বলেন,
‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর মৃত্যু দেশ ও জাতির জন্য এক গভীর ক্ষতি। পাশাপাশি যাঁরা তাঁর নেতৃত্ব ও জনসেবার সঙ্গে পরিচিত ছিলেন- সবার জন্যই এটি এক বেদনাদায়ক মুহূর্ত।’
শোকবার্তায় ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করে আমিনুল ইসলাম বলেন,
‘তিনি ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি যে উৎসাহ ও সমর্থন যুগিয়েছিলেন সে জন্য তাঁকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি। ক্রিকেটের প্রতি তাঁর আগ্রহ এবং দেশকে একসূত্রে গাঁথার ক্ষেত্রে এই খেলাটির গুরুত্ব সম্পর্কে তাঁর উপলব্ধি ছিল আন্তরিক ও দীর্ঘস্থায়ী।’
তিনি বলেন,
‘বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে বাংলাদেশের ক্রিকেট অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়, যা দেশের ক্রিকেটের শক্ত ভিত গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।’
বিসিবি সভাপতি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটের আধুনিকায়নের পথে খালেদা জিয়ার প্রয়াত পুত্র আরাফাত রহমানের অবদানও অবিচ্ছেদ্য। তাঁর দূরদর্শী চিন্তা ও উদ্যোগ দেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।
শোকবার্তায় বিসিবির পক্ষ থেকে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার, স্বজন এবং দেশ-বিদেশে অবস্থানরত শোকাহত মানুষের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়।
খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে আমিনুল ইসলাম বলেন,
‘আল্লাহ যেন বেগম খালেদা জিয়াকে জান্নাত নসিব করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার ও শুভানুধ্যায়ীদের এই শোক সহ্য করার শক্তি ও ধৈর্য দান করেন।’
উল্লেখ্য, আজ মঙ্গলবার ভোর ৬ টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন খালেদা জিয়া। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বিভিন্ন জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগেছেন। এর মধ্যে ছিল লিভার সংক্রান্ত জটিলতা, কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আথ্রাইটিস ও ইনফেকশনজনিত সমস্যা।

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের আবহে আজ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দুটি ম্যাচ স্থগিত রাখা হয়েছে। শোক ও সম্মান জানিয়ে কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নেয়।
ম্যাচ স্থগিত থাকলেও বিকেলে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ও দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এ সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে নিজের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তিনি।
বুলবুল বলেন,
‘১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি জয়ের পর আমাদের বিভিন্ন জায়গায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে একটি ছিল তৎকালীন বিএনপির পক্ষ থেকে মিন্টু রোডে আয়োজিত সংবর্ধনা। আমি তখন দলের ভাইস ক্যাপ্টেন ছিলাম। বক্তৃতার সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে একটি ভুল বলায় পুরো মঞ্চ কিছুক্ষণ নীরব হয়ে যায়। পরে সঙ্গে সঙ্গে ভুল সংশোধন করি। ঘটনাটি আজও আমার মনে গভীরভাবে দাগ কেটে আছে।’
তিনি আরও বলেন,
‘আমরা যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো করতাম, তখন তিনি আমাদের দাওয়াত দিতেন। আমার জীবনের অন্যতম গর্বের মুহূর্ত ছিল রাষ্ট্রীয় পুরস্কার গ্রহণ—যে পুরস্কারটি তিনি নিজ হাতে আমার গলায় পরিয়ে দিয়েছিলেন।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন,
‘বিসিবির পক্ষ থেকে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে শোক প্রকাশ করেছি। আগামীকাল শোক দিবস উপলক্ষে পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। এখানে কোনো রাজনৈতিক বিষয় নেই—আমরা সবাই দেশের নাগরিক এবং আমরা সবাই শোকাহত।’
বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নয়নে রাষ্ট্রীয় সহায়তার কথা স্মরণ করে বুলবুল বলেন,
‘২০০৪ সালে বাংলাদেশে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ আয়োজন এবং মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামসহ বিভিন্ন ভেন্যু নির্মাণে যে সহযোগিতা পাওয়া গেছে, তা দেশের ক্রিকেট এগিয়ে নিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।’
৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮:৩৩ পিএম

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ক্রিকেটে মঙ্গলবার স্থগিত করা দুই ম্যাচের নতুন সূচি জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সিলেটে আগামী ৪ জানুয়ারি (রোববার) হবে এই ম্যাচ দুইটি।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বিসিবি জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সরকারের ঘোষিত তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোকের অংশ হিসেবে বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর কোনো বিপিএল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে না। এদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতি ও শুক্রবার (১ ও ২ জানুয়ারি) নির্ধারিত ম্যাচগুলো পূর্ব ঘোষিত সূচি অনুযায়ীই অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল সিলেট টাইটান্স ও চট্টগ্রাম রয়্যালসের। পরে সন্ধ্যার ম্যাচে খেলার কথা রংপুর রাইডার্স ও ঢাকা ক্যাপিটালসের। এখন আগামী রোববার খেলবে তারা।
এর আগে বিকেলে বিপিএলের ফেইসবুক পেজে প্রকাশিত এক বার্তায় জানানো হয়েছিল, মঙ্গলবারের ম্যাচগুলো হবে বুধবার। তবে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়িয়েছে বিসিবি।
এদিকে আগামী সোমবার থেকে বিপিএলের খেলা হওয়ার কথা ছিল চট্টগ্রামে। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ৫ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে পরবর্তী ম্যাচগুলোর সংশোধিত সূচি শিগগিরই প্রকাশ করবে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।

টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ১৫ জনের দল ঘোষণা করেছে ওমান। ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলটির নেতৃত্ব দেবেন ওপেনার জতিন্দর সিং। তবে আলোচনার জন্ম দিয়েছে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার আমির কালিমকে দলে না রাখা। এশিয়া কাপে ভালো পারফরম্যান্সের পরও ৪৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার জায়গা পাননি চূড়ান্ত স্কোয়াডে।
ঘোষিত দলে সহ-অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন উইকেটকিপার–ব্যাটার ভিনায়ক শুক্লা। বছরের শুরুতে এশিয়া কাপে যে দল খেলেছিল, সেখান থেকে পাঁচটি পরিবর্তন এনেছে ওমান ক্রিকেট বোর্ড।
নতুন করে বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়েছেন অলরাউন্ডার ওয়াসিম আলি, করণ সোনাভালে ও জে ওডেড্রা। পাশাপাশি পেস আক্রমণ শক্তিশালী করতে দলে যুক্ত করা হয়েছে শফিক জান ও জিতেন রামানন্দিকে। রামানন্দি, ওডেড্রা ও ওয়াসিম আলি টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলেছিলেন। শফিক জান ওমানের হয়ে অভিষেক করেন এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারস টুর্নামেন্টে, যেখানে খেলেছিলেন সোনাভালেও।
এশিয়া কাপের দলে থাকা কয়েকজন ক্রিকেটারের সঙ্গে এবার বাদ পড়েছেন আমির কালিম। সেই টুর্নামেন্টে তিনি ওমানের হয়ে দুটি ফিফটি করেছিলেন এবং পরবর্তীতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বেও খেলেন। অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারকে চূড়ান্ত বিশ্বকাপ দলে রাখেনি টিম ম্যানেজমেন্ট।
অধিনায়ক জতিন্দর সিং ওমানের টি–টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এবং সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। আগের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনি দলে জায়গা পাননি, তবে এবার নেতৃত্বের দায়িত্ব নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছেন তিনি।
২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ‘বি’ গ্রুপে খেলবে ওমান। গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ সহ-আয়োজক শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ড। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে ওমান।
ওমানের বিশ্বকাপ দল:
জতিন্দর সিং (অধিনায়ক), ভিনায়ক শুক্লা (সহ-অধিনায়ক), মোহাম্মদ নাদিম, শাকিল আহমদ, হাম্মাদ মির্জা, ওয়াসিম আলি, করণ সোনাভালে, ফয়সাল শাহ, নাদিম খান, সুফিয়ান মেহমুদ, জে ওডেড্রা, শফিক জান, আশিস ওডেডারা, জিতেন রামানন্দি, হাসনাইন আলি শাহ।