
১৯৮৫ সালের সাফ গেমসের ফাইনাল। ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচে বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা মুহূর্তগুলোর একটির জন্ম দিয়েছিলেন শেখ মোহাম্মদ আসলাম। ডি- বক্সের মাথা থেকে ভলিতে করা তাঁর সেই দৃষ্টিনন্দন গোলটি যেন অসাধারণ কোনো শিল্পকর্ম।
আজ রাত আটটায় ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। এএফসি এশিয়া কাপ বাছাইয়ে ‘ডার্বি’ ম্যাচের ক’দিন আগে থেকেই উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ক্রীড়াঙ্গনেই। দুই দলেরই এশিয়া কাপে কোয়ালিফাই করার সুযোগ শেষ। এরপরও ‘মর্যাদার লড়েইয়ের’ এই ম্যাচ নিয়ে সমর্থকদের আগ্রহ চরমে। প্রতিবেশী দুই দেশের ফুটবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা সবসময়ই আবেগ, সম্মান আর ইতিহাসের মিশেলে তৈরি। সেই ইতিহাসের অন্যতম উজ্জ্বল অংশ বাংলাদেশের কিংবদন্তি ফরোয়ার্ড শেখ মোহাম্মদ আসলাম।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে চার দশক আগের মধূর স্মৃতি রোমন্থন করলেন আসলাম ১৯৮৫ সালের সাফ গেমসের এই কিংবদন্তির সেই গোল যেন এখনো চোখে লেগে আছে। ভারতের বিপক্ষে প্রথম গোল করে ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লেখানোর আসলামের চোখে ভেসে উঠল সেই ক্ষণ।
ভারতের বিপক্ষে গোল করে কেমন অনুভূতি ছিল তখন সাবেক স্ট্রাইকার আসলামের ? শোনা যাক তাঁর আবেগভরা কণ্ঠেই, ‘সেটা একটা উত্তেজনাপূর্ণ খেলা ছিল। ভারতকে হারাতে হবে এই চিন্তায় আমি সারাক্ষণ বুদ হয়ে ছিলাম। আমার আব্বা আমাকে বলতা তুমি হাফ দ্যা ফিল্ড ক্রস করার সঙ্গে সঙ্গে গোলরক্ষকের দিকে তাকাবে। আমি বাবার কথা মত হাফ দ্যা ফিল্ড ক্রস করেই ভারতের গোলকিপারের দিকে তাকিয়ে দেখি তাদের গোলকিপার অতনু একটু এগিয়ে এসেছে। আমি ওখান থেকে ঘুরেই শট করেছি, ওখান থেকেই গোল।’
একটি গোল কিভাবে দেশের ফুটবলে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে পারে সেটাই স্বচক্ষে দেখেছিলেন আসলাম। ভারতের বিপক্ষে ওই গোল নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই গোলের পরে সারা বাংলাদেশের যে আনন্দ, সেই উত্ফুল্লতা দেখার মতো ছিল। ভারতকে যে হারানো যায়, সেটা সেদিন আমরা প্রমাণ করেছি।’তার চোখে তখন যেন আবার সেই স্টেডিয়ামের গ্যালারি ঢাকঢোল, পতাকা, আর লক্ষ মানুষের চিৎকার।
চার দশকেরও পরে ভিন্ন এক মঞ্চে ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ। যে ম্যাচে খালি চোখে দেখলে কেবলই নিয়মরক্ষার। তবে সম্প্রতি ক্রীড়ার যেকোনো বিভাগে ভারত-বাংলাদেশে নিরুত্তাপ ম্যাচের নজির নেই বললেই চলে। ঘরের মাঠের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ইতিবাচক ফল আনবে বলে বিশ্বাস আসলামের। তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের নিজেদের মাঠে খেলা। নিজেদের মাঠের যে অ্যাডভান্টেজটা আছে, এটা প্রতিটা মুহূর্তে আমাদের ছেলেরা যেন আদায় করে নিতে পারে সেটাই আমার চাওয়া। প্রতিটা গোলের সুযোগ যেন তারা কাজে লাগাতে পারে।’
দর্শক আগ্রহ তলানীতে গিয়ে ঠেকা বাংলাদেশের ফুটবলে প্রাণ এনে দিয়েছেন একদল প্রবাসী ফুটবলার। দেশের ফুটবল বিপ্লব ঘটিয়ে দেওয়া হামজা চৌধুরী, সমিত সোম, জায়ান আহমেদ, কিউবা মিচেলদের নিয়ে সবার প্রত্যাশাই আকাশছোঁয়া। বিশেষ করে নেপালের বিপক্ষে জোড়া গোল করা হামজার দিকে দৃষ্টি থাকবে আসলামেরও, ‘হামজা খুবই ভালো খেলোয়াড়। সবার নজর আজও হামজার দিকে থাকবে। আমারও আশা হামজাকে নিয়ে তিনি ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারেন। তিনি ক্লাসিক্যাল একজন খেলোয়াড়। দলের বাকিদের সঙ্গে বোঝাপড়াটা ঠিক থাকলে এই ম্যাচে আমরা জিততে পারি।’
দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আর ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা আসলামের বিশ্বাস আজ ভারতকে হারাতে পারবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ জিতবে। ২-০ কিংবা ২-১ এ জিতবে এটাই আমার প্রত্যাশা। প্রবাসী ফুটবলার যারা এসেছেন, তাদের সঙ্গে তালটা ঠিকভাবে বসলে যে কেউ দলকে এগিয়ে দিতে পারবে। রাকিব খুবই ভালো ফুটবলার। ফরোয়ার্ড পজিশনে খেলেন। এই মাঠে আগে থেকেই দাপিয়ে বেড়িয়েছেন, তারও আজ ভালো সুযোগ থাকবে।’
সময় বদলেছে, তবে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের আবহ দেখে স্টেডিয়ামে দর্শকসারীর উন্মাদনা দেখে হয়তো আবার অতীতে ফিরে যাবেন আসলাম। আসলাম হয়ে কেউ হয়তো ভারতের জালে বল পাঠাবেন, আর গ্যালারি দেখা যাবে ভরা জোয়ার।
No posts available.
২২ নভেম্বর ২০২৫, ২:০৭ পিএম

এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে শুরুটা দুর্দান্ত করেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ দল। নিজেদের উদ্বোধনী ম্যাচে আজ পূর্ব তিমুরকে উড়িয়ে দিয়েছে ৫-০ গোলে। জোড়া গোল করেন মোহাম্মদ মানিক।
চীনের টংলিয়াং লং স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া ম্যাচের ১১ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে মানিকের ক্রসে হেডে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন রিফাত কাজী। ২৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মানিক নিজেই। নাজমুল হুদা ফয়সালের ফ্রি কিকে বল পেয়ে বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে জালে জড়ান তিনি।
৪৩ মিনিটে আসে তৃতীয় গোল। ডি বক্সে জটলার মধ্য থেকে পাওয়া বলের ঠিকানা খুঁজে নিতে অসুবিধা হয়নি মানিকের। প্রথমার্ধে ৩-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় গোলাম রব্বানী ছোটনের দল।
দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কিছু সুযোগ পেলেও দুটির বেশি গোল করতে পারেনি বাংলাদেশ৷ ৪৯ মিনিটে ব্যবধান ৪-০ করেন বায়েজিত বোস্তামি। ৮৮ মিনিটে শেষ গোলটি আসে আকাশ আহমেদের পা থেকে। তাতে বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
আগামী সোমবার দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ব্রুনাই। ৬ দলের লড়াইয়ে কেবল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দলই মূলপর্বে খেলার সু্যোগ পাবে।

গত মঙ্গলবা ডেনামার্ককে হারিয়ে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করে স্কটল্যান্ড। ২৮ বছরের অপেক্ষার পর বিশ্বকাপে ফেরার আনন্দে আত্মহারা স্কটিশ সমর্থকেরা। উদযাপনের সেই ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছিল ইউরোপীয়ান ফুটবল সংস্থা (ইউয়েফা)। তবে পরবর্তীতে সেই ভিডিও সরিয়ে ফেলেছে তারা।
ভিডিও সরিয়ে নেওয়ায় শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। তবে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়েছে ইউয়েফা।
নিজেদের মাঠ হ্যাম্পডন পার্কে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে ৪-২ জয় পায় স্কটল্যান্ড। গোল করেছেন স্কট ম্যাকটোমিনে, লরেন্স শ্যাঙ্কল্যান্ড, কিয়েরান টিয়ারনি ও কেনি ম্যাকলিন।
জয়ের আনন্দে স্কটিশ ফুটবল ফেডারেশন ও সমর্থকেরা ভিডিও প্রকাশ করলে ইউয়েফা অনুমোদনহীন বলে মেইলে জানায়। তারপর ক্ষমা চাইল সংস্থাটি। এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। ভিডিওগুলো পুনরায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।‘
স্কটিশ ফুটবল সমর্থক সমিতির (এসএফএসএ) সহ-প্রতিষ্ঠাতা পল গুডউইন বলেন, ‘ভিডিওতে খেলোয়াড়রা দেখা যাচ্ছিল না, শুধু সমর্থকদের উল্লাস দেখানো হয়েছিল। ইউয়েফা এতটাই বাস্তবতা থেকে দূরে যে সাধারণ ফ্যানদের উদযাপন ভিডিও সরাতে বলেছে।‘
ভিডিওগুলোর মধ্যে একটি ছিল পাবের, যেখানে কেনি ম্যাকলিনের গোলের পর সমর্থকেরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। স্কটিশ সংস্কৃতি বিষয়ক মুখপাত্র নেইল বিবি বলেন, ‘ভিডিও সরানো অত্যন্ত কঠোর পদক্ষেপ ছিল। স্কটল্যান্ডের এই জয় দেশের জন্য ইতিহাস রচনা করেছে এবং ফুটবলকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরেছে।‘

ইতালিকে অসাধারণ জয় এনে দিলেন ফ্লাভিও কোবোল্লি। বেলজিয়ামের জিজু বার্গসকে ৬-৩, ৬-৭ (৫-৭), ৭-৬ (১৭-১৫) হারিয়ে আবারও ডেভিস কাপের ফাইনালে ইতালি।
শেষ সেটের ১৭-১৫ টাইব্রেক ছিল টুর্নামেন্টের ইতিহাসে ষষ্ঠ দীর্ঘতম।
৪৩ নম্বর বাছাই বার্গস দারুণ লড়াই দেখান ২২ নম্বর বাছাই কোবোল্লির বিপক্ষে। টাইব্রেকারে দুজনই একাধিক ম্যাচ পয়েন্ট নষ্ট করেন, শেষ পর্যন্ত সার্ভিস উইনারে জয় নিশ্চিত করেন কোবোল্লি।
৩ ঘন্টা ৪ মিনিট চলা লড়াই জিতে জার্সি খুলে সতীর্থদের সঙ্গে উদযাপন করেন কোবোল্লি। কান্নায় ভেঙে পড়া বার্গসকে গিয়ে সান্ত্বনা দেন তিনিই।
এর আগে প্রথম সিঙ্গেলস সেমিফাইনালে ইতালির মাত্তেও বেরেত্তিনি বেলজিয়ামের রাফায়েল কোলিনিওঁকে ৬-৩, ৬-৪ হারিয়ে হারান। ফলে ডাবলস ম্যাচ ছাড়াই ২-০ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত হয় ইতালির।
ডেভিস কাপের টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন ইতালি। শিরোপা জয়ের হ্যাটট্রিকের লড়াইয়ে কাল ফাইনালে ইতালির প্রতিপক্ষ হবে জার্মানি-স্পেন সেমিফাইনালের বিজয়ী দল।

চলতি মাসে ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পিএসজিকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল বায়ার্ন মিউনিখ। সেই ম্যাচে লাল কার্ড দেখা লুইস দিয়াস এবার পেয়েছেন তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা।
আশরাফ হাকিমির ওপর তার ট্যাকলকে গুরুতর ফাউল হিসেবে বিবেচনা করে এই শাস্তি দিয়েছে ইউয়েফা।
গত ৫ নভেম্বর প্যারিসে ম্যাচটি দিয়াসের জন্য ছিল নাটকীয়। প্রথমার্ধে দুটি গোল করলেও বিরতির ঠিক আগে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় তাঁকে।
নিষেধাজ্ঞা পাওয়ায় আর্সেনালের বিপক্ষে বুধবার (২৬ নভেম্বর), স্পোর্টিং লিসবন (৯ ডিসেম্বর) ও ইউনিয়ন সেইন্ট-জিলোয়াজের (২১ জানুয়ারি) বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচগুলো খেলতে পারবেন না কলম্বিয়ান তারকা।
চার ম্যাচে পূর্ণ ১২ পয়েন্ট নিয়ে বর্তমানে গ্রুপের শীর্ষে আছে বায়ার্ন। লিভারপুল থেকে এই মৌসুমে যোগ দিয়েই দুর্দান্ত ফর্মে আছেন দিয়াস। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৭ ম্যাচে করেছেন ১১ গোল ও ৭ অ্যাসিস্ট।
এদিকে সার্জ নাব্রিকে নিয়ে নতুন দুশ্চিন্তায় বায়ার্ন। জার্মানির হয়ে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ৬-০ জয়ের ম্যাচে খেললেও ক্লাবে ফেরার পর অনুশীলনে মাংসপেশির চোট পেয়েছেন তিনি।
কোচ ভিনসেন্ট কোম্পানি জানিয়েছেন, ফ্রেইবুর্গের বিপক্ষে নাব্রিকে পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে পরের ম্যাচে তাকে ফিরে পাওয়ার আশা করছেন তারা।

দরজায় ধাক্কা লেগে বাঁ পায়ের আঙুল ভেঙেছে ইংল্যান্ড ফরোয়ার্ড কোল পালমারের। ফলে এক সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে তাঁকে।
চোটের কারণে পরের তিন ম্যাচে দেখা যাবে না ২৩ বছর বয়সি পালমারকে। নামা হবে না বার্নলি, বার্সেলোনা ও আর্সেনালের বিপক্ষে।
আঘাত পাওয়ার কথা জানিয়ে পালমার বলেন, “রাতে অনেকবার জেগেছি। মাথা, পা এবং সর্বত্র আঘাত লেগেছে।”
পালমারের চোটের বিষয়ে চেলসি কোচ এনজো মায়রেসকা বলেন, “গুরুতর কিছু না, কিন্তু আগামী সপ্তাহেও তাকে পাওয়া যাবে না।”
এর আগে কুঁচকির চোটে দুই মাস মাঠের বাইরে ছিলেন পালমার। সবশেষ ২০ সেপ্টেম্বর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে খেলেছিলেন। চলতি মৌসুমে চেলসির হয়ে চার ম্যাচ খেলেছেন পালমার।