ইতিবাচক ফুটবলের বার্তা ছিল মিকেল আর্তেতার। তার দল শুরুটা করল ঠিক সেভাবেই। ভাগ্য সহায় হলে প্রথম দশ মিনিটেই মিলতে পারত গোল। তবে সেটা আর হয়নি। বরং সময় গরানোর সাথে সাথে ছন্দ ফিরে পাওয়া পিএসজি দেখাল প্রাধান্য। গোলের দেখাও মিলল অনায়াসেই। কোনঠাসা আর্সেনাল একটা গোল করল বটে, তবে তাদের ম্যাচের দ্বিতীয় সেরা দল বানিয়ে পাঁচ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পা রাখল লুইস এনরিকের পিএসজিই।
এমিরেটস স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে ২-১ গোলে জিতেছে পিএসজি। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ স্কোরলাইনে জিতে দলটি পা রেখেছে এই প্রতিযোগিতায় নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয় ফাইনালে।
শিরোপার লড়াইয়ে পিএসজির প্রতিপক্ষ ইন্তার মিলান, যারা বার্সেলোনাকে ৭-৬ গোলে হারিয়ে জায়গা করে নিয়েছে তিন বছরের মধ্যে নিজেদের দ্বিতীয় ফাইনালে।
প্রথম লেগে ঘরের মাঠে পিএসজিকে দেখা যায়নি সেরা ছন্দে। তাতেও ধরা দিয়েছিল জয়। প্রতিপক্ষের মাঠে তৃতীয় মিনিটেই বিপদে পড়ে যাচ্ছিল দলটি। খিভিচা কোয়ারাতসখেলিয়া পিএসজির বক্সের কাছে জুরিয়েন টিম্বারের কাছে নবল হারান, যেখান থেকে বক্সের ভেতর করা তার ক্রসে হেড নেন ডেকলান রাইস, যা থাকেনি লক্ষ্যে।
প্রথম লেগে পিএসজির জয়ে বড় অবদান ছিল দুর্দান্ত কিছু সেভ করা গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোনারুম্মার। এই ম্যাচেও হয়নি তার ব্যতিক্রম। থমাস পার্টির বক্সে ভেতর বাড়ানো লম্বা থ্রো থেকে বল পেয়ে লক্ষ্যে জোরাল শট নেন গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি। তবে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে যান পিএসজি গোলরক্ষক, উপহার দেন পয়েন্ট-ব্ল্যাঙ্ক সেভ।
প্রথম দশ মিনিটে পিএসজিকে ব্যস্ত থাকতে হয় রক্ষণ সামলাতেই বেশি। অষ্টম মিনিটে ফের ত্রাতার ভূমিকায় হাজির হন দোনারুম্মা। আরও একবার থ্রো-ইন থেকে বক্সের ভেতর বল পায় আর্সেনাল। এবার নিখুঁত শট নেন অধিনায়ক মার্টিন ওডেগার্ড। তবে ঝাঁপিয়ে এক হাতে সেটা আটকে দেন ইতালিয়ান এই গোলকিপার।
১৬তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল পিএসজি। পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে বাঁদিক থেকে কাট করে বক্সে প্রবেশ করে শট নেন জর্জিয়ান। ডেভিড রায়াকে পরাস্ত করতে পারলেও বল ফিরে আসে পোস্টে লেগে।
ছয় মিনিট বাদে আরেকটি ভালো সুযোগ নষ্ট হয় পিএসজির। বক্সের ভেতর ভালো পজিশনে থাকলেও দুর্বল শট নিতে পারেন ডিসাইর দৌরে। ২৭তম মিনিটে লিড নেয় পিএসজি, আর সেটা ছিল দেখার মত এক গোলই।
আর্সেনাল ফ্রি-কিক ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে বল পেয়ে যান ফাবিয়ান রুইজ। প্রথমে বলের নিয়ন্ত্রণ নেন, জায়গা তৈরি করেন আর এরপর বাঁ পায়ের বুলেট শটে খুঁজে নেন ঠিকানা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৪৬তম ম্যাচে এটি তার প্রথম গোল।
বিরতির পর গোছানো ফুটবল উপহার দেয় আর্সেনাল। ৬৩তম মিনিটে দারুণ এক সুযোগও তারই ফলশ্রুতিতে পেয়ে যান বুকায়ো সাকা। বাঁদিক থেকে কাট করে নেন কার্লিং শট, যা ছিল লক্ষ্যেই। তবে পিএসজির যে একজন দোনারুম্মা আছেন! আলতো করে বলটি ক্লিয়ার করেন কর্নারের বিনিময়ে।
এর মিনিট দুয়েক বাদে আশরাফ হাকিমির শট আর্সেনালের বক্সে একজনের হাতে লাগলেও শুরুতে তা পেনাল্টি মনে হচ্ছিল না। তবে ভিএআর দেখে রেফারি পেনাল্টি দেন পিএসজিকে।
তবে দলকে হতাশ করেন ভিতিনিয়া। ধীরে ধীরে এগিয়ে যান তিনি, যা দেখে রায়াও মুভ করেন সেভাবেই। ডান দিকে নেওয়া ভিতিনিয়ার নেওয়া শট শেষ পর্যন্ত রুখে দেন রায়া।
৭২তম মিনিটে ম্যাচ থেকে আর্সেনালকে প্রায় ছিটকেই দেন হাকিমি। বদলি নামা উসমান দেম্বেলে পাস থেকে বক্সের ভেতর বল পেয়েই জাল খুঁজে নেন মরক্কোর এই ডিফেন্ডার।
দুই লেগ মিলিয়ে ৩-০ গোলে পিছিয়ে যাওয়ার আর্সেনাল ৭৫তম মিনিটে পায় একটা লাইফলাইন। একটু আগেই বদলি নামা লিয়ানড্রো ট্রোসার্ড মারকুইনহোসের কাছ থেকে বলের দখল নিয়ে বক্সের ভেতর পাস দেন সাকাকে। ইংলিশ উইঙ্গারের প্রথম শট গোলকিপার আটকে দিলেও ফিরতি শটে গোলের দেখা পান সাকা।
তবে পরের মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ ও সেরা সুযোগটাও নষ্ট করেন তিনি। ছয় গজের ভেতর পরাস্ত হয়ে গিয়েছিলেন দোনারুম্মাও। ফাঁকায় থাকা সাকার কাজ ছিল কেবল বল লক্ষ্যে রাখা, তবে তিনি সেটা উড়িয়ে মারেন পোষ্টের অনেক ওপর দিয়ে।
ওই মিসের পর আর্সেনালের মনোবলও যেন হারিয়ে যায় দ্রুত। বাকি সময়ে পিএসজি রক্ষণ সামাল দেয় দক্ষতার সাথেই। আর সেটাই তাদের ২০১৯-২০ মৌসুমের পর আবার নিয়ে যায় ফাইনালে।
No posts available.
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩:৩৪ পিএম
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১:৪৯ পিএম
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বোচ্চ চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্যের মঞ্চে ১৫বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেয়েছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। এই প্রতিযোগিতায় শিরোপা ছাড়াও আরও অনেক রেকর্ডই রিয়ালের দখলে।
২০২৫-২৬ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে গতকাল মার্শেইয়ের বিপক্ষে ২-১ গোলে জেতা ম্যাচে আরও একটি পরিসংখ্যানে শীর্ষে ওঠে এসেছে লস ব্লাঙ্কোসরা। কিলিয়ান এমবাপের জোড়া পেনাল্টিতে এই প্রতিযোগিতায় স্পট কিক থেকে সবচেয়ে বেশি গোল করা ক্লাব এখন রিয়াল মাদ্রিদ।
আরও পড়ুন
অনির্দিষ্টকালের জন্য ছিটকে গেলেন আর্নল্ড |
![]() |
ফরাসি ক্লাব মার্শেইয়ের বিপক্ষে তাদের দুটি গোলই আসে স্পট কিক থেকে। আর তাতে বায়ার্ন মিউনিখকে টপকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পেনাল্টি থেকে ৬৩ গোল করে সবার ওপরে ওঠে এলো রিয়াল।
স্পট কিক থেকে ৬২ গোল করে এতদিন এ তালিকায় সবার ওপরে ছিল জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পেনাল্টি থেকে ৫৬ গোল করে তিনে আছে রিয়ালের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি বার্সেলোনা।
আরও পড়ুন
ইসরায়েল খেললে ২০২৬ বিশ্বকাপ বয়কটের হুমকি স্পেনের |
![]() |
অবশ্য সবচেয়ে বেশি পেনাল্টি থেকে গোল করা রিয়াল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সবচেয়ে বেশি ম্যাচও খেলেছে। এখন পর্যন্ত তারা ৩০ বার এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে, খেলেছে মোট ৩৩৪টি ম্যাচ।
মার্শেইকে হারিয়ে এই প্রতিযোগিতায় ২০০তম জয়ের মাইলফলক স্পর্শ করেছে রিয়াল। ১৯৯২-৯৩ মৌসুম থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বর্তমান সংস্করণ শুরু হওয়ার পর রিয়ালই প্রথম ক্লাব যারা এই অনন্য কীর্তি অর্জন করল। এছাড়া, এই ম্যাচে এমবাপ্পের জোড়া গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৭০০ গোলের মাইলফলকেও ছুঁয়েছে রিয়াল।
নতুন মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ম্যাচেই বড় ধাক্কা খেল রিয়াল মাদ্রিদ। মার্শেইয়ের বিপক্ষে গতকাল ঘুরে দাঁড়িয়ে ২-১ গোলে জয় পাওয়া ম্যাচে চোট পান রিয়ালের রাইট-ব্যাক ট্রেন্ট আলেজ্যান্ডার আর্নল্ড। রিয়ালের ইংলিশ এই ফুটবলারের হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তার ক্লাব।
এক বিবৃতিতে রিয়াল তাদের অফিশিয়াল সাইটে লিখেছে, ‘আজ রিয়াল মাদ্রিদের মেডিকেল টিম আমাদের খেলোয়াড় ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ডের উপর যে সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে, তাতে তার বাঁ পায়ের 'বাইসেপস ফেমোরিস' মাংসপেশিতে চোট ধরা পড়েছে। তার সেরে ওঠার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।’
সান্তিয়াগো বার্নাবুতে খেলা শুরুর ৫ মিনিটেই ছাড়েন ট্রেন্ট অ্যালেকজ্যান্ডার আর্নল্ড। বদলি নামেন দানি কার্ভাহাল। অবশ্য হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে কত দিনের জন্য ছিটকে পড়েছেন আর্নল্ড সেটা নিশ্চিত করেনি রিয়াল। তবে ধারণ করা হচ্ছে কমপক্ষে ছয় থেকে আট সপ্তাহ এই ফুল-ব্যাককে মাঠে পাবে না লস ব্লাঙ্কোসরা।
আর্নল্ডের চোট রিয়ালের জন্য বড় মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। চলতি মাসসহ আগামী মাসে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আছে রিয়ালের। চলতি মাসের শেষ দিকেই আতলেতিকো মাদ্রিদের মুখোমুখি হবে জাবি আলোনসোর দল। ছয় সপ্তাহের জন্য ছিটকে পড়লে ২৬ অক্টোবর বার্সেলোনার বিপক্ষে মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতেও অনিশ্চিত থাকবেন আর্নল্ড।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে হয়তো নভেম্বরের শুরুতে মাঠে ফিরতে পারেন আর্নল্ড। মার্শেইয়ের বিপক্ষে ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় রিয়ালের পরবর্তী তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচে নিষিদ্ধ থাকতে পারেন আর্নল্ডের পজিশনের খেলা দানি কার্ভাহাল। তাতে আগামী ২৩ অক্টোবর জুভেন্টাসের বিপক্ষে ম্যাচে একাদশ নির্বাচন নিয়ে ঝামেলায় পড়তে পারেন রিয়াল কোচ।
কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোতে হবে ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ। বেশ কিছু দল এরই মধ্যে বাছাইপর্বে উতরে বিশ্বকাপের মূলপর্বের টিকিট নিশ্চিত করেছে। ইউরোপীয় অঞ্চলের বাছাইপর্ব শেষ না হলেও স্পেন এরই মধ্যে দুই ম্যাচ খেলে, দুটিতেই জয় পেয়েছে।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বিশ্বকাপে ফেবারিটদের তালিকায়ও থাকবে স্পেন। কিন্তু তার আগেই সমর্থকদের জন্য দুঃসংবাদের সংকেত দিল তারা। স্প্যানিশ সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলকে বিশ্বকাপে অংশ নিতে দিলে, বিশ্বকাপ ‘বয়কট’ করার কথা বিবেচনা করবে তাদের দেশ।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ গত সপ্তাহে দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দিতে হবে। রাশিয়া যেমন ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের পর ফিফা ও উয়েফা থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিল, ইসরায়েলের ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সানচেজের ভাষায়, ‘ইসরায়েল কোনো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে তাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে পারে না।’
জাতিসংঘের এক কমিশন সম্প্রতি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক আইনে সংজ্ঞায়িত গণহত্যার পাঁচ ধাপের মধ্যে চারটির প্রমাণ গাজায় পাওয়া গেছে। ইসরায়েল এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৪ হাজার ৯৬৪ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘ এই পরিসংখ্যানকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করে।
ইসরায়েল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে গ্রুপে তৃতীয় স্থানে। তারা শীর্ষে থাকা নরওয়ের চেয়ে ৬ পয়েন্ট পিছিয়ে এবং দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইতালির সমান পয়েন্ট। তিন ম্যাচ বাকি থাকায় প্লে-অফে খেলার বাস্তব সুযোগ রয়েছে তাদের সামনে। গ্রুপের শীর্ষ দল সরাসরি বিশ্বকাপে খেলবে, আর দ্বিতীয় স্থানের দলকে লড়তে হবে প্লে-অফে।
স্প্যানিশ কংগ্রেসে সোশ্যালিস্ট গ্রুপের মুখপাত্র পাতসি লোপেজ স্পষ্ট করে বলেছেন, ইসরায়েলকে খেলতে দিলে বিশ্বকাপ বয়কটের সিদ্ধান্ত নিতে পারে স্পেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সময়মতো বিষয়টি বিবেচনা করব। প্রয়োজনে সঠিক সময়ে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানানো হবে।’
ক্রীড়া মন্ত্রী ও সরকারি মুখপাত্র পিলার আলেগ্রিয়াও একই সুরে বলেন, ‘খেলাধুলা কখনো বাস্তব জগতের বাইরে থাকতে পারে না। যখন মানবাধিকার ধ্বংস হচ্ছে, তখন ক্রীড়াঙ্গন নিরপেক্ষ থাকতে পারে না।’
স্প্যানিশ সম্প্রচারমাধ্যম আরটিভিই ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে, ইসরায়েলকে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের অনুমতি দিলে তারা আগামী বছরের ইউরোভিশন সং কনটেস্ট সম্প্রচার করবে না। একই পথে হাঁটছে নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড, স্লোভেনিয়া ও আইসল্যান্ডের সম্প্রচারমাধ্যম। তবে ফিফা ও উয়েফা এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
নতুন কাঠামোর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় মৌসুম এরই মধ্যে শুরু হয় গেছে। ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে প্রথম রাউন্ড গড়িয়েছে মাঠে। ইউরোপ তথা বিশ্বেরই সেরা সব ফুটবলারদের নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মহারণে নামছে নামি-দামি সব ক্লাবগুলো।
২০২৫-২৬ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আছে একঝাঁক তারকা ফুটবলার। বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ৫০ দামি ফুটবলারদের মধ্যে ৪৯ জনই চ্যাম্পিয়নস লিগের এবারের আসরে আছেন। কেমন হবে যদি বর্তমান দল বদলের বাজারে সবচেয়ে বেশি দামী ফুটবলারদের নিয়ে একাদশ বানানো হয়? কোন ক্লাবের ফুটবলারদের এই একাদশে আধিপত্য থাকবে? বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান একাদশ কেমন হবে দেখে নেওয়া যাক।
অতি মূল্যবান এই একাদশে রিয়াল মাদ্রিদ-বার্সেলোনার জয়জয়কার। স্প্যানিশ জায়ান্ট এই দুই ক্লাব থেকে সমান তিনজন করে জায়গা পেয়েছেন। এ ছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি দু’জন ও ম্যাচেস্টার সিটির দু’জন আছেন এই একাদশে। বাকি একজন আর্সেনালের ফুটবলার।
আরও পড়ুন
‘এটিই রিয়ালের ডিএনএ', ১০ জন নিয়েও জিতে বললেন এমবাপে |
![]() |
৪-৩-৩ ফর্মেশনে সাজানো হয়েছে সবচেয়ে দামি এই একাদশ। আক্রমণভাগে ফরোয়ার্ড পজিশনে আছেন বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার আর্লিং হল্যান্ড। ম্যান সিটির নরওয়েজিয়ান এই ফরোয়ার্ডে দাম ১৮ কোটি ইউরো। বাঁ পাশে আছেন সমমূল্যের রিয়াল তারকা কিলিয়ান এমবাপে। আর আক্রমণভাগের ডান প্রান্তে থাকা লামিনে ইয়ামলের দাম এই একাদশের সর্বোচ্চ। বার্সেলোনার ১৮ বছর বয়সী এই উইঙ্গারের নামের পাশে লিখা ২০ কোটি ইউরো।
মাঝমাঠে সবচেয়ে দামি ফুটবলার জুড বেলিংহাম। রিয়ালের ইংলিশ এই মিডফিল্ডারের দাম ১৮ কোটি ইউরো। রিয়ালের বেলিংহ্যামের সতীর্থ ভালভের্দে আছেন মিডফিল্ডে। উরুগুইয়ান এই তারকার মূল্য ১৩ কোটি ইউরো। তাদের সঙ্গে মাঝমাঠের আরেক সদস্য রিয়ালের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি বার্সার মিডফিল্ডার পেদ্রি। স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের দাম ১৪ কোটি।
রক্ষণে সবচেয়ে দামি সদস্য বার্সার পাউ কুবার্সি ও আর্সেনালের উইলিয়াম সালিবা। দল বদলের বাজারে দুই ডিফেন্ডারের বর্তমান দাম ৮ কোটি ইউরো। লেফট-ব্যাক ও রাইট ব্যাক পজিশনে আছেন দুই পিএসজি ফুটবলার। ফরাসি ক্লাবটির মরক্কোর ফুল-ব্যাক আশরাফ হাকিমির দাম ৮ কোটি আর পর্তুগিজ ফুটবলার নুনো মেন্ডিসের মূল্য ৭ কোটি ইউরো। সবশেষ গোলপোস্টের নিচে আছেন এই মৌসুমে পিএসজি ছেড়ে ম্যান সিটিতে যোগ দেওয়া জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা।
শুরুতে দুই গোল করে এগিয়ে গিয়েও পরে তিনটি হজম করে হেরে গেল বেনফিকা। দলের পরাজয়ের মাশুল গুনলেন প্রধান কোচ ব্রুনো লেগ। ম্যাচ শেষ হওয়ার পরপরই তাকে বিদায় জানিয়ে দিল ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আজারবাইজানের ক্লাব কারাবাগের কাছে ৩-২ গোলে হেরেছে পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকা। ম্যাচের ১৬ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে ফেলেছিল বেনফিকা। পরে প্রথমার্ধ শেষেও ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল তারা।
পরে দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুই গোল হজম করে পরাজয় নিয়ে ঘরের মাঠ ছাড়তে হয় বেনফিকার। ম্যাচ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে ব্রুনোকে চাকরিচ্যুত করার ঘোষণা দেন ক্লাব প্রেসিডেন্ট রুই কস্তা।
আরও পড়ুন
‘এটিই রিয়ালের ডিএনএ', ১০ জন নিয়েও জিতে বললেন এমবাপে |
![]() |
“আমি জানাতে চাই, আমরা একটি সমঝোতায় পৌঁছেছি যে ব্রুনো লেগ আর ক্লাবের কোচ হিসেবে থাকছেন না। ক্লাবের হয়ে তার সকল প্রচেষ্টার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এখন (বিদায়ের) সময় এসে গেছে।”
ব্রুনোর কোচিংয়ে চলতি মৌসুমে পর্তুগিজ সুপার কাপ জিতেছে বেনফিকা। লিগে প্রথম চার ম্যাচের তিনটি জিতেছে তারা। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এক ম্যাচের ব্যর্থতাই কাল হলো ৪৯ বছর বয়সী এই পর্তুগিজ কোচের।
বেনফিকার সম্ভাব্য নতুন কোচ হিসেবে হোসে মরিনহোর কথা জানাচ্ছে পর্তুগিজ সংবাদমাধ্যমগুলো। ক্লাব প্রেসিডেন্ট কস্তা বলেছেন, আগামী শনিবার বেনফিকার পরবর্তী ম্যাচের আগেই ক্লাবের ডাগআউটে থাকবেন নতুন।
এই কারণেই জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে মরিনহোর নাম। গত ২৯ আগস্ট থেকে চাকরিবিহীন অবস্থায় আছেন ‘স্পেশাল ওয়ান’ খ্যাত এই কোচ। সেদিন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্লে-অফ ম্যাচে বেনফিকার কাছে হেরেছিল মরিনহোর ফেনারবেচ। পরে তাকে বরখাস্ত করে ক্লাবটি।
২০০০ সালে নিজের কোচিং ক্যারিয়ারের শুরুতে বেনফিকার হয়ে কাজ করেছিলেন মরিনহো। তাই গুঞ্জন সত্যি হলে প্রায় দুই যুগ পর আবার ক্যারিয়ারের প্রথম ক্লাবে ফিরতে পারেন তিনি।