৭ মে ২০২৪, ৯:৪৭ এম
বিশ্ব জুড়ে ভীষণ জনপ্রিয়তা থাকলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে টেনিস এখনও বেশ পিছিয়ে থাকা এক ইভেন্টের নাম। তবে সম্প্রতি অসাধারণ এক কীর্তিতে টেনিসেই বাংলাদেশের জন্য গর্ব বয়ে এনেছেন মাসফিয়া আফরিন। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশনের (আইটিএফ) ‘হোয়াইট ব্যাজ’ রেফারি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। এর ফলে ভবিষ্যতে গ্র্যান্ড স্ল্যাম ম্যাচ পরিচালনার প্রাথমিক ধাপ সম্পন্ন করেছেন মাসফিয়া।
বাংলাদেশ থেকে সারোয়ার মোস্তফা জয় ২০০০ সালে আইটিএফ হোয়াইট ব্যাজ চেয়ার আম্পায়ারের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। তবে প্রথম ‘হোয়াইট ব্যাজ’ রেফারি হলেন মাসফিয়াই৷ খেলোয়াড়ি জীবনে অনূর্ধ্ব-১০ থেকে অনূর্ধ্ব-১৬ টেনিসে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়া ১৮ বছর বয়সী মাসফিয়া এখন খেলা ছেড়ে পুরোদস্তুর রেফারি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রেফারি হিসেবে এরই মধ্যে তার নামের পাশে রয়েছে দারুণ কিছু অর্জন।
বাবা মোহাম্মদ মাহমুদ আলম টেনিস ফেডারেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার সুবাদে টেনিসের সাথে মাসফিয়ার সখ্যতা ছোটবেলা থেকেই। খেলোয়াড় হিসেবে ক্যারিয়ার না এগিয়ে গেলেও ভিন্ন ভূমিকার দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছেন মাসফিয়া।
টি-স্পোর্টসের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে মাসফিয়া কথা বলেছেন তার খেলোয়াড় থেকে রেফারি হওয়ার পথচলা সহ নানা বিষয় নিয়ে। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হল :
প্রশ্ন : শুরুতেই অভিনন্দন আপনাকে। সম্প্রতি আইটিএফ এর হোয়াইট ব্যাজ রেফারির স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। তবে বাংলাদেশের প্রথম কোন রেফারি হিসেবে আপনি এমন বড় স্বীকৃতি পেলেন। যে কোনো প্রথমের অংশ হওয়াটা দারুণ কিছুই। অনুভূতিটা কেমন?
মাসফিয়া : ধন্যবাদ। আসলেই দারুণ লাগছে। এক বছর ধরে এটার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি আমি। সেটার ফল পাওয়ায় ভালো লাগছে। আর প্রথম সবকিছুই তো স্পেশাল।
প্রশ্ন : দশ বছরের খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারে খেলেছেন অনূর্ধ্ব-১০, অনূর্ধ্ব-১২, অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে। এটাই বলে দেয়, একদম শৈশব থেকেই টেনিসের প্রতি দুর্বলতা ছিল আপনার। শুরুটা কীভাবে হয়েছিল জানতে চাওয়া এই কারণে, ক্রিকেট ফুটবলের জনপ্রিয়তার সবদিক থেকেই টেনিস আছে বেশ পিছিয়ে। সেখানে টেনিসের প্রতি আপনার এই ভালোবাসা কীভাবে হল বা কার মাধ্যমে?
মাসফিয়া : ভালোবাসা ঠিক বলব না। ভালো লাগত টেনিস। ছোটবেলা থেকেই টেনিস খেলি আমি। স্কুলের অনেকে অন্যান্য খেলা খেললেও আমার কাছে টেনিসই বেশি ভালো লাগত। তাছাড়া দেখলাম অন্যান্য খেলার চেয়ে টেনিসে কিছু করার সুযোগটা বেশি আছে। এখান থেকেই আগ্রহের জন্ম। আর আমার বাবা টেনিস ফেডারেশনের কাজ করার সূত্রে টেনিসের সাথে পরিচয় অনেক আগে থেকেই। সেই সমর্থনটা তাই ছিল।
প্রশ্ন : টেনিসে ক্যারিয়ার গড়তে চান, এটা জানার পর পরিবার এবং অন্যান্যদের কাছ থেকে সমর্থন কেমন ছিল? আর একটা হল, এই পেশায় অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কারণে নেতিবাচক মন্তব্য শুনতে হয়েছিল কখনও?
মাসফিয়া : না, আমার সাথে এমন কিছু হয়নি কখনও। পরিবার থেকে সমর্থন পেয়েছি সবসময়।
প্রশ্ন : কাঁধের চোটের কারণে খেলা ছেড়েছিলেন বলে শোনা যায় প্রায়ই। আর এরপরই নাকি রেফারিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখেন। আসলেই কী এমন কিছু হয়েছিল? সেটা হলে চোটের পর যখন জানলেন খেলোয়াড় হিসেবে ক্যারিয়ার শেষ, সেই সময়ে বিষয়টা মেনে নেওয়াটা কতোটা কঠিন ছিল?
মাসফিয়া : প্রথমেই একটা বিষয় ক্লিয়ার করতে চাই। আমি জানিনা এটা কীভাবে ছড়িয়ে পড়েছে চোটে পড়ার পর আমি খেলে ছেড়ে দিয়েছি। এখানে একটা ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। তাছাড়া এটা একটা নেগেটিভ বার্তাও দেয় যে চোটে পড়ার পর রেফারি হতে চেয়েছি। আসলে এমন কিছুই হয়নি। চোটে পড়েছিলাম। এরপর কিছুদিন খেলার বাইরে ছিলাম। ফিরে এসে খেলার সুযোগ ছিল, কিন্তু সেই ইচ্ছাটা আর জাগেনি, তাই খেলোয়াড় হিসেবে সেখানেই ক্যারিয়ারের ইতি।
প্রশ্ন : রেফারি হওয়ার শুরুটা তাহলে কীভাবে হল?
মাসফিয়া : দেখলাম টেনিসের ম্যাচ অফিসিয়েটিং নিয়ে কাজ করার ভালো সুযোগ আছে, তাই এখানে নাম লেখালাম। গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে ন্যাশনাল স্কুল সার্টিফিকেশন প্রথমবার হয়েছিল। অভিজ্ঞতার জন্যই সেখানে অংশ নিয়েছিলাম। একটি পরীক্ষা দিতে হয় এবং এই পরীক্ষায় আমি প্রথম হই। সেখানে রেফারি হিসেবে ছিলেন ভারতের অভিষেক ব্যানার্জি। উনিই আমাকে অনেক উৎসাহ দেন। দুই দিনের কোর্সে ভালো করার পর আমার কাছে মনে হয়েছিল, এটা আমার জন্য ভালো একটা সুযোগ। এরপর হোয়াইট ব্যাজের জন্য কাজ শুরু করি। হোয়াইট ব্যাজের জন্য আইটিএফের কাছে আমার নাম সুপারিশ করেছিলেন অভিষেক ব্যানার্জিই।
প্রশ্ন : গ্র্যান্ড স্ল্যামের ম্যাচ পরিচালনার স্বপ্নের কথা বলেছেন আগে। টেনিসে আপনার প্রিয় খেলোয়াড় কে এবং নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়ের ম্যাচ পরিচালনা করার স্বপ্ন কি লালন করেন?
মাসফিয়া : আমার মনে হয় একজন রেফারি হিসেবে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটা আমার জন্য হয়ত ঠিক হবে না।
প্রশ্ন : সম্প্রতি ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ে সাথিরা জাকির জেসি দারুণ কাজ করছেন। মেয়েদের আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনার পর ছেলেদের ম্যাচে (ডিপিএলে) আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন তিনি। কাছাকাছি সময়ে টেনিসে আপনার এই অর্জন। আম্পায়ার বা রেফারিং পেশায় মেয়েদের এভাবে বেশি বেশি এগিয়ে আসাটা কীভাবে দেখছেন?
মাসফিয়া : খুব ভালো লাগছে। মেয়েরা সব সেক্টরেই এগিয়ে আসছে। আম্পায়ার বা রেফারি হিসেবে মেয়েরা যত এগিয়ে আসবে, ততই ভালো। আমার নিজের জায়গা থেকে সুযোগ হলে অন্যদেরও সাহায্য করার চেষ্টা করব। আমি মনে করি আমাকে দেখে অনেকেই এই পেশায় আসতে আগ্রহী হবে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের পক্ষ থেকে পুরো মিশনে কেমন সমর্থন পেয়েছেন?
মাসফিয়া : আমি আগেও টেনিস ফেডারেশনের সমর্থন পেয়েছি এবং এবারও তারা আমাকে যথাসাধ্য সাহায্য করেছেন এটা পেতে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশে টেনিসের প্রসারের জন্য কী কী করনীয় বলে মনে করেন এবং সম্ভাবনা দেখছেন কতটুকু আগামীতে?
মাসফিয়া : এটা তো জানেনই যে টেনিস খেলাটা একেবারেই ব্যক্তিগত। অন্যান্য খেলার মত এখানে দলগত প্রয়াসটা নেই। তাই এখানে ভালো করার জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগ, পৃষ্ঠপোষকতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এসবের সমন্বয় হলে ভালো কিছু হতেও পারে।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫:৫৪ এম
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬:৩২ এম
দেশের জন্য বড় এক সম্মানের উপলক্ষ নিয়ে এলেন পাক্ষিক ক্রীড়া ম্যাগাজিন ‘ক্রীড়াজগত’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদ হোসেন খান দুলাল। এশিয়ার ক্রীড়া সাংবাদিকদের সর্বোচ্চ সংস্থা এআইপিএস এশিয়া কে 'লিজেন্ড অব এআইপিএস এশিয়া অ্যাওয়ার্ড'-এ তাকে সম্মানিত করেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে এআইপিএস এশিয়ার কংগ্রেসে এশিয়ার ছয়জন বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিককে তাঁদের আজীবন কর্মকাণ্ডের জন্য এই সম্মানে ভূষিত করা হয়। তাদেরই একজন মাহমুদ হোসেন খান দুলাল।
অন্য পাঁচজন সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত ও নেপালের। এবার নিয়ে দ্বিতীয়বার এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হল। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দেশের খ্যাতিমান ক্রীড়া সাংবাদিকদের এই সম্মানে ভূষিত করা হবে।
বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতির সাবেক সভাপতি দুলাল মাহমুদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন এআইপিএস-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়োন দারাজ। এআইপিএস এশিয়ার কংগ্রেসে বাংলাদেশ থেকে অংশ নিয়েছেন সনৎ বাবলা, কাজী শহীদুল আলম, সামন হোসেন ও সুদীপ্ত আনন্দ।
বড়সড় পরিবর্তন আনা হল বাংলাদেশের মোট ৪২ টি ক্রীড়া ফেডারেশনে। একযোগে এই ফেডারেশনগুলোর সভাপতিকে অপসারণ করেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। এর আগে দাবা ও কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতিকে অপসারশনের পাশাপাশি ব্রিজ ফেডারেশনের সভাপতিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব হুমায়ুন রশিদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, “জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন ২০১৮ এর ২২ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার দেশের বিদ্যমান ফেডারেশন/এসোসিয়েশন/বোর্ড/সংস্থার কার্যক্রম অধিকতর সক্রিয় ও সংস্কারের উদ্দেশ্যে উক্ত ফেডারেশন/এসোসিয়েশন/বোর্ড/সংস্থার বিদ্যমান সভাপতিগণকে এতদ্বারা অপসারণ করিল।”
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অংশ হলেও তারা এই আইনের মধ্যে নেই। এই দুই বোর্ডের সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সরকারি হস্তক্ষেপ এলেই নেমে আসবে আইসিসি ও ফিফার নিষেধাজ্ঞা। তাই এই দুটি সংস্থার সভাপতি নির্বাচিত হন নিজ নিজ গঠনতন্ত্র মেনে। বিসিবিতে এরই মধ্যে পদত্যাগ করা নাজমুল হাসান পাপনের জায়গায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ফারুক আহমেদ।
বাংলাদেশে মোট অনুমোদিত ফেডারেশন আছে ৫৫টি। ফুটবল ও ক্রিকেট ছাড়া এখনও সভাপতি বদল করা হয়নি হকি ও সুইমিং ফেডারেশনে। এই দুটি ফেডারেশন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অংশ এবং সরকারি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় চাইলে এখানেও পরিবর্তন আনতে পারবেন।
বাংলাদেশের হকিতে ‘ওস্তাদ ফজলু’ এক পরচিত নাম। পুরো নাম হাজি মো. ফজলুল ইসলাম হলেও দেশের হকিতে সবাই ‘ওস্তাদ ফজলু’ নামেই চেনে তাঁকে। আজ সবার পরিচিত ফজলু চলে গেছেন না ফেরার দেশে।
ওস্তাদ ফজলুর হাত ধরে রফিকুল ইসলাম কামাল, রাসেল মাহমুদ জিমিসহ বহু খেলোয়াড় বাংলাদেশের হকিতে নাম লিখিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে হকির আঙিনায় বুধবারে নেমেছে শোকের ছায়া। বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে নিজ বাসার বারান্দায় পড়ে যান। হাসপাতালেও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ততক্ষনে সব শেষ।
পুরোদস্তুর একজন হকি অন্তঃপ্রাণ মানুষ ছিলেন ফজলু। স্টিক আর বল কখনোই ছাড়তে পারেননি। তারই স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন এশিয়ান হকি ফেডারেশনের সম্মাননা। পেয়েছেন আরও কিছু পুরস্কারও। হকির জন্য নীরবে দীর্ঘদিন কাজ করে যান তিনি।
No recent posts available.
No recent posts available.
No recent posts available.
No recent posts available.