২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০২ পিএম
লামিন ইয়ামাল যখন মাত্র ১৬ বছর বয়সে স্পেনের হয়ে ইউরো জিতলেন, তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল মজার সব ‘মেমে’। যেখানে বলা হত, ইয়ামাল ১৬ বছরে এটা করছেন, আর অন্য ১৬ বছর বয়সীরা তখন ফিফা গেমস খেলেই সময় পার করতে ব্যস্ত। তবে ১৪ বছর বয়সী বৈভব সুরিয়াভানসি যেহেতু উপমহাদেশের একজন, তাই আইপিএলে তার তাক লাগানো ব্যাটিং দেখে মেমেতে চলে আসছে এই বয়সে অন্য বালকদের মার্বেল খেলার গল্প। স্থান, কাল ভেদে এভাবেই একই চিত্রের উদাহারনও বদলে যায়। তবে মিল থাকে একটাই, এই অল্প বয়সেই এমন জেনারেশনাল ট্যালেন্টদের পরিণতবোধ।
এর আগে একটু বয়সের আলোচনায় যাওয়া যাক। উপমহাদেশের ক্রিকেটারেরদের বয়স নিয়ে বেশ আগে থেকেই থেকে যায় একরকম ধোঁয়াশা। কোনটা আসল বয়স, আর কোনটা যে স্রেফ সার্টিফিকেট বয়স, তা নিয়ে পুরো ক্যারিয়ারেই তাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। যেমন ধরুন সাবেক পাকিস্তান অলরাউন্ডার শহিদ আফ্রিদির কথা। ১৮-তে পা দেওয়ার আগেই সেই সময়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড তিনি গড়েন, সেই সময়েই তার আসল বয়স ২২ বা তার চেয়েও বেশি বলে জোর গুঞ্জন।
হাল সময়ের আফগান মহাতারকা রশিদ খান তো আরেক জলন্ত উদাহারন। অফিশিয়ালি সব জায়গায় তার বয়স ২৬ দেখালেও আসল বয়সটা যে প্রায় ৩০ ছুঁইছুঁই বা তার চেয়েও বেশি, সেটা তার ভিন্ন ভিন্ন সাক্ষাৎকারে দেওয়া কথা শুনলেও আন্দাজ করা যায়। এছাড়া উপমহাদেশের বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে নির্দিষ্ট বয়সের চেয়ে অনেক বেশি বয়সের খেলোয়াড়দের নামিয়ে দেওয়ার ঘটনাও হয় অহরহ।
আর ঠিক এই কারণেই ভারতের অমিত প্রতিভাবান ব্যাটার সুরিয়াভানসির অফিশিয়াল বয়স ১৪ বছর বলা হলেও তা নিয়ে বেশ আগে থেকেই চলছে আলোচনা। বিশেষ করে আইপিএলে অভিষেকের পর থেকে। মাত্র ১৪ বছর বয়সে আইপিলের মত তীব্র প্রতিদ্বন্দিতার একটি টুর্নামেন্টে রাজস্থান রয়্যালসের মত একটি দলে তিনি যখন জায়গা পেয়ে যান, অনেকেই ভ্রু কুঁচকেছিলেন তাতে বেশ। তবে যারা ভারতীয় ক্রিকেটের টুকটাক খোঁজ খবর রাখেন, তারা জানতেন, এমন কিছু হওয়াটাই বরং স্বাভাবিক।
নাহ, ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্স এখানে মূল বিষয় নয়। সেটা সুরিয়াভানসির ক্ষেত্রে এখনও খুব হাইলাইট করার মত জায়গা নয়। তবে যা আলোচ্য বিষয়, তা হল তিনি এই বয়সেই ভারতের অ-১৯ দলে খেলছেন। মাত্র ১২ বছর বয়সেই হয়ে গেছে রঞ্জি অভিষেক। গত জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেছেন মাত্র ৫৮ বলের সেঞ্চুরি, যা যুব টেস্টের ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম। এসব বলে দেয়, বিশাল স্কোর বা এসবের রেকর্ডের চেয়েও বালক বয়সেই সুরিয়াভানসি পাদপ্রদীপের আলোয় চলে এসেছেন তার পরিণতবোধ এবং আধুনিক ক্রিকেটের ব্যাপক পরিচিত শব্দ ‘ইন্টেন্ট’-এর জন্য। ফরম্যাট যাই হোক, প্রথম বল থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিংটা তিনি করতে জানেন ক্লাসিক্যাল ব্যাটিংয়ের সংজ্ঞা ধরে রেখেই।
আর সেই কারণেই গেল বছর আইপিলের মেগা নিলামের সময় মাত্র ১৩ বছর বয়সী সুরিয়াভানসির নাম আসতেই একটা কাড়াকাড়ি লেগে যায়। রীতিমত যুদ্ধ করে তাকে দলে নেয় রাজস্থান। দলটির মেন্টর ও সাবেক ভারত অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড় প্রতিভা চেনা এবং তা ঘষামাজা করার কাজটা করেন বেশ ভালো। তিনি নিলামের আগে সুরিয়াভনসিকে ট্রায়ালে দেখেই বলেছিলেন, এই ছেলের মাঝে অবিশ্বাস্য স্কিল আছে।
তবে রঞ্জিতে, অ-১৯ দলে এবং আইপিএলে খেলার জন্য সুরিয়াভানসির মানসিকভাবে ভীষণ পরিণতবোধ রেখেছে বড় একটা ভূমিকা। তার জন্মের আগে থেকে ক্রিকেট খেলা আন্তর্জাতিক মানের বোলারদের যেভাবে পেটাচ্ছেন প্রথম বল থেকেই, সেটিকে আপনি ‘ঝড়ে বক’ এর মধ্যে চাইলেও ফেলতে পারবেন না। কোন বলটিকে কোথায় মারতে হবে, কোন বোলারকে শুরুতেই আক্রমণ করে চাপে ফেলে দিতে হবে, এই বিষয়গুলো ব্যাটাররা রপ্ত করেন খেলতে খেলতে, অভিজ্ঞতায় রিদ্ধ হয়ে।
তবে আপনি যদি হুট করে এই আইপিএলে সুরিয়াভানসির ব্যাটিং দেখেন, বলতে বাধ্য হবেন এই ছেলে নিশ্চয় কয়েক বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে ফেলেছে। মাথাটা ঠিক সেভাবেই যে কাজ করে তার। সাবেক ভারত ওপেনার ও ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জারেকার যেমন বলেছেন,
“বয়সটা মাত্র ১৪ হলেও সুরিয়াভানসি চিন্তা করে একজন ৩০ বছর বয়সীর মত।”
গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে ম্যাচের আগেই তাই ভারতীয় ক্রিকেটে সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছিলেন সুরিয়াভানসি। আইপিএলে নিজের অভিষেক ম্যাচের প্রথম বলেই যে হাঁকিয়েছেন বিশাল এক ছক্কা। তবে আপনি যত বড় প্রতিভাবানই হন না কেন, মাত্র ১৪ বছর বয়সে যখন আপনার মার্বেল বা ইয়ামালদের মত ফিফা গেমস খেলার কথা, তখন আপনাকে আইপিএলের মত অবিশ্বাস্য কঠিন মঞ্চে নামিয়ে দেওয়া যায়… এটা একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি তখনই ভাবতে পারে, যখন আপনি প্রমাণ করতে পারেন অন্যদের চেয়ে নিজের বয়সের তুলনায় ঢের এগিয়ে থাকার সামর্থ্য।
সুরিয়াভানসি নিশ্চয় নেটে এবং অনুশীলনেও রাজস্থানকে এটা বোঝাতে পেরেছিলেন যে, তার ওপর বাজিটা ধরা যায়। প্রথম কয়েক ম্যাচে উড়ন্ত সূচনা পেলেও বড় ইনিংস অবশ্য হচ্ছিল না। সাবেক ভারত ওপেনার বীরেন্দর শেবাগ তাই আশঙ্কা করে বলেও ফেলেছিলেন, এক বছরের ঝলক দেখিয়ে অতীতের অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের মত না আবার হারিয়ে যান সুরিয়াভানসি।
তবে তার মত প্রতিভারা তো প্রতিদিন আসেন না। এই কারণেই অন্যদের সাথে সুরিয়াভানসিদের মেলানো যায় না। শেবাগকে ভুল প্রমাণ করে তাই গুজরাটের বিপক্ষে রান তাড়ায় খেললেন বড় ইনিংস। সেটাও টর্নেডো গতিতে। ৭ চার ও ১১ ছক্কায় মাত্র ৩৮ বলে ১০১ রান করার পথে হয়েছেন আইপিলের ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান। আর বয়সের হিসেবে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির ইতিহাসের কনিষ্ঠ সেঞ্চুরি করা ব্যাটারের নাম এখন সুরিয়াভানসি। পুরো ইনিংসে যে দাপট দেখিয়েছেন, ব্যাট সুইং করেছেন, স্লগ করেছেন, নিখুঁত টাইমিং দেখিয়েছেন, তা অতিমানবীয় কিছুই ছিল।
হ্যাঁ, এই ইনিংস খেলার পথে বেশ কিছু শটে ভাগ্যের সহায়তাও তিনি পেয়েছেন। অল্পের জন্য ক্যাচ আউট হতে পারতেন কয়েকবারই। তবে এটাই তো ক্রিকেট। আর ভাগ্য তো সাহসীদের পক্ষেই থাকে। আর সুরিয়াভানসি সেই সাহসের শিক্ষাটা পেয়েছেন পরিবার থেকেই। ভারতীয় মিডিয়ার খবরে যা এসেছে, তাতে জানা যায় তার বাবা একজন কৃষক ও পার্টটাইম সাংবাদিক ছিলেন।
তবে ছেলের ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসাকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য তিনি কাজ ছেড়ে দিয়েছেন, যা সুরিয়াভানসি নিজেই বলেছেন। নিয়ম করে ছেলেকে অনুশীলন করতে নিয়ে যাওয়া, অপেক্ষা করে বসে থাকার কাজটা তিনি করে গেছেন। বিহারের মত জায়গার একটা দরিদ্র পরিবারের জন্য এটা অনেক বড় একটা ঝুঁকি। তবে সন্তানের মঙ্গলের জন্য বাবারা তো হরমেশাই এমন ত্যাগ স্বীকার করেই থাকেন…
অবশ্য তিনি সেই সাহসটা করতে পেরেছিলেন বড় ছেলের জন্য, যিনি ভাইয়ের স্বপ্নকে লালন করে দায়িত্ব নেন পরিবারের। নেমে যান আয় উপার্জনে। বাবা-ভাইয়ের এমন অবদানে আড়াল করার সুযোগ নেই সুরিয়াভানসির মায়ের গল্প। দিনের পর দিন তিনি মাত্র তিন ঘণ্টা করে ঘুমিয়েছেন, রাত ২টায় যখন সবাই ঘুমে কাতর, তখন উঠে ছেলের জন্য খাবার প্রস্তুত করতে নেমে গেছেন, যাতে ভোরে ছেলেটা বের হওয়ার আগে সময় মত খাবারটা টেবিলে পায়…
সুরিয়াভানসির মা-বাবা, ভাই তার জন্য এসব যখন করেছেন, তখন তাদের কল্পনাতে ছিল না আজকের দিনের চিত্রটা। হয়ত ছিল। তবে সেখানে যে ছিল স্বপ্ন বাস্তবে রুপ হওয়ার চিন্তাও। এসবের পরও তারা একটি বালকের স্বপ্নকে পরিবার হিসেবে ধারণ করেছেন, সাহস করেছেন একসাথে এগিয়ে যাওয়ার।
কাছ থেকে দেখার কারণে সেই সাহসটা সুরিয়াভানসির মধ্যেও অনুদিত হয়ে গেছে। ফলে, দুনিয়ার বাঘা বাঘা বোলারদের বিপক্ষে মাঠ ভর্তি দর্শকের চাপেও তিনি ভেঙে পড়েন না। চোখে চোখ রেখে তাদের উল্টো আক্রমণ করেন, চার-ছক্কায় ওড়ান বারবার। নামও তাই জুটে গেছে 'বেবি বস'! ভবিষ্যৎ তাকে কোথায় নিয়ে যায়, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এই আইপিএলে সুরিয়াভানসি দেখিয়ে দিয়েছেন, স্রেফ বয়সের দাঁড়িপাল্লায় যদি মাপতে যান, তাহলে বড্ড ভুলই করবেন বোলাররা। সেটা আজকেও, আগামীতেও…
No posts available.
৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৫ পিএম

রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে ‘ভারতের রোনালদো ও মেসি’ বলে অভিহিত করেছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক রশিদ লতিফ। সম্প্রতি ইন্ডো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিস (আইএনএসকে) দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন লতিফ। তিনি মনে করেন, এ দুজন এমন খেলোয়াড়, যারা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।
রোহিত-কোহলি অবসর নিয়েছেন টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে। অক্টোবরে সাত মাসের বিরতির পর অস্ট্রেলরা প্রত্যাবর্তন করেন। প্রথম দুই ম্যাচে প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে না পারলেও তৃতীয় ওয়ানডেতে দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তারা। রোহিত অপরাজিত ১২১ রান করেন, আর কোহলি ৭৪ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয় এনে দেন।
রোহিত-কোহলিকে নিয়ে রশিদ বলেন
'দুজন এমন খেলোয়াড়, যারা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। ক্লাস কখনও হারায় না। রোনালদো ও মেসি খেলছেন, আর এই দুইজন ভারতের রোনালদো ও মেসি।'
২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে কোহলি ও রোহিতের দলে থাকার বিষয় এখনো চূড়ান্ত নয়। তবে ৫৭ বছর বয়সী লতিফ মনে করেন, অন্তত একজন সিনিয়র ব্যাটার দলে থাকা ভারতের জন্য লাভজনক,
'এখনও এক বছর বাকি, ২০২৬ সাল পর্যন্ত। দেখতে হবে তারা কতটি ওয়ানডে খেলবে। তবে সিনিয়র খেলোয়াড় অবশ্যই থাকা উচিত। ওয়ানডে তো দীর্ঘ ফরম্যাট, টি-টোয়েন্টির মতো নয়। দুজন না হলেও অন্তত একজনকে দলে রাখা দরকার।'

২১ নভেম্বর পার্থে শুরু হতে যাচ্ছে মর্যাদার অ্যাশেজ সিরিজ। প্রথম ম্যাচের জন্য আজ ১৫ জনের দল ঘোষণা করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। এ দল খেলোয়াড়দের বয়স নিয়ে বেশ সমালোচনা উঠেছে। অজিদের দলে কেবল একজন খেলোয়াড়ের বয়স ৩০ বছরের নিচে।
দলে প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েছেন ৩১ বছর বয়সি জ্যাক ওয়েদারাল্ড। পেস আক্রমণে মিচেল স্টার্কের বয়স ৩৫, জশ হ্যাজেলউড ৩৪ ও স্কট বোল্যান্ড ৩৬। ব্যাকআপ পেসার হিসেবে রয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী শন অ্যাবট এবং ৩১ বছর বয়সি ব্রেন্ডন ডগেট। স্পেশালিস্ট স্পিনার নাথান লায়নের বয়স ৩৭।
ব্যাটিং বিভাগে উসমান খাওয়াজার বয়স ৩৮, ট্রাভিস হেড ও মার্নাস লাবুশেন ৩১, স্টিভেন স্মিথের বয়স ৩৬। দুই উইকেটকিপার জশ ইংলিস ও অ্যালেক্স ক্যারির বয়স যথাক্রমে ৩০ ও ৩৪ বছর। অলরাউন্ডার বাউ ওয়েবস্টারের বয়সও ৩১। দলের একমাত্র ৩০ বছরের নিচের খেলোয়াড় ক্যামেরন গ্রিন। এই অলরাউন্ডারের বয়স ২৬ বছর।
এ দল নিয়েই সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ সমালোচনা করেছেন। তার মতে,
“প্রধান নির্বাচক বেইলির তরুণদের সুযোগ দেওয়ার সাহস নেই।”
স্টিভ ওয়াহর মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি। তিনি বলেন,
“আমরা জানি দলের বয়স কাঠামো কেমন। কিন্তু শুধু বয়সের কারণে কি নাথান লায়ন বা মিচেল স্টার্ককে বাদ দেব? যারা ভালো খেলছে, তারা নির্বাচনের যোগ্য। অভিজ্ঞতাকেও সম্মান দেওয়া উচিত।”
ঘোষিত দলে জায়গা হয়নি তরুণ ওপেনার স্যাম কনস্টাসের। ২০ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার গত এক বছরে দ্বিতীয়বারের মতো দল থেকে বাদ পড়েছেন। স্যামের বাদ পড়া নিয়ে বেইলি বলেন, “
স্যামির জন্য খারাপ লাগছে। এখন সে যদি সামান্য কিছু করে, সেটাও শিরোনাম হয়ে যায়।”
বর্তমান অ্যাশেজের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ড গত ১০টি অ্যাশেজ সিরিজের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে জিতেছে মাত্র একবার, ২০১০-১১ মৌসুমে। পাঁচ টেস্টের সিরিজ শেষ হবে ৮ জানুয়ারি।

আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ম্যাচের টেস্ট। ঘরের মাঠে লাল বলের ক্রিকেটের এই সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করেছে ভারত। চোট কাটিয়ে ভারতের টেস্ট দলে ফিরছেন উইকেটকিপার ব্যাটার ঋষভ পন্ত।
আজ ভারতের নির্বাচক কমিটির বৈঠকে পন্তের ফেরার সিদ্ধান্ত হয়। গত সপ্তাহে বেঙ্গালুরুতে বিসিসিআই সেন্টার অব এক্সিলেন্সে দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের বিপক্ষে প্রথম চার দিনের ম্যাচে ভারতের দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন পান্ত। ২৭৫ রানের লক্ষ্যে তাড়া করতে গিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৯০ রান করেছেন তিনি। এন জাগাদিসানের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন পান্ত।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জুলাইয়ে ম্যানচেস্টার টেস্টে পায়ের চোট পান পন্ত। এই চোটে সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজেও ছিলেন না তিনি।
তবে রঞ্জি ট্রফির প্রথম দুই ম্যাচে দারুণ বল করেও নির্বাচকদের মন জিততে পারেননি মোহাম্মদ শামি। উত্তরাখণ্ডের বিপক্ষে সাত উইকেট নেওয়ার পর গুজরাটের বিপক্ষে আট উইকেট নেন এই পেসার।
ভারতের টেস্ট অধিনায়ক শুবমান গিল, জসপ্রীত বুমরাহ, নিতিশ কুমার রেড্ডি, অক্ষর প্যাটেল ও ওয়াশিংটন সুন্দর এখন অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছেন। ৮ নভেম্বর পাঁচ ম্যাচের এই সিরিজের পর টেস্ট দলে যোগ দেবেন তারা। এছাড়া গত অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজে জয়ী দলের প্রসিদ্ধ কৃষ্ণার জয়গা নিয়েছেন আকাশ দীপ।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫-২০২৭ এর পয়েন্ট টেবিলে ভারত তৃতীয় স্থানে আছে ৬১.৯০ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকা আছে পঞ্চম স্থানে, ৫০ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে। প্রোটিয়ারা সবশেষ পাকিস্তানে সিরিজ ড্র করেছিল ১-১ ব্যবধানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভারতের প্রথম টেস্টটি হবে কলকাতায় ১৪ নভেম্বর। গুয়াহাটিতে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে ২২ নভেম্বর থেকে। এবারই প্রথমবারের মতো টেস্ট আয়োজন করতে যাচ্ছে গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া স্টেডিয়াম। সফরে দুটি টেস্ট ছাড়াও তিন ওয়ানডে ও পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দুই দল।
ভারতের টেস্ট স্কোয়াড :
শুভমন গিল (অধিনায়ক), ঋষভ পন্ত (সহ-অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), যশস্বী জয়সওয়াল, কে এল রাহুল, সাই সুদর্শন, দেবদত্ত পাডিক্কল, ধ্রুব জুরেল, রবীন্দ্র জাদেজা, ওয়াশিংটন সুন্দর, জাসপ্রিত বুমরাহ, অক্ষর প্যাটেল, নিতিশ কুমার রেড্ডি, মোহাম্মদ সিরাজ, কুলদীপ যাদব, আকাশ দীপ।

প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ দিয়ে আসন্ন ঘরোয়া ক্লাব ক্রিকেট মৌসুম ২০২৫-২৬ শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিশ (সিসিডিএম) ক'দিন আগেই। ৫ এবং ৬ নভেম্বর প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের দলবদল এবং ১৮ নভেম্বর থেকে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ শুরুর ঘোষণা দিয়েছে সিসিডিএম। গত মৌসুমের চেয়ে ক্লাব অনুদান ৫০% বৃদ্ধির ঘোষণাও দিয়েছে সিসিডিএম। ৯ লাখ টাকা থেকে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে তাদের অ্যাপিয়ারেন্স মানি। তবে বর্ধিত অনুদানেও বিরোধীরা ক্রিকেটারদের আয়-রুজির পথ রুদ্ধ করতে লিগ বর্জনের ডাক দিয়েছে। প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের দিণক্ষণ ঘোষণা করে বিরোধীতার মুখে পড়েছে সিসিডিএম।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ক্রিকেট লিগ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ক্লাব ক্রিকেট অর্গানাইজার্স এসোসিয়েশনের একটি অংশ। বিসিবির নির্বাচনে অনিয়ম, বিসিবি সভাপতির স্বেচ্ছাচরিতার অভিযোগ এনে গত ৩ নভেম্বর বিসিবির পরিচালনা পরিষদের সভার প্রাক্কালে এই সংগঠক তাদের সেই সিদ্ধান্ত পুনরায় জানিয়ে দিয়েছে বিসিবিকে। বিসিবির পরিচালনা পরিষদ ভেঙ্গে না দিলে ঢাকা ক্রিকেট লিগে অংশ নিবে না, বিসিবির সিইও-কে দেয়া ৪২টি ক্লাবের৪৩ জন কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত চিঠিতে তা উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্লাব ক্রিকেট অর্গানাইজার্স এসোসিয়েশনের ওই চিঠিতে বিসিবি নমনীয় হয়নি। বরং কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে। লিগে অংশ না নিলে বাইলজ অনুযায়ী অবনমন হয়ে যাবে, বিসিবির পরিচালনা পরিষদের সভায় এই অবস্থান নিয়েছে।
বিরোধীতার মুখে বুধবার (৬ নভেম্বর) প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের দলবদলের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিশ (সিসিডিএম)। বিসিবির পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন বর্জন করলেও লিগ বর্জনকারীদের পক্ষে অবস্থান নেননি তামিম ইকবাল। যে ক্লাব থেকে বিসিবির কাউন্সিলরশিপ পেয়েছেন তামিম, সেই ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাব দলবদলের প্রথম দিন ৭ ক্রিকেটারকে সাইন করিয়েছে। দলবদলের প্রথম দিন ৯ টি ক্লাবের ৪৭ জন ক্রিকেটার নতুন ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন। তার মধ্যে বিকেএসপিতে ৭ জন, ব্লুজ ক্রিকেটার্সে ৪ জন, বাংলাদেশ পুলিশ ক্রিকেট ক্লাবে ১ জন, তামিমের ক্লাব ওল্ড ডিওএইচএস-এ ৭ জন, প্রাইম দোলেশ্বরে ২ জন, শেখ জামাল ক্রিকেটার্সে ১ জন, খালেদ মাহমুদ সুজনের পরিচালনায় শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবে ১০ জন এবং উত্তরা ক্রিকেট ক্লাবে ১৩ ক্রিকেটার নাম লিখিয়েছেন।
৬ নভেম্বর দলবদলে অংশ নিবে অবশিষ্ট ক্লাবগুলো, এমন আশায় বুক বেধেছেন সিসিডিএম চেয়ারম্যান আদনান রহমান দীপন। প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের দলবদলে অংশ নিবে না বলে যে ৮টি ক্লাব এখন পর্যন্ত তাদের সিদ্ধান্তে অনঢ়, সেই ৮টি ক্লাবের ২১ ক্রিকেটার টোকেন তুলেছেন বুধবার। ওই দলগুলো অবস্থান পরিবর্তন না করলে এই ২১ ক্রিকেটার অন্য দলগুলোতে যোগ দিবেন।
ইতোমধ্যে প্রথম বিভাগের ২০টি ক্লাবের মধ্যে ১০টি অনুদানের চেক ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে বুঝে নিয়েছে। বাকিরাও চেকগুলো নিয়ে লিগে অংশ নিবে বলে বলে আশা প্রকাশ করছেন সিসিডিএম চেয়ারম্যান।

আয়ারল্যান্ড সিরিজের পর জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মোহাম্মদ সালাহউদ্দীন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। অবশ্য এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি নয় বিসিবি। বরং অভ্যন্তরীণভাবে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত জানাবে দেশীয় ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।
বিসিবি আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সালাহউদ্দীনের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ফলে এক বছর পূর্তির আগেই জাতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানছেন এই সিনিয়র সহকারী কোচ।
বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম বলেছেন,
“তিনি (সালাহউদ্দীন) আয়ারল্যান্ড সিরিজের পর পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা অভ্যন্তরীণভাবে আলোচনা করব। এ বিষয়ে এখন আর কোনো মন্তব্য করব না।”
এর আগে আজ সকালে ক্রিকেটভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের প্রতিবেদনে সালাহউদ্দীনের পদত্যাগের খবর জানা যায়। যদিও এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কোনো মন্তব্য করেননি। তবে ক্রিকবাজকে তিনি নিশ্চিত করেছেন চাকরি ছাড়ার বিষয়টি—“হ্যাঁ! আমি পদত্যাগ করছি।”
গত বছরের নভেম্বরে দেশের বরেণ্য কোচ সালাহউদ্দীনকে জাতীয় দলে যুক্ত করেছিল বিসিবি। সিনিয়র সহকারী কোচ হিসেবে জাতীয় দলের সঙ্গে তার চুক্তি ছিল ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত। তবে তার অনেক আগেই শেষ হতে চলেছে সেই অধ্যায়।
ডেভিড হেম্পকে সরিয়ে দেওয়ার পর থেকে জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন সালাহউদ্দীন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দলের ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
এরই মধ্যে আয়ারল্যান্ড সিরিজের জন্য বিশেষজ্ঞ ব্যাটিং কোচ হিসেবে মোহাম্মদ আশরাফুলকে নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি। দুই টেস্ট ও তিন টি-টোয়েন্টি খেলতে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে আসবে আয়ারল্যান্ড। সিলেটে প্রথম টেস্ট শুরু হবে ১১ নভেম্বর। এরপর ঢাকায় ১৯ তারিখ থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। পরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে চট্টগ্রাম যাবে দুই দল। ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে ২৭ ও ২৯ নভেম্বর এবং ২ ডিসেম্বর।