২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০২ পিএম
লামিন ইয়ামাল যখন মাত্র ১৬ বছর বয়সে স্পেনের হয়ে ইউরো জিতলেন, তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল মজার সব ‘মেমে’। যেখানে বলা হত, ইয়ামাল ১৬ বছরে এটা করছেন, আর অন্য ১৬ বছর বয়সীরা তখন ফিফা গেমস খেলেই সময় পার করতে ব্যস্ত। তবে ১৪ বছর বয়সী বৈভব সুরিয়াভানসি যেহেতু উপমহাদেশের একজন, তাই আইপিএলে তার তাক লাগানো ব্যাটিং দেখে মেমেতে চলে আসছে এই বয়সে অন্য বালকদের মার্বেল খেলার গল্প। স্থান, কাল ভেদে এভাবেই একই চিত্রের উদাহারনও বদলে যায়। তবে মিল থাকে একটাই, এই অল্প বয়সেই এমন জেনারেশনাল ট্যালেন্টদের পরিণতবোধ।
এর আগে একটু বয়সের আলোচনায় যাওয়া যাক। উপমহাদেশের ক্রিকেটারেরদের বয়স নিয়ে বেশ আগে থেকেই থেকে যায় একরকম ধোঁয়াশা। কোনটা আসল বয়স, আর কোনটা যে স্রেফ সার্টিফিকেট বয়স, তা নিয়ে পুরো ক্যারিয়ারেই তাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। যেমন ধরুন সাবেক পাকিস্তান অলরাউন্ডার শহিদ আফ্রিদির কথা। ১৮-তে পা দেওয়ার আগেই সেই সময়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড তিনি গড়েন, সেই সময়েই তার আসল বয়স ২২ বা তার চেয়েও বেশি বলে জোর গুঞ্জন।
হাল সময়ের আফগান মহাতারকা রশিদ খান তো আরেক জলন্ত উদাহারন। অফিশিয়ালি সব জায়গায় তার বয়স ২৬ দেখালেও আসল বয়সটা যে প্রায় ৩০ ছুঁইছুঁই বা তার চেয়েও বেশি, সেটা তার ভিন্ন ভিন্ন সাক্ষাৎকারে দেওয়া কথা শুনলেও আন্দাজ করা যায়। এছাড়া উপমহাদেশের বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে নির্দিষ্ট বয়সের চেয়ে অনেক বেশি বয়সের খেলোয়াড়দের নামিয়ে দেওয়ার ঘটনাও হয় অহরহ।
আর ঠিক এই কারণেই ভারতের অমিত প্রতিভাবান ব্যাটার সুরিয়াভানসির অফিশিয়াল বয়স ১৪ বছর বলা হলেও তা নিয়ে বেশ আগে থেকেই চলছে আলোচনা। বিশেষ করে আইপিএলে অভিষেকের পর থেকে। মাত্র ১৪ বছর বয়সে আইপিলের মত তীব্র প্রতিদ্বন্দিতার একটি টুর্নামেন্টে রাজস্থান রয়্যালসের মত একটি দলে তিনি যখন জায়গা পেয়ে যান, অনেকেই ভ্রু কুঁচকেছিলেন তাতে বেশ। তবে যারা ভারতীয় ক্রিকেটের টুকটাক খোঁজ খবর রাখেন, তারা জানতেন, এমন কিছু হওয়াটাই বরং স্বাভাবিক।
নাহ, ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্স এখানে মূল বিষয় নয়। সেটা সুরিয়াভানসির ক্ষেত্রে এখনও খুব হাইলাইট করার মত জায়গা নয়। তবে যা আলোচ্য বিষয়, তা হল তিনি এই বয়সেই ভারতের অ-১৯ দলে খেলছেন। মাত্র ১২ বছর বয়সেই হয়ে গেছে রঞ্জি অভিষেক। গত জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেছেন মাত্র ৫৮ বলের সেঞ্চুরি, যা যুব টেস্টের ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম। এসব বলে দেয়, বিশাল স্কোর বা এসবের রেকর্ডের চেয়েও বালক বয়সেই সুরিয়াভানসি পাদপ্রদীপের আলোয় চলে এসেছেন তার পরিণতবোধ এবং আধুনিক ক্রিকেটের ব্যাপক পরিচিত শব্দ ‘ইন্টেন্ট’-এর জন্য। ফরম্যাট যাই হোক, প্রথম বল থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিংটা তিনি করতে জানেন ক্লাসিক্যাল ব্যাটিংয়ের সংজ্ঞা ধরে রেখেই।
আর সেই কারণেই গেল বছর আইপিলের মেগা নিলামের সময় মাত্র ১৩ বছর বয়সী সুরিয়াভানসির নাম আসতেই একটা কাড়াকাড়ি লেগে যায়। রীতিমত যুদ্ধ করে তাকে দলে নেয় রাজস্থান। দলটির মেন্টর ও সাবেক ভারত অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড় প্রতিভা চেনা এবং তা ঘষামাজা করার কাজটা করেন বেশ ভালো। তিনি নিলামের আগে সুরিয়াভনসিকে ট্রায়ালে দেখেই বলেছিলেন, এই ছেলের মাঝে অবিশ্বাস্য স্কিল আছে।
তবে রঞ্জিতে, অ-১৯ দলে এবং আইপিএলে খেলার জন্য সুরিয়াভানসির মানসিকভাবে ভীষণ পরিণতবোধ রেখেছে বড় একটা ভূমিকা। তার জন্মের আগে থেকে ক্রিকেট খেলা আন্তর্জাতিক মানের বোলারদের যেভাবে পেটাচ্ছেন প্রথম বল থেকেই, সেটিকে আপনি ‘ঝড়ে বক’ এর মধ্যে চাইলেও ফেলতে পারবেন না। কোন বলটিকে কোথায় মারতে হবে, কোন বোলারকে শুরুতেই আক্রমণ করে চাপে ফেলে দিতে হবে, এই বিষয়গুলো ব্যাটাররা রপ্ত করেন খেলতে খেলতে, অভিজ্ঞতায় রিদ্ধ হয়ে।
তবে আপনি যদি হুট করে এই আইপিএলে সুরিয়াভানসির ব্যাটিং দেখেন, বলতে বাধ্য হবেন এই ছেলে নিশ্চয় কয়েক বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে ফেলেছে। মাথাটা ঠিক সেভাবেই যে কাজ করে তার। সাবেক ভারত ওপেনার ও ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জারেকার যেমন বলেছেন,
“বয়সটা মাত্র ১৪ হলেও সুরিয়াভানসি চিন্তা করে একজন ৩০ বছর বয়সীর মত।”
গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে ম্যাচের আগেই তাই ভারতীয় ক্রিকেটে সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছিলেন সুরিয়াভানসি। আইপিএলে নিজের অভিষেক ম্যাচের প্রথম বলেই যে হাঁকিয়েছেন বিশাল এক ছক্কা। তবে আপনি যত বড় প্রতিভাবানই হন না কেন, মাত্র ১৪ বছর বয়সে যখন আপনার মার্বেল বা ইয়ামালদের মত ফিফা গেমস খেলার কথা, তখন আপনাকে আইপিএলের মত অবিশ্বাস্য কঠিন মঞ্চে নামিয়ে দেওয়া যায়… এটা একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি তখনই ভাবতে পারে, যখন আপনি প্রমাণ করতে পারেন অন্যদের চেয়ে নিজের বয়সের তুলনায় ঢের এগিয়ে থাকার সামর্থ্য।
সুরিয়াভানসি নিশ্চয় নেটে এবং অনুশীলনেও রাজস্থানকে এটা বোঝাতে পেরেছিলেন যে, তার ওপর বাজিটা ধরা যায়। প্রথম কয়েক ম্যাচে উড়ন্ত সূচনা পেলেও বড় ইনিংস অবশ্য হচ্ছিল না। সাবেক ভারত ওপেনার বীরেন্দর শেবাগ তাই আশঙ্কা করে বলেও ফেলেছিলেন, এক বছরের ঝলক দেখিয়ে অতীতের অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের মত না আবার হারিয়ে যান সুরিয়াভানসি।
তবে তার মত প্রতিভারা তো প্রতিদিন আসেন না। এই কারণেই অন্যদের সাথে সুরিয়াভানসিদের মেলানো যায় না। শেবাগকে ভুল প্রমাণ করে তাই গুজরাটের বিপক্ষে রান তাড়ায় খেললেন বড় ইনিংস। সেটাও টর্নেডো গতিতে। ৭ চার ও ১১ ছক্কায় মাত্র ৩৮ বলে ১০১ রান করার পথে হয়েছেন আইপিলের ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান। আর বয়সের হিসেবে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির ইতিহাসের কনিষ্ঠ সেঞ্চুরি করা ব্যাটারের নাম এখন সুরিয়াভানসি। পুরো ইনিংসে যে দাপট দেখিয়েছেন, ব্যাট সুইং করেছেন, স্লগ করেছেন, নিখুঁত টাইমিং দেখিয়েছেন, তা অতিমানবীয় কিছুই ছিল।
হ্যাঁ, এই ইনিংস খেলার পথে বেশ কিছু শটে ভাগ্যের সহায়তাও তিনি পেয়েছেন। অল্পের জন্য ক্যাচ আউট হতে পারতেন কয়েকবারই। তবে এটাই তো ক্রিকেট। আর ভাগ্য তো সাহসীদের পক্ষেই থাকে। আর সুরিয়াভানসি সেই সাহসের শিক্ষাটা পেয়েছেন পরিবার থেকেই। ভারতীয় মিডিয়ার খবরে যা এসেছে, তাতে জানা যায় তার বাবা একজন কৃষক ও পার্টটাইম সাংবাদিক ছিলেন।
তবে ছেলের ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসাকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য তিনি কাজ ছেড়ে দিয়েছেন, যা সুরিয়াভানসি নিজেই বলেছেন। নিয়ম করে ছেলেকে অনুশীলন করতে নিয়ে যাওয়া, অপেক্ষা করে বসে থাকার কাজটা তিনি করে গেছেন। বিহারের মত জায়গার একটা দরিদ্র পরিবারের জন্য এটা অনেক বড় একটা ঝুঁকি। তবে সন্তানের মঙ্গলের জন্য বাবারা তো হরমেশাই এমন ত্যাগ স্বীকার করেই থাকেন…
অবশ্য তিনি সেই সাহসটা করতে পেরেছিলেন বড় ছেলের জন্য, যিনি ভাইয়ের স্বপ্নকে লালন করে দায়িত্ব নেন পরিবারের। নেমে যান আয় উপার্জনে। বাবা-ভাইয়ের এমন অবদানে আড়াল করার সুযোগ নেই সুরিয়াভানসির মায়ের গল্প। দিনের পর দিন তিনি মাত্র তিন ঘণ্টা করে ঘুমিয়েছেন, রাত ২টায় যখন সবাই ঘুমে কাতর, তখন উঠে ছেলের জন্য খাবার প্রস্তুত করতে নেমে গেছেন, যাতে ভোরে ছেলেটা বের হওয়ার আগে সময় মত খাবারটা টেবিলে পায়…
সুরিয়াভানসির মা-বাবা, ভাই তার জন্য এসব যখন করেছেন, তখন তাদের কল্পনাতে ছিল না আজকের দিনের চিত্রটা। হয়ত ছিল। তবে সেখানে যে ছিল স্বপ্ন বাস্তবে রুপ হওয়ার চিন্তাও। এসবের পরও তারা একটি বালকের স্বপ্নকে পরিবার হিসেবে ধারণ করেছেন, সাহস করেছেন একসাথে এগিয়ে যাওয়ার।
কাছ থেকে দেখার কারণে সেই সাহসটা সুরিয়াভানসির মধ্যেও অনুদিত হয়ে গেছে। ফলে, দুনিয়ার বাঘা বাঘা বোলারদের বিপক্ষে মাঠ ভর্তি দর্শকের চাপেও তিনি ভেঙে পড়েন না। চোখে চোখ রেখে তাদের উল্টো আক্রমণ করেন, চার-ছক্কায় ওড়ান বারবার। নামও তাই জুটে গেছে 'বেবি বস'! ভবিষ্যৎ তাকে কোথায় নিয়ে যায়, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এই আইপিএলে সুরিয়াভানসি দেখিয়ে দিয়েছেন, স্রেফ বয়সের দাঁড়িপাল্লায় যদি মাপতে যান, তাহলে বড্ড ভুলই করবেন বোলাররা। সেটা আজকেও, আগামীতেও…
No posts available.
১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬:২০ পিএম

তিনি যতটা না দৌড়েছেন, তার চেয়েও বেশি চার-ছক্কা হাঁকিয়েছেন। গতকাল অস্ট্রেলিয়ান টি-টোয়েন্টি ডিভিশন ওয়ান ক্লেঞ্জো গ্রুপ শিল্ডের টি-টোয়েন্টি লিগে বোলারদের ওপর রীতিমতো ঝড় বয়ে দিয়েছেন নেদারল্যান্ডস জাতীয় দলের অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস।
ম্যাচে এডওয়ার্ডস ৮১টি বল মোকাবিলা করেছেন, যাতে ছিল ২৩টি ছক্কা ও ১৪টি চার। তাঁর স্ট্রাইকরেট ছিল ২৮২।
অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন সাব-অর্বস চার্চেস অ্যান্ড কমিউনিটি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত টুর্নামেন্টের চতুর্থ রাউন্ডে ভিক্টোরিয়ার আলটোনা স্পোর্টস ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন এডওয়ার্ডস।
উইলিয়ামস ল্যান্ডিং এসসির বিপক্ষে ম্যাচটি স্বীকৃত কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ছিল না। ফলে ২০১৩ আইপিএলে ক্রিস গেইলের খেলা ১৭৫ রানের ইনিংসই টি-টোয়েন্টিতে এখনো সর্বোচ্চ।
এদিন ২৩ বলে ফিফটি করেন এডওয়ার্ডস। ১১তম ওভারে করেন সেঞ্চুরি, ১৭তম ওভারে ছুঁয়ে ফেলেন ১৫০। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ২২৯ রানে, আর দলের স্কোর দাঁড়ায় ৩০৪ রান।
রান তাড়া করতে নেমে উইলিয়ামস ল্যান্ডিং থামে ১১৮ রানে।

বড় জয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ যাত্রা শুরু করল ভারত। সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ২৩৪ রানে হারিয়েছেন আয়ুষ মাত্রেরা।
দুবাইয়ে আইসিসি একাডেমি মাঠে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪৩৪ রান সংগ্রহ করে ভারত। জবাবে ৭ উইকেটে ১৯৯ রানে থামে আমিরাতের ইনিংস।
এদিন দলীয় ৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। ৪ রান করে আউট হন আয়ুষ মাত্রে। এরপরের গল্প শুধুই বৈভব সূর্যবংশী-এর। মারমুখী ভঙ্গিতে চড়াও হতে থাকেন আরব আমিরাতের বোলারদের ওপর। ৩০ বলে তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। পরের ৫০ রানের মধ্যে সেঞ্চুরি করতে ১৪ বছর বয়সী বাঁহাতি ব্যাটার খেলেন মাত্র ২৬ বল।
৫৬ বলে শতক ছুঁয়ে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন সূর্যবংশী। ৮৪ বলে দেড়শো পেরিয়ে যান এই বাঁহাতি। ডাবল সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে শেষ পর্যন্ত ৯৫ বলে ১৭১ রানে থামেন।
সূর্যবংশীর ইনিংসে ছিল ৯টি চার, ১৪টি ছয়। যুব ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এক ইনিংসে আজ সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ড গড়েন সূর্যবংশী। ২০০৮ সালে ১২ ছয় মারা নামিবিয়ার ব্যাটার মাইকেল হিল-এর রেকর্ড ভাঙেন তিনি।
অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এটি। সূর্যবংশী ছাড়িয়ে গেছেন শুবমান গিল, শিখর ধাওয়ান এবং মায়াঙ্ক আগারওয়াল-এর রেকর্ড।
সূর্যবংশীর বিধ্বংসী ইনিংসের সঙ্গে আরও দুই ব্যাটারের ফিফ্টিতে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৪৩৩ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় ভারত।
জবাবে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে আমিরাত। ১৪তম ওভারে ৫৩ রানে ৬ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
ষষ্ঠ উইকেটে ৮৫ রানের জুটি গড়েন পৃথ্বী মাধু ও উদিশ সুরি। মাধু ৫০ রানে ফিরলেও ৭৮ রানে অপরাজিত ছিলেন সুরি। এই দুজনের নৈপুণ্যে অলআউট হওয়া থেকে রক্ষা পায় আমিরাত।

বয়স ৪৩ পেরিয়ে ৪৪ বছরের পথে। তারপরও পেশাদার ক্রিকেট দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন জেমস অ্যান্ডারসন। আগামী মৌসুমে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে পূর্ণকালীন অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন তিনি।
শৈশবের ক্লাব ল্যাঙ্কাশায়ারে অধিনায়কত্ব করবেন অ্যান্ডারসন। গত মৌসুমে দুইবার অন্তর্বর্তীকালীন অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। কিটন জেনিংসের পদত্যাগের পর এবার অ্যান্ডারসনকে স্থায়ীভাবে নেতৃত্বের দায়িত্ব দিয়েছে ক্লাবটি।
২০২৪ সালে ৭০৪ টেস্ট উইকেট নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান অ্যান্ডারসন। তবে নিজের শেকড় ল্যাঙ্কাশায়ারে খেলা থামাননি। ২০০২ সালে শুরু হওয়া তার ল্যাঙ্কাশায়ার ক্যারিয়ার এখনো চলছে। গত মৌসুমে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে ৬ ম্যাচে নিয়েছিলেন ১৭ উইকেট।
অধিনায়কত্ব পেয়ে উচ্ছ্বসিত অ্যান্ডারসন বলেন,
‘ল্যাঙ্কাশায়ারের অধিনায়ক হওয়া বিশাল সম্মানের। আমাদের দলে অভিজ্ঞতা ও তরুণদের দুর্দান্ত মিশেল আছে। লক্ষ্য একটাই- প্রথম ডিভিশনে ফেরার লড়াইয়ে সফল হওয়া।’
২০২৬ সালের ৩ এপ্রিল ল্যাঙ্কাশায়ার তাদের চ্যাম্পিয়নশিপ অভিযান শুরু করবে।

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মালয়েশিয়াকে ২৯৭ রানের রেকর্ড রান ব্যবধানে হারিয়েছে পাকিস্তান। দুবাইয়ে সামির মিনহাজ ও আহমেদ হুসাইন সেঞ্চুরিতে ৩ উইকেটে ৩৪৫ রান তোলে পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
৩৪৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে আলি রাজা ও মোহাম্মদ সায়্যামের তোপ দাগানো বোলিংয়ে মাত্র ৪৮ রানে গুটিয়ে যায় মালয়েশিয়া। যুব ওয়ানডে ইতিহাসে এটি তাদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের হার। রানের দিক থেকে পাকিস্তান পেল নিজেদের সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়, সব দল মিলিয়ে যুব ওয়ানডেতে সপ্তম।
মালয়েশিয়ার ব্যাটারদের ইনিংস ছিল ১১ ডিজিটের মোবাইল নম্বর! কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। তাঁদের ইনিংসগুলো—০, ৫, ৪, ৯, ৫, ৭, ৯, ২, ০, ১ ও ০। পাকিস্তানের দুই পেসার আলি রাজা ও মিনহাজ ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন। ১৯.৪ ওভারেই অলআউট হয়ে যায় মালয়েশিয়া।
সেভেনহি সেভেনস স্টেডিয়ামে টস জিতে পাকিস্তানকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান মালয়েশিয়ার অধিনায়ক দিয়াজ পাত্র। ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তানের শুরুটা ছিল হতাশার। দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ৪ রানে ফেরেন ওপেনার উসমান খান (১)।
পাকিস্তানের ওপর আধিপত্য দেখিয়ে দশম ওভারে টপ অর্ডারের আরেক ব্যাটার আলি হাসান বালুচকেও (১৪) ফেরান পেসার নাগিনেস্বরন সাথনাকুমারান। পাওয়ার-প্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে ৩০ রান তোলে পাকিস্তান। তবে তৃতীয় উইকেটে মিনহাজ ও আহমেদের ২৩৪ বলে ২৯৩ রান জুটিতে পাকিস্তান গড়ে ৩৪৫ রানের পাহাড়সম স্কোর।
১৪৮ বলে ১৭৭ রানে অপরাজিত থাকেন ওপেনার মিনহাজ। তাঁর ইনিংসে ছিল ১১টি চার ও ৮টি ছক্কা। ১১৪ বলে ১৩২ রান করেছেন আহমেদ। মেরেছেন ৮টি চার ও ২টি ছক্কা।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ড গড়লেন বাহরাইনের পেসার আলি দাউদ। ভুটানের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি। তাঁর ৭/১৯ বোলিং ফিগার টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে দ্বিতীয় সেরা।
শীর্ষে মালয়েশিয়ার সিয়াজরুল ইদ্রুস। ২০২৩ সালে চীনের বিপক্ষে ৮ রান দিয়ে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তৃতীয়তে হর্ষ ভরদ্বাজ। ২০২৪ সালে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ৩ রান খরচায় ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
নাইজেরিয়ার পিটার আহো ৫ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়ে তালিকায় চারে। ২০২১ সালে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েছিলেন তিনি।
পাঁচ নম্বরে ভারতের পেসার দীপক চাহার। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
দুবাইয়ে প্রথমে ব্যাট করে ১৬১ রান তোলে বাহরাইন। লক্ষ্য তাড়ায় নামার পর তৃতীয় ওভারেই আক্রমণে এসে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন ৩৩ বছর বয়সী এই পেসার। নিজের প্রথম ওভারেই নেন দুই উইকেট।
মাঝে ভুটান চতুর্থ উইকেটে ৬৭ রান যোগ করে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে। কিন্তু দাউদ আবারও আঘাত হানেন শেষ ভাগে। ১৬তম ওভারে নেন তিন উইকেট, পরের ওভারে নেন আরও দুই উইকেট।
দাউদের রেকর্ডে ভুটানকে ৩৫ রানে হারিয়েছে বাহরাইন।