৮ জুন ২০২৪, ৪:২৬ পিএম
মাত্র তিন উইকেটে শ্রীলঙ্কা যখন ১০০ রান করে ফেলেছিল, বাংলাদেশকে বড় একটা টার্গেট দেওয়ার দিকেই চোখ ছিল রানেরই। তবে মুস্তাফিজুর রহমান ও রিশাদ হোসেনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে সামনে মামুলি স্কোরই গড়তে পারে লঙ্কানরা। রান তাড়ায় শুরুটা মোটেও আশাব্যঞ্জক না হলেও তাওহীদ হৃদয়ের ক্যামিওতে জয়ের পথ সুগম হয় নাজমুল হাসান শান্তর দলের। তবে আরেকটি ব্যাটিং বিপর্যয়ে হারের শঙ্কা উঁকি দিচ্ছিল বেশ। তবে মাহমুদউল্লাহর ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ এক ক্যামিওতে জয় দিয়েই বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হল বাংলাদেশের।
ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে ‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে বাংলাদেশ পেয়েছে ২ উইকেটের জয়। শ্রীলঙ্কার দেওয়া ১২৫ রানের টার্গেট তারা স্পর্শ করেছে ৬ বল হাতে রেখেই।
এক ম্যাচে দুই পয়েন্ট নিয়ে তিনে এখন বাংলাদেশ। সমান পয়েন্ট নিয়ে রান-রেটে এগিয়ে প্রথম দুই আছে যথাক্রমে দক্ষিণ আফ্রিকা ও নেদারল্যান্ডস। টানা দুই পরাজয়ে গ্রুপের তলানিতে শ্রীলঙ্কা। চারে আছে এক ম্যাচ হারা নেপাল।
আরও পড়ুন: ‘সাকিব আল হাসান মানেই কিংবদন্তি’
চোটের কারণে এই ম্যাচের জন্য ফিট হতে পারেননি শরীফুল ইসলাম। তবে চোট কাটিয়ে দলে ফেরেন আরেক পেসার তাসকিন আহমেদ। তানজিম হাসান সাকিবের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে চার মেরে আগ্রাসনের ইঙ্গিত দেন পথুম নিশাঙ্কা। তাসকিনকে কুশাল মেন্ডিস আক্রমণে স্বাগত জানান টানা দুই বাউন্ডারিতে। তবে শেষ হাসি হাসেন বোলারই।
অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল পুল করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হয়ে যান কুশাল। ক্রিজে গিয়ে প্রথম বলেই চার মেরে দেন কামিন্দু মেন্ডিস। পঞ্চম ওভারটি করেন সাকিব আল হাসাব, ব্যাটার নিশাঙ্কা চড়াও হন বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডারের ওপর। চারটি চারে তুলে নেন ১৬ রান। আক্রমণে এসে প্রথম বলেই ৪ রান করা কামিন্দুকে ফেরান মুস্তাফিজুর রহমান।
বাংলাদেশের চিন্তার কারণ হয়ে দ্রুতগতিতে রান তুলে ফিফটির দিকেই যাচ্ছিলেন নিশাঙ্কা। আবারও দলের ত্রাতা হিসেবে হাজির হন মুস্তাফিজুর। তার কাটারে বিভ্রান্ত হয়ে ক্যাচ তুলে দেন এই ডানহাতি ব্যাটার। তার আগে মাত্র ২৭ বলে করেন ৪৮ রান। চাপ বজায় রেখে এর পরের কয়েকটি ওভারে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের সেভাবে রান বাড়ানোর সুযোগ দেননি বাংলাদেশের বোলাররা।
১৫তম ওভারের ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ওভারটা করেন রিশাদ। তরুণ এই লেগ স্পিনার প্রথমে ফেরান চরিথ আসালাঙ্কাকে। পরের বলেই আবার আঘাত। এবার তার শিকার হন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে এরপর সেভাবে রানই তুলতে পারেনি শ্রীলঙ্কা।
তাতে ২০ ওভার শেষে তাদের স্কোর দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ১২৪। ১৭ রানে ৩ উইকেট নেন মুস্তাফিজুর, আর ২২ রানে সমানসংখ্যক উইকেট নেন রিশাদ।
এমন একটা টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে বাংলাদেশকে দুশ্চিন্তায় ফেলে প্রথম ওভারে রানের খাতা খোলার আগে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার। সেই ধাক্কা সামলে ওঠার আগে দ্বিতীয় ওভারে নুয়ান থুসারার প্রথম শিকারে পরিণত হন তানজিদ হাসান তামিম। বোল্ড হন মাত্র ৩ রানে।
দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে রানের গতি কমে যায় বাংলাদেশের। অধিনায়ক শান্ত ব্যর্থ হন বিপদে দলকে পথ দেখাতে। ইনিংসের শুরু থেকেই সংগ্রাম করার পর ১৩ বলে মাত্র ৭ রানে থামে তার পথচলা। অন্যপ্রান্তে লিটন দাস ব্যাট করছিলেন ১০০ স্ট্রাইক রেটে। তবে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত তাওহীদ ব্যাটিং করেন স্বাভাবিক মেজাজেই। তাতে সচল হয় রানের চাকা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দ্বৈরথ ও সুপার এইট সমীকরণের মারপ্যাঁচ
শুরুটা করেন হাসারাঙ্গাকে স্লগ সুইপে দারুণ এক ছক্কা হাঁকিয়ে। এরপর লিটনও মাথিশা পাথিরানাকে ছক্কা মারেন। তবে ম্যাচ বাংলাদেশের দিকে হেলে পরে মূলত ১২তম ওভারে। প্রথম তিন বলে হাসারাঙ্গাকে হ্যাটট্রিক ছক্কা মেরে বল ও রানের ব্যবধান একেবারেই কমিয়ে ফেলেন তাওহীদ। তবে অতি-আগ্রাসী হতে গিয়ে আরেকটি বড় শট মারার প্রয়াসে সেই ওভারেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তরুণ এই ব্যাটার। তবে তার আগে কাজের কাজটা করে দেন। ৬টি ছক্কা ও এক চারে মাত্র ২০ বলে করেন ৪০ রান।
এই উইকেটের পর ম্যাচে ফিরে আসে শ্রীলঙ্কা। ৩৮ বলে ৩৬ রানে শেষ হয় লিটনের ইনিংস। দুই অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহর ওপর ম্যাচ শেষের প্রত্যাশা থাকলেও শুরুতে তারা রান করতে ভোগেন। বিশেষ করে সাকিব, পাথিরানার বলে আপার কাট করতে গিয়ে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে খেলেন ১৪ বলে ৮ রানের ইনিংস, যা চাপ আরও বাড়িয়ে দেয় দলকে।
ম্যাচে দারুণ বোলিং করা থুসারা পরপর দুই বলে রিশাদ ও তাসকিন আহমেদকে ফিরিয়ে রোমাঞ্চ বাড়িয়ে দেন। প্রতিটি বলেই তাতে ছড়ায় উত্তেজনা। তবে ১৯তম ওভারের প্রথম বলে দাসুন শানাকাকে ছক্কা মেরে সব রোমাঞ্চের ইতি টানা মাহমুদউল্লার ব্যাট থেকেই পরে আসে ম্যাচ জেতানো রান। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার অপরাজিত থাকেন ১৬ রানে, আর তানজিম সাকিব ১ রানে। ১৮ রানে ৪ উইকেট নেন থুসারা।
২৩ জুন ২০২৫, ৫:২২ পিএম
কয়েক দফায় ক্রিকেটারদের সরাসরি দাবির পর অবশেষে ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া স্কোয়াডক প্রাইজমানি দিত সম্মত হয়েছে ওমান ক্রিকেট (ওসি)। দলের খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের জন্য আইসিসি থেকে বরাদ্দকৃত ২ লাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার প্রাইজমানি আগামী জুলাইয়ের মধ্যে পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির বোর্ড।
ওসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দীর্ঘ বিলম্বের কারণ ছিল প্রক্রিয়াগত। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) নিশ্চিত করেছে যে, তারা যথাসময়েই ওমান ক্রিকেট বোর্ডকে প্রাইজমানির অর্থ পরিশোধ করেছে। আর আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, তাদের আয়োজিত কোনো ইভেন্ট শেষ হওয়ার ২১ দিনের মধ্যে প্রাইজমানি খেলোয়াড়দের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
২০২৪ সালের জুনে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও অর্থ না পাওয়ায় ওমানের খেলোয়াড়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কয়েকবারই। বিশেষ করে বিষয়টি তীব্র হয়ে ওঠে ২০২৪ সালের অক্টোবরে এমার্জিং এশিয়া কাপ চলাকালীন সময়ে, যখন খেলোয়াড়রা একযোগে মাঠে না নামার সিদ্ধান্ত নেন।
ওই ঘটনার জেরে ওমান ক্রিকেট বোর্ড কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়। ওই টুর্নামেন্টের ১৫ সদস্যের দলের ১১ জন খেলোয়াড়ের বার্ষিক চুক্তি বাতিল করা হয়। অনেককে আবার দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়। ওমানসহ অনেক উপসাগরীয় দেশে নাগরিকত্ব বা দেশটিতে বসবাস করার যোগ্যতা দেশটিতে কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত। ফলে চুক্তি বাতিল হওয়ায় তাদের কাজের মেয়াদও শেষ হয়ে যায়।
ওমান ক্রিকেট বোর্ডের দাবি, তাদের ক্রিকেটারদের অর্থ প্রদানে দেরির কারণ ছিল আইসিসির কাছ থেকে পরবর্তীতে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা না পাওয়া। তবে আগামী মাসের মধ্যেই সব বকেয়া পরিশোধ করা হবে। অবশ্য চাকরি হারানো বা দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া ওমান জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিয়তার মধ্যেই রয়ে গেছে।
দায়িত্ব নিয়ে দেশজুড়ে ক্রিকেট ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যের কথা শুনিয়েছেন বিসিবির নতুন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। সেই ধারায় তিনি এবার নজর দিয়েছেন রাজশাহীর দিকে। ঢাকার বাইরে বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে প্রিমিয়ার লিগ চালুর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি। আর সঠিক অবকাঠামো গড়ে উঠলে, ভবিষ্যতে এখানে বিপিএলের ম্যাচও আয়োজন সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিসিবির বোর্ড পরিচালক ও মাঠ কমিটির প্রধান মাহবুব আনাম।
বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিসিবির দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আয়োজনের অংশ হিসেবে রোববার রাজশাহী সফরে যান আমিনুল। সেখানে তার সাথে আরও হাজির হন পরিচালক মাহবুব আনাম, সাইফুল আলম স্বপন, জাতীয় দলের সাবেক ওপেনার মেহরাব হোসেন ও নারী জাতীয় দলের ওপেনার শামীমা সুলতানা। সেখানে নানা কার্যক্রমের মধ্যে রাজশাহী স্টেডিয়াম ঘুরে ঘুরে দেখেন বিসিবি প্রধান।
আরও পড়ুন
শান্তময় গল টেস্টে ড্র, সন্তুষ্টির চেয়েও আক্ষেপ ভারী |
![]() |
রাজশাহীতে ক্রিকেট নিয়ে স্থানীয়দের আগ্রহে মুগ্ধ আমিনুল সেখানে জানালেন বড় আশার কথা।
“রাজশাহীতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট হয় মাঝেমধ্যে। তবে এবার বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলকে ঘিরে আমরা প্রিমিয়ার লিগ চালু করার পরিকল্পনা করছি। ঢাকার বাইরে ক্রিকেটের বিস্তারে এটি বড় পদক্ষেপ হবে।”
রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ না হলেও, ক্রিকেটের প্রতি এই অঞ্চলের মানুষের যে আবেগ ও উচ্ছ্বাসে কোনো কমতি নেই, সেটা আরও একবার দেখে গেছে গত মাসে। রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে (সাবেক শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়াম) হওয়া বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার ইমার্জিং দলের মধ্যকার সিরিজে গ্যালারির একাংশ খুলে দেওয়া হয়েছিল দর্শকদের জন্য। তিন ম্যাচের প্রতিটিতেই ছিল দর্শকদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি।
রাজশাহী আগে থেকেই জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) ও বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ম্যাচ আয়োজিত হয়ে আসছে। বিসিবি সভাপতি এবার প্রিমিয়ার লিগও ছড়িয়ে দিতে চান এই অঞ্চলে।
“রাজশাহীর মাঠের উইকেট ও আউটফিল্ড অনেক উন্নত। অনেক দেশেই এমন উইকেট নেই। যদি দেশে এমন আরও মাঠ তৈরি করা যায়, তাহলে বহু প্রতিভাবান ক্রিকেটার উঠে আসবে।”
স্রেফ ম্যাচ আয়োজনেই রাজশাহীতে ক্রিকেট কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে চান না বিসিবি প্রধান।
“আমরা এখানে ক্রিকেটীয় কার্যক্রম আরও বাড়াবো। ক্রিকেট ট্রেনিং, কোচিং, আম্পায়ারিং প্রোগ্রাম এবং বয়সভিত্তিক দুই দিনের ম্যাচ চালু করবো। আমি রাজশাহীতে ক্রিকেটের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি।”
আমিনুল আশাবাদী হলেও আপাতত রাজশাহীর স্টেডিয়াম অবকাঠামোগত অবস্থা সুবিধাজনক নয়। ফ্লাডলাইটের অধিকাংশ বাতি ইতোমধ্যেই খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সিলেট স্টেডিয়ামে। গ্যালারির অবস্থাও খুব একটা ভালো নয় এখন।
আরও পড়ুন
রোমাঞ্চ জাগিয়ে ড্রয়েই নিষ্পত্তি প্রথম টেস্টের |
![]() |
তবে দ্রুত এই চিত্র বদলে যাবে বলেই আশাবাদী বিসিবির মাঠ কমিটির প্রধান মাহবুব আনাম।
“জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সাথে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমাদের মাঠের কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়নও করা দরকার। প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, যদি অনুমোদন মেলে, তাহলে আগামী বছরেই এখানে বিপিএল বা আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন সম্ভব হবে।”
টানা চার ম্যাচ জিতে আগেই সমীকরণ সহজ ছিল। বাহামার বিপক্ষে সহজ জয়ে অ্যামেরিকাস অঞ্চলীয় বাছাইপর্বে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে টেবিলের শীর্ষস্থান নিশ্চিত করেছে কানাডা। ১৩তম দল হিসেবে তাতে দলটি জায়গা করে নিয়েছে ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলবে কানাডা। এর আগে ২০২৪ সালের আসরেও বাছাইপর্ব পেরিয়ে বিশ্বকাপে খেলেছিল দলটি। এবার নিশ্চিত করেছে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় হতে যাওয়া আগামী বিশ্বকাপে অংশগ্রহণও।
বাছাইপর্বে চার দলের এই টুর্নামেন্টে কানাডার গ্রুপে ছিল বারমুডা, বাহামা, কেম্যান আইল্যান্ড। ঘরের মাঠে ফেভারিট হিসেবে নামা কানাডা ম্যাচগুলোতে জয় পেয়েছে যথাক্রমে ১১০ রান, ৫৯ রান, ১০ উইকেট, ৪২ রান ও ৭ উইকেটে।
সবশেষ ম্যাচে আগে বোলিং করা বাহামাকে ১৯.৫ ওভারে কানাডা গুটিয়ে দেয় মাত্র ৫৭ রানে। ৪ ওভারে মাত্র ৬ রানে তিন উইকেট নিয়ে সেরা বোলার ছিলেন কালীম সানা। জবাবে মাত্র ৫.৩ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কানাডা। ১৪ বলে ৩৬ রানে অপরাজিত থাকেন দিলপ্রীত বাজওয়া।
কানাডার আগে ১২টি দলের বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত হয়েছে। দলগুলো হল :
ভারত (আয়োজক), শ্রীলঙ্কা (আয়োজক), যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
আর বাকি ৭ দল আসবে ইউরোপ (২), আফ্রিকা (২), ও এশিয়া-প্যাসিফিক (৩) অঞ্চলের বাছাইপর্ব থেকে।
টেস্ট ক্রিকেট এখন আর অতি সংযমী ব্যাটিংয়ের খেলা নয়। স্ট্রাইক রেটে মনযোগ দিতে এখন বাজবল ক্রিকেট দর্শনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত। ৫ দিনের খেলায় ফলাফল অনূকুলে আনতে এই ফর্মূলা প্রয়োগকে আদর্শ মানছে যখন টেস্টে উপরের সারির দলগুলো, সেখানে ঠিক বিপরীত চিত্র বাংলাদেশের। গল টেস্টের প্রথম ইনিংসে-মুশফিকের জোড়া সেঞ্চুরি, ৪র্থ উইকেট জুটিতে ২৬৪, বিদেশের মাটিতে প্রথম খেলার প্রাপ্ত সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অফ স্পিনার নাঈম হাসানের ৫ উইকেটের কল্যানে প্রথম ইনিংসে ১০ রানের লিড, উভয় ইনিংসে শান্ত'র সেঞ্চুরিতে বীরত্ব প্রকাশ পেয়েছে। ৪র্থ দিন শেষে বাংলাদেশ দল যেখানে দাঁড়িয়েছিল, তাতে গন্তব্য শুধু ড্র- নয়, জয়ের সম্ভাবনাও ছিল বাংলাদেশের।
তবে চতুর্থ ইনিংসে ৩২ ওভারের মধ্যে দুই স্পিনার তাইজুল (১৬-৬-২৩-৩)-নাঈম হাসানের (১৩-৪-২৯-১) একটি স্পেলে ৪ উইকেট ফেলে দেয়ায় আফসোসে থেমেছে গল টেস্ট। ৪র্থ ইনিংসে ২৯৫ রানের টার্গেট দিয়ে পর্যাপ্ত সময় ব্যাট করতে না দেয়ায় জয়ের সম্ভাবনার পথে তৈরি হয়েছে বাধার দেয়াল। শেষ পর্যন্ত অনেক অর্জনের গল টেস্টের পরিসমাপ্তি হয়েছে ড্র-এ। ৫ ওভার আগে মিউচ্যুয়াল ড্র'র প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
টেস্ট ক্রিকেটে উভয় ইনিংসে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরির রেকর্ডটি মুমিনুলের। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রামে সে কৃতি (১৭৬ও ১০৫) তার। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরিতে (১৪৬ ও ১২৪) শান্ত ছুঁয়েছিলেন মুমিনুলের সেই কৃতিকে। গল টেস্টে এসে মুমিনুলের সেই কৃতিকে গেছেন ছাড়িয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে একাধিক টেস্টে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরির রেকর্ড করেছেন (১৪৮ও ১২৫*)।
চতুর্থ দিন শেষে ৫৬ রানে অবিচ্ছিন্ন থেকে এমন স্বপ্নই দেখেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৬ মিনিটে বেরসিক বৃষ্টি যখন আক্রান্ত করে, তখন সেঞ্চুরি থেকে ১১ রান দূরে ছিলেন শান্ত। দুই ঘন্টা ১৪ মিনিট পর পুনরায় মাঠে বল গড়ানোর পর সেঞ্চুরি হাতছাড়া করতে বসেছিলেন শান্ত। ৯০ রানের মাথায় প্রবথ জয়সুরিয়াকে সুইপ করতে যেয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগে উদারার ফ্লাইং ক্যাচে পরিণত হতে পারতেন তিনি। তবে ভাগ্যের কৃপায় সে যাত্রায় বেঁচে যাওয়ার পর আর ভুল করেননি। থারিন্দুকে রিভার্স সুইপে থার্ডম্যানে পাঠিয়ে সিঙ্গল নিয়ে পূর্ণ করেছেন ৭ম টেস্ট সেঞ্চুরি, যে সেঞ্চুরিতে গড়েছেন বেশ ক'টি রেকর্ড।
১৯০৯ সালে ওয়ারেন লন্ডনের ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরিতে (১৩৬ও ১৩০) অস্ট্রেলিয়ার ওয়ারেন ব্রাডসলে যে রেকর্ডের শুরুটা করেছিলেন, শনিবার শান্ত'র কৃতিত্বে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরির সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫। এই কৃতিমানদের তালিকায় ব্যাটারদের সংখ্যা ৭৭ জন।
টেস্টে ১৪ তম ব্যাটার হিসেবে একাধিকবার উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরির রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন শান্ত। যে রেকর্ডে গাভাস্কার, পন্টিং, ওয়ার্নারের এমন কৃতি আছে ৩টি ম্যাচে। ২টি ম্যাচে উভয় ইনিংসে অ্যালান বোর্ডার, গ্রেগ চ্যাপেল, ডি সিলভা, দ্রাবিড়, হেইডেন, ক্যালিস, সাঙ্গাকারা, সাটক্লিফ, জর্জ হ্যাডলি, ব্রেন্ডন টেলর, ক্লাইভ ওয়ালকটের পাশে এখন উচ্চারিত হবে শান্ত'র নাম। টেস্টে অধিনায়ক হিসেবে ম্যাচের উভয় ইনিংসেই সেঞ্চুরির রেকর্ডে ১৬তম স্থানে বাংলাদশ অধিনায়ক।
শান্ত'র রেকর্ডের দিনে আফসোস নিয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরেছেন মুশফিক। ২২ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে হাফ সেঞ্চুরির কক্ষপথে এদিন ছিলেন মুশফিক। বৃষ্টির ঠিক আগের বলে প্রবথ জয়সুরিয়াকে ক্রস খেলে মিড অনে বল ঠেলে সিঙ্গলের চেষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছেন মুশফিক, থারিন্দুর ডাইরেক্ট থ্রো-তে মাত্র ১ রানের জন্য ফিফটি হাতছাড়া করার কষ্ট নিয়ে ফিরে গেছেন ড্রেসিংরুমে।
প্রথম ইনিংসে ৪র্থ উইকেট জুটিতে শান্ত-মুশফিকুরের অবদান ২৬৪, দ্বিতীয় ইনিংসে সেখানে এই জুটি যোগ করেছেন ১০৯। তবে এই জুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ায় একটা দমকা হাওয়া বইয়ে গেছে। মাত্র ১২ রানে পড়ে গেছে ৩ উইকেট। ১৯০ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন শান্ত ৫২.৬৩% স্ট্রাইক রেটে।
সেঞ্চুরিতে সময়ক্ষেপনে অপরাধবোধে তাড়িত ছিলেন বলেই সেঞ্চুরির পর ২৫ রান যোগ করেছেন মাত্র ৯ বলে। প্রথম জয়সুরিয়াকে এক ওভারে মেরেছেন ২টি ছক্কা, পরের ওভারে থারিন্দুকে মেরেছেন একটি ছক্কা। তবে ব্যাটিং অনুশীলনের এই ইনিংসে হতাশ করেছেন লিটন (৩), জাকির আলী অনিক (২)। বৃষ্টির পর দ্বিতীয় ওভারে থারিন্দুর বিগ টার্নিং ডেলিভারীতে বোল্ড হয়েছেন লিটন। লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে পিচিং ডেলিভারী আঘাত হেনেছে মিডল স্ট্যাম্পে। একই ধরনের ডেলিভারী ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এসে স্ট্যাম্পিংয়ে কাটা পড়েছেন জাকের আলী অনিক। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে এই থারিন্দুই ছিলেন সফল (৩/১০২)।
দ্বিতীয় ইনিংসে ২৮৫/৬ স্কোরে ইনিংস ডিক্লেয়ার করেছেন যখন শান্ত, তখন চতুর্থ ইনিংসে শ্রীলঙ্কার টার্গেট ২৯৫। ৩৭ ওভারে এই টার্গেট পূর্ণ করতে হলে ওভারপ্রতি করতে হতো তাদের ৬.৩২ রান। প্রথম ৫ ওভার ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করে সে লক্ষের দিকে ছুটতে চেয়েছে শ্রীলঙ্কা।
তবে উইকেট থেকে স্পিনাররা বাড়তি টার্ন আদায় করতে পারায় তাইজুল-নাঈম ছড়িয়েছেন আতঙ্ক। তাইজুল নিজের তৃতীয় ওভারের শেষ ডেলিভারিটি দিয়েছিলেন ব্যাক অব লেন্থ। তাতে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে লংকান ওপেনার উদারা (৯) স্ট্যাম্পিংয়ে কাঁটা পড়েছেন। নাঈম হাসান বল করতে এসে স্লোয়ারে নিশাঙ্কাকে (২৪) শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন ।
ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসে ম্যাথুউজ থেমেছেন মাত্র ৮ রানে। তাইজুলের আর্ম বল লেগ সাইডে ঘোরাতে যেয়ে ব্যাট-প্যাড ক্যাচ উঠেছে, সিলি পয়েন্ট থেকে তা ঝাঁপ দিয়ে লুফে নিয়েছেন মুমিনুল। এক ওভার পর তাইজুলের শিকার চান্দিমাল। বোল্ড আউটে চান্দিমালকে (৯) ফিরিয়েছেন তাইজুল। তাইজুলের উইকেট সংখ্যা বাড়তে পারতো আরও। কামিন্দু মেন্ডিজ ৭ রানের মাথায় দিয়েছিলেন ক্যাচ। উড়ন্ত ক্যাচ নিতে চেয়ে মুশফিক ব্যর্থ না হলে তাইজুলের বোলিংয়ের পাশে থাকতো ৪ উইকেট।
তারপরও এই টেস্টে লংকান লিজেন্ডারি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউজকে গার্ড অব অনারে দু'দল দিয়েছে ফেয়ারওয়েল। ২০০৯ সালের জুলাইয়ে টেস্ট অভিষেক তার গল-এ। ১৬ বছরের ক্যারিয়ার থেমেছে তার সেই গল-এ। ১১৯ টেস্টে ১৬ সেঞ্চুরি, ৪৫ ফিফটিতে ৮২১৪ রান এবং ৩৩ উইকেটে থামলো এই অলরাউন্ডারের ক্যারিয়ার।
চতুর্থ দিন শেষে অনেকটাই নিশ্চিত ছিল ম্যাচের ফলাফল। শেষ দিনে দারুণ কিছু হতে হলে বাংলাদেশকে হতে হত আগ্রাসী। তবে সেটা আর হলো না। নাজমুল হোসেন শান্ত করলেন টেস্টে তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি, তাতে ভর করে স্বাগতিকরা ছুঁড়ে দিল এমন টার্গেট, যা তাড়া করা প্রায় অসম্ভবই। তবে শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের রক্ষণাত্মক কৌশলে দ্রুত কিছু উইকেট তুলে বাংলাদেশ শিবিরে জাগল জয়ের সুবাস। সব রোমাঞ্চ ছাপিয়ে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ শেষ হল ড্রতেই।
গল টেস্টের পঞ্চম দিনে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছিল ৬ উইকেটে ২৮৫ রানে। ২৯৬ রানের লক্ষ্যে লঙ্কানদের দ্বিতীয় ইনিংস থামে ৪ উইকেটে ৭২ রানে।
বাংলাদেশ শেষ দিনের খেলা শুরু করেছিল ৩ উইকেটে ১৭৭ রানে। দিনের খেলা সব মিলিয়ে প্রায় ৯৫ ওভার হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় দ্রুত রান তুলে বাংলাদেশ যদি একটা টার্গেট ছুঁড়ে দিত, তাহলে ম্যাচের একটা ইতিবাচক ফল বের করার ভালো সুযোগ তৈরি হতেও পারত। তবে প্রথম সেশনে শান্ত ও মুশফিকুর রহিম মিলে রয়েসয়েই ব্যাট করেন, ফলে রানের চাকা ছিল বেশ ধীর।
এর মাঝেই অহেতুক রান চুরি করতে গিয়ে কাঁটা পড়েন মুশফিকুর। বৃষ্টি ছিল গুঁড়িগুঁড়ি, খেলা বন্ধের আগে সম্ভাব্য শেষ ওভারে ৪৯ রানে থাকা অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ সিঙ্গেলস বের করতে গিয়ে শিকার হন রান আউটের।
এরপর খেলা আবার শুরুর পর লিটন দাস ক্রিজ ছেড়ে ব্যাট চালাতে গিয়ে বোল্ড হন বাঁহাতি স্পিনার থারিন্দু রত্নায়েকের বলে। খানিক বাদে এক ডিজিটে স্টাম্পড হন জাকের আলি অনিক। তবে এর আগেই বাংলাদেশের লিড আড়াইশ পার হওয়ায় দেখার ব্যাপার ছিল বাংলাদেশ আর কতোটা সময় ব্যাট করে।
তবে অধিনায়ক শান্ত নব্বইয়ের ঘরে যাওয়ার পর দ্রুত রান বের না করে এগিয়ে যান ধীরগতিতে। শেষ পর্যন্ত থারিন্দুর বলে সিঙ্গেলস নিয়ে করেন পূর্ণ করে শতক। প্রথম ইনিংসে ১৪৮ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটার এরপর হাঁকান তিনটি বিশাল ছক্কা। ইনিংস ঘোষণার আগে অপরাজিত থাকেন ১২৫ রানে।
বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে টেস্টে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার টেস্টে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন শান্ত। এর আগে তিনি এই কীর্তি গড়েছিলেন ২০২৩ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে।
৩৭ ওভারে ২৯৬ রানের অবিশ্বাস্য টার্গেটে প্রথম ওভারে দুই চার হাঁকিয়ে ইতিবাচক ব্যাটিংয়ের আভাস ছিল শ্রীলঙ্কার। তবে বেশ স্পিন ধরা উইকেটে আক্রমণে এসেই টার্ন পান তাইজুল ইসলাম, যা বদলে দেয় চিত্র। এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হন লাহিরু উদারা।
অন্যপ্রান্তে এরপর আঘাত হানেন প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট পাওয়া নাঈম হাসানও। তার বলে টপ এজ হয়ে শান্তকে ক্যাচ দিয়ে ২৫ বলে ২৪ করে ফেরেন পথুম নিশাংকা। এরপর খোলসবন্দী হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। মাটি আঁকড়ে ব্যাট করার প্রচেষ্টায় নিজের বিদায়ী টেস্টের শেষ ইনিংসটা বড় করতে ব্যর্থ হন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউস।
এই উইকেটের পর জেগে ওঠে বাংলাদেশের জয়ের আশাও। সেটা আরও বাড়িয়ে দিয়ে ৪৪ বলে ৬ করা দীনেশ চান্দিমালকে বোল্ড করেন ইনিংসে তিন উইকেট পাওয়া তাইজুল। এরপর বাকি সময়ে আর উইকেট না ধরা দেওয়ায় দুই অধিনায়ক মেনে নেন ড্র।
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
১২ দিন আগে
২২ দিন আগে
২২ দিন আগে
২২ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৮ দিন আগে
২৯ দিন আগে