
বার্সেলোনা-আতলেতিকো ম্যাচ দিয়ে প্রত্যাবর্তনের উত্তেজনা লেগেছে ক্যাম্প ন্যুতে। সংস্কারকাজের পরে কাতালান ক্লাবের নতুন রূপ দেখতে ঐতিহ্যবাহী স্টেডিয়ামটি পরিদর্শন করেছেন লিওনেল মেসি।
শৈশবের স্টেডিয়াম ভ্রমণের পরই আলোচনা জোরদার হয়—আবারও ন্যু ক্যাম্পে ফিরছেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। তবে বিষয়টি বাস্তবে অসম্ভব বটে। কারণ, ইতোমধ্যে মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ইন্টার মিয়ামির সঙ্গে নতুন করে তিন বছরের চুক্তি করেছেন মেসি।
মেসি যে বার্সেলোনায় যাচ্ছেন না, তার আরও কিছু বাস্তবসম্মত কারণ রয়েছে। ৩৮ বছর ছুঁইছুঁই রাইট উইঙ্গার ক্যারিয়ারের অন্তিমলগ্নে। ২০২৬ ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ এবং মিয়ামির সঙ্গে চুক্তি চুকলেই জার্সি তুলে রাখবেন আলমারিতে। তারপরও বার্সেলোনার ভক্তদের আবদার ও উচ্চাশা থেমে নেই।
মেসিকে নিয়ে বাড়তে থাকা গুঞ্জন নিয়ে কথা বলেছেন বার্সেলোনার স্পোর্টিং ডিরেক্টর ডেকো। ২০২১ সালে আর্থিক সংকটের কারণে চুক্তি নবায়ন না করতে পারায় কাতালান ক্লাব ছাড়তে হয়েছিল লিওকে। লা মাসিয়া, যুব টিম ও সিনিয়র টিমসহ মোট ২১ বসন্ত কাতালান ক্লাবে ছিলেন তিনি। এই প্রসঙ্গে ডেকো বলেন,
“আমি মনে করি এটা সম্ভব নয়, কারণ লিওর সঙ্গে এখনো মিয়ামির চুক্তি আছে এবং এটি কখনও বিবেচনায়ও আনা হয়নি। লিও সর্বদা লিও, এবং তিনি এখনও কিছু অবদান রাখতে পারেন; তিনি একজন মহান খেলোয়াড়। কিন্তু এটা এমন কিছু নয় যা আমরা নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি।”
আজ কো তি হি জুগেস শো-তে ডেকো আরও বলেন: “বর্তমানে এটা অসম্ভব বটে।”
এর আগে বার্সেলোনার সভাপতি জোয়ান লাপোর্তা জানিয়েছিলেন, মেসির খেলোয়াড় হিসেবে হোমকামিং পরিকল্পনা করা বাস্তবসম্মত নয়, বিশেষ করে যখন মেসি সম্প্রতি ইন্টার মিয়ামিতে আরও তিন বছরের জন্য চুক্তি করেছেন।
No posts available.
৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯:৪৭ পিএম
৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩:৫৫ পিএম
৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৫ এম

২০২২ কাতার বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডস আর ফ্রান্সের বিপক্ষে ফিরিয়ে দিয়েছেন ম্যাচ ঘোরানো সব শট। টাইব্রেকারে গোলমুখে অবিচল দাঁড়িয়ে হয়েছেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী দলের নায়ক। ২০২৬ বিশ্বকাপের ছয় মাস আগেই এমিলিয়ানো মার্তিনেস জানিয়েছেন, তিনি আবারও আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতাতে চান।
শুক্রবার বিশ্বকাপ ড্রয়ের আগে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) এক অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় মার্তিনেস বলেন,
‘আগের বিশ্বকাপ দারুণ ছিল। কিন্তু এবার উত্তেজনাটা… আরও বেশি। বোঝানো যায় না।’
ক্লাবে ট্রফি জেতা বা ব্যক্তিগত পুরস্কারের চেয়ে জাতীয় দলে খেলা মার্তিনেসের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ,
‘জাতীয় দলের হয়ে খেলাই আমার ক্যারিয়ারের আসল সুখ। দেশের মানুষ আর পরিবার আমাকে এমন শক্তি দেয়, তখন মনে হয়- বল জালে ঢুকবেই না।’
২০২৪ কোপা আমেরিকা ফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে জেতা ম্যাচে পাঁচটি সেভ করে দলকে শিরোপা এনে দেন ৩৩ বছর বয়সী মার্তিনেস।
ক্লাব ফুটবলেও ছন্দ ধরে রেখেছেন মার্তিনেস। অ্যাস্টন ভিলার হয়ে প্রিমিয়ার লিগের চলতি মৌসুমের ১১ ম্যাচে রেখেছেন চারটি ক্লিন শিট।
ব্যস্ত সূচি থাকা সত্ত্বেও বিশ্বকাপের জন্য নিজেকে তৈরির বিষয়ে কোনো দুঃশ্চিন্তা নেই মার্তিনেসের ‘শরীর আমার ভালোই সাপোর্ট করে। প্রয়োজনে দুই দিন পরপর খেলতে পারি। ৬০টা ম্যাচ খেললেও সমস্যা নেই।’
২০২২ সালে বিশ্বকাপের সেরা গোলকিপার হয়েছিলেন মার্তিনেস। আরও একবার আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্ব জয়ের স্বাদ নেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন তিনি।

জাবি আলোনসো একটু ভিন্নভাবে পেতে চেয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদকে। ঘরের কথা বাইরে নয়, পরের কথা ঘরে নয়। মিডিয়ার সামনে বাড়তি আলাপ কিংবা ড্রেসিংরুমের মিটিং ‘লিক’ হওয়া নিয়ে তিনি একটু বেশিই সতর্ক ছিলেন তিনি।
আলোনসো রিয়ালের প্লেয়ার ছিলেন। জানা আছে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর নাড়ি-নক্ষত্র। স্পেনের মিডিয়ার সবচেয়ে প্রচলিত কথাগুলো হলো—এরা তিলকে তাল বানায়, সেই তাল দিয়ে পিঠা বানায় এবং গোগ্রাসে পাঠকদের গিলায়। সেই কারণে, সেভ জোনে থাকতে চাইলেও থাকতে পারেননি আলোনসো। জড়িয়ে পড়েছেন ঝামেলায়। শুরু হয়েছে আন্তকোন্দল, ভাঙন, এবং দলও পাচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত সাফল্য।
সবশেষে লা লিগায় জিরোনার বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। এর আগে এলচে ও রায়ো ভায়োকানের বিপক্ষে দলটি পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে। এ নিয়ে রবিবার মিডিয়ার সামনে কোনো কথা বলেনি রিয়াল। চুপ থেকেই মিক্সড জোন ত্যাগ করেন সবাই।
মাঠে ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সের প্রভাব পড়েছে ড্রেসিংরুমে। চ্যাম্পিয়নস লিগে অলিম্পিয়াকসের বিপক্ষে জয়ের আগে গুঞ্জন উঠেছিল রিয়ালের কিছু খেলোয়াড় জাবির কোচিংয়ে খুশি নন। তবে প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে জয় নিয়ে ফেরার পর খানিকটা চাপা পড়েছে সেই গুঞ্জনে। কিন্তু লা লিগায় টানা তিন ড্রয়ের কারণে আবারও জাবি চাপের মুখে পড়েছেন।
সম্প্রতি দ্য অ্যাথলেটিক জানিয়েছে, এখনও কিছু খেলোয়াড় কোচের কাজের পদ্ধতিতে আস্থা রাখে না। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ক্লাবের একটি সূত্র মনে করছে আলোনসো ‘অত্যন্ত কঠিন’ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন।
দলের চোট সমস্যা:
জুড বেলিংহাম দীর্ঘ সময় চোটের সমস্যার সঙ্গে লড়াই করেছেন। এ তালিকায় আছেন তারই স্বদেশি ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ড। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দানি কারভাহালও এরপরপরই হাঁটুর ইনজুরিতে পড়েছেন এবং অন্তত জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে ফিরতে পারবেন না—যা ফেদে ভালভার্দেকে আবারও ডিফেন্সে নামানোর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
এদিকে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে মৌসুমের শুরুতে ধীরে ধীরে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছিল, কারণ আলোনসো তাকে চাপমুক্ত রাখতে চেয়েছিলেন। সেন্টার-ব্যাক টনি রুডিগার, ডেভিড আলাবা এবং ডিন হুইসেনও বিভিন্ন সময়ে ইনজুরির কারণে বাইরে ছিলেন।
ড্রেসিংরুমে আন্তঃকোন্দল:
চ্যাম্পিয়নস লিগ কিংবা লা লিগার মতো প্রতিযোগিতার জন্য স্পেন-ইউরোপের তরুণ প্রতিভাবানদের রিয়ালে থাকা উচিত বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু গ্যালাক্টিকো তারকাদের অতিরিক্ত উপস্থিতিই এখন আলোনসোর সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দ্য অ্যাথলেটিককে আলোনসো বলেছেন, দলের সিনিয়র খেলোয়াড়রা তার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, এবং প্রতিটি ম্যাচের জন্য তার যে কৌশলগত পরিকল্পনা থাকে—তা খেলোয়াড়দের কাছে ঠিকমতো পৌঁছাচ্ছে না।
হাই-প্রোফাইলদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত:
রদ্রি প্রায়ই বদলি হিসেবে নামছেন। প্রায় ৩০ ম্যাচে ৪৪২ মিনিট খেলেছেন, তবে গোল পাননি রিয়ালের এই লেফট উইঙ্গার। এনদ্রিক কখন মাঠে নেমেছেন, হয়তো ভুলেই গেছেন। ২০২৪-২৫ মৌসুমে মাত্র ১১ মিনিট খেলেছেন ব্রাজিলের এই তরুণ ফরোয়ার্ড। খুব সম্ভবত জানুয়ারিতে ধারে লিওতে যাচ্ছেন তিনি।
ভিনিসিয়ুস সমস্যা চরমে:
গেম টাইম নিয়ে জাবির ওপর প্রকাশ্যে রাগ দেখিয়েছিলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। এ জন্য অবশ্য ক্ষমাও চেয়েছেন। স্পেন কোচ চুপ ছিলেন, বলেছেন—এসব হতেই পারে। সমস্যা মিটমাট হয়ে যাওয়ার কথা। তবে ব্রাজিল লেফট উইঙ্গার আবারও আলোচনায় এসেছে। তিনি মিডিয়াকে বলেছেন, জাবির অধীনে খেলতে আর চান না।
মূলত, জাবির প্ল্যান-স্ট্যাট বা ট্যাকটিক্সের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারছেন না ভিনি। তাছাড়া, শুরুর একাদশে না নামানো বা বদলি হওয়াও তিনি মেনে নিতে পারছেন না। ২০২৭ সালে রিয়ালের সঙ্গে তার চুক্তি শেষ হবে। তবে গুঞ্জন উঠেছে, তার আগে রিয়ালের সঙ্গে চুক্তি শেষ করতে চাইছেন।
রক্ষণভাগের ঘাটতি:
২০২৪-২৫ সেশনে রিয়াল মাদ্রিদ সবচেয়ে বেশি ভুগেছে রক্ষণে। এডার মিলিতাওয়ের ইনজুরি দলকে বিপর্যস্ত করেছিল। তবে এবার ডিন হুইসেন, কারেরাস ও ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ডের মতো খেলোয়াড়দের কারণে ডিফেন্স লাইন শক্ত হয়েছে।
ভালো দিক:
দলীয় পারফরম্যান্স: বাইরে যতটা আলোচনা, মাঠের ফল ততটা খারাপ নয় রিয়ালে। মাঠের বাইরে বেশ আলোচনা থাকলেও, সত্যিকার অর্থে ততটা খারাপ অবস্থা নেই লস ব্লাঙ্কোস শিবির। লা লিগায় ১৪ ম্যাচের ১০টিতে জিতেছে দলটি, ড্র করেছে তিনটি এবং হেরেছে একটিতে।
লিগে বর্তমানে রিয়ালের পয়েন্ট ৩৩। শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার থেকে তারা ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে। পরবর্তী প্রতিপক্ষ অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ।
চ্যাম্পিয়নস লিগে পঞ্চমে থাকলেও রিয়াল আহামরি খারাপ অবস্থায় নেই। পাঁচ ম্যাচের চারটিতে জয় এসেছে।
ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স:
দলের কয়েকজন খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্স থেকেও বেশ কিছু ইতিবাচক দিক দেখা গেছে। কিলিয়ান এমবাপে নম্বর নাইনের ভূমিকায় থেকে সেটিকে দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন; মাত্র ১৯ ম্যাচে তার ২৩ গোল তাকে ইউরোপের সেরা গোলদাতাদের কাতারে দাঁড় করিয়েছে। নতুন সাইনিং আরদা গুলের দেখিয়েছেন সেই সৃজনশীল ঝলক যা তার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকেই আভাস দিয়েছিল। জুড বেলিংহাম মৌসুমের প্রথম দুই মাস কাঁধের অস্ত্রোপচারের পুনর্বাসনে কাটানোর পর ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছেন।
বিচলিত নন জাবি:
স্প্যানিশ মিডিয়াগুলো বলেছে, স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটির ডাগ-আউট সামলানোর চাপ ক্রমেই জাবিকে পিষ্ট করছে। মাঠে কাঙ্খিত ফল না আসা এবং রিয়ালের অনেক ফুটবলার কোচের সঙ্গে বিদ্রোহ—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ জটিল হয়ে পড়েছে জাবির জন্য।
তবে জাবি বলেছেন, তিনি বিচলিত নন। রিয়ালের সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের সঙ্গে তার একাধিকবার কথা হয়েছে। পেরেজ তাকে আশ্বস্ত করেছেন, “সমস্যা নেই, তুমি তোমার কাজ করে যাও।” জাবি বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দলের ফল নিয়ে কথাও বলেছেন। পেরেজ বলেছেন, “সামনের দিকে এগিয়ে যাও।”

২০২৫-২৬ মৌসুমে ষষ্ঠবারের মতো চোটে পড়েছেন স্পেনের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার দানি ওলমো। গতকাল ক্যাম্প ন্যুতে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে কাঁধের চোটে পড়েন তিনি। ফলে প্রায় চার সপ্তাহের মতো মাঠের বাইরে থাকতে হবে ওলমোকে। অর্থাৎ ২০২৫ সালে তাঁকে আর বার্সেলোনার জার্সিতে দেখা যাবে না।
গতরাতে লা লিগার ১৯তম রাউন্ডে সমতায় থাকা বার্সেলোনাকে ৬৫ মিনিটে এগিয়ে নেন ওলমো। গোলের সময় ভারসাম্য হারিয়ে বাজেভাবে পড়ে যান তিনি। তাতে কাঁধের হাড় নড়ে যায়।
মাঠেই মেডিকেল টিম সাহায্য করে বাইরে নিয়ে যায় ওলমোকে। পরবর্তীতে ড্রেসিংরুমে দলীয় চিকিৎসক রিকার্দ প্রুনা কাঁধের ডিসলোকেশন ঠিক করেন। ম্যাচ শেষে কোচ হ্যান্সি ফ্লিক বলেন, 'তার কাঁধে সমস্যা হয়েছে, কাল পরীক্ষা করার পর জানা যাবে।'
আজ পরীক্ষা শেষে বার্সেলোনারে পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অন্তত চার সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে ২৭ বছর বয়সী অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ওলমোকে।
এর আগে লাইপজিগে খেলার সময় বাম কাঁধের চোটে পড়েন ওলমো। সে সময় যেতে হয়েছিল ছুরি কাঁচির নিচে। দুই মাসের বেশি সময় মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে।
এ নিযে ২০২৫-২৬ মৌসুমে সব মিলিয়ে ২৭টি ম্যাচ মিস করেছেন ওলমো। লা লিগায় ১৩ ম্যাচে তার গোল সংখ্যা ৪টি। অ্যাসিস্ট ২টি।

২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা। বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্টের বেশিরভাগ ম্যাচ আয়োজন করবে যুক্তরাষ্ট্র। গ্রুপপর্বের কিছু ম্যাচ হবে মেক্সিকোতে। উত্তর আমেরিকার এই দেশটির একটি ভেন্যু আক্রন স্টেডিয়াম। চারটি গ্রুপ-পর্বের ম্যাচ আয়োজনের কথা রয়েছে এখানে।
তবে মেক্সিকোর আক্রন স্টেডিয়ামকে ঘিরে রক্ত হিম করার মতো খবর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। মেক্সিকোর জলিস্কো প্রদেশের এই স্টেডিয়ামের আশেপাশে এলাকা থেকে শত শত ব্যাগভর্তি মানবদেহের অবশিষ্টাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে আরও মানবদেহের অবশিষ্টাংশের খোঁজ পাওয়ার পর জলিস্কোকে বিশ্বকাপের আয়োজক শহর রাখা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
অনুসন্ধানকারী দলগুলো নিশ্চিত করেছে যে এই মৃতদেহগুলোর সঙ্গে আপরাধী গোষ্ঠীর সংযোগ রয়েছে, আর জলিস্কো হলো মেক্সিকোর অন্যতম শক্তিশালী কার্টেলের কেন্দ্র। মূলত মেক্সিকোর মাদক পাচার চক্র পরিচিত কার্টেল নামে।
মেক্সিকোতে ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছে
মেক্সিকোর রাজ্য জলিস্কোতো সক্রিয় নিউ জেনারেশন কার্টেল নামে পরিচিত মাদক চক্র। এই কার্টেলকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। মেক্সিকোর সবচেয়ে শক্তিশালী কার্টেলগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষণ সংস্থা ‘স্ট্রার্টফর’ এর তথ্য অনুযায়ী এটি দেশের সবচেয়ে আগ্রাসী কার্টেল।
এই বছরের শুরুতে, হাজার হাজার মেক্সিকোর নাগরিক রাস্তায় নেমে দেশের ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি নিখোঁজ ব্যক্তির খোঁজের জন্য প্রতিবাদ করেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ নিখোঁজ হয়েছে তখনকার প্রেসিডেন্ট ফেলিপে ক্যালদেরনের ‘ড্রাগ যুদ্ধ’ শুরুর পর থেকে।
মেক্সিকোর বাকি রাজ্যের মধ্যে জলিস্কোতেই নিখোঁজের সংখ্যা সর্বাধিক। দেশটির সামগ্রিক অপরাধের হারে শীর্ষ চারটি রাজ্যের মধ্যে এই রাজ্যের অবস্থান সবার ওপরে। মেক্সিকোর ন্যাশনাল সার্চ কমিশন অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে জলিস্কোতে ৭,৩৭৬ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এরপর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে, ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে আরও ৯,৫৯৩ জনের নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
নিখোঁজের ঘটনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে—প্রায় ছয় মাসের মধ্যে বিশ্বকাপের ম্যাচ আয়োজনের জন্য রাজ্যটি কতটা প্রস্তুত?
অবশ্য তদন্তকারীরা নিরাপত্তা বাড়াতে বড় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে ৩ হাজার অতিরিক্ত নজরদারি ক্যামেরা, বর্মবাহিত যানবাহন, মেটাল ডিটেক্টর এবং ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন।
বিশ্বকাপের আগে চিভাস দে গুয়াদালাহারার হোম স্টেডিয়াম আক্রন আরও আয়োজন করবে আগামী মার্চের ইন্টার-কনফেডারেশন প্লে-অফ ম্যাচগুলোও। সেখানে নিউ ক্যালেডোনিয়া মুখোমুখি হবে জ্যামাইকা, আর এই ম্যাচের বিজয়ী খেলবে ডিআর কঙ্গোর বিপক্ষে। এই ম্যাচের বিজয়ী দল জায়গা পাবে বিশ্বকাপের মূল পর্বে।

হান্সি ফ্লিকের কোচিংয়ে সবশেষ মৌসুমে অপ্রতিরোধ্য ছিলেন রাফিনহা। ইউরোপিয় ফুটবলে ২০২৪-২৫ মৌসুমে প্রতিপক্ষের জালে প্রায় প্রতি ম্যাচে গোল উৎসব মেতে উঠত বার্সেলোনা। আর কাতালান ক্লাবটির আক্রমণভাগের প্রাণভোমরা ছিলেন রাফিনহা। ঘরোয়া ট্রেবল জেতা ওই মৌসুমে ক্লাবের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলে অবদান রাখা ফুটবলারও এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারই।
মনে হতে পারে হঠাৎ গত মৌসুমের আলাপ কেন? ব্যালন ডি’অর। ফুটবলের সর্বোচ্চ ব্যাক্তিগত এই স্বীকৃতি সবশেষ উঠেছে পিএসজির ফরোয়ার্ড উসমান দেম্বেলের হাতে। অনেকের মতে এই সোনালী ট্রফি ফরাসি এই ফরোয়ার্ডেরই প্রাপ্য ছিল। তালিকায় দুইয়ে ছিলেন বার্সার তারকা উইঙ্গার লামিনে ইয়ামাল। আর তাঁর সতীর্থ রাফিনহার জায়গা হয়েছে পাঁচ নম্বরে। ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারকে যেখানে অনেকে ব্যালন ডি’অর জয়ের অন্যতম দাবীদার ধরে রেখেছিলেন, সেই রাফিনহা কিনা পাঁচ নম্বরে।
অনেকের মতো এবার আতলেতিকো মাদ্রিদের কোচ দিয়াগো সিমিওনেও নিজের বিস্ময় প্রকাশ করলেন রাফিনহার ব্যালন জিততে না পারা নিয়ে। গতকাল রাতে ন্যূ ক্যাম্পে আতলেতিকোর বিপক্ষে বার্সেলোনার ৩-১ গোলে জয়ের ম্যাচে কাতালান ক্লাবটির হয়ে প্রথম গোলটি করেন রাফিনহা।
আরও পড়ুন
| আতলেতিকোকে হারিয়ে চূড়ায় পোক্ত বার্সা |
|
ম্যাচের পর স্পেনের ক্রীড়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ফুটবল স্পানা’ কে বার্সার বিপক্ষে ম্যাচের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন আতলেতিকোর কোচ সিমিওনে। রাফিনহাকে প্রশংসায় ভাসিয়ে ৫৫ বছর বয়সী এই কোচ বলেছেন, ‘সে এক অবিশ্বাস্য খেলোয়াড়। সে যে কোনো জায়গায় খেলতে পারে—উইঙ্গার, মিডফিল্ডার, স্ট্রাইকার, এমনকি উইং-ব্যাক হিসেবেও।
রাফিনহার ব্যালন ডি’অর জিততে না পারা অবাক করে সিমিওনেকে, ‘রাফিনিহা গোল করতে পারে, সুযোগ তৈরি করতে পারে, চাপ সৃষ্টি করতে পারে। আমি বুঝতে পারি না কীভাবে সে ব্যালন ডি’অর জিতেনি। আমি সবসময় তাকে বেছে নিতাম।’
ব্যালন ডি’অর জেতা দেম্বেলে এগিয়ে যান মূলত চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেই। সবশেষ মৌসুমে পিএসজির হয়ে ট্রেবল জেতা পিএসজির ফরোয়ার্ড ৬০ ম্যাচে ৩৭ গোল ও ১৫ অ্যাসিস্ট করেছিলেন।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দারুণ পারফরম্যান্স ছিল রাফিনহারও। ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতার সবশেষ আসরে সর্বোচ্চ গোলে অবদান রেখেছিলেন ২৮ বছর বয়সী উইঙ্গার। পুরো মৌসুমে ৫৭ ম্যাচে ৩৪ গোলের সঙ্গে করেছেন ২২টি অ্যাসিস্ট। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ব্লকব্লাস্টার সেমি ফাইনালে ইন্টার মিলানের কাছে বার্সা হেরে গেলে ব্যালন ডি’অর জেতার দৌড়ে পিছিয়ে পড়েন রাফিনহা। শেষ পর্যন্ত তাঁর জায়গা হয় পাঁচে।