
গত বছরের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে স্বাগতিক দলকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইট ওয়াশের সুখস্মৃতি থেকে টনিক নিতে পারেনি বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে টি-টোয়েন্টির সাম্প্রতিক রেকর্ডও উদ্দীপ্ত করতে পারেনি লিটনের দলকে। দ্বি-পাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজে টানা ৪ জয়ে থামতে হলো বাংলাদেশ দলকে। ১০ মাস আগে নিজেদের মাটিতে হোয়াইট ওয়াশের বদলা বাংলাদেশ সফরে নিয়েছে। ২-০-তে এগিয়ে ট্রফি নিশ্চিত করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এবার ড্যারেন স্যামীর শিষ্যদের মিশন মধুর প্রতিশোধ, হোয়াইট ওয়াশের বদলা হোয়াইট ওয়াশ।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১৬ রানে হেরে যাওয়ায় আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে ব্যাটারদের। সেই ম্যাচে ১৬৬ রান তাড়া করতে এসে এই হার-কে না হয় কোনোভাবে মেনে নিলেন, কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচের টার্গেট ১৫০ তো মামুলিই। এই টার্গেট তাড়া করে ১৪ রানে হার! এমন হারের কী অজুহাত দিবে টিম ম্যানেজমেন্ট ?
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে ডট বল এবং ছক্কার সংখ্যায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেখানে ডট করেছে ৪৪টি বল, সেখানে বাংলাদেশের ইনিংসে ডট সংখ্যা ৫০ টি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটারদের ছক্কার সংখ্যা যেখানে ৬টি, সেখানে বাংলাদেশ ব্যাটাররা সর্বসাকূল্যে ছক্কা মেরেছে ৩টি। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে'র প্রথম ৬ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর যেখানে ৫০/১, সেখানে অতি সাবধানী ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের স্কোর ৩৭/১।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আথানেজ-হোপের ৫৯ বলে ১০৫ রানও গড়ে দিয়েছে ব্যবধান। যেখানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি ছিল দ্বিতীয় উইকেটে লিটন-তানজিদ হাসান তামিমের ২৩ বলে ৩৫।
মিরপুরের কালো মাটির পিচ থেকে চট্টগ্রামে বাদামী রঙের পিচ। সেই পিচের উপরের স্তরটা আবার আংশি সবুজাভ। তবে এমন চেহারার পিচই প্রতারণা করেছে স্বাগতিক দলের সাথে। শুরুতে এই পিচে ব্যাটে ঠিকঠাকমতো বল এসেছে, পেয়েছে ইভেন বাউন্স। ১০ ওভার পর্যন্ত পিচ এমন আচরণই করেছে। তবে এর পর থেকে ট্রিপিক্যাল বাংলাদেশী উইকেট! বলে ধরেছে টার্ন, বল পড়ে লো হয়েছে।
ইনিংসের ৪র্থ ওভারে হোল্ডারের এক্সটা বাউন্সে পুল করতে যেয়ে ওপেনার সাইফ হাসান দিয়েছেন এক্সট্রা কভারে ক্যাচ (১০ বলে ৫)। দলের স্কোর যখন আনলাতি থারটিন, তখন তার বিদায়ের পর কিন্তু পর পর তিনটি মাঝারিমানের পার্টনারশিপ হয়েছে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ২৩ বলে ৩৫, তৃতীয় উইকেট জুটিতে ২৮ বলে ৩৭, ৪র্থ উইকেট জুটিতে ৩০ বলে ৩২। ভাল খেলতে খেলতে অধিনায়ক লিটন আকিল হুসেইনকে ফ্রন্ট ফুটে খেলতে যেয়ে হয়েছেন বোল্ড (১৭ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৩)। শেফার্ডের বলে হৃদয়কে (১৪ বলে ১২) দারুণ এক রানিং ক্যাচে (১৪ বলে ১২)।
১০ ওভার পর্যন্ত পিচের ফেভার নিয়ে উইন্ডিজ ব্যাটাররা যেভাবে স্বাচ্ছন্দে ব্যাট করেছে, ওই সময় পর্যন্ত স্কোর ৯৪/১, তাতে দুইশ পর্যন্ত স্কোর টেনে নেয়ার স্বপ্নই দেখেছে সফরকারীরা। তবে শেষ ১০ ওভারে নাসুম-মোস্তাফিজ-রিশাদ-তানজিম হাসান সাকিবের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৪ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান যোগ করতে পেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এই ম্যাচে একটা জায়গায় মিল খুঁজে পাওয়া যাবে। ১৩তম ওভার থেকে ২০তম ওভার। এই ৮ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৭ রান যোগ করে হারিয়েছে ৫ উইকেট। সেখানে একই সময়ে বাংলাদেশ ৫০ রানে হারিয়েছে ৬ উইকেট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে ডেথ ওভারে মোস্তাফিজের স্পেলটা (২-০-১১-২) ছিল এক কথায় অসাধারণ। টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বাধিক ডট বলের রেকর্ড করা মোস্তাফিজ এদিন ৩ উইকেটের ইনিংসে (৪-০-২১-৩) ডট দিয়েছেন ১২টি। প্রথম ওভারে মার খেয়ে (১-০-১৫-০) লেগ স্পিনার রিশাদ দারুণভাবে ফিরেছেন দ্বিতীয় স্পেলে ( ২-০-৫-২)।
এই দুই বোলারের পাশে বাঁ হাতি স্পিনার নাসুমের শেষ ওভারে ৩ রানে ২ উইকেটও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পর্যাপ্ত পুঁজির পথে বাধার সৃষ্টি করেছে। নাসুম-মোস্তাফিজ পর পর দুই ডেলিভারিতে ২টি করে উইকেট শিকারে হ্যাটট্রিকের স্বপ্ন ও দেখিয়েছেন।
তবে ৪৮ বলে ৬০ রানের টার্গেট যখন পাড়ি দেয়া দুরূহ মনে করেনি দর্শকরা, তখনই দর্শকদের সাগরিকায় ডুবে মরেছে ব্যাটাররা। শেষ ৫০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের এই তিন বোলারের অর্জন ম্লান করেছে ব্যাটাররা।
ঢাল তলোয়ারহীন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম একাই লড়েছেন। বাংলাদেশের ইনিংসে তিনটি ছক্কার তিনটিই মেরেছেন তিনি। ৩৮ বলে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৯ম ফিফটি পূর্ণ করে শেফার্ডের সেকেন্ড স্পেলের প্রথম বলের গতি আন্দাজ করতে পারেননি তামিম। শেফার্ডের শ্লোয়ারে অফ সাইডে খেলতে যেয়ে ব্যাটে মিডলিং হয়নি। ডিপ পয়েন্টে দিয়েছেন ক্যাচ (৪৮ বলে ৩ চার, ৩ ছক্কায় ৬১)। ওই ওভারের চতুর্থ বলে জাকের আলী অনিক (১৮ বলে ১৭) পুল করতে যেয়ে ডিপ মিড উইকেটে দিয়েছেন ক্যাচ। ওখানেই সিরিজে ফেরার স্বপ্নের সমাধি হয়েছে বাংলাদেশের। ১৮তম ওভারে শেফার্ডের ২ উইকেট (১-০-৭-২) ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।
৪৮ ঘন্টা আগে শেষ পাওয়ার প্লে'র ৩০ বলে হোপ-রোভমন পাওয়েল ঝড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিনা উইকেটে যোগ করেছে ৬৪ রান। সেখানে বুধবার রাতে বাংলাদেশের টার্গেট ছিল শেষ ৫ ওভারে ৫০। অথচ, ওভারপ্রতি ১০ রানের এই টার্গেট অনতিক্রমযোগ্য করেছে মিডল অর্ডার এবং লোয়ার অর্ডাররা।
উইন্ডিজ এই পেসারের কাছে (৪-০-২৯-২) হেরেছে বাংলাদেশ। তবে ম্যাচের পার্শ্ব অভিনেতার তালিকায় কিন্তু রাখতে হবে উইন্ডিজ টপ অর্ডার অ্যাথানেজ (৩৩ বলে ৫ চার, ৩ ছক্কায় ৫২)- অধিনায়ক সাই হোপ (৩৬ বলে ৩ চার, ৩ ছক্বায় ৫৫), উইন্ডিজ অভিজ্ঞ পেসার জেসন হোল্ডার (৪-০-২০-২) এবং বাঁ হাতি স্পিনার আকিল হুসেইনকে (৪-০-২২-৩)।
এ বছরে যে দলটি নেপালের মতো আইসিসির সহযোগী দলের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছে ১-২-এ। বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অবতীর্ন হওয়ার আগে এ বছর সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ ম্যাচে জয়ের দেখা পেয়েছে যারা মাত্র ৩টি, সেই দলটির কাছেই কিনা হারতে হলো টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
No posts available.
৮ নভেম্বর ২০২৫, ৯:১৮ এম

হংকং সিক্সেস টুর্নামেন্টে একের পর এক বিব্রতকর অভিজ্ঞতা হচ্ছে ভারতের। কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পর এবার নেপালের বিপক্ষেও হেরে গেল দিনেশ কার্তিকের দল। ফলে বোল ফাইনালেও হয়তো খেলা হবে না তাদের।
মং কংয়ের মিশন রোড মাঠে শনিবার দুপুরের ম্যাচে ভারতকে মাত্র ৪৫ রানে অলআউট করে নেপাল। এর আগে নিজেদের ৬ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৩৭ রান করে তারা। ৯২ রানের বড় জয়ে বোল ফাইনালের পথে এগিয়ে গেল নেপাল।
এর আগে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে কুয়েতের কাছে হেরে মূল টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যায় ভারত। পরে বোল রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষেও পাত্তা পায়নি তারা। এবার নেপালের বিপক্ষে তারা পেল হ্যাটট্রিক পরাজয়ের স্বাদ।
আগে ব্যাট করে নেপালের হয়ে ঝড় তোলেন সন্দিপ জোরা ও রশিদ খান। ৪ চার, ৬ ছক্কায় ১৭ বলে ৫৫ রান করে বাধ্যতামূলক অবসরে যেতে হয় রশিদের। ৪ চার ও ৫ ছক্কায় ১২ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন জোরা।
তিন নম্বরে নেমে ১ চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কা মেরে ৭ বলে ৩১ রান করেন লোকেশ বাম।
রান তাড়ায় মাত্র ৩ ওভারে পুরো ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। প্রিয়াঙ্ক পঞ্চল ও ভারত চিপলির ব্যাট থেকে আসে ১২ রান করে।
নেপালের পক্ষে মাত্র ৭ রানে ৩ উইকেট নেন রশিদ। এছাড়া বশির আহমেদ ২টি ও রুপেশ সিং নেন ১টি উইকেট।

কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পাত্তা পেল না বাংলাদেশ। বল হাতে একের পর এক ছক্কা হজমের পর ব্যাটিংয়ে ভয়াবহ ধসে বড় ব্যবধানে হেরে গেল আকবর আলির নেতৃত্বাধীন দল।
মং কংয়ের মিশন রোড মাঠে হংকং সিক্সেস টুর্নামেন্টের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশকে ৫৪ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
শনিবারের ম্যাচে আগে ব্যাট করে ২ উইকেটে রেকর্ড ১৪৯ রান করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে ৯৫ রান করতে পারে বাংলাদেশ।
এই জয়ে টুর্নামেন্টের প্রথম দল হিসেবে সেমি-ফাইনালে পৌঁছে গেল অস্ট্রেলিয়া। আর বাংলাদেশ নেমে গেল প্লেট পর্বে। রোববার প্লেট সেমি-ফাইনালে খেলবে তারা।
আরও পড়ুন
| আরব আমিরাতের কাছেও হেরে গেল ভারত |
|
ছয় ওভারে বাংলাদেশের বোলাররা হজম করেছেন মোট ২১টি ছক্কা। তাদের তুলোধুনো করে এবারের আসরের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছে অস্ট্রেলিয়া। গ্রুপ পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৪৮ রান করেছিল আফগানিস্তান।
৮ ছক্কায় ১৪ বলে ৫১ রান করে বাধ্যতামূলক অবসরে যান বেন মেকডেরমট। ৫ ছক্কায় ৬ বলে ৩০ রান করে আউট হন উইলিয়াম বসিস্টো। অধিনায়ক অ্যালেক্স রসের ব্যাট থেকে আসে ২ চার ও ৭ ছক্কায় ১১ বলে ৫০ রান।
পরে রান তাড়ায় প্রথম ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। মাত্র ১৯ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
পঞ্চম উইকেটে ৬০ রানের জুটি গড়েন রকিবুল হাসান ও আবু হায়দার রনি। ১ চার ও ৩ ছক্কায় ১০ বলে ২৫ রান করেন রকিবুল। শেষ দিকে একা ব্যাটিং করা রনির ব্যাট থেকে আসে ২ চার ও ৭ ছক্কায় ১৮ বলে ৫০ রান।
বল হাতে ক্রিস গ্রিন নেন ৩ উইকেট।

পাকিস্তানকে হারিয়ে টুর্নামেন্ট শুরুর পর যেন জিততেই ভুলে গেছে ভারত। গ্রুপ পর্বে কুয়েতের কাছে হারের পর এবার বোল রাউন্ডে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষেও জিততে পারেনি দীনেশ কার্তিকের নেতৃত্বাধীন দল।
হংকং সিক্সেস টুর্নামেন্টে শনিবার বোল রাউন্ডের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। আগে ব্যাট করতে ৩ উইকেটে ১০৭ রান করে ভারত। জবাবে ৫.৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ জিতে নেয় আমিরাত।
গ্রুপ পর্বে কুয়েতের কাছে হেরে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠতে পারেনি ভারত। এবার আমিরাতের বিপক্ষেও হারায় বোল ফাইনালে খেলার সম্ভাবনাও কমে গেল তাদের। বোল রাউন্ডে পরের দুই ম্যাচে নেপাল ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলবে ভারত।
আমিরাতের বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নেমে দুই ওভারের মধ্যে মাত্র ১২ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত। এরপর ঝড় তোলেন অভিমন্যু মিথুন ও দিনেশ কার্তিক।
৪ চারের সঙ্গে ৫টি ছক্কায় মিথুন করে ১৬ বলে ৫০ রান। ফিফটি করে ফেলায় বাধ্যতামূলক অবসরে যেতে হয় তার। ৪টি করে চার-ছক্কায় ১৪ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন কার্তিক।
আমিরাতের পক্ষে ২ ওভারে মাত্র ১১ রানে ২ উইকেট নেন নিলানশ কেশানি।
রান তাড়ায় শুরুতেই তাণ্ডব চালান আমিরাত অধিনায়ক খালিদ শাহ। ৪ চার ও ৫ ছক্কায় ১৪ বলে ৫০ রান করে অবসরে যেতে হয় তার। আরেক ওপেনার সগির খান ১ চার ও ৪ ছক্কায় করেন ১১ বলে ৩১ রান।
চার নম্বরে নেমে ৫ বলে ২০ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেন মোহাম্মদ আফরান।

ক্রিকেটে সবসময়ই বলা হয়, ম্যাচের দৈর্ঘ্য যত কমে, ছোট দলের সঙ্গে বড় দলের পার্থক্যও তত কমে যায়। সেটি এতটাই কমে আসে যে, ৬ ওভারের ক্রিকেটে কুয়েতের কাছে হেরে গেছে ভারত। যার ফলে হংকং সিক্সেস টুর্নামেন্টের মূল আসর থেকে ছিটকে গেছে তারা।
মং কং মিশন রোড মাঠে শনিবার সকালে ভারতকে ২৭ রানে হারিয়েছে কুয়েত। এই জয়ে হংকং সিক্সেস টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠে গেছে কুয়েত। আর ভারত নেমে গেছে বোল পর্বে।
আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৬ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১০৬ রান করে কুয়েত। জবাবে ৫.৪ ওভারে ৬ উইকেটের সবকটি হারিয়ে ৭৯ রানের বেশি করতে পারেনি সাবেক তারকা ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া ভারত।
কুয়েতের শুরুটা একদমই ভালো ছিল না। মাত্র ৩৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। পাঁচ নম্বরে নেমে তাণ্ডব চালান অধিনায়ক ইয়াসিন প্যাটেল। ২ চারের সঙ্গে ৮টি ছক্কা মেরে মাত্র ১৪ বলে তিনি করেন ৫৮ রান। এছাড়া বিলাল তাহির করেন ৯ বলে ২৫ রান।
অভিমন্যু মিথুন ২ ওভারে ২১ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট।
রান তাড়ায় মাত্র ১২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। প্রথম বলেই আউট হন রবিন উথাপ্পা। ৪ বলে ৮ রানের বেশি করতে পারেননি অধিনায়ক দিনেশ কার্তিক। স্টুয়ার্ট বিনি করেন ২ বলে ২ রান।
পরে প্রিয়াঙ্ক পঞ্চল ১০ বলে ১৭, অভিমন্যু মিথুন ৯ বলে ২৬ ও শাহবাজ নাদিম ৮ বলে ১৯ রান করলেও সেটি জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়নি।
বল হাতেও কুয়েতের পক্ষে বড় অবদান রাখেন ইয়াসিন। ২ ওভারে ২৩ রান খরচ করে ৩ উইকেট নেন কুয়েত অধিনায়ক।
পুল 'সি'তে ভারত, পাকিস্তান ও কুয়েত- তিন দলেরই সমান ২ পয়েন্ট। তবে নেট রান রেটে সবার চেয়ে পিছিয়ে থাকায় বোল পর্বে নেমে গেছে ভারত। আর কোয়ার্টার-ফাইনালের টিকেট পেয়েছে পাকিস্তান ও কুয়েত।
মূলত চার গ্রুপের তৃতীয় হওয়া চার দলকে নিয়ে আয়োজন করা হয় বোল পর্ব। যেখানে চার দলের মধ্যে চলে লড়াই। পরে পুরো টুর্নামেন্টের নবম সেরা দল নির্ধারিত হয় বোল ফাইনালের মাধ্যমে।

আইসিসির সভাতেও কোনো সমাধান মেলেনি এশিয়া কাপের ট্রফি বিতর্কের। তাই এখনও অনিশ্চয়তায় ঝুলছে ভারতের ট্রফি বুঝে পাওয়ার বিষয়টি। সমস্যা সমাধানে শিগগিরই গঠন করা হতে পারে একটি বিশেষ কমিটি।
দুবাইয়ে শুক্রবার ছিল আইসিসির ত্রৈমাসিক সভার শেষ দিন। অনেক সংশয়ের পর সেই সভায় সবাইকে চমকে দিয়ে হাজির হন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) প্রধান মহসিন নাকভি।
ক্রিকবাজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সভার আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচিতে এশিয়া কাপের ট্রফি ইস্যু ছিল না। অনেকটা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ রেখেই সবার সামনে তোলা হয় ট্রফি বিতর্কের ঘটনা।
ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এসিসি চেয়ারম্যান জোরপূর্বক ট্রফিটি নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া বেশ জোর দিয়েই বলেছেন, শীঘ্রই এশিয়া কাপের ট্রফি ভারতকে বুঝিয়ে দিতে হবে।
তবে এই আলোচনার পুরোটাই ছিল অনানুষ্ঠানিক। যেটা মূলত বিভিন্ন দেশের বোর্ড প্রতিনিধিদের হালকা মেজাজের আড্ডার মাঝে উত্থাপন করা হয়েছে। যেখানে সবাই জানিয়েছেন, দ্রুতই এই ট্রফি বিতর্কের সমাধান হওয়া উচিত।
ক্রিকবাজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়া কাপের ট্রফি বিতর্ক সমাধানে একটি বিশেষ কমিটি করা হবে। তবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত এমন কোনো কমিটি হয়নি। অন্যান্য সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ওমান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান পঙ্কজ খিমজির নেতৃত্বে গঠিত হবে কমিটি।
গত সেপ্টেম্বরে ফাইনাল ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। কিন্তু ম্যাচ শেষে ট্রফি ওঠেনি তাদের হাতে। এসিসি ও পিসিবি চেয়ারম্যান এবং পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী মহসিন নাকভির হাত থেকে ট্রফি নিতে রাজি হয়নি ভারত।
বিপরীতে নাকভি নিজের অবস্থানে ছিলেন অনড়। এসিসি চেয়ারম্যান হিসেবে তিনিই ট্রফি তুলে দেবেন, এই সিদ্ধান্ত নেন নাকভি। ফলে সেদিন আর ট্রফি পাওয়া হয়নি ভারতের। পরে ভারতের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার ট্রফি চাওয়া হয়েছে।
তবে নাকভি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, দুবাইয়ে এসিসি কার্যালয়ে গিয়ে সূর্যকুমার যাদবদের অবশ্যই ট্রফি তার কাছ থেকে গ্রহণ করতে হবে। এসিসি কর্মীদেরও নির্দেশ দিয়েছেন, তার অনুমোদন ছাড়া ট্রফি সরানো যাবে না।