টানা তিন পরাজয়। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা এতোটা খারাপ সময় কবে কাটিয়েছে সেটা খুঁজে পেতে বেগ পাওয়ারই কথা। প্রায় দুই দশকের বেশি সময় পর ব্রাজিল দলকে পড়তে হয়েছে এমন লজ্জায়। তবে সময়টা খারাপ গেলেও ব্রাজিল বস ফের্নান্দো দিনিজের চোখে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ব্রাজিলের পারফরম্যান্স নিকট অতীতের সেরা।
বিশ্বকাপের বাছাইয়ে নিজেদের ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো সেলেসাওদের হারের স্বাদ দিয়েছে মেসিরা। সেই সাথে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে শেষ তিন ম্যাচে কোন গোল না পাওয়ার যন্ত্রণা তো আছেই। সব পরিসংখ্যান ব্রাজিলের বিপক্ষে গেলেও ব্রাজিল কোচের মতে দল হিসেবে ব্রাজিলের পারফরম্যান্স খারাপ ছিল না।
“এটা সেরা পারফর্মেন্স কি না, বলা মুশকিল। বলিভিয়ার বিপক্ষে দল খুব ভালো খেলেছিল। কিন্তু আপনি যদি দ্বৈরথের কথা ভাবেন, আর্জেন্টিনা দারুণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে এসেছে। তারা গত বছর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আর এই ম্যাচে যা হয়েছে, সব যদি আপনি বিবেচনায় নেন, তবে এটা আমাদের সেরা পারফরম্যান্স না হলেও সেরা পারফরম্যান্সগুলোর একটি।“
তবে দিনিজ ব্রাজিলের পারফরম্যান্সকে সেরা মানলেও সমর্থকরা যে তা মানছেন না ম্যাচ শেষেই তা বুঝা গেছে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে ঘরের মাঠে হারার পর সমর্থকেরা দুয়ো দিয়েছেন দিনিজকে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ট্রলের শিকার হচ্ছেন ব্রাজিলিয়ান এই কোচ। যদিও এসবকে স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছেন তিনি,
“সমর্থকদের যা খুশি, করার অধিকার আছে। আমাদের কাজ নিজেদের সেরাটা দেওয়া। সমর্থকরা আবেগপ্রবণ এবং তারা জিততে চায়। তাই তাদের দুয়ো দেওয়ার অধিকারও আছে। তারা চায়, আমরা ভালো খেলি এবং জিতে আসি। আমার ধারণা, দল ভালো খেলেছে, কিন্তু জিততে পারিনি। আর দল হারলে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক।“
এখন পর্যন্ত লাতিন আমেরিকান বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ব্রাজিল ম্যাচ খেলেছে ছয়টা। যার মধ্যে তিনটিতেই দেখেছে হারের মুখ। এমন ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সের কারণ হিসেবে দল পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে যাওয়াটাকেই দায়ী করছেন দিনিজ,
“ দল পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দলের বেশির ভাগই তুরুণ প্লেয়ার। তাই এদের ওপর ভরসা রাখতে হবে। এরাইতো আমাদের ভবিষ্যৎ। সময়ের সাথে সাথে তারা নিজেদের খেলায় উন্নতি করবে।“
১৩ আগস্ট ২০২৫, ৮:২০ পিএম
যে কোনো পর্যায়ের ফুটবলে হেড কোচেরই সাধারণত নিয়ন্ত্রণ থাকে বেশি। কোচের কথা মতোই হয় সব কিছু। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। জাতীয় দলের পাশাপাশি বয়সভিত্তিক দলগুলোতে এই চর্চা আছে। তবে অনূর্ধ্ব-২৩ দলের ক্যাম্প ও অনুশীলনে জাতীয় দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরার উপস্থিতি নিয়ে হচ্ছিল আলোচনা।
অবশ্য অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হেড কোচ ও জাতীয় দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সাইফুল বারী টিটু বিষয়টিকে নিচ্ছেন ইতিবাচক হিসেবেই। কাল বাহরাইনের উদ্দেশে ফ্লাইট ধরবে অনূর্ধ্ব-২৩ দল। তার আগে আজ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন দলের হেড কোচ টিটু। সেখানেই উঠে এল দলের অনুশীলনে কাবরেরার উপস্থিতির প্রসঙ্গ।
দলের উপর নিজের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ আছে কি না, সে বিষয়ে টিটু বললেন,
‘ব্যাপারটা হচ্ছে এ রকম যে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ না থাকলে তো আমি হেড কোচ হইনি। নিয়ন্ত্রণ বলতে আমরা কতটুকু বুঝি, এর প্যারামিটারটা কি। আমরা আগে বলেছি অক্টোবরে হংকংয়ের সঙ্গে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ (সিনিয়র দলের) এবং জাতীয় দলের কিছু খেলোয়াড় এখানে আছে, আমরা আসলে গেম মডেল ঠিক রাখার জন্যই কাজ করছি (একসঙ্গে)।’
কাবরোর উপস্থিতি অবাক হওয়ার মতো কিছু নয় বললেন টিটু,
‘যেহেতু হাভিয়ের (কাবরেরা) অনেক দিন ধরেই জাতীয় দলে কাজ করছে, তার গেম মডেলটা, তার এখানে আসাটা অবাক হওয়ার ব্যাপার নেই। যেহেতু হংকংয়ের ম্যাচটিও আমাদের অগ্রাধিকারে আছে।’
টিটু ভাবছেন দলের ভালো কিছু নিয়ে,
‘সত্যি বলতে নিয়ন্ত্রণ এই জিনিসগুলো, শব্দগুলোতে না যাওয়াই ভালো। আমার মনে হচ্ছে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, ইয়েমেন এদের সঙ্গে খেলার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি যেটা, ওটার দিকে আমাদের নজর বেশি। সে জন্য কীভাবে কি করলে ভালো হয় সেখানে নজর বেশি। আমার মনে হয় এখানে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলাদা করে বলার কিছু নেই। জাতীয় দলের একজন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে দলের সঙ্গে সব সময়ই যোগাযোগ, দল কতটা ভালো করবে সেখানে আমার অবদান কতটুকু থাকবে সেটা নিয়েই ভাবছি।'
আগামী ১-৯ সেপ্টেম্বর হবে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের খেলা। আর সৌদি আরবে চূড়ান্ত পর্ব হবে ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে। তার আগে বাহরাইনে ১৮ ও ২২ আগস্ট দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবল দল।
সিনিয়র দলের পর অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল দলও প্রথমবার জায়গা করেছে এএফসি এশিয়ান কাপের মূলপর্বে। একই পথে এবার হাঁটতে চায় ছেলেদের অনূর্ধ্ব-২৩ দলও।
আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হবে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের খেলা। আর সৌদি আরবে চূড়ান্ত পর্ব হবে আগামী বছরের জানুয়ারিতে। বাছাইয়ের আগে নিজেদেরে ঝালিয়ে নিতে আগামীকাল বাহরাইনের উদ্দেশে উড়ানে চড়বে সাইফুল বারী টিটুর দল। সেখানে ১৮ ও ২২ আগস্ট দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে তারা। তবে চোখ থাকবে এশিয়ান কাপের প্রস্তুতিতে।
দেশ ছাড়ার আগে আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর বারিধারায় একটি হোটেলে মিডিয়া সেশনে কথা বলেন দলের হেড কোচ টিটু ও ডিফেন্ডার শাকিল আহাদ তপু। সামনে বাহরাইন, তবে দুজনের নজর মূলত এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে।
কোচের কথায় অবশ্য উঠে এসেছে এটাই মূল দল না। আরও কিছু খেলোয়াড় যুক্ত হবেন, তখন দলের শক্তিমত্তা ও সম্ভাবনা নিয়ে বলতে পারবেন তিনি। বাংলাদেশ কোচ বলেন,
‘পূর্ণাঙ্গ টিম তো এটা না। এখন টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি এবং দুটি প্রস্তুতিমূলক খেলা…। ওটার জন্য যখন পুরো দল নিয়ে যখন কাজ করব তখন একদম দলের রসায়ন বুঝতে পারব। কিছু খেলোয়াড় যারা অনুপস্থিত আছে, আমার মনে হয় বাহরাইন আমাদের মূল ফোকাস। তবে ওখানে দুটো ম্যাচ খেলাসহ ১২ দিন থাকা, আমার মনে হয় আমরা ভাগ্যবান।’
জাতীয় দলের হয়ে খেলা ডিফেন্ডার তপুর মতে, প্রস্তুতি ভালো হয়েছে তাঁদের। বললেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো কাটছে ট্রেনিং সেশনগুলো।’
মেয়েদের দুটি দল এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করেছে। এটাকে এক হিসেবে চাপ এবং একই সঙ্গে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিচ্ছেন ১৯ বছর বয়সী এই ফুটবলার,
‘মেয়েরা দিনকে দিন উন্নতি করছে, এটা তো আমাদের জন্য অবশ্যই চাপ। তো আমরাও চেষ্টা করব কীভাবে উন্নতি করতে পারি। দেখছেন আমরাও কিন্তু উন্নতি করছি।’
তপু বললেন বাহরাইনে এবং পরবর্তীতে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে দারুণ কিছু করতে হলে দায়িত্বটা নিজের কাঁধেও নিতে হবে,
‘যেহেতু সিনিয়র টিমে খেলছি, এখন জুনিয়র টিমে তো একটা দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। কারণ এখানে অনেকেই নতুন আসছে, অনেকেই আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি, তো চেষ্টা করব কিভাবে ওদের সাপোর্ট করে মিলেমিশে খেলা যায়।’
অনূর্ধ্ব-২৩ দলের সঙ্গে প্রথমবারের মতো আছেন ইংল্যান্ড প্রবাসী অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার তানিল সালিক ও আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশি ফুটবলার জায়ান আহমেদ। তাঁরা দলের সঙ্গে এরই মধ্যে মানিয়ে নিয়েছেন বললেন তপু,
‘কারো কোনো সমস্যা হচ্ছে না, যারা নতুন আসছে তারাও দলের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে, সব মিলিয়ে ভালো।’
আলোচনায় থাকা জায়ানকে নিয়ে কোচ টিটু বলেন,
‘জায়ান ইজ ভেরি গুড। আমার মনে হয় সে (জায়ান) ভালো করার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। আসলে সেতো স্কুল ফুটবল খেলে। প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে, এশিয়ান লেভেলে খেলাটা তার জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। আমি মনে করি সে অনেক কিছু শিখবে।’
দুই মাস জাতীয় দলের ম্যাচ বা ক্যাম্প ছিল না। সেপ্টেম্বরে ফিফা উইন্ডোতে নেপালের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। আজ থেকে আবার শুরু হয়েছে জামাল ভূঁইয়াদের ক্যাম্প। আজ জাতীয় দলের ম্যানেজার আমের খানের কাছে রিপোর্ট করেছেন পাঁচ ফুটবলার। তাঁদের নিয়েই আজ থেকে শুরু হয়েছে ক্যাম্প। পর্যায়ক্রমে সেটি ২৪ সদস্যের দলে চূড়ান্ত হবে।
দলে রাখা হয়েছে মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরীকে। তবে ওই সময় ক্লাবের খেলা থাকায় শমিত শোমকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। তবে হামজাকে যে পাওয়া যাবে তা একেবারে নিশ্চিত হয়ে বলতে পারছে না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাঁর জন্য অপেক্ষা করবে তারা।
আরও পড়ুন
৬ মাসে ৩ টুর্নামেন্ট ও ১৬ ম্যাচ, আফঈদারা কি ক্লান্ত |
![]() |
হামজার ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বাংলাদেশ। এ ব্যাপারে আজ দলের ম্যানেজার আমের খান বলেছেন, '২৪ জনের স্কোয়াড নিয়ে আমরা যে ক্যাম্প শুরু করেছি সেখানে আমরা হামজাকেও রেখেছি। যদি কোনো রকম কিছু… পাওয়া যায় তার কাছ থেকে। আমরা এখনো আশা ছাড়িনি। যেহেতু পাওয়া যেতে পেরে এমন সম্ভাবনা আছে।'
কানাডা প্রবাসীর শমিতকে নিয়ে আমেরের ভাষ্য, ‘শমিত শোমের ক্লাবকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে আসলে ওই সময়ের খেলা আছে তাঁর ক্লাবের। তারা ছাড়বে না। সে জন্য ২৪ জনের স্কোয়াডে রাখা হয়নি।'
নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে ম্যাচ দুটি হবে আগামী ৬ ও ৯ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশ ও নেপাল দুই দলই এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের প্রস্তুতি হিসেবে ম্যাচ দুটি খেলবে। ম্যাচ দুটি সামনে রেখেই হাভিয়ের কাবরেরা প্রস্তুতি ক্যাম্প শুরু হলো। আর আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে মাঠের অনুশীলনে নামবে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।
জামাল ভূঁইয়া বুধবার টিম হোটেলে রিপোর্ট করেননি। আমের খান বললেন, 'জামাল কাল ক্যাম্পে ফিরবে। তার একটা বিশেষ কাজে সে আছে। '
বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলাররা এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের প্লে-অফে মঙ্গলবার রাতে ম্যাচ খেলেছেন। কাতারের দোহা থেকে ফিরে ১৫ আগস্ট ক্যাম্পে যোগ দেবেন বলে জানা গেছে। একই দিনে স্টেডিয়ামে খেলা ছিল আবাহনীর। তাদের প্লেয়াররাও বুধবার রিপোর্ট করেননি।
৩৬ দিন ছুটি কাটিয়ে গত রোববার ঢাকায় এসেছেন বাংলাদেশ দলের স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। খেলোয়াড়দের আগেই টিম হোটেলে উঠেছেন তিনি।
আরও পড়ুন
সিরিয়ান ক্লাবকে হারিয়ে চ্যালেঞ্জ লিগের মূলপর্বে বসুন্ধরা কিংস |
![]() |
আগামী অক্টোবরে হোম ও অ্যাওয়েতে ভিত্তিতে হংকংয়ের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডে দুটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ৯ অক্টোবর জাতীয় স্টেডিয়ামে আর ১৪ অক্টোবর হংকংয়ের মাঠে খেলবে বাংলাদেশ।
বাছাইয়ে এখন পর্যন্ত দুই ম্যাচ খেলে ১ পয়েন্ট পাওয়া বাংলাদেশ আছে টেবিলের তিনে। হংকং দুই ম্যাচ থেকে চার পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে।
কয়েক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল গুঞ্জন। অবশেষে সত্যি হলো সেটিই। প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিলেন জানলুইজি দোন্নারুম্মা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় এই কথা জানান ইতালিয়ান গোলরক্ষক।
গত কিছু দিন ধরেই পিএসজির প্রধান কোচ লুইস এনরিকের সঙ্গে দোন্নারুম্মার সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে বলে জানিয়ে আসছিল ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যমগুলো। দল ছাড়ার বার্তায়ও সেই ইঙ্গিতই দিয়েছেন ২৬ বছর বয়সী গোলরক্ষক।
ছড়িয়ে পড়া গুঞ্জনের সত্যতা মেলে ইউয়েফা সুপার কাপের দল ঘোষণার সময়। বাংলাদেশ সময় বুধবার রাতে টটেনহ্যামের বিপক্ষে হতে যাওয়া ম্যাচটির জন্য ঘোষিত স্কোয়াডেই দোন্নারুম্মাকে রাখেননি এনরিকে।
আরও পড়ুন
‘সাকিবের সাথে বিসিবির সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়নি’ |
![]() |
এই স্কোয়াড ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই পিএসজি ছাড়ার বার্তা দেন দোন্নারুম্মা।
"প্রথম দিন থেকেই দলে জায়গা পেতে এবং প্যারিসের গোলপোস্ট রক্ষায় মাঠে, মাঠের বাইরে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কেউ একজন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমি আর দলের অংশ হতে পারব না, দলের সাফল্যে অবদান রাখতে পারব না। এতে আমি হতাশ ও বেদনাহত।"
বিদায়ের আগে ফরাসি ক্লাবটির নিজেদের মাঠে একটি ম্যাচ খেলতে চান দোন্নারুম্মা। কিন্তু এনরিকে যদি সেই ইচ্ছা পূরণের সুযোগ না দেন, তাহলে আগাম বিদায়ও জানিয়ে দিলেন তিনি।
“আশা করি, ঘরের মাঠে আর একটিবার খেলে সমর্থকদের দিকে তাকাতে পারব, বিদায় জানাতে পারব। এটিই হওয়া উচিত। তবে যদি তা না হয়, আমি সমর্থকদের জানাতে চাই যে, আপনাদের সমর্থন ও অনুরাগ আমার কাছে সবকিছু এবং কখনোই এসব ভুলব না আমি।”
আরও পড়ুন
সিরিয়ান ক্লাবকে হারিয়ে চ্যালেঞ্জ লিগের মূলপর্বে বসুন্ধরা কিংস |
![]() |
“এই ক্লাবে খেলা এবং এই শহরে থাকতে পারা ছিল দারুণ সম্মানের। ধন্যবাদ প্যারিস।”
২০২১ সালে ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলান ছেড়ে পাঁচ বছরের চুক্তিতে পিএসজিতে নাম লিখিয়ছিলেন দোন্নারুম্মা। কিন্তু হতাশা ও বেদনা নিয়ে চুক্তির এক বছর বাকি থাকতেই ক্লাব ছেড়ে দিলেন।
দোন্নারুম্মার ভবিষ্যত ঠিকানা কোথায় হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের বেশ কিছু ক্লাবের তার ওপর আগ্রহ আছে বলে জানিয়েছে নানা সংবাদমাধ্যম।
এএফসি অনুর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ৬-১ ব্যবধানে হেরে যায় বাংলাদেশ।
ওই ম্যাচে প্রথমে গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে দক্ষিণ কোরিয়া সমতায় ফিরলেও, সমান তালে লড়াই করেছিল বাংলাদেশও। তবে দ্বিতীয়ার্ধে বদলে যায় দৃশ্যপট। সময় যত গড়িয়েছে, বাংলাদেশ তত ছন্নছাড়া হয়েছে।
রক্ষণে আফঈদা খন্দকার, নবিরন খাতুন ও জয়নব বিবি থাকতেও একের পর এক গোল হজম করেছে বাংলাদেশ। রক্ষণের দুর্বলতাই ফুটে উঠেছে বারবার।
দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচ নিয়ে গত সোমবার কথা বলেন বাংলাদেশ দলের কোচ পিটার বাটলার,
‘দ্বিতীয়ার্ধে আমরা ভেঙে পড়েছিলাম। বিরতির সময়েই বুঝেছিলাম আমাদের খেলোয়াড়রা ক্লান্ত, তাদের শক্তি ফুরিয়ে গেছে।’
ওই আসরে ৫ দিনের মধ্যে ৩ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। তার আগের সপ্তাহে ১১ দিনের ব্যবধানে টানা ৬ ম্যাচ খেলেন আফঈদা, সাগরিকা, স্বপ্নারা। দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচের আগে তাই খেলোয়াড়রা ছিলেন ক্লান্ত, যেটি বলেছেন কোচ বাটলারও। টানা খেলার মধ্যে থাকায় দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচের আগে দলে ছোটখাটো ইনজুরি প্রবণতাও ছিল।
২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত নারী ফুটবল দল (সিনিয়র ও বয়সভিত্তিক মিলে) ম্যাচ খেলেছে মোট ১৬টি। শুরুটা মার্চে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে দিয়ে। ওই ম্যাচ দিয়ে আফঈদার সিনিয়র দলে অধিনায়ক হিসেবে নতুন পথচলা।
এই শুরুর পথে আফঈদা পেয়েছিলেন এক ঝাক তরুণ মুখ। সেই সময় কোচের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেন সিনিয়র দলের ১৮ ফুটবলার। শেষ পর্যন্ত তাদেরকে বাদ দিয়েই তরুণ এক দল নিয়ে আমিরাত যান পিটার বাটলার। দুই ম্যাচেই বাংলাদেশ হারে সমান ৩-১ ব্যবধানে।
এরপর বাংলাদেশ খেলেছে আরও তিনটি টুর্নামেন্ট- এশিয়ান কাপ বাছাই, অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফ ও অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপ বাছাই।
আমিরাতে দুটি ম্যাচ ছাড়াও এ বছর জর্ডানে দুটি প্রীতি ম্যাচও খেলেছে লাল সবুজের মেয়েরা। যেখানে জর্ডানের সঙ্গে ২-২ এবং ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে বাংলাদেশ। এই দুই ম্যাচে ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা, শামসুন্নাহারদের মতো সিনিয়ররা ফিরলেও অধিনায়কের আর্মব্যান্ড থাকে আফঈদার হাতেই।
ব্যস্ত সূচির মধ্যে শুধু অনুর্ধ্ব-২০ নারী সাফে খেলোয়াড়দের অদলবদল করে খেলিয়েছেন বাটলার। প্রথম দুই ম্যাচে আফঈদা খেলেছেন, এরপর মাঠে নেমেছেন প্রতিযোগিতার শেষ ম্যাচে। ম্যাচে না নামতে হলেও, দলের সঙ্গেই থাকতে হয়েছে সব খেলোয়াড়দের।
গত ২১ জুলাইয়ের ওই ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে বটে, তবে ঠিক সেই ম্যাচ থেকেই যেন ক্লান্তি ভর করে আফঈদাদের ওপর। কারণ সাফ জিতেও বিশ্রাম নিতে পারেনি দল। অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের জন্য দলের ক্যাম্পও ভাঙেননি কোচ।
সাফের প্রতিযোগিতা শেষ করে ১০ দিনের মাথায় বাংলাদেশ পাড়ি দেয় লাওসে। সেখানে ৫ দিনের মধ্যে দল খেলে ৩ ম্যাচ। যেটা মোটেও সহজ ছিল না বাংলাদেশের মতো দলের জন্য, যারা নিয়মিত সাফের আসরে সাফল্যে পেলেও এএফসিতে তেমনটা নয়।
কোচও বলেছিলেন,
‘সাফের গন্ডি পেরিয়ে এএফসি আসরে আসলে বোঝা যায় দলের শক্তিমত্তা।’
অনূর্ধ্ব-২০ সাফ ও এএফসি বাছাইয়ের আগে মিয়ানমারে ৭ দিনের ব্যবধানে তিন ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। এএফসি সিনিয়র দলের বাছাইয়ের সেই তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষ বাহরাইন, মিয়ানমার ও তুর্কমেনিস্তান।
কঠিন গ্রুপ পড়েও বাংলাদেশ প্রথমারের মতো নাম লেখায় এশিয়ান কাপের মূলপর্বে। যে টুর্নামেন্টে বাহরাইনকে ৭-০ গোল হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে মিয়ানমারের বিপক্ষে জয় ২-১ ব্যবধানে। আর শেষ ম্যাচ তুর্কমেনিস্তান হেরেছে সেই ৭-০ গোলেই।
আফঈদা ছাড়াও দলের আরও কয়েকজন খেলোয়াড় এই ৬ মাসে খেলেছেন বা দলের সঙ্গে ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম সাগরিকা, স্বপ্না রানী, উমেহলা মারমারা। নেপালে গত বছর সাফ জয়ের দলের সঙ্গেও ছিলেন তারা।
টানা খেলার ক্লান্তি থাকলেও, লাওসে দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচে জয়ের জন্যই নেমেছিল বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে দেখা গেছে নিজেদের চেনা ছন্দে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে যেন খেই হারিয়ে ফেলেন স্বপ্না, নবিরন, সাগরিকারা। টানা টুর্নামেন্ট আর আন্তর্জাতিক ম্যাচের প্রভাব বোঝা যাচ্ছিল তাদের খেলায়।
ইউরোপ বা উন্নত দেশের যে কোনো পেশাদার ফুটবলাররা ৬ মাসে এর দ্বিগুণ ম্যাচও খেলে থাকেন কিন্তু প্রেক্ষাপট আর অভ্যস্ততা হিসেবে সেখানে এখনও পরিচিত নয় বাংলাদেশের মেয়েরা।
তবে পারফরম্যান্সের যে ধারা মেয়েরা অব্যহত রেখেছেন তাতে সেই অভ্যস্ততা এবং পেশাদারত্বের সঙ্গে অচিরেই মানিয়ে নিতে হবে তাদের। কারণ সামনেও রয়েছে এমন ব্যস্ত সময়।
অস্ট্রেলিয়ায় আগামী বছর মার্চে এএফসি এশিয়ান কাপ খেলবেন ঋতুপর্ণা চাকমারা। পরের মাসে থাইল্যান্ডে আছে অনুর্ধ্ব-২০ দলের এশিয়ান কাপ টুর্নামেন্ট।
এই দুই টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে নিবিড় অনুশীলন তো আছেই, সেই সঙ্গে বাংলাদেশের চেয়ে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা দলের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলারও আয়োজন করতে চায় বাফুফে। আগামী সেপ্টেম্বর উইন্ডোতেই দেখা যেতে পারে বড় কোনো দলের বিপক্ষে খেলা।
তাই সব মিলিয়ে ক্লান্তি ঝেরে নতুন উদ্যমে নেমে পড়তে হবে ঋতুপর্ণা, আফঈদাদের।
১০ ঘণ্টা আগে
১০ ঘণ্টা আগে
১২ ঘণ্টা আগে
১৪ ঘণ্টা আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২১ দিন আগে
২৮ দিন আগে
২৯ দিন আগে