সিনিয়-বয়সভিত্তিক মিলিয়ে কয়েক বছরে সাফে দারুণ সফল বাংলাদেশের মেয়েরা। টানা দুবার সিনিয়র সাফ জেতার পর গত মাসেই নিজেদের মাঠে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। আরেকটি সাফের মঞ্চে আজ মাঠে নামছে অনূর্ধ্ব-১৭ দল। যেখানে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য যেমন আছে, তেমনি এটিকে শেখার সুযোগ দেখছেন দলের কোচ খেলোয়াড়েরা।
বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আজ স্বাগতিক ভুটান। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায়।
চার দলের টুর্নামেন্টে খেলা গড়াবে একদিন বিরতি দিয়ে। বাংলাদেশ-ভুটান ম্যাচের আগে বিকাল ৩টায় নেপালকে মোকাবিলা করবে ভারত। টুর্নামেন্টের সব ম্যাচই হবে থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে। ২০২৪ সালে এই টুর্নামেন্ট মাঠে গড়িয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে। নেপালে সেবার চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। ভারতের সঙ্গে ১-১ গোলের পর টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন।
অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ে ২০২৩ সালে একবারই প্রতিযোগিতাটি হয়েছিল। সেবার অতিথি হিসেবে খেলা রাশিয়া চ্যাম্পিয়ন হয়। তবে অনূর্ধ্ব-১৫ সংস্করণে সাফ মাঠে গড়িয়েছে চারবার। প্রথমবার ২০১৭ সালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ, পরের দুবার ভারত; আর ২০২২ সালে বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরে নেপাল।
ভুটানে এবারও ভালো কিছু করার প্রত্যয় দলের অধিনায়ক অর্পিতা বিশ্বাসের। সে জন্য তারা ম্যাচ ধরে খেলার ছকে পথ এগোবেন টুর্নামেন্টে। গতকাল ম্যাচপূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্পিতা বলেন,
‘আমাদের টিম বেশি দিনের নয়, দেড় মাসের টিম। আমাদের সবাই এত দিন কঠোর পরশ্রিম করেছি। আমরা চেষ্টা করব ম্যাচ ধরে ধরে খেলার এবং ভালো খেলার। আমাদের এখান থেকে অনেক কিছু শেখার আছে, চেষ্টা করব প্রত্যেক ম্যাচ থেকে শিখতে এবং পরের ম্যাচে সেটা কাজে লাগাতে।’
এর আগে ঘরের মাঠে অনুর্ধ্ব-২০ সাফের আগেও কোচ পিটার বাটলার বলেছিলেন , এই ধরনের টুর্নামেন্ট আমরা খেলি কেবল জয়ের জন্য না, এখান থেকে ভবিষ্যত খেলোয়াড় বের করে আনাই লক্ষ্য থাকে।
আরও পড়ুন
| নেদারল্যান্ডস সিরিজে থাকছেন না মিরাজ |
|
ব্রিটিশ কোচের দেখানো পথে হাঁটতে চাইছেন অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হেড কোচ মাহবুবুর রহমান লিটু। বলেছেন,
‘আমরা আসলে দীর্ঘ দেড় মাস ধরে প্রাকটিস করছি। আমাদের প্রস্তুতি ভালো। তারা দিনকে দিন উন্নতি করেছে। আপনারা জানেন অনূর্ধ্ব-১৫, অনূর্ধ্ব-১৭ উন্নতির জায়গা। এটা আমাদের শেখার প্রক্রিয়া, এখান থেকে আমাদের মেয়েরা অনেক কিছু শিখবে।’
শেখার প্রসঙ্গে লিটু উল্লেখ করেন বাংলাদেশ সিনিয়র নারী ফুটবল দলের কথা। টানা দুটি সাফ জয়ের পর প্রথমবার জায়গা করেছে এশিয়ান কাপের মূলপর্বে। এ ছাড়া অনূর্ধ্ব-২০ দলও আগামী বছর থাইল্যান্ডে এশিয়ান কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। যে কারণে শেখার যে একটা প্রক্রিয়া চলমান সেটি মনে করিয়ে দিয়ে লিটু বলেন,
‘জানেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল দিনকে দিন অনেক উন্নতি করছে। আমি বিশ্বাস করি, এখান থেকেও শেখার অনেক জায়গা আছে। এখানে ভালো করার অনেক জায়গা আছে।’
ভুটানে যে দলটি নিয়ে গেছে বাংলাদেশ সেখানে আছেন সুরভী আকন্দ প্রীতির মতো সিনিয়র দলের খেলোয়াড়। এ ছাড়া অর্পিতা সর্বশেষ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়ন দলে ছিলেন। ওই দলের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ই আছেন বর্তমান দলটিতে। কেবল ৯ জন একদম নতুন খেলায়াড়। যে কারণে এই দলের মধ্যে শক্তির জায়গা হিসেবে আক্রমণকেই বেছে নিয়েছেন লিুট। যেখানে স্বাভাবিকভাবেই নেতৃত্ব দেবেন প্রীতি,
‘এখানে আমার শক্তির জায়গা হচ্ছে আক্রমণভাগ। এই জায়গায় গতবারের সেটআপ আছে। আশা করি আমাদের মেয়েরা ভালো করবে।’
দেশের জার্সিতে ভালো করার ফলেই বর্তমান ভুটান নারী লিগে খেলছেন বাংলাদেশের ১৫ ফুটবলার। অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার অবশ্য এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের জন্য রয়েল থিম্পু কলেজের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। আরও ৪টি ক্লাবে খেলছেন সাবিনা খাতুন, মারিয়া মান্দা, ঋতুপর্ণা চাকমরা, শাহেদা আক্তার রিপা, তহুরা খাতুন ও স্বপ্না রানীরা।
ভুটানে লিগ খেলা মেয়েদের প্রসঙ্গে লিটু বলেছেন,
‘এটা আসলেই গর্বের ব্যাপার , প্রথমবারের মতো একসঙ্গে আমাদের ১০-১২ জন নারী ফুটবলার ভুটানে লিগ খেলছে। এটা ওদের জন্য ভালো হবে, সামনের দিনগুলোতে কাজে দেবে এবং ভুটানের আমাদের মেয়েরা অনেক ভালো করছে। সবাই অনেক গোল করছে। আশা করি এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এশিয়ান কাপে ভালো খেলবে।’
তবে ভুটানের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে জেতাটা সহজও হবে না। বয়সভিত্তিক দলগুলোর সাধারণত শক্তি, দুর্বলতা জানার সুযোগ কম থাকে। তবে নিজেদের ঘরের মাঠের দর্শকদের সামনে জেতার আত্মবিশ্বাস ভুটানের কোচ লবজাং দর্জির কণ্ঠে,
‘আমি বিশ্বাস করি ভুটানে, দর্শকদের উৎসাহ আমাদের দলের জন্য সবসময়ই থাকবে। যে কারণে ঘরের মাঠে খেলা সুবিধাজনক। আর আমরা সব সময় ঘরের মাঠের সুবিধা গ্রহণ করেছি এবং ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছি।’
বাংলাদেশের মেয়েরা প্রমাণ করে এসেছে, কীভাবে ট্রফি জিততে হয়, প্রতিপক্ষের মাঠে দাপট দেখাতে হয়। সেই দেখানো পথে এবার অর্পিতাদের নতুন চ্যালেঞ্জ।
No posts available.
৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৩ পিএম
৫ নভেম্বর ২০২৫, ৭:৫৩ পিএম

দুয়ারে কড়া নাড়ছে ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ। আগামী বছর জুনে বসছে বিশ্বফুটবলের সবচেয়ে বড় মহারণ। বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে ২৮টি দেশ। এর মধ্যে আজ একসাথে ২২টি দেশের জার্সি উন্মোচন করেছে অ্যাডিডাস। যেসব ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে, তাদের জার্সি প্রকাশ করেছে বিশ্বের অন্যতম ক্রীড়া সরঞ্জাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি।
বিশ্বকাপের জন্য নতুন জার্সি উন্মোচনের তালিকায় রয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা, জার্মানি। অতীতের গৌরব আর আধুনিকতার ছোঁয়া মিলিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে লিওনেল মেসিদের নতুন জার্সি।
নতুন এই জার্সিতে থাকছে আর্জেন্টিনার ঐতিহ্যবাহী আকাশি ও সাদা রঙের মিশ্রণ। ক্লাসিক নীল ডোরাকাটার উপর রাখা হয়েছে গ্রেডিয়েন্ট ইফেক্ট, অর্থাৎ মোটা নীল স্ট্রাইপের মাঝামাঝি থাকবে হালকা রঙের মিশ্রণ। নকশাটি ১৯৭৮, ১৯৮৬ ও ২০২২ সালের তিনটি বিশ্বকাপজয়ী জার্সির রঙ থেকে অনুপ্রাণিত।
গলার পেছনে যোগ করা হয়েছে বিশেষ এক স্মারক চিহ্ন ‘১৮৯৬’। এটি আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) প্রতিষ্ঠাবর্ষের প্রতীক।
এএফএ জানিয়েছে, এই জার্সি কেবল পোশাক নয়, বরং আর্জেন্টাইন ফুটবলের ইতিহাস ও গর্বের প্রতিফলন।
আগামী বছরের ১১ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত চলবে বিশ্বকাপের ২৩তম আসর। তবে এখনও বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠিত হয়নি। বাছাইপর্বের খেলা শেষে আগামী ৫ ডিসেম্বর ড্র অনুষ্ঠিত হবে ওয়াশিংটন ডিসিতে।

আগামী ১৫ ও ১৯ নভেম্বর বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে সুইজারল্যান্ড ও স্লোভেনিয়ার মুখোমুখি হবে সুইডেন। গুরুত্বপূর্ণ এই দুই ম্যাচের জন্য আজ দল ঘোষণা করেছেন কোচ গ্রাহাম পটার।
পটারের ঘোষিত দলে জায়গা পেয়েছেন আলেকজান্ডার ইসাক। তবে বাদ পড়েছেন আর্সেনাল স্ট্রাইকার ভিক্টর ইয়োকেরেস।
হ্যামস্ট্রিং চোটে ভুগছেন ইয়োকেরেস। গত মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়নস লিগে সেভিয়ার বিপক্ষে বেঞ্চে বসেই খেলা দেখেছেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, বেশ কিছুদিন মাঠের বাইরে থাকতে হবে তাঁকে। তাই ঝুঁকি নিতে চাননি কোচ পটার।
অন্যদিকে, কুঁচকির চোটের কারণে মাঠের বাইরে ছিলেন ইসাক। সবশেষ ২২ অক্টোবর অল রেডসের জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন তিনি। তবে সুইজারল্যান্ড ও স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই ফিরছেন এই তারকা স্ট্রাইকার।
টটেনহ্যামের মিডফিল্ডার লুকাস বার্গভাল মাথায় আঘাত থেকে সেরে উঠছেন। নিউক্যাসলের উইঙ্গার অ্যান্থনি এলাঙ্গাও দারুণ ফর্মে আছেন। দুইজনকেই দলে ডেকেছেন সাবেক ব্রাইটন, চেলসি ও ওয়েস্ট হ্যাম কোচ গ্রাহাম পটার।
মাঠের পরিস্থিতি খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয় সুইডেনের। গ্রুপ ‘বি’-এর সর্বনিম্ন স্থানে রয়েছে তারা। চার ম্যাচে মাত্র এক পয়েন্ট দলটির।
তবুও আশা একেবারে শেষ হয়ে যায়নি সুইডেনের। সর্বশেষ নেশনস লিগে ভালো পারফরম্যান্সের কারণে, এখনো বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্লে-অফে জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা ধরে রেখেছে সুইডেন।
গোলকিপার:
ভিক্টর জোহানসন, ক্রিস্টোফার নর্ডফেল্ট, নোয়েল টর্নকভিস্ট, জ্যাকব উইডেল জেটারস্ট্রম
ডিফেন্ডার:
গ্যাব্রিয়েল গুডমুন্ডসন, ইসাক হিয়েন, এমিল হোল্ম, গুস্তাফ লাগারবিয়েলকে, ভিক্টর লিন্ডেলফ, কেন সেমা, কার্ল স্টারফেল্ট, ড্যানিয়েল স্বেনসন
মিডফিল্ডার ও ফরোয়ার্ড:
তাহা আলী, ইয়াসিন আয়ারি, রুনি বার্দগজি, লুকাস বার্গভাল, আলেকজান্ডার বার্নহার্ডসন, অ্যান্থনি এলাঙ্গা, আলেকজান্ডার ইসাক, জেসপার কার্লস্ট্রম, হুগো লারসন, ইসাক লিডবার্গ, গুস্তাভ লুন্ডগ্রেন, বেনজামিন নিয়গ্রেন, ম্যাটিয়াস স্বানবার্গ, বেসফোর্ট জেনেলি

নভেম্বরে মাঝামাঝিতে দুটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ফুটবল দল। ১৩ তারিখ জাতীয় স্টেডিয়ামে হামজা চৌধুরীদের প্রীতি ম্যাচে অতিথি নেপাল। ৫ দিন পর এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারতের মুখোমুখি হবেন তাঁরা।
এই দুই ম্যাচের জন্য আজ সন্ধ্যায় ২৭ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
আগে থেকেই জানা ছিল, এশিয়ান কাপের ম্যাচে থাকছেন না ফাহামিদুল ইসলাম। দুই হলুদ কার্ডের কারণে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় রয়েছেন তিনি। নেপাল ম্যাচের জন্য ফাহামিদুলকে উড়িয়ে আনা প্রয়োজন মনে করেননি কোচ হাভিয়ের কাবরেরা।
এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারত গত অক্টোবরে সিঙ্গাপুরের কাছে ১–২ গোলে হেরে ‘সি’ গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলে সবার নিচে নেমে গেছে। চার ম্যাচে তাদের পয়েন্ট দুই। বাংলাদেশও দুই পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে আছে। গ্রুপের শীর্ষে অবস্থান করছে হংকং ও সিঙ্গাপুর, যারা আট পয়েন্ট নিয়ে মূল পর্বের দৌড়ে দারুণভাবে টিকে আছে।
বাংলাদেশ দল
গোলকিপার:
মিতুল মারমা, সুজন হোসেন, পাপ্পু হোসেন, মেহেদী হাসান।
ডিফেন্ডার:
তারিক কাজী, রহমত মিয়া, শাকিল আহাদ, আবদুল্লাহ ওমর, শাকিল হোসেন, জায়ান আহমেদ, তপু বর্মণ, তাজ উদ্দিন, সাদ উদ্দিন।
মিডফিল্ডার:
কাজেম শাহ, শেখ মোরছালিন, জামাল ভূঁইয়া, সোহেল রানা (সিনিয়র), সোহেল রানা (জুনিয়র), মোহাম্মদ হৃদয়, হামজা চৌধুরী, সমিত সোম।
ফরোয়ার্ড:
মোহাম্মদ ইব্রাহিম, আল আমিন, আরমান ফয়সাল, শাহরিয়ার ইমন, ফয়সাল আহমেদ, রাকিব হোসেন

সপ্তাহখানেক আগে সংবাদমাধ্যমে সয়লাভ লামিন ইয়ামাল আর নিকি নিকোলের প্রেমের বিচ্ছেদ। তবে সেই রেশ না কাটতেই নতুন করে আলোচনায় বার্সেলোনার তারকা ফরোয়ার্ডের বাবার বাগদান সম্পন্ন।
মার্কা, ডেইলি মেইল ও দ্য সানের প্রতিবেদন, ইয়ামালের ৩৫ বছর বয়সী বাবা মুনির নাসরাউই সম্প্রতি বাগদান সম্পন্ন করেছেন ২৩ বছর বয়সী নারী ক্রিস্টিনার সঙ্গে। যিনি ১৮ বছর বয়সী ইয়ামালের চেয়ে পাঁচ বছরের বড়।
নাসরাউই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয় মুখ। বাগদানের খবর জানিয়েছেন এক আবেগঘন পোস্টে। বারান্দায় ক্রিস্টিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের একটি ছবি দিয়ে, ক্যাপশনে জুড়ে দিয়েছেন ‘ব্লাক লাভ ও আংটির’ ইমোজি—যা ভক্তদের মধ্যে বিয়ের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
নাসরাউই ও ক্রিস্টিনার সম্পর্ক কবে শুরু হয়েছিল, তা স্পষ্ট নয়। তবে গত কয়েক মাসে ক্রিস্টিনাকে একাধিকবার নাসরাউইয়ের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে দেখা গেছে।
অন্যদিকে ছেলে ইয়ামালের ব্যক্তিগত জীবনে চলছে উল্টো স্রোত। বার্সেলোনার এই তারকা ফরোয়ার্ড সম্প্রতি বিচ্ছেদ ঘটিয়েছেন তাঁর আর্জেন্টাইন গায়িকা প্রেমিকা নিকি নিকোলের সঙ্গে। ২৫ বছর বয়সী নিকি নাসরাউইয়ের হবু স্ত্রীর চেয়েও দুই বছর বড়।
নাসরাউইয়ের জীবনে এটি নতুন সুখের অধ্যায় হলেও কয়েক মাস আগেই তিনি পেরিয়েছেন এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। গত আগস্টে বার্সেলোনার উত্তরের শহর মাতারোতে নিজের কুকুর হাঁটাতে বেরিয়ে ছুরিকাহত হন তিনি। তর্কের জের ধরে কয়েকজনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন, এবং পরে তাঁকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে স্থানীয় পুলিশ।
ভাগ্য সহায় শেষ পর্যন্ত তিনি প্রাণে বেঁচে যান। পরবর্তীতে এক সাক্ষাৎকারে নাসরাউই বলেন,
‘সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় এখন অনেকটা ভালো আছি। ভয় পেয়েছিলাম, মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলাম, কিন্তু এখন শুধু চাই শান্তি আর ন্যায়বিচার।’
মুনির নাসরাউই দীর্ঘদিন ধরেই ছেলের সবচেয়ে বড় সমর্থক। ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে যখন স্পেন শিরোপা জেতে, তখনও ছেলের পাশে ছিলেন তিনি। সেই টুর্নামেন্টেই ইয়ামাল ছিলেন দলের উজ্জ্বলতম তারকা।
বাবা নাসরাউই বরাবরই বিশ্বাস করেন, তাঁর ছেলে একদিন হবেন বিশ্বের সেরা ফুটবলার। ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে বলেন, ‘লামিন ইয়ামাল এখনই বিশ্বের সেরা ফুটবলার। আগামী বছর এই পুরস্কার ওরই হবে।’ব্যালন ডি’অর না পেলেও ইয়ামাল পেয়েছেন কোপা ট্রফি—বছরের সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কার।

আর্জেন্টিনার ক্লাব রিভার প্লেটের হয়ে শুরু। এরপর ফ্রি ট্রান্সফারে যোগ দেন স্পেনের ক্লাব দেপোর্তিভো আলাভেসে। সেখান থেকে লোনে ক্লাব মিরান্দেসে। লোন শেষে ফেরেই স্ট্রাসবুর্গে পাড়ি জমান আর্জেন্টিনার ২৩ বছর বয়সি জোআকুইন পানিচেলি।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এবং ক্লাব পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে নিজেকে আরও বেশি পরিণত করেছেন পানিচেলি। স্ট্রাসবুর্গের নতুন মৌসুমে প্রায় প্রতি ম্যাচেই গোল উপহার দিচ্ছেন, তৈরি করছেন সুযোগ। এখন পর্যন্ত লিগ ওয়ানে ১১ ম্যাচে মাঠে নেমে ৯ গোল করেছেন পানিচেলি। মোট ৮৬৮ মিনিট খেলেছেন। ১০ ম্যাচে ছিলেন শুরুর একাদশে।
২০২৪-২৫ মৌসুমে দেপোর্তিভো মিরান্দেসে থাকাকালীনও পানিচেলির পারফরম্যান্স ছিল বেশ উজ্জ্বল। ৪৪ ম্যাচে ২১ গোল করেছেন আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। অ্যাসিস্ট ছিল ৮টি। রেটিং ধরে রেখেছেন ৭.৩।
অথচ ২০২২-২৩ সালে গোল খরায় ছিলেন পানিচেলি। ছিলেন অবহেলিত। তবে স্ট্রাসবুর্গে লিয়াম রৌশনির ছায়ায় এসে বদলে যান। ফ্রান্সের ক্লাবের হয়ে মোট ৩১টি অন-টার্গেট শট ছিল পানিচেলির। যেখান থেকে লক্ষ্যভেদ করতে পারেন ৯টি।
শুধু গোল করেই স্ট্রাসবুর্গ কিংবা কোচ রৌশনি-কে সন্তুষ্ট করেননি তিনি। অ্যাকুরেট পাস, চান্স ক্রিয়েট করা, শট অ্যাটাম্পটস কিংবা এরিয়াল ডুয়েলে তার আধিক্যও চোখে পড়ার মতো। এসময় প্রায় ৯৫ শতাংশ এরিয়াল ডুয়েল জিতেছেন পানিচেলি। বল টাচেস ছিল ৭০ শতাংশ। চান্স ক্রিয়েট করেছেন ৬৯ শতাংশ। শট অ্যাটাম্পটস ৭৬ শতাংশ।
পানিচেলির আরও একটি বড় গুণ—এগ্রেসিভনেস। ২০২৫-২৬ মৌসুমে এখন পর্যন্ত ১৮টি ফাউল করেছেন তিনি। তাকে রুখা কতটা কষ্টসাধ্য, সেটা এই সংখ্যা প্রমাণ করে। অথচ এই ফাউলগুলোর জন্য মাত্র একবার হলুদ কার্ড দেখেছেন তিনি।
গত ১৮ অক্টোবর প্যারিস সেন্ট জার্মেইনের বিপক্ষে ম্যাচে আরও বেশি আলোচনায় আসেন পানিচেলি। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের ঘরের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সে ৩-৩ গোলের ড্রয়ের দিনে দুটি গোল আসে আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের পা থেকে। ফুটবলে তার রেটিং ছিল ৯.২। ম্যাচসেরাও ছিলেন তিনি।
পানিচেলির এমন উত্থান ও পারফরম্যান্সে যারপরনাই আনন্দিত কোচ রৌশনি। সে ম্যাচে আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের হেডের দক্ষতা নিয়ে তিনি বলেছিলেন,
“আমার জীবদ্দশায় তার এই ম্যাচের হেডটি ছিল সবচেয়ে সেরা। শুধু তাই নয়, সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড হিসেবে তার পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ।”
মাঠের পারফরম্যান্সই নয়, রৌশনি মুগ্ধ পানিচেলির ব্যক্তিত্ব নিয়েও, “সে অসাধারণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। তার জন্য আমার গর্ব হয়।”
এমন পারফরম্যান্সের কারণে নিশ্চয়ই শিগগিরই নতুন কোনো বড় ক্লাবের দরজা খুলে যাবে পানিচেলির। গুঞ্জন উঠেছে, লা লিগার ক্লাব বার্সেলোনা নজরে রেখেছে আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারকে। রবার্ট লেভানডফস্কির বিদায়ে তাঁকে ভিড়াতে পারেন হ্যান্সি ফ্লিক। যদিও এক্ষেত্রে হুলিয়ান আলভারেজ ও ইংলিশ তারকা হ্যারি কেইন এগিয়ে।
ইতালির সিরি আ-তে সুযোগ মিলতে পারে পানিচেলির। বিশেষ করে এসি মিলানকে বারবারই হতাশ করছেন সান্তিয়াগো গিমেনেজ। সেখানেও ডাক পড়তে পারে তাঁর। দেখার বিষয়, পানিচেলির নতুন ক্লাব কোনটি। আপাতত অপেক্ষা করা যাক।