এশিয়া কাপের প্রথম তিন ম্যাচেই ছিলেন ব্যর্থ। আর তাতেই প্রশ্ন উঠেছিল তাওহীদ হৃদয়ের যোগ্যতা নিয়ে। বড় মঞ্চে নিজেকে কতটা প্রমাণ করতে পারবেন হৃদয় এমন একটা শঙ্কাও ছিল। সেই হৃদয়ই রানে ফিরলেন দলের প্রয়োজনের সময়ে।
৮৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ দল তখন বিপাকে। এমন সময়েই দলের হাল ধরলেন হৃদয়। সাথে পেয়েছেন বড় ভাই মুশফিকুর রহিমকে। দুজনে মিলে একটু একটু করে টেনে তোলার চেষ্টা করেন বাংলাদেশকে।
আরও পড়ুন: হৃদয় রানে ফিরলে লাভটা বাংলাদেশেরই
তাওহীদ হৃদয়ও দেখা পেয়েছেন দলের অর্ধশতকের। পাঁচ ইনিংস পর আবার হাফ সেঞ্চুরি করতে পারলেন হৃদয়। সবশেষটা করেছিলেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রামে। আর প্রেমাদাসায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এল নিজের চতুর্থ অর্ধশতকটা।
বাঁচা মরার ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে এখনো লড়ে যাচ্ছেন হৃদয়। মুশফিকও আউট হয়ে গেলে এবার হৃদয় সঙ্গী করে চলেছেন তাঁরই বন্ধুকে শামীম পাটোয়ারিকে। যুব দলের হয়ে একসাথে খেলা এই দুইজনের দিকে তাকিয়েই বাংলাদেশ।
প্রথম দুই ম্যাচে অন্য ব্যাটাররা রানের জন্য সংগ্রাম করলেও নাজমুল হোসেন শান্ত ছিলেন সাবলীল। চোটের কারণে অধিনায়ককে হারানো বাংলাদেশ তৃতীয় ম্যাচে একশর আগেই চার উইকেট হারিয়ে পড়ে গেল প্রবল চাপের মুখে। তবে বুক চিতিয়ে লড়ে দুর্দান্ত এক জুটিতে দলকে উদ্ধারে এগিয়ে এলেন অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ ও অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ। দুজনের ফিফটিতে শুরুর চাপ কাটিয়ে বাংলাদেশ পেল লড়াই করার মত একটা পুঁজি।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে টসে জিতে আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশের স্কোর ৮ উইকেটে ২৪৪।
ম্যাচের আগে বড় ধাক্কায় বাংলাদেশ। কুঁচকির চোটে এই ম্যাচ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকে ছিটকে যান শান্ত, যিনি ছিলেন দারুণ ছন্দে। নিজের ১০০তম ওয়ানডেতে তাই অধিনায়কত্বের দায়িত্ব বর্তায় মিরাজের কাঁধে।
আরও পড়ুন
আগে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, নাহিদ রানার অভিষেক |
তবে আগে ব্যাটিং নেওয়ার পর তার দলের চিত্রটা সুবিধার হয়নি প্রথম ২০ ওভারে। প্রথম দুই ম্যাচে ত্রিশের ঘরে দুটি ইনিংস খেলা সৌম্য সরকার এদিনও ভালো শুরু পান। তবে সেটা বড় করতে পারেননি। আজমতউল্লাহ ওমারজাইয়ের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিন চারে করেন ২৪ রান।
৫৩ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙার চার রান বাদেই সাজঘরের পথ ধরেন আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। পুরো সিরিজেই হতাশাজনক ব্যাটিং করা তাওহীদ হৃদয় আরও একবার ব্যর্থ হন। শুরু থেকেই নড়বরে থাকার পর আউট হন রশিদ খানের বলে।
মিরাজের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটের শিকার হন এই ম্যাচ দিয়ে একাদশে ফেরা জাকির হাসান। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪ উইকেটে মাত্র ৭২।
আরও পড়ুন
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকেও ছিটকে গেলেন শান্ত |
এরপরই শুরু হয় মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহর প্রতিরোধ। একজন ব্যাট হাতে ভালো ছন্দে থাকলেও অন্যজন এই ফরম্যাটে সাম্প্রতিক সময়ে ছিলেন না একেবারেই রানের মধ্যে। মাহমুদউল্লাহ সেই চাপ কাটিয়ে উঠতে শুরু থেকেই করেন ইতিবাচক ব্যাটিং। আর জুটি গড়ায় মনোযোগ দেওয়া মিরাজ ব্যাটিং করেন কিছুটা ‘টেস্ট’ মেজাজে।
ফলে মাহমুদউল্লাহ যেখানে ব্যাট করেন প্রায় ৮০-৯০ স্ট্রাইক রেটে, সেখানে মিরাজ প্রায় পুরো ইনিংসেই স্ট্রাইক রেট রাখেন ৬০-এর মধ্যে। তবে উইকেটের আচরণ ও পরিস্থিতি বিবেচনায় একটা বড় জুটির ছিল ভীষণ প্রয়োজন। আর সেই কাজটা ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে করেন দুজন।
তাদের ক্রমেই জমে ওঠা জুটি ধীরে ধীরে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনে। আফগান বোলারদের হতাশ করে দলকে এনে দেন শক্ত ভিত। একে একে দুজনই তুলে নেন ফিফটি। শেষ পর্যন্ত ১৩৫ রানের জুটির ইতি ঘটে মিরাজের বিদায়ে। তার আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক ১১৯ বলে করেন ৬৬ রান।
আরও পড়ুন
নেই অধিনায়ক শান্ত, কেমন হবে বাংলাদেশে একাদশ? |
এরপর অন্য ব্যাটাররা কেউই পারেননি বলার মত অবদান রাখতে। একেবারে শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান কেবল মাহমুদউল্লাহ। যেভাবে ব্যাট করছিলেন, তাতে শতকটা প্রাপ্যই ছিল তার। তবে ইনিংসের শেষ ওভারে সেই সমীকরণ আর মেলাতে পারেননি অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। রান আউটে কাটা পড়েন ৯৮ রানে। সেঞ্চুরি মিস করলেও খুশি হতেই পারেন দলের বিপদে দারুণ এক ইনিংস খেলতে পেরে।
সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচের আগে বড় ধাক্কা খাওয়া বাংলাদেশকে মাঠে নামতে হচ্ছে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে। দারুণ ফর্মে থাকা এই বাঁহাতি ব্যাটার কুঁচকির চোটে ছিটকে গেছেন এই ম্যাচ থেকে। তার জায়গায় নিজের শততম ওয়ানডে ম্যাচে অধিনায়কত্ব করবেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭৭ রান করা শান্তরা জায়গায় দলে এসেছে টপ অর্ডার ব্যাটার জাকির হাসান। একাদশে পরিবর্তন এসেছে আরেকটি। পেসার তাসকিন আহমেদের জায়গায় এই ম্যাচ খেলবেন নাহিদ রানা। আগেই টেস্ট অভিষেক হয়ে যাওয়া এই তরুণ পেসারের এবার হচ্ছে সাদা বলের অভিষেক।
আরও পড়ুন
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকেও ছিটকে গেলেন শান্ত |
তিন ম্যাচের সিরিজে সমতা ১-১। তৃতীয় ম্যাচটি সরাসরি দেখতে চোখ রাখুন টি-স্পোর্টস নেটওয়ার্কে।
বাংলাদেশ একাদশ :
মেহেদি হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, সৌম্য সরকার, জাকির হাসান, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ, জাকের আলি অনিক,, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, নাহিদ রানা।
১ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৭ দিন আগে
৮ দিন আগে
১৯ দিন আগে