৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৮:৫১ পিএম
ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশন, শনিবার হাই কমিশন প্রাঙ্গনে দ্বিতীয় বারের মত মিয়াঁ সুলতান খান দাবা টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে। বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন টুর্নামেন্টেটি আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা করে। বার্ষিক এই টুর্নামেন্টটি পাকিস্তানের কিংবদন্তি দাবাড়ু মিয়াঁ সুলতান খানের সাফল্যের প্রতি সম্মান জানিয়ে আয়োজন করা হয়।
এই টুর্নামেন্টে কূটনৈতিক সম্প্রদায়, পেশাজীবি, শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ সহ বিভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ডের প্রায় ২০০ জন দাবা খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণে করেছে, যা বাংলাদেশে খেলাটিকে ঘিরে তীব্র আকর্ষণের প্রমাণ দেয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ সুজাউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশরাফুদ্দিন আহমেদ উজ্জল, গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মুর্শেদ এবং বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক মাস্টার খেলোয়াড় রানী হামিদ।
ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত নিনা পি কাইংলেট, শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ধর্মপাল ওয়েরাক্কোদি, ব্রুনাই দারুসসালামের হাইকমিশনার হাজি হারিস বিন উসমানসহ ঢাকাস্থ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
টুর্নামেন্টে সাকলাইন মোস্তফা সাজিদ চ্যাম্পিয়ন এবং মনন রেজা নীড় রানার্সআপ হন। সুব্রত বিশ্বাস এবং নাঈম হক যথাক্রমে তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থান অর্জন করেন। সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং পাকিস্তান হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ টুর্নামেন্টের বিজয়ী এবং সেরা পারফর্মারদের ট্রফি এবং নগদ পুরস্কার প্রদান করেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নিজ বক্তব্য উপদেষ্টা ফারুকী বাংলাদেশের দাবা খেলোয়াড়দের এবং কূটনৈতিক সম্প্রদায়কে একে অপরের সাথে সংযোগ স্থাপনে চমৎকার সুযোগ প্রদানের জন্য পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রশংসা করেন। তিনি পাকিস্তান হাইকমিশনের ভবিষ্যতের যেকোনো উদ্যোগে বাংলাদেশ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেন।
পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ টুর্নামেন্ট আয়োজনে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং দাবা ফেডারেশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি ক্রীড়ানুরাগের মাধ্যমে সীমান্ত অতিক্রম করে মানুষে মানুষে সংযোগ জোরদার করার ক্ষেত্রে ক্রীড়া ইভেন্টের গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন “এই ধরণের ইভেন্টের মাধ্যমেই আমরা পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে মানুষে মানুষে যোগাযোগ এবং বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন জোরদার করার চেষ্টা করছি”। তিনি আরও বলেন এই ইভেন্টের লক্ষ্য হল মিয়াঁ সুলতান খানের সমৃদ্ধ ইতিহাস উদযাপন করা এবং বাংলাদেশের দাবা প্রেমীদের এবং কূটনৈতিক সম্প্রদায়কে একটি সুস্থ বিনোদনে একত্রিত করা।
টুর্নামেন্টের শুরুতে, হাইকমিশনার প্রিন্স করিম আগা খান (৪র্থ) এর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন এবং তাকে পাকিস্তানের একজন প্রকৃত বন্ধু হিসেবে অভিহিত করেন, যিনি তার দূরদর্শী নেতৃত্বে মানব সেবায় অবিস্বরণীয় অবদান রেখেছেন। টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারীরা তার স্মরণে এক মিনিট নীরবতাও পালন করেন।
হাইকমিশনার টুর্নামেন্টের বিজয়ী এবং সেরা খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানান এবং আগামী বছর তৃতীয় মিয়াঁ সুলতান খান টুর্নামেন্টের জন্য সকল অংশগ্রহণকারীদেরকে অগ্রীম শুভকামনা জানান। তিনি সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, গ্র্যান্ডমাস্টার, আন্তর্জাতিক মাস্টার এবং গণমাধ্যমকর্মীদের অনুষ্ঠানে উপস্থিতির জন্য ধন্যবাদ জানান।
No posts available.
৬ নভেম্বর ২০২৫, ৩:৩৮ পিএম
৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০০ পিএম
৫ নভেম্বর ২০২৫, ৪:২০ পিএম

সাউথ এশিয়ান গেমসের (এসএ) আয়োজন নিয়ে শঙ্কাটা আগে থেকেই ছিল। শেষ পর্যন্ত যা রূপ নিতে যাচ্ছে বাস্তবে। প্রায় দুই বছরের (২২ মাস) জন্য পিছিয়ে যাচ্ছে এসএ গেমস।
আগামী বছরের ২৩ থেকে ৩১ জানুয়ারি পাকিস্তানের তিনটি শহরে হওয়ার কথা ছিল ১৪তম এসএ গেমস। সেটি এখন পিছিয়ে ২০২৭ সালের নভেম্বরে পুনঃনির্ধারিত হতে যাচ্ছে।
বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন (বিওএ) ফেডারেশনগুলোকে এসএ গেমস সংক্রান্ত মেইল করে। সেখানে উল্লেখ করেছে, বাহরাইনে সাউথ এশিয়ান অলিম্পিক কাউন্সিলের সভায় দুটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথমত, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে এসএ গেমস আয়োজন সম্ভব নয়।
দ্বিতীয়ত, ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে আরেক দফা জানাবে ২০২৭ সালের নভেম্বরে পাকিস্তান গেমস আয়োজন করতে পারবে কি না।
তাই আগামী বছর এসএ গেমস হচ্ছে না এটা অনেকটাই নিশ্চিত। আর এক বছর পর পাকিস্তান আদৌ গেমস আয়োজন করতে পারবে কিনা সেটাও সংশয় রয়েছে।
ডিসেম্বরে যদি কোনো কারণে গেমস আয়োজনে পাকিস্তান অপারগতা প্রকাশ করে তখন সাউথ এশিয়ান অলিম্পিক কাউন্সিলের আবার নতুন করে স্বাগতিক খুজতে হবে।

পল্টনের আউটার মাঠের বৃহস্পতিবার সকালের আবহটা ছিল একটু ভিন্ন। চারিদিকে সামিয়ানা মোড়ানো। গেটের সামনে কড়া নিরাপত্তা। মাঠের বাইরটাও পরিপাটি ও পরিচ্ছন্ন। পশ্চিম দিকের গেট দিয়ে ঢুকতেই দেখা গেল অন্যরকম দৃশ্য। স্থানীয়দের খেলার মাঠে বসানো আর্চারির টার্গেট বোর্ড। কয়েকজন আর্চার তির-ধনুক নিয়ে টার্গেট নিশানায় ব্যস্ত, যাঁরা শনিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া এশিয়ান আর্চার চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিচ্ছেন।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে ৩০টিরও বেশি দেশ। ৮-১২ নভেম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে, পরের দুই দিনের প্রতিযোগিতা গড়াবে আর্মি স্টেডিয়ামে। সে লক্ষ্যে আউটার মাঠে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সারছেন আর্চাররা।
প্রতিযোগিদের বেশিরভাগই কম্পাউন্ড আর্চারির প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। একজনের মাঝে ভিন্নতা দেখা গেল। গভীর মনোযোগে রিকার্ভে নিশানাভেদে ব্যস্ত তিনি। প্রাকটিস কিটে প্যালেস্টাইনের পতাকা। তাতেই স্পষ্ট তাঁর আগমন বার্তা।
আলাপচারিতায় জানা গেল, রাশা ইয়াহিয়া আহমেদ প্যালেস্টাইনের নাগরিক। প্রথমবারের মতো এসেছেন বাংলাদেশে। তাঁর মুখে শোনা গেল বাংলাদেশ নিয়ে উচ্ছ্বাস,
‘বিমানবন্দর থেকেই সবাই অত্যন্ত আন্তরিক ও অতিথিপরায়ণ ছিলেন। বিমানবন্দর থেকে হোটেলে যাওয়ার পুরো পথে সবাই খুবই ভদ্র ও বন্ধুসুলভ। আমি খুবই খুশি। সবাই আমাদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছে এবং সমর্থন দেখিয়েছে।’
দীর্ঘসময় প্যালেস্টাইনে নির্মমতা চালাচ্ছে ইসরায়েল। দখলদারদের হামলা থেকে রেহায় পাচ্ছে না ছোট-বড় কেউই। সাময়িক যুদ্ধবিরতির কথা বলা হলেও প্যালেস্টাইনের শহর ও গ্রামে ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ সেটলারদের হামলা বেড়েই চলেছে।
প্যালেস্টেইনে বর্বর হামলার প্রতিবাদে প্রায়ই মিছিল হয় বাংলাদেশে। বিষয়টি রাশার অজানা নয়। তিনি কৃতজ্ঞ, এবং জানিয়েছেন একদিন বাংলাদেশের জনগণকে নিজ দেশ প্যালেস্টিনে আমন্ত্রণ জানাবেন,
‘আমরা জানি এবং অনুভব করি, বাংলাদেশ আমাদের পাশে আছে। আমি এখানে এসেই সেই ভালোবাসা ও সমর্থন অনুভব করেছি। অনেক মানুষ এগিয়ে এসে সমর্থন দিয়েছেন। আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই—আপনাদের এই সমর্থন আমাদের কাছে পৌঁছায়, আমরা তা গভীরভাবে কৃতজ্ঞচিত্তে গ্রহণ করি। ইনশাআল্লাহ, একদিন আমরা আপনাদের প্যালেস্টিনে স্বাগত জানাব।’
রাশার জন্ম প্যালেস্টাইনের গাজা শহরে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে এই আর্চার এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাজ করছেন। সেখানে একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে স্ট্র্যাটেজিক অফিস ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কাজের ফাঁকে চালিয়ে যান আর্চারির প্রাকটিস। এতে পূর্ণ সমর্থন পান ফিলিস্তিন আর্চারি ফেডারেশন থেকে।
বছর চারেক আগে আর্চারিতে যাত্রা শুরু রাশার। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছেন বাংলাদেশে। এখানে পদক জয়ের পাশাপাশি প্যালেস্টাইনের পতাকা বাংলাদেশে ওড়াতে চান তিনি,
‘আমরা পতাকা উড়াই ঐক্যের প্রতীক হিসেবে এবং এটা আমাদের লড়াই করার মনোবল আরও বাড়ায়।’
রাশার সেই লড়াই ও অনুপ্রেরণার গল্পে জড়িয়ে কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল। তিনি বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে এশিয়ান আর্চারি ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাশার সঙ্গে আলাপচারিতার শেষ দিকে মাঠে ঢোকেন বাংলাদেশ আর্চারির এই রূপকার। তাঁকে দেখে এগিয়ে কুশলাদি বিনিময় করেন রাশাসহ প্যালেস্টাইন থেকে আসা আরও তিন আর্চার ও কোচ।
রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল বলেন,
‘এই ছেলেমেয়েরা আমার সন্তানের মতো। তাঁরা কিন্তু আমাকে বাবা বলেও ডাকে। আপনারা জানেন, আরবিতে বাবাকে বাবা-ই বলে। রাশার সঙ্গে আমার দেখা ৫-৬ বছর আগে। তখনই সে আমাকে বলেছিল আর্চারি খেলতে চায়, বাংলাদেশে আসতে চায়। এরপর বছর তিনেক আগে জর্ডানে একটি আর্চারির টুর্নামেন্টে দেখি সে খেলছে। তাকে বলেছিলাম, তোমাকে বাংলাদেশে নিয়ে যাব। এবার চ্যাম্পিয়নশিপে চারজন এসেছে। শুধু তাঁরা নয়, ১০ দেশের অন্তত একশ জনকে সবধরনের সহায়তা করছি আমরা।’
এবারই প্রথমবার আর্চারির কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশে এলেন প্যালেস্টাইনের আর্চাররা। এখানকার আয়োজন ও অভ্যর্থনায় বেশ সন্তুষ্ট রাশা। বাংলাদেশে এসে মিষ্টি খাওয়া হয়েছে তাঁর। সামনে আরও কিছু স্থানীয় খাবারের স্বাদ নিতে চান তিনি।
রাশার সবচেয়ে বড় ইচ্ছে আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে রিকার্ভে পদক জেতা,
‘যখন আমি প্যালেস্টাইনের জার্সি পরি, এটা আমার জন্য অনেক অর্থবহ। আমি সবসময় সঙ্গে প্যালেস্টাইনের পতাকা রাখি। এটা অনন্য অনুভূতি, যা কথায় প্রকাশ করা যায় না।’
সবিশেষ ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে বাংলা ভাষায় রাশা বলেন,—
“প্যালেস্টাইন, বাংলাদেশ ভালোবাসি।”

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) প্রথমবারের মতো শহীদ সাজিদ স্মৃতি স্পোর্টস কার্নিভাল আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয় ছাত্রশক্তি। গতকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ ভবনের নিচতলায় এই কার্নিভালের উদ্বোধন করা হয়। এটি চলবে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত।
ক্লেমনের স্পন্সরশিপে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন শহীদ সাজিদের বোন ফারজানা হক। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালক রিফাত হাসান।
প্রথম দিনের শুরুতে জনপ্রিয় ইনডোর ইভেন্ট সাপ-লুডো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অংশ নেন প্রায় ২৪০ জন নারী শিক্ষার্থী। প্রথম স্থান অধিকার করেন সামিরা আক্তার।
দিনের অন্য দুই খেলা—আর্ম রেসলিংয়ে প্রথম হন ইমতিয়াজ, আর ট্রেজার হান্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ছাত্রশক্তি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ, সমাজসেবা সম্পাদক পদপ্রার্থী ও প্রধান সংগঠক ফেরদৌস শেখ, এবং ক্রীড়া সম্পাদক পদপ্রার্থী ও কার্নিভালের কো-অর্ডিনেটর মো: ফেরদৌস হোসেন সোহান।

এশিয়া কাপের ট্রফি কাণ্ডের রেশ এখনো তরতাজা। বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে এবার উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে আইসিসির ত্রৈমাসিক বোর্ড সভাও। ভারত-পাকস্তান দুই দলই অভিযোগ-পাল্ট অভিযোগ নিয়ে হাজির হতে পারে সেই সভায়।
ক্রিকেটে দুই দলের এই রেষারেষির মধ্যে স্রোতের বিপরীতে হাঁটল ভারত হকি দল। ভারতের নিশ্চিত করেছে ভবিষ্যতে পাকিস্তানের সঙ্গে করমর্দনে কোনো খেলোয়াড়কে বাধা দিবে না তারা।
ভারতীয় হকি সংস্থা স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ম্যাচে পাকিস্তান দলের সঙ্গে হাত মেলানোয় কোনো নিষেধাজ্ঞা রাখবে না তারা।
গত মাসে মালয়েশিয়ায় সুলতান অফ জহর কাপে পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের সঙ্গে রীতি মেনে হাত মেলায় ভারতের হকি দলের খেলোয়াড়রা। তাতে ভারতের ক্রীড়াপ্রেমীদের একাংশ বিষয়টি ক্ষোভ প্রকাশ করে।
বিতর্কের মধ্যে ভারতের হকি দলের সেক্রেটারি জেনারেল ভোলানাথ সিংহ দেশটির একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন,
‘আমরা ক্রিকেটকে অনুসরণ করতে পারি না। ক্রিকেটারেরা যা করেছেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। আমরা অলিম্পিক চার্টার মেনে চলি। আন্তর্জাতিক হকি সংস্থার নির্দেশমতো আমাদের চলতে হয়। কোনো দেশের খেলোয়াড়দের সঙ্গে করমর্দন বা হাই-ফাইভ করা যাবে না, এমন কোনো নির্দেশ আমাদের খেলোয়াড়দের আমরা দেইনি।’
ভোলানাথ আরও যোগ করেন,
‘আমরা খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা নিয়ে চলি। খেলোয়াড়দেরও কোনো নির্দেশ দিই না। আগামী দিনেও পাকিস্তানের সঙ্গে খেলা হলে খেলোয়াড়দের কোনো নির্দেশ দেওয়া হবে না। আমাদের লক্ষ্য শুধু খেলে জয় ছিনিয়ে আনা।’
সবশেষ এশিয়া কাপে ‘হ্যান্ডশেক’ নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয় ভারতীয় ক্রিকেট দল। অধিনায়ক সুর্যকুমার যাদব পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগার সঙ্গে হাত মেলাতে অস্বীকার করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান দল পুরষ্কার অনুষ্ঠান বর্জন করে।
এরপর তো জল গড়ায় অনেক দূর। পিসিবি চেয়ারম্যান ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সভাপতি মহসিন নাকভির কাছ থেকে ট্রফি নিতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত। শেষ পর্যন্ত ট্রফি ছাড়াই ভারতীয় দল উদ্যাপন করে। এখনো তারা ট্রফিটি হাতে পায়নি।
একই পথে হাঁটে ভারতের নারী ক্রিকেট দলও। নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাতে অস্বীকৃতি জানায় হারমানপ্রীত কৌরের দল।

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন হতে যাচ্ছে আগামী ৩০ নভেম্বর। একই দিনে হবে সংস্থাটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)। নির্বাচন ও এজিএম দুটোই কক্সবাজারে করতে যাচ্ছে বিওএ।
আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। সোমবার কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে হওয়া বিওএর কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এই কমিশন অনুমোদন পায়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিওএর সহসভাপতি অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু। সংস্থাটির সভাপতি ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান রাষ্ট্রীয় সফরে বিদেশে থাকায় তিনি সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি।
কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সালেহীন মনোয়ার, যিনি বিকেএসপির সাবেক মহাপরিচালক। তাঁর সঙ্গে সদস্য হিসেবে থাকছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী সদস্য তাহমিনা রহমান।