৯ অক্টোবর ২০২৫, ১:৪৩ এম
ব্যাটারদের ব্যর্থতা পুষিয়ে দিতে পারলেন না বোলাররা। তাই টি-টোয়েন্টি সিরিজের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারল না বাংলাদেশ। হতাশার পরাজয়ে শুরু হলো আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের খেলা।
আবু ধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারাল আফগানিস্তান। আগে ব্যাট করে ৪৮.৫ ওভারে ২২১ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
জবাবে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও রহমত শাহর ফিফটির পর আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও হাশমতউল্লাহ শহিদির দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ১৭ বল বাকি থাকতে জিতে যায় আফগানরা।
তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল আফগানিস্তান। একই মাঠে শনিবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে লড়বে দুই দল।
রান তাড়ায় গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানের ব্যাটে ইতিবাচক শুরু পায় আফগানিস্তান। মাত্র ৯ ওভারের মধ্যে উদ্বোধনী জুটির পঞ্চাশ রান যোগ করেন তারা।
দশম ওভারে ইব্রাহিমকে স্টাম্পড করে এই জুটি ভাঙেন তানভির ইসলাম। পরে সেদিকউল্লাহ অতলকে ক্যাচ আউট করেন তানজিম হাসান সাকিব।
এরপর কমে আফগানদের রানের গতি। তবে তখন উইকেট পড়তে দেননি রহমত শাহ ও রহমানউল্লাহ গুরবাজ। রয়েসয়ে খেলে দুজন মিলে গড়েন ৭৮ রানের জুটি। দুজনই করেন ব্যক্তিগত ফিফটি।
পরপর দুই ওভারে রহমত ও গুরবাজকে আউট করেন সাকিব ও মেহেদী হাসান মিরাজ। রহমতের মতো গুরবাজের ব্যাট থেকেও আসে ঠিক ৫০ রান।
দ্রুত ২ উইকেট নিলেও আফগানদের চাপে ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। উল্টো পঞ্চম উইকেটে ৫৯ রানের জুটি গড়ে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও হাশমতউল্লাহ শহিদি।
সাকিবের ওভারে হ্যাটট্রিক চার মেরে পরে আউট হয়ে যান ৪৪ বলে ৪০ রান করা ওমরজাই। এরপর মোহাম্মদ নবীর সঙ্গে জুটি বাধেন হাশমত। সহজ জয় পায় আফগানিস্তান।
ম্যাচের প্রথম ভাগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ ওভারে তানজিদ হাসান তামিমের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এক ওভার পর ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন নাজমুল হোসেন শান্তও।
একপ্রান্ত আগলে রেখে হৃদয়ের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন সাইফ হাসান। কিন্তু দলের পঞ্চাশ হওয়ার পর ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে যান অভিষিক্ত ব্যাটার। ৫ চারে ৩৭ বলে করেন ২৬ রান।
মাত্র ৫৩ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর মন্থর গতিতে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন হৃদয় ও মিরাজ। ১০ ওভারে ৫০ রান করে ফেলা বাংলাদেশের একশ ছুঁতে লেগে যায় আরও ১৬ ওভার।
রয়েসয়ে ব্যাটিংয়ে ক্যারিয়ারের দশম ফিফটি করেন হৃদয়। এরপর ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান ৮৫ বলে ৫৬ রান করা ২৪ বছর বয়সী ব্যাটার। তার বিদায়ে ভাঙে ১০১ রানের জুটি।
হৃদয়ের বিদায়ের পর মিরাজও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। রশিদের গুগলিতে এলবিডব্লিউ হন ৮৭ বলে ৬০ রান করা বাংলাদেশ অধিনায়ক।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১২ ইনিংসে তার ৪ ফিফটি ও ১ সেঞ্চুরিতে ৫২.৩৩ গড়ে তার সংগ্রহ ৪৭১ রান। অবসরের আগে ১৫ ইনিংসে ৩২.৮৫ গড়ে ৪ ফিফটিতে ৪৬০ রান করেছিলেন মুশফিক।
মিরাজকে ফিরিয়ে মাত্র ১১৫ ম্যাচ ও ১০৭ ইনিংসে ২০০ উইকেট পূর্ণ করেন রশিদ। স্পিনারদের মধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় দ্রুততম তিনি। তার চেয়ে কম ম্যাচে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন শুধু পাকিস্তানের কিংবদন্তি সাকলাইন মুশতাক।
এরপর জাকের আলি অনিক ও নুরুল হাসান সোহানও অল্পেই ফিরে যান। তানজিম হাসান সাকিব ১৭ রান করে দলকে দুইশ পার করান। আর শেষ দিকে একটি করে চার-ছক্কা মারেন তানভির ইসলাম।
আফগানিস্তানের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নেন রশিদ ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৪৮.৫ ওভারে ২২১ (সাইফ ২৬, তামিম ১০, শান্ত ২, হৃদয় ৫৬, মিরাজ ৬০, জাকের ১০, সোহান ৭, সাকিব ১৭, হাসান ৫, তাসকিন ৪*, তানভির ১১; বশির ৪-০-২৫-০, ওমরজাই ৯-০-৪০-৩, গাজানফার ৯.১-১-৫৫-৩, খারোটে ১০-১-৩২-১, রশিদ ১০-০-৩২-৩, নবী ৬-০-২৭-০)
আফগানিস্তান: ৪৭.১ ওভারে ২২৬/৫ (গুরবাজ ৫০, ইব্রাহিম ২৩, অতল ৫, রহমত ৫০, হাশমত ৩৩*, ওমরজাই ৪০, নবী ১১*; তাসকিন ৮-০-৫০-০, হাসান ৮-০-৪০-০, তানভির ১০-০-৪২-১, সাকিব ৭-১-৩১-৩, মিরাজ ১০-১-৩২-১, সাইফ ৩.১-০-২৪-০, শান্ত ১-০-৪-০)
ফল: আফগানিস্তান ৫ উইকেটে জয়ী
No posts available.
১২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৩ এম
১১ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৮ পিএম
১১ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম
পরপর দুই ম্যাচে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় আফগানিস্তানের কাছে হেরে গেল বাংলাদেশ। বোলারদের দারুণ পারফরম্যান্সে আফগানদের মাত্র ১৯০ রানে থামিয়ে রেখেও জিততে পারল না তারা। ম্যাচ শেষে তাই ব্যাটারদের দায় দিলেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ।
আবু ধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৮১ রানে হারিয়েছে স্বাগতিক আফগানিস্তান। রশিদ খানের ঘূর্ণিতে মাত্র ১০৯ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে তাওহিদ হৃদয়ের ২৪ রানই ছিল সর্বোচ্চ।
এর আগে প্রথম ম্যাচে মাত্র ২২১ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। যা জয়ের জন্য একদমই যথেষ্ট ছিল না। ব্যাটিংয়ের এই সমস্যা মূলত ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকেই ধারাবাহিকভাবে চলছে। যা নিয়ে চিন্তিত মিরাজও।
এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ হেরে যাওয়ার পর তাই ব্যাটিংয়ের কথাই বারবার বললেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
“হ্যাঁ অবশ্যই। আমরা খুব ভালো বোলিং করেছি। মনে করেছিলাম, সহজেই এই রান তাড়া করতে পারব। কিন্তু আমরা একদমই ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি। খুব খারাপ ব্যাটিং করেছি আজকে।”
“আমি শুধু একটা জিনিসই বলছিলাম, টপ-অর্ডারে আমাদের জুটি গড়তে হবে। আমরা যদি টপ-অর্ডারে ৩০-৪০ রানের জুটি গড়তে পারতাম, ভিন্ন কিছু হতে পারত। আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে। সেটা কেউ নিতে পারছি না। এখানেই সমস্যা।”
সিরিজ হারলেও শেষ ম্যাচটি জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে চান মিরাজ। এরপর আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। তাই তিনি দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর তাগিদ দিলেন দলের ব্যাটারদের।
“এই মুহূর্তে আমরা খুবই হতাশ। আমাদের এখনও এক ম্যাচ বাকি আছে। এরপর আমাদের আরেকটি সিরিজ আছে। আমাদের চিন্তা করতে হবে, কীভাবে ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়ানো যায়।”
“আমাদের ব্যাটিংয়ে ভালো করতে হবে। ওয়ানডে ক্রিকেটে স্কোর না পেলে আপনি জিততে পারবেন না। আমাদের অন্তত ওপরের ৭ ব্যাটারের দায়িত্ব নিতে হবে।”
রশিদ খানের লেগ স্পিন বা গুগলির কোনো জবাবই যেন জানে না বাংলাদেশ। বেশ ছোট লক্ষ্য পেলেও রশিদের ঘূর্ণিতে খাবি খেয়ে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হেরে গেল মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
আবু ধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে ৮১ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জিতে গেল আফগানিস্তান। মাত্র ১৯১ রানের লক্ষ্য পেলেও ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১০৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
এই মাঠে এর চেয়ে কম রান করে জিততে পারেনি আর কোনো দল। ২০০৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯৮ রান করেও জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই রেকর্ড এবার নিজেদের করে নিল আফগানিস্তান।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের সর্বনিম্ন ইনিংস।
এ নিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে টানা তিন সিরিজ জিতে হ্যাটট্রিক করল আফগানিস্তান। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের মাঠে ও ২০২৪ সালে শারজাহতেও সিরিজ জিতেছিল তারা।
বাংলাদেশের ব্যাটিং গুঁড়িয়ে মাত্র ১৭ রানে ৫ উইকেট নেন রশিদ। ওয়ানডেতে এটি তার ষষ্ঠ ৫ উইকেট। স্পিনারদের মধ্যে তার চেয়ে বেশি ৫ উইকেট আছে শুধু মুত্তিয়া মুরালিধরন (১০) ও শহিদ আফ্রিদির (৯)। এছাড়া আজমতউল্লাহ ওমরজাই নেন ৩ উইকেট।
রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই তানজিদ হাসান তামিমের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পরে সাইফ হাসানের শুরুটা ভালো হলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
একপ্রান্ত আগলে তাওহিদ হৃদয় দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু দলের সর্বোচ্চ ২৪ রান করে রশিদের বলে বোল্ড হয়ে যান হৃদয়। সেখান থেকেই শুরু হয় বাংলাদেশের ধস।
শেষ দিকে মাত্র ১০ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে অল আউট হয় বাংলাদেশ।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোচট খায় আফগানিস্তান। পঞ্চম ওভারে সাকিবের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন আগের ম্যাচে দলকে জেতানোর নায়ক রহমানউল্লাহ গুরবাজ। পাওয়ার প্লের মধ্যে একই পরিণতি হয় সেদিকউল্লাহ অতলের।
আফগানিস্তানের বিপদ বাড়িয়ে ১৫তম ওভারে পায়ের চোটে মাঠ ছেড়ে যান রহমত শাহ। পরে তাদের অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদিকে বোল্ড করে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ।
মাত্র ৭৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর হাল ধরার চেষ্টা করেন ইব্রাহিম জাদরান ও মোহাম্মদ নবী। কিন্তু বেশি বড় হয়নি তাদের জুটি। সাকিবের বলে ক্যাচ আউট হয়ে ফেরেন ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২ রান করা নবী।
এরপর দলকে একাই টানতে থাকেন ইব্রাহিম। তবে তাকে অল্পের জন্য সেঞ্চুরি করতে দেননি মিরাজ। ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়েন ১৪০ বলে ৯৫ রান করা আফগান ওপেনার। ৩ চারের সঙ্গে ১টি ছক্কা মারতে পারেন তিনি।
শেষ দিকে ১৮ বলে ২২ রানের ক্যামিও খেলেন এএম গাজানফার। ৯ উইকেট পতনের পর আবার ব্যাটিংয়ে নামেন। তবে এক বল খেলে অস্বস্তিতে ভোগায় আর চালিয়ে নিতে পারেননি। ফলে ৯ উইকেটেই শেষ হয় আফগানিস্তানের ইনিংস।
বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এছাড়া তানজিম হাসান
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ৪৪.৫ ওভারে ১৯০ (গুরবাজ ১১, ইব্রাহিম ৯৫, অতল ৮, রহমত ৯ অবসর আউট, হাশমত ৪, ওমরজাই ০, নবী ২২, খারোটে ১৩, রশিদ ১, গাজানফার ২২, বশির ০*; সাকিব ৭-০-৩৫-২, মোস্তাফিজ ৮-০-৩৮-০, মিরাজ ১০-১-৪২-৩, তানভির ১০-০-৩৫-১, রিশাদ ৯.৫-০-৩৭-২)
বাংলাদেশ: ২৮.৩ ওভারে ১০৯ (তামিম ০, সাইফ ২২, শান্ত ৭, হৃদয় ২৪, মিরাজ ৪, জাকের ১৮, সোহান ১৫, সাকিব ০, রিশাদ ৫, তানভির ০, মোস্তাফিজ ৬*; ওমরজাই ৭-১-২৭-৩, বশির ২-০-২২-০, গাজানফার ৪-০-২১-০, রশিদ ৮.৩-২-১৭-৫, খারোটে ৭-২-২২-১)
ফল: আফগানিস্তান ৮১ রানে জয়ী
মড়ার উপর খাঁরার ঘা। দক্ষিণ আফ্রিকার দশা হয়েছে এমনই। নামিবিবয়ার বিপক্ষে হেরে অঘটনের শিকার হওয়া ম্যাচে চোট পেয়েছেন জেরাল্ড কোৎজে। বুকের পেশির চোটে পড়েছেন প্রোটিয়া পেসার।
নামিবিয়ার বিপক্ষে আজ একমাত্র টি-টোয়েন্টিতে চার উইকেটে হারে দক্ষিণ আফ্রিকা। আইসিসির সহযোগী সদস্য দলটির বিপক্ষে প্রথমবার মুখোমুখি হয়েই হার তিক্ত অভিজ্ঞতা হলো প্রোটিয়াদের।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ১৩৪ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে চার উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় নামিবিয়া। অঘটনের ম্যাচে ১.৩ ওভার বল করেন কোৎজে। সবমিলিয়ে ১৩ ডেলিভারির মধ্যে চারটিই ছিল ওয়াইড। এর পরই মাঠ ছাড়েন ২৫ বছর বয়সী পেসার।
পেশীর চোটে পাকিস্তান সফরের সাদা বলের সিরিজে অনিশ্চিত হয়ে পড়লেন কোৎজে। ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা (সিএসএ) নিশ্চিত করেছে, উইন্ডহুক থেকে দেশে ফেরার পর তার চোটের ধরণ নিয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
সাম্প্রতিক সময়ে চোট যেন পিছুই ছাড়ছে না কোৎজেকে। এর আগে কুঁচকির চোটে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকেও ছিটকে পড়েছিলেন তিনি। এরপর জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে জাতীয় দলে ফেরেন এই ফাস্ট বোলার। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা 'এ' দলের হয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন।
এর আগে গত সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকার আরেক তরুণ পেসার কুইনা মাফাকাও ইনজুরিতে পড়েন। বাঁ হাতি এই পেসার ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ম্যাচে খেলার সময় হ্যামস্ট্রিং চোটে আক্রান্ত হন। তাতে নামিবিয়ার ম্যাচসহ পাকিস্তান সফর থেকেও ছিটকে পড়েন মাফাকা।
অবশ্য এরপরও শক্তিশালী পেস বোলিং বিকল্প আছে দক্ষিণ আফ্রিকার। নান্দ্রে বার্গার ও লিজাদ উইলিয়ামস দুজনেই চোট কাটিয়ে সফলভাবে দলে ফিরেছেন । বার্গার ফিরেছেন লোয়ার ব্যাক স্ট্রেস ফ্র্যাকচার থেকে, আর উইলিয়ামস ফিরেছেন হাঁটুর অস্ত্রোপচারের পর।
পাকিস্তানের বিপক্ষে আগামীকাল শুরু হতে যাওয়া দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের পর ২৮ অক্টোবর শুরু হবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এরপর সফরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজও খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকা।
প্রথম রাউন্ডের অর্ধেকের বেশি ম্যাচ বাকি থাকতেই সেমি-ফাইনালের টিকেট বিক্রি শুরু করে দিয়েছে আইসিসি। শনিবার সন্ধ্যা থেকে মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের দুই সেমি-ফাইনালের টিকেট কিনতে পারছেন গুগল পে গ্রাহকরা।
বিশ্বকাপের স্পন্সর কোম্পানি গুগলের গ্রাহকদের জন্য দেওয়া হয়েছে দুই দিনের প্রি-সেল উইন্ডো। পরে ১৩ অক্টোবর থেকে সেমি-ফাইনালের টিকেট কিনতে পারবেন যে কোনো দর্শক।
গুয়াহাটিতে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর হবে বিশ্বকাপের প্রথম সেমি-ফাইনাল। সেদিন মাঠে বসে ফাইনালে ওঠার লড়াই দেখতে গুনতে হবে সর্বনিম্ন মাত্র ১০০ রুপি। বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩৬ টাকার কাছাকাছি।
তবে পাকিস্তান উঠলে, প্রথম সেমি-ফাইনাল ম্যাচ হবে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে। সেক্ষেত্রে গুয়াহাটির টিকেট কিনে রাখা সবাইকে শতভাগ অর্থ ফেরত দেবে আইসিসি।
তবে প্রথম তিন ম্যাচ হেরে যাওয়া পাকিস্তানের সেমি-ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা খুবই কম।
মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে ৩০ অক্টোবর হবে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমি-ফাইনাল। সেদিনের সর্বনিম্ন টিকেট মূল্য ১৫০ রুপি।
গ্রুপ পর্বের ম্যাচের এরই মধ্যে ১২ অক্টোবর ভারত-অস্ট্রেলিয়া ও ১৯ অক্টোবর ভারত-ইংল্যান্ডের সব টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে। এছাড়া ভারত- নিউ জিল্যান্ড ও ভারত-বাংলাদেশের ম্যাচের টিকেটও প্রায় শেষের পথে।
এর আগে গুয়াহাটিতে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচেরও সব টিকেট বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। সেদিন গ্যালারিতে ছিলেন ২২ হাজার ৮৪৩ জন দর্শক। যা কিনা মেয়েদের আইসিসি ইভেন্টে গ্রুপ পর্বের ম্যাচের রেকর্ড।
নিজেদের মাঠে প্রথমবারের মতো খেলার ইতিহাসটা এরচেয়ে ভালোভাবে লিখতে পারত না নামিবিয়া। আইসিসির সহযোগি সদস্য দলটি হারাল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। এর আগে শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের স্বাদ পাওয়া নামিবিয়া এবার আফ্রিকার জায়ান্টকে হারিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে বড় অঘটনের জন্ম দিল।
১৩৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ইতিহাস গড়তে শেষ ওভারে নামিবিয়ার লাগত ১১ রান। এন্ডাইল সিমিলানের প্রথম ডেলিভারিতেই ছক্কা হাঁকান নামিবিয়া ব্যাটার জেন গ্রিন। পরের চার বল থেকে চার রান তুলে ম্যাচ টাই করে নামিবিয়া। শেষ বলে এক রান হলেই চলত তাদের। তবে দিনটাকে স্বরণীয় করে রাখার পণ করা আফ্রিকার দেশটি সিঙ্গেল নয় চার মেরেই জয় নিশ্চিত করল।
অনেক প্রথমের এই টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি অনেক কারণেই মনে রাখবে নামিবিয়া ক্রিকেটপ্রেমীরা। উইন্ডহুকে নামিবিয়া ক্রিকেট গ্রাউন্ডের উদ্বোধনী ম্যাচে ক্রিকেটের যেকোনো সংস্করণে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয় জেরহার্ড ইরাসমাসের দল। আর প্রথমবারের দেখাতেই বাজিমাত করল তারা।
ঘরের মাঠে প্রথমে জয়ের ভিতটা গড়ে দেন নামিবিয়ার বোলাররা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ আয়ত্তের মধ্যেই রাখে স্বাগতিকরা। অবশ্য প্রোটিয়াদের একটি দল টেস্ট খেলতে আছে পাকিস্তান সফরে, তাতে অনেকটা দ্বিতীয় সারির দল নিয়েই নামে তারা। এরপরও নামেভারে নিজেদের থেকে যোজন যোজন এগিয়ে থাকা দলকে ১৩৪ রানে আটকে দেওয়া কম কিসে।
দলীয় ৪ রানেই প্রথম উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই যে শুরু এরপর বলার মতো তেমন কোনো জুটিই তাদের গড়তে দেয়নি নাবিমিয়ার বোলাররা। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে সর্বোচ্চ রান এসেছে জ্যাসন স্মিথের ব্যাট থেকে। ৩০ বলে ৩১ রান করেন ডান হাতি এই ব্যাটার। এই ম্যাচেই বিরতি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন কুইন্টন ডি কক। তবে এক রান করেই আউট হওয়া তার ফেরাটা মোটেও সুখকর হয়নি।
বল হাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বেশি ভুগিয়েছেন রুবেন ট্রুম্পেলম্যান। ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন বাঁ হাতি এই পেসার।
রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি নামিবিয়ার। ২৮ রানে দুই উইকেট হারায় তারা। তবে মিডল অর্ডার আর লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যাটাররা হাল ধরে ভালোভাবেই। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে একটা সময় তাদের ১০৬ রানেই ছয় ব্যাটার সাজঘরে ফিরলে ম্যাচ জয়ের আশা ফিকে হয়ে যায়। তবে সপ্তম উইকেটে ট্রুম্পেলম্যান-জেন গ্রিনের ৩৭ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটিই শেষ পর্যন্ত ইতিহাস লিখে।