
অক্টোবর সদ্য বিদায় নিয়েছে। নভেম্বরের শুরু—শীতের নিঃশ্বাসে জমে গেছে শহর। মাসের প্রথম সপ্তাহ। ছেলেটার ঠিক মনে নেই দিন-তারিখ, এমনকি বারও। শুধু এটুকু জানে—সেদিনের রাতটা ছিল হিমশীতল, নিঃশব্দ, জমে যাওয়া এক শহরের বুকের মতো নিস্তব্ধ।
পায়রা, সীগাল, রবিন—সবাই ঘুমিয়ে গভীর শীতনিদ্রায়। কাতালানদের এই নগর এখন বরফে মোড়া স্বপ্নপুরী।
হঠাৎ একটুখানি শব্দ—একটা ছোট্ট ইঁদুরের পায়চারি। ছেলেটার ঘুম ভাঙে তাতে। অন্ধকার ঘরের কোণে তাকিয়ে ভাবতে থাকে—ও ইঁদুরটাও কি তার মতোই বাঁচার লড়াইয়ে, খাবারের খোঁজে, টিকে থাকার সংগ্রামে? ভাবতে ভাবতে কেমন যেন ভারী হয়ে ওঠে বুকটা।
রাতের এই নিস্তব্ধতায় জেগে ওঠা মানেই এক অনিবার্য বিপদ—চিন্তা। চিন্তার দল মিছিল নামায় ধ্যানের রাজপথে। কৈফিয়ত চায়—আজ কোথায় দাঁড়িয়ে তুমি? কেন এসেছে এত দূরে? কোথায় হারিয়েছে পুরোনো পরিচিত মুখগুলো? অতীত আর বর্তমানের হিসাব মিলাতে মিলাতে হারিয়ে যায় সে এক অদ্ভুত মোহে।
জীবনের এ ধারা-ওধারা ভাবতে ছেলেটার চোখ পড়ে দূরের পাইন গাছে। পাতায় জমেছে বরফ, ভারে নুয়ে পড়েছে শাখা। একসময় যে পাতাগুলো ছিল চিরসবুজ, আজ তারা হারিয়েছে প্রাকৃতিক রূপ। ছেলেটা ভাবে—তার জীবনও কি এমনই হয়ে গেছে? বরফে ঢেকে যাওয়া, রঙহীন, পরিচয়হীন এক অস্তিত্ব?
নতুন দেশ। অচেনা ভাষা। অপরিচিত মানুষ। দিনের শেষে একাকীত্ব তাকে চেপে ধরে। সুযোগ পেলেই সে আড়াল খোঁজে—ওয়াশরুমে গিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে কাঁদে। চোখের জল যেন ভাষাহীন যন্ত্রণা। রাতের ঘুমও আজকাল বড় অপরিচিত।
আর আজ—যে ইঁদুরটা হঠাৎ ঘুম ভাঙিয়ে দিল, যে পাইন পাতায় বরফ জমেছে—তারা যেন টাইম ট্রাভেলের দরজা খুলে দিল তার সামনে।
শান্ত ছবির মতো রোজারিও শহরটা কেমন আছে? মা সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিটিনি এখনও তার জন্য প্রিয় ‘এমপানাদা’ নিয়ে অপেক্ষা করেন। কেমন আছে আন্তোনেলা রোকুজ্জো। ড্রিভলিং কিংবা গোলের পর উচ্ছ্বাসে হারিয়ে যাওয়া মানুষটাকে যে তার ভীষণ মনে পড়ে।
চিন্তার জগত অস্তমিত হতেই চোখের পাতাজোড়া এক হয়। শুরু হয় নতুন ভোর, নতুন জীবন। তিনি জানেন, যে কাতালুনিয়া শহরে তার আগমন, সেখানে ফুটবল শুধু খেলা নয়, জীবনযাপন। বার্সেলোনার লা মাসিয়া নামের এক জাদুঘরে ঠাঁই হয়েছে তার, যেখানে স্বপ্নকে বাস্তবে গড়া হয়।
সেই স্বপ্নের পথে পা বাড়িয়ে, লিওনেল মেসি হয়ে ওঠেন বিশ্ব সমাধৃত। লা মাসিয়া থেকে মূল দলে, লা লিগা, চ্যাম্পিয়নস লিগ—আরও কতশত শিরোপা ট্রফি ধরা দিয়েছে তার হাতে। আর্জেন্টিনার জার্সিতেও হয়েছে দুঃখ মোচন। ২০০৬ থেকে ২০১৮-এ সময়ে চারটি বিশ্বকাপে ব্যর্থ হওয়ার পর ২০২২ সালে কাতারে বিশ্বকাপ ট্রফিতে চুমু আঁকেন মেসি। ৮ বার ব্যালন ডি’অর, ক্লাব ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে ৮৭২ গোল—সবকিছু মিলিয়ে লিওনেল মেসি যেন এক জীবন্ত কিংবদন্তি, ফুটবলের দূত।
মেসির মতো যাপিত জীবন বয়ে বেড়ানো একজন আছেন ক্রিকেটে। যার গল্পটা একই রকম না হলেও একপ্রান্তে গিয়ে ঠেকেছেন দু’জন। তিনি ভারত নারী দলের ব্যাটসম্যান জেমিমাহ রদ্রিগেজ। পরিশ্রমের বিপরীতে হতাশা-গ্লানি হয়ে ওঠেছিল সম্ভল। কান্নায় ভিজে যেত তার বালিশ। একেকটি রাত হয়ে ওঠেছিল হাজার রজনীর সমান। সেই জেমিমাহ সফল হয়েছেন। সৃষ্টিকর্তা যেভাবে মেসিকে ভাঙ্গা-গড়া থেকে উঠিয়ে সম্মান দিয়েছেন, ভারতীয় ব্যাটারও তাঁরই দেখানো পথে।
বৃহস্পতিবার নাভি মুম্বাইয়ে অনিন্দ্য সুন্দর ইনিংস উপহার দিয়েছেন জেমিমাহ। অপরাজিত ১২৭ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। পুরো বিশ্বকাপে জোয়ার-ভাটার মধ্য দিয়ে থাকা জেমিমাহ বুঝিয়ে দিয়েছেন, পরিশ্রম, একাগ্রতা, নিবেদন, সততা থাকলে সৃষ্টিকর্তা একদিন মুখ তুলে তাকাবেন, বিজয় মালা পরাবেন।
সেটি হয়েছে গতকাল। ২২ গজে সুনিপুণ দক্ষতায় তুলির আঁচড় চালিয়েছেন। একটু দ্রুতই চলেছে তাঁর তুলিটি। তবে জেমিমাহকে চিনতে মোটেও ভুল করেননি দর্শকরা। তিনি মাঠে নামলেন, খেললেন, হাসলেন, ভুল করলেন। আবার জেগে উঠলেন। চক্রের মতো ঘুরতে থাকলেন। শেষপর্যন্ত শিরদাঁড়া উচু করে মাঠ ছাড়লেন।
জেমিমাহর এই গল্পের আদোপ্রান্তে রয়েছে নিরবতা, রয়েছে দুঃখ, গ্লানি, হতাশা ও বাদ পড়ার বিচ্ছিরি কাহিনি। তবে তিনি দমে যাননি। নিরবে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন মেসির মতো।
মেসির যেখানে শেষ, জেমিমাহর সেখানে শুরু:
আর্জেন্টাইন মহাতারকা ক্যারিয়ারের অন্তিমলগ্নে। বয়স ৩৮। হয়তো ২০২৬ বিশ্বকাপের পর বুট জোড়া তুলে রাখবেন। সেখানে ভারতের নারী দলের ব্যাটসম্যান জেমিমাহর কেবল শুরু। বয়স সবে ২৫। ক্যারিয়ারের দাপুটে সকাল। ভারতকে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালে তুলেছেন মিডল-অর্ডার এই ব্যাটসম্যান। বৃহস্পতিবার তাঁর ইনিংসে ফাইনালে ভারত।
এদিন রদ্রিগেজ তিনে ব্যাটিংয়ে নেমে টিকে থাকেন শেষ পর্যন্ত। বার দুয়েক বিপদে পড়লেও শান্ত-ক্ষুরদার মেধায় সবই সামাল দেন। দলকে নিয়ে যান জয় বন্দরে। তার ব্যাটে ভর করে ছেলে-মেয়েদের ওয়ানডের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয় পেয়েছে ভারত। ওয়ানডেতে ৩৩৮ রান তাড়া করে জয় তোলার কথা বিশ্বের কেউ যেখানে কল্পনা করতে পারতো না, সেটা করে দেখান জেমিমাহ।
নীরব প্রার্থনা:
পুরো পৃথিবী একদিকে রেখে স্পেনে পাড়ি জমিয়েছিলেন মেসি। শারীরিক অসুস্থতা—গ্রোথ হরমোনের ঘাটতি—যা আর্জেন্টাইন সুপারস্টারকে চ্যালেঞ্জে ফেলেছিল। সেখান থেকে উৎরাতে প্রতিরাতে ঈশ্বরের শরনাপন্ন হতেন মেসি। কান্নাভেজা কন্ঠে ফরিয়াদ করতেন—“ঈশ্বর, সব সহজ করে দাও।” চুপ থেকে চেষ্টা চালিয়ে যেতেন। একা থাকা, সবার চেয়ে আলাদা থাকা ছেলেটা একদিন মন জয় করলেন বিশ্বের।
জেমিমাহর জীবনে যেমনটা হয়েছে, তার কণ্ঠে—
‘আমি প্রতিদিন কেঁদেছি, উদ্বেগে ভুগেছি। প্রতিদিন নিজেকে সামলাতে হয়েছে, ঈশ্বরই আমাকে এগিয়ে নিয়েছেন। গত বছর আমাকে বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তখনো আমি ফর্মে ছিলাম, কিন্তু নানা কিছু ঘটছিল। আমার চারপাশে অসাধারণ মানুষ ছিল, যারা আমাকে সহায়তা করেছে।’
স্থির থাকো, ঈশ্বর তোমাকে সাহায্য করবেন:
লিওনেল মেসি যেমন বলেছিলেন, ‘সফলতা সহজে আসে না। প্রতিদিন ছোট ছোট কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই বড় লক্ষ্য অর্জন করা যায়।’ যে আর্জেন্টাইন জাদুকর হেঁটেছিলেন, তা ছিল কন্টকময়। পা ফসকালেই ছিল হারিয়ে যাওয়ার ভয়। জীবনের প্রতিটি সিঁড়ি তিনি ডিঙিয়েছেন সতর্কতার সঙ্গে। ঈশ্বরও তার সঙ্গে ছিলেন।
গতকাল নিজের ইনিংসের সময় বাইবেলের একটি বাণী মনে করে সাহস পেয়েছেন জেমিমাহ।
‘শেষের দিকে আমি শুধু একটি বাণী বলছিলাম—“স্থির থাকো, ঈশ্বর তোমাকে সাহায্য করবেন।” আমি শান্ত থাকার চেষ্টা করছিলাম।’
জেমিমাহ স্থির থেকেছেন। আঙুলের কড়ায় গুণে খারাপ সময় পার করেছেন। কখনও বাসে-ট্রামে-ট্রেনে, গভীর রাতে ধ্যানে বসেছেন। একাগ্রতা তাঁকে সাফল্য দিয়েছে।
পরিবার, প্রিয়জন, আস্থাভাজন:
ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির পর নভি মুম্বাইয়ের ভিআইপি স্ট্যান্ডে বসে থাকা পরিবারের দিকে একটি উড়ন্ত চুম্বন ছুঁড়ে বাবা এবং কোচ ইভানকে ধন্যবাদ জানাতে দেখা যায় জেমিমাহকে। যারা তাঁর পথপ্রদর্শক ও শক্তি। জেমিমাহ বলেছিলেন,
‘আমি আমার মা, বাবা, কোচ এবং আমার উপর বিশ্বাসকারী প্রত্যেক ব্যক্তিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। গত মাসে এটি সত্যিই কঠিন ছিল, এটি একটি স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে।’
লিওনেল মেসির জীবন বদলে দেওয়ার পেছনে পরিবারের ভূমিকা ছিল অনন্য। তড়িৎ এক সিদ্ধান্তে বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তি। বাবা জর্জ মেসি, মা কুচ্চিটিনি থেকে শুরু করে স্ত্রী রোকুজ্জো—সবাই তাঁর জীবনের অবিচ্ছেদ অংশ। তিনি প্রায়শঃ বলেন, পরিবার ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব হতো না।
পারিবারিক পাশে থাকায় মেসি ফুটবল বিশ্বের আইডল, জেমিমাহ হারিয়ে যাওয়ার পর নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন।
মেসির স্বপ্ন পূরণ, জেমিমাহর অপেক্ষা:
চারবার স্বপ্নভঙ্গ। অপেক্ষা যে কত দীর্ঘ তা লিওনেল মেসির চেয়ে বেশি কে জানে। একটি সময় মনে হচ্ছিল, চাঁদের নিখুঁত দাগ হারিয়েছিল মেসির জীবনে—বিশ্বকাপ না পাওয়া।
সেটি পূরণ হয়েছে ২০২২ সালে। ফ্রান্সকে হারিয়ে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ ট্রফি উপহার দেন মেসি। স্বপ্ন তাঁর পূরণ হয়েছে। এক জীবনে নিশ্চয়ই তার আর কিছু পাওয়ার থাকার কথা নয়।
জেমিমাহও এমন একটি স্বপ্ন উপাখ্যানের অপেক্ষায়। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপে ভারত। আগের দু’বার কূলে গিয়ে ডুবে গিয়েছিল। এবার দারুণ ছন্দে থাকা দলটির প্রতিপক্ষ চোকার্স দক্ষিণ আফ্রিকা। দেখার বিষয়, স্বপ্নের পথে নিজেকে কতটা জলাঞ্জলি দিতে পারেন জেমিমাহ। তবেই দুইয়ে দুইয়ে চার মেলানো যাবে, সার্থক হবে মেসির পথ ধরে হাঁটা।
No posts available.

দল হারুক কিংবা জিতুক—মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর কাজটাই করে যান একান্তচিত্তে। গতকাল ইন্টারন্যাশনাল টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম ম্যাচে জয় পায়নি দুবাই ক্যাপিটালস। ঠিকই বল হাতে জাদু দেখিয়েছেন বাংলাদেশের কাটার মাস্টার।
মোস্তাফিজ ৪ ওভারে নিয়েছেন ২টি উইকেট। ক্যাচ ধরেছেন ২টি। আজও মোস্তাফিজ বল হাতে দ্যুতি ছড়িয়েছেন। ৩ ওভার বোলিং করে ২২ রান খরচায় নিয়েছেন ২ উইকেট। ভাগ্য ভালো, আজ তার দল আবু ধাবি নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে বড় জয় পেয়েছে।
দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে ১৮৬ রান তোলে দাসুন সানাকার দল। রভম্যান পাওয়েলের অপরাজিত ৫২ বলে ৯৬ রানের ইনিংসে ভর করে শক্তিশালী পুঁজি পায় দল।
লক্ষ্য পূরণে নেমে ডেভিড উইলি ও মোস্তাফিজুর রহমানের তোপে পড়ে নাইট রাইডার্সের ব্যাটাররা। একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে ১০৩ রানে থামিয়ে দেয় জেসন হোল্ডারদের।
মূলত মোস্তাফিজ ও উইলির তোপে শুরুটা ভালো না হওয়াটাও বড় ধাক্কা ছিল নাইট রাইডার্সের। তার মধ্যে ওয়াকার সালমানখিলের স্পিন পড়তে গিয়ে রীতিমতো হাপিয়ে ওঠেন আন্দ্রে রাসেল ও রাদারফোর্ডরা।
দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট পাকিস্তানি স্পিনারের। চার উইকেট তোলেন সালমানখিল। দুইটি করে উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ নবি, মোস্তাফিজ ও উইলি।

যখন সব শেষ হয়ে যাবে—রাজনীতি, ক্রিকেট; তখন সাকিব আল হাসান কী করবেন? মানুষ তাঁর কোন দিক স্মরণ করবে, ক্রিকেটার সাকিবকে নাকি রাজনীতিবিদ সাকিবকে?
‘বিয়ার্ড বিফোর উইকেট’ নামক পডকাস্টে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অলরাউন্ডার সাকিব এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন আজ। সেখানে নিজের যাপিত জীবন, ইচ্ছা-উদ্দীপনা ও ফেলে আসা দিন তুলে ধরেছেন সাবেক অধিনায়ক।
সাকিব বলেন, “আমার মনে হয়, ক্রিকেট ক্যারিয়ার প্রায় শেষ করেছি। হয়তো এখন রাজনীতির অংশ বাকি আছে। এটা এমন কিছু যা আমি বাংলাদেশের মানুষ এবং মাগুরাবাসীর জন্য করতে চাই। এটা ছিল আমার ইচ্ছা, যা এখনো আমার ইচ্ছা। দেখা যাক, আল্লাহ আমাকে কোথায় নিয়ে যান।”
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন সাকিব আল হাসান। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে ফেরেননি তিনি। ক্যারিয়ারের পাঠ শেষ করার আগে রাজনীতিতে যোগ দেওয়াটা অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি।
সাকিব বারবার দেশে ফিরতে চাইলেও ফেরা হয়নি। তবে তিনি জানিয়েছেন, ঠিকিই দেশে ফিরবেন এবং দেশ, বিশেষ করে মাগুরার মানুষের জন্য রাজনীতি করে যাবেন।
পডকাস্টে সাকিব বলেন, “আমি অবশ্যই চাই বাংলাদেশে ফিরতে। কারণ, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। আমি বাংলাদেশে ফিরে যাব।”

আগামী বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দশম আসর। মহাযঞ্চের আগে পাকিস্তান দলের অধিনায়ক পরিবর্তন নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে। বিষয়টিকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সালমান আলি আগা।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) এক ভিডিও বার্তায় পাকিস্তান দলের অধিনায়ক কথা বলেছেন বিশ্বকাপে তাঁদের প্রস্তুতি, দলের ফিটনেস ও লক্ষ্য নিয়ে।
গ্রুপ ‘এ’ তে পাকিস্তানের সঙ্গী ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, নামিবিয়া ও নেদারল্যান্ডস। অধিনায়ক বদলের গুঞ্জন উঠলেও আগা জানান, তাঁর নেতৃত্বেই বিশ্বকাপ খেলবে পাকিস্তান।
বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলে বড় কোন পরিবর্তন হবে না বলে জানান আগা, ‘বিশ্বকাপের আগে বড় কোনো পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না। যে কম্বিনেশন তৈরি হয়েছে, সেটাই থাকবে।’
সামনের দুটি বিশ্বকাপ জিততে চান আগা, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং পরবর্তী ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিততে চাই। এগুলো আমার স্বপ্ন। সত্যি হলে দারুণ লাগবে।’

২০২৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সবশেষ বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন সাকিব আল হাসান। দেশসেরা এই অলরাউন্ডার এরপর আর দেশের হয়ে খেলেননি। বেশ কয়েকবার সম্ভবনা জেগেছিল, সাকিবেরও ইচ্ছা ছিল মিরপুর শেরে বাংলায় ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলবেন।
সাকিবের সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি। তবে আশা মরেও যায়নি। কারণ, এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাননি তিনি। ৩৮ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার এখনও স্বপ্ন দেখেন মাতৃভূমিতে ফিরবেন, লাল-সবুজ জার্সি গায়ে জড়াবেন।
বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন সাকিব। সেখান থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন লিগে খেলছেন। ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি–টোয়েন্টিতে (আইএলটি টি–টোয়েন্টি) এমআই এমিরেটসের হয়ে খেলা সাকিবের বর্তমান গন্তব্য আরব আমিরাত।
আইএলটি টি–টোয়েন্টি চলাকালীন ‘বিয়ার্ড বিফোর উইকেট’ নামক পডকাস্টে অংশ নেন সাকিব। তার সঙ্গে অতিথি ছিলেন ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মঈন আলী।
পডকাস্টে সঞ্চালকের এক প্রশ্নে দেশের জার্সিতে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি মিলিয়ে ৪৪৭ ম্যাচ খেলা সাকিব বলেন,
“আমি অবশ্যই চাই বাংলাদেশে ফিরতে। কারণ, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। আমি বাংলাদেশে ফিরে যাব।”
নিজের লাইফস্টাইল নিয়ে সাকিব বলেন,
“তুমি যে ‘স্বাভাবিক জীবন’-এর কথা বলছ, সত্যি বলতে আমি কখনোই সে জীবন চাইনি। আমি বাংলাদেশে যে জীবনটা কাটাচ্ছিলাম, সেটা আমার ভালোই লাগত। এমন না যে আমি সেই জীবনটা অপছন্দ করতাম। আমি তো আমার মতো করেই স্বাভাবিক জীবনে ছিলাম।”
সাকিব আরও বলেন, “আমার কখনো বেশি বন্ধু ছিল না। ছোটবেলা থেকেই বাইরে বেশি যেতাম না। আমি বোর্ডিং স্কুলে পড়েছি, আর বড় হতে হতে ভালো দিকনির্দেশনা পেয়েছি। এগুলো আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।’

পার্থে অস্ট্রেলিয়ার কাছে দুই দিনে হারের পর ব্রিসবেনে পিংক বলের টেস্টে ইংল্যান্ড হারল ৮ উইকেটে। সিরিজের আগে বেন স্টোকস হুংকার দিয়ে ইতিহাস রচনার কথা জানালেও আদতে তা ধোপে টেকেনি। পাঁচ ম্যাচের টেস্ট ২-০ পিছিয়ে যাওয়ার দারুণে মন খারাপ সফরকারীদের। বিশেষ করে ক্যাপ্টেন স্টোকস তো বলেই দিলেন—দলে দুর্বলচিত্তের মানুষদের কোনো স্থান নেই।
দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৬৫ রানের লক্ষ্য ১০ ওভারেই ছুঁয়ে ফেলেছে স্মিথের দল। ম্যাচের চতুর্থ দিন খানিক লড়াই করেন বেন স্টোকস। তবে তাকে থামিয়ে দিয়ে অনায়াসেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
আজ ম্যাচ শেষে সম্প্রচার চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্টোকস জানিয়েছেন, বিপদকালে তাঁর দল কতটা প্রেসার নিতে পেরেছে সেটাই আলচ্য।
তিনি বলেন, ‘‘ওরা (অস্ট্রেলিয়া) গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে আমাদের চেয়ে এগিয়ে থাকে। অস্ট্রেলিয়া দুর্বলদের জায়গা নয়। আমরা দুর্বল নই, কিন্তু এখন ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছি। সামনে তিনটি ম্যাচ আছে, আমাদের কিছু একটা খুঁজে বের করতেই হবে।”
প্রথম ইনিংসে থিতু হয়ে যাওয়ার পর রান আউটে কাটা পড়লেও দ্বিতীয় ম্যাচে ঠিকই এক প্রান্ত আগলে ব্যাট চালিয়ে যান স্টোকস। প্রায় ২২৯ মিনিট ক্রিজে পড়ে থেকে ১৫২ বল মোকাবিলা করে ফিফটি করেন ইংল্যান্ড অধিানয়ক।
স্টোকস যখন ব্যাট হাতে বাইশগজে নামেন তখন দল মৃতপ্রায়। সেটা জাগিয়ে তোলেন তিনি। তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি। তাই অনেকটা রাগ করে তিনি বলেন, ‘‘আমি অনেকবার বলেছি। অস্ট্রেলিয়া সফর দুর্বল লোকদের জন্য না। তারমধ্যে যে ড্রেসিংরুমে ক্যাপ্টেন আমি, সেখানে তো কখনই নয়।’’
ম্যাচশেষে বিবিসির ‘টেস্ট ম্যাচ স্পেশাল’-এ দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় ইংল্যান্ড দলের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম জানিয়েছেন, দলের প্রস্তুতির মোটেও ঘাটতি ছিল না। বরং অতিরিক্ত অনুশীল হয়েছে।
তিনি বলেন, “প্রস্তুতির অভাব ছিল—আমি তা মনে করি না। বরং আমরা হয়তো একটু বেশি অনুশীলনই করেছি। এই ম্যাচের আগে পাঁচটি জোরালো ট্রেনিং সেশন ছিল। কখনো কখনো ঘাটতি পুষিয়ে নিতে গিয়ে অতিরিক্ত করার প্রবণতা তৈরি হয়।”
তিনি আরও বলেন,‘‘ক্রিকেট কেবল শারীরিক বা টেকনিক্যাল প্রস্তুতির খেলা নয়, মানসিক প্রস্তুতিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ব্যাটিংয়ে ঘাটতি ছিল, বোলিংয়ে তো ছিলই, আর ফিল্ডিংতেও ঘাটতি চোখে পড়ার মতো। ভালো দলের বিরুদ্ধে ১০ উইকেট নেওয়াই কঠিন, সেখানে ১৫টা নিতে গেলে কী পরিস্থিতি দাঁড়ায় সবাই জানে।’’