১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৩:৩২ এম

টিম বাস থেকে নামছেন আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা, প্রবেশ করবেন হোটেলে। স্বাভাবিকভাবেই লিওনেল মেসিকে ঘিরে আকর্ষণ বাকিদের চেয়ে ঢের বেশি। কিন্তু ওই বাস থেকে নামার সময় নজর কাড়লেন ডিফেন্ডার ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোও। বাস থেকে নামছেন, কাঁধে তার ব্যাগ, হাতে অক্সিজেন বুস্টার। বলিভিয়া যাত্রা মানেই যেন ফুটবলারদের বাড়তি আতঙ্ক, আলাদা দুশ্চিন্তা। যার নেই কোনো সমাধান, মানিয়ে নেওয়াই একমাত্র উপায়।

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে আর্জেন্টিনা এখন বলিভিয়ায়। বুধবার রাতে রাজধানী লা পাজে স্বাগতিকদের বিপক্ষে মাঠে নামবে বিশ্বচ্যাপিয়নরা। মেসি সে ম্যাচে খেলবেন কি না তা নিয়ে আছে সংশয়। ইকুয়েডরের বিপক্ষে নিজ ইচ্ছায় বদলি হয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন, কোচ লিওনেল স্কালোনিও রবিবার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে গেছেন মেসির খেলা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটবে সোমবার অনুশীলনের পর।

বলিভিয়ার এই মাঠ অবশ্য মেসির জন্য নতুন কিছু নয়। নিজের ক্যারিয়ারে এই মাঠে চার ম্যাচ খেলেছেন, জিততে পেরেছেন মোটে একটায়। যদিও বলিভিয়া দক্ষিণ আমেরিকার দুর্বল দলগুলোর একটাই। তবে সেই গল্পটাই বদলে যায় যখন বলিভিয়া নিজেদের ঘরের মাঠে খেলে। নিজেদের মাঠের রাজা ওরা। ১৯৯৩ সালের পর থেকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অ্যাওয়ে ম্যাচে আর জয়ের দেখাই পায়নি বলিভিয়া। এই সময়ে সবমিলিয়ে তারা খেলেছে ৬৫ ম্যাচ। অথচ ঘরের মাঠে শেষ ২৪ ম্যাচে তারা জিতেছে ১৪টায়, ড্র করেছে ১০টা।

ঘরের মাঠই আসলে বলিভিয়ার শক্তি। কিন্তু তার কৃতিত্ব পুরোটাই ভৌগলিক। সমুদ্রপৃষ্ঠ্ থেকে প্রায় ৩৬৫০ মিটার (১১,৯৭৫ ফিট) উঁচুতে অবস্থান দেশটির। ভিনদেশীদের জন্য অতো উঁচুতে যে কোনো খেলাই দুঃস্বপ্নের মতো। রোমেরোরা সে কারণেই হাতে করে অক্সিজেন বুস্টার নিয়ে প্রবেশ করেছেন বলিভিয়ায়।
এই গল্প অবশ্য নতুন কিছু নয়। বলিভিয়ায় ম্যাচ খেলতে গেলে যে আসল প্রতিপক্ষ উচ্চতা তা এতোদিনে প্রতিষ্ঠিত সত্য। হোম অ্যাডভান্টেজ পুরোটাই কাজে লাগানোর সুযোগ লাগে বলিভিয়ানদের সামনে। এই নিয়ে অবশ্য বহু আলোচনা-সমালোচনাও হয়েছে। ২০০৭ সালে ২৫০০ মিটারের উঁচুতে ফুটবল ম্যাচ নিষিদ্ধ করেছিল ফিফা। তাতে ভেন্যু হিসেবে বলিভিয়া বাদও পড়েছিল। সে সময় ফিফার এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছিলেন খোদ ডিয়েগো ম্যারাডোনা। তোপের মুখে পরে ফিফাও ২০০৮ সালে সেই সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসে। বলিভিয়াতে আবারও ফেরে ফুটবল।
আরও পড়ুন: মেসির কারিশমাতেই বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শুভসূচনা আর্জেন্টিনার
ওই ঘটনার কিছুদিন পরই বলিভিয়ার মাঠে গিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে আর্জেন্টিনা হেরে এসেছিল ৬-১ গোলে। সে সময় আবার দলের কোচ ছিলেন ম্যারাডোনা। ওই হার আর্জেন্টিনার ইতিহাসেরই সবচেয়ে বড় হারগুলোর একটি।
অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে এর আগেও বলিভিয়ায় গেছে আর্জেন্টিনার। বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ চলার সময় হাফটাইমে পুরো ব্রাজিল দলকে একসঙ্গে অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহার করতেও দেখা গেছে। বিশ্বকাপ বাছাই খেলতে গিয়ে মাঠেই একবার বমিও করতে হয়েছিল লিওনেল মেসিকে। এতো ফিরিস্তি শুনে আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, কী এমন উচ্চতা যার কারণে বিশ্বসেরা ফুটবলাররাই বেমালুম বোকা বনে যান বলিভিয়ায়?
উচ্চতা যত বেশি, বায়ুর চাপ তত কম। অর্থাৎ আপনার গ্রহণ করা অক্সিজেন রক্তে ট্রান্সফার করতে শরীরকে কসরত করতে হয় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। এর ফলে শরীরও দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সহজ কথায় বললে, বলিভিয়ার যে উচ্চতা তাতে সেখানে স্বাভাবিক অবস্থানের চেয়ে আরও ২০-২৫ শতাংশ শক্তি বেশি প্রয়োজন। অভ্যস্ততা না থাকলে সেটা আপনাকে ভোগাবেই- মেসি, নেইমার সবার বেলায় সত্য সেটা।
অবশ্য এখানেই শেষ নয়। অমন উচ্চতায় বলের স্বাভাবিক গতিতেও পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষ করে, বলের গতিপ্রকৃতির অস্বাভাবিক পরিবর্তনের কথা প্রায় সময় বলেছেনও ফুটবলাররা। বলিভিয়া মূলত প্রতিপক্ষের এই অনভ্যস্ততার সুযোগটাই কাজে লাগায়। ঘরের মাঠের দূরন্ত্ব ফর্মের সঙ্গে বলিভিয়ার অ্যাওয়ে ফর্মের তফাৎও তাই প্রমাণ করে।
আর্জেন্টিনা বলিভিয়ার সঙ্গে খেলার আগে ওদের মাঠে অনুশীলন করবে একদিন। মানিয়ে নেওয়ার জন্য ওইটুকু সময়ই আছে স্কালোনির দলের। ২০২০ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বলিভিয়ার মাঠ থেকে জয় নিয়ে ফিরেছিল তার দল। তাতে ১৫ বছর ধরে বলিভিয়ার মাঠে জয়হীন থাকার ‘ভুতুড়ে’ রেকর্ডটাও আর্জেন্টিনার পিছু ছেড়েছিল। যদিও সেই ম্যাচেও আর্জেন্টিনাকে ভুগতে হয়েছিল বলিভিয়ার উচ্চতায়।
এবার আর্জেন্টিনা লা পাজে পা রেখেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হিসেবে। কিন্তু তবুও স্বস্তি নেই। ঘুরে ফিরে সেই ‘উচ্চতা’ প্রশ্নের সমাধান জানা নেই কারও। স্কালোনিই বোধ হয় সবচেয়ে ভালোভাবে জবাবটা দিয়েছেন, “অনেক কিছুই তো চেষ্টা করা হয়েছে, আর যে কোনো দলই ওখানে গিয়ে হিমশিম খায়। এই নিয়ে এতো কথা বলতে চাই না, কারণ এসব তো আর পরিবর্তন করা যাবে না। এটা পরিস্কার একটা অ্যাডভান্টেজ ওই দলের জন্য, কিন্তু এই নিয়ে আমাদের অভিযোগ করার কোনো সুযোগ নেই।“
No posts available.
২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮:৩১ পিএম

গত ৫ নভেম্বর বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে গোড়ালির চোটে পড়েছিলেন। দীর্ঘ বিরতির পর অবশেষে মাঠে ফিরলেন আশরাফ হাকিমি। পিএসজির এই রাইট-ব্যাকের ফেরার দিন বড় জয় পেয়েছে মরক্কো।
গতকাল রাতে আফ্রিকা কাপ অব নেশন্সে (আফকন) রাবাতের উত্তাল প্রিন্স মৌলায় আবদেল্লাহ স্টেডিয়ামে জাম্বিয়াকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে মরক্কো। জোড়া গোল করেছেন অলিম্পিয়াকোসের ফরোয়ার্ড আইয়ুব এল কাবি। এরমধ্যে একটি ছিল চোখধাঁধানো বাইসাইকেল কিকে গোল। মরক্কোর অন্য গোলটি করেন রিয়াল মাদ্রিদের উইঙ্গার ব্রাহিম দিয়াজ।
প্রতিযোগিতার এবারের আসরের স্বাগতিক মরক্কো গ্রুপ ‘এ’-এর চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করল। তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে মরক্কো। তিন ম্যাচে তিন ড্রয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে রাউন্ড অব সিক্সটিনের টিকিট কেটেছে এই গ্রুপের মালি।
ম্যাচের নবম মিনিটেই গোলের খাতা খোলেন এল কাবি। কর্নার থেকে আজেদ্দিন উনাহি বল ভাসিয়ে দিলে দারুণ ডাইভিং হেডে সেটি জালে পাঠান তিনি, জাম্বিয়ার গোলরক্ষক উইলার্ড মওয়ানজার চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না।
আরও পড়ুন
| কামব্যাক পুরস্কার জিতে রোনালদোর প্রশংসা পগবার |
|
২৭ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ব্রাহিম দিয়াজ। বাঁ দিক থেকে আবদে এজালজৌলির ক্রস এল কাবিকে এড়িয়ে গেলে বক্সের ভেতর থেকে নিখুঁত শটে গোল করেন রিয়াল মাদ্রিদের তারকা।
শুরুর একাদশে রিয়াল বেতিসের উইঙ্গার আব্দে এজালজৌলির অন্তর্ভুক্তি মরক্কোর আক্রমণভাগে আলাদা মাত্রা যোগ করে। বার্সেলোনায় দুই বছর কাটানো ২৪ বছর বয়সী এই ফুটবলারের সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদের দিয়াজের বোঝাপড়া ছিল দারুণ।
বিরতির পাঁচ মিনিট পরই ব্যবধান ৩-০ করেন এল কাবি। কোমোরোসের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের শুরুর ম্যাচে বাইসাইকেল কিকের পর এবারও তিনি করেন এক অবিশ্বাস্য অ্যাক্রোবেটিক গোল। পেছনের দিকে সরে গিয়ে উনাহির ক্রসে লাফিয়ে উঠে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি, আর তাতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে গোটা রাবাত।
৬৪ মিনিটে নুসাইর মাজরাউইয়ের বদলি হিসেবে আশরাফ হাকিমি মাঠে নামার সময় পুরো গ্যালারি করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে। মাঠে নামার পরই প্রাণবন্ত দেখায় তাকে । হাকিমির ফেরা মরক্কো কোচ ওয়ালিদ রেগরাগুইয়ের জন্য বড় স্বস্তি বটে।
গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শেষ ষোলোতে ওঠা মরক্কো ৪ জানুয়ারি রাবাতে গ্রুপ ‘সি’, ‘ডি’ বা ‘ই’-এর সেরা তৃতীয় দলের একটির মুখোমুখি হবে।
প্রতিযোগিতার অন্য ম্যাচে কোমোরোসের বিপক্ষে বল দখলে আধিপত্য দেখালেও শেষ দিকে আমাদু হাইদারার বিতর্কিত লাল কার্ডে কিছুটা চাপের মুখে পড়ে মালি। শেষ পর্যন্ত পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে তারা পরের রাউন্ডে ওঠে। দুই পয়েন্ট পাওয়া কোমোরোস তৃতীয় স্থানে থেকে এখন অপেক্ষায়।
এর আগে গ্রুপ ‘বি’-তে মিশর ০-০ গোলে ড্র করে অ্যাঙ্গোলার বিপক্ষে। এই ড্রয়ের পরও অবশ্য গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করল মোহাম্মদ সালাহরা। একই গ্রুপে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩-২ গোলে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে শেষ ষোলোতে জায়গা নিশ্চিত করে।

‘স্বয়ং ঈশ্বর অনুরোধ করলেও আমি আমার খেলানোর কৌশল পরিবর্তন করবো না’—এমনটাই ঘোষণা দিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ম্যানেজার রুবেন আমোরিম। নিজের সিদ্ধান্তে অটল থেকে ২০২৪–২৫ মৌসুম এবং নতুন বছরেও বেশ সমালোচনার শিকার হন পর্তুগিজ কোচ।
রুবেন আমোরিম অবশ্য নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, এখনই সঠিক সময় ম্যান ইউনাইটেডের ফরমেশন পরিবর্তনের। তবে তিনি জানিয়েছেন, গণমাধ্যমের চাপে এমনটা করছেন না তিনি। বরং আগে যদি সেটি আগে করতেন, তাহলে আর ফিরে আসার সুযোগ থাকত না রেড ডেভিলসদের।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম ১২ মাস ৩-৪-৩ ফরমেশনে খেলা পরিচালনা করেন আমোরিম। গত মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে ১৫তম স্থানে থেকে যাত্রা শেষ হয় তাদের।
২০২৫–২৬ মৌসুমে ভঙ্গুরদশা কাটিয়ে সফলতার পথে ম্যান ইউনাইটেড। বর্তমানে তারা প্রিমিয়ার লিগে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। এই ম্যাচে তিন পয়েন্ট পেলে শীর্ষ চারে উঠে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। লিগে আসন্ন ম্যাচে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে পাচ্ছে না ইউনাইটেড। ব্রায়ান এমবেউমো ও আমাদ দিয়ালো আফ্রিকা কাপ অব নেশনসে ব্যস্ত সময় পার করছে। অধিনায়ক ব্রুনো ফার্নান্দেসও চোটে ছিটকে পড়েছেন।
বক্সিং ডেতে নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে ১–০ গোলের জয়ে ৪–২–৩–১ ফরমেশনে খেলেছিল ইউনাইটেড। আমোরিম আশা করছেন, এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে দল নতুন এই ফরমেশনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠবে।
আমোরিম বলেন,
“গত মৌসুমে যখন আমি এখানে (ম্যান ইউনাইটেড) আসি, তখন বুঝেছিলাম—এই সিস্টেমে ভালো খেলানোর মতো খেলোয়াড় হয়তো আমার হাতে নেই। সেটি ছিল একটি প্রক্রিয়ার শুরুর ধাপ।”
তিনি আরও বলেন,
“আমরা তখন একটি পরিচয় গড়ে তুলতে চাইছিলাম। আজ পরিস্থিতি ভিন্ন। আমাদের হাতে খুব বেশি খেলোয়াড় নেই, তাই মানিয়ে নিতে হচ্ছে এবং খেলোয়াড়দের বোঝাতে হচ্ছে—কেন আমরা এই পরিবর্তন করছি। এটা আপনাদের (গণমাধ্যম) বা সমর্থকদের চাপে নয়।”
পর্তুগিজ কোচ বলেন,
“আপনারা যখন বারবার সিস্টেম বদলানোর কথা বলছিলেন, তখন আমি পরিবর্তন করতে পারিনি। কারণ খেলোয়াড়রা ভাবত—আমি আপনাদের চাপে বদলাচ্ছি। আমরা যখন আমাদের সিস্টেমে ভালো খেলছি, ঠিক সেই সময়টাই পরিবর্তনের সঠিক মুহূর্ত।”

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে পল পগবার কাছের সতীর্থ ছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। গ্লোব সকারে ‘বেষ্ট কামব্যাক অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার জেতার পর পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করলেন তিনি।
দুবাইয়ে রবিবার জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে বর্ষসেরা প্লেয়ার-ফরোয়ার্ড ও কোচসহ একাধিক পদে বছরসেরা পুরস্কার দেয় গ্লোব সকার । যেখানে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘বেষ্ট ক্যামব্যাক অ্যাওয়ার্ড’। পিছিয়ে পড়া বা বাদ পড়ার পর ক্রীড়ায় নিজেকে জিইয়ে রাখার জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে।
২০২৩ সালে রক্তে নিষিদ্ধ উপাদান পাওয়ায় চার বছরের নিষেধাজ্ঞায় পড়েন পগবা। যা পরবর্তীতে ১৮ মাসে কমানো হয়। এরপর তিনি মোনাকোর হয়ে ফিরেন। ফরাসি বিশ্বকাপজয়ী এই ফরোয়ার্ডের প্রত্যাবর্তন ক্রীড়া বিশ্বে চমক সৃষ্টি করে। সমালোচকেরাও শুরুর দিকে ধারণা করেছিলেন, হয়তো তিনি আর ফিরবেন না।
ফেরার পর পগবা বলেন,
“দুঃসময়ের দিন শেষ। আমি সামনে তাকাচ্ছি এবং আবারও স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি।”
রবিবার পুরস্কার জয়ের পর পগবা বলেন,
“আমি কখনও ইচ্ছে করে অ্যান্টি-ডোপিং এজেন্সির নিয়ম ভঙ্গ করিনি। একজন ডাক্তারের পরামর্শে পুষ্টি সাপ্লিমেন্ট নিয়েছিলাম, যা পুরুষ খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে কোনো প্রভাব ফেলে না। আমি সততার সঙ্গে খেলি। যদিও এটি কঠোর দায়বদ্ধতার লঙ্ঘন হিসেবে ধরা হয়, তবুও কোর্টের বিচারকদের আমি ধন্যবাদ জানাই যারা আমার কথা শুনেছেন। এটি আমার জীবনের জন্য অত্যন্ত চাপের সময় ছিল। কারণ যা কিছু কঠোর পরিশ্রমে অর্জন করেছি, তা সব থেমে গেছে।”
বেষ্ট কামব্যাক অ্যাওয়ার্ড জয়ের অনুভূতি প্রকাশ করে তিনি বলেন,
“এটি কখনও সহজ ছিল না। বলা যায়, এই পুরস্কার আমার জীবনের সেরা মুহূর্তগুলোর একটি। মানুষ সবসময় সেরা সময় ও বিশেষ মুহূর্তকে ভালোবাসে। এটি আমার জন্য বিশেষ—আমার জন্য এবং আমার স্ত্রীর জন্য। সে আমাকে সাহায্য করেছে এবং ফিরে আসতে সহযোগিতা করেছে। আমার সন্তানরাও সব সময় আমাকে হাসি জুগিয়েছে।”
পগবা রোনালদোর প্রশংসা করতে ভোলেননি,
“রোনালদোর শৃঙ্খলা অবিশ্বাস্য—আমি এরকম অন্য কারো মাঝে খুব একটা দেখিনি। তাঁর শৃঙ্খলা একেবারেই অন্য স্তরের। অনেক প্রফেশনাল খেলোয়াড় দেখি, তারা সময়মতো আসে, রিকভারি করে, সবকিছু করে। কিন্তু রোনালদো এমন একজন, যিনি প্রতিদিন সেখানে থাকেন এবং থামেন না। সেই ব্যক্তি হলেন ক্রিস্টিয়ানো।”

২০২৬ ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের টিকিটের দাম নিয়ে সমালোচনা হয়েছে বেশ। ফুটবল সমর্থকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি স্মরণকালের সবচেয়ে বড় স্ক্যান্ডাল।
ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো মনে করেন, বিশ্বকাপ টিকিটের দাম সহনীয় পর্যায়ে আছে। বরং তিনি এটিকে বিশ্বকাপের প্রতি দর্শকদের “পাগলামি” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
সোমবার দুবাই স্পোর্টস ওয়ার্ল্ড সামিটে ইনফান্তিনো বলেন,
“ইতোমধ্যে আমাদের ৭ মিলিয়ন টিকিট বিক্রি হয়েছে এবং গত ১৫ দিনে আমরা ১৫০ মিলিয়ন টিকিটের অনুরোধ পেয়েছি। প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন করে টিকিটের অনুরোধ আসছে। এটি স্পষ্ট করে যে বিশ্বকাপ কতটা জনপ্রিয়।”
ইনফান্তিনো আরও বলেন,
“একশ বছরে বিশ্বকাপের টিকিট বিক্রি হয়েছে মোট ৪৪ মিলিয়ন। ভাবা যায় কি? এটা সত্যিই ফুটবলের প্রতি মানুষের ক্রেজ।”
সমালোচনার পর ফিফা ১০৪ ম্যাচের জন্য কিছু সাশ্রয়ী মূল্যের টিকিট চালু করেছে।
বিবিসি স্পোর্টসকে তিনি বলেন,
“আমরা জনগণের প্রতিক্রিয়া শুনেছি এবং এই নতুন টিকিট ক্যাটাগরি চালু করাই সঠিক পদক্ষেপ বলে মনে করেছি।”
ইনফান্তিনো আরও জানিয়েছেন, টিকিট বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ বিশ্বব্যাপী ফুটবলে পুনঃবিনিয়োগ করা হবে।

প্রথমবারের মতো নারী ফুটবল লিগে এসেই চমক উপহার দিল বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপি। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন নাসরিন একাডেমিকে গোলবন্যায় ভাসাল দলটি।
কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে সোমবার নাসরিন একাডেমিকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বিকেএসপি। প্রথমার্ধে তিন গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে আরও পাঁচবার জালের দেখা পায় তারা। দারুণ জয়ে লিগ শুরু করল বিকেএসপি।
অনূর্ধ্ব-১৭ ও ১৯ দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে দল গড়েছে বিকেএসপি। ২০২৩-২৪ মৌসুমে তারকা খেলোয়াড়দের সমাবেশ থাকলেও নাসরিন একাডেমি এবার দল গুছিয়েছে অনভিজ্ঞদের নিয়ে।
খেলা শুরুর একাদশ মিনিটে গোলকিপারকে কাটিয়ে ফাঁকা পোস্ট পেয়ে গিয়েছিলেন অয়ন্ত বালা, কিন্তু বলে স্পর্শ জোরে হওয়ায় তিনি নাগাল পাওয়ার আগেই এক ডিফেন্ডার কর্নার করে দেন। পরে অয়ন্ত বালার বাঁকানো কর্নারে বল সরাসরি জালে ঢুকতে যাচ্ছিল, সুমি রানী ক্লিয়ার করেন।
প্রতিপক্ষের ওপর চাপ ধরে রেখে বিকেএসপি এগিয়ে যায় ২২ মিনিটে। কর্নারের পর বক্সের জটলার ভেতর থেকে লক্ষ্যভেদ করেন আইরিন খাতুন। চার মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আলমিনা। নিচু শটে জাল খুঁজে নেন তিনি।
৩৩ মিনিটে ব্যবধান ৩-০ করেন বিকেএসপির অয়ন্ত বালা। গোলকিপারকে কাটিয়ে নিজেই শট নিতে পারতেন প্রতিমা মুন্দা, কিন্তু তিনি পাস বাড়ান বাম দিকে থাকা অয়ন্ত বালাকে, সহজ শটে জাল খুঁজে নেন এই মিডফিল্ডার।
দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলের খেলায় গতি কিছুটা কমে। এই অর্ধের প্রথম আধা ঘন্টায় কার্যকরী কোনো আক্রমণ শানাতে পারেনি দুই দল। ৭৩ মিনিটে সহজ সুযোগ নষ্ট করার দুই মিনিট পর প্রতিমা দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করে ব্যবধান বাড়ান। ৮৩ মিনিটে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ফাতেমা আক্তার লক্ষ্যভেদ করেন।
শেষ দিকে ফাতেমার শট গোলকিপার দুইবার ফেরালেও তৃতীয়বার ব্যর্থ হন। যোগ করা সময়ে উম্মে কুলসুমের শট গোলকিপারের হাত ফসকে বেরিয়ে জালে জড়ালে ৮-০ গোলের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বিকেএসপি।
দিনের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ পুলিশ এফসিকে ২-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড। আগামীকাল একই স্টেডিয়ামে হবে লিগের তিনটি ম্যাচ। খেলাগুলো সরাসরি সম্প্রচার করছে বাফুফের ইউটিউব চ্যানেল।